ভালোবাসি_যে_তোকে,পর্ব :১৭,১৮

0
2390

ভালোবাসি_যে_তোকে,পর্ব :১৭,১৮
লেখিকা মিমি
পর্ব :১৭

আকাশ ভাইয়া প্লিজ আমাকে এখান থেকে যেতে দেন।(প্রিয়া)

ভালোবাসি অনেক ভালোবাসি তোকে(আকাশ)

আকাশ ভাইয়ার কথা শুনে জোরে ধাক্কা দিলাম।তাতে ওনি একটু সরে গেলেন।আর আমি তাড়াতাড়ি অন্ধকার রুম থেকে বের হয়ে।কলেজে র গেটের সামনে চলে আসলাম। বাসায় যাওয়ার জন্য।কিন্তু পিছন থেকে কেউ আমার হাত ধরে ফেললো।আকাশ ভাইয়া মনে করে ভয়ে ভয়ে পিছনে তাকালাম।পিছনে তাকিয়ে দেখি আকাশ না মেঘ ভাইয়া আমার হাত ধরে আছে।ওনার চোখ মুখ লাল হয়ে আছে।যা দেখে বুঝাচ্ছে অনেক রেগে আছে।ভয়ে গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।তারপরেও নিজেকে সামলিয়ে কিছু বলতে যাবো তার আগে ওনি আমাকে টানতে টানতে গাড়িতে বসিয়ে গাড়ি চালাতে শুরু করলেন।ওনার রাগ দেখে ভয়ে বার বার ঢোক গিলছি।সাহস করে বললাম..

মে.মেঘ ভা.ভা.ভাইয়া আম.আমরা কোথায় যাচ্ছি। (প্রিয়া)

ওনি কিছু না বলে রাগি চোখে আমার দিকে তাকালেন।ওনার এমন ভাবে তাকাতে দেখে ভয়ে চুপ করে বসে রইলাম।একটু পর একটা বাড়ির সামনে গাড়ি থামলেন।ওনি গাড়ি থেকে নেমে আমাকে টানতে টানতে বাড়ির ভিতরে নিয়ে গেলেন।আমি আমার হাত ছাড়িয়ে রেগে বলতে লাগলাম..

কি হয়েছেটা কি এভাবে টানতে টানতে আসছেন কেনো। আমি কি করেছি যে এমন রেগে আছো।(প্রিয়া)

আমার কথা শুনে ওনি আরো রেগে গিয়ে আমার গালে থাপ্পড় মারলেন।হঠাৎ এমন হওয়াতে তাল সামলাতে না পেড়ে নিচে পড়ে যাই।ওনি আমার চুলের মুঠি ধরে টানতে টানতে একটা রুমে নিয়ে যান।তারপর পেন্টের বেল দিয়ে মারতে শুরু করে।আমি কান্না করে দিলাম।কান্না করতে করতে বললাম

প্লিজ আমাকে আর মারো না আমি আর সহ্য করতে পারছি না।আমি কি এমন করেছি যে তার জন্য আমাকে মারছো। (প্রিয়া)

তোকে বারবার মানা করছি আমি ছাড়া অন্য কোনো ছেলের সাথে মিশবি না তুই,কথা বলবি না।কিন্তু তুই আমার কথা শুনিস নি।তোকে আজকে সহজে ছাড়ছি না।(মেঘ)

আমি তো কোনো ছেলের সাথে কথা বলি নাই।প্লিজ আমাকে আর মেরো না প্লিজ (প্রিয়া)

একদম মিথ্যা বলবি না।আমি নিজের চোখে দেখেছি।আকাশের সাথে একটাখালি ক্লাস রুম থেকে বের হতে। বল ওই রুমে কি করছিলি(মেঘ)

আকাশ ভাইয়া আমাকে ওই রুমে জোর করে নিয়ে গেছে।বিশ্বাস করো। আমি ইচ্ছা করে যাই নাই।(প্রিয়া)

আমার কথা শুনে ওনি আরো রেগে জোরে জোরে বেল্ট দিয়ে আঘাত করা শুরু করছে।
আমি বার বার আকুতি মিনুতি করছি, জোরে জোরে কান্না করছি কিন্তু সেগুলো কিছুই ওনার
কানে যাচ্ছে না

ওনার মার সহ্য করতে না পেরে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়ি,এক পর যায়।অজ্ঞান হয়ে পড়ি।আমাকে অজ্ঞান হয়ে পরে যেতে দেখে ওনি মারা বন্ধ করে দেন।তারপর ওনি আমার পাশে বসে বলতে লাগলেন।

কেনো বুঝিস না। যে আমি তোকে অন্য কাউর সাথে দেখতে পারি না।আমার কথা কেনো শুনিস না তুই।(মেঘ)

এইসব বলে পানি এনে আমার মুখে ছুড়ে মারে।

আমি ধড়পড়িয়ে উঠতে চাই কিন্তু ব্যাথায় ওঠতে পড়ি না। চিৎকার দিয়ে আমার শুয়ে পড়ি, আমার পুরো শরীর ব্যাথায় জর্জরিত।

ওনি আমাকে কোলে নিয়ে বিছানায় বসালেন।আমি কিছু বলছি না শুধু কান্না করছি

_কান্না থামা(মেঘ)

আমিি কান্না করেই যাচ্ছি

ওনি ধমক দিয়ে বলল

কান্না থামাতে বলছি আমি।(মেঘ)

ওনার ধমক শুনে সাথে সাথে চুপ হয়ে যাই। কিন্তু এখন মুখ দিয়ে হেচকি দিচ্ছে, কান্না জোর করে আটকে রাখার ফলে যা হয় আরকি।

পানি খা।(মেঘ)

কিছু না বলে পানি টুকু খেয়ে শেষ করে ফেললাম।আমি কিছু বলতে যাবো তখনি ওনি কোথায় যেনে চলে গেলেন কিছু না বলে।

একটু পর ওনি খাবার নিয়ে এসে আমার পাশে বসে বলল।

হা কর(মেঘ)

কেনো(প্রিয়া)

খাবার খাওয়ার জন্য(মেঘ)

আমি আর কিছু না হা করলাম।ওনি নিজের হাতে যত্ন করে আমাকে খাইয়ে দিচ্ছে।আমি ওনার দিকে তাকিয়ে আছি আর ভাবছি

পিঠিয়ে তক্তা বানিয়ে এখন ভালোবাসা দেখানো হচ্ছে,কিছু বলতেও পারছি না,বললেই মারবে আবার।
পুরো পাগল একটা।কখন কি করে কিছুই বুঝতে পারি না,এই পাগলের সাথে আমি সারাজীবন থাকবো কি করে?

আমাকে ভাবতে দেখে ওনি বলল,

তোকে মানা করার পরও তুই ছেলেদের সাথে কথা বলিস,তুই জানিস যে তোকে আমি অন্য কোনো ছেলের সাথে সহ্য করতে পারি না। তারপরেও তোর অন্য ছেলের সাথে কথা বলতে হবে?তাও আবার আকাশের সাথে।
তুই শুধু আমার সাথে কথা বলবি,তোর যা প্রয়োজন আমাকে বলবি,তারপরও কোনো ছেলের আশেপাশে ঘেষা যাবে না,বুঝেছিস।(মেঘ)

হুম।(প্রিয়া)

আমার বলতে ইচ্ছে হলো,আমি তো আর ইচ্ছে করে নিজ থেকে আকাশ এর সাথে কথা বলি না ওই শয়তান টা আমার সাথে কথা বলতে আসে।

কিন্তু আমি বলবো না,,কারন এগুলা শুনার আগেই তো তাকে মেরে দফারফা করে দিয়েছে।

আর একটা কথা, আমি তোকে ভালোবাসি,তাই নিজের ভালোবাসার জন্য আমি সব করতে পারি,সব।খুন করতেও তাতে আমার হাত বিন্দু পরিমান কাঁপবে না(মেঘ)

(ভূল ক্রটি ক্ষমার চোখে দেখবেন।)

চলবে….

#ভালোবাসি_যে_তোকে
#পর্ব :১৮
#লেখিকা #মিমি

মেঘ ভাইয়ার সাথে করে লন্ডন থেকে বাংলাদেশ চলে আসলাম।কাউকে কিছু না বলে।বাসার ভিতর ডুকেই আম্মুকে জরিয়ে ধরলাম।

কেমন আছো আম্মু কত দিন পর তোমাকে দেখছি।(প্রিয়া)

ভালো কিন্ত তুই হঠাৎ এখানে (আম্মু)

একদম ঠিক তুই এখানে কেনো তোর তো এখনো পরিক্ষা শেষ হয় নাই।(আব্বু)

আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই মেঘ ভাইয়া সবাইকে যা বললেন সেটা শুনার জন্য আমি মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না

মেঘ ভাইয়া আম্মু আর আব্বুর দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলেন

আমি আর প্রিয়া একে অপরকে ভালবাসি ,
অনেক দিন ধরে আমাদের রিলেশন । ভেবেছিলাম কিছুদিন পর সবাইকে সবটা জানাবো এবং সবার মত নিয়ে আমরা বিয়ে করবো।
কিন্তু প্রিয়া ভাবে বাসার কেউ রাজি না হয়। ও ভীষন ভয় পেয়ে গেছে ওর ধারনা আমাদের রিলেশন আমাদের দুই পরিবারের কেউ মেনে নিবে না।
কাল আমাকে ফোন দিয়ে শুধু কান্না করছে ও না কি আমাকে ছাড়া বাঁচবে না ,
অন্য কোথাও বিয়ে করতে পারবে না।
তোমরা তো জানো ও একটু ভীতু সবাইকে সবটা বলতে ওর ভয় করছে।
আমি বলেছিলাম আমি সবার সাথে কথা বলবো সেটা শুনে ও ভয়ে আরো কান্না করতে লাগল,
আমাকে মানা করতে লাগল যাতে সবাইকে কিছু না বলি,
আমিও ওকে অনেক ভালবাসি ওর কান্না আমি একদম সহ্য করতে পারিনি, তাই বাধ্য হয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে ওকে বিয়ে করে ফেলেছি,(মেঘ)

এক নিঃশ্বাসে কথা গুলো বলে মেঘ ভাইয়া থামলো।

আমি এতক্ষন অবাক হয়ে মেঘ ভাইয়ার কথা গুলো শুনছিলাম। আমার মাথা হ্যাং হয়ে আছে সব শুনে, কি সব বলছেন উনি আমি কখন ওনাকে এই সব কথা বললাম।এবং কি আমিতো ওনাকে ফোন দেই নাই।
উনার সাথে নাকি আমার রিলেশন ছিল,আমি নাকি উনাকে ছাড়া বাঁচবো না ,কত বড় মিথ্যা কথা।
নিজে অপরাধ করে সব দোষ আমার ঘারে চাপিয়ে দিচ্ছে।
কি সাবলিল ভাষায় এতো গুলো মিথ্যে কথা বলে গেলেন,
যে কেউ উনার এই ভাবে সুন্দর করে গুছিয়ে বলা মিথ্যে কথাগুলোকে চোঁখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে নিবে।
উনার কথা শুনে আম্মু কিছু বললেন না অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন আমাদের দুজনের দিকে।আব্বু আমার কাছে এসে বলতে লাগলেন,

প্রিয়া আমরা তোর কাছে এতটা পর হয়ে গেলাম,
তুই যখন মেঘ পছন্দ করিস তাহলে আমাদের একবার বলে দেখতি আমরা কি করি।
এত দিনে তুই আমাদের এই চিনেছিস আমরা কি তোর মতে বিরোদ্ধে গিয়ে জোর করে তোর বিয়ে দিয়ে দিতাম,(আব্বু)

আব্বু কথাগুলো শুনে আমি কান্না করতে লাগলাম মেঘ ভাইয়ার বলা মিথ্যে কথার জন্য আব্বু আমায় ভুল বুঝছেন তাহলে তো মা ও আমায় ভুল বুঝে ভীষন কষ্ট পাচ্ছে।
আব্বুকে সব সত্যি কথা বলতে হবে ,আমি কেঁদে কেঁদে আব্বুকে বলতে লাগলাম,

আব্বু আমি কিছু করিনি,এই বিয়ে আমি করতে চাইনি, মেঘ ভাইয়া আমাকে জোর করে(প্রিয়া)

এই কথার মাঝে মেঘ ভাইয়া আমাকে থামিয়ে দিয়ে উনি করুন মুখ বানিয়ে বলতে লাগলেন,

ছি! প্রিয়া ভয় পেয়ে এখন সব দোষ আমায় দিয়ে দিচ্ছো। তুমি যদি না চাইতে তাহলে কি আমি তোমায় বিয়ে করতে পারতাম।(মেঘ)

মেঘ ভাইয়া কথা শুনে আব্বু আমাকে ধমক দিয়ে বলে উঠলেন।

এ সব কি হচ্ছে প্রিয়া অপরাধ করেছিস আবার মিথ্যে কথা বলছিস ।বিয়ে করার আগে তো ভয়ে সত্যিটা বলতে পারিস নি। এখনও কেন বলতে পারছিস না।এখন কিসের ভয় পাচ্ছিস।
এভাবে বিয়ে করতে ভয় করেনি আর সেটা বলতে ভয় করছে।(আব্বু)

আব্বুর ধমক শুনে আমার কান্নার বেগ আরো বেড়ে গেলো।
আমি আর কিছুই খুঁজে পেলাম না বলার ,চুপচাপ মাথা নিচু করে দাড়িয়ে অশ্রু বিসর্জন দিতে লাগলাম।
আব্বু আমাকে বকছেন দেখে আম্মু গম্ভীর কন্ঠে আব্বুকে বলে উঠলেন ,

তুমি ওকে এভাবে বকছো কেনো যা হবার তা তো হয়ে গেছে , দেখো না ওকে কেমন নার্ভাস দেখাচ্ছে ভয় পেয়ে হয়তো এমন বলছে ,তুমি প্রিয়াকে রুমে যেতে দাও। আর একটু এই দিকে আসোতো তুমি।(আম্মু)

আম্মুর কথা শুনে আব্বু চলে গেলো আম্মুর কাছে।তারপর এক কুনায় দুইজন দাড়ালো তারপর বলল।

এমন করছো কেনো।বিয়ে যখন করে ফেলেছে মেনে নাও।আর তুমি কি ভুলে গেছো।মেঘ এখন অনেক বড় বিজনেস ম্যান।এখন মেঘ আমাদের থেকেও অনেক বড় বিজনেস করে।তোমার তো খুশি হওয়ার কথা।কারন তুমি তো সব সময় চাইতে প্রিয়াকে অনেক বড় বিজনেস ম্যানের সাথে বিয়ে দিতে।এখন তো মেঘের সাথে হয়ে গেছে।তাই মেনে নাও।(আম্মু)
আরে আমি জানি আর আমি মেনে নিয়েছি।তাই তো মেঘের কথা আমি শুনছি।আচ্ছা চলো এখানে এভাবে কথা বললে সবই সন্ধেহ করবে।(আব্বু)

হুম(আম্মু)

আমি একা মেঘ ভাইয়ার পাশে জড়েসড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম,ভীষন ভয় লাগছে।
আমি মেঘ ভাইয়ার দিকে তাকালাম ,আমি তাকাতেই উনি চোঁখ মারলেন যেটা দেখে আমার মাথায় আগুন ধরে গেল রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম,
আমার এভাবে তাকানো দেখে মেঘ ভাইয়া শয়তানি হাসি হেসে আমার কাছে এসে ঝুকে ফিসফিসিয়ে বলতে লাগলেন,

ওগো শুনছো সোনাবউ আমার ,যাও বাসর রাতের জন্য গিয়ে রেডি হও ,আজ তো আমাদের ২য় বাসর রাত ।আর এভাবে রাগি লুক দিয় না প্লিজ। তুমি কি জানো তোমার এভাবে তাকানো সরাসরি গিয়ে আমার কলিজায় লাগে ইচ্ছে করে তোমায় খেয়ে ফেলি।
এভাবে পাগল বানিয়ে দিও না আমাকে তা নাহলে কিন্তু আমি রাত পর্যন্ত ওয়েট করতে পারবো না।(মেঘ)

উনার এসব অসভ্য কথা বর্তা শুনে রাগে আমার মন চাইছিল উনার মাথায় বোমা মেরে উনাকে পৃথিবী থেকে উরিয়ে দেই ,
আমি রাগি রাগি কন্ঠ নিয়ে উনাকে ফিসফিসিয়্ বলতে লাগলাম।

আজ তুমি যা করলে তার জন্য আমি তোমাকে কখনই ক্ষমা করবো না। (প্রিয়া)

আমার কথা শুনে মেঘ ভাইয়া বাঁকা হেসে বলে উঠলেন।

আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি না কি ,যে তুমি আমাকে ক্ষমা করবে কি না করবে সেটা ভাবছো।স্বামী স্ত্রীর মাঝে ক্ষমা টমা আসলো কি করে আমাদের মাঝে তো শুধু থাকবে ভালোবাসা বাসি অনলি ফুল রোমান্স ।(মেঘ)

উনার এমন কথা শুনে বুঝতে পারলাম এই ইতর লোকটা জীবনে ও
ঠিক হবে না।আমার সিরিয়াসলি কথার মাঝে ও তার অসভ্য কথাগুলো ঢুকিয়ে দিয়েছে।
আম্মু আমাদের দিকে এগিয়ে আসছেন দেখে মেঘ ভাইয়া সোজা হয়ে দাঁড়ালেন।
আম্মু এসে বলতে লাগলেন…

সারারাত পরে আছে বরের সাথে কথা বলার জন্য এখন রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নেয়।
আর এই যে মেঘ তুই ও যা গিয়ে ফ্রেশ হ গিয়ে ।(আম্মু)

আম্মুর কথা শুনে মেঘ ভাইয়া হেসে মাথা নাড়লেন।
আম্মু আমাকে উনার সঙ্গে যাবার কথা বলে যেই ঘুরলেন আম্মু অমনি মেঘ ভাইয়া আমার কাছে এসে আমার গালে কিস করে বসলেন।
উনার এমন কান্ডে আমি জমে ফ্রিজড হয়ে গেলাম।

(চলবে)

(ভূল ক্রটি ক্ষমার চোখে দেখবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here