#ভ্যাম্পায়ার_লাভার
পর্বঃ-২০ এবং শেষ পর্ব
লেখনীতেঃ- কাশপিয়া মেহজাবিন রিমশা।
(আজ থাকছে আপনাদের জন্য ধামাকা)
শ্রুতি অনেকক্ষণ মনে করার চেষ্টা করলো, কিন্তু পুরোপুরি মনে পড়ছে না। তখন সাদাফ বললো আমার মনে আছে।
তান্ত্রিক বললো,
—ব্যাস তোরা ওই রাস্তা অনুসরণ করেই ওই গুহায় যাবি। আমার মন বলছে তোদের সব সমস্যার সমাধান ওখানেই আছে।
সাদাফ আবিরের দিকে তাকায়। যে তাকানোর অর্থ আবির রেডি থাকিস,তোকেও যেতে হবে।
তখন তান্ত্রিক বলল,
—-তুই আর শ্রুতি তোদের দুজনকেই যেতে হবে। আর কেউ যেতে পারবে না।
সাদাফ তান্ত্রিকের কথায় সায় দেয়। তান্ত্রিকের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সবাই চলে যায়। ওদের সবার যাওয়ার পানে তাকিয়ে তান্ত্রিক তাচ্ছিল্যের হাসি দেয়। যে হাসিতে আছে অনেক বড় কিছু চিনিয়ে নেওয়ার আনন্দ। যা কারও চোখে পড়েনি।
——–
শ্রুতি বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হওয়ার পর ডিনার করে ঘুমিয়ে পড়ে। আসলে পুরোপুরি ঘুমায়নি। ঘুমের ভান ধরে মা’কে চেক দিচ্ছিলো। মা ঘুমিয়ে পড়ার পর শ্রুতি বেরিয়ে যাবে। আর সাদাফের কাছে যাবে। আজকে রাতেই ওরা সেই গুহাতে যাবে।
কিছুক্ষন পর শ্রুতি মায়ের কাছে গিয়ে দেখে ওর মা বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। শ্রুতি চুপিচুপি পায়ে বেরিয়ে পড়ে। বাইরে গেইটের সামনে সাদাফ দাড়িয়ে আছে। দুজনে প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস নিয়ে বেরিয়ে পড়ে।
শ্রুতির সাদাফকে দেখে মনে হচ্ছে এই অক্ষুণ্ণ উজ্জ্বল মুখ সে আর কখনও দেখতে পারবে না।
কি সুন্দর সাদাফের রুপ।তার রুপ যেন চন্দ্রের উপমা। অন্ধকারের মাঝে একফালি চাঁদ। যে চাঁদ প্রতিদিন হাজারও মণিমালায় সাজে।
শুধু বাইরেই নয়, অন্তরে তার ঐশ্বর্যের ভরা একটি পুকুরও রয়েছে।
যেখানে রয়েছে একটা পরিচ্ছন্ন,পবিত্র মন।
অহংকার যেন তাকে ছুঁতে পারে না।
সে অহংকারহীন, চরিত্রবান এবং একজন সত্যবাদী মানুষ।
যে মানুষটার জীবনের কেন্দ্রীভূত উপকরণ, আরাম, আরোগ্য, আমোদ, স্ফূর্তি ও ঐশ্বর্য সবই একমাত্র শ্রুতি নিজেই।
সাদাফ যৎকিঞ্চিত অবাক হয়ে শ্রুতিকে জিজ্ঞেস করে,
—এভাবেই অনর্থক দাড়িয়ে থাকবে নাকি যাবে?
শ্রুতি মাথা নাড়িয়ে সায় দিলো। দুজনে ওদের ভবিষ্যতের সমস্ত ভুল-ত্রুটি সব আজ সংশোধন করতে যাচ্ছে।
সাদাফের কথায় শ্রুতি বেশ লজ্জা পেয়েছে। কেনো লজ্জা পয়েছে তা অজানা। শ্রুতির আজ কোনো ভুল-ত্রুটি সংশোধন করতে যেতে ইচ্ছে করছে না। আজ শুধুই ইচ্ছে করছে তার প্রিয়বরেষু-কে দেখে থাকতে। এই দেখার যেন শেষ নেই,শেষ হতেই চাচ্ছে না। মন যে ভরছেই না।
সাদাফ শ্রুতির দিকে তাকিয়ে হেসে বলল,
—কী ব্যাপার? মনে হচ্ছে আজই আমাকে চোখ দিয়ে গিলে খাবে।
সাদাফের আমোদমিশ্রিত কথায় শ্রুতি আবারও ভীষন লজ্জা পায়। মানুষটা এতো কেনো লজ্জা দেয় শ্রুতি বুঝে উঠতে পারে না।
শ্রুতি মুখ অন্যদিকে করে রেখেছে। সাদাফ মিটিমিটি হাসছে আর গাড়ি চালাচ্ছে। অনেক কাঠখড় পেরিয়ে দুজনে চলে আসে একটা বৃহৎ রাজবাড়ীর সামনে। তা দেখে শ্রুতির মনের জগতের চিন্তার দ্বারা কিছুই বোধগম্য হচ্ছে না।
দুজনের খুবই চেনাচেনা লাগছে এই রাজবাড়ী।
—সাদাফ হঠাৎ গাড়ি এখানে থামালে যে?
—আমি তো নিজেও বুঝতে পারছি না। স্বপ্নে দেখা গুহার রাস্তাটা যতটুকু মনে আছে এখানেই তার শেষ।
—আচ্ছা চলো ভেতরে গিয়ে খুঁজে দেখি।
সাদাফ টর্চ বের করে জ্বালালো। দুজনে হেঁটে গেইট পেরিয়ে ভিতরে ঢুকলো। অনেক ঠেলার পরও গেইটটি খুলেনি। সাদাফ আর শ্রুতি দজনে সজোড়ে লাথি দেওয়ার পর অদ্ভূত এক আওয়াজ করে খুলে যায়। কি গা ছমছমে পরিবেশ।
এসবের মাঝেও আজ শ্রুতির ভয় লাগছে না। কারন ভয় পেলে তারা তাদের উদ্দেশ্যে সম্পুর্ণ করতে পারবে না। সামান্য ভয়ের কথা ভেবে বর্তমান কাজের পরিকল্পনা করে পিছু যাওয়া হলো নিমজ্জিত ব্যাপার।
সাদাফ শ্রুতির হাত একহাতে শক্ত করে ধরে রেখেছে অন্যহাতে টর্চ নিয়ে সামনে এগুচ্ছে। বাড়িটা সম্পুর্ণ পরিত্যাক্ত। বিশাল রাজবাড়ী। আসার পথে লোকমুখে শুনেছে এখানে ভয়ংকর আত্মার বসবাস। কেউ একবার ভেতরে ঢুকলে জীবিত বের হতে পারে না
হঠাৎ শুরু হলো তুমুল বৃষ্টি, ওরা দুজনে এখনও বাইরে। দৌড়েও দুজনে রাজবাড়ীর ভেতরে ঢুকতে পারছে না। দৌঁড়াচ্ছে তো দৌঁড়াচ্ছেই এতো দৌঁড়ানোর পরেও দুজনে খেয়াল করলো ওরা এখনও একই জায়গায়। কিন্তু এতে ওদের থেমে থাকলে চলবে না। সামনে এগুতেই হবে। কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি থেমে চারিদিক আবার পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। আশ্চর্যের বিষয় এতো বৃষ্টির পরেও কোথাও কোনো পানি নেই। ওরা দুজনে বৃষ্টিতে খুব করে ভিজে গেছিলো আর এখন ওদের শরীর আর পড়নের কাপড়চোপড় সবই শুকনা। এতে দুজনে সহজেই বুঝেছে, ওরা সেই অদৃশ্য সয়তানের মায়াজালে পা দিয়ে ফেলেছে। যেখান থেকে কিছুতেই বেরিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
দুজনে সামনে হেঁটে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করলো। দুজনের মনে হচ্ছে রাজবাড়ীটির প্রত্যেকটি কোণা, প্রত্যেকটি ইট পাথর ওদের খুব আপন,খুব চেনা। ওরা দুজনে একে অপরের দিকে তাকায়। স্বপ্নেও কখনও এই রাজবাড়ী ওরা দেখেনি। কিন্তু এখন এখানে এসে মনে হচ্ছে এই বাড়িটা ওদের খুব চেনা। সমস্ত, আবেগ, কোমলতা, উৎকন্ঠা সব চূর্ণ করে দুজনে ভেতরে প্রবেশ করে। মাথার উপরে ঝাঁকে ঝাঁকে নিশাচর পাখি উড়ে গেলো। থেকে থেকে কোনো এক প্রাণী ভয়ংকর ভাবে ডাকছে। যেন প্রাণীটি দুজনকে মৃত্যুর মুখে ডাকছে। কাছে আয়,কাছে আয়।
এগোতে এগোতে হঠাৎ দুজনের সামনে একটি নেকড়ে চক্ষুষ্মান হয়। তা দেখে শ্রুতির ছটফটে মন ভয়ে বিষিয়ে যাচ্ছে। নেকড়েটি ধীরপায়ে ওদের দিকে এগিয়ে আসে। কি ভয়ংকর তার চেহেরা। নির্দয়বান নেকড়ের মুখ দিয়ে লালা পড়ছে। যা দেখে শ্রুতির বমি করার উপক্রম। তপ্ত সেই নেকড়েটি চোখের পলকেই সাদাফ আর শ্রুতিকে এক থাবায় নিচে ফেলে দেয়। তুখোড় সাদাফ তাড়াতাড়ি উঠে দাড়ায় শ্রুতিকে নিয়ে। ভয়ে,শান্ত শ্রুতি ঠকঠক করে কাঁপছে। সাদাফ তাড়াতাড়ি হাতে থাকা ব্যাগ থেকে লম্বা/সরল টাইপের একটা তীর নেকড়েটির গায়ে বিদ্ধ করে। সাথে সাথেই নেকড়েটি মাঠিতে লুঠিয়ে পড়ে। তার দেহাবশেষটি ছায়ায় মিলিয়ে যায়।
সাদাফ আর শ্রুতি সামনে এগোতে থাকে। দুজনে একটা কক্ষে প্রবেশ করে। হঠাৎ শাঁ শাঁ করে বাতাস বইতে শুরু করে। সাদাফ আর শ্রুতি দুজনে দুজনকে আষ্টেপৃষ্টে ধরে দাড়িয়ে থাকে। বাতাসের সাথে ধুলোবালি উড়ছে প্রচন্ডভাবে। বারবার পিটপিট করে চোখ খুলছে শ্রুতি। তখন আবিষ্কার করলো ওদের সামনে কোনো নারীর ছায়ামূর্তি দাড়ানো। এই বাতাসেও ছায়ামূর্তিটির চুল উড়ছে। ছায়ার মধ্যেও তাকে দেখতে অপরুপ লাগছে শ্রুতির কাছে।
শ্রুতি মুচকি হেসে ছায়ামূর্তিটির দিকে তাকিয়ে বলল,
—-সানজানা?
এতো জোড়ে বাতাসের মধ্যেও সাদাফ শ্রুতির কন্ঠস্বর শুনতে পায়। শ্রুতিকে জিজ্ঞেস করায় শ্রুতি বলে তার সামনে সানজানা দাড়ানো। সাদাফ শ্রুতির দেখানো পথে তাকিয়ে দেখে একটি নারী ছায়ামূর্তি দাঁড়িয়ে আছে। এতে সাদাফ বিলম্বিত হয়। এটা তো সানজানা না-ও হতে পারে।
আগের মতো কিছুক্ষণ পর সব বাতাস থেমে যায়। সানজানা এবার কথা বলে উঠে,
—তোমরা সাবধানে থেকো। ও যেকোনো সময় তোমাদের উপর আঘাত হানতে পারে।
এরপর সানজানা চলে যায়।
বালি-ধুলার মাঝে, রৌদ্র -বৃষ্টিতেও বাঁধা পেরিয়ে ওরা দুজনে কাজের ডাকে নেমে যায়। হঠাৎ আবার সেই নেগড়েটি এসে হাজির হয়। এবার সে এগুতে থাকে শ্রুতির দিকে। শ্রুতি পেছাতে পেছাতে ঘরটার একটা দেওয়াল সড়ে নিচে পড়ে যায়। আর শ্রুতিও দরজাটির সাথে নিচে পড়ে যায়। হাজারও শিড়ির উপর গড়াগড়ি খেয়ে শ্রুতি নিচে পড়ে যায়। মাথায় প্রচন্ডরকমের ব্যাথা পেয়েছে সে। চারিদিকের সব ঝাপসা লাগছে শ্রুতির। জ্ঞান যাওয়ার আগে শ্রুতি বুঝতে পারে এটা একটা গুপ্তঘর। মানে একটা গুহা।
এদিকে সাদাফ উন্মাদের মতো করছে। তীরের এক আঘাতে আবারও নেকড়েটিকে হত্যা করে সাদাফ। কক্ষটির যেদিক দিয়ে শ্রুতি নিচে পড়ে যায়, সাদাফ সেদিকে এগিয়ে যায়। গিয়ে দেখে এটা একটা গুপ্ত দরজা,তার মানে এটা গুপ্তঘরের দরজা। সাদাফ শিড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসে। বুঝতে পারে সাদাফ একটা গুহার মধ্যে এসে পড়েছে। কিন্তু শ্রুতিকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছেনা সাদাফ। গুহাটার চারিপাশে সাদাফ হাঁটছে,এখনও কোথাও দেখা যাচ্ছে না শ্রুতিকে।
অজানা আশঙ্কায় সাদাফের রুহ কেঁপে কেঁপে উঠছে বারবার। অজানা ভয় সাদাফকে পঙ্গু করে রেখেছে। অন্যদিকে শ্রুতিকে সন্ধান করছে সাদাফের উন্মাদ মন। হাঁটতে হাঁটতে সাদাফ গুহার অনেক ভেতরে চলে আসে।
হুবহু সাদাফের মতো দেখতে একজন রাজাকে দেখা যাচ্ছে। হাতে লম্বা একটি তলোয়ার,পড়নে রাজকীয় পোষাক আর রাজকীয় গোঁফ।
সাদাফ নিজের মুখে হাত দিয়ে দেখে গোঁফ আছে কি-না। আশ্চর্য সে-তো কখনও গোঁফ রাখেনি।ভালো করে দাঁড়ি পর্যন্ত উঠে না। আর এখানে ওগুলো কিভাবে আসলো?
সাদাফ আরেকটু হেটে গিয়ে দেখে শ্রুতির ছবি। কোমর ছড়ানো ঘন কালো চুলে বিনুনি করা,কাজল কালো চোখ,নাকে নোসপিন,হাত ভর্তি চুড়ি, আর যে পোষাক পড়ে আছে সেখানে শ্রুতির উন্মুক্ত পেট খুব ভালো করেই দেখা যাচ্ছে। সাদাফ তাড়াতাড়ি পাশে পড়ে থাকা একটি কাপড় নিয়ে শ্রুতির পেট ঢেকে রাখে।
ওদের দুজনের ছবিগুলো ছিলো পাথরের দেওয়ালে উপর খোদাই করা। খুব সুন্দর কারুকাজ। এতো সুন্দর কারুকার্য দেখে সাদাফ শিহরিত। ক্ষণিকের জন্য সাদাফ ভুলে গিয়েছে শ্রুতির কথা। ছবিগুলো দেখা থেকে বিরত থেকে সাদাফ শ্রুতিকে খুঁজতে থাকে। কিন্তু এবার শ্রুতিকে বেশিক্ষণ খুঁজতে হয়নি সাদাফের। পাশেই অবচেতন অবস্থায় পড়ে আছে শ্রুতি। অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে সে। সাদাফ তাড়াতাড়ি শ্রুতির কাছে যায়,কপালে ছিড়ে গেছে অনেকটা। তাই জ্ঞান হারিয়েছে সে। সাদাফ শ্রুতির কপালে ক্ষতস্থানে হাত দেয়। সাথে সাথে কপালের ক্ষত সেরে যায়।
সাদাফ শ্রুতিকে ডাকছে কিন্তু শ্রুতি চোখ খুলছে না। তখন সাদাফদের বাম পাশে প্রবল আলো জ্বলে উঠলো। এতো প্রবলভাবে আলো জ্বলছে যে সাদাফ চোখ খুলতে পারছে না। সাদাফ কিছুক্ষন পর আবিষ্কার করলো আলো এখন নেই। সাদাফ চোখ খুললো। চোখ খুলার পর সাদাফ যা দেখলো এতে ওর চোখ চড়কগাছে উঠে গেছে।
আগাগোড়া ছেড়া জামা পরিহিত একজন নোংরা লোক। জিহ্বা দিয়ে কালো কুচকুচে রক্ত নির্গত হচ্ছে। সাদাফের কেমন জানি গা গুলিয়ে উঠছে। লোকটি সাদাফের অবস্থা দেখে হো হো করে হেসে উঠলো।
লোকটির ভয়ানক হাসি দেখে সাদাফ বিমোহিত হয়ে যায় কি ভয়ংকর, কি বিদঘুটে সেই হাসি।
গরগর গলায় লোকটি বলল,
—তোদের ধ্বংস করতে আবার ফিরে এসেছি।
কথাটা বলেই লোকটি আবার বিদঘুটে সেই হাসিটি দিলো।
সাদাফ ভয়,ঢর ফেলে জিজ্ঞেস করলো,
—কেনো আমাদের পেছনে পড়ে আছেন?দয়া আমাদের মুক্তি দিন।
সাদাফের কথা শুনে লোকটি এমনভাবে হাসছে যেন,মনে হচ্ছে সাদাফ উনার সাথে মজা করছে।
—অভ্রজিতের বাচ্চা অভ্রজিত তোকে না মারলে আমার মুক্তি হবে না। হয় তুই আমাকে মারলে আমার মুক্তি হবে নয় আমি তোকে মারলে আমার মুক্তি হবে। এছাড়া আমার মুক্তি হওয়ার কোনো উপায় নেই। তাই তোকে শেষ হতে হবে আমার হাতে।
লোকটির কথা শুনে সাদাফ বুঝতে পারলো এই সেই অদৃশ্য সয়তান। যে এতোদিন ওর আর শ্রুতির ক্ষতি করেছিলো।
—কি চাই আপনার? কেনো মারবেন আমাকে? আমি তো আপনার কোনো ক্ষতি করিনি।
লোকটি হাসতে হাসতে আবারও বলল,
—তুই আমার অনেক ক্ষতি করেছিস। তোর জন্য আমাকে মরতে হয়েছে। নয়তো তোর রাজ্যের রাজা হতাম আমি।
উনার এসব কথায় সাদাফের কিছু কিছু স্মৃতি মনে পড়ছে। সব আবছায়া,পুরোপুরি কিছু বুঝতে পারছেনা সাদাফ।
—আমার রাজ্য,অভ্রজিত কারা এরা? কেনো অভ্রজিতের মুখের আদল আমার মতো?
লোকটি সাদাফকে একটা লোহা দিয়ে বারি দিয়ে বলল,
—আজ থেকে একশো বছর আগে তুই ছিলি রাজা অভ্রজিৎ, আর আমি ছিলাম সেনাপতি আকরাম খান। মনে পড়ে?
কথাটি বলে লোকটি সাদাফকে আরেকটা বারি দেয়। দুইটা বারি খেয়ে সাদাফ মাঠিতে নেতিয়ে পড়ে। মাথে ফেটে রক্ত বের হচ্ছে। সাদাফ দুলছে, ওর একটু একটু মনে পড়ছে।
লোকটি আবারও সাদাফকে বারি দিয়ে বলল,
—তুই ভালোবেসেছিলি সুন্দরী রমণী, নতর্কী সোফিয়াকে। যে ছিলো রুপে, গুনে রাজকন্যাদেরও সেরা, মনে পড়ে?
আবারও সাদাফকে জোড়ে বারি দেয়। সাদাফের অবস্থা বেগতিক। চোখ দুটো বারবার বন্ধ হয়ে যেতে চাচ্ছে। কিন্তু সাদাফ চোখ বন্ধ করছেনা। সে জানে একবার চোখ বন্ধ করলে সে আর খুলতে পারবে না। তার এখন চিরনিদ্রায় শায়িত হলে চলবে না। আগে এই সয়তানকে শেষ করতে হবে।
সাদাফ ব্যাথায় চটপট করতে করতে অস্পষ্ট স্বরে বলল,
—আমার কিছুই মনে পড়ছে না।
সয়তানটা আবারও সেই বিশ্রীভাবে হেসে বলতে লাগলো,
—থাক তোর মনে পড়তে হবে না। তুই বরং অন্যকিছু মনে কর। আজ তোরা তান্ত্রিকের কাছে গেছিলি মনে আছে? তান্ত্রিক বলেছিলো তোদের এই গুহায় আসতে,তোর মা-বাবা তোর ১৫ বছর বয়সে মারা গেছিলো, তুই আগে মানুষ ছিলি এগুলো বলেছিলো মনে পড়ে?
মনে না পড়ার কি আছে? সাদাফের স্পষ্ট সব মনে আছে।
কিন্তু মুখে সেটা সাদাফ বলতে পারলো না। কোনো শক্তিই আর অবশিষ্ট নেই সাদাফের শরীরে।
লোকটি আবারও বলতে লাগলো,
—আরেহ ওটা কোনো তান্ত্রিক ছিলো না। ওইটা ছিলাম স্বয়ং আমি। অভ্রনগরের হবু রাজা আকরাম খান।
কথাটা বলে হাসতে লাগলো লোকটি।
আবার বলল,
—তান্ত্রিককে তো কাল রাতে মেরে দিয়েছি। ওকে কতবার ভালো ভালোই বলেছি তোদের সাহায্য না করতে। কিন্তু সে শুনেনি। তাই মেরে দিয়েছি।
সাদাফ আর কিছু বলতে পারছে না। খুব দুর্বল লাগছে।
সয়তান আত্মাটা সাদাফকে মারতে মারতে রক্তাক্ত করে দিয়েছে। সাদাফ হয়তো মৃত্যুর কোলে ঢুলে পড়বে। সাদাফের এরকমটা মনে হচ্ছে। সাদাফ আর কিছু ভাবতে পারছেনা। এখন অপেক্ষা করার পালা কখন একেবারে চোখটা বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু তার, প্রিয়ষী?
সে-তো তার প্রিয়ষীকে বাঁচাতে পারছে না। এ কেমন #ভ্যাম্পায়ার_লাভার সে?
সাদাফ একটু একটু দেখতে পারছে সয়তান আকরাম খানের আত্মাটা শ্রুতির কাছে যাচ্ছে। লোলুপ দৃষ্টিতে শ্রুতির দিকে তাকিয়ে হাসছে। সাদাফের ইচ্ছে করছে সয়তানটা মাথা ফেটে ফেলতে।
সাদাফ চিৎকার করে বলছে,
—দাড়া, আমার শ্রুতির কাছে যাস না। আর এক পা এগিয়েছিস তো, তোকে আমি এখনই বিনাশ করে ফেলবো।
কিন্তু না সাদাফ বলতে পারলো না। মুখ দিয়ে কোনো কথায় আসছে না। সয়তান আকরাম খান শ্রুতির গালে স্লাইড করছে। তা দেখে সাদাফের চোখে জল গড়িয়ে পড়ছে। তার প্রিয়ষীকে অন্যপুরুষে স্পর্শ করছে। সাদাফ মনে মনে বলছে, এরকম কিছু দেখার আগে যেন প্রত্যেক প্রেমিকের মৃত্যু হয়। তখন সয়তান আকরাম খান সাদাফের দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দেয়। সাদাফের কাছে এসে লোহাটা উচু করে ধরে। যেই মুহুর্তে সাদাফের পেটে লোহাটা ঢুকাতে যাবে সেই মুহুর্তে সয়তান আকরাম খানের আত্মাটি লুটিয়ে পড়ে। তখন সাদাফ দেখতে পেলো শ্রুতি অন্যএকটা লোহা আকরাম খানের পেটে ডুকিয়ে দিয়েছে। সাদাফ আর শ্রুতি স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয়। কিন্তু দুজনের এই স্বস্তি বেশিক্ষণ থাকলো না। আকরাম খান আবার উঠে পড়ে, হো হো করে হাসতে থাকে। হাসি বন্ধ করে সে শ্রুতির দিকে অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করে। এতে শ্রুতি ভয় পেয়ে যায়। লোকটি শ্রুতির চুলের মুটি ধরে শ্রুতিকে শূন্য ভাসিয়ে রাখে। ছাড়া পাওয়ার জন্য শ্রুতি হাত পা নাড়তে থাকে।
তখন সাদাফের মনে পড়ে,
লোকটি বলেছিলো,
—-হয় তুই আমাকে মারলে আমার মুক্তি হবে নয় আমি তোকে মারলে আমার মুক্তি হবে। এছাড়া আমার মুক্তি হওয়ার কোনো উপায় নেই। তাই তোকে শেষ হতে হবে আমার হাতে।
তাই সাদাফ খুঁজতে থাকে আকরাম খানকে মারার জন্য কিছু খুঁজে পায় কি-না। আশেপাশে চোখ বুলাতেই সাদাফ একটা তলোয়ার দেখতে পেলো। সাদাফ শ্রুতির দিকে তাকায়। শ্রুতি ইশারা করছে তলোয়ারটি নিতে। সাদাফ তলোয়ারটি হাতে তুলে নেয়। আকরাম খানতে পেছন দিক দিয়ে আক্রমণ করতে যাবে তখন মনে হলো সে নিজে কাপুরুষ। আক্রমণ করার হয় সামনাসামনি করবে,পেছনে নয়।
—আকরাম খান তোর দুয়ারে যমদূত এসে পড়েছে।(বলল সাদাফ)
তখন আকরাম খান শ্রুতিকে ছেড়ে পেছনে তাকায়। পড়ে গিয়ে শ্রুতি জ্ঞান হারায়।অনেক উপর থেকে পরার কারনে শ্রুতি জ্ঞান হারায়।
আকরাম খান পেছনে ফিরে সাদাফের হাতে ওই তলোয়ারটা দেখে ভয় পেয়ে যায়। সাদাফ আকরাম খানকে ভয় পেতে দেখে যায়।
—তুই এটা কোথায় পেয়েছিস? ফেলে দে , ফেলে দে ওটা ফেলে দে।
সাদাফ বলল,
—ফেলবনা। এটা দিয়েই তোকে হত্যা করবো।
— না না না ওটা ফেলে দে। আমি তোদের ছেড়ে দিবো। ওটা ফেলে দে।
সাদাফ কি করবর বুঝতে পারছে না। তলোয়ারটি ফেলে দিতে যাবে তখন অদৃশ্য একটা মেয়ের কন্ঠস্বর সাদাফের কানে আসে,
—না সাদাফ তলোয়ারটি কিছুতেি ফেলবে না। একমাত্র এটা দিয়েই ওর বিনাশ হবে। সাদাফ তুমি ওর দিয়ে তাকাবে না। ও তোমাকে সম্মোহিত করে ফেলছে।
সাদাফ মেয়েটির কথায় হুশে আসে। আকরাম খান কর্কশ গলায় বলে উঠলো,
—সানজানা তোকে আমি ছাড়বনা।
সাদাফ বুঝে পারলো কন্ঠস্বরটি কার।
সানজানা বলল,
—আগে নিজেকে তো বাঁচা। সাদাফ তুমি ওকে তাড়াতাড়ি শেষ করো।
আকরাম খান সাদাফ জোড়ে একটা লাথি দেয়। যা সাদাফ বুঝে উঠার আগেই।
সাদাফ উঠে পড়ে। আকরাম খান সাদাফকে বারবার আঘাত করছে যাতে সাদাফ মাঠিতে লুটিয়ে পড়ে। আর সাদাফ মাটিতে লুটিয়ে পড়লেই আকরাম খান তলোয়ারটা ওর পেটে ডুকিয়ে দিবে। আকরাম খান সাদাফকে জোড়ে লাথি মারতে যাবে এমন অবস্থায় অদৃশ্য কিছু একটা আকরাম খানকে ধ্বাক্কা দেয়। সেটা আর কেউ নয়,সানজানা।
সাদাফ তাড়াতাড়ি উঠে আকরাম খানের পেটে ডুকিয়ে দেয় তলোয়ার। ব্যাথায় কুঁকড়াতে কুঁকড়াতে আকরাম খানের মৃত্যু হয়।
সাদাফ তাড়াতাড়ি শ্রুতির কাছে যায়। শ্রুতির নিঃশ্বাস পড়ছে। আর ওদিকে সাদাফ কেঁদেই চলেছে। সাদাফের চোখের জল শ্রুতির মুখে পড়ায় শ্রুতি জ্ঞান ফিরে আসে। ভয়ে সাদাফকে জড়িয়ে ধরে।
—ও আমাকে মেরে ফেলবে,বাঁচাও আমাকে
(সাদাফের বুকে মুখ লুকিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলল শ্রুতি)
—ভয় পেয়ো না,আর কোনো বিপদ নেই। আমরা ওকে মেরে ফেলেছি।
সাদাফের কথা শুনে শ্রুতি আশেপাশে তাকাচ্ছে।সাদাফ জিজ্ঞেস করলো,
—কি খুঁজছো?
—তুমি না আমরা বলেছিলে? বাকিজন কে?
—আরেহ ওটা তো সা……
সাদাফ নামটা বলার আগেই চারিদিকে নীল আলো জ্বলে উঠে। এতো সাদাফ আর শ্রুতি চোখ বন্ধ করে নেয়। কিছুক্ষণ পর দুজনে চোখ খুলে সামনে যা দেখল,এতেই হার্ট অ্যাটাক হয়ে যাবে।
ওদের দুজনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে একটা হুরপরী। কি সুন্দর তার রুপ। বাদামি রংয়ের চুল পুরো পিঠ ঢেকে রেখেছে তার। সাদা একটি ফেইরি গাউন পড়া। বাদামি রংখের চোখজোড়া। কি অপরুপ মায়াবী সেই চোখদুটো। গোলাপের পাপড়ির মতো ঠোঁটজোড়া।
শ্রুতি বরে উঠলো,
—হুরপরী।
হুরপরীটি তখন হেসে বলল,
—আমি সানজানা।
তখন সাদাফ আর শ্রুতি দুজনে অবাক হয়ে যায়।
সানজানা বলল,
—শুনতে চাও তোমাদের অতীত? জানতে চাও দেওয়ালে অংকিত ছবির অভ্র আর সোফিয়া কে?
সানজানার কথায় সাদাফ আর শ্রুতি মাথা নাড়ে। যার অর্থ হ্যাঁ।
সানজানা বলতে শুরু করলো,
—আজ থেকে একশো বছর আগে সাদাফ তুমি ছিলে আমাদের অভ্রনগরের রাজা অভ্রজিৎ। আর শ্রুতি ছিলো সেই রাজ্যের নর্তকী সোফিয়া। যার কাজ ছিলো নেচে নেচে পুরুষদের নজর আকৃষ্ট করা। মনের দিক দিয়ে সোফিয়া ছিলো অতন্ত্য পবিত্র, আর ভালো। যেমন ছিলো তার রুপ,তেমন ছিলো তার ব্যবহার। তাই রাজা অভ্রজিৎ সোফিয়ার প্রেমে পড়েছিলো। আসলে অভ্রজিৎ ছিলো হবু রাজা। অভ্রনগরের রাজা মানে অভ্রজিতের বাবার ওর নামে রাজ্যের নাম রাখে। উনি ঘোষণা দিলেন অভ্রজিতের জন্মদিনের দিন তিনি অভ্রজিতকে রাজা বানাবেন। তাই সবাই আগে থেকেই অভ্রজিতকে রাজা বলে ডাকতো। একদিন অভ্রজিৎ সোফিয়াকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। সোফিয়া প্রথম প্রথম রাজি না হলেও অভ্রজিতের পাগলামো দেখে সেও অভ্রজিতের ডাকে সাড়া দেয়। প্রকৃতির আকাশ,বাতাস ছিলো অভ্রজিত আর সোফিয়ার প্রেমের সাক্ষী। খুব ভালোই চলছিলো ওদের প্রেম। অভ্রনগর রাজ্যের পাশে ছিলো রঙিন পাহাড়। যেখানে মানুষদের যাওয়া সম্পুর্ন নিষেধ করে দিয়েছিলেন অভ্রের বাবা।কারণ ধারনা করা হয় ওখানে রক্তচোষা রা থাকে। কিন্তু অভ্রজিত আর সোফিয়ার প্রেমের শুরু ওই রঙিন জঙ্গলেই হয়েছিলো। ওরা লুকিয়ে সেখানে গিয়ে একাকী সময় কাটাতো। যেটা জানতাম একমাত্র আমি। আমি হলাম অভ্রজিতের চাচাতো বোন সানজানা। ওর বড় চাচার একমাত্র মেয়ে। আমার খুব ভালো বন্ধু ছিলো অভ্র। তাই ওকে সব কাজেই সাহায্য করতাম। অভ্র আর সোফিয়ার প্রেমের নজর পড়ে রঙিন জঙ্গলের রক্তচোষা রাজার। সে সোফিয়াকে দেখে প্রেমে পড়ে যায়। একদিন আমাদের রাজ্যের সেনাপতি হঠাৎ করেই মারা যায়। অস্ত্রশিক্ষার জন্য সেনাপতির খুব দরকার ছিলো রাজ্যে। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মানুষের রুপ ধরে আসে রক্তচোষাদের রাজা আকরাস খান। সে আমাদের রাজ্যে মধ্যমণি হয়ে উঠে। তার দূরদর্শিতা দেখে আমি তার প্রেমে পড়ে যাই। আকরাম খানকে জানানোর পর সে আমার ভালোবাসার সুযোগ নিতে থাকে। সে ভালোবাসতো সোফিয়াকে, আর আমি তাকে। আকরাম খান আমাতে লোভ দেখাতে শুরু করে। রাজ্য হাতিয়ে নেওয়ার লোভ। ক্ষণিকের জন্য আমিও ভুলে যাই আমার পরিচয়। আমি শুধু তার প্রেমেই অন্ধ ছিলাম। সে একদিন অভ্র আর সোফিয়াকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে। কারন ওদের মেরে ফেললে রাজ্য সহজেই আমাদের হাতে চলে আসতো। আমিও এতে সায় দিই। একদিন অভ্র আর সোফিয়াকে আমাদের সাতে চাঁদ বিলাস করার কথা বলি। তারা দুজনে খুব সহজে রাজি হয়ে যায়। সেদিন রাত্রে আমরা রঙিন পাহাগে গিয়ে পৌছায়। অভ্র আর সোফিয়া আগে হাটতে থাকে। আর সেই সুযোগে আকরাম খান অভ্রর পেঠে তলোয়ার ঢুকিয়ে দেয়। অভ্র ব্যাথায় চটপট করতে করতে বলল বিশ্বাসঘাতক। আর তখনই আকরাম খান আমার পেঠেও তলোয়ার ঢুকিয়ে দেয়। আমার পেঠে তলোয়ার ঢুকিয়ে সে হাসতে লাগলো আর খপ করে সোফিয়ার হাত ধরে বলল সে সোফিয়াকে ভালোবাসে আমাকে নয়। তখন অভ্র কোনোমতে উঠে গিয়ে আকরাম খানের পেঠেজ চুরি ঢুকিয়ে দেয়। তখন আকরাস খান ওদের অভিশাপ দেয় পরজন্মে তোমরা আবারও জন্ম নিবে।আর তখন তোমাদের দুজনের ২৩ বছর ১ তম জন্মদিনে তোমরা রক্তচোষার পরিণত হবে। যদি আকরাম খানকে সে জন্মে শেষ করতে পারে তবে তোমরা অভিশাপ মুক্ত হবে। অভ্রজিতের মৃত্যু সহ্য করতে না পেরে সোফিয়া অভ্রজিতের পেট থেকে তলোয়ার নিয়ে নিজেন পেঠে ঢুকিয়ে দেয়। সাদাফ শ্রুতি তোমরা হলে একশো বছর আগের রাজা অভ্রজিৎ আর সোফিয়া। তোমরা আকরাম খানকে মারতে পেরেছো। তাই তোমরা আজ থেকে অভিশাপ মুক্ত। আর তোমরা আমাকে মাফ করে দাও নইলে যে আমার মুক্তি হবে না।
সাদাফ আর শ্রুতি হেসে বলল, তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম বন্ধু।
তখন সানজানার আত্মা ধোঁয়া হয়ে উড়ে চলে যায়।
সাদাফ আর শ্রুতি তাদের নতুন জীবনের উদেশ্যে পা বাড়ায়।
——–
—বাপরে বাপ কি ভয়ংকর রকমের ভালোবাসা। সাদাফ আর শ্রুতিতে অনেক কষ্ট পেতে হয়েছে। কি সুন্দর ভালোবাসা ওদের। (বলল কাশপিয়া)
—হ্যাঁ তোকে ওইজন্যই বলেছিলাম বইটা পড়তে। (বলল তিয়াজ)
—বুঝেছি তুই এই বইটা কিজন্য পড়তে বলেছিস।তুই যাই কর না কেনো আমাকে পটাতে পারবি না। আমাকে পটানো অতো সহজ না,বুঝলি?(কাশপিয়া)
—তবে রে…..
শুরু হয় তিয়াজ আর কাশপিয়ার ভালোবাসার আরেকটি অধ্যায়।
সমাপ্ত।