#অল্প_পাগলামি_সীমাহীন_ভালোবাসা,পর্ব_৬,০৭
#ফারজানা_আক্তার
পর্ব_৬
আল্লাহ গো,,, কে করলো আমার এতো বড় সর্বনাশ,, এখন তো আমি কাউকেই মুখ দেখাতে পারবোনা। এ্যাঁএ্যাঁএ্যাঁ
ধুর ছাই এতজোরে ঘসতেছি, পুরো মুখ লাল হয়ে টমেটো হয়ে গেছে আমার কিন্তু লেখাটি এখনো ঝাপ্সা দেখা যাচ্ছে
হিয়া এসব বকতেছে আর গালের লেখাটি মুছার চেষ্টা করতেছে।।
?
কাব্য ড্রাইভ করছে আর নিজে নিজে মুচকি মুচকি হাসতেছে,, আর নিজে নিজেই ভাবতেছে। কিভাবে হলো এতো চেঞ্জ আমার, যে আমি কিনা কলেজে এতো মেয়ে প্রপোজ করার পরেও কোনো মেয়েকে পাত্তা দেয়নি সে আমি কিনা এখন একটা মেয়ের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছি,, ছি ছি খুব বিশ্রী ব্যাপারটা
?
হিয়া মুখে একগাদা মেকাপ দিয়ে নিহানের সাথে কলেজের জন্য বেরিয়েছে,, কলেজে গিয়ে সোজা ক্লাসরুমে চলে গেছে,, সারা রাস্তা আজকে চুপ ছিলো হিয়া,, নিহান তো অবাক, কারণ আজকের আগে কখনো হিয়াকে এভাবে চুপ থাকতে দেখেনি,, “বোনটা আমার মনে হয় বিয়েতে মায়ের ভয়ে রাজি হয়েছে” নিহান আর কিছু না ভেবে ক্যানভাসে চলে গেলো তার বন্ধুদের কাছে,, নিহান এইবারের ইন্টার ফাইনাল ইয়ারের পরিক্ষার্থী।
ক্লাসে স্যার গনিত করাচ্ছে আর হিয়া অন্যমনস্ক হয়ে আছে,, স্যার হাতের চক টা হিয়ার দিকে ছুড়ে মারে,, চক টা সোজা কপালে গিয়ে পড়তেই হিয়া লাফিয়ে উঠে আর চেঁচিয়ে বলে “কোন জঙ্গলের বাঁদর রে মারলি আমায়”
“আমি, তোমাদের গনিত টিচার। কোনো জঙ্গলের বাঁদর নয়”। কর্কশ কন্ঠে বলল স্যার
হিয়া স্যারের দিকে তাকিয়ে শুকনো ঢুক গিলে।। আর আমতা আমতা করে বলে ” স্যার আ আ আমি স সরি, আ আমি আসলে”
“থাক তোমার আসলে আর শোনার সময় নেই।। কালকে এই অংকটা ব্ল্যাকবোর্ডে এসে করতে হবে তোমাকে, প্রস্তুতি নিয়ে আসবে”। বলেই স্যার হনহন করে বেড়িয়ে গেলো ক্লাসরুম থেকে।।
হিয়ার নিজের উপরই রাগ হলো। নিজের চুল নিজেরই ছিড়তে ইচ্ছে করছে
ও ও খোদা, পৃথিবীতে কি আমিই একজন,, আমার সাথেই কেন হয় সবসময় এমনটা,, এই অংক তো আমার মাথায় ঢুকেনি, প্রস্তুতি নিবো কেমতে? নিলয় স্যারের কাছে তো পড়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই আমার”। আল্লাহ গো বাঁচাও হিয়া সুন্দরীকে।।
বকবক করতে করতে বান্ধবী রিতাকে রেখেই চলে যাচ্ছিলো গেইটের দিকে, সে তো আর জানেনা যে তার জন্য চমক অপেক্ষা করছে।।
হিয়া গেইটের সামনে যেতেই দেখে নিলয় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কার সাথে যেন ফোনে কথা বলছে আর কাব্য বাইকের সাথে হেলান দিয়ে হিরো স্টাইলে মোবাইল টিপছে,, ওরা হিয়াকে দেখার আগেই হিয়া উল্টোদিকে দৌড় দিয়ে ক্যানভাসে রিতার কাছে চলে গেলো। রিতা তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে তখন বসে হাতে হাত রেখে কথা বলতেছিলো।
হিয়া এক দৌড়ে এসে ছুঁ মেরে রিতার হাত ধরে টেনে টেনে একটা গাছের নিচে বসলো।।
হিয়া খুব ক্লান্ত স্বরে বললো ” র রি রিতা আমি আজ বাসায় যাবোনা, এখানেই থাকবো।
রিতা অবাক কন্ঠে বলে “কিসব বকতেছস?কি হয়েছে আবার? আর কোথায় থেকে দৌড়ে আসলি এখন?
হিয়া- বোন আজ আমি শেষ, বাঁচা আমায় (মলিন মুখে বলে)
রিতা- কি হয়েছে বলবি তো আগে।
হিয়া- কাব্য আর নিলয় স্যার কে একসাথে গেইটের সামনে দেখে আসলাম।।
রিতা- তো ওরা কি তোকে গিলে খাবে নাকি? কাব্য তো তোর হবু বর
হিয়া বর শব্দটা শোনে রাগি চোখে তাকালো রিতার দিকে।। রিতা সেটা পাত্তা না দিয়ে বলে ” তোর সাথে বন্ধুত্ব করে জীবনটা ত্যানাত্যানা”
হিয়া- একমাত্র তুই ছাড়া কেউ আমাকে বুঝেনা রে জানু (একটু ঢং করে)
রিতা- হয়েছে হয়েছে আর ঢং দেখাতে হবেনা।।
হিয়া- আচ্ছা আজ আমরা একটু দেরিতে যাবো বাসায়। ওরা চলে না যাওয়া পর্যন্ত এখানেই বসে থাকবো
রিতা- বোন কাহিনি না করে চল আমার সাথে,, কিচ্ছু হবেনা তোর জানু আছি তো সাথে (ভরসার স্বরে?)
?
এইদিকে কাব্য নিলয়ের মাথায় ঠাস করে থাপ্পড় দিয়ে বলে “কোথায় তোর স্বপ্ন পরি”?
নিলয় আমতা আমতা করে বলে “ওই মেয়ে ফেবুতে এই কলেজের নাম-ই লেখা আছে”
কাব্য- নাম কি মেয়েটার? (বিরক্তি কন্ঠে)
নিলয়- জানা নেই। অনেক জিজ্ঞেস করেছি কিন্তু বলেনি। শুধু বলে “আপনাকে দেখতে ভেড়ার মতো লাগে”
কাব্য ভ্রু কুঁচকে বলে “দেখি কেমন মেসেজ দেয়”
নিলয় বিরক্তি স্বরে বলে “ধুর কি দেখবি সব আবুলতাবুল গানগুলো মেসেজ করে”
কাব্য হাসতে হাসতে বলে “আচ্ছা দেখি তো কেমন মেসেজ”
কাব্য নিলয়ের ফোন টান দিয়ে নিয়ে নিলো নিজের হাতে,
“আইতে দেখি যাইতে দেখি,দেখি সারাক্ষণ, হনুমান”
“হায় হায় আমার ঘুরছে মাথা,ধরনা রে তুই ধরনা ছাতা, ভেড়া ”
মেসেজ দুইটা পড়ে কাব্য আর কোনো মেসেজ পড়তে পারেনি হাসতে হাসতে, ওর যেন হাসি থামছেই না। আর নিলয় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বিরক্ত হচ্ছে।
?
রিতা হিয়ার হাত ধরে গেইট দিয়ে বের হলো। হিয়া মাথায় ওড়না দিয়ে মুখ ঢেকে চলে যাচ্ছে। এমন সময় নিলয় ডাক দিলো তাদেরকে, কিন্তু তারা না শোনার ভান করে চলে যেতে লাগলো। কাব্যর সন্দেহ হলো তাই সে দৌড়েই তাদের সামনে গেলো।
সামনে গিয়ে কাব্য তো অবাক, হিয়া নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। নিলয়ও আসলো দৌড়ে
নিলয়- হিয়া তুমি এভাবে মুখ ঢেকে যাচ্ছো কেন?
হিয়া- স স স্যার আসলে আ আমি
নিলয়- থোঁথলাতে বলিনি তোমায়
হিয়া বারবার কাব্যর দিকে তাকাচ্ছে, কাব্যর চোখ
রাগে লাল হয়ে আছে।
“সাহস কি করে হয় এই মেয়ের। আমার সামনে অন্য ছেলের সাথে কথা বলে”। কাব্য এসব বিড়বিড় করেই হিয়ার হাত ধরে একটু দুরে নিয়ে গেলো। নিলয় তো অবাক। রিতা কাব্য কে দেখে চলে গেছে।
কাব্য হিয়ার দুই বাহু চেপে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে বলে “এতো সাহস পেয়েছো কোথায়? কি হয় নিলয় তোমার? ”
হিয়া ভয় পেয়ে চুপ হয়ে আছে। হিয়া আঁড়চোখে দেখে নিলয় তাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
কাব্য আবারো বলল “এমনি কি গায়ের চামড়া কম সুন্দর, আবার একগাদা ময়দা মেখে মুখে কাকে ইমপ্রেস করতে চাও”? কিছুটা চিল্লিয়ে বলে।
হিয়া কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে “আ আসলে নি নিলয় স্যার আ আমার প্রাইভেট টিচার”
কাব্য- কালকে আমি যখন কল দিয়েছিলাম তখন বললে এই কথা ক্ষতি কি হতো? কথা ঘুরিয়ে ছিলে কেন তখন? (কর্কশ কন্ঠে বলে)
নিলয় তাদের কাছে এসে বলে “তোরা একে-অপরকে কিভাবে চিনোস?
কাব্য- হিয়া আমার হবু স্ত্রী,, আর আজ থেকে হিয়াকে প্রাইভেট আমিই পড়াবো। তুই আর পড়াতে যাবিনা। (কিছুটা রাগান্বিত স্বরে)
নিলয়- কিন্তু কেন? তোর তাঁরছিড়া বউ কে নিয়ে কি আমি পালাবো নাকি? (দুষ্টুমির ছলে)
কাব্য চোখ লাল করে তাকালো নিলয়ের দিকে ” ভাবি ডাকবি” নিলয় চুপসে গেছে।
হিয়া কাব্যকে বলে “আমাকে বাসায় দিয়ে আসুন”
নিলয়- তো ভাবি একটা সাহায্য করবেন দয়া করে?
হিয়া কিছু বললোনা, শুধু কাব্যর দিকে চোখজোড়া তুলে তাকালো।
হিয়া মনে মনে খুশি হলো নিলয়ের মুখে ভাবি আর আপনি ডাক শোনে।
কাব্য- হিয়া তোমাদের কলেজের স্বপ্ন পরি নামে কারো ফেসবুক আইডি আছে?
হিয়া ভয়ে ভয়ে মাথা নাড়িয়ে বলে “জানিনা”
কাব্য খেয়াল করে কথাটি শোনে হিয়া ঘাবড়ে গেছে। আর আজ মেয়েটা কেমন জানি চুপচাপ হয়ে আছে। কাব্যর মনে সন্দেহ হলো।
কাব্য নিলয়কে বলে বাইক নিয়ে চলে যেতে। কাব্য হিয়ার গাড়িতে চলে যাবে।
নিলয় যাওয়ার সাথে সাথে কাব্য জিজ্ঞেস করে “তোমার ফেসবুক আইডির নাম কি”?
হিয়া না বলে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে, হিয়ার চোখেমুখে চিন্তার ভাজ স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে।
কাব্য হিয়াকে একটানে নিজের কাছে নিয়ে আসে আর চিল্লিয়ে বলে “উত্তর দাও কথার”
#চলবে
#অল্প_পাগলামি_সীমাহীন_ভালোবাসা
#পর্ব_৭
#ফারজানা_আক্তার
হিয়া ভিতু স্বরে বলে “আসলে আমি শুধু মজা করেই মেসেজগুলো দিয়েছিলাম ওই গন্ডারকে, সত্যি বলছি। মলিন মুখ করে বলে
কাব্য- হোয়াট রাবিস,, পড়েছি মেসেজগুলো আমি (রাগান্বিত স্বরে)
হিয়া- স স সরি
কাব্য- চলো
কাব্য ড্রাইভারকে বলে অন্য গাড়ি করে বাসায় চলে যেতে।
ড্রাইভার চলে গেলো, কাব্য হিয়াকে গাড়িতে উঠতে বলল। হিয়া কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ উঠে বসলো গাড়িতে।
কাব্য হিয়ার দিকে একটু ঝুঁকে বলে ” সিট বেল্ট লাগাতে পারো?নাকি আমি
হিয়া আমতা আমতা করে বলে “না না পারি আমি”
কাব্য ড্রাইভ করছে, সামনের দিকে তাকিয়েই বলে “ঘুমন্ত অবস্থায় তোমাকে হেব্বি লাগে গো বউ”
বউ শব্দটা শোনে হিয়া একটু অবাকই হলো।
হিয়া- আপনি আমায় ঘুমন্ত অবস্থায় কবে দেখলেন?(বোকার মতো ফেস করে)
কাব্য- কাল রাতে। (বাঁকা হেঁসে)
হিয়া- তার মানে (চোখ বড় বড় করে)
কাব্য একটা নদীর ধারে বাঁকা রাস্তায় গাড়ি থামাই। তারপর হিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে “হুম লেখাটি আমিই লিখেছি,, নামো গাড়ি থেকে
হিয়া চুপ হয়ে নদীর পাড়ে বসে আছে। খুব খুব রাগ হচ্ছে কাব্যর উপর।
কাব্য চোখ বন্ধ করে বলে “কি করবো বলো,সন্ধ্যায় কল দিলাম আজ দেখা করতে বলার জন্য, কিন্তু তুমি ভালো করে কথাই বললেনা। আর রাতে এতো কল দেওয়ার পরেও যখন রিসিভ করোনি তখন আর কন্ট্রোল করতে পারিনি তাই একনজর দেখার জন্য চলে গিয়েছিলাম “। এক নাগারে কথাগুলো বলে থামলো কাব্য
হিয়া কাব্যর দিকে তাকিয়ে বলল “আমি আপনার কাছে প্রাইভেট পড়বো না”। কাব্য শান্ত ভাবেই বলে ” ঠিক আছে, আমার এক আন্টি আছে, কথাকে উনিই পড়ায় আর আমি বললে তোমাকেও এসে পড়ায় যাবে”
হিয়া চোখ ছোট করে বলে “আচ্ছা ”
হিয়া নিজের অজান্তেই কাব্যর কাধে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে, কাব্য মুচকি হাসে।
কিছুক্ষণ ওভাবে থাকার পর কাব্য বলে “চারটা ১৫ হয়ে গেছে, তোমার কলেজ ছুটি হয়েছে তিনটা ত্রিশ এ, চিন্তা করবে সবাই। চলো বাসায় দিয়ে আসি তোমায়”।
হিয়া- কেন?বিরক্ত লাগছে বুঝি আমার সাথে সময় কাটাতে? (কাব্যর কাঁদ হতে মাথা একটুখানি তুলে)
কাব্য- আমি কি বলেছি বিরক্ত লাগছে?
হিয়া- তাহলে আরো কিছুক্ষণ থাকতে চাই আমি এখানে।
কাব্য- বেশ,, থাকলাম
হিয়া মুচকি হেসে কাব্যর হাত জড়িয়ে ধরে কাধে মাথা রেখে প্রকৃতি দেখছে। কাব্য তৃপ্তির হাসি হাসলো
কাব্য- হিয়া একটা কবিতা শুনবে?
হিয়া- বলুন শুনি
কাব্য- আমার নিজের লেখা
হিয়া- সত্যি
কাব্য- হুম তোমায় নিয়ে লিখেছি
হিয়া- তবে বলুন শুনি
তোমায় ভেবে এই মনের অলিগলিতে
হাজারো ছন্দ সাঁজে কবিতার ভাঁজে
তোমায় ভেবে এই বুকের খুব গভিরে
প্রেম শব্দরা ভিড় করে সকাল সাঁঝে।।।
ভালোবাসি তোমায় হিয়া,, বড্ড বেশি ভালোবাসি,, কাব্য কথাটি বলেই হিয়ার হাতে চুমু খেলো। হিয়া শিহরিত হলো, কিছু বললনা
হিয়া লজ্জা পেয়েছে বেশ, সে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। কাব্য দাঁড়িয়েছে তারপর হিয়াকে দাঁড় করালো,
হিয়া- একটা সত্যি কথা বলি?
কাব্য- অনুমতির প্রয়োজন নেই, বলো
হিয়া- না থাক
কাব্য একটু রাগান্বিত স্বরে বলল ” বলতে বলছি”।
হিয়া ভয় পেয়ে গেলো। হিয়া আমতা আমতা করে বলে “না মানে আসলে কি বলবো ভুলে গেছি”
কাব্য বিরক্তিকর কন্ঠে বলল “তুমি জাস্ট ইম্পসিবল একটা মেয়ে”
হিয়া মুখ চেপে হাসলো
কাব্য স্বাভাবিক ভাবে বলে “ভীষণ ভালোবাসি তোমায়,, রাগাইও না প্লিজ”
হিয়া- আচ্ছা
কাব্য হাঁটু গেড়ে বসে হিয়াকে বলে চোখ বন্ধ করতে। হিয়া চোখ বন্ধ করতেই সে একটা ডাইমন্ড এর রিং পড়িয়ে দিলো হিয়ার হাতে। রিং পড়িয়ে হিয়ার হাতে আলতো ভাবে ঠোঁট জোড়া ছুঁয়ে দিলো কাব্য।
হিয়া কেঁপে উঠলো। হিয়া লজ্জায় চোখজোড়া খুলছেনা। কাব্য দাঁড়ালো, হিয়ার নাকে নাক ঘসে বলে “ভালোবাসি তাই ভালোবাসা চাই,,,তোমার মুখে ভালোবাসি চার অক্ষর টা এই মন খুব করে শুনতে চাই”।
হিয়া কাঁপছে, কাব্য হিয়াকে পেঁছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলে “চোখ খুলে দেখো, প্রকৃতি টা কত সুন্দর”।
হিয়া ধীরে ধীরে চোখ খুলল, তারপর বলল “প্লিজ ছাড়ুন, তিনমাস পরে না হয়…… কাব্য হিয়াকে কথাটি সম্পূর্ণ বলতে না দিয়ে নিজেই বলে ” তিনমাস আগেও তুমি আমার, তিননাস পরেও আমি তোমার”
হিয়া আর কিছু না বলে প্রকৃতি উপভোগ করতে লাগলো। কারণ কাব্যকে কিছু বলে লাব হবেনা আর।
কাব্য হিয়ার চুলের ঘ্রাণ নিতে ব্যাস্ত, মাঝে মাঝে ঠান্ডা বাতাস এসে শিহরিত করে যাচ্ছে দুজন কে।।হিয়া চোখ বন্ধ করেছে।
হিয়া হঠাৎ নিজেকে ছাড়িয়ে নেই কাব্যর থেকে আর আমতা আমতা করে বলে “আ আমি বাড়ি যাবো”
কাব্য – কেন? আন্টিকে মেসেজ দিয়েছি তোমার
ফিরতে হবে আর তুমি আমার সাথেই আছো।
হিয়া কাঁচুমাচু করে বলে “আ আসলে আমার অসস্থি লাগছে।
কাব্য হিয়ার ঠোঁটে আঙ্গুল রেখে বলে “হুস,, এই সময়টা শুধু আমার”
হিয়া চুপ হয়ে গেলো।
?
রাত ১০টা। হিয়া বসে বসে পড়তেছে কিন্তু পড়ায় মন বসেনা।
কাব্যকে কল দেয় সে।। কাব্য তো অবাক হিয়া নিজ থেকে কল করেছে দেখে। কাব্য কল রিসিভ করতেই ওকে কিছু বলতে না দিয়ে হিয়া বলতে শুরু করে “আপনি, আপনি খুব খুব খারাপ, আপনার জন্যই হয়েছে সব। ”
কাব্য- আচ্ছা? কি করেছি গো বউ আমি?
হিয়া রাগি কন্ঠে বলে “আপ আপনি একটা ইতর”
কাব্য দুষ্টু হেসে বলে “কেন আজ তে কিস করিনি তবে আজ খেপেছো কেন এভাবে”।।
তারপর হিয়া ক্লাসে স্যারের সব কথা বলে।
কাব্য সব শুনে বলে ” গাধি”
হিয়া- আপনি গাধির বর।। এবার উপায় বলুন। (কিছুটা রাগান্বিত স্বরে)
কাব্য- আন্টিকে বলতেছি, আন্টি ভিডিও কলে বুঝিয়ে দিবে অংকটা। হবে তো?
হিয়া- খুব হবে (এক গাল হেসে)
কাব্য- আচ্ছা রাখছি তবে। অফিসের কিছু কাজ আছে আমার)
হিয়া- আচ্ছা
বিলাই কুত্তা টিকটিকি ইঁদুর,, এখন শুধু কাজ আর কাজ। রাত বারোটাই কল দিলে আমিও ঘুমাবো তখন। হুঁ
নিজে নিজে বকবক করে পড়তে বসলো আবার।
?
রাত বারোটা পনেরো।
আজ আমি ফোন সাইলেন্ট করতে ভুলে গেছি। মরার মতো ঘুমুচ্ছিলাম। মোবাইলে তিনবার রং বাজতেই জেগে গেলাম আমি, ঘুমঘুম চোখে ফোনের স্কিনের দিকে তাকিয়ে দেখি কাব্যর কল। মুহূর্তেই আমার চোখের ঘুম উধাও হয়ে গেলো।
ভেবে পাচ্ছিনা এতো রাতে কল রিসিভ করবো কিনা, রিসিভ না করলে যদি কাল রাতের মতো আবার চলে আসে।
এই মানুষটাকে ভালোবাসতে পারিনি এখনো। কিন্তু মানুষটা তো আমার সম্পর্কে কিছু না জেনেই ভালোবেসে ফেলেছে আমায়।
এসব ভাবতে ভাবতে কল রিসিভ করলো হিয়া।
ওপাশ থেকে কাব্য চেঁচিয়ে বলে উঠলো “কতক্ষণ লাগে কল রিসিভ করতে”?
হিয়া মুখ বাঁকিয়ে বলে ” ঘুমুচ্ছিলাম”
কাব্য দুষ্টু হেসে বলে “ঘুমাও ভালো করে, বিয়ের পর আর এক রাতেও ঘুমুতে দিবোনা কিন্তু”
হিয়া গম্ভীর গলায় বলে “দেখুন আম্মুর জন্য বিয়েতে রাজি হয়েছি আমি, ভালোবাসি অন্যকাউকে আমি”।
কাব্য দাঁতে দাঁত চেপে বলল ” আচ্ছা? কে সে নামটা বলো, সে যেখানে আছে সেখানেই মাটিচাপা দিয়ে রেখে আসবো”।
হিয়া বলে “কিছুতেই পারবেননা, মিস্টার কাব্য আহমেদ “।______
#চলবে
হিয়া কাকে ভালোবাসে? জানতে পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা করতে হবে গো পাঠকগন।।