অদ্ভুত_মেয়ে (season 2) Part- 29

0
2606

অদ্ভুত_মেয়ে (season 2)
Part- 29
Writer: #Nur_Nafisa
.
.

নাফিসা- শুরুতেই বিষম খেলেন! আরও আছে তো, আগে শুনুন সবটা। করলার স্যুপ, শুটকি মাছ দিয়ে ডাল, মুরগির মাংস দিয়ে কলার খোসা, আদা দিয়ে পায়েস, মাছের আঁশটে ভাজি, কচুর রোল, টিকটিকির বিরিয়ানি, লাল কাকড়া ভুনা, বঙ্গোপসাগরের জুস, বালি আর গোবর মিশ্রিত খিচুড়ি!
– থাক থাক, আর বলতে হবে না।
ইমরান- কেন শুন। আর কে কোনটা খাবি বল অর্ডার করি!
– থাক ভাই, তোর বউ যেই রেসেপি শুনাইছে! এক মাসে কোনো খাবার হজম করতে পারবো কিনা আল্লাহ জানে!
নাফিসা- হজমের চিন্তা করেন কেন! হজমের জন্য ইনো আছে তো!
নাফিসা হাসতে হাসতে চলে গেলো ইমরানের বন্ধুরাও হাসছে! নাফিসা দোতলায় চলে এলে হিমা বললো,
হিমা- আপু চলো লুডু খেলি।
নাফিসা- ওকে, হিয়া রেহানকে ডাক।
হিমা- ওরা খেলবে না! দুজনেই ঘুম!
নাফিসা- দুজনে খেলতে মজা লাগবে না! চল মোবাইলে খেলি।
হিমা- কিভাবে?
নাফিসা- মেসেঞ্জারে। দুজন দুই মোবাইলে। দাড়া আমি ভাইয়ার মোবাইল নিয়ে আসি।
নাফিসা অর্ধেক সিড়ি নেমে চিন্তা করলো বন্ধুদের সামনে মোবাইল চাইতে যাবে! তার চেয়ে বরং ইমরানকে ডেকে নিয়ে আসুক! সিড়িতে দাঁড়িয়েই জোর গলায় বললো,
নাফিসা- এহেম! এক্সিউজমি, এখানে সাঈফ আল ইমরান কে? দু মিনিটের জন্য দোতলায় আপনার ডাক পড়েছে!
নাফিসা কথাটা বলে দ্রুত দোতলায় চলে এলো। ইমরানের বন্ধুরা হাসতে লাগলো নাফিসার কর্মে। নাফিসা দোতলায় এসে রুমের সামনেই ফাঁকা জায়গায় পায়চারি করছে। হিমা নাফিসার রুমে নাফিসার মোবাইল নিয়ে বসে আছে। দু মিনিট পর ইমরান দোতলায় এলো।
ইমরান- জ্বি বলুন…
নাফিসা- আপনার মোবাইলটা দিন এক ঘন্টার জন্য।
ইমরান- কেন?
নাফিসা- সব কেন এর উত্তর হয় না। দিন..
ইমরান- সরি, বিনা কারণে কাউকে কিছু দিতে পারবো না।
নাফিসা- গেমস খেলবো, দাও।
ইমরান- আমার মোবাইলে গেমস নেই।
নাফিসা- অনলাইনে লুডু খেলবো।
ইমরান- পড়তে বসো, যাও।
নাফিসা- এই দাড়াও দাড়াও!
ইমরান সিড়ির কাছে চলে এলে নাফিসা বাধা দিলো।
নাফিসা- মোবাইল না দিয়ে যেতে পারবে না। দাও তারাতাড়ি, পড়ার সময় তো পড়িই। এখন খেলার সময়।
ইমরান- খেলার সময় পাড় করে এসেছো। পড়তে বসো গিয়ে পরীক্ষার বেশি দিন নেই।
ইমরান আবার চলে যেতে নিলে নাফিসা ইমরানের কলার টেনে ধরলো। ইমরান ব্রু কুচকে তাকাতেই নাফিসা কলার ছেড়ে দু’হাতে গলা জড়িয়ে ধরে মুচকি একটা হাসি দিলো।
নাফিসা- দাও না গো, বিনিময়ে তোমাকে কিছু দিবো।
ইমরান- কি?
নাফিসা- সেটা তো দেওয়ার সময়ই দেখবে!
ইমরান- না, আগে শুনে নেই।
নাফিসা- মাথা নিচু করো।
ইমরান- কেন?
নাফিসা- কারো না, কানে কানে বলি!
ইমরান মাথা নিচু করতেই নাফিসা একটা হাত ইমরানের পকেটের দিকে নিয়ে গেলো আর কানে কানে ফিসফিস করে বললো,
নাফিসা- রাতে একটা গল্প শুনাবো!
এদিকে ইমরানের বন্ধুরা সিড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে দেখে ফেললো নাফিসা ইমরানের কানে কানে কিছু বলছে! পেছন থেকে একজন বলে উঠলো,
– ভাবি শুনে ফেলেছি কিন্তু!
নাফিসা এক হাত গলা থেকে নামিয়ে নিলো আরেক হাত ইমরানের পকেটের কাছেই আছে! ইমরান পেছনে তাকাতেই নাফিসা পকেট থেকে মোবাইল বের করে নিলো। ইমরান আবার এদিকে তাকাতেই নাফিসা দাতে দাত চেপে একটা হাসি দিয়ে মোবাইল নিয়ে দৌড় দিলো। রুমে এসে ঠাস করে দরজা লাগিয়ে দিলো! বাকিরা সবাই হাসতে লাগলো। ইমরানও নাফিসার দুষ্টুমি দেখে মুচকি হেসে বন্ধুদের নিয়ে ছাদে চলে গেলো। বিকালটা ছাদে আড্ডায় কাটিয়ে সন্ধ্যার দিকে বন্ধুরা চলে গেলো। সন্ধ্যা থেকে ইমরান নাফিসার সাথে কোন কথা বলছে না! প্রথম প্রথম সেটা লক্ষ্য না করলেও এক পর্যায়ে বুঝতে পারলো নাফিসা। কারণ পড়তে বসার সময় সবাইকেই ধমকে পড়ার কথা বলেছে এটাসেটা বুঝিয়ে দিয়েছে কিন্তু নাফিসার সাথে কোন কথা বলেনি। খাওয়ার সময়ও নাফিসা প্লেটে ভাত দিতে গেলে চামচ হাত থেকে নিয়ে নিজেই বেড়ে নিলো! হয়েছে টা কি! কিছুই বুঝতে পারছে না! মোবাইল নিয়ে যাওয়াতে কি সে রাগ করেছে! রাতে ঘুমাতে এলেও চুপচাপ সে টিশার্ট পড়েই অন্যদিকে কাত হয়ে শুয়ে আছে! নাফিসা লাইট অফ করে তার কাছে এসে শুয়ে বললো,
নাফিসা- ওদিকে ঘুরে আছো কেন? সোজা হও। এই…
ইমরান কিছু বলছে না। আগের ন্যায় শুয়ে আছে।
নাফিসা- কি হয়েছে? আমাকে ইগনোর করছো কেন? কি করেছি আমি?
ইমরান তবুও কোনো প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে না! নাফিসা দুষ্টুমিতে মেতে উঠে ইমরানের টিশার্টের নিচে হাত রেখে দু আঙুলে হাটছে! ইমরান বিরক্তি নিয়ে হাত সরিয়ে দিয়ে বললো,
ইমরান- ওফ্ফ! সরতো…
নাফিসা- আশ্চর্য! এমন করছো কেন! আমার দোষটা কি!
ইমরান কোনো জবাব না দেয়ায় নাফিসার খুব কষ্ট লাগলো! আগে তুই করে বললেও এখন হঠাৎ তার মুখে শুনায় আরও বেশি কষ্ট পেল সে! খাটের একপাশে এসে সেও বিপরীত দিকে মুখ করে শুয়ে পড়লো! যে তার সাথে কথা বলতে চায় না, তাকে দেখলে বিরক্ত হয় তার কাছে যাবে কেন শুধু শুধু! নাফিসা অন্যদিকে ফিরে চোখের পানি ফেলছে আর কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিজেকেই বলছে,
নাফিসা- সাঈফা, তোকে একটা গল্প শোনাই। এক ছিলো টোনা, আরেক ছিলো টুনি। পরিবারের সম্মতিতে টোনাটুনির বিয়ে হয়। একদিন কোনো কারণ ছাড়া হঠাৎ করেই টোনা টুনির সাথে খারাপ ব্যাবহার করে। কোনো কথা বলে না টুনির সাথে। টুনি খাবার বেড়ে দিতে গেলেও টোনা তার খাবার প্লেটে নেয় না! টুনি ঘুমানোর সময় টোনার কাছে গেলেও টোনা রূঢ় ব্যাবহার করে টুনিকে দূরে সরিয়ে দেয়! আর টুনি তার আচরণে খুব কষ্ট পায়! কষ্টটা কারো সাথে শেয়ার করতে না পারায় সে নিজের সাথেই পাগলের মতো কথা বলতে শুরু করে!
ইমরান এপাশে ফিরে নাফিসার গল্প শুনে মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলেছে। তার কুইনকে এভাবে কষ্ট দিয়েও বুকের ভেতর চিনচিন ব্যাথা অনুভব করছে! বড় একটা নিশ্বাস ফেলে এদিকে ফিরে হাত বাড়িয়ে নাফিসাকে তার দিকে টানলো। নাফিসা হাত সরিয়ে দিলো। উল্টো রাগ করেছে বুঝাই যাচ্ছে। বালিশ টেনে সরিয়ে নিলে নাফিসা বালিশ ছাড়াই শুয়ে রইলো। ইমরান আবার হাতে টেনে বললো,
ইমরান- সরি। আসো আমার কাছে।
নাফিসা এবারও হাত সরিয়ে দিলো। ইমরান নিজেই নাফিসার কাছে যেতে নিলে নাফিসা উঠে খাট থেকে নামতে গেলে ইমরান উঠে বসে বললো,
ইমরান- খাট ছেড়ে নামলে এখন খাট ভেঙে ফেলবো বলে দিলাম! যত রাগই হোক খাট থেকে নামবে না কখনো!
ইমরানের রাগী কণ্ঠ শুনে নাফিসা আর নামার সাহস পেলো না! বালিশ ছাড়া চুপচাপ খাটের এক কোনেই কাচুমাচু হয়ে শুয়ে রইল। ইমরান টিশার্ট খুলে একটা বালিশ খাটের মাঝামাঝিতে এনে কাথাটা নিয়ে নাফিসা ও তার গায়ে টেনে দিলো। নাফিসা সাথে সাথেই সরিয়ে দিলো। ইমরান আবার কাথা টেনে তাকে ঝাপটে ধরে কাধে থুতনি ঠেকিয়ে মাথার উপর মাথা রেখে শুয়ে পড়লো। নাফিসা সরাতে গিয়েও পারলো না! ইমরান মুচকি হেসে এভাবে থেকেই গল্পের বাকি অংশ বলা শুরু করলো,
ইমরান- তারপর টোনা তার ভুল বুঝতে পেরে টুনিকে সরি বললো। কিন্তু টুনি যে ভীষণ রাগ করেছে। এখন টোনা টুনির কষ্ট দূর করতে ও রাগ ভাঙতে বারবার ব্যার্থ হচ্ছে। কি করলে টুনির রাগ ভাঙবে আর কষ্ট দূর হবে সেটা টুনি বলে দিলে টোনা বেশ উপকৃত হতো! টোনা যে বোকা! কি করলে রাগ ভাঙবে গো টুনি?
নাফিসা কাদার মাঝেই হিহি করে হেসে উঠলো! তারপর বললো,
নাফিসা- টোনাকে এখন ইচ্ছেমতো মাইর দিলে টুনির রাগ ভাঙবে।
ইমরান মাথা উঠিয়ে বললো,
ইমরান- তাই নাকি! তাহলে দাও, টোনা প্রস্তুত।
নাফিসা এদিকে ঘুরে চট করেই দু’হাতে ইমরানের গলা ঝাপটে ঝুলে পড়লো!
নাফিসা- ফাজিল ছেলে, শুধু শুধু আমার সাথে এমন বিহেভ করেছো কেন!
ইমরান- ওরে বাবা! এতো দেখছি হেংয়িং মাইর! এদিকে আসেন না হয় নিজেই খাট থেকে সোজা নিচে পড়ে যাবেন!
ইমরান নাফিসাকে টেনে নিয়ে খাটের মাঝামাঝিতে রাখা বালিশে শুয়ে পড়লো। তারপর দুজনের গায়েই কাথা টেনে দিলো। ভাইবোনদের সারাজীবনের অভ্যাস, কাথা মুড়ে ফ্যান চালু দিয়ে ঘুমানো! শুধু অতি শীতে ফ্যানটা রক্ষা পায়! নাফিসা এখনো গলা জড়িয়ে গলায় মুখ লুকিয়ে আছে। এদিকে ইমরানের গলা ভিজিয়ে দিচ্ছে চোখের পানিতে!
ইমরান- টুনি এখনো কান্না করছে কেন! টোনা সরি বলেছি তো!
নাফিসা- এমন কেন করলা আমার সাথে? কি অপরাধ করেছি আমি? মোবাইল নেওয়াতে এমন রাগ করেছো?
ইমরান- উহুম!
নাফিসা- তাহলে?
ইমরান- কিছু না। কান্না করলে কিন্তু এখন সুড়সুড়ি দিবো।
নাফিসা- সাহস থাকলে দাও।
ইমরান নাফিসার মাথাটা নিজের বালিশে নামালো। এক হাতে চোখের পানি মুছে দিয়ে কপালে চুমু দিলো। তারপর মাথাটা বুকে টেনে নিয়ে বললো,
ইমরান- সাঈফা..
নাফিসা- হুম?
ইমরান- তুমি বাইরের লোকের সাথে কখনো দুষ্টুমি করবে না। এমনকি কারো সামনেও কখনো দুষ্টুমি করবে না। তোমার যত দুষ্টুমি আছে সবটা শুধু আমার সাথে চলবে।
নাফিসা- কি হয়েছে বলো তো?
ইমরান- কিছু হয়নি।
নাফিসা মাথা তুলে ইমরানের দিকে তাকাতে গিয়ে ব্যার্থ! কারণ ইমরান তার বুকে শক্ত করে চেপে রেখেছে তাকে!
নাফিসা- কিছু তো হয়েছে নিশ্চয়ই। বলো কেন এমন করেছো?
ইমরান- বললাম না, কিছু হয়নি। আমি বলা প্রয়োজন মনে করেছি তাই বলেছি, এখন তুমি মানবে কিনা বলো।
নাফিসা- হুম।
ইমরান মাথায় আরেকটা চুমু দিয়ে বললো,
ইমরান- ঘুমাও।
.
কেটে গেছে আরও কয়েকদিন! মুনতাহা আপুর বিয়ের দিন সকালে নাস্তা করার সময়,
বড় মামা- তৈরি হয়ে থেকো আগেই। সেখানে গিয়েই জুমার নামাজ পড়বো। এক গাড়িতে তো যাওয়া হবে না, আলাদা গাড়ি নিতে হবে। ইমরান সি এন জি রিজার্ভ করিছ।
ইমরান- আচ্ছা।
নাফিসা- কোথায় যাইবা?
বড় মামা- কেন, বিয়েতে।
নাফিসা- কার বিয়েতে?
বড় মামা অবাক হয়ে তাকালো! সে কি জানে না! এদিকে মেঝ মামি জবাব দিলো,
মেঝ মামি- কেন, শান্তার ননদের বিয়েতে। তুমি জানো না?
নাফিসা- বিয়েতে নাকি যাবে না!
বড় মামি- এটা কেমন কথা! দাওয়াত দিয়েছে যাবো না কেন! কে বলেছে তোকে?
নাফিসা রেগে ইমরানের দিকে তাকিয়ে মামিকে বললো,
নাফিসা- তোমার ছেলে বলেছে!
এদিকে ইমরান মাথা নিচু করে প্লেটের দিকে তাকিয়ে খাচ্ছে।
বড় মামা- ইমরান যাবি না?
ইমরান- না করলাম কখন!
বড় মামা- তাহলে নাফিসা কি বলে!
ইমরান- দাওয়াতের কথা শুনতেই লাফানো শুরু করেছে আগের দিন যাবে। তাই বলেছি যাবো কিনা ঠিক নেই!
বড় মামি- গেলে কি হতো। শান্তা তো বলেছেই তোদের আগের দিন চলে যেতে। কাল মাহিনও কল করেছিলো, সবাইকে পাঠিয়ে দিতে। আমি ভাবছি পরীক্ষা, পড়ার চাপ বেশি তাই যাবি না। তাই আর বলিনি কিছু।
ইমরান- হয়েছে বাদ দাও, বিয়ে বাড়ি থাকা খাওয়ার কষ্ট। এর চেয়ে ভালো নয় কি, নিজের বাড়িতে ভালো আছি!
নাফিসা খাবার রেখে উঠে চলে গেলো। ইমরান খাওয়া রেখে তার দিকে তাকিয়ে আছে। রাগ করেছে বুঝাই যাচ্ছে!
বড় মামা- নাফিসা, কোথায় যাচ্ছিস?
নাফিসা সিড়ির কাছ থেকে ফিরে এসে আবার প্লেট নিয়ে হাটা শুরু করলো দোতলার উদ্দেশ্যে। আর বললো,
নাফিসা- মামা, তোমরা চলে যেও। আমি বিয়েতে যাবো না।
সবাই বুঝতে পেরেছে নাফিসা রাগ করেছে। ইমরানকে এ নিয়ে বকা শুনতে হলো! পরক্ষনে বড় মামি আর মেঝ মামি এসে তাকে রাজি করালো। নাফিসা আলমারি থেকে একটা জামা বের করলো। এটা গাউন। বিয়ের এক বছর আগে বানিয়েছিলো কিন্তু পড়েছে মাত্র দুবার। আগের চেয়ে তো মনে হয় সে একটু চেঞ্জ হয়েছে! জামাটা লাগবে কিনা কে জানে! দেখার জন্য সে পড়নের জামার উপর দিয়ে পড়ে নিলো। না একদম পারফেক্ট, পড়তে পেরেছে। তার মানে সে মোটা বা চিকন হয়নি, আগের মতোই আছে! তাহলে তো আজ এটাই পড়বে! অনেক শখের জামা এটা!
ইমরান রুমে এসে দেখলো ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে নাফিসা এপাশ ওপাশ ঘুরে জামা দেখছে! দেখতে তো সুন্দরই কিন্তু জামার গলাটা বড়! সে কি এটা পড়ে যাবে নাকি!
ইমরান- এতো ঘুরেফিরে দেখলে তো আয়না ফেটে যাবে!
নাফিসা তাকে দেখে কোন কথা না বলে ভেংচি কাটলো। তারপর জামাটা খুলে রাখলো।
ইমরান- আজ কি এটা পড়ে যাওয়ার প্ল্যান আছে নাকি! তাহলে আগেই প্ল্যান চেঞ্জ করো। এটা পড়ে যেতে পারবে না।
নাফিসা- কেন, আমি পড়তে পারলে তোমার সমস্যা কি!
ইমরান- আমি দেখতে পারবো না এটাই আমার সমস্যা।
নাফিসা- না দেখলে চোখ বন্ধ করে রাখো। কে বলেছে তোমাকে দেখতে! একটা কথাও বলবা না তুমি। আমি এটাই পড়বো। হুহ্!
নাফিসা জামাটা ভাজ না করেই আলমারিতে ঢুকিয়ে রাখলো। একটু পর তো পড়বেই, শুধু শুধু ভাজ করার কি দরকার! নিজের রুম থেকে হিমাদের রুমে চলে গেলো তারা কি পড়বে তা দেখার জন্য।
কিছুক্ষণ পর গোসল করে যখন গাউনটা পড়ার জন্য হাতে নিলো, দেখলো তার গাউন মাঝ বরাবর লম্বালম্বি দুভাগ হয়ে আছে! সে দু’হাতে সমান ভাগের দুই টুকরো নিয়ে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে স্তব্ধ হয়ে আছে! এটা কি হলো! তার শখের জামার এ কি হাল হলো! তার এক সেকেন্ডও সময় লাগেনি বুঝতে, এটা ইমরাইন্নার কাজ! ব্যাস, চিৎকার করে সারাবাড়ি মাথায় তুলে ফেললো!!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here