অদ্ভুত_মেয়ে Part – 14
writer – #Nur_Nafisa
.
.
২০ মিনিটের মধ্যে আমরা স্মৃতিসৌধে চলে আসলাম।
আমি- আপু ভাইয়াকে কল করো।
ইমা- ওকে।
পিছন থেকে,
ফাহিম – আর কল করা লাগবে না, আমি এসে পড়েছি।
পিছনে তাকিয়ে দেখি, সত্যিই ভাইয়াকে অনেক ক্লান্ত দেখাচ্ছে,
ইফাজ- বাব,বা…?
রেহান – ভাইয়ায়ায়ায়ায়া ?
শান্তা- আরে ভাইয়া, আমরা এদিকে আপনি জানলেন কীভাবে?
ফাহিম – আমি তোমাদের ৫মি. আগে এসেছি। গেইটের পাশের ছাউনিতে ছিলাম, তোমরা ভেতরে ঢুকার সময় দেখলাম তারপর চলে আসলাম ?
ইমা আপুর দিকে তাকিয়ে দেখলাম আপু অনেক খুশি হয়েছে ভাইয়াকে দেখে ? আর আমরাও সাবাই খুশি ?
আমি- আরে ভাইয়া, আপনি কাজ করতে করতে হাসি ভুলে গেছেন?
ফাহিম – কই না তো, আমি তো এখন ও হেসে কথা বলছি। ?
সাঈদ – কই আপু, ভাইয়া তো হাসছে ই।
ইমরান – আরে নাফিসা তো কানা হয়ে গেছে, তাই দেখতে পাচ্ছে না! ?
আমি- হুম, তাহলে ভাইয়া জোড়ে হাসুন তো, তাহলে শুনতে পাব।
ফাহিম – হাহাহা….. ??
ইমরান – নাফিসা, তুই কানা এটা মেনে নিলি তো!
আমি- কি করে মানবো ভাইয়া! মেয়েরা তো কানা হয় না, কানী হয়! ?
ইমরান – ?
ফাহিম ভাইয়াসহ সবাই – হাহাহোহো ???
আমি- ভাইয়া এবার হাসি টা ঠিক আছে ?।
ইমা- অহহ! নাফিসা তোর এই মজা যেন কখনো শেষ না হয়?
আমি- হিহিহিহি ?
তারপর স্মৃতিসৌধের সম্পূর্ণ এরিয়া ঘুরলাম। সেখান থেকে বের হয়ে আসার সময়,
১টি ছেলে – আরে ভাই, আপনি ইমরান না?
ইমরান – হুম, কেন?
ছেলে – আপনার বোন অনেক ভাগ্যবান আপনার মতো একজন ভাই পেয়ে।
আমি- আরে ভাইয়া ভাগ্যবান না, মেয়েরা ভাগ্যবতী হয়!
সবাই – হাহাহা… ???
ইমরান – হঠাৎ এই কথা! আপনি আমাকে চিনেন কি করে?
ছেলে- ফেবুতে আপনার ছবি দেখলাম, আপনি আপনার বোনের জন্মদিন উপলক্ষে বাচ্চাদের চকলেট বিতরণ করছিলেন। দেখা হয়ে ভালো লাগলো আপনার সাথে, প্রতি ঘরে আপনার মতো ভাই হোক।?
ছেলেটি চলে গেলো, ইমরান ভাইয়া চুপচাপ দাড়িয়ে রইলো।
ফাহিম – বুঝলাম না কিছুই!
ইমা- ওকে, তোমাকে পরে বলবো।
তারপর পাশের ১টা পার্কে ঘুরলাম। সন্ধ্যা হয়ে গেলো,
আমি- ভাইয়া ফুসকা খাব।
ফাহিম – ওকে চলো।
আজও আমি আর হিমা ফাস্ট, বাকিরা লাস্ট, সবাই মোটামুটি অনেকটা খেয়েছে, ফাহিম ও ইমরান ভাইয়া একটু কম।
ইমরান – এতো ফুসকা খাস কিভাবে! আমি মাত্র ৬টা খেলাম।
আমি- কেন হিংসে হয়!!
ফাহিম – কেন তুমি বেশি খেতে পারোনি কেন?
শান্তা- ইমরান ভাইয়া কিভাবে খাবে, ভাইয়াতো নাফিসা আর হিমার প্লেটের ফুসকা গুনছিলো ???
সবাই – হাহাহা….?
তারপর সবাই রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাবার অর্ডার দিলাম। খাবারের সময়,
২টা মেয়ে – you, Imran. Right?
আমরা তো বিষম খেতে লাগলাম! ?
ইমা- হুম সে ইমরান। কেন?
১ম মেয়েটি- আফসোস, আমার কোনো ভাই নেই, আপনার বোন অনেক লাকি!
২য় মেয়েটি- হুম, আমার ভাই আছে কিন্তু স্বার্থপর, আপনার মতো ভাই পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার ?
১ম মেয়েটি – ১টা সেল্ফি নিতে পারি?
ইমরান ভাইয়া হতবাক হয়ে বসে আছে!
শান্তা – hmm sure.
তারপর সেল্ফি তুলে তারা চলে গেলো।
হিয়া- ইমরান ভাইয়া তো ১দিনেই সেলিব্রিটি হয়ে গেলো ?
সবাই – হাহাহা….. ?
ফাহিম – ব্যাপারটা কি হলো? বুঝলাম না কিছুই!
তারপর ইমা আপু সব বুঝিয়ে বললো।
ফাহিম – অহ এই ব্যাপার, ইমরান তুমি আসোলোই সেলিব্রিটি হতে পারবা, মানুষের উপকার করে। নাফিসার সাহায্য নিতে পারো।
ইমরান – sorry নাফিসা, তোকে রূঢ় কথা শুনানোর জন্য ?
আমি- it’s ok. ৩টা আইস্ক্রীম বক্স কিনে দিলেই হবে ?
ইমরান – দাড়া এখনই নিয়ে আসছি,
আমি- বসে আছি, দাড়াতে পারবো না।?
শান্তা- ইমরান ভাইয়ার কাছ থেকে নাফিসা ই টাকা খসাতে পারে ?
সবাই – হাহাহা….. ?
আমি- ভাইয়া, আপনার অফিসের কথা কত বার মনে পড়েছে?
ফাহিম – আসলেই তো! ১বার ও মনে পড়ে নি!!? আজ তোমাদের সাথে ঘুরে অনেক ভালো লাগলো। অনেক দিন পর নিজেকে ফ্রেশ মনে হলো ? তা তোমার রাগ কমেছে তো?
আমি- নাফিসা কারো সাথে রাগ করে কোনো কাজ করে না। আপুর কাছে শুনেছি আপনি গত ১ সপ্তাহ ধরে অনেক ব্যস্ত, তাই আপনাকে বাইরের হাওয়া খাওয়ানোর জন্য নিয়ে আসলাম ? বেশি টেনশনে থাকলে আবার পাগল হয়ে যাবেন।
ফাহিম – ?? আসলেই তুমি #অদ্ভুত_মেয়ে। সত্যিই নিজেকে আজ অনেক ফ্রেশ মনে হচ্ছে ?
আমি- নাফিসার কেরামতি ?
সবাই – হাহাহা……
.
তারপর ফাহিম ভাইয়া খাবারের বিল দিতে গেলো , আর ইমরান ভাইয়া আইস্ক্রীম আনতে। (আজকের বিল কত হলো জানতে পারলাম না ? তবে আজ বেশি হবে না, কারণ ফুসকা বেশিই খেয়েছি, যার ফলে পেটে জায়গা কম ছিল)
ইমরান ভাইয়া ৩ বক্স আইস্ক্রীম নিয়ে আসার সময় দেখলাম রেস্টুরেন্টে কাজ করে ছোট ১টি ছেলে আইস্ক্রীম এর বক্সে তাকিয়ে আছে।
ইমরান – এই নে তোর আইস্ক্রীম।
আমি ১বক্স আইস্ক্রীম নিয়ে ছেলেটির কাছে গিয়ে তাকে দিয়ে দিলাম।
ছেলেটা খুশি হয়ে, ” ধন্যবাদ আফা” ?
আমি- সুক্রিয়া ?
ফাহিম – নাফিসা, তোমার জন্য আর ১বক্স নিয়ে আসবো?
আমি- না ভাইয়া, আমি আমার ভাগ থেকে ই ওকে দিতে চেয়েছি ?।
ফাহিম – গ্রেট ?
আমি- হুম তৌসিফ এর নাটক ” ফাহিম দ্যা গ্রেট ফাজিল ”
ফাহিম – ?হা হা হা, কিন্তু এখানে নাফিসা দ্যা গ্রেট ফাজিল।
সবাই – হাহাহা….
আমি- ভাইয়া আমরা কিন্তু বান্দরবান টূর এ যাচ্ছি!
ফাহিম – আর বইলো না, আমি যেতে পারছি না, মন খারাপ হয়ে যাবে ?
আমি- ওকে মন খারাপ করতে হবে না, ভিডিও কলে আপনাকে ও সাথে নিব ?
ফাহিম – ওকে। অনেক রাত হয়ে যাচ্ছে, বাসায় যাওয়া যাক। ইমরান সাবধানে নিয়ে যাও সবাইকে ।
ইমরান – হুম, আল্লাহ হাফেজ ?
ফাহিম – আল্লাহ হাফেজ ?
আমি- আল্লাহ হাফেজ ?
তারপর সবাই একসাথে বাসায় চলে আসলাম।