পিচ্চি চাচাতো বোন,পর্বঃ১
আবির হাসান নিলয়
সকাল সকাল আম্মুর বকানি খেয়ে ঘুম থেকে
উঠতে হলো।এটা অবশ্য নৃত্যনতুন ব্যাপার না।
প্রতিদিন আম্মুর বকানি খেয়েই ঘুম থেকে উঠতে
হয়।বিছানার উপর বসে ঘুমের জন্য দোল খাচ্ছি..
আম্মুঃতোকে উঠতে বললাম না
আমিঃউঠলাম তো(ঘুম ঘুম নিয়ে)
আম্মুঃযা তাড়াতাড়ি ফ্রেস হয়ে নে(ঝাড়ি মেরে)
আমিঃএই শোনেন,আপনি কি কখনো ভালো করে
কথা বলতে পাড়েন না।সব সময় ধমকের উপরে
রাখেন কেনো?
আম্মুঃআমি এমনি তুই ফ্রেস হতে যা
আমিঃআপনি যান আমি যাচ্ছি
আম্মুঃতোকে আমি..?
আমিঃআরে আরে রাগ করছো কেনো যাচ্ছি তো
আর কোনো কথা না বলে বাথরুমে চলে এলাম।
প্রতিদিন বকা খাওয়ার রুটিন তৈরি হয়েছে।
ভালো লাগে না।বাথরুম থেকে বের হয়ে রুমে এসে
ড্রেস পড়তে লাগলাম।
আপনাদের তো পরিচয় দেয়া হয়নি।ঠিক আছে
এখন দিচ্ছি,আমি আবির হাসান নিলয়।আব্বু
আম্মুর দ্বিতীয়/ছোট ছেলে।বড় একটা ভাই আছে।
কিন্তু আব্বু আম্মুর কাছে ছিলো।কারণ এখন
উনারা তাকে সন্তান হিসাবে মানতে নারাজ। আজ
থেকে দুবছর আগে আব্বু আম্মু ভাইয়াকে বাসা
থেকে তাড়িয়ে দেয়।কেনো তাড়িয়ে দিয়েছে আস্তে
আস্তে জানতে পাড়বেন।
ড্রেস পড়ে নিচে আসতেই দেখলাম আব্বু বসে
খবরের কাগজ পড়ছে।আম্মুকে রাগানোর হেব্বি
প্ল্যান করে আব্বুর কাছে গিয়ে বসলাম।
আমিঃকেমন আছো আব্বু?
আব্বুঃতুই কি আমাকে বলছিস?
আমিঃতো তুমি ছাড়া এখানে কে আছে?
আব্বুঃকখনো জানতে চাস না। তাই অবাক না হয়ে
পাড়লাম না(আম্মু টেবিলে খাবার দিচ্ছিলো)
আমিঃএখন তো জানতে চেয়েছি
আব্বুঃহুম ভালো।তোর লেখাপড়ার কি খবর?
আমিঃচলছে ভালোই।আব্বু কিছু টাকা লাগতো
আম্মুঃতোর এতো টাকা লাগবে কেনো?
আমিঃবন্ধুদের সাথে ঘুরতে হলে তো লাগবেই
আম্মুঃতোকে আর একটা টাকাও দিবো না
আমিঃআব্বু তুমি এই মহিলাটাকে কেনো বিয়ে
করেছিলা,পৃথিবীতে কি মেয়ের অভাব পরেছিলো?
যখনি দেখি তখনি বকা, ঝারি আর ধমকের উপরে
রাখে।(যদিও আম্মু একদম এমন না)
আব্বুঃকি করবো তোর দাদু গলাই ঝুলিয়ে দিছে
আম্মুঃবাবা ছেলে ভালোই দুর্নাম করছো।করো
করো একদিন একদিন ঠিকি বুঝবে
আব্বুঃশোনো,এই বয়সে ছেলেরা টাকা একটু নিয়ে
খরচ করবে এটাই তো স্বাভাবিক তাই না
আম্মুঃযা ইচ্ছা করো আমার কি?
খাবার খেয়ে কলেজের উদ্দেশ্য রওনা দিলাম।
——————————————–
বাসা থেকে মোটরসাইকেলে উঠবো এমন সময়
জয়ের কল আসলো।সালা হারামজাদা কল দেয়ার
সময় পেলো না।
আমিঃহ্যা বল
জয়ঃতুই কোথায়
আমিঃরওনা দিবো এখন
জয়ঃগাড়ি নিয়ে আসিস আজ
আমিঃকেনো?
জয়ঃকলেজ শেষ করে নানু বাসায় যেতে হবে
আমিঃতো গাড়ি আনার কি আছে?
জয়ঃচারজন কি এক মোটরসাইকেলে যাওয়া যাবে
আমিঃরাফির মোটরসাইকেল ঠিক হয়নি?
জয়ঃনা
আমিঃঠিক আছে।এখন রাখছি।
মোটরসাইকেলে আর না উঠে রহিম চাচাকে(দারোয়ান)
চাবি নিয়ে একটা গাড়ি নিয়ে কলেজের দিকে
রওনা দিলাম।
বন্ধু আছে অনেক কিন্তু কলিজার বন্ধু আমরা
চারজন। আমি,জয়,রাহুল,রাফি।গত পরশু
রাতে বাসায় আসার পথে রাফির মোটরসাইকেলের
এক্সিডেন্ট হয় (নেশাগ্রস্থ ছিলাম সবাই)।এখনো
ঠিক হয়নি।আর আমরা সবাই এবার অনার্স তৃতীয়
বর্ষের স্টুডেন্টস।
কথা বলতে বলতে কলেজ চলে এসেছি।গাড়িটা
পার্ক করে চলে গেলাম আড্ডার স্থান জামরুল
গাছের নিচে।আগে থেকেই সবাই ছিলো।
রাহুলঃএই নে তোর লেটার
আমিঃকে দিলো আজ?
রাহুলঃমায়া
আমিঃকোন মায়া
রাহুলঃ অনার্স প্রথম বর্ষের
আমিঃতোর কাছেই রেখে দে।
জয়ঃসালা তোর জন্য আমাদের কোনো মেয়ের
সাথে প্রেম হচ্ছে না
আমিঃআমি আবার কি করলাম
রাফিঃকি করছিস মানে,কোনো মেয়ে তো সাহস
করে লাভ লেটার তোকে দেয় না।আমাদের হাত
দিয়ে তোর কাছে দেয়া হয়।কিন্তু আমাদের যাদের
ভালো লাগে তাদের ভালোবাসার কথা বললে
তোর ওই লাভ লেটারের কথা বলে।কতো করে
বুঝিয়েছি ওই সব লেটার আমাদের না নিলয়ের
কিন্তু একটাও বোঝে না
আমিঃআহারে জীবনডা বেদনা?
রাহুলঃচুপ থাক তুই।তুই কেনো প্রেম করিস না?
আমিঃআব্বু আম্মুকে হারাতে চাই না।
জয়ঃআবার সেই একই উত্তর।চল ক্লাসে যায়
সবাইঃহ্যা চল
ক্লাসে আসবো এমন সময় তানিয়ার সাথে দেখা।
এক নাম্বারের বদজাত মেয়ে।কলেজের ছেলেদের
উপর র্যাগিং চালায়।ওর একটা গ্রুপ আছে সেই
গ্রুপের মাধ্যমে র্যাগ করে।বাবা কলেজের প্রিন্সিপাল
তাই ভয়ে কেউ কিছু বলে না।যদিও আমাদের
কাউকে এখনো কিছু বলেনি।তবে কলেজে আমার
যদি একটাও শত্রু থেকে থাকে সেটা হলো তানিয়া।
তানিয়াঃকিরে গাঁজাখুরি দল কেমন আছিস
আমিঃএকদম ভালো ময়দা সুন্দরি
তানিয়াঃঐ তুই আমাকে ময়দা সুন্দরি বললি কেনো
আমিঃতুই আমাদের গাঁজাখোর বললি কেনো
তানিয়াঃতোর ভাই যেমন গুন্ডা ছিলো ঠিক তেমন
হয়েছিস,দুজনের কেউ মেয়েদের সাথে কিভাবে
কথা বলতে হয় জানিস না
আমিঃওহহ এখন আমার ভাই না।তোর বোন যে
অন্য একটা ছেলের হাত ধরে পালিয়ে বিয়ে
করলো সেটা কিছু না।আগে নিজের বোনের
সম্পর্কে সচেতন হো বুঝলি
তানিয়াঃঠাসসস কুত্তা ছেলে
আমিঃঠাসসস ঠাসসস কুত্তা ছেমড়ি। ভাগ এখান
থেকে না হলে আবার দিবো
তানিয়া রাগ দেখিয়ে চলে গেলো।
মেয়ে হয়ে ছেলেদের মারার শখ আজ বের করে
দিলাম।একটার পরিবর্তে দুইটা থাপ্পড়। আহা কি
শান্তি।এসব ভাবতে ভাবতে ক্লাসে চলে এলাম।
জয়ঃএটা কি তুই ঠিক করলি
আমিঃভুল করলাম কোথায়
জয়ঃএমনিতেই তোদের পরিবারের সাথে ওদের
আগে থেকেই ঝামেলা এখন যদি তানিয়া গিয়ে
ওর আব্বুকে বলে দেয়।
আমিঃতো…!
জয়ঃএখন যদি তোকে পানিশমেন্ট দেয়
আমিঃওর বাবা কেনো,ওর বাবার বাবা আসলেও
আমার একটাও চুল ছিঁড়তে পাড়বে না।
বন্ধুদের সাথে কথা বলতে বলতেই রুমে ম্যাম
আসলো।
কিছু সময় ক্লাস চলার পর।
ম্যামঃনিলয় (কাছে এসে)
আমিঃজ্বি ম্যাম বলেন (দাঁড়িয়ে গিয়ে)
ম্যামঃতোমার গালে এটা কিসের দাগ
আমিঃআসলে ম্যাম,একটা বদজাত মেয়ের থেকে
থাপ্পড় খেয়েছি(তানিয় ক্লাসমেট। ওকে শুনিয়ে বললাম)
কথা শেষ হতে না হতেই সবাই হাসা ধরলো।
ম্যামঃতুমি মেয়ের হাতে থাপ্পড় খেয়েছো,কিছু
বললে না তুমি?
আমিঃশোধ করার পরেও একটা ফ্রি দিয়েছি?
তানিয়ার দিকে লক্ষ্য করলাম প্রচুর রেগে গেছে।
আমার দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে কিছু সময় তাকিয়ে
থাকার পর অন্যদিক ফিরলো।
——————————————-
সব গুলো ক্লাস করে বাইরে আসতেই জুনায়েদ
(আমার এক ব্যাচ জুনিয়র)বলল…
জুনায়েদঃনিলয় ভাইয়া
আমিঃহ্যা বলো
জুনায়েদঃআপনাকে প্রিন্সিপাল স্যার ডেকেছেন
আমিঃঠিক আছে।
জুনায়েদ চলে যাওয়ার পর আমরা প্রিন্সিপাল
স্যারের রুমের দিকে যেতে লাগলাম।
জয়ঃতোকে আগেই বলেছিলাম কিছু একটা হবে
রাফিঃআমি শিওর ঐ তানিয়া সব করেছে
আমিঃঐ তোরা চুপ থাক।
প্রিন্সিপাল স্যারের রুমে আসলাম।
আমিঃস্যার আসবো?
স্যারঃহ্যা আসো
আমিঃবলুন স্যার(দেখলাম তানিয়া আছে)
স্যারঃতুমি তানিয়ার গায়ে হাত তোলার সাহস
কোথায় পেয়েছো?
আমিঃআপনার মেয়ে আমার গায়ে হাত তোলার
সাহস কোথায় পেয়েছে,আপনার মেয়ে কলেজের
সকল ছাত্রদের উপর র্যাগ করে।সবাই আপনার
ভয়ে ওকে কিছু বলতে সাহস পাইনা।কিন্তু আমি
আপনার এই বদজাত মেয়েকে কিংবা আপনাকে
কাউকেই ভয় পাইনা।তাই থাপ্পড়ের জবাব থাপ্পড়
দিয়ে শোধ করেছি।
স্যারঃবেয়াদবের মতো একদম কথা বলবে না
আমিঃআমি বেয়াদবের মতো কথা বলছি না।এখন
যদি আপনার সাথে আব্বুর আগের সম্পর্ক থাকতো
তাহলে আপনি কখনো আমাকে এভাবে কথা
শোনাতে পাড়তেন না।আপনার কাছে আমি
বেয়াদব। কারণ আপনার পরিবারের সাথে আমার
পরিবারের শত্রুতা তাই।অন্যান্য স্যার ম্যামদের
জিজ্ঞাস করেন আমাদের দুজনের ব্যাপারের।
জানতে পারবেন আমি নাকি আপনার মেয়ে
বেয়াদব। ভালো থাকবেন।
বলে স্যারের রুম থেকে বেরিয়ে আসলাম।
জয়ঃকি বললো রে
আমিঃযেটা বলার কথা সেটা।বাদ দে সেসব কথা।
রাফিঃএখন চল
জয়ঃহ্যা চল
তারপর সবাই মিলে গাড়িতে উঠলাম।উদ্দেশ্য
জয়ের মামার বাসা।আজ ওর মামাতো বোনের
বার্থডে। জয় না গেলে ওর মামাতো বোন কেক
কাটবে না।আর জয় আমাদের ছাড়া যাবেনা। তাই
সবাই মিলে যাচ্ছি।
অনক্ষণ ড্রাইভ করার পর গ্রামে চলে আসলাম।
জয়ের মামার বাসা আর ছোট চাচ্চুর বাসা
পাশাপাশি গ্রামে।ইচ্ছা করছে একটু ঘুরে আসি।
কিন্তু পিচ্চিটার অত্যাচার একদম ভালো লাগে না।
সবসময় বায়না ধরে।আমাকে।একদম বরের মতো
কাজ করায়।ওকে নিয়ে ঘুরতে হবে,চিপস খেতে
হবে,ছাদে গিয়ে গল্প করতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।
যেসব আমার একদম সহ্য হয়না।
বাসার ভিতরে আসার পর হাতমুখ দিয়ে সবাই
মিলে একটা রুমে গেলাম।
কয়েকটা মেয়ে রুমে এসে খাবার বেড়ে দিতে
লাগলো।বুঝলাম না,আমার বন্ধুদের যারা খাবার
দিচ্ছে তাদের সবার মুখ দেখা যাচ্ছে শুধু মাত্র
আমাকে যে খাবার বেড়ে দিচ্ছে তার ছাড়া।কারণ
তার মুখ ঢেকে রাখা।তবে চোখে কেমন একটা
মায়া আছে। টানা টানা চোখ দেখেই মনের মধ্যে
ভালোবাসার বাতাস বয়ে গেলো।কিছু বলতে যাবো
তার আগেই মেয়েটা চলে গেলো।
খাবার শেষ করে বিছানায় শুয়ে শুয়ে ঐ মেয়েটার
কথায় ভাবছি।কে হতে পারে,মেয়েটা কি যাদু জানে?
হয়তো জানে,না হলে আমার মন চুরি করে যেতো না।
রাহুলঃকি ভাবছিস এমন করে?
আমিঃওই মেয়েটার কথা
রাফিঃকোন মেয়ে?
আমিঃআমাকে খাবার বেড়ে দিলো
রাহুলঃতুই মুখ দেখলি কি করে?
আমিঃমুখটা দেখতে পারিনি।তবে ওর চোখ দেখেছি
ভাই বিশ্বাস কর এতো মায়া ঐ মেয়েটার চোখে।
জয় তুই ঐ মেয়েটাকে কি চিনিস?
জয়ঃআমি কি করে চিনবো?
আমিঃতোর মামার বাসায় তুই চিনিস না?
জয়ঃনা,তবে ওগুলো সবাই রিয়ার বান্ধুবী
আমিঃওহ
জয়ঃশোন আমরা ঘুরতে বের হবো তুই যাবি?
আমিঃনা তোরা যা
জয়ঃতুই থেকে কি করবি?
আমিঃঘুমাবো
রাফিঃঠিক আছে।
ওরা সবাই চলে যাওয়ার পর ঘুমিয়ে গেলাম।
ঘুম থেকে উঠে লক্ষ্য করলাম মুখ ঢেকে রাখা
মেয়েটা বাইরে বসে আছে।আমি তাকাতেই চলে
গেলো।হয়তো আমার দিকেই তাকিয়ে ছিলো।
কারণ,আমি তাকানোর সাথে সাথে মাথা নিচু
করে উঠে চলে গেলো।
—————————————
কেক কাটার সময়……
সবাই কেক কাটার জন্য রিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে
আছে সাথে মুখ ঢেকে রাখা মেয়েটাও রয়েছে।
মনে হচ্ছে রিয়ার বান্ধুবী।হঠাৎ মনে হলো এই
মেয়েটা যদি রিয়ার ফ্রেন্ড হয় তাহলে নিশ্চয় ওকে
কেক খাওয়াতে যাবে আর তখন তো খুলতেই
হবে।মেয়েটার দিকে অনেক মনোযোগ দিয়ে
তাকিয়ে আছি।এমন চোখ কোথাও দেখেছি বলে
মনে হয় না।রিয়া কেক কাটার পর প্রথমে তার
বাবা মাকে খাইয়ে দিলো।তারপর রিয়া ঐ মুখ
ঢেকে রাখা মেয়েটার সাথে কিছু একটা কথা বলে
জয় এবং তার সকল বান্ধুবীদের খাইয়ে দিলো।
কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো শুধুমাত্র ঐ
মেয়েটাকেই খাইয়ে দিলো না। ধুর কপালটাই খারাপ।
অনুষ্ঠান মোটামুটি শেষ,আমার আবার বাসায়
যেতে হবে।না হলে আম্মু ইচ্ছামতো পিটাবে।
আমিঃজয়…!
জয়ঃহ্যা বল
আমিঃরিয়াকে ডেকে দে তো
জয়ঃভাই তোর পায়ে ধরি ওর সাথে প্রেম করিস না
আমি সেই ছোট থেকে ওকে ভালোবাসি
আমিঃসালা লাথি দিবো তোকে।আমি কি বলছি
ওর সাথে আমি প্রেম করবো
জয়ঃতাহলে
আমিঃতুই আগে ডেকে দে
জয়ঃদাড়া।
(জয় রিয়াকে গিয়ে ডেকে আনলো)
আমিঃমুখ ঢেকে রাখা মেয়েটা কি তোমার ফ্রেন্ড?
রিয়াঃজ্বি ভাইয়া কেনো?
আমিঃওর চেহারা লুকিয়ে রাখছে কেনো?
রিয়াঃসেটা ও নিজেই ভালো বলতে পাড়বে
আমিঃওকে আমি দেখতে পাড়বো?
রিয়াঃনা ভাইয়া।ওর চেহারা কাউকে দেখায় না
আমিঃওর নাম বা পরিচয়
রিয়াঃসেটাও বারণ করেছে।আচ্ছা ভাইয়া আমি
এখন আসি।
আর কোনো কথা না বাড়িয়ে রিয়া চলে গেলো।
প্রচুর রাগ হচ্ছিলো রিয়ার উপর।সামান্য একটু
নাম আর পরিচয় জানতে চাইলাম সেটাও বলল
না।বাসা থেকে বের হয়ে আসতে লাগলাম।
রাফিঃকিরে কই যাস?
আমিঃবাসায়
জয়ঃখেয়ে যায় সবাই
আমিঃতোরা খেয়ে আসিস।আমি গেলাম বাই
জয়ঃনিলয়,প্লিজ রাগ করিস না।এখন চলে গেলে
সবাই অন্য কিছু ভাববে
আমিঃযার যেটা ভাবার বিষয় ভাবতে দে আমার
তাতে আমার কি।তোরা আসলে আয় না আসলে
থাক আমি একাই চলে যেতে পারবো
সবাইঃআমরা থেকে কি করবো,আমরাও যাবো
আমিঃতাহলে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো?
জয়ঃআমি সবাইকে বলে আসি?
আমিঃতোর বলা লাগবে না, তুই বরং এখানে থাক
রাফিঃচল সালা(জয়কে টানতে টানতে নিয়ে আসলো)
গাড়িতে উঠে ড্রাইভ করতে লাগলাম।
অনেকক্ষণ চলার পর ওদের সবাইকে বাসায়
নামিয়ে দেয়ার পর আমিও বাসায় চলে আসলাম।
চুপিচুপি বাসার মধ্যে ঢুকলাম।যদি আম্মু জানে
এতো রাত করে বাসায় আসছি কপালে একদম
শনি ধরাই দিবে।
আম্মুঃকোথায় ছিলি?
হঠাৎ করে এমন কথা শোনার পর ভয় পেয়ে
দাঁড়িয়ে গেলাম।না জানি এখন কি হবে।
আম্মুঃআমি তোকে জিজ্ঞাস করছি
আমিঃআসলে আম্মু
আম্মুঃকোথায় গিয়েছিলি তুই(ধমক দিয়ে)
আমিঃজয়ের মামার বাসায়
আম্মুঃকেনো?
আমিঃওর মামাতো বোনের বার্থডেতে
আম্মুঃকখনো বার্থডে পার্টিতে যাসনি।আর মেয়েদের
বার্থডেতেই কেনো ছেলে বন্ধুরা নাই…….
শুরু করলো বকক দেয়া।আম্মুর বকা দেয়া শুনে
আব্বু রুমের বাইরে এলো।
আব্বুঃওকে বকছো কেনো?
আম্মুঃশুধুমাত্র তোমার জন্যই ছেলেটা নষ্ট হয়ে
যাচ্ছে।যেটা ছিলো সেটা তো মুখে চুনকালি মাখিয়ে
চলে গেছে এখন আবার এটা শুরু করেছে।
আম্মু আর কিছু না বলে রুমে চলে গেলো।
আব্বুঃতোর অনেক কষ্ট হয় তাই না?
আমিঃএকদম না।আর যাও গিয়ে আম্মুর মাথা
ঠান্ডা করো আমার ক্ষুধা লাগছে।
আব্বুঃহুম
টেবিলে আগে থেকেই খাবার রাখা ছিলো সেগুলো
খেয়ে রুমে আসলাম।আমার কি দোষ,ভাইয়ার
জন্য কেনো আমাকে এসব শুনতে হবে।নিজেকে
সুন্দর ভাবে তুলে ধরতেই পারিনা।সব সময় আম্মুর
এমন কথা অনেক খারাপ লাগে।কিন্তু আম্মু আগে
একদম এমন ছিলো না।বন্ধুদের মতো আচরণ
করতো।তবে এখন আর বন্ধু নেই।আমি জানি
আম্মু আমাকে ভাইয়ার মতো হারাতে চাই না।তাই
সব সময় আমাকে শাসন করে।হ্যা, ভাইয়াকে
বাসা থেকে বের করেছিলো ঠিকি কিন্তু তাদের
মনে এখনো ভাইয়া আছে।ফোনে এলার্ম দিয়ে
ঘুমিয়ে গেলাম।যেনো আম্মুর ঝাড়ি শুনতে না হয়।
পরেরদিন…..
এলার্মের শব্দে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে নিলাম।
অনেক সকালে ঘুম থেকে উঠার কারণে ফোন
নিয়ে ছাদে গেলাম।গতকাল মেয়েটার একটা
ছবি তুলেছিলাম সেটাই ভালো করে দেখতে
লাগলাম।হঠাৎ আম্মুর ফোন থেকে কল আসলো।
আম্মুঃকোথায় তুই
আমিঃছাদে কেনো?
আম্মুঃনিচে আয়
আমিঃঠিক আছে আসছি
নিচে এসে,,,
আম্মুঃছাদে কি করছিলি?
আমিঃসকাল সকাল ঘুম ভাঙার কারণে ছাদে
গিয়ে মনটাকে ফ্রেস করছিলাম।
আম্মুঃভালোই কথা বলতে শিখেছিস।
আমিঃতোমার থেকেই শিখেছিলাম।
আম্মুঃথাক পাম দেয়া লাগবে না।তোর এক্সাম
কবে থেকে শুরু?
আমিঃএইতো সামনের ২৫তারিখ থেকে কেনো?
আম্মুঃজান্নাতের বিয়ে তাই যেতে হবে
আমিঃকিহহ,ঐ পিচ্চিটাকে কে বিয়ে করবে?
আব্বুঃতোর ভাবতে হবে না।আমাদের মেয়েকে
বিয়ে করার জন্য কতো ছেলে লাইন ধরে আছে
আমিঃবাবাহ আইছে সুনাম করতে
আম্মুঃচুপচাপ খেয়ে দেয়ে কলেজে যা।
আমিঃহুম।
নাস্তা করার পর কলেজে চলে আসলাম।
কিন্তু কলেজে আসতেই মাথা গরম হয়ে গেলো?
চলবে………