অদ্ভুত_মেয়ে (season 2)
Part- 40
Writer: #Nur_Nafisa
.
.
নাফিসা- আমি সিরিয়াস কোশ্চেন করেছি ,সুতরাং সিরিয়াসলি আনসার দিয়ে যাবে। এজ এ বয়ফ্রেন্ড, কয়টা মেয়েকে ভালোবেসেছো আজ পর্যন্ত?
ইমরান- জীবনে একজনকেই ভালোবেসেছি আর মৃত্যু পর্যন্ত তাকিয়ে ভালোবেসে যাবো।
ইমরান মুচকি একটা হাসি দিয়ে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে। আর নাফিসা স্তব্ধ হয়ে খাটে বসে আছে! এটা কি বলে গেলো ইমরান! নাফিসা কি আজও তার মনে একটু জায়গা করতে পারেনি! এতোদিনের চেষ্টা কি সব ব্যর্থ! ইমরান কি আজও তিশাকে ভুলতে পারেনি! মৃত্যু পর্যন্ত তিশাকেই ভালোবাসবে! ভেতরটা পুড়ে যাচ্ছে! সে তো তিশার জায়গা নিতে চায়নি, নিজের জন্য অন্য একটা জায়গা বানাতে চেয়েছে! ইমরান সেটাও হতে দিলো না! আর কিসের আশায় থাকবে তার কাছে! শুধু শুধু থেকেই বা কি লাভ! যেখানে ভালোবাসা নেই সেখানে ভ্রান্ত সম্পর্কের টানে পড়ে থেকে আর কি করবে! ইমরানকে ছেড়ে যেতে হবে। থাকুক ইমরান যেভাবে ইচ্ছে। আর যাই হোক, ভালোবাসা নিশ্চয়ই কারো ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া যায় না! তার চেয়ে ভালো নিরব অভিযোগ, আর অভিমান নিয়ে সে ইমরান থেকে দূরে চলে যাবে। ভালোবাসার মানুষের সাথে তো আর লড়াই করা যাবে না!
নাফিসা কান্না করলো কিছুক্ষণ। চোখে মুখে পানি ছিটিয়ে কম্বল টেনে শুয়ে পড়লো। ইমরান রুমে এসে দেখলো নাফিসা চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে। তার আবার কি হলো! পাশে বসে কপালে হাত দিলো। শরীর তো স্বাভাবিকই আছে। মৃদু স্বরে ডাকলো,
ইমরান- সাঈফা?
নাফিসা সাড়া দিচ্ছে না। তাকে নাড়িয়ে আবার বললো,
ইমরান- এই তুমি শুয়ে আছো কেন?
নাফিসা- ওফ্ফ! যাও তো!
ইমরান- কি হয়েছে? বাইরে ঘুরতে যাবে না?
নাফিসা- না। যাও আরেকবারও ডাকবে না।
ইমরান তার অপর পাশে শুয়ে পড়লো তাকে জড়িয়ে ধরে। নাফিসা বিরক্তি নিয়ে হাত সরিয়ে দিলো! আবার দিতে গেলে নাফিসা সম্পূর্ণ কম্বল সরিয়ে ইমরানকে দিয়ে দিলো। আর সে একদম কিনারায় এসে গুটিসুটি মেরে শুয়ে রইলো। ইমরান তার আচরণ একটুও বুঝতে পারছে না! তাকে টেনে কাছে এনে বললো,
ইমরান- এই, এমন করছো কেন তুমি? বলো আমাকে, কি হয়েছে?
নাফিসা- ওফ্ফ! অসহ্য!
নাফিসা ইমরানকে সরিয়ে খাট থেকে নেমে গেলো।
ইমরান লক্ষ্য করলো, নাফিসা তাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছে। নাফিসার কাছে এসে নাফিসার পেছনে দুহাত রেখে সামনে থেকে জড়িয়ে ধরে বললো….
ইমরান- কি হয়েছে তোমার? কিছু জিজ্ঞেস করলে ঠিকমতো কথা বলছো না! এভাবে এড়িয়ে চলছো কেন আমাকে?
নাফিসা- ভালোবাসো আমাকে?
কথার সাথে সাথে নাফিসার চোখ দুটো জলে ভরে গেছে। আর ইমরান তার কথায় হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছে! ধাধালো কন্ঠে নাফিসা বলতে লাগলো,
নাফিসা- তোমার মনে কখনো ভালোবাসার জায়গা না দিতে পারলে বিয়ে করেছিলে কেন আমাকে?
ইমারান নাফিসাকে ছেড়ে দু কদম পিছিয়ে গেলো! এটা কি বললো সে! কেন বললো একথা।
ইমরান- এসব কি যা তা বলছো!
নাফিসা- যা তা বলছি না, ঠিকই বলছি… কেন বিয়ে করেছো আমাকে! আমি কি ইচ্ছে করে তোমার কাছে এসেছিলাম? নাকি আমার বাবা-মা জোর করে তোমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছে আমাকে? কোনটা? বিয়ে করে কার উপর এমন দয়া দেখাচ্ছো শুনি?
ইমরান- নাফিসা পাগল হয়ে গেছো তুমি! কি বলছো আমিতো কিছুই বুঝতে পারছি না!
নাফিসা- না, আজ সজ্ঞানে দাঁড়িয়ে আছি এখানে। এতোদিন হয়তো পাগল ছিলাম। এজন্যই তো বিয়ের পর থেকে দিনের পর দিন চেষ্টা করেছিলাম তোমার মনে তিশা আপুকে হারানোর বেদনা ঢেকে নতুন করে একটা ভালোবাসার জায়গা বানাতে! আমিতো ভেবেছিলাম হয়তো কোন জায়গা সৃষ্টি করতে পেরেছি তাই আমাদের মধ্যে এতকিছু ঘটেছে….! কিন্তু আমার ভাবনা যে ভুল! তুমি যে জীবনে এক জনকেই ভালোবেসেছো, আর মৃত্যু পর্যন্ত যে তাকেই ভালোবাসবে এটা তো আমার জানা ছিলো না! আমি তো তিশা আপুর স্থান দখল করতে চাইনি! নিজের জন্য আলাদা জায়গা বানাতে চেয়েছিলাম, এতো চেষ্টার পরও কেন পেলাম না সেই সুযোগ।
ইমরান দু’হাতে নিজের মাথা চেপে ধরলো, অত:পর চিতকার করে বলতে লাগলো….
ইমরান- আল্লাহ….! এই মেয়েকে এতো জ্ঞান দিয়েছো তুমি, এইটুকু বুঝার ক্ষমতা কি দাও নি!!! আমাদের মাঝে এতোকিছু হয়ে গেছে আর আজ সে জিজ্ঞেস করছে আমি তাকে ভালোবাসি কিনা!
নাফিসা- হয়তো সবটাই দয়া দেখাতে, বিয়ে করেছো তাই নিজের দায়িত্ব পালন করতে এতোসব ঘটিয়েছো ….!
ইমরান- হ্যাঁ দায়িত্ব! তাহলে বল কাকে ভালোবাসি আমি? বলছিস না কেন! কাকে ভালোবাসি আমি?
নাফিসা- কাকে আবার তিশা আপুকেই তো ভালোবাসতে……
ইমরান- তিশা তিশা তিশা! তিশা মাই ফুট!!! (নাফিসার দুবাহু ধরে ঝাকিয়ে) কিসের তিশা, হুম? আমি বলেছি কখনো যে, আমি তিশাকে ভালোবাসি? বল, বলেছি কখনো তোকেএএএ? তিশা কে ভালোবাসলে আমি তোর এতোটা কেয়ার করি? প্রতিটি মুহূর্ত ভাবি কেন আমি তোকে নিয়ে? তিশাকে ভালোবাসলে আমি তোকে সারপ্রাইজড করতে এতোদূর পর্যন্ত ছুটে আসি? আর তোকে না ভালোবাসলে কি আমি কখনো তোর সাথে ইন্টিমেট রিলেশনে যেতাম !
নাফিসা অবাক হয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকিয়ে আছে ইমরানের দিকে….. কি বুঝাতে চাইছে সে!
ইমরান- তিশাকে কখনোই ভালোবাসতাম না আমি। তিশা শুধুমাত্র আমার একজন ভালো ফ্রেন্ড। আমাদের সম্পর্ক ভাইবোনের মতো। এর বেশি কিছুই না।
নাফিসা- তাহলে তুমি শান্তা আপুর বিয়ের সময় আমাকে বলেছিলে কেন যে তিশা আপুর সাথে তোমার ব্রেকাপ হয়েছে। আর সবসময় তিশা আপুর কথা বলে আমাকে জেলাসি করতে কেন?
ইমরান- শান্তার বিয়ের সময় মিথ্যে বলেছিলাম তোকে। কারন তখন আমি বাবা-মা, চাচ্চু, ফুপি ফুপাকে বলতে শুনেছিলাম তোর আর আমার বিয়ে ছোট থেকেই ঠিক করে রাখা হয়েছে। তুই তো আগে থেকেই ভেবে নিয়েছিস আমি তিশাকে ভালোবাসি! তাই তুই যাতে আমাকে নিজের স্বামী হিসেবে গ্রহণ করতে পারিস তাই মিথ্যে বলেছিলাম। কারণ, শুধুমাত্র তুই ই সন্দেহ করেছিস যে আমি তিশাকে ভালোবাসি। বন্ধুদের সাথে একটু আধটু ফোনে কথা বললেই কি এর মানে হয়ে যায় আমি তাকেই ভালোবাসি! তখন মিথ্যে না বললে তুই সবাইকে বলে দিতি আর সবাই আমাকে ভুল বুঝতো, আর তিশাকেও এ নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হতো। আমারই ভুল হয়েছে প্রথমেই কেন আমি তোর সন্দেহ টা দূর করলাম না!
বিয়ের পর তিশার কথা বললে তুই জেলাসি ফিল করতি, আর আমি সেই সুযোগটাই কাজে লাগাতাম দুষ্টুমিতে।আমি তো ভেবেছিলাম তুই আমার দুষ্টুমি বুঝতে পারতি! কিন্তু তোর মধ্যে যে এতোটা প্যাচ আছে তা তো আর জানা ছিলো না। আর এটাও বুঝতে পারিনি যে তোকে মুখে বলতে হবে আমি তোকে কতটা ভালোবাসি! একটু আগে যার কথা বলেছি সেই একজন তুই…. মৃত্যু পর্যন্ত তোকেই ভালোবাসবো। আমার সত্তা জুড়ে শুধু তুই, বুঝতে পেরেছিস? শুধুই তুই….
নাফিসা ইমরানকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো…
নাফিসা- আমি তোমার ভাগ কাউকে দিতে পারবো না।
ইমরান একটু সময় নিয়ে নিজেকে শান্ত করে নাফিসার মুখটা ধরে উপরে তুলে চোখ মুছে দিলো এবং নাফিসার ডান হাতটা ইমরান তার বুকের বা পাশে চেপে ধরলো… আর আবেগী কন্ঠে বলতে লাগলো…
ইমরান- এই হৃদয়ে শুধুমাত্র একজনের জন্যই জায়গা রেখেছি, একজনের জন্যই আমার সকল ভালোবাসা জমা করে রেখেছি, অনেক আগে থেকেই একজনের জন্য লাখো স্বপ্ন বুনে রেখেছি। যে আমার বউ হবে তাকে উজাড় করে দিবো সবটা, তাই কোনো মেয়ের সাথে আমি এক্সট্রা কোন রিলেশনে যাই নি কখনো। শান্তার বিয়ের সময় থেকে যখন জানতে পারি তুই আমার বউ হবি, সেদিনই তোর নাম লিখে ফেলেছি এখানে। ভালোবাসার কথা কি মুখে বলে দিতে হয়! এমনিতে বুঝা যায় না? আর বললেই কি ভালোবাসা হয়ে যায়, হুম? কই তুই তো আমাকে কখনো বলিস নি ভালোবাসিস, তার মানে তুই আমাকে ভালোবাসিস না, তাইতো?
নাফিসা ইমরানের হাত থেকে ডান হাত ছাড়িয়ে নিয়ে ইমরানের বুকের বা পাশেই একটা কিল বসিয়ে দিলো ইমরান ব্যাথা পাওয়ার ভঙ্গিতে “ওফ!” শব্দ করে তার বুকে মেসাজ করতে লাগলো , অত:পর নাফিসা জড়িয়ে ধরে ইমরানের বুকে চুমু দিয়ে মাথা রাখলো…. ইমরানও জড়িয়ে ধরলো…
নাফিসা- ভীষণ ভালোবাসি আমি, বুঝোনা তুমি?
ইমরান- তোমার কথা অনুসারে তোমাকে বুঝাতে তো বারবার বলতে হবে ভালোবাসি। ওকে আমি তাই বলছি…… ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি……..
নাফিসা- হিহিহিহি….. জাষ্ট শাট আপ!
ইমরান- হাহাহা…. দেখি খাটো বউ, একটু উচু হও!
নাফিসা- আমি খাটো! আমার হাইট ৫.৫ ফুট।
ইমরান- আমি তো ৬ফুট। আমার জন্য কি তুমি পারফেক্ট?
নাফিসা- অবশ্যই….
ইমরান- তাহলে টুল চৌকীর সাহায্য ছাড়া লিপ কিসিতে প্রমান করে দেখাও, দেখি…..
নাফিসা- স্টুপিড!
ইমরান- জানি, দ্রুত প্রমাণ করো।
ইমরান সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। নাফিসা পায়ের আঙুল ভর দিয়ে উঁচু হয়ে এক হাত ইমরানের কাধে রাখলো, অন্য হাত দিয়ে ইমরানের মাথাটা পেছন থেকে ধরে কাছে টানলো। ইমরান দুহাতে নাফিসার কোমড় ধরে তাকে উঁচু করতে সাহায্য করলো। অত:পর নাফিসা দীর্ঘ সময় নিয়ে ইমরানকে লিপ কিসি করে প্রমাণ করে দিলো!
এই সময়টা রুমেই কাটিয়ে মাগরিবের পর নামাজ পড়ে ঘুরতে বেরিয়েছে। ইমরান নাফিসাকে দাড় করিয়ে কিছু খাবার কিনে নিয়ে এলো। নাফিসার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,
ইমরান- নাও, খাও।
নাফিসা- কি এগুলো?
ইমরান- চিংড়ি ভাজা।
নাফিসা- তুমিই খাও বেশি করে! ভেতরে চিংড়ি দিছে না কাকড়া দিছে কে জানে!
ইমরান- হাহাহা! মেবি, কাকড়া ই দিছে! সমস্যা কি, একই তো।
নাফিসা- ওয়াক! চিংড়ি আর কাকড়া এক! মানুষ খায় কিভাবে! আমার তো মনে হলেই বমি আসে। ফেরত দিয়ে আসো।
ইমরান- হাহাহা… কাকড়া না। চিংড়িই। ধরো।
নাফিসা- উহুম! আমি খাবো না এসব!
ইমরান পকেট থেকে ফোন বের করে টর্চ জ্বালিয়ে নাফিসার হাতে দিলো। তারপর ভেঙে দেখালো এটা চিংড়ি। এবার বিশ্বাস করে নাফিসা খেয়েছে। মজা পেয়ে আবার আনিয়েছে। বালিতে হেটে হেটে চিংড়ি ভাজা আর জুস খেয়েই আজ ডিনার সেড়েছে। ইমরান আতশবাজি ফুটিয়েছে নাফিসাকে নিয়ে। নাফিসা অনেক উৎফুল্ল! আবার হাটতে লাগলো দুজন। রাতের অন্ধকারে সমুদ্রের তীরে তীব্র গতিতে বাতাস বইছে। সাগরের ঢেউয়ের শব্দ ভেসে আসছে কানে। সমুদ্রের গভীরতার মতো দুজনের মনের প্রেমানুভূতির গভীরতাও অনেক!
বাসা থেকে ফোন আসলে ইমরান কথা বলতে লাগলো। ফোন রাখতেই পাশে দেখলো নাফিসা নেই! কোথায় গেলো সে! আশেপাশে তো কতো মানুষই দেখা যাচ্ছে কিন্তু নাফিসা কোন দিকে! মেয়েটা এতো পাজি, অদ্ভুত কান্ড ঘটিয়ে একটা না একটা ঝামেলায় ফেলে দেয়! আশেপাশে চোখ বুলিয়ে দূর থেকেই দেখতে পেল, কিছু লোক ফানুস উড়াচ্ছে আর সেখানে একটা মেয়ে একা দাঁড়িয়ে আছে। নাফিসার মতোই দেখা যাচ্ছে। ইমরান দৌড়ে একটু কাছে গিয়েই বুঝতে পারলো এটা নাফিসাই। ফানুস উড়ে যাচ্ছে আকাশের দিকে, নাফিসা সেদিকেই তাকিয়ে আছে। ইমরান পেছন থেকে ছবি তুলে নিলো। নাফিসার কাছে এসে বললো,
ইমরান- একা একা চলে এসেছো কেন! আমি তো ভয় পেয়ে গেছি! ভাবেছি হারিয়ে গেছো!
নাফিসা- আমাকে কি ছোট বাচ্চা মনে হয়! রিসোর্ট তো চিনি ই। তোমাকে না পেলে সেখানে গিয়ে বসে থাকতাম। ফোনে কথা বলছো তাই বিরক্ত করিনি।
ইমরান- আর এমন করবে না। অচেনা জায়গা, একা যাবে না কোথাও।
নাফিসা মুচকি হেসে ইমরানের একটা হাত জড়িয়ে ধরে বললো,
নাফিসা- ওকে। দেখো, ফানুস উড়তে দেখতে খুব সুন্দর লাগছে না?
ইমরান- উড়াবে?
নাফিসা আশ্চর্য হয়ে ইমরানের দিকে তাকালো। ইমরান মুচকি হেসে তাকে ছাড়িয়ে ওই লোকগুলোর কাছে গেলো। তাদের কাছ থেকেই একটা কিনে নিলো। নাফিসাকে নিয়ে একপাশে এসে আগুন ধরিয়ে নাফিসাকে ফানুস ধরালো। একজনকে নিয়ে এলো ছবি তোলার জন্য। নাফিসার ছবি সে নিজেই তুললো আর কাপল ফটো ওই লোকটি তুলে দিলো। দুজনেই একসাথে ফানুস উড়িয়ে দিলো। ফানুস উড়ে যাচ্ছে, ইমরান পেছন থেকে নাফিসাকে ধরে দাড়িয়ে আছে। নাফিসার চোখ ছলছল করছে! এতো সুখের ভাগীদার হবে সে কখনো কল্পনাও করেনি! ঘাড় ঘুরিয়ে ইমরানের গালে চুমু দিলো নাফিসা। ইমরান নাফিসার চোখে পানি দেখে ব্রু কুচকে তাকালো। কিন্তু মুখে হাসি দেখে বুঝে গেছে এটা সুখের কান্না! ইমরান নাফিসার মাথায় চুমু দিয়ে বললো,
ইমরান- অদ্ভুত মেয়েকে কাদলে একেবারে পচা দেখায়!
নাফিসা- ভালোবাসি।
ইমরান- ভালোবাসি।
নাফিসা মুচকি হেসে তাকে ছাড়তে বললো। সোজা হয়ে ইমরানের বুকে মাথা রেখে তাকিয়ে আছে উড়ন্ত ফানুশের দিকে।
অনেক্ক্ষণ সময় কাটিয়ে তারা রিসোর্টে ফিরে এলো। ফ্রেশ হয়ে ঘুমাতে যাওয়ার সময় ইমরানের বুকে মাথা রেখে বললো,
নাফিসা- হিমা হিয়া তোমাকে কল করে বকাঝকা করলো না কেন?
ইমরান- কি করে করবে, রাফসান তাদের ঘুরতে নিয়ে গিয়েছিলো রাতে। সবই টেকনিক!
নাফিসা- হিহিহি! আমরা কি ঘুরতে এসেছি নাকি হানিমুনে?
ইমরান কয়েক সেকেন্ড সময় নিয়ে দ্রুত নাফিসাকে বালিশে নামিয়ে আধশোয়া অবস্থায় থেকে তাকিয়ে রইলো নাফিসার দিকে। নাফিসা প্রশ্ন করে স্তব্ধ হয়ে আছে! ইমরানের রিয়েকশন কিছুই বুঝতে পারছে না! প্রথমে মুখে সিরিয়াস ভাব আনলেও এখন ঠোঁটের কোনায় দুষ্টুমি হাসি ফুটিয়ে বললো,
ইমরান- অনেক তো ঘুরলাম, এবার না হয় হানিমুন করা যাক!
নাফিসা হিহিহি করে হেসে নিজেকে কম্বলের নিচে লুকাতে চাইলেও পারলো না। কারণ ইমরান আগে থেকেই কম্বলের নিচে আছে!