পিচ্চি চাচাতো বোন(সিজন ২),পর্বঃ৯
আবির হাসান নিলয়
—আর কতোদিন এভাবে বসে থাকবি,
এবাত তো কোম্পানির দায়িত্ব নে।
সোফার উপর আভাকে নিয়ে বসে
আছি তখন আব্বু কথাটি বলল।
আমিঃআমি এখনি দায়িত্ব নিতে
পারবো না।বর্তমান অফিসের অন্য
স্টাফদের মতো আমিও কাজ করবো।
আব্বুঃকিন্তু সেটাই বা করছিস কই?
আমিঃপরশু থেকে করবো।
আব্বুঃঠিক আছে,আর জান্নাতের
সাথে খারাপ আচরণ করিস না।
আমিঃওর সাথে কথা বলার কোনো
ইচ্ছা নেই।আর ওকে কিছু বলার হলে
অনেক আগেই ওর বাসায় বা অফিসে
গিয়ে কিছু একটা করতাম।
আম্মুঃকি হয়েছে?
আব্বুঃকিছুনা,হুম আমিও সেটাই চাই।
ওসব ভুলে গিয়ে নতুন করে শুরু কর।
আমিঃখুব সহজ তাই না?
আম্মুঃসহজ না,কিন্তু তুই আস্তে আস্তে
শুরু কর।কতোদিন এমন করে থাকবি।
আমিঃবললাম না পরশুদিন থেকে
জয়েন্ট করবো।তারপরেও এতো
প্রশ্ন করার মানে আছে?
আর কোনো কথা না বলে আভাকে
রেখে ছাদে চলে এলাম।হ্যা জান্নাত
দেশে এসেছে সেটাও অনেকদিন হলো।
এখনো দেখা করিনি,করার ইচ্ছাও
ছিলো না।কিন্তু ভাইয়ার জন্য সব
করতে হচ্ছে।কোম্পানিতে আমি না
গেলে সে নিজেও নাকি কোম্পানি
ছেড়ে দিয়ে অন্য কোনো অফিসে
সাধারণ স্টাফদের মতো কাজ করবে।
তাই রাজি হয়েছি অফিসে যাওয়ার
জন্য।সাধারণ স্টাফদের মতো কাজ
করতে চাইছি কারণ কাজের মধ্যে
ঢুবে থাকলে জান্নাতের দিকে খুব
একটায় মায়াতে জড়াবো না।
জান্নাতের আসাতে নাকি অনেক
আত্মীয়র ভিড় জমেছিলো,আব্বু
আম্মু নিজেরাও দেখতে গেছিলো।
বাসায় আসার কিছুদিন পরই
আমাদের অফিসে জয়েন করেছে।
রাতে শুয়ে শুয়ে টেলিভিশন দেখছি
তখন ভাবি আভাকে কোলে নিয়ে
রুমে আসলো।
আমিঃকিছু বলবে ভাবি?
ভাবিঃতেমন কিছু না,আসলে….
আমিঃবলো
ভাবিঃতানিয়াকে কাল দেখতে আসবে
আমিঃএটা তো গুড নিউজ
ভাবিঃআমাকে যেতে বলছে।
আমিঃভাইয়া কি বলে?
ভাবিঃসে তো ঐ বাসার কথা শুনতেই
চাই না।অনেকবার বোঝানোর চেষ্টা
করেছি।কিন্তু শোনেনি।
আমিঃতোমাকে আঙ্কেল যেতে বলছে
নাকি তানিয়া যেতে বলছে?
ভাবিঃদুজনই
আমিঃআব্বু আম্মুকে বলো
ভাবিঃসাহস পাচ্ছি না
আমিঃতারা ঘুমিয়ে গেছে?
ভাবিঃজানিনা,দরজার কাছ থেকে
ফিরে আসছি।
আমিঃঠিক আছে আমি যাচ্ছি।
শুয়ে না থেকে উঠে আব্বু আম্মুর
কাছে গেলাম।
আমিঃআসবো?(বাইরে থেকে)
আম্মুঃহ্যা আয়
আব্বুঃএখন হঠাৎ?
আমিঃকাল ভাবি আর আমি তাদের
বাসায় যাচ্ছি।সেটা জানানোর জন্য।
আম্মুঃওর বাবা আমাদের কি বলেছিলো
ভুলে গেছিস?
আমিঃখারাপ তো কিছু বলছিলো না।
একটা মেয়েকে যখন ২০ বছর ধরে
লালনপালন করে পড়াশোনা করায়
আর তখন যদি সে একটা ছেলের
সাথে পালিয়ে বিয়ে করে তখন তো
তার মাথাতে ঐসবই আসবে।
আম্মুঃতুই কোন সাইড নিচ্ছিস বলতো
আমিঃআম্মু এখানে সাইড নেয়ার কিছু
নেই।উনার জায়গাতে তোমরা দাড়াও।
আব্বুঃহুম যাস
আমিঃতানিয়ার বিয়ে ঠিক হলে সবাইকে
যেতে হবে সেখানে।
আব্বুঃনেমন্তন্ন ছাড়া কোথাও খেতে
যাওয়ার আমার ইচ্ছা নেই।
আমিঃতুমি রাজি হয়ে গেলে?
আব্বুঃহাহাহা,না হয়ে কি করবো।অনেক
দিন হয়ে গেছে,সেদিন যদি রায়হানকে
একটু শান্তনা দিতাম তাহলে সব কিছু
ঠিক থাকতো।
আম্মুঃঅরিতা কই?
আমিঃবাইরে দাঁড়িয়ে আছে,তোমাদের
বলার সাহস পাচ্ছিলো না।
আম্মুঃভিতরে আয় মা।
ভাবিঃহ্যা মা
আম্মুঃকাল ওখানে যাওয়ার আগে
সবার জন্য কিছু নিয়ে যাস।বিয়ের
পর এই প্রথম বাপের বাড়ি যাচ্ছিস।
ভাবিঃআমি ভেবেছিলাম তোমরা
আমার কথা শুনে অনেক রাগ করবে।
আম্মুঃপাগলি,মেয়ের কথা শুনে মা বাবা
কি রাগ করতে পাড়ে নাকি?তোরা দুজনই
তো আমার মেয়ে।আর নিলয় তুই কি
এখনো জান্নাতকে…..
আমিঃনা,একটুও না।
কথাটা শুনে সবাই চুপ হয়ে গেলো।
জোরতা নিয়ে আব্বু বললো;
আব্বুঃকিন্তু তুই তো ওকে ভালোবাসতি
আমিঃওটা ভালোবাসা ছিলো না আব্বু।
আব্বুঃওহ
আমিঃহুম আমি আসছি
সেখানে আর না থেকে রুমে এসে ঘুমিয়ে
গেলাম।
পরেরদিন ভাবিকে সাথে নিয়ে
তাদের বাসায় গেলাম।যেটা হওয়ার ঠিক
সেটাই হয়েছে।সেখানে যেতেই কান্নার
প্রতিযোগিতা শুরু হলো,কে কতো কান্না
করতে পাড়ে। এদিকে তাদের সবার
কান্না শুনে শুনে আমার কানে পোকা
লেগে গেছে।আনমনে এদিক ওদিক
তাকাতে হঠাৎ একটা হলুদ ড্রেস পড়া
মেয়ের দিকে চোখ পড়লো।অন্য সব
মেয়ের মতো লাগলেও চোখে চশমা
পড়ার কারণে অনেক বেশিই কিউট
লাগছে।
আমিঃভাবি
ভাবিঃ…….
আমিঃভাবি(জোরে বললাম)
ভাবিঃকি
আমিঃউনি কে?
ভাবিঃমিমি
আমিঃওকে
সেখানে দাঁড়িয়ে না থেকে সোজা মিমির
কাছে চলে গেলাম।
আমিঃহাই
মিমিঃজ্বি
আমিঃআমি নিলয়
মিমিঃআর আমি ম..
আমিঃমিমি
মিমিঃজানলেন কি করে?
আমিঃভাবি বলেছে
মিমিঃওহ,আপনি আপুর সাথে আসছেন?
আমিঃহ্যা,আমি আসলে আপনার
আপুর দেবর।
মিমিঃতাহলে আপনিই সেই বদজাত
ছেলে,আপনিই আপুকে পালাতে
সাহায্য করেছিলেন।
আমিঃপালাতে নয়,সাথে করে নিয়ে গেছিলাম।
মিমিঃআন্টির কান্না দেখে তখন ইচ্ছা
করছিলো আপনার ভাইকে ধরে খুব
করে মেরে হাসপাতালে ভর্তি করতে।
কিন্তু এখন তো দেখছি আপনি।
আমিঃহাহাহা,কি করেন?
মিমিঃমেডিকেল স্টুডেন্ট ফাইনাল ইয়ার
আমিঃপাবলিকে?
মিমিঃজ্বি
আমিঃভালোই হলো তাহলে
মিমিঃকেনো?
আমিঃএকটা ডাক্তার মেয়ের সাথে
প্রেম করতে পাড়বো তাই।
মিমিঃকিন্তু আমি তো অলরেডি অন্য
জনের সাথে রিলেশনে আছি।
আমিঃআমি না শেষ ভালোবাসা হবো
মিমিঃআমি আপনার সাথে কেনো
রিলেশনে যেতে রাজি হবো?
আমিঃকারণ কিছুদিন পর আপনি
আমাকে বিয়ে করতে চাইবেন।
মিমিঃহারামি আছেন বটে।
আমিঃআপনার জন্য সেটাও হতে
রাজি আছি ম্যাডাম।
মিমিঃআপনাকে আপু ডাকছেন
আমিঃকিন্তু আপনি ভাবির কি হন?
মিমিঃছোট খালার মেয়ে।
আমিঃওকে,আর আই লাভ ইউ
মিমিঃপ্রথম দেখাতেই?
আমিঃযদি অন্য কেউ বলে দেয়।আর
উত্তর এখন দিতে হবে না,দুটোদিন
চিন্তাভাবনা করো তারপর দিও।
মিমিঃকিন্তু আফসোস আপনি কখনোই
উত্তর পাবেন না।
আমিঃকষ্ট পাবো যে
মিমিঃআপনি যান এখন(ধাক্কা দিয়ে)
আমিঃবাই
সেখানে না থেকে ভাবির কাছে গেলাম।
ভাবিঃএতো দেরি করলি যে
আমিঃতোমার বোনকে ভালো লাগছে
তানিয়াঃহোয়াট?
আমিঃতোকে না,তোর ছোট খালার মেয়ে।
ভাবিঃকিন্তু…
আমিঃভাবি তুমিও সবার মতো করছো।
আমি সেসব ভুলে নতুন করে সবকিছু
করতে চাই।
তানিয়াঃরাজি হয়েছে?
আমিঃনা,আর ও থাকে কোথায়?
ভাবিঃহোস্টেলে থাকে
আমিঃকোন হোস্টেলে?
ভাবিঃআড্ডা ঘর ফাস্টফুড আছে না?
আমিঃহুম আমাদের অফিস ছেড়ে ১০
মিনিট যেতে হয়।
ভাবিঃতার পাশে একটা হোস্টেল আছে।
সেখানে থাকে
আমিঃওহ
তানিয়াঃকিন্তু তোর জান্নাতের কি হলো?
আমিঃএমন করে গলা টিপে মেরে ফেলছি
(তানিয়ার গলা ধরে দেখালাম)
ভাবিঃএখন কি করবি?
আমিঃবাসায় যাবো,তুমি এখানে কিছুদিন
থাকো।আর ওর যদি বিয়ে ঠিক হয়
তাহলে তোমার আব্বুকে বাসায়
ইনভাট করতে বলবে।
ভাবিঃওকে,এখন বস কিছু খেয়ে যা
আমিঃনা,বাইরে খেয়ে নেবো
ভাবিঃসাবধানে যাস
আমিঃহুম
বাসা থেকে বের হবো তখনি মিমির
সাথে আবারো দেখা।
মিমিঃকোথায় যাচ্ছেন?
আমিঃচলে যাচ্ছি
মিমিঃকেনো?
আমিঃযত্ন নেয়ার কেউ নেই তাই।
সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত,অপরিচিত
ছেলে খেয়েছে কিনা সেটার কোনো
খোঁজখবর নেই।
মিমিঃআপনি খাওয়াদাওয়া করেন নাই?
আমিঃনা?
মিমিঃআমার সাথে আসুন
আমিঃনা,বাইরে থেকে খেয়ে নেবো
মিমিঃআরে আসুন
হাত ধরে ভাবির কাছে নিয়ে গেলো।
ভাবিকে আগে থেকেই ইশারা করে
চুপ থাকতে বললাম।
মিমিঃআপু তোমার দেবর না খেয়ে
চলে যাচ্ছিলো আর তুমি একটুও
তার খোজ নিচ্ছো না?
ভাবিঃআসলে এতোদিন পর তাই
মিমিঃতাই বলে?
তানিয়াঃসরি,আসলে আমিই আপুকে
আটকে রাখছি।তুই গিয়ে একটু নিলয়কে
খাবার বেড়ে দে।
মিমিঃএমন ভাব করছিস মনে হচ্ছে তোকে
দেখতে না বরং বিয়ে হচ্ছে আজই।
তানিয়াঃহু?
মিমিঃআমার সাথে আসুন
ভাবি এবং তানিয়াকে ইশারায় ধন্যবাদ
জানিয়ে মিমির সাথে গেলাম।একটা
রুমে আমাকে রেখে খাবার আনতে
গেলো।অনেক বেশিই গোছানো রুম,
বারান্দাতে কয়েক ধরনের ফুল,রুমের
এক পাশে একটা তাক আছে।সেখানে
অনেক বই সাথে কিছু আসবাব যা
দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে।এসব
দেখছি তখনি মিমি আসলো।
মিমিঃকি দেখছেন?
আমিঃরুমটা অনেক সাজানো।
মিমিঃএটা আপুর রুম ছিলো,মাঝে
মাঝে আমিও এসে এখানেই থাকতাম।
গোছগাছ থাকতে ভালো লাগে,আপুর
সাথে কত্তো মজা করছি এই রুমে
কিন্তু আপনাদের জন্য সব হারিয়ে
ফেলছিলাম।
আমিঃদোষটা আমাদের কোথায়?
মিমিঃআপনারাই তো আপুকে নিয়ে
গিয়েছিলেন তাই না।
আমিঃআপনার আপুও তো আমার
ভাইকে ভালোবাসতো।আর আমি
কিভাবে চোখের সামনে আমার ভাই
এবং আপুর মতো একটা মানুষের
কষ্ট দেখি।তাই দুজনকে পালাতে
সাহায্য করে বিয়ে দিয়ে দেয়।
মিমিঃআপনার খাবার
আমিঃহুম(খেতে শুরু করলাম)
মিমিঃআপনি আগে থেকে আপুকে চিনতেন?
আমিঃহুম,সেই ছোট্ট থেকে
মিমিঃবয়স কতো ছিলো?
আমিঃআরে জ্ঞান হওয়ার থেকেই চিনতাম।
কিন্তু তখন তারা রিলশনে ছিলো না।
যখন SSC এক্সাম দিলাম তখন থেকে
জানতে পারলাম দুজনের মধ্যে চক্কর আছে।
মিমিঃআপনার মাথাতে এতো বড় বড়
চুল কেনো?
আমিঃভালো লাগে
মিমিঃওহ,আচ্ছা আপনি খান।
কোনো কথা না বলে খাওয়াতেই
মনোযোগ দিলাম।।খাওয়ার পাশাপাশি
মিমির দিকে দেখছিলাম,তাক থেকে
একটা বই বের করে চেয়ারে বসে পড়ছে।
অনেকটাই জান্নাতের মতো দেখতে।
জান্নাত হাসলে গালে টোল পড়ে আর
মিমির ঠোঁটের নিচে একটা তিল আছে।
কেমন একটা মায়াময়। খাওয়া শেষ
হতেই মিমি প্লেট রেখে একটা টিস্যু
নিয়ে আসলো।
মিমিঃএখন কি করবেন?
আমিঃবাসায় যেতে হবে।
মিমিঃকেনো?
আমিঃএখানে থেকে কি করবো?
মিমিঃসেটাও ঠিক,এখন যদি ছেলের
পক্ষ থেকে বলে ছেলে কে,তখন সবাই
হাসাহাসি ছাড়া কিছুই করবে না।
আমিঃআপনার হবু স্বামী বলতে পাড়েন
কিছু মনে করবো না?
মিমিঃমাইর খাবেন আপনি
আমিঃহাহাহা,আর আপনার নাম্বার দেন
মিমিঃকেনো দেবো?
আমিঃকারণ আমি চাইছি তাই
মিমিঃজ্বি না
কিছু না বলে টেবিল থেকে একটা
কলম নিয়ে মিমির হাতে নাম্বারটা
লিখে দিলাম।
আমিঃআমার নাম্বার,যদি কখনো
মনে করেন আমাকে মিস করছেন
তখন কল দিবেন।আর যদি মনে
না পড়ে তাহলে গোসলের সাথেই
ভেসে যাবে।
মিমিঃহুম,তবে আশা করবেন না
কারণ আমি কখনো কল করবো না।
আমিঃসেটা তো সময় বলে দিবে,বাই।
বিদায় দিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে
চলে আসলাম।কাল থেকে অফিসে
যাবো তাই আগে থেকে সব কিছু
ঠিক ঠাক করে রাখলাম।
পরেরদিন,,,,,,,,,,
ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে নাস্তা করে
ভাইয়ের সাথে অফিসে চলে গেলাম।
সবাই সবার ডেস্কে বসে কাজ করছে
কিন্তু হাতে কাজ না থাকায় এদিক
সেদিক উঠে সবার কাজ দেখছি।
কিন্তু সেটা আর হলো না।পিয়ন
চাচা এসে বললো ম্যানেজার ম্যাম
তার কেবিনে ডেকেছেন। দাঁড়িয়ে
না থেকে রুমে চলে গেলাম।আগের
থেকে অনেক পাল্টে গেছে।আগে
যতোটা সুন্দরী দেখাতো এখন
তার থেকেও কিউট লাগে।আগে
সাজগোজ না করলেও এখন
টুকটাক করে।তার উপর শার্টপ্যান্ট
তো আছেই।
আমিঃকিছু বলবি?
জান্নাতঃম্যানেজারের রুমে আসতে
হলে পারমিশন নিতে হয়।যদিও
আপনি বসে ছেলের কিন্তু আপনি
এখন সাধারণ স্টাফ।আর পারিবারিক
সম্পর্কের টানে অফিসে তুই করে না
বলাটাই বেটার।আশা করি বুঝতে
পারছেন মি. নিলয়।
কথাটার কোনো উত্তর না দিয়ে বাইরে
এসে নক করলাম।
আমিঃআসবো?
জান্নাতঃজ্বি কাম ইন
আমিঃবলুন কি বলবেন?
জান্নাতঃদেখলাম আপনি কাজ
বাদ দিয়ে অন্যদের কাজ দেখছেন।
আমিঃহুম
জান্নাতঃকেনো?
আমিঃআপনার সেসব না ভাবলেও
চলবে মিসেস নিলয়।
জান্নাতঃদেখুন এখানে পারিবারিক সম্পর্ক
টানতে বারণ করছি আমি।
আমিঃআপনি নিজেই বার বার বলছেন
আমি একবারের জন্যও কি বলেছি
আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক ম্যাডাম?
জান্নাতঃআপনি নিজের ডেস্কে বসে
কাজ করবেন অন্য কোথাও যাবেন না।
আমিঃযখন হিসু চাপবে তখনো কি
নিজের ডেস্কেই করবো?
জান্নাতঃShut up?
আমিঃআপনিই তো বললেন
জান্নাতঃআউট
আমিঃধন্যবাদ
কথা না বাড়িয়ে ডেস্কে চলে আসলাম।
কাজ নেই তাই বসে থাকতেও ভালো
লাগছে না।ডেস্কে রোবটের মতো বসে
না থেকে আবারো ঘুরে ঘুরে সবার
কাজ দেখছি তখন পিয়ন চাচা আসলো।
আমিঃকি অবস্থা চাচা?
চাচাঃএইতো বাপ,কিন্তু তুমি অন্যদের
মতো স্টাফ হয়ে কাজ করার কারণ কি?
আমিঃকোম্পানিটাকে আগে যাচাই করতে
চাই।তারপর না হয় ভাইয়ার সাথে কাজ
করবো।এখন কটাদিন এমনই থাকি।
চাচাঃওহ,আচ্ছা বাপ থাকো আমি যায়
আমিঃওকে চাচা।
কেমন একটা জান্নাতকে রাগানোর
জন্য ইচ্ছা করছে।দাঁড়িয়ে না থেকে
জান্নাতের রুমে চলে গেলাম।
আমিঃম্যাডাম আসবো?
জান্নাতঃজ্বি আসুন,কিছু বলবেন?
আমিঃআমিঃহ্যা
জান্নাতঃবলুন
আমিঃআপনার বিয়ে হয়েছে?
জান্নাতঃসরি?
আমিঃআপনার বিয়ে হয়েছে?
জান্নাতঃআপনার এসব জেনে লাভ আছে?
আমিঃএমনি জানতে ইচ্ছা করছে।
জান্নাতঃহ্যা
আমিঃআপনার হাসবেন্ড কোথায় থাকে?
জান্নাতঃদুজন আলাদা
আমিঃডিভোর্স হয়েছে কি?
জান্নাতঃদেখুন এবার কিন্তু আপনি লিমিট
ক্রস করছেন।
আমিঃযেহেতু একসাথে নেই তাই জিজ্ঞাস
করতেই পাড়ি ডিভোর্স হয়েছে কিনা।
জান্নাতঃপারসোনাল লাইফ সম্পর্কে কিছু
বলতে বাধ্য নয় আমি।
আমিঃআমার বলতে বারণ নেই।আমার
বাসর রাতেই আমার স্ত্রী আমাকে ছেড়ে
দিছে।হয়তো অন্য কারো সাথে সম্পর্ক আছে।
জান্নাতঃনাও থাকতে পাড়ে।
আমিঃথাকাটাই স্বাভাবিক।
জান্নাতঃসব সময় নেগেটিভটাই কেনো
সবাই ভাবতে পছন্দ করে?
আমিঃকাণ আপনারাই নেগেটিভ চিন্তাভাবনা
করতে শেখান।
কিছু একটা বলতে যাবে তখনি উঠে
চলে আসলাম।আমার সাথে গেম
খেলা সেটা তুই হারে হারে টের পাবি।
মাত্র তো তোকে নিয়ে খেলা শুরু করলাম।
চলবে…………..