পিচ্চি চাচাতো বোন,পর্বঃ৪ শেষ
আবির হাসান নিলয়
আব্বুর কথা শুনতেই দুজন দাঁড়িয়ে গেলাম।
আব্বুঃকাউকে কোথাও যেতে হবে না
জান্নাতঃনা আমরা যাবোই
আব্বুঃবললাম না কেউ যাবে না
জান্নাতঃতাহলে আমাদের শর্তটা?
আব্বুঃআমি রাজি।নিল আমাদের সাথেই থাকবে
আমিঃসত্যি?
আব্বুঃহ্যা সত্যি
আমিঃথ্যাংক ইউ আব্বু(জড়িয়ে ধরে)
আব্বুঃহয়েছে এখন ওকে কল করে আসতে বল
আমিঃঠিক আছে।জান্নাত আসো
জান্নাতের হাত ধরে দৌড়ে রুমে চলে আসলাম।
জান্নাতঃপাগল হয়েছো নাকি
আমিঃএকদম না বাবু
জান্নাতঃআমি ভয় পেয়ে গেছিলাম
আমিঃএতো ভয় কিসের শুনি?
জান্নাতঃতোমার জানতে হবে না।ভাইয়াকে কল
দাও তাড়াতাড়ি না হলে ঘুমিয়ে পড়বে
আমিঃহুম জানু
ভাইয়াকে কল দিলাম।
আমিঃহ্যালো ভাইয়া
ভাইয়াঃহুম বল
আমিঃএটা আমার বউ(জান্নাতকে দেখিয়ে)
ভাইয়াঃফাজলামো করিস
জান্নাতঃনা ভাইয়া সত্যি।
ভাইয়াঃজান্নাত,তোকে কিন্তু থাপ্পড় দিয়ে দাত
ফেলে দিবো।
আমিঃআরে ধুর সত্যি বলছি।আর আব্বু তোমাকে
দেশে আসতে বলছে।
ভাইয়াঃকেনো
আমিঃতোদের মেনে নিছে
ভাইয়াঃসত্যি বলছিস(আগ্রহী হয়ে)
আমিঃহুম(পুড়ো ঘটনা বললাম)
ভাইয়াঃকিন্তু
আমিঃকোনো কিন্তু না।আর ভাবি তুমি কান্না
করছো কেনো?
ভাবিঃএটা যে আনন্দের কান্না রে
জান্নাতঃথাক আর কান্না করতে হবেনা।
আমিঃতোমরা আগামীকাল তাহলে রওনা দাও
ভাইয়াঃআমরা দুপুর ২টার ফ্লাইটে রওনা দিবো
আমিঃতাহলে বাংলাদেশ সময় কয়টা হবে
ভাইয়াঃসকাল ১০টা কিংবা ১১টা
আমিঃঠিক আছে আগামীকাল আমরা দুজন
তোমাদের আনতে যাবো।
জান্নাতঃভাইয়া একটা কথা ছিলো
ভাইয়াঃকি কথা বল
জান্নাতঃআমার জন্য অনেকগুলো চকলেট আনবে
ভাবিঃতুই চকলেট দিয়ে কি করবি?
জান্নাতঃচকলেট দিয়ে মানুষ কি করে।খাবো আমি
ভাবিঃতুই কি এখনো ছোট আছিস যে ওসব
খেতে হবে
জান্নাতঃছোটই তো,তাই না গো
আমিঃভাবি এখন রাখছি।জান্নাতের সাথে কিছু
কথা আছে সেগুল বলি
ভাবিঃআচ্ছা।
কলটা কেটে দিয়ে জান্নাতকে সাথে নিয়ে খাটের
উপর বসলাম।।
আমিঃতোমার কি পিচ্চি স্বভাব যাবে না?
জান্নাতঃকোথায় আমার পিচ্চি স্বভাব
আমিঃএইযে বাচ্চাদের মতো বায়না ধরো
জান্নাতঃসেটা আমার ইচ্ছা। এখন আমাকে জড়িয়ে
নিয়ে একটু ঘুমাও তো
আমিঃবিয়ের আগে এসব ঠিক না
জান্নাতঃসকালে যে বিয়ে করলাম ভুলে গেলে
আমিঃওটা তো এমনি এমনি ছিলো
জান্নাতঃআমি মানি না।আমাকে নিয়ে এখন
ঘুমাতেই হবে।
আমিঃজান্নাত..
জান্নাতঃঘুমাও বলছি
আমিঃঠিক আছে আসো(জান্নাতকে জড়িয়ে নিয়ে
শুয়ে পড়লাম।আমার দিকে তাকিয়ে আছে।)
জান্নাতঃরাতে আমি অনেক ব্যথা পেয়েছিলাম।
আমাকে কেউ এতো জোড়ে থাপ্পড় দেয়নি
আমিঃআহারে খুব জোড়ে লাগছে বুঝি
জান্নাতঃহ্যা
আমিঃতুমি এতো মায়াবী হলে কিভাবে?
জান্নাতঃআগে থেকেই ছিলাম তুমি তো আগে
ভালো করে তাকাতেই না
আমিঃএখন তো দেখি
জান্নাতঃতোমার এতো রাগ কেনো,অল্পতেই রেগে
যাওয়া কিন্তু ঠিক না। আর শোনো….
জান্নাত নিজের মতো কথা বলতে লাগলো অপর
দিকে আমি জান্নাতের কপাল থেকে থুতনি অবধি
আঙ্গুলদিয়ে স্লাইড করতে লাগলাম।
কিন্তু হঠাৎ করেই আঙ্গুলে কামড় বসিয়ে দিলো।
আমিঃআউচচ,কামর দিলে কেনো?
জান্নাতঃবিরক্তি হচ্ছিলাম
আমিঃতাই বলে
জান্নাতঃহুম তাই বলে কামড় দিবো
ছোট মাঃতোরা দুজন খেতে আয় নিচে(বাইরে থেকে)
জান্নাতঃআসছি।
আমিঃএখন খাবো কি করে
জান্নাতঃযেভাবে খেতে সেভাবে
আমিঃব্যথা যে পেলাম
জান্নাতঃতুমি থাকো আমি খাবার নিয়ে আসি
আমিঃনা থাক আমি পাড়বো
জান্নাতঃএতো কথা বলো কেনো তুমি হ্যা?চুপটি
করে বসে থাকো আমি খাবার নিয়ে আসছি
আমিঃঠিক আছে।
রুমে বসে রইলাম আর জান্নাত নিচে গেলো
খাবার আনার জন্য।
কিছু সময় পর প্লেট ভরে খাবার নিয়ে আসলো।
আমিঃএতো খাবার কেনো?
জান্নাতঃখাবে তাই
আমিঃআমি এতো পারবো না
জান্নাতঃসাথে আমিও খাবো
আমিঃআলাদা প্লেট নাই,চাচ্চু ফকির হয়ে গেছে?
জান্নাতঃআমাকে যা বলার বলো আব্বুকে কেনো
বলছো শুনি।আমরা দুজন একসাথে খাবো
আমিঃতোমার আব্বুকে কি বললাম আমি,আমি
তো আমার চাচ্চুকে বলছি
জান্নাতঃওহ তাই বুঝি
আমিঃজ্বি
জান্নাতঃতুমি জানো আমার শ্বশুর মশাই একদম
হিটলার সব সময় রাগ নিয়েই থাকে
আমিঃতুমি আব্বুকে হিটলার বললে কেনো?
জান্নাতঃআমি তো তোমার আব্বুকে বলিনি।আমি
আমার শ্বশুরকে বলেছি
আমিঃআমার কথা আমাকেই ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে
জান্নাতঃএতো জানতে হবে না।চলো এখন হা করো
তারপর দুজন মিলে খেয়ে নিলাম।খাবার খাওয়া
শেষ করে বিয়ের ড্রেস কেনাকাটা করার জন্য
সবাই বেরিয়ে পড়লাম।
আমার কলেজ থেকে প্রায় ৩০মিনিট দূরত্বে এই
মল অবস্থিত। সবাই মিলে ড্রেস কেনার পর আমি
আর জান্নাত মিলে ভাইয়া ভাবির জন্য কিনতে
লাগলাম।আভার জন্যও কিছু কিনলাম।কেনা
কাটার পর সবাইকে বললাম।
আমিঃতোমরা সবাই বাসায় চলে যাও আমি পরে
চলে যাবো
আম্মুঃতুই কোথায় যাবি?
আমিঃকলেজ্ব গিয়ে বন্ধুদের বলতে হবে।আব্বু
তুমি না করতে পারবে না
আব্বুঃহাহাহা,আমি তোকে এজন্য না করেছিলাম
তুই যদি বিয়ে না করে বন্ধুদের সাথে পালিয়ে যাস
কিন্তু এখন সেই ভয় নেই।তুই ওদের বলে বাসা
থেকে গাড়ি নিয়ে চলে আসিস।আমি রহিম ভাইকে
বলে বাসায় আসতে বলছি
আমিঃঠিক আছে।
জান্নাতঃবড় আব্বু আমিও যাবো
আব্বুঃযেতে দিতে পারি একটা শর্তে
জান্নাতঃকি
আব্বুঃবড় আব্বু আর বলতে পাড়বি না।শুধু আব্বু
বলবি এখন থেকে
জান্নাতঃঠিক আছে আব্বু।
আব্বুঃএইতো আমার গুড মেয়ে।নিলয় ওকে সাথে
নিয়ে যা
আমিঃঠিক আছে।সোনা বউ চলো
জান্নাতঃসবার সামনে এসব বলতে লজ্জা লাগেনা
আমিঃতুমি চলো তো আগে।
কলেজে এসে রাফিকে কল দিলাম।কিন্তু সালা
কেটে দিলো হয়তো ক্লাসেই আছেই।মেসেজ করি।
আমিঃতুই কোথায়?
রাফিঃসালা ক্লাসে আছি বুঝতে পারছিস না?
আমিঃসবাই আছিস?
রাফিঃহ্যা
আমিঃবাইরে আয়
রাফিঃএখনো ৫মিনিট আছে ক্লাসের।তুই কোথায়?
আমিঃবাইরে আছি
রাফিঃতুই জামরুল গাছের নিচে বস।
আমিঃএখানে আছি।
রাফিঃক্লাস শেষ করে আসছি
বসে বসে জান্নাত আর আমি বাদাম খেতে লাগলাম
কিছুক্ষণ পর ক্লাস শেষ হতেই বন্ধরা আসলো।
জয়ঃতুই এখানে কেনো?
আমিঃতোদের বিয়ের দাওয়াত দিলে এলাম।পরশু
আমার আর জান্নাতের বিয়ে
রাহুলঃতোদের বিয়ে কেমনে হয়
(ওদের সব খুলে বললাম)
আমিঃপ্রিয়া তুই হয়তো ওকে চিনিস না।ও হলো
জান্নাত আর জান্নাত অ হলো প্রিয়া।
প্রিয়াঃঠিক আছে।
জয়ঃজান্নাত তুমি অনেক বড় হয়ে গেছো
আমিঃজান্নাত মানে,সালা এখন থেকে ভাবি বলবি
সবাইঃহাহাহা(হেসে দিলো)
কিছু সময় আড্ডা দেয়ার পর পরই তানিয়া এবং
ওর গ্রুপ আসলো।
তানিয়াঃকিরে এই মাল আবার কে?
আমিঃমাল মানে,কাকে মাল বললি
তানিয়েঃতোর সাথে নতুন যেটা আছে তাকে
আমিঃমুখ সামলিয়ে কথা বল জান্নাত আমার
হবু স্ত্রী হয়।
তানিয়াঃতোর আবার হবু স্ত্রী
জান্নাতঃতাতে আপনার কি,আর আপনি কে?
আমিঃজান্নাত ও হলো তানিয়া ভাবির ছোট বোন
জান্নাতঃও এই তাহলে সেই ডাইনী
জান্নাতের কথা শুনে আমরা সবাই মিলে হেসে
দিলাম শুধু তানিয়ার গ্রুপ ছাড়া।
তানিয়াঃতুই আমাকে কি বললি?
জান্নাতঃডাইনি বলছি
তানিয়াঃতোকে আমি
আমিঃকি করবি তুই(সামনে এসে)
জান্নাতঃএই মেয়ে আবার কি করবে।চলো তো
আমাদের দেরি হয়ে যাচ্ছে আগামীকাল আবার
ভাইয়া ভাবি আসবে।
তানিয়াঃমানে আপু আসবে
আমিঃজ্বি।তোর সাথে কথা বলে আমার কোনো
লাভ নাই।আর তোরা কাল প্রিয়াকে সাথে নিয়ে
চাচ্চুর বাসায় চলে আসবি।আমরা এখন যায়
জয়ঃসাবধানে যাস
আমিঃহুম
সবার থেকে চলে এসে বাসার দিকে রওনা দিলাম।
হ্যা,তানিয়া ভাবির ছোট বোন।মূলত ভাইয়া ভাবি
পালিয়ে বিয়ে করার জন্যই ওদের সাথে আমাদের
বিভেদ। আব্বুর সাথে ভাবির আব্বুর বন্ধুত্ব অনেক
ভালোই ছিলো সেই থেকেই ভাইয়া এবং ভাবির
পরিচয় হয়।ভাবি ভাইয়ার থেকে ১ব্যাচ জুনিয়র
ছিলো।কথা বলতে বলতেই তাদের মাঝে ভালোবাসা
তৈরি হয়।একদিন ভাবির আব্বু ভাবিকে বিয়ে
দেয়ার জন্য পাত্র দেখায় সেটা ভাইয়াকে বলাতেই
সেদিন রাতেই ভাইয়া আর ভাবি পালিয়ে বিয়ে
করে।ভাইয়া এবং ভাবির বিয়ের সাক্ষী হিসাবে
একমাত্র আমি আর ভাইয়ার দুটো বন্ধু ছিলাম।
বিয়ের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর বাসায় আসতেই
আব্বু ভাইয়াকে বাসা থেকে বের করে দেয়।
কেনো বের করে দেয় সেটা জানার জন্য অনেক
চেষ্টা করতাম আর একদিন আম্মু নিজেই বলে,
সেদিন সন্ধ্যার সময় ভাবির আব্বু বাসায় এসে
নানান কথা আব্বুকে শোনায়।অনেকভাবে
অপমান করে বাসা থেকে চলে যায়।তারপর
কি হয়েছিলো সেটা তো সবাই জানেন।
রিক্সা করে দুজন বাসায় আসতেই দেখলাম রহিম
চাচা বাসায় রয়েছে।চাচাকে সালাম দিয়ে বাসার
ভিতরে গিয়ে একদম রুমে গেলাম।রুমে যেতেই
জান্নাত বিছানায় শুয়ে পড়লো।
আমিঃকি হলো শুয়ে পড়লে কেনো?
জান্নাতঃক্লান্ত লাগছে অনেক।
আমিঃতুমি একটু অপেক্ষা করো আমি ফ্রিজ থেকে
জুস নিয়ে আসছি
জান্নাতঃজুস লাগবে না
আমিঃচুপ থাকো।আমি আসছি
নিচে এসে ফ্রিজ থেকে জুস গ্লাসে নিয়ে রুমে গেলাম।
আমিঃএই নাও
জান্নাতঃতুমি খাইয়ে দাও
আমিঃতুমি খেতে পারো না
জান্নাতঃঅনেক ক্লান্ত?
আমিঃচুপ থাকো ঢঙ্গী একটা।
জান্নাতঃহিহিহিহি
আমিঃনা হেসে হা করো
জান্নাতকে জুস খাইয়ে দিয়ে দিয়ে বাসার বাইরে
এসে গাড়ি নিয়ে রহিম চাচাকে চলে চলে আসলাম।
জান্নাতঃঐ মেয়েটাকে গালি দেয়ায় তুমি কি আমার
উপর রাগ করেছো?
আমিঃএকদম না বরং আমি খুশি হয়েছি
জান্নাতঃহিহিহি,তাই বুঝি
আমিঃহ্যা।ওই মেয়েটা একদম বাজে।বাবার টাকাই
সব করে বেড়ায়। আমার বন্ধুদের সাথে যে মেয়েটা
দেখলে শুধুমাত্র ক্লাসের সেই মেয়েটাই আমাদের
গ্রুপে অন্যরা জান্নাতের ভয়ে কেউ কথা বলে না।
জান্নাতঃভয় পায় কেনো?
আমিঃকারণ ওর বাবা কলেজের প্রিন্সিপাল
জান্নাতঃআমিও তোমাদের কলেজে ভর্তি হবো।
তখন দেখবো কতো ডাইনি গিরি ভাব দেখায়।
আমিঃঠিক আছে।
দুজনে কথা বলতে বলতে বাসায় চলে আসলাম।
সেদিনের মতো কাটিয়ে পরেরদিন আমি আর
জান্নাত মিলে ভাইয়া ভাবিকে আনতে গেলাম।
সবাই কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় কাউকে বলিনি।
আমি একাই যেতাম কিন্তু জান্নাত জেদ ধরেছে
তাকেও সাথে নিতে হবে।।খুব ভোরে রওনা দেয়ায়
১০টার মাঝেই এয়ারপোর্টে চলে আসলাম।
ভাইয়া ভাবি এবং ছোট পরিটাকে সাথে নিয়ে
বাসার উদ্দেশ্য রওনা দিলাম।আমি ভাইয়ার
সাথে কথা বলছি আর জান্নাত ভাবি আর আভার
সাথে কথা বলছে।
কথা বলতে বলতে চাচ্চুর বাসায় চলে আসলাম।
বাসার ভিতরে ডুকতেই কান্নার রোল পড়ে গেলো।
আম্মু ভাইয়াকে দেখেই বাকরুদ্ধ হয়ে কান্না করছে।
ভাইয়া আম্মুকে জড়িয়ে নিয়ে সে নিজেও কান্না
করে দিলো।আব্বু পাশেই দাঁড়িয়ে আছে।কিন্তু
কিছু বলছে না।ভাবি আভাকে জান্নাতের কাছে
দিয়ে আব্বুকে সালাম করলো।একটু পর সবাই
স্বাভাবিক হওয়ার পর আব্বু প্রথমে বলল…
আব্বুঃনিল,আমাকে ক্ষমা করে দিস বাবা।তোদের
আমি বুঝতে পারিনি।কিন্তু কি করবো সেদিন
বউমার বাবা অনেক কথা শুনিয়েছিলো যার জন্য
অনেক রাগ হচ্ছিলো আর রাগের মাথায় তোদের
বাসা থেকে বের করে দিয়েছিলাম।
ভাইয়াঃআমি কিছুই মনে করেনি আব্বু
আমিঃআব্বু এসব কথা বাদ দাও।যেটা হওয়ার
সেটা হয়ে গেছে।এখন তো সবাই খুশি
আব্বুঃহ্যা সেটাই।
আম্মুঃনীল, অরিতা তোরা দুজন রুমে গিয়ে রেস্ট
নে।আর জান্নাত আমার নাতনিকে এদিকে দে
জান্নাতঃএই নাও আম্মু
আম্মুর কাছে আভাকে দেয়ার পর ভাবি, ভাইয়া
রুমে চলে গেলো।আমারও অনেক ক্লান্ত লাগছে
তাই সেখানে না দাঁড়িয়ে সবাইকে বললাম…
আমিঃআমার ভালো লাগছে না রুমে গেলাম।
রুমে এসে ফ্রেস হয়ে নিলাম।বিছানায় শরিরটা
এলিয়ে দিতেই জান্নাত রুমের ভিতরে এসে দরজা
আটকিয়ে দিলো।
আমিঃতুমি এখানে কেনো?
জান্নাতঃআমার রুমে আমি আসছি
আমিঃতাহলে দরজা আটকানোর কি আছে
জান্নাতঃদুজন একসাথে ঘুমাবো তাই
আমিঃকিন্তু বিয়ে…….
জান্নাতঃআমি কিছু শুনতে চাইনা।
দাঁড়িয়ে না থেকে জান্নাত বুকের উপর মাথা রেখে
ঘুমিয়ে গেলো।কিছু সময় পর খেয়াল করলাম
জান্নাত ঘুমিয়ে গেছে।এখনো বাচ্চা বাচ্চা স্বভাব
রয়েই গেলো।কপালে একটা চুমু দিয়ে পাশের রুমে
এসে দরজা আটকিয়ে ঘুমিয়ে গেলাম।
পরেরদিন…..
খুব ধুমধাম করেই বিয়েটা হয়ে গেলো।বন্ধুরা সবাই
মিলে ছাদে রয়েছি।এখানে আমার বিয়ে কিংবা
চাচ্চুর বাসা না হলে সবাই মিলে ড্রিংক করতাম
শিওর। কিন্তু যতো যায় হোক, নতুন জামাই তার
উপর চাচ্চুর বাসা।কেউ দেখে ফেললে আমাদের
সবাইকে বাসা থেকে লাথি দিয়ে তাড়িয়ে দিবে।
তখন দেখা যাবে আমার বাসর করাটাই হবে না।
বন্ধুদের সাথে কিছু সময় আড্ডা দেয়ার পর রুমে
চলে আসলাম।
রুমে এসে দরজা আটকিয়ে দিয়ে জান্নাতের দিকে
তাকাতেই দেখলাম লম্বা একটা ঘোমটা দিয়ে বসে
আছে।ওর দিকে এগিয়ে যেতেই উঠে এসে পায়ে
সালাম করলো।
আমিঃবেচে থাকো বউ?
জান্নাতঃধুর আমি ভেবেছিলাম বুকে টেনে নিবে
আমিঃআগে বললেই তো হতো
জান্নাতঃথাক আর বলতে হবে না। চলো
আমিঃহুহ আমারো ঘুম পাচ্ছে
জান্নাতঃঘুম পাচ্ছে মানে,আজ আমাদের বাসরঘর।
আমিঃতো কি করবো?
জান্নাতঃতোমার কিছু করতে হবে না।আমিই সব
করবো চলো।
ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দেয়ার পর যেটা
হবার ঠিক সেটাই হলো।আপনাদের আর জানতে
হবে না।আর আজ এখানেই শেষ।
সমাপ্ত