বজ্জাত বউ,পর্ব:০১,০২

0
2645

বজ্জাত বউ,পর্ব:০১,০২
লেখিকা বিলকিস
পর্ব:০১

এতো ক্ষুন কেউ এভাবে বসে থাকে বলুন তো। তারপর আবার ঘুম পারছে। আর ওনার আসার নাম নেই। এই দেখি আমি আমার পরিচয় টা দেওয়া হলো না। আমি মিষ্টি আর আজ আমার বিয়ে হয়েছে আর আমি এখন বাসর ঘরে বসে আছে। ঘরটা সুন্দর করে সাজিয়ে। আর যার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে মানে আমার বর কি যেনো বিয়ে পড়ানো সময় কাজি বললো ও হ্যা পরশ। ওনার এখানো আসার সময় হলো না। আর এদিকে আমার ঘুম পাড়ছে আর বসে থাকতে থাকতে মাজাও যাচ্ছে দুর ভাল লাগে না আপনারা বলুন কি করি। ওই যে এসেছে আমার বর।
মিষ্টি: দাড়ান কোথায় ছিলেন আপনি?
পরশ: কেনো
মিষ্টি: কেনো মানে আমি আপনার বউ তাই আপনি কোথায় থাকেন আমার জানার অধিকার আছে।
পরশ: দেখো
মিষ্টি: চুপ করুন তো। একে তো এতো পরে এসেছে তারপর এবার বড় বড় কথা। আপনি জানেন আমি আপনার জন্য আমার ঘুমটা বারবার তারিয়ে দিচ্ছি।
পরশ: আমি তো তারাতে বলেনি।
মিষ্টি: আবার কথা বলে চুপ করে দাড়ান। আমি আপনাকে আগে সালাম করি।
পরশ: সালাম করছো কেনো।
মিষ্টি: আমার ইচ্ছে তাই। আমাকে বলেছে তাই। এখন আমার gifts দিন
পরশ:gifts কিসের
মিষ্টি: এই শালা সাদা বাঘ বলে কিনা gifts কিসের আমার। কেনো রে তুই জানিস না বাসর রাতে বউকে gifts দিতে হয়। দেখেতো মনে ভদ্র আসলে একটা শয়তান
পরশ: খবরদার আমাকে শয়তান বলবেন না।
মিষ্টি: তো কি বলবো জান বললো( দাঁতে দাঁত চেপে) একেতো কোনো gifts নেই আবার একটা ফুলও নেই। এই শুনন gf.থাকলে মাথায় থেকে জেরে ফেলুন। ( হাই তুলে) আমার খুব ঘুম পাচ্ছে। আমি ঘুমাতে যাচ্ছি আর আপনি ওখানে মিষ্টি রাখা আছে খেয়ে নেবেন good night., বলে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম।
পরশ: কি মেয়ে বাবা। আম্মু আমার ঘাড়ে কাকে এনে বসিয়েছে এতো আমার ঘাড় মটকাবো। হে আল্লাহ তুমি আমার মতো শান্ত ভদ্র ছেলে জন্য এই মেয়ে দিলে। পরশ তুই ফেসে গিয়েছিস ( মনে মনে)
মিষ্টি: এই যে শুনুন
পরশ: কি বলুন
মিষ্টি: আমি একা একা ঘুমাতে পারি না। বিয়ে আগে আম্মু থাকতো আর এখন আপনি থাকবেন। এগুলো তারাতারি শেষ করে শুয়ে পড়ুন।
পরশ: পড়ছি। বলে পরশ মিষ্টি পাশে গিয়ে শুয়ে পড়লো।
মিষ্টি: আপনার হাতটা দেনতো ( পরশ দিকে মুখ করে)
পরশ: হাত কেনো
মিষ্টি: আমি খাবো দিন না বলে আমি ওনার হাত টা টান দিয়ে নিজের হাত দিয়ে আটকে ধরে ঘুমিয়ে পড়লাম।
পরশ: এই মেয়ে যে ভাবে আমার হাতটা টান দিলো আর একটু হলে ছিড়ে যেতো। পরশ তোর কপালে আর কি আছে উপনি ওনি আর নিচে ইনি জানেন। আমারো ঘুম পাচ্ছে ঘুমিয়ে নেই বলে আমি ঘুমিয়ে পড়লাম
পরে দিন
মিষ্টি: পরেদিন সকালে আমার ঘুম ভাঙতে দেখি ঘড়িতে ৭ টা বাজে। অনেক দেরি হয়ে গেছে যাই ফ্রেস হয়ে নেই বলে আমি উঠতে যাবো তখন একটা টান লাগতে আবার বিছানাতে শুয়ে পরি আরে আমিতো ভুলে গিয়েছিলাম কাল রাতে আমি ওনার হাতধরে ঘুমিয়ে ছিলাম। আর আপনারা কি মনে করছিলেন যাই। এবার ওনার দিকে তাকিয়ে দেখি যে হাতটা আমি ধরে নেই ওনি আমার হাতটা ধরে আসে। হায়। আল্লাহ আমার বরটা দেখতে কি সুন্দর মুখটা মায়াবী, গায়ের রং ফসা তবে আমার রং থেকে একটু কম। মুখে খোচা খোচা দাড়ি চুল গুলো একটু বড় বড় সবমিলে যেনো হুহ্ বলতে পারছিনা। একটা নজর টিকা লাগিয়ে দেই যদি নজর লেগে যাই আমি ওনার কপালে একটা চুমো খেলাম তারপর হাতটা ছারিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলাম।
পরশ: মনে মনে কপালে একটা সম্পশ পেলাম। তাহলে ওকি আমাকে কিস করলো। যে ধুরিবাজ মেয়ে বলতে গেলো একশোটা বাহানা বানাবে। বলে আমার মুখে কি যেনে এসে পড়লো। ভালোকরে তাকিয়ে দেখি শাড়ি
মিষ্টি: হ্যা শাড়ি ( ওয়াশরুমে সামনে দাড়িয়ে)
পরশ: তুমি এভাবে দাড়িয়ে আছো কেনো।
মিষ্টি: কিভাবে
পরশ: এই যে শুধু ব্লাউজ আর পেটিকোট পড়ে। তোমার লজ্জা করছে না
মিষ্টি: না লজ্জা করছে না। কারন আমি ৬ লক্ষ ১ টাকারদেরমহর নিয়ে যাকে বিয়ে করেছি তার সামনে দাড়িয়ে আছি। তাছাড়া আমার লজ্জা টজ্জা নেই।
পরশ: শাড়ি দিয়ে করবো
মিষ্টি: পড়বেন আই মিন আমাকে পড়াবেন।
পরশ: আমি পড়াতে পারি না।
মিষ্টি: বিয়ে যখন করেছেন শাড়িটা আপনাকে পড়াতে হবে। না হলে আমি এভাবে নিচে যাবো বলে আমি দরজায় সামনে যেতে
পরশ: পড়াচ্ছি
মিষ্টি: good সোয়ামী।
পরশ: what is সোয়ামী।
মিষ্টি: সোয়ামী হলো বউয়ে স্বামী। আর আপনি আমার স্বামী। তাই আজ থেকে আমি আপনাকে সোয়ামী বলে ডাকবো।
পরশ: পরশ তুই কোন যাতা কলে ফেসেছিসরে।
মিষ্টি: আমার যাতা কলে। এখন শাড়িটা পড়ান।
পরশ: আমি খুব কষ্ট ওকে শাড়িটা পড়িয়ে দিলাম। শাড়ির পড়ানো পর ওর দিকে তাকাতে দেখি ও খুব সুন্দর। কাল রাতে অল্প আলো ভালো করে দেখি এখন দেখছি সত্যি অসাধারন। আম্মু আমার বউ এনেছে সুন্দর কিন্তু
মিষ্টি: কি দেখছেন এভাবে
পরশ: কিছু না বলে আমি ওয়াশরুমে চলে গেলাম।
মিষ্টি: ন্যাকা আমি কিছু বুঝি নাহুহ। যাই একটু সেজে গুজে নেই নতুন বউ বলে কথা । তারপর আমি চোখে মোটা করে কাজল দিলাম, হালকা লাল লিপিস্টিক পড়লাম, চুলো ছেড়ে দিলাম আর হালকা গহনা পড়ালাম।
পরশ: আমি ফ্রেস হয়ে বেড়াতো দেখি ও সামনে দাড়িয়ে আছে সেজে আরো বেশি সুন্দর লাগছে বিশেষ করে ঠোট আর চোখ যেনো ভাষা প্রকাশ করা যাবে না ( মনে মনে) সামনে দারিয়ে কেনো।
পরশ: আমাকে কেমন লাগছে। অবশ্য আমি জানি আমাকে সুন্দর লাগছে তবুও আপনার মুখ দিয়ে শুনতে ইচ্ছে করছে সোয়ামী।
পরশ: দেখো তুমি আমাকে এই সোয়ামী বলে ডাকবে না। আমার নাম আছে নামধরে ডাকবে।
মিষ্টি: আপনি পড়াশুনা করেননি।
পরশ: মানে আমি লন্ডন থেকে পড়েছি
মিষ্টি: আমার তো মনে হয় না। কারন আমাদের বইপএ আছে বড়দের নাম ধরে ডাকতে নেই সোয়ামী। আর আপনি আমার ৭ বছরে বড়। এখন বলুন কেমন লাগছে।
পরশ: ভালো
মিষ্টি: তাহলে নজর টিকা দিন
পরশ: নজর টিকা মানে…….

(চলবে)

বজ্জাত বউ
লেখিকা বিলকিস
পর্ব ০২
পরশ: নজর টিকা মানে
মিষ্টি: আরে মশাই নজর টিকা মনে যানেন না। তাহলে জানেন টা কি।
পরশ: দেখো যা বলায় ঘুরিয়ে না বলে সোজাসোজি বলো।
মিষ্টি: কিস করুন
পরশ: what
মিষ্টি: আপনি তো বলেন সোজাসোজি কথা বলতে।
পরশ: তুমি কি বলোতো।
মিষ্টি: আপনার বিয়ে করা বউ।
পরশ: আমি পারবো না।
মিষ্টি: দেখুন ভালোভাবে বলছি কিস করবেন না কি।
পরশ: না করবো না।
মিষ্টি: ঠিক আছে তাহলে যা করার আমাকেই করতে হবে।
পরশ: কি করবেন।
মিষ্টি: তেমন কিছু না শুধু এখন থেকে নিচে যাবো আর আশে পাশে লোকজন কে বলবো বাসর রাতে আপনি আমাকে মারধর করেছেন।
পরশ: যা খুশি করুন।
মিষ্টি: ও ছাদে দাড়িয়ে থাকা চাচি, নিচে গাছের পানি দেওয়া চাচা ( জানালা পাশে দারিয়ে) শুনুন আমার বর আমাকে হু হু
পরশ: কি করছেন আপনি ( মুখ চেপে ধরে)
মিষ্টি: ঠিক করেছে ( মুখ থেকে হাতটা ছাড়িয়ে)
পরশ: দেখুন আপনি
মিষ্টি: কিস করুন
পরশ: ok.বলে আমি ওর গালে একটা কিস করলাম।
মিষ্টি: thank you. সোয়ামী বলে আমি ওনাকে একটা কিস করলাম তারপর নিচে চলে এলাম।
পরশ: আম্মু তুমি কাকে এসেছো এতো বউ না পুরা বাঘিনী। ও শিট আফিসে দেরি হয়ে যাবে। বলে আফিসে জন্য রেডি হতে লাগলাম।
মিষ্টি: নিচে নেমে দেখি সবাই ব্রেক ফ্রাস্ট রেডি করছে। আমি ড্রাইনিং টেবিলের কাছে গিয়ে বললাম good morning every one.
পরশের আম্মু: good morning . আয় আমার কাছে আয়।
মিষ্টি: কি করছো বরের আম্মু।
পরশের আম্মু : বরের আম্মু না তোর না।
মিষ্টি: sorry মামনি হবেতো।
মামনি: হবে এবার বস এখানে। আরে এসেগিসিছ।
পরশ: হ্যা আম্মু আফিস যাবোতো। একটু তারা আছে।
মামনি: মিষ্টি মা খাবার গুলো ওকে দেতো।
মিষ্টি: এই নাও সোয়ামী। ( দুষ্টমী হাসি দিয়ে)
পরশ:আম্মু ওকে বলো এই সোয়ামী বলে ডাকতে।
মিষ্টি: মামনি তুমি বলে দেও আমি সোয়ামী বলে ডাকবো।
পরশ: আম্মু তুমি খাইয়ে দেই তো।
মিষ্টি: না
পরশ: না মানে
মিষ্টি: কানে কম শোনেন। না মানে না মামনি আমাকে খাইয়ে দেবে।
পরশ: আমার আম্মু আমাকে দেবো।
মিষ্টি: না আমার মামনি আমাকে দেবো।
পরশ: দেখো সকালে কিন্তু অনেক জ্বালিয়েছো।
মিষ্টি: জ্বা লা নো দেখলি টা কি সোবে তো শুধু মাই সোয়ামী ( মনে মনে) কি জ্বালিয়েছে
পরশ: আম্মু জানো সকালে আমাকে দিয়ে শা
মিষ্টি: থামলে কেনো বলো । মামনি আমি বলছি সকালে আমি ওনাকে বলেছি শাড়িটা পরিয়ে দিতে আর একটা কিস করতে। তুমি বলো আমি ভুল কিছু করেছি।
পরশ: তোমার লজ্জা করছে আম্মু সামনে বলতে।
মিষ্টি: একটু না। কারন আমি জানি আমার শশুড় মাশাই আমার সোয়ামী মতো আন রোমান্টিক নয় কি তাইতো মামনি।
মামনি: থামবি তোরা। আর তোর মুখে কি কিছু আটকাই না।
পরশ: তাহলে দেখো কাকে নিয়ে এসেছো পুরা একটা জঙ্গলী ।
মিষ্টি: কি আমি জঙ্গলী আর নিজে বুঝি মহান পুরুষ । নিজে একটা কি কি কি ও হে গোখরা সাপ।
পরশ: আম্মু আমার আফিসের জন্য দেরি হয়ে যাচ্ছি। আমি আসি।
আম্মু: খাবারটা শেষ করে যা।
পরশ: না তুমি বরং এই জঙ্গলী টাকে খায়াও। আমি আসি বলে আফিসে জন্য গাড়ি নিয়ে রওনা হলাম।
মামনি: দেখো ছেলেটা না খেয়ে চলে গেলো।
মিষ্টি: ও ছেলেটা না খেয়ে চলে সে চিন্তা আর মেয়েটা যে হা করে বসে আছে সে চিন্তা নেই।
মামনি: এই নে হা কর।
মিষ্টি: মামনি তোমার ছেলেটা দেখতে হিরো মতে কিন্তু হেবলা।
মামনি: ও কিন্তু রাগী।
মিষ্টি: রাগ ধুয়ে জল করে দেবো। দেই। ভালো কথা আমার ননদিনী কে দেখছি না কোথায়।
মামনি : নিজের ঘরে হয়তো।
মিষ্টি: আমি দেখে আছি।
মামনি: খাবার শেষ করে যা।
মিষ্টি: আর খাবো না পেট ভরে গেছে বলে দিশার ঘরে গেলাম।
মামনি : পাগলি মেয়ে একটা। কি করে যে এদের মিল হবে তুমি যানো খোদা।
মিষ্টি: কাকে দেখছো ননদিনী ( দিশা রুমে গিয়ে)
দিশা: কে ( ল্যাপটপ বন্ধ করে)
মিষ্টি: আমি
দিশা: ও ভাবি তুমি ভেতরে এসো।
মিষ্টি: কাকে দেখছিলে আমার ননদাই। আমিও দেখবো
দিশা: না তেমন কেউ না।
মিষ্টি: তাই বুঝি। সত্যি টা লুকিয়ে লাভ নেই।
দিশা: আসলে ভাবি
মিষ্টি: কি ননদিনী
দিশা:তুমি কাউ কে বলবে নাতো
মিষ্টি: কাউকে বলবো না
দিশা: আমাদের মেডিকেল কলেজের একজন টিচার আছে। আর স্যারকে আমার ভালো লাগে
মিষ্টি: হুম তাকে একবার দেখতে হবে।
দিশা: তুমি দেখবে
মিষ্টি: দেখবো তবে ছবিতে নয় সরাসরি।
দিশা: তুমি যাবে কলেজে
মিষ্টি: যাবো।
দিশা: ok
মিষ্টি: তুমি তোমার স্যারকে নিয়ে ভাবো আর আমি বসকে একটু জ্বালাই।( ফোনটা হাতে নিয়ে বললো)
অপর দিকে
পরশ আফিসে এসে নিজের রুমে বসে তার পি এ সাথে বিভিন্ন আফিসের ফাইল নিয়ে আলোচনা করছিলো হঠ্যৎ পরশের ফোন বাজতে পরশ ফোন রিসিভ করে………..

( চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here