দৃষ্টির অগোচরে পর্বঃ৪| কাছে আসার গল্প

0
2816

দৃষ্টির অগোচরে পর্বঃ৪
#লেখকঃরনি_হাসান

ভিডিও ফুটেজ পেয়ে নিলয় তড়িঘড়ি করে দুরুত্বই নুসরাতের বাসায় চলে যায়। দরজার সামনে দাড়িয়ে কয়েকবার কলিংবেল চাপতেই নুসরাত দরজা খুলে নিলয়কে আচমকাই তাদের বাসায় দেখে কাপা গলায় বলে

–” নিলয় তুই হঠাৎ আমার বাসায়” (ভয়ে)
–” এত বড় একটা গেম আমার সঙ্গে কেন খেললি নুসরাত (চোখ রাঙিয়ে)
–” ইয়ে মানে তুই কোন গেমের কথা বলছিস

নুসরাত বনিতা করে বলতেই নিলয়ে নিজেকে সংযত রাখতে না পেরে ঠাস করে একটা থাপ্পড় নুসরাতের বসিয়ে দেই। এবং অনেকটা রাগান্বিত হয়ে নিলয় মোবাইল বের করে ভিডিও ফুটেজ প্লে করে নুসরাতের সমানে উপস্থাপনা করে বলে উঠে

–” তাহলে ভিডিও ফুটেজ টা কার__? ”

নুসরাত ভিডিও ফুটেজ দেখে কান্না করে বলে উঠে

–” নিলয় এই ভিডিও ফুটেজ টা ভাইরাল করিস না প্লিজ । এইটা আমি অনেক বাধ্য হয়েই তোর অগোচরে এমনটা করে ফেলছি (কান্না করে)

–” ছি ছি নুসরাত তুই এমন জঘন্য কাজটি কীভাবে করতে পারলি আমার সঙ্গে। তাছাড়া আমি তো এটাই বুঝতে পারছি না। এই জঘন্যতম গেমটা খেলে তোর কি লাভ হলো

–” এতে আমার কোনো লাভ নেই (নুসরাত কান্না যেন বাধ্যই ছিলো না)

–” এবার সত্যিই কিন্তু অনেক রাগ উঠে যাচ্ছে স্বার্থ নেই তো এই নোংরা গেম খেললি কেন (ধমকিয়ে)

নিলয়ের ধমকানোতে কেপে উঠে নুসরাত । তা দেখে নিলয় বুঝতে পারলো। এসময় রাগ দেখালে নুসরাত ভয়ে কিছু বলবে না। আমাকে শান্ত হতে হবে এবং মেন্ট পয়েন্ট টা ও জানতে হবে । আনমনে ভেবে নিজেকে কিছুটা স্বাভাবিক রেখে বলে

–” নুসরাত ভয় পাস না। এই মাষ্টার প্ল্যান কে করেছে আর কি এমন রহস্য জড়িয়ে আছে সেটা নির্ভয়ে বল প্লিজ (জিজ্ঞাসার দৃষ্টিতে তাকিয়ে)

নিলয়কে স্বাভাবিক দেখে নুসরাত নির্ভয়ে বলে উঠে ”

৩ মাস আগের ঘটনা। ক্যাম্পাস থেকে রিক্সায় করে বাসায় ফিরছিলাম। মাঝে রাস্তায় হঠাৎ তানবীর বাইক নিয়ে রিক্সার সামনে দাড়িয়ে বলে

–” হাই নুসরাত
–” কি ব্যাপার তানবীর রিক্সার সামনে দাড়ালে কেন_?
–” ইয়ে মানে তোমার সঙ্গে আমার পারসোনাল কথা ছিলো এখানে বলা সম্ভব না
–” তানবীর মাঝ রাস্তায় আমাকে বিরক্ত করো না প্লিজ। মামা আপনি যান তো (রিক্সা ওয়ালার উদ্দেশ্য করে)
–” আরে দাড়াও দাড়াও রেগে যাচ্ছো কেন (রিক্সার সামনে দাড়িয়ে)
–” তানবীর ইদানীং তুমি কিন্তু আমায় বেশি বিরক্ত করছো
–” অহহ আচ্ছা তোমার পিছনে ঘুরঘুর করি বলে বিরক্ত লাগে। আচ্ছা ঠিক আছে আজকের পর থেকে আর তোমাকে বিরক্ত করবো না, তবে চিঠিটা সময় পেলে একবার পড়ে নিয়ে বাই।

সেদিন আমার হাতে চিঠি ধরিয়ে দিয়ে দুরুত্বই চলে যায়। তানবীর আমাকে প্রোপজাল করে ২ – ৩ মাস আমার পিছনে ঘুরঘুর করেছে। কিন্তু তাকে accept করতেই কেন জানি মন সাড়া দিচ্ছলো না। তানবীরের সেদিন কার চিঠিতে এত আবেগপ্রবন অনুভূতি দিয়ে কথা তুলেছিলো যে ইচ্ছা না থাকার পড়েও তানবীরের সঙ্গে রিলেশনে জড়িয়ে যায়। শুরুতেই তানবীব আমাকে এত ভালোবাসত কেয়ার করত ” তখন আমার কাছে মনে হত পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ বলে হতো। তানবীর সঙ্গে সবদিক থেকে ভালো চলছিলো। হঠাৎ তানবীর এমন বাজে একটা আমার কাছে আবদার করে বসে যা শুনে ” নিজেকে সংযত রাখতে না পেরে তানবীরের গালে থাপ্পড় মেরে বাসায় চলে আসি।

কিছুক্ষন পর তানবীর ভিডিও কলে ব্লেড হাতে নিয়ে বলে

–” তুমি যদি আমার প্রস্তাবে রাজি না ও তো এই দেখো নিজেকে আমি শেষ করে দিচ্ছি

তানবীর এই ব্লেড দিয়ে নিজের হাত কাটতেছিলো। তানবীরের এমন পাগলামো দেখে নিরুপায় হয়ে রুম ডেড করতে রাজি হয়ে যায়। রুম ডেড করার পর তানবীর শয়তানি হাসি হেসে বলে উঠে

–” আজ আমি স্বার্থক

তানবীরের মুখে শয়তানি প্লাস স্বার্থক শব্দটি শুনে ছলছল দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলছিলাম

–” স্বার্থক মানে বুঝলাম না
–” এই স্বার্থক মানে হচ্ছে আমি যা বলবো তা তুমি অক্ষরে

অক্ষরে মেনে চলবা (শয়তানি হেসে)
–” তানবীর হঠাৎ এসব কি বলছো কিছুই তো পারছি না (থতমত খেয়ে)

–” তোমাকে অত কিছু বুঝতে হবে না। তুমি শুধু আমার আদিবাকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিবা (শয়তানি হেসে)

–” কোন আদিবার কথা বলছো.? আর ও যদি ভালোবাসার মানুষ হয়ে থাকে তো আমি কে (কান্না করে)
–” তোমাকে ভালোবাসছি শুধু ব্যবহার করার জন্য। আর আদিবার জিজ্ঞেস করছো সে আমার জীবন। ওকে পেতে হলে আমাকে যা যা করতে হবে তাই করবো (হেসে)
–” তাহলে আমার সঙ্গে এমন জঘন্য কাজটা কেন করলে তানবীর (অসহায় প্লাস কান্না করে)

–” এরজন্য করেছি যে তুমি আমাকে আদিবাকে পেতে সাহায্য সহযোগিতা করবে। তাছাড়া নিলয়ের সঙ্গে তোমার ভালো বন্ধুত্ব সম্পর্ক রয়েছে এতে খুব সহজেই কাজটা হয়ে যাবে

–” তোর মতো শয়তান ছেলের হাতের নাগাড়ে আর থাকবো না (এই বলে ওখান থেকে চলে আসতে রুমডেড ভিডিও বের করে বলে

আচ্ছা ঠিক আছে আমিও এই ভিডিও টা কাল নেটে আপলোড দিচ্ছি। দেখি কইটা লাইক কমেন্ট পড়ে (ডেবিলমার্কা

তানবীরের এমন শয়তানি দেখে বড্ড অসহায় হয়ে গেছেছিলাম। সেদিন একে তো ধোকা খেয়েছি এবং তার হাতে। blackmail এর স্বীকার হচ্ছি। নিরুপায় হয়ে তানবীবের পা জড়িয়ে কান্না করে বলি

–” তানবীর প্লিজ ভিডিও টা ভাইরাল করো না প্লিজ। সমাজে মুখ দেখাতে পারবো না। তখন সুসাইট করা এছাড়া কোনো উপায় আমার থাকবে না – (কান্না করে)

–” আচ্ছা ঠিক আছে ভাইরাল করবো না। তবে আমি যা যা বলবো তাই তোমাকে হবে বলো রাজি

–” হ্যা আমি রাজি (কান্নাই ফুপিয়ে)
–” নিলয় চৌধুরীর স্ত্রী আদিবাকে আমি চাই
।তা যে কোনো মুল্যে। আর আমার জানা তাদের স্বামী স্ত্রী প্রেম ভালোবাসা বেশি তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরাতে তোমাকে সামান্য নাটক করতে হবে

–” অসম্ভব নিলয়ের সংসারে আমি আগুন লাগাতে পারবো না। তাছাড়া ও আমার অনেক একটা ভালো বন্ধু। তার সঙ্গে এই জঘন্যতম নাটক আমি করতে পারবো না

–” নুসরাত বেশি বাড়াবাড়ি করো না। তোমাকে দিয়ে কাজ হবে দেখেই এই মাষ্টার প্ল্যান কাজে লাগিয়েছি এতে জল ঢেলে দিচ্ছো তার পরিনাম কিন্তু খুব ভয়াবহ হবে। ভিডিও টা একবার ভাইরাল হলে তোমার অবস্থা কেমন হবে নুসরাত ভাবতে পারছো নুসরাত (ডেবিল মার্কা হেসে)

তানবীরের এমন blackmail করাতে নিরুপায় হয়ে তোর সঙ্গে জঘন্যতম নাটকটা করেছি। এছাড়া আমার ব্যাক্তিগত কোনো স্বার্থ নেই –

নুসরাত কাছ থেকে ঘটনাটা শুনার পর নিলয় বসা থেকে উঠে রাগান্বিত হয়ে বলে উঠে____?
!
!
(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here