পিচ্চি চাচাতো বোন(সিজন ২),পর্বঃ৩
আবির হাসান নিলয়
—বড় মা আমি নিলয়কে বিয়ে করবো।
জান্নাতের মুখে হঠাৎ এমন কথা
শুনে পুরোপুরি চুপ হয়ে গেলাম।
এতোদিন ভাবতাম পিচ্চি বলে
আজাইরা কথা বলে কিন্তু আজ
শিওর হলাম ওর মাথাতেই গণ্ডগোল
আছে।রাগে চোখ বন্ধ করে ছোট
মার কোলে মাথা রেখে শুয়েই
রইলাম।
আম্মুঃহাহাহা তুই বিয়ে সম্পর্কে
কি জানিস?
জান্নাতঃএইযে বিয়ে করলে আমরা
দুজন সব সময় একসাথে থাকবো।
আম্মুঃকিন্তু বিয়ের পর কি?
জান্নাতঃকি আবার?
আম্মুঃবিয়ের পর নিলয় তোকে
খাওয়াবে কি শুনি?
জান্নাতঃতোমরা যা খাও তাই।
আম্মুঃআরে পাগলী নিলয় তো
এখনো ছাত্র পড়াশোনা করে।
ছোট মাঃতুই সবার মাথা খাওয়া
বন্ধ করবি নাকি তোর নানুর
বাড়ি পাঠিয়ে দেবো।
জান্নাতঃউহ,আমি গেলে তো পাঠাবে?
আমিঃবোন আমি তোর পায়ে
ধরি।তুই আল্লাহর রাস্তে আমায়
মাফ কর।আর আম্মু তুমিও ওর
সাথে হয়ে কি বিয়ে বিয়ে করছো।
ওর বয়স হয়েছে বিয়ের?
আম্মুঃতোর হয়েছে?
আমিঃআমি কি ঢোল বাজাচ্ছি
বিয়ে করবো বলে?
আম্মুঃজান্নাত পিচ্চি তাই এসব
বলছে।বড় হলে ঠিক হয়ে যাবে।
আর কোনো কথা না বলে ছোট মার
সাথে আমি এবং আম্মুর সাথে
জান্নাত কথা বলতে লাগলাম।
সেদিনের মতো কোনোরকম পার
পরেরদিন ভোর বেলা নাস্তা করে
বিদায় দিয়ে রওনা দিলাম কক্সবাজার
-এর উদ্দেশ্যে।কক্সবাজার তিনদিন
এবং সাজেক তিনদিন ঘুরাফেরা
করার পর বাসার উদ্দেশ্যে রওনা করি।
—————————————————————-
মোবাইলের লোকেশন শেষ হতেই
একবার চারদিকে চোখ ভুলিয়ে
দেখলাম।সবাই যে যার মতো করে
কাজ নিয়ে ব্যস্ত।বাইক থেকে নেমে
একটা ছেলের কাছে গেলাম।বয়স
মোটামুটি ১৭ কিংবা ১৮হবে।
আমিঃভাই শুনো
—জ্বি ভাইয়া বলুন
আমিঃএটা কি ভাউলিয়া গ্রাম?
—জ্বি
আমিঃআমি নিলয় ঢাকা থেকে আসছি।
—আমি রবিউল।
আমিঃতুমি রফিক নামের কাউকে
চেনো এই গ্রামের?
রবিউলঃকোন রফিক?
আমিঃএক সেকেন্ড
পকেট থেকে মোবাইল বের করে
উনার ছবি দেখাতেই বললো;
রবিউলঃকি করবেন উনাকে দিয়ে?
আমিঃখুব ইম্পরট্যান্ট কথা আছে।
রবিউলঃকি ইম্পরট্যান্ট কথা?
আমিঃতুমি উনার খোজ দিবে কিনা
সেটা বলো।
রবিউলঃআগে আপনার ইম্পরট্যান্ট
কথাটা বলুন তারপর বলছি।
আমিঃদেখ এমনিতেই মাথাটা গরম
আছে।তুই আর বেশি গরম করিস না।
বল উনাকে কোথায় পাবো?
রবিউলঃহাতের মুয়া পেয়েছেন?
আমিঃকখনো কাউকে ভালোবেসেছিস?
রবিউলঃহ্যা
আমিঃযদি তোকে কিছু না বলে কোথাও
উধাও হয়ে যায় তখন কি করবি?
রবিউলঃখুঁজবো তাকে।
আমিঃঠিক এটাই আমি করছি।
রবিউলঃআপনি কার জন্য আসছেন?
আমিঃআয় আমার সাথে
হাত ধরে টানতে টানতে বাইকের
কাছে নিয়ে আসলাম।
আমিঃবাসা কোথায় সেটা তুই
দেখিয়ে দে।
রবিউলঃবাইকটা আমি চালাই?
আমিঃচালাতে পাড়িস?
রবিউলঃহ্যা ভাই
আমিঃরাতের বেলা কাউকে এক্সিডেন্ট
করে আমাকে জেলে পাঠাস না।
রবিউলঃভয় পায়েন না ভাই।
আমিঃচালা।
তিন মিনিটের মতো চালানোর পর
একটা বাসার সামনে এসে থামালো।
রবিউলঃএইটা,তবে গোডাউনে চলে
যাইয়েন না।বাম পাশের সিঁড়ি দিয়ে
গেলেই বাসায় পৌঁছে যাবেন।
আমিঃধন্যবাদ
আর কোনো কথা না বাড়িয়ে বাইকটা
এক পাশে পার্ক করে বাসার দিকে।
কেমন একটা আশা হচ্ছিলো,মনে
হচ্ছে জান্নাত এখানেই আছে।
বাসার ভিতরে যেতেই লক্ষ্য করলাম
অনেকটা বড় পরিবার।আমাকে
কেউ এখনো খেয়াল করেনি।
আসলে বাসার মধ্যে অনেক মানুষ
হয়তো কোনো অনুষ্ঠান হবে বা
হয়েছে।সামনে এগিয়ে গিয়ে
একটা ভদ্র মহিলাকে জিজ্ঞাস করলাম;
আমিঃআসসালামু আলাইকুম আন্টি
—ওয়ালাইকুম আসসালাম,তোমাকে
ঠিক চিনলাম না বাবা।
আমিঃআমি নিলয়,ঢাকা থেকে আসছি।
—হ্যা বলো
আমিঃরফিক সাহেবের সাথে একটু
জরুরি কথা ছিলো।
—উনি তো বাইরে গেছেন। হয়তো
একটু পরেই চলে আসবে।তুমি
এখানে একটু বসতে পারো।
আমিঃজ্বি ধন্যবাদ।
বাসার এক পাশে একটা চেয়ার
টেনে বসে অপেক্ষা করতে লাগলাম।
একটু পরেই ভদ্র মহিলাটি প্লেটে
করে পরোটা আর মিষ্টি দিলো।
আমিঃআন্টি এসবের দরকার নেই।
—আমার বাসা থেকে এমনিতেই
কেউ খালি মুখে যায় না।আর তুমি
না জানি কি জরুরি কথা বলার
জন্য এসেছো।
আমিঃধন্যবাদ,আপনারা কি সবাই
একটা পরিবার?
আন্টিঃপুরোটা গ্রাম আমাদের পরিবার।
আর এনারা গ্রামের মানুষজন।মুদিখানার
বাৎসরিক হালখাতা তাই সবাই টুকটাক
করছে।তোমার কথা কিছু বলো।
আমিঃআমি একটা বেয়াদব,ভিতু
এবং অনেক বড় সার্থপর।
আন্টিঃনিজেকে এমন করে সবার
মাঝে তুলে না ধরাই ভালো।
আন্টিটার সাথে কথা বলার
পাশাপাশি পরোটা মিষ্টি শেষ
হতে একটা মেয়ে প্লেট নিয়ে
গেলো।আরো কিছু সময় কথা
বলার পর সেই ছেলেটার সাথে
একজন আসলো।
আন্টিঃবাবা ছেলে কোথায় থেকে
আসছেন শুনি?
—রহিম ভাইয়ের বাসায় এক
প্যাকেট দিতে গেছিলাম।
আন্টিঃআমি রবিউলকে সেই
সকালে বলছিলাম দিয়ে আসতে
কিন্তু যায়নি।
—ঠিক আছে।রবিউল বললো
কেউ একজন আমার সাথে
দেখা করতে আসছে।তুমি
কি সেই?
আমিঃজ্বি স্যার।
—স্যার বলার কোনো দরকার নেই।
কাকা বললে খুশি হবো।
আমিঃহুম
কাকাঃআমাদের জন্য কিছু দাও
আমিঃআমি খেয়েছি কাকা।
কাকাঃঠিক আছে বসো বাবা।
কাকার পাশাপাশি বসার পর
আন্টি নিজেও একটা চেয়ারে
বসলো।আর রবিউল ছেলেটা তো
আগে থেকেই সব শোনার জন্য
মরিয়া হয়ে আছে।
কাকাঃবলো
আমিঃআমি জান্নাতের বড় আব্বুর
ছেলে নিলয়।
কাকাঃতুমিই সেই নিলয় যাকে
জান্নাত সেই ছোট্ট থেকে ভালোবাসে?
আমিঃজানিনা
কাকাঃজানোনা মানে?
আমিঃজান্নাত পালিয়ে গেছে বিয়ের রাতে।
কাকাঃতোমাদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো?
আমিঃবিয়ে হয়ে গেছিলো।বিয়ের পর
পালিয়ে গেছে।
কাকাঃকিন্তু জান্নাত তো কিছু বললো না।
আমিঃজান্নাত এখানেই আছে?
কাকাঃছিলো
আমিঃএখন কোথায়?
আন্টিঃসেটা জানিনা।
আমিঃকবে এখানে থেকে গেছে?
কাকাঃগত পরশু
আমিঃআপনাদের কিচ্ছু বলে যায়নি?
কাকাঃনা,,শুধু বললো বাসায় নাকি
তার কোনো কাজ আছে।
আমিঃওহ
কাকাঃবাসায় যায়নি?
আমিঃনা
কাকা এবার একটু নড়ে বসলো।
উনাকে দেখে মনে হচ্ছে তার ভিতর
কেমন একটা অস্থিরতা কাজ করছে।
পকেট থেকে ফোন বের করে চাচ্চুকে
কল দিলো।প্রথমে বুঝতে পাড়িনি কিন্তু
নাম বলায় বুঝতে পারছিলাম।
কাকাঃজান্নাত কোথায়?
—……
কাকাঃকিন্তু ও তো বললো বাসায়
কাজ আছে যেতে হবে।
—…..
কাকাঃতুমি সব জায়গা খোজ নিয়েছো?
—…….
কাকাঃজান্নাতের সাথে যার বিয়ে
দিছিলি সেই ছেলেটা আসছে।
—……..
কাকাঃহুম,রাত করে আসছে।
—……
কাকাঃনাফিয়ার খেয়াল রেখো।
আর আমি দেখছি কি করা যায়।
—………
কাকাঃওয়ালাইকুম আসসালাম
কল কেটে দিয়ে আমার দিকে
তাকিয়ে বললো;
কাকাঃজান্নাতের সাথে তোমার
কি হয়েছিলো?
আমিঃওর সাথে কিছু হয়নি আমার।
কাকাঃতাহলে কিছু না বলে হুট করেই
পালিয়ে যাবে?
আমিঃও আপনার এখানে আসছিলো।
কাকাঃজান্নাত মাঝে মাঝেই এখানে
এসে ঘুরে যায়।আমি ওকে বিশ্বাস
করতাম তাই আলাদা করে বাসায়
কল দিয়ে জানার কোনো দরকার
পড়তো না।
আমিঃকিন্তু ও চলে যাওয়ার পরেরদিন
তো আপনি খোজ নিতে পাড়তেন।
কাকাঃতোমার কি মনে হয়,আমি নেয়নি?
ওকে সকালে বাসে তুলে দেয়ার পর
রাতেই কল দিয়ে শুনেছিলাম বাসায়
ঠিকঠাক ভাবে পৌঁছে গেছে কিনা।
জান্নাত বলছিলো;সব ঠিক আছে।
আমিঃকোন বাসে তুলে দিয়েছিলেন?
কাকাঃএখানকারই একজন আছে।
আমিঃনাম্বার আছে?
কাকাঃহ্যা
আমিঃকল দিন উনাকে একটু।
কল দিতেই ফোন বন্ধ আসলো।
আরো কয়েকবার দিলো,কিন্তু
বরাবর বন্ধ আসছিলো।
কাকাঃকাল ভোর হতেই আমি
ওর বাসায় গিয়ে দেখা করবো।
আমিঃসাথে আমিও যাবো
কাকাঃঠিক আছে,কাল সকালের
নাস্তা করে রেডি থেকো।আর
রবিউল তুই ওকে তোর রুম
বা তোর পাশের রুমে নিয়ে যা।
রবিউলঃআচ্ছা আব্বা।
রবিউলের সাথে রুমে আসার
আগে বাইরে গিয়ে বাইকটা
গেটের মধ্যে এনে রুমে গেলাম।
অনেকটাই পরিপাটি রুম।ফ্রেস
হয়ে বিছানার উপর বসতেই
রবিউল আসলো।
আমিঃএই রুম কার?
রবিউলঃআপুর রুম,তবে জান্নাত
আসলে এখানেই থাকে।
আমিঃতোর আপু কোথায়?
রবিউলঃভার্সিটিতে পড়াশোনা করে।
তাই হোস্টেলে থাকে।
আমিঃতোর আব্বুকে দেখে অনেক
ভালো মনের মানুষ মনে হলো।কি
করেন তিনি?
রবিউলঃচেয়ারম্যান উপজেলার।
আমিঃচেয়ারম্যান হয়েও মুদি দোকান
চালান, সময় পায় কখন?
রবিউলঃশুধু দোকান না,খামার আছে
সেখানেল দেখাশোনা করে।আর
যখন যে গ্রামেই সমস্যা হোক না
কেনো আব্বা গেলে সব ঠিক
করে দেন।আব্বা যেমন উনার
এলাকাবাসীকে ভালোবাসেন তার
থেকেও এলাকাবাসী আব্বাকে বেশি
ভালোবাসে।প্রতিবছর হালখাতার
পরেরদিন সব অসহায় এতিম এবং
বয়স্ক মুরুব্বীদের খাওয়ানোর
ব্যবস্থা করেন।
আমিঃওহহ,জান্নাত এখানে কেনো আসতো?
রবিউলঃসব গ্রাম ঘুরে দেখে মাঝে
মাঝে সাজেক যায় আপুর সাথে।
আমিঃতুই যাস না?
রবিউলঃআপু নেয় না।
আমিঃকেনো?
রবিউলঃএকবার সাজেক গিয়ে
আপু ব্যাগ থেকে টাকা চুরি করে
মধুকে গিফট করছিলাম সেই
থেকে আর নেয় না।যদিও আপু
পরে মেনে নিয়েছিলো কিন্তু মাঝখানে
আবার একদিন রাতে আপুর চুল
কেটে দেয়ার পর থেকে আর কথা
বলে না আমার সাথে।কাল আপু
আসবে দেখবেন সবার সাথে কথা
বলছে শুধু কুত্তীটা আমার সাথে
বলবে না।কিছু জিগাইলেও মাকে
গিয়ে বলবে আমি ওকে বিরক্তি করছি।
আমিঃওহ
রবিউলঃএকটা কথা বলি?
আমিঃকি?
রবিউলঃজান্নাত আপনাকে অনেক
বেশিই ভালোবাসে।জানিনা আপনার
সাথে কেনো এমন করেছে।তবে এখানে
আসলে সব সময় আপনার কথা বলতো।
আমিঃদোষ আমার ছিলো।
অনেকটা সময় কথা বলার পর
খাওয়ার জন্য ডাকলো।সবাই
মিলে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমানোর
চেষ্টা করতেই জান্নাতের চেহারা
চোখের সামনে ভেসে উঠলো।
******ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে উঠার
পর আম্মুর সাথে কোনো এক কারণে
চাচ্চুর বাসায় যেতে হয়।তখন জান্নাতের
JSC এক্সাম চলছিলো।রুমের মধ্যে
বসে আছি তখন জান্নাত ঢুকলো।
জান্নাতঃআপনি এখানে?
আমিঃআম্মু নিয়ে আসছে।
জান্নাতঃআপনি কি এই রুমে থাকবেন?
আমিঃহ্যা,কেনো?
জান্নাতঃএমনি…(চলে যেতে লাগলো)
আমিঃকিরে মন খারাপ?
জান্নাতঃকই না তো।
আমিঃতাহলে আপনি করে
বলছিস কেনো?
জান্নাতঃআপনি আমার থেকে বড়
তাই আপনি করে বলছি।
আমিঃজ্ঞান হয়েছে তাহলে।
কোনো উত্তর না দিয়ে ওমন অবস্থাতেই
অন্য রুমে চলে গেলো।দেখে মনে হলো
মন খারাপ কিংবা আমাকে ওর রুমে
দেখে এমন করছে।সবার সাথে জেদ
দেখালেও শুধুমাত্র আমার সাথেই তার
জেদটা দেখায় না।হয়তো অনেক বেশিই
ভালোবাসতো।রুমে বসে না থেকে ছোট
মার কাছে গেলাম।আম্মু আর ছোট মা
দুজন কথা বলছে।
আমিঃছোট মা জান্নাতের কি মন খারাপ?
ছোট মাঃকেনো,আবার কি হলো..!
আমিঃদেখে মনে হলো মন খারাপ।
আম্মুঃতুই কিছু বলিস নাই তো?
আমিঃনা
আম্মুঃবললে তোর খবর আছে
ছোট মাঃভাবি জান্নাত মাঝেমধ্যেই
এমন রাগ করে।
আম্মুঃআমি তবুও জান্নাতের থেকে
শুনবো,যদি তোর নামে কিছু বলে
তাহলে তোর খবর করেই ছাড়বো।
আমিঃহুম শুনো তোমাদের মেয়ের কাছে।
সেখান থেকে চলে এসে ছাদে গেলাম।
অনেকটা সময় মিষ্টি রোধে থাকার
পর নিচে এসে রুমে যেতেই দেখলাম
জান্নাত জামাকাপড় নিয়ে যাচ্ছে।
হঠাৎ এই মেয়ের আবার কি হলো।
আমিঃকিরে এমন করছিস কেনো?
জান্নাতঃ…..(কিছু বললো না)
আমিঃকি হয়েছে?(হাত ধরে)
জান্নাতঃহাত ছাড়ুন তো।
আমিঃওকে ছাড়লাম,এখন বল
কি হয়েছে তোর?
জান্নাতঃকিছু না।
আমিঃতাহলে এসব নিয়ে কোথায় যাচ্ছিস?
জান্নাতঃপাশের রুমে।
আমিঃকেনো?
জান্নাতঃবড় মা কিছুদিন এখানে
থাকবে।আর বড় আব্বুও আসবে
কাল।তাই এসব অন্য রুমে নিচ্ছি।
আমিঃআমি তো থাকবো না।
জান্নাতঃওহ,তাহলে আজকেই চলে যান
আমিঃগেলে খুশি হবি?
জান্নাতঃনা হওয়ার কি আছে?
আমিঃঠিক আছে রাতে চলে যাবো।
আর এসব এখানেই থাক,তোর রুম
তাই তুই এখানেই থাকবি।
বুঝতে পাড়ছিলাম জান্নাতের মন
অনেক বেশিই খারাপ।কেনো খারাপ
কে জানে।পরিক্ষা খারাপ হওয়ার
প্রশ্নই আসে না।ক্লাসের ফাস্ট গার্ল,
পড়াশোনাতে সব সময় প্রথম।
জান্নাতকে রুমে রেখে বাসার বাইরে
এসে মাঠে চলে গেলাম।মাঠের
একপাশে বসে ফোন টিপছি
আর খেলা দেখছি।পোলাপান
ফুটবল খেলছে।খেলা দেখতে দেখতে
প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেলো।সন্ধ্যার
সময় বাসার ভিতর যেতেই আম্মু
প্রশ্ন করতে শুরু করলো কোথায়
ছিলাম কি করছিলাম ইত্যাদি।
আম্মুকে আস্তে কথা বলতে বলতে
রান্না ঘরে নিয়ে আসলাম।
আম্মুঃকি হলো?
আমিঃখাবার দাও
আম্মুঃকেনো?
আমিঃক্ষুধা লাগছে
আম্মুঃতো সবার সাথেই খাবি
আমিঃনা,একটা সমস্যা হয়েছে।
আম্মুঃকি?
আমিঃ……(সব বললাম)
আম্মুঃঠিক আছে খেয়ে নে।
আমিঃআমি খেয়ে যে বিছানা নিয়ে
ছাদে যাবো সেটা জেনো জান্নাত
না জানতে পাড়ে।ও এক্সাম দিতে
চলে গেলে আমাকে ডেকে আনবে।
আম্মুঃওকে,,,আর তুই কাল তাহলে
বাসায় চলে যাস।
আমিঃহুম,এমনিতেও বাসায় কাজ আছে।
আম্মুঃঠিক আছে খেয়ে নে।
আর কোনো কথা না বাড়িয়ে খাওয়া
দাওয়া করে বিছানা নিয়ে চুপি চুপি
ছাদে চলে গেলাম।জান্নাতের এক্সাম
চলছে তাই রুম বন্ধ করে পড়াশোনা
করতে ব্যস্ত আছে।অনেক রাত
অবধি ফোনে বন্ধুদের সাথে আড্ডা
দেয়ার পর ঘুমিয়ে গেলাম।
চলবে…………