অব্যক্ত_প্রিয়তমা,part_11
ফাতেমা_তুজ
নির্ভীকের শরীর দিয়ে টপটপ করে ঘাম ঝরছে। প্রকৃতির একি লীলা খেলা চলছে। দুদিন আগেই ঠান্ডা পরেছিলো আজ আবার মারাত্মক গরম। ছেলেটার শ্যাম রঙা মুখে ছোট ছোট পানি কনা গুলো এক আলাদা রকম সৌন্দর্য প্রকাশ করছে। অন্তত অনিন্দিতার কাছে তেমনি মনে হচ্ছে। মানুষ এতো পারফেক্ট হয় ? হীরের ডাকে ধ্যান কাঁটে অনিন্দিতার। প্রচন্ড অবাকের সহিত হীর বলে
_ পৃথিবী এসেছে। তোমার সাথে জরুরি মিটিং এ বসবে।
_ আমার সাথে কিসের মিটিং ?
_ জানি না। এখনি চলো , না হলে রাগ করে বেচারা চলেই যাবে।
_ উফফ তুই যা তো। একটু পর ই আসছি।
প্রচন্ড বিরক্ত হলো সে। মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটালো হীর। আবার ব্যলকনি দিয়ে উঁকি দেয় অনিন্দিতা। নির্ভীক এখনো দাঁড়িয়ে আছে। কারো সাথে খোশ গল্পে মেতে উঠেছে। পাশে থাকা ব্যক্তি টিকে দেখা যাচ্ছে না। অনিন্দিতা একটু ঝুঁকে , হঠাৎ পরিলক্ষিত হয় মেহেরিমা কে। অবাকে আহত হয় অনিন্দিতা। মেহেরিমা হঠাৎ এখানে কেন এসেছে ?
তবে কি কোনো ভাবে মেহেরিমার সাথে রসায়ন চলছে নির্ভীকের। বুক কেঁপে উঠে তাঁর। জীবনের এই ভয়ঙ্কর দিন টি কে মেনে নিতে পারছে না সে। প্রচন্ড ভয়ে কল করে বসে আসিম কে। কল রিসিভ করেই আসিম বলে
_ অসময়ে ফোন করলে যে, কোনো সমস্যা হয়েছে অনি ?
_ মিস এর সাথে নির্ভীক স্যারের কোনো সম্পর্ক আছে আসিম ?
_ ঠিক কার কথা বলছো তুমি ?
_ মেহেরিমা মিস এর সাথে নির্ভীক ভাইয়া ।
প্রচন্ড অবাকের সহিত আসিম বলে
_ হোয়াট ! কিসব বলছো তুমি ? আপুর সাথে নির্ভীক স্যারের প্রেম কেন হতে যাবে ?
_ তাহলে মিস কেন এখানে এসেছে আসিম। কোনো অকেশন তো নেই ! হঠাৎ করে বাসায় এসেছেন যে।
আসিমের ভয়ঙ্কর হাসি তে চমকে উঠে অনিন্দিতার হৃদয়। একটু একটু করে শ্বাস নেয় সে। আসিম কেন হাসছে ? তাঁর জন্য ভয়ঙ্কর কোনো স্বপ্ন বুনছে না তো। হতভম্ব অনিন্দিতা বলে
_ হাসছো কেন ?
_ বোকা মেয়ে আপু ইনভিটেশন কার্ড দিতে গেছে।
_ কিসের ইনভিটেশন কার্ড ?
_ আরে কাল ব্যস্ত থাকায় বলাই হয় নি তোমায় , আপুর বিয়ে ঠিক হয়েছে। বাই দ্যা ওয়ে তোমার কাছে কার্ড পৌছায় নি এখনো ? আমি তো পার্সেল করে পাঠিয়েছিলাম।
অনিন্দিতা পর পর শ্বাস ফেলে। আসিমের উদ্দেশ্যে বলে
_ সমস্যা নেই কার্ড চলে আসবে। তবে তুমি তো কাল ভারসিটি গেলে ও দিতে পারতে।
_ অনি প্রেমে পাগল হয়ে গেছো তুমি। কাল কে অফ ডে ভুলে গেলে ?
মাথা চুলকোয় অনিন্দিতা। কিছুক্ষণ কথা বলে ফোন রাখে ঠিক তখনি কলিং বেল বেজে উঠে। অনিন্দিতা দরজা খুলে পার্সেল টা হাতে নেয়। দরজা লাগাবে তাঁর আগেই মেহেরিমার ডাক। কৃতঙ্গতা প্রকাশ করে অনিন্দিতা। ভদ্রতার খাতিরে ভেতরে আসতে বলে। মেহেরিমা আসে না, ব্যাগ থেকে কার্ড বের করে অনিন্দিতার হাতে দিয়ে বলে
_ মেহেন্দীর ফাংশন তো আজ রাতেই হচ্ছে, নির্ভীকের সাথে চলে এসো।
_ কিন্তু মিস
_ কিন্তু কিসের? নির্ভীকের সাথে যেতে কোনো সমস্যা তোমার ?
অনিন্দিতা মাথা ঝাঁকায়। মেহেরিমা অনিন্দিতার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। নির্ভীক কে উদ্দেশ্যে করে বলে
_ ওকে নিয়ে এসো কেমন ?
অনিচ্ছা থাকা সত্তে ও সম্মতি জানায় নির্ভীক। মেহেরিমা চলে যায়। অনিন্দিতা বলে
_ আপনার সমস্যা হলে আমি একাই চলে যেতে পারবো।
_ প্রয়োজন নেই। আমি ই নিয়ে যাবো।
.
নিজেকে আয়নায় খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে অনিন্দিতা । আজ কে কি তাঁকে বেশি সুন্দর লাগছে ? না বরাবরের মতোই তো লাগছে। তাহলে নির্ভীক তাকে সাথে করে নিতে চাইলো কেন ? অনিন্দিতার উত্তর মিলে না। লম্বা হেসে বেডে গা এলিয়ে দেয়। দুটো বিয়ের কার্ড পেয়েছে সে, সাথে নির্ভীকের সাথে মেহেন্দী তে যাওয়ার সুপারিশ। ভরাট মুখে মৃদু হাসি ফুটে। ছোট থেকে বিয়ের কার্ড খুব পছন্দ মেয়েটার। বাসায় যত ইনভিটেশন কার্ড আসুক না কেন এগুলোর এক মাত্র উত্তরাধিকারী হয় অনিন্দিতা। ছোট সময়ে হীর একটা কার্ড নিয়ে ছিড়ে ফেলেছিলো। সেদিন মেয়ে টা কে কি মার টাই না মেরেছিলো অনিন্দিতা। নিজের কর্ম ভাবনায় খলবলিয়ে হাসে সে। তবে তাঁর ভাবনায় রাগে গজগজ করতে করতে একটা কন্ঠস্বর নেমে আছে। নিজেকে ঠিক করে বলে
_ জিই ভাইয়া !
_ থাপ্পড় খাস না অনেক দিন হলো তাই না রে অনি ?
_ স্যরি !
_ চুপপ।
কথা টা ধমকের সুরেই বলে পৃথিবী। মুখ বাঁকায় অনিন্দিতা ফলে লম্বা করে শ্বাস ফেলে পৃথিবী। হঠাৎ করেই অনিন্দিতার হাত জোর করে বলে
_ হেল্প কর বোন আমার।
_ শুকনো হাতে চিড়ে ভিজবে না ভাইয়া।
পকেট থেকে কচ কচে হাজার টাকার নোট বের করে অনিন্দিতার হাতে তুলে দেয়। খ্যাক করে কেশে নিজেকে বিজ্ঞদের মতো দাঁড় করায় অনিন্দিতা। আশ্বস্ত করে বললো
_ চিন্তা করো না প্রজাগন। আমি সমস্যা সমাধান করে দিবো। তবে সমস্যা টা কি একটু জানাবে ?
_ তুই তো জানিস আমি হীর কে পছন্দ করি।
_ হীর কে পছন্দ করো তুমি ?
কথাটা বলে মুখ চেপে হাসছে অনিন্দিতা। পৃথিবী সামান্য বিব্রত হলো। ছোট বোনের সামনে ভালোবাসার কথা বলতে কেমন যেন লজ্জা লাগছে। তবে লজ্জা লাগলে তো হবে না। পৃথিবী একটু মাথা চুলকালো। তার এই সহজাত অভ্যাসে হীর প্রচন্ড বিরক্ত হয়। তবে আজ বিরক্ত হলো না। কারন সিরিয়াস ম্যাটার নিয়ে কথা চলছে। পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে অনিন্দিতা ফোঁস করে দম ফেললো। একে দিয়ে হবে না। তাই হীর কে উদ্দেশ্যে করে বলল
_ পৃথিবী ভাই কে দিয়ে কোনো কাজ ই হবে না। তুই বল কি সমস্যা হয়েছে।
_ আসলে হয়েছে কি আপু। মামি পৃথিবীর বিয়ে ঠিক করেছে ওর কাজিন রিম্মির সাথে। আর তাই পৃথিবী এসেছে এখানে।
_ তো কি হয়েছে ?
হীর কেঁদে ফেললো। হঠাৎ কাঁদার সঠিক কারন বুঝতে পারে না অনিন্দিতা। বোনের মাথায় হাত বুলিয়ে আদুরে গলায় বলে
_ পাগলী মেয়ে এতে কান্না করার কি আছে ? পৃথিবী ভাইয়া বিয়েটা নাকোচ করলেই তো হয় ।
মাথা নিচু করে হীর। পৃথিবী বলে
_ আমি তো নাকোচ করেই দিবো। তবে হীরের কথা টা বলবো কি করে ? তোর বিয়ে না দিয়ে ফুপি নিশ্চয়ই হীর কে বিয়ে দিবে না ?
_ বিয়ে!
প্রচন্ড আবেগ দিয়ে শব্দ টি উচ্চারন করে অনিন্দিতা।বুকে ভারী অনুভব হয়। কষ্ট হচ্ছে খুব , বিয়ে নিয়ে তো ভাবা হয় নি। বয়স তো বিশ হতে চললো। মধ্য বিত্ত পরিবার অনুযায়ী কয়েক বছরের দরুন বিয়ে দেওয়া হবে। এ কেমন অবস্থা হলো। পৃথিবীর ডাকে ঘোর কাঁটে অনিন্দিতার একটু করে হাসার চেষ্টা করে। হীরের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে
_ তাঁতে কি তোর বিয়ে টা না হয় আগেই হবে।
_ আপু !
_ এটা কেমন কথা অনি। এতে সমাজ তোকে ভালো চোখে দেখবে না। প্রশ্ন করবে বড় বোন কে কেন বিয়ে দেওয়া হলো না। মেয়ের কোনো ঘাটতি নেই তো ?
অনিন্দিতা হাসে। পৃথিবীর পাশে বসে এক পলক তাকায় দুজনের দিকে। একটা সাপোর্ট রয়েছে এদের মাঝে। একে অপর কে পাওয়ার বাসনা ও রয়েছে। মনে রয়েছে তুমুল শক্তি। সমাজ তো কতো কথাই বলে। দিন শেষে না খেয়ে থাকলে সমাজের কেউ তো ভাত দিবে না। তাই নিজেদের দিক টা ও ভাবতে হয়। নির্ভীক কখনো তাঁর হবে কি না জানা নেই। চান্স খুব ই অল্প , নাই বললেই চলে। কিন্তু এ দুটি হৃদয় কে আলাদা হতে দিবে না। অনিন্দিতা অধর ছাড়িয়ে হাসে। পৃথিবীর দিকে আবেগের দৃষ্টি দিয়ে বলে
_ আমার বোন কে দেখে রাখার শক্তি আছে তো পৃথিবী ভাই ?
_ আছে।
_ তাহলে এতো ভেবো না। বাবা মা কে ম্যানেজ করা আমার দায়িত্ব। আর সমাজ কে নিয়ে পরে থাকলে প্রিয় জন কে হারাতে হবে। একটা কথা কি জানো
অনিন্দিতা একটু থামে। তারপর ই বলে
_ ” যদি কাউকে ভালোবেসে থাকো তাহলে শক্ত করে জড়িয়ে রাখো। যাতে কখনো দূরে সরে না যায়। প্রিয় মানুষের শূন্যতা অনেক কাঁদায়।”
.
গ্রে রঙের শাড়ি পরেছে অনিন্দিতা। হাত ভর্তি মেহেদী দিয়েছে। সবাই অনুষ্ঠানে গিয়ে মেহেদী পরলে ও অনিন্দিতা বাসা থেকেই দিয়ে নিয়েছে। নির্ভীক কে দিয়ে বিশ্বাস নেই। হয়তো তাঁর জন্য অপেক্ষা করবে না। চুল গুলো ছেড়ে রাখবে নাকি খোঁপা বাঁধবে বুঝতে পারে না। স্লিক এর শাড়ি হওয়াতে একটু গরম লাগছে। তাই সুন্দর করেই খোঁপা করে নিলো। হালকা সাজে রূপসী অনিন্দিতা কে হুরের মতোই লাগছে। একদম প্রকৃতিটে ফোঁটা সদ্য তাজা বেলী ফুলের মতো। যাঁর ঘ্রানে মুখরিত হয় চারপাশ। অনিন্দিতা ড্রয়িং রুমে আসতেই হীর দাঁড়িয়ে যায়। মনে মনে উচ্চারন করে ” আমার বোন এতো সুন্দর কেন ? ”
শাহানা রুম থেকে ছুটে আসেন। অনিন্দিতার হাতে কিছু টাকা গুঁজে দিয়ে বলেন
_ খালি হাতে কোথাও যেতে নেই অনি।
_ আমি তো নির্ভীক ভাইয়ার সাথে যাচ্ছি আম্মু। টাকার দরকার হতো না।
শাহানা তবু ও টাকা টা নিতে বললেন। আরশাদ ডিউটি তে রয়েছেন। দিন রাত পরিশ্রম করেন তিনি। সপ্তাহে দুদিন দুস্থ ব্যাক্তি দের ফ্রি চিকিৎসা প্রদান করেন। এ নিয়ে শাহানা কখনোই অভিযোগ করেন নি। স্বামীর প্রতি অগাধ ভালোবাসা তাঁর। অনিন্দিতা মায়ের মুখাশ্রী তে মায়া ভরা দৃষ্টি তে তাকায়। হঠাৎ করে অনিন্দিতার মনে হয় মা নামক মানুষটি ভয়ঙ্কর সুন্দরী ,উহুহ পৃথিবী খ্যাত সুন্দরী।নিজ ভাবনায় ফিক করে হেসে ফেলে অনিন্দিতা। শাহানা কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে
_ আসি আম্মু।
_ সাবধানে যাবি । নির্ভীকের কাছাকাছি থাকবি। আর শোন ওর সামনে অন্তত তেজ করিস না। ছেলেটা শান্ত স্বভাবের , তোর আচারনে বিরক্ত হতে পারে।
মাথা ঝাঁকায় অনিন্দিতা। হীরের মুখে হাত বুলিয়ে বলে
_ ফিরে এসে আম্মু কে সব বলবো।
_ আচ্ছা। সাবধানে যেও কেমন ?
_ হুম
অনিন্দিতা বের হয়। নির্ভীকের গাড়ি টা পার্কিং এই রয়েছে। বাসা থেকে বের হয় নি সে। তাঁর মানে নিজ রুমেই আছে। কলিং চেপে দিতেই বাসার কাজের মেয়েটা দরজা খুলে দেয়। চোখ দুটো তাঁর বড় বড় হয়ে যায়। ডান গালে হাত দিয়ে বলে
_ মাশআল্লাহ আপনারে তো হুর পরীর মতো লাগতেছে আপা। কি সুন্দর দেখতে আপনি।
মুচকি হাসে অনিন্দিতা। কলি কে ধন্যবাদ দিয়ে বলে
_ নির্ভীক ভাই কি বেরিয়ে গেছেন ?
_ না ওনি তো একটু আগে রেডি হইতে গেছে।
_ ওহ আচ্ছা। আন্টি কোথায় রে ?
_ উপর তলায় নতুন ভাড়াটিয়া আসছে না তাঁদের খাবার দিতে গেছে। প্রথম দিন ব্যস্ত থাকবো তাই রান্না করতে মানা করছে।
কলির সাথে কিছু কথা বলে ডয়িং রুমে চলে আসে অনিন্দিতা। পাঁচ মিনিটের মাথায় ও নির্ভীক আসে না। অনিন্দিতার ইচ্ছে হয় নির্ভীক কে ডাকার। তবে ভয়ে যায় না। দশ মিনিটের মাথায় ওহ যখন আসে না তখন একটু ভয় লাগে অনিন্দিতার। আসে পাশে ও কেউ নেই। তাই আড়ষ্ঠতা কাটিয়ে উপরে উঠে যায়। নির্ভীকের রুমের ডোর খোলাই। অনিন্দিতা যেতে গিয়ে ও যায় না। ডোরে হাত দিয়ে টোকা দিতেই নির্ভীক বলে
_ কে !
_ আমি অনিন্দিতা। হয়েছে আপনার ?
_ একটু ওয়েট করুন।
_ আচ্ছা।
অনিন্দিতা দীর্ঘশ্বাস টেনে দাঁড়িয়ে থাকে। মিনিট পাঁচেক চলে যায় নির্ভীক আসে না। এখন প্রচন্ড দেরি হয়ে যাচ্ছে। অনিন্দিতা আবার দরজায় নক করে বলে
_ কোনো সমস্যা নির্ভীক ভাই ?
_ না ।
_ তাহলে এতো লেট করছেন কেন ?
নির্ভীক উত্তর দেয় না। অনিন্দিতা ও আর প্রশ্ন করে না। মিনিট খানেক পর নির্ভীক বলে
_ আম্মু কে একটু ডেকে দিন তো অনিন্দিতা।
_ আন্টি তো বাসায় নেই। কিছু প্রয়োজন হলে আমাকে বলুন আমি এনে দিচ্ছি।
_ আম্মু কেই লাগবে।
_ আমাকে বলুন আমি করে দিচ্ছি।
_ আপনি পারবেন না অনিন্দিতা ।
_ আমি পারবো আপনি বলেই দেখুন।
অনিন্দিতার ফ্যাচ ফ্যাচানি তে নির্ভীক বলে
_ পাঞ্জাবির বোতাম টা খুলে গেছে। মেহেন্দীর অনুষ্ঠানের জন্য মেরুন রঙ টাই সিলেক্ট করা হয়েছে । মেরুন রঙের পাঞ্জাবি আমি পরি না। তাই এটা ব্যতীত এই রঙের আর কোনো পাঞ্জাবি নেই আমার।
_ আমি লাগিয়ে দিতে পারি। আপনি চেঞ্জ করে নিন আমি পাঞ্জাবির বোতাম সেলাই করে দিচ্ছি।
নির্ভীকের কাছে কোনো উপায় নেই। পরিশেষে সম্মতি প্রদান করে সে। অনিন্দিতা রুমে প্রবেশ করে দেখে বেডের সাথে লাগিয়ে দাঁড়িয়ে আছে নির্ভীক। হাতের ইশারায় সুচ দেখিয়ে দেয় সে। অনিন্দিতা খুব যত্ন করে সুচ দিয়ে বোতাম গেঁথে দেয়। এর মাঝে একটি বার ও সে নির্ভীকের দিকে তাকায় নি। কারন সে চায় না আজকে তাঁর জন্য নির্ভীকের মন বিষিয়ে যাক। পাঞ্জাবি রেখে বেরিয়ে যায় অনিন্দিতা। হাঁফ ছেড়ে বাঁচে নির্ভীক। অনিন্দিতা সামনে থাকলে প্রচন্ড রকমের অস্বস্তি হয়।
**আমি এস এস সি পরীক্ষার্থী। এখন নিয়মিত গল্প দেওয়া সম্ভব নয়। দুই তিনদিন পর পর গল্প দেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ ।
[একজন বিবেক সম্পূর্ন মানুষ হিসেবে যদি আমাকে বলা হয় অনিন্দিতার পাগলামি ঠিক কি না। তখন আমি বলবো একদম ই নয়। নিজের আত্মসম্মান এভাবে বিসর্জন দেওয়া বোধহয় ঠিক নয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে আত্মসম্মান ধরে বসে থাকা টা ও অনুচিত। এখন আসি অনিন্দিতার দিক থেকে। যখন আমি নিজেকে অনিন্দিতার জায়গায় রাখি তখন আমার মনে হয় ভালোবাসায় কি আত্মসম্মানের কোনো স্থান আছে ? উহহু নেই। শত অপমান অবহেলা অবজ্ঞার পর ও দাঁত কামড়ে পরে থাকাই তো ভালোবাসা। সবাই দুটো দিক ই বিবেচনা করবেন আশা করি উত্তর পেয়ে যাবেন। ]
বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাফ করবেন।
চলবে…..