পিচ্চি চাচাতো বোন,পর্বঃ৩

0
1216

পিচ্চি চাচাতো বোন,পর্বঃ৩
আবির হাসান নিলয়

জান্নাত বাসার দরজাটায় কয়েকবার
টোকা দিতেই ভিতর থেকে দরজা খুলে দিলো।
সামনে একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে।তার চোখের
দিকে তাকিয়ে সেই মায়াটা খুঁজে পাচ্ছি না।
জান্নাতঃঝুমুর,মাওয়া কোথায়?
ঝুমুরঃও তো বাসায় নাই
জান্নাতঃকোথায় গেছে?
ঝুমুরঃমামার বাসায় গেছে।
আমিঃআসবে কবে?
ঝুমুরঃসেটা জানিনা
আমিঃমাওয়া তোমার কি হয়?
ঝুমুরঃআমার ছোট চাচার মেয়ে
আমিঃওর নাম্বার দেয়া যাবে?
ঝুমুরঃআসলে…(থামিয়ে দিয়ে)
জান্নাতঃমাওয়া ফোন ব্যবহার করেনা
আমিঃজানলি কি করে
জান্নাতঃআমার ফ্রেন্ড তাই
ঝুমুরঃউনি কে জান্নাত?
জান্নাতঃও হচ্ছে….
আমিঃতুই চুপ কর আমি বলছি,আমি ওর বড়
আব্বুর ছেলে নিলয়।
জান্নাতঃআপনাকে বলতে বলছি?
আমিঃনা বললে তুই উল্টা পাল্টা সব বলতি
জান্নাতঃবাসায় চলেন তারপর দেখাচ্ছি
ঝুমুরঃজান্নাত উনাকে নিয়ে ভিতরে আয়
জান্নাতঃতার দরকার নেই।এখন বাসায় যাবো
সেখানে আর এক মুহূর্ত দাঁড়িয়ে না থেকে জান্নাত
বাসার দিকে হাটা ধরলো।মেয়েটার যে পরিমাণ
জেদ আর রাগ বাসায় যদি আব্বুকে বলে দেয়
আমি তো শেষ।না না এখনি ওকে বোঝাতে হবে
না হলে আমার কপালে শনি ধরাই দিবে।জান্নাত
অনেকটা জোড়েই হেটে চলেছে।

দৌড়ে গিয়ে ওর হাত ধরলাম।
আমিঃএতো জোড়ে যাচ্ছিস কেনো?
জান্নাতঃহাত ছাড়ুন
আমিঃছাড়বো না।
জান্নাতঃআমি কিন্তু চিৎকার দিবো
আমিঃদিলে দিতে পাড়িস সমস্যা নেই।কিন্তু প্লিজ
বাসায় কিছু উল্টাপাল্টা বলিস না
জান্নাত কিছু বলার আগে দুটো লোক এসে হাজির
—কি হচ্ছে এখানে,মেয়ে দেখলেই হাত ধরতে
ইচ্ছা করে তাই না?
—জান্নাত,কে এটা
আমিঃআমি জান্নাতের চাচাতো ভাই।রেগে গেছে
তাই বোঝাচ্ছি আপনারা যান
—জান্নাত ছেলেটা কি সত্যি বলছে?
জান্নাতঃনা
আমিঃনা মানে,মিথ্যা বলছিস কেনো?
জান্নাতঃযেটা সত্যি সেটা বলছি আপনি কে?
—তারমানে তুই ছেলেটাকে চিনিস না?
জান্নাতঃসেটা আপনাদের জানতে হবে না কাকু।
আপনারা যেতে পাড়েন
লোক দুটো জান্নাতের কথা শুনে চলে যেতেই
স্বস্তির একটা নিশ্বাস ফেললাম।পাগলিটা যদি
কিছু উল্টাপাল্টা বললেই জনগণের হাতে মার
খেতে হতো।তারপর দুজন মিলে একসাথে
হাটতে লাগলাম আর হাত আগেই ছেড়ে দিছি।
আমিঃতোর মাথায় কি মাঝেমধ্যে ভুত চাপে?
জান্নাতঃএখনো চাপেনি।তবে আপনি আমার কথা
না শুনলে চাপবে
আমিঃতোর আবার কিসের কথা
জান্নাতঃঠিক এই কথাটাই আমার সহ্য হয়না
আমিঃকোন কথা?
জান্নাতঃআমাকে তুই করে বলতে পারবেন না
আমিঃতুই করে বলবো না তো কি বলবো?
জান্নাতঃতুমি করে বলবে
আমিঃদেখ তুই আমার থেকে ছোট তার উপর
তোকে ছোট থেকে তুই করে বলে আসছি
জান্নাতঃঠিক আছে আমি বাসায় আগে যায়
তারপর সব বলে দিবো
আমিঃকি বলবি তুই?
জান্নাতঃবলবো,আমার ফ্রেন্ডের মাঝে আপনি
আমাকে মেরেছেন
আমিঃমিথ্যাবাদী একটা
জান্নাতঃহুহ
আমিঃওই শোন না
জান্নাতঃউহু
আমিঃআরে শোন তো
জান্নাতঃকিহ
আমিঃআমি তোর কথা রাজি
জান্নাতঃতাহলে তুই করে বলছেন কেনো?
আমিঃঠিক আছে তুমি
জান্নাতঃএইতো গুড বয়

জান্নাতের সাথে কথা বলতে বলতে বাসায় চলে
আসলাম।রাতের একা একা রুমে বসে আছি
তখন ভাইয়ার কথা মনে পড়তেই দেড়ি না করে
ভাইয়াকে কল দিলাম।
আমিঃকেমন আছিস
ভাইয়াঃএইতো ভালো,তোরা সবাই কেমন আছিস
আমিঃসবাই ভালো।আর ভাইয়া ৪দিন পর
জান্নাতের বিয়ে
ভাইয়াঃওহ
কথাটি শোনার পর ভাইয়ার মন অনেকটা খারাপ
হয়ে গেলো যেটা তার চেহারা দেখে স্পষ্ট বুঝতে
পারছিলাম।এসব ভুলানোর জন্য বললাম…
আমিঃভাইয়া ভাবি কোথায়
ভাইয়াঃএইতো এদিকে আসো নিলয় কল দিছে
ভাবিঃকেমন আছিস নিলয়
আমিঃএইতো ভাবি ভালো।তোমরা কেমন আছো?
ভাবিঃভালো আছি।আব্বু আম্মু কোথায়?
আমিঃউনারা নিচে বসে আছেন
ভাইয়াঃতোর সাথে যে আমাদের কন্টাক্ট আছে
সেটা কি আব্বু আম্মু জানে?
আমিঃজানলে কি আমাকে কথা বলতে দিতো?
ভাইয়াঃসেটা ঠিক
আমিঃআভা মামনি কোথায় ভাবি?
ভাবিঃফ্লোরে বসে খেলা করছে।এক সেকেন্ড আমি
ওকে নিয়ে আসি
ভাবি আভাকে নিয়ে আসলো
আমিঃহাই মা কেমন আছো
বুঝতেই পারছেন ছোট বাচ্চারা কিভাবে কথা বলে।
মাত্র ১বছর বয়স।দেখতে অনেক অনেক কিউট।
মাঝে মাঝে মন খারাপ হলে আভার সাথেই মজা
করি।আভা হাসি দিলে ওর দু গালেই ডোল পড়ে
যেটা দেখে নিজের মন ভালো হয়ে যায়।আরো
কিছু সময় কথা বলার পর কল কেটে দিয়ে
দরজার দিকে তাকাতেই থ হয়ে গেলাম।

সামনে জান্নাত দাঁড়িয়ে আছে।এখন যদি ও আব্বু
আম্মুকে বলে দেয় তাহলে তো আমাকে একদম
মেরে ফেলবে।আল্লাহ…!আর এই মেয়ে এখানে
কেনো।আহহহহ,মাথায় কাজ করছে না।
জান্নাতঃভাইয়ার সাথে কথা বলা তাই না
আমিঃজান্নাত আমার কথা শোনো(এগিয়ে গিয়ে)
জান্নাতঃজ্বি না।
আমিঃপ্লিজ আমার কথাটা শোনো
জান্নাতঃআপনি ভাইয়ার সাথে এখনো কথা বলেন
এটা যদি বড় আব্বু জানে তাহলে কি করবে
আমিঃআমি তোমাকে সেটাই বলবো আগে আমার
কথাটা শোনো
জান্নাতঃহুহ
দরজা আটকিয়ে দিয়ে জান্নাতকে খাটের উপরে
বসিয়ে বললাম।
আমিঃভাইয়ার সাথে কথা আমি আগে থেকেই
বলি কিন্তু আব্বু আম্মু জানে না।শুধু আব্বু আম্মু
না কেউ জানেনা আমি ভাইয়ার সাথে কন্টাক্ট
রেখেছি। কিন্তু আজ তুই জেনে গেছিস।
জান্নাতঃএখন আমি বড় আব্বুকে বলে দিবো
আমিঃএটা বললে সবার ক্ষতি ছাড়া লাভ কিছুই
হবে না।
জান্নাতঃকিন্তু আমি বলবোই
আমিঃজান্নাত আমার কথাটা বোঝার চেষ্টা কর
জান্নাতঃকিছু বোঝার দরকার নেই আমার
আমিঃঠাসসসস
জান্নাতঃ….(থাপ্পড় খেয়ে গালে হাত দিলো)
আমিঃখুব খুশি হবি এটা সবাইকে বলে তাই না।
কিন্তু এটা বললে কি হবে জানিস,আব্বু ভাইয়ার
মতো আমাকেও বাসা থেকে বের করে দিবে।
তখন ভাবিস না আমিও ভাইয়ার মতো দূরে চলে
যাবো।আমি দূরে যাবো না।সবাইকে ছেড়ে অচিন
দেশে পাড়ি জমাবো। কারণ,আমি আব্বু আম্মুকে
ছাড়া থাকতে পারবো না।তোরা সবাই এটুকু
জানিস আব্বু ভাইয়াকে বাসা থেকে বের করে
দিয়েছে এবং তার সাথে কেউ কোনো কন্টাক্ট
রাখতে পারবে না।মাঝেমধ্যেই ভাইয়ার সাথে
কথা হয় আমার।সবার কথা শোনে, কে কেমন
আছে। সবার শরির ঠিক আছে কিনা। আজ
যখন তোর বিয়ের কথা বললাম তখন আমি
ভাইয়ার চেহার দেখে বুঝতে পারছিলাম তোর
বিয়েতে আসতে পারবে না বলে মন খারাপ করছে
আর তুই আমাদের দুজনকে আলাদা করতে
চাইছিস।আমি যেমন আব্বু আম্মুকে ছাড়া
থাকতে পাড়বো না তেমনি ভাইয়ার সাথে কথা
না বলেও থাকতে পাড়বো না।আর তোকে মারার
জন্য আমি সরি। এখন তুই যা।

কিছু সময় চুপ থাকার পর জান্নাত বলল..
জান্নাতঃআসলে আমি..(থামিয়ে দিয়ে)
আমিঃএসব শুনতে চাইছি না।তুই যাকে বলার
তাকে বল আমি বারণ করবো না
জান্নাতঃকিন্তু আমার..
আমিঃতুই যা এখান থেকে(ধাক্কা দিয়ে)
জান্নাতঃআপনাকে খাবার খাওয়ার জন্য ডাকছে
আমিঃখাবো না বলে দে
জান্নাতঃকেনো?
ওর কথায় কোনো উত্তর না দিয়ে রুম থেকে
জান্নাতকে বের করে দিয়ে ঘুমিয়ে গেলাম।জেগে
থাকলে সবাই এসে প্যানপ্যান করবে।

পরেরদিন….
খুব ভোরেই ঘুম ভেঙে গেলো।তাড়াতাড়ি ঘুমালে
যেটা হয় আর কি।ফ্রেস হয়ে রুমের বাইরে এসে
দেখলাম এখনো সবাই ঘুমিয়ে আছে।নিচে ফ্রিজে
রাখা দুটো আপেল নিয়ে ছাদে চলে গেলাম।
অনেক ক্ষুধা লেগেছে ছাদের রেলিংয়ের উপর
বসে আপেল খেতে খেতে গ্রামের ভোরের সকাল
দেখতে মনোযোগ দিলাম।ছাদে অনেকক্ষণ বসে
আছি কিন্তু হঠাৎ করে নিচে চিৎকার চেঁচামেচি
শুনতে পেয়ে দৌড়ে নিচে আসলাম।
জান্নাত কান্না করছে দেখে আব্বু আম্মু চাচ্চু
সবাই মিলে সান্তনা দিচ্ছে।পেত্নীর হবু বর মরে
গেলো নাকি।
আমিঃও কান্না করছে কেনো?
আব্বুঃতুই কোথায় গেছিলি?
আমিঃছাদে গেছিলাম
আম্মুঃজান্নাত তোর জন্যই কান্না করছে
আমিঃআমি আবার কি করলাম
ছোট মাঃরাতে খাবার না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ছিলি
আর আজ এতো সকালে তোকে রুমে না পেয়ে
কান্না করে দেয়
আমিঃআমার জন্য ওর কান্না করতে হবে কেনো?
আম্মুঃতো কার জন্য করবে?
আমিঃমানে…
আম্মুঃজান্নাতের সাথে তোরই বিয়ে
আমিঃকি আজেবাজে বলছো
আব্বুঃঠিকি বলছে,তোকে জানানো হয়নি কারণ
তুই যদি না করে দিস তাই
আমিঃকিন্তু এখনো তো আমি না করতে পারি
আম্মুঃপারবি না, কারণ আমরা দুজন বলছি
আমিঃধুর
বলে চলে আসতে লাগলাম।উপরে এসে জান্নাতকে
আমার রুমে আসতে বললাম।

রুমে এসে ভাবতে লাগলাম কিভাবে কাজটা
করতে হবে।এটাই উপযুক্ত সুযোগ। জান্নাত রুমে
এসে সামনে দাঁড়ালো।
আমিঃতোকে একটা কথা বলার আছে
জান্নাতঃজ্বি আমারও আছে
আমিঃতোর আবার কিসের কথা। আমি যেটা
বলছি সেটা আগে শোন
জান্নাতঃহুম বলেন
আমিঃতোকে বিয়ে করতে আমার সমস্যা নেই।
কিন্তু একটা শর্ত আছে
জান্নাতঃহ্যা বলেন
আমিঃভাইয়াকে দেশে আনতে তুই সাহায্য করবি
জান্নাতঃঠিক আছে আমার বিয়ের আগেই ভাইয়া
এই বাসায় আসবে ঠিক আছে?
আমিঃতুই যতোটা সহজ ভাবছিস ততোটুকু
সহজ একদম না।
জান্নাতঃসেটা আমার উপরে ছেড়ে দেন।
আমিঃএখন তুই বল কি বলতে চাইলি
জান্নাতঃনা থাক
আমিঃতুই বলবি না?
জান্নাতঃবলছি বলছি
আমিঃতো বল
জান্নাতঃআপনি যাকে মাওয়া ভেবে খুঁজছেন সেটা
আর কেউ না।সেটা হলো আমি নিজেই।
জান্নাতের কথা শুনে পুড়ো বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম।
যেই মেয়েটাকে হন্ন হন্ন হয়ে খুঁজে চলেছি সেটা
আর কেউ না স্বয়ং জান্নাত।ভাবতেই কেমন
ভালো লাগা কাজ করছে।

তারপরেও নিজেকে স্বাভাবিক করে বললাম।
আমিঃতুই মাওয়া..!
জান্নাতঃজান্নাতুল মাওয়া
আমিঃকিন্তু তুই আমাকে পরিচয় দিসনি কেনো?
জান্নাতঃসেদিন রিয়ার বার্থডেতে আপনাকে
দেখার পর চেহারা ডেকে নেয়।আমি বুঝতে
পারছিলাম আপনি আমাকে দেখতে চাইছিলেন
কিন্তু আমি দেখতে দেয়নি।আমার সব ফ্রেন্ডের
বলেছিলাম কেউ যেনো আমার পরিচয় না দেয়।
আর গতকাল আপনাকে রুমে বাইরে যেতে বলে
ঝুমুরকে প্ল্যান করে সব বলি যেনো আপনি কিছু
বুঝতে না পারেন।
আমিঃতুই তো দেখছি বুড়ি হয়ে গেছিস
জান্নাতঃআপনার জন্যই, সব সময় পিচ্চি বলেন তাই
আমিঃআমার কিন্তু অনেক ভালো লাগছে
জান্নাতঃহুহ
আমিঃআমার রোমান্স করতে ইচ্ছা করছে
(কোলে বসিয়ে নিয়ে ওর চুলের মধ্যে নাক ডুবিয়ে দিলাম)
জান্নাতঃহুহ ছাড়ুন
আমিঃকেনো?
জান্নাতঃবিয়ের আগে এসব ঠিক না
আমিঃতাহলে এখনি বিয়ে করে নেয়
জান্নাতঃকিন্তু ভাইয়াকে আনতে হবে
আমিঃহুম,কিন্তু এখন বিয়া করবো অন্য ভাবে
জান্নাতঃকিভাবে
আমিঃকবুল বলে।(তিনবার কবুল বললাম)
জান্নাতঃ…(দেরি না করে জান্নাতও বলল)
আমিঃআমার দিকে একটু ঘুরবি প্লিজ

জান্নাত কিছু না বলে আমাকে বিছানার উপর
ফেলে দিয়ে আমার উপরে চেপে বসলো।
আমিঃকি হলো এটা
জান্নাতঃআমাকে আর তুই করে বলতে পারবে না।
আমরা এখন থেকে স্বামী স্ত্রী বুঝলা বাবু
আমিঃবাবুউউ
জান্নাতঃহ্যা বাবু
আমিঃতোমার ঠোটটা কিন্তু অনেক সুন্দর
জান্নাতঃখেতে ইচ্ছা করছে বুঝি
আমিঃহুম
তারপর জান্নাত দুজনের ঠোট একত্রে করে নিলো।
এভাবে কিছু সময় চলার পর জান্নাত আমাকে
ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে লাগলো।
আমিঃকোথাও যাও বউ
জান্নাতঃনিচে
আমিঃকেনো?
জান্নাতঃভাইয়ার কথা বলতে
আমিঃওহ
জান্নাত কিছু না বলে চলে গেলো।বিয়ে যেহেতু
হয়েই গেছে বউয়ের সাথেই যায়।
নিচে জান্নাতের সাথে আব্বু আম্মু এবং চাচ্চু
বসে আছে।আমাকে দেখে জান্নাত বলল…
জান্নাতঃতুমি নিচে আসলে কেনো?
আমিঃবউকে সাহায্য করতে
সবাইঃবউ…!
আম্মুঃকিসের বউরে?
আমিঃজান্নাত তো আমার বউই তাই না
আম্মুঃহারামজাদা তোদের তো বিয়াই হলো না
জান্নাতঃএকটু আগেই বিয়ে হয়ে গেছে আম্মু
চাচ্চুঃতোরা কি পাগল হয়েছিস
জান্নাতঃনা,যদি আমাদের কথা না শুনো তাহলে হবো
আব্বুঃকি কথা
জান্নাতঃতুমি এখানে আসো(কাছে বসলাম)
আম্মুঃএখন বল
আমিঃআব্বু আম্মু আমরা দুজন চাই আমাদের
বিয়েতে ভাইয়া আসুক।
আব্বুঃএটা নিয়ে আমি কথা বলতে চাইনা
আমিঃকেনো বলতে চাও না।তারা ভালোবেসে
বিয়ে করেছে তাই,ভাইয়াকে বাসা থেকে বের করে
দেয়ার পর একবারের জন্য খোজ নিয়ে দেখেছো
তারা কতো কষ্টে ছিলো।ভাইয়া বাসা থেকে বের
হয়ে যাওয়ার কতোটা অসহায় হয়েছিলো জানো।
তুমি ভাইয়াকে একটা টাকা অবধি দাওনি।নিজের
সব প্রিয় জিনিষগুলোই বেচে দিতে শুরু করেছিলাম।
প্রথমে ল্যাপটপ, তারপর বাইক।কিন্তু সেটা দিয়ে
ভাইয়া ভাবির কোনো লাভ হচ্ছিলো না।ভাবির
আব্বু থানায় ভাইয়ার নামে মামলা দিয়েছিলো।
সেটা জানতে পেরেই তোমাদের আলমারি থেকে
১৫লক্ষ টাকা চুরি করে ভাইয়ার হাতে দিয়ে
বিদেশ যেতে বলি।প্রথমে নিতে চাইনি।যখন
জোড় করে দিলাম তখন নেয়।ঠিক ১সপ্তাহ পর
দুজন আমেরিকা চলে যায়।আল্লাহ সহায় ছিলো
বলেই কিছুদিনের মাঝেই একটা জব পেয়ে যায়।
তাদের ভালোবাসার ফসল হিসেবে একটা সন্তান হয়।

কথা বলা শেষ করে চুপ করে গেলাম।আব্বু কিছু
না বলে উঠে যেতে লাগলো।
জান্নাতঃবড় আব্বু তুমি যদি ভাইয়াকে মেনে না
নাও তাহলে আমরাও বাসা থেকে চলে যাবো
আম্মুঃতোরা চলে যাবি মানে
জান্নাতঃকারণ আমরাও ভালোবেসে বিয়ে করেছি
আম্মুঃকিন্তু…
আমিঃথাক আম্মু।জান্নাত তুমি পরিবারকে ছেড়ে
আমার সাথে কিছুদিন কষ্টে থাকতে পাড়বে তো।
ভাইয়াকে বলে আমরাও দেশের বাইরে চলে যাবো
জান্নাতঃহ্যা আমি পাড়বো
আমিঃযাও প্যাকিং করে নাও
দুজন উঠে রুমে আসতে যাবো এমন সময় আব্বুর
কথা শুনে দুজন দাঁড়িয়ে গেলাম।

চলবে………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here