অতএব ভালোবাসি তোমায়,সূচনা পর্ব,পর্ব:০২

0
3675

অতএব ভালোবাসি তোমায়,সূচনা পর্ব,পর্ব:০২
লেখিকা_আহিয়ানা_আহিরা
সূচনা পর্ব

একরাশ বিরক্তি আর ভয় নিয়ে বসে আছি গাড়ির সামনের সিটে.. পাশেই এক বস্তা রাগ নিয়ে ড্রাইভ করছে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভিলেন আমার ফুপাতো ভাই মি: সুরভ আহমেদ শান্ত… দেখতে ধবধবে সাদা… যার কারণে আমরা সব কাজিন তাকে সাদা ভাল্লুক বলে ডাকি ?… কিন্তু কেও তার সামনাসামনি এই নামে ডাকতে সাহস করে নাহ.. সবাই যমের মত ভয় পায় তার রাগকে..! উচ্চতা ৬ফিট.. চেহারায় খোঁচা খোঁচা দাড়ি .. সিল্কি চুল.. বিদেশ থেকে খুব কম বয়সে পড়া লেখা শেষ করে দেশে বাবার বিজনেস সামলে নিয়েছেন.. কোন মেয়েকে পাত্তা না দিলেও সারাদিন আমার পেছনে পরে থাকতে তিনি বেশ পারেন… জানিনা কি শত্রুতা আছে…!
এবার আমার পরিচয় দেয়া যাক;
আমি ইশরা ইসলাম সুহানা.. আমি দেখতে অনেক সুন্দর.. চুলগুলো হাটু সমান .. গায়ের রং সাদা.. উচ্চতায় ৫’৪ … সবসময় ভদ্র ভাবে চলি… আবার খুব চনচল ও.. বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে .. আমার একটা বড় ভাই আছে … ছোট বেলা থেকেই অনেক আদরে বড় হয়েছি…
.
–আর কতখন বসে থাকবি?
.
শান্ত ভাইয়ার কথায় ভাবনার জগত থেকে বেরিয়ে এলাম .. সামনে তাকিয়ে দেখি বাড়ি এসে গেছি ..
চুপচাপ গাড়ি থেকে নেমে সোজা বাসায় ঢুকেই নিজের রুমে ফ্রেস হতে চলে গেলাম ..
এই মুহুর্তে ভাইয়ার সামনে পরতে চাইছি না .. ভাইয়া প্রচুর রেগে আছে আমার উপর ..
ফ্লাসবেক;
নুর কে চুন্নি বলায় সেই রেগে আমাকে ধাওয়া করে .. দৌড়াতে গিয়ে সামনে কার সাথে যেন ধাক্কা লাগে.. তাকিয়ে দেখি ভাইয়া …! আর আমার হাতের জুসের বোতলের সব জুস তার নতুন শার্টে .. এই নিয়ে আর কিছু নাহ বলে হাত টেনে গাড়িতে বসিয়ে দেন .. আর বাকিটুকু তো জানেন ..
.. ওয়াসরুম থেকে বের হতেই কায়া (শান্ত ভাইয়ের একমাত্র ছোট বোন) আমাকে বলল..,
— আপু ভাইয়া তোমাকে ডাকছে
বলেই পালালো … আমি মহা চিন্তায় পরে গেলাম এখন না জানি কি করে আমাকে….!
.
.
.
(চলবে…)

#অতএব_ভালোবাসি_তোমায়
#পর্বঃ২
#লেখিকা_আহিয়ানা_আহিরা
.
খুব ধীর গতিতে পা টিপে টিপে ভাইয়ার রুমের দরজার সামনে এসে দাড়িয়ে আছি .. ভিতরে যাবো কিনা সেই নিয়ে চিন্তায় আছি খুব.. মনে মনে দোয়া দুরুদ পরে শেষমেষ দরজায় ধাক্কা দিলাম … সাথে সাথে দরজা খুলে গেল .. রুমের চারদিকে চোখ বুলিয়ে দেখলাম কেও নেই.. চুপচাপ রুমে ঢুকলাম..
রুমে ঢুকতেই রকেট গতিতে কিছু একটা চেহারায় পরতেই ভয় পেয়ে গেলাম .. সাথে সাথে সরিয়ে নিলাম আর দেখলাম হাতে ভাইয়ার নতুন শার্ট যেটাতে আমি জুস ফালিয়েছি.. সাথে সাথে আত্মা শুকিয়ে গেল..
–এভাবে কি দেখছিস?
ভাইয়ার কথা শুনে একটা শুকনো ঢোক গিলে একবার শার্ট তো আরেকবার ভাইয়ার দিকে তাকাচ্ছি..
–শার্ট টা গরম পানি দিয়ে ভালো ভাবে ধুয়ে আন.. এখনি..!
–এ্যাা…! আমি? আমি ধুবো কাপড়?
–এ্যা না হ্যাঁ ..! আর এখনি ধুবি ..
–কিন্তু ভাইয়া আমি তো কখনো কাপড় ধুই নি ..
–তা জেনে তো আমার কাজ নেই.., কথা বাড়ালে ডাবল শাস্তি দেব..
–এতখন যাও বকবক করছিলাম লাস্ট কথায় চুপ হয়ে গেলাম ..
সাথে সাথে শার্ট টা নিয়ে উল্টা পথে নিজের রুমে পা বাড়ালাম ..
দরজার সামনে যেতেই ভাইয়ার ডাকে ঘার ঘুরালাম ..
–সুহা..! আমি কি তোকে যেতে বলেছি?
–ন ন না … ভাইয়া আসলে আমি নিজের রুমে যেয়ে ধুয়ে দেই?
–কেন আমার রুমে বাথরুমের অভাব পরেছে??
–আসলে না মানে..
–কি আসলে?
–(চুপ..)
–কি হলো? আমার রুমের বাথরুমে ধো এখনি.. তোর চালাকি কি আমি জানি নাহ ভেবেছিস? আমি জানি কাজের মেয়ে রুমা এসেছে হয়ত তুই তার কাছেই দিবি! তাই এখানেই ধো..
–মনে মনে, প্রচুর অবাক হলাম আমার শয়তানি এই লোক জানলো কি করে? ধুর..! ভাল্লাগে নাহ ..
–কি হলো দাড়িয়ে আছিস যে?
–এবার আমি চুপচাপ শার্ট নিয়ে বাথরুমে চলে গেলাম আর মনে মনে হাজার গালি দিতে দিতে শার্ট ধুলাম ..
.
.
শার্ট ধুয়ে বারান্দায় মেলে নিজের রুমে যেয়ে চেন্জ করে নিলাম .., আর মনে মনে নিজেকে বল্লাম; একটা শার্ট ধুতেই এই অবস্থা তাহলে বিয়ের পর কি হবে …! ?
রুম থেকে বেরিয়ে এসে সোজা টেবিলে খেতে বসলাম সবাই খেয়ে উঠেছে শুধু আমি , আম্মু আর ফুপুমা বাদে
আমরা তিনজন খাওয়া শেষে গল্প করছিলাম এর মাঝেই নুর এর কল এলো..
দৌড়ে নিজের রুমে যেয়ে কল রিসিভ করতেই গালাগালির ধুম পরে গেল..
–কুত্তি , বান্দর তুই আজকে ধাওয়া না করলে আজ আমার কাপড় ধুতে হতো নাহ ..! তুই আসলেই একটা চুন্নি
-আরে আরে থাম বোইন থাম.. একটা জরুরি কথা আছে
–কি তোর জরুরি কথা? বল ..!
–আমকে তোর ভাল শান্ত ভাইয়ের নাম্বারটা দে দোস্ত প্লিজ ..
নুরের কথা শুনেই গা রাগে জ্বলে উঠল..
–কি বল্লি তুই? ওই রাক্ষোসের নাম্বার আমি তোরে দিবো?.
– শালি তুই আমার কেও নাহ .. রাখ ফোন
-আরে শোন
কল কেটে রাগে বিছানায় পা ছোড়াছুড়ি করছি .. মেজাজটা আজ খুব ধরেছে .. ও আসলেই আমার বেস্টি? শেষমেষ আমার ক্রশ নামক শত্রুটার নাম্বারই আমার কাছে চাইছে? ওফফ ! এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেছি কখন নিজেও জানি নাহ…
ঘুম ভাঙল কায়ার ডাকে .. উঠে দেখি বিকাল ৪টা বাজে..
–আপু ওঠ তো তারাতরি রেডি হ
–কেন?
–রাহুল ভাইয়ার জন্য আমরা মেয়ে দেখতে যাবো
–আজই???
–হ্যাঁ বোন আজই
বলেই কায়া চলে গেল
আমি উঠে যাওয়ার জন্য তৈরি হলাম
‌.
(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here