#অল্প_পাগলামি_সীমাহীন_ভালোবাসা
#পর্ব_১০,১১ শেষ
#ফারজানা_আক্তার
পর্ব_১০
হিয়া “প্লিজ হাত ছাড়ুন, ও ছোটভাই নিহান। (ফিসফিসিয়ে)
নিহান “আজ বাসায় যা, আম্মু কে বলবো সব, আম্মুরা না তোর বিয়ে ঠিক করেছে তবে এই ছেলের সাথে কি করস তুই?
কাব্য মুচকি হাসে।
হিয়া ” এই সেই ছেলে।
নিহান “আরে আগে বলবি তো, কেমন আছেন ভাইয়া? (কাব্যকে উদ্দেশ্য করে)
কাব্য ” হুম তুমি কেমন আছো?
নিহান “জ্বী ভাইয়া, আলহামদুলিল্লাহ ভালোই থাকি সবসময়।।।
কাব্য ” বেশ,, তো এখানে কেন?
হিয়া “আরে কফি খেতে আসছে,, বাড়িতেও আমার বিরিয়ানির ভাগ বসাই আর এখানেও চলে আসে আমার কফিতে ভাগ বসাতে। হিংসুটে (মুখ বাকিয়ে)
নিহান ” আর তুই তো চুরনি,, আমার রুম থেকে উড়নাটা চুরি করে আনছোস কেন সকালে?
হিয়া “ওমা এটা তো আমার জন্য আনছোস, আর আমার উড়না আমি নিলে তোর কি? (কোমরে হাত দিয়ে)
কাব্য আর নিহান হাসে।। নিহান বলে কফি খাওয়ার স্বাদ মিটে গেছে, আমি চললাম।
কাব্য ” আরে বসো কফি খাও,, আমরা তো বের হচ্ছিলাম এখন। আর শুনো যখন বাইরে কফি খেতে মন চাই তখনই এখানেই আসবে। এটা আমাদের রেস্টুরেন্ট।
নিহান “বেশ,, আমি তো বন্ধুদের নিয়ে এখানে প্রায় আসি।
?
হিয়া রাতে ঘুমাতে গিয়ে খেয়াল করলো তার হাত লাল হয়ে আছে। মুহুর্তেই মনে পরলো ওই সময়ই বজ্জাতটাই তো চেপে ধরেছিলো হাত, হনুমান একটা” বলেই মুখ বাঁকালো।।
রাত ১১টা বেজে গেছে, ঘুম আসেনা হিয়ার চোখে। ঘুম না আসাতে সে বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়ালো, বেশ মন মাতানো ঠান্ডা বাতাসে শিহরিত হচ্ছে হিয়া।
আমি কি ওই বজ্জাতের প্রেমে পরে যাচ্ছি? তবে কেন সারাক্ষণ উনার কথা হৃদয়ে বাজনা বাজায়? কেনই বা উনি কাছে আসলে হৃদয়ের কঁম্পন বেড়ে যায়? তবে এটাই ভালোবাস, নাকি ভালোলাগা?? এসবের কারণে আমার পড়ালেখার ক্ষতি হবে না তো? না, দূরে থাকতে হবে উনার থেকে আমাকে
ফোনের রিংটোনে হিয়ার ভাবনায় ছেদ পড়লো। সে বেলকনি থেকে রুমে গিয়ে ফোন হাতে নিয়ে দেখে কাব্য কল দিয়েছে।। সে ফোন সাইলেন্ট করে দিলো। ভালো লাগেনা প্রতি রাতে কথা বলতে। তিনমাস পর তো বিয়ে হবেই।
হিয়া দরজা জানালা সব ভালোভাবে বন্ধ করে শুয়ে পরে, যাতে কাব্য আসলেও যেন ঘরে ঢুকতে না পারে।
?
কাব্য বিরক্ত হচ্ছে খুব। ইচ্ছে করছে এখনই চলে যেতে ওই বাসায়।
কেনো করে হিয়া এমনটা? সে কি বুঝেনা ভালোবাসি অনেকটা।
কাব্য আকাশের দিকে তাকিয়ে গুনগুন করে গানের সুর টানে
“বিধাতা জানে,
ওই বিধাতা জানে
তুমি বিহীন বেঁচে থাকার
নেইতো কোনো মানে” (পোড়ামন ছবির গান)
?
আজ হিয়ার কলেজে যেতে বিন্দুমাত্র ইচ্ছে করছে না। তবুও যেতে হবে সামনে যে পরিক্ষা তার। ভালো করে পড়তে হবে তাকে নয়তো শ্বশুর বাড়ির সবার কাছে অসম্মান হতে হবে।
কাব্য রাগি মুডে ড্রাইভ করছে আর ভাবছে কেন এই মেয়েটার প্রতি এতো মায়া জন্মালো?কেন এই মেয়ের প্রতি এতো দূর্বল হয়ে পরেছি আমি? কি হয়েছে আমার? এসব ভাবতে ভাবতে সে গাড়ি থামালো হিয়ার কলেজের সামনে।
প্রায় আধঘন্টা পর হিয়া বের হলো গেইট দিয়ে। অনেক স্টুডেন্টের মাঝে হিয়াকে খুঁজছে কাব্য। হিয়া গেইট দিয়ে বের হতেই কাব্যকে দেখে রিতার হাত চেপে ধরে। কারণ হিয়া জানে কাব্য খুব রেগে আছে। রাতে কল রিসিভ করেনি আজ সকালেও মেসেজের রিপ্লাই দেয়নি এই ভয়ে হিয়ার কলিজা শুকিয়ে যাচ্ছে। হিয়া শুকনো ঢুক গিলে। “আল্লাহ বাঁচাও এই গন্ডারের হাত থেকে আমায়।”
কাব্য চোখ ঘুরাতেই দেখে হিয়া চুপি চুপি ছেলেমেয়েদের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে চলে যাচ্ছে। হিয়া রিতাকে বিদায় দিয়ে গাড়ির দরজা খুলবে এমন কেউ একজন খপ করে তার হাত ধরে ফেলে। হিয়া ছিটকে পরে, সে চোখ তুলে তাকাতেই দেখে কাব্যর চোখ লাল হয়ে আছে।
হিয়া “আ আপ আপনি? (থেমে থেমে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে)
কাব্য ” খুব চালাক হয়েছো তাইনা? (কিছুটা চেঁচিয়ে)
হিয়া চারপাশে তাকিয়ে বলে “প্লিজ এখানে নয়
কাব্য ” ঠিক আছে, চলো তবে। কাব্য হিয়ার ড্রাইভার কে বলে গাড়ি নিয়ে চলে যেতে, তারপর হিয়াকে টানতে টানতে তার গাড়িতে উঠিয়ে নিজেও উঠে বসে। রাগে গিজ গিজ করতে করতে হিয়ার সিট বেল্ট লাগিয়ে নিজেরটাও লাগিয়ে নেই।
কাব্য এতো জোরে গাড়ি চালাচ্ছে যে হিয়া ভয়ে চুপসে গেছে, “শয়তান বজ্জাত কালো কুমির নিজেও মরবে আমাকেও মারবে, এতো জোরে কেউ গাড়ি চালায়? ভয়ে আমার কচি প্রাণটা শেষ, আম্মু কি দেখে যে এই গরুর গোবরের গলায় জুলায় দিছে আমায় কি জানি, খুব কাঁদতে ইচ্ছে করছে এ্যাঁ এ্যাঁ এ্যাঁ।
কাব্য ” মনে মনে আমাকে গালি দেওয়া শেষ হলে নামো গাড়ি থেকে।” হিয়া অন্যমনস্ক হয়ে এসব ভাবতে ভাবতে কাব্য একটা বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামালো।
হিয়া “ধুর এই ইতরটার জন্য একটু মনে মনে কথা বলেও শান্তি পাইনা, শালার খচ্চর তেলাপোকা
হিয়া গাড়ি থেকে না নেমে এসব বিড়বিড় করতেছিলো। কাব্য তো আজ রেগে মেগে আগুন, সে হিয়াকে কোলে করে ঘরের ভিতরে ঢুকে গেলো।
হিয়া “কোথায় এনেছেন আমায়? কার বাসা এটা? আব্বুর কাছে যাবো আমি, দিয়ে আসুন আমায়। (কাঁদো কাঁদো গলায়)
কাব্য “আর একটা কথা বললে জানালা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দিবো, যায় পরবে একদম সাপভর্তি পুকুরে।
হিয়া ভয়ে ঢুক গিলে। যেন শরীরের সব মাংসপেশি শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে তার।
হিয়া ” দে দেখুন, বেশি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু।
কাব্য “চুপ একদম,
কাব্য হিয়াকে একটা চেয়ারে বসিয়ে হাত পা বেঁধে দিয়েছে। আর নিজে আরেকটা চেয়ার নিয়ে সামনে বসছে। হিয়ার মাকে কল দিয়েছে
কাব্য ” আসসালামু আলাইকুম আন্টি..
আলিয়া বেগম “ওয়ালাইমুকুস সালাম। কেমন আছো বাবা?
কাব্য ” জি আলহামদুলিল্লাহ। আপনার কি অবস্থা?
আলিয়া বেগম “আমি আর ভালো থাকলাম কই, মেয়েটা আমায় ভালো থাকতে দিলে তো ভালো থাকবো। এখনো বাসায় আসলোনা
কাব্য ” আপনি চিন্তা করবেননা আন্টি, হিয়া আমার সাথে আছে। আমাদের রেস্টুরেন্টে আসছে কফি খেতে।
আলিয়া বেগম “আচ্ছা বাবা, সন্ধ্যার আগে বাসায় দিয়ে যেও।
কথা শেষ, হিয়া রাগি চোখে কাব্যর দিকে তাকিয়ে আছে, এতক্ষণ নিরব দর্শকের মতো সব শুনেছে।
হিয়া ” আপনি আম্মু কে মিথ্যা বললেন কেন?
কাব্য “হঠাৎ তুমি আমাকে Ignore করতে শুরু করেছো কেন?
হিয়া ” ক কই না তো, তেমন কিছুনা
কাব্য “এমনটাই
হিয়া ” আপনি আমাকে বেঁধে রেখেছেন কেন?
কাব্য “যতক্ষণ না “ভালোবাসি” বলছো ততক্ষণ এভাবেই থাকবে। এটা বলে কাব্য সিগারেট ধরালো। হিয়ার বমি আসে সিগারেটের গন্ধে।
হিয়া “দে দেখ দেখুন (থেমে থেমে)
কাব্য “এখন নয়, বিয়ের পর দেখবো সব
হিয়া ” ছিঃ কি বাজে মাইন্ড আপনার
কাব্য “হ্যাঁ তো? কিসের এতো পাগলামি হ্যাঁ? আমার সীমাহীন ভালোবাসা কি অনুভব করতে পারোনা তুমি? আমার ছোঁয়া কি তোমার মনে একটুও শিহরণ জাগায় না?” হিয়ার গাল চেপে ধরে মুখের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে বলে কথাগুলো।
হিয়ার মরে যেতে ইচ্ছে করছে সিগারেটের গন্ধে। চুপ হয়ে আছে সে
কাব্য “তোমাকে দেখার পর শুধু তোমাকে ভালোবেসে নিজেকে চেঞ্জ করতে চেয়েছি, কিন্তু তুমি, তুমি তো তুমিই, ইডিয়ট একটা। (কিছুটা হিয়ার দিকে ঝুঁকে বলে)
তুই ইডিয়ট তোর বউ ইডিয়ট তোর চোদ্দগুষ্টি ইডিয়ট, মুখ ফুলিয়ে মনে মনে বলে কথাগুলো।
কাব্য জানালা দিয়ে সিগারেট ফেলে হিয়ার দিকে তাকাতেই দেখে____
#চলবে
#অল্প_পাগলামি_সীমাহীন_ভালোবাসা
#অন্তিম_পর্ব_
#ফারজানা_আক্তার
কাব্য জানালা দিয়ে সিগারেট ফেলে হিয়ার দিকে তাকাতেই দেখে হিয়া কান্না করছে।
কাব্যর বুকে ধুক করে উঠলো হঠাৎ, সে হিয়ার কাছে গিয়ে হাত পায়ের বাঁধন খুলে দিলো।
কাব্য “কি হয়েছে? কান্না করছো কেন? বলো আমাকে। বলেছিলাম না তোমার চোখের জল কাঁটার মতো গাঁথে হৃদয়ে।
হিয়া আমতা আমতা করে বলে ” ক্ষুধা লাগছে।
কাব্য “আমাকে বললেই হয়।। কাঁদতে হয় নাকি?
হিয়া ” আপনি তো বজ্জাত একটা, যদি আমায় মেরে ফেলেন, তাই ভয়ে বলিনি (বোকার মতো ফেস করে)
কাব্য চোখ লাল করে তাকাতেই হিয়া চুপটি করে নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো।
কাব্য কাকে জানি ফোন করে খাবার আনতে বলল।
কিছুক্ষণ পর খাবার আসলে হিয়া তৃপ্তির সাথে খাবার খেতে থাকে। কাব্যকে একবারো বলল না ওর সাথে খেতে। কাব্য চুপটি করে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হিয়ার খাবার খাওয়া দেখতেছিলো।
এই মেয়েটা কখন কি বলে কখন কি করে সেটা মনে হয় সে নিজেও জানেনা। একদম চুলবুলি টাইপের মেয়ে।। তবুও ভালোবাসি। এসব ভাবছে কাব্য আর ওইদিকে হিয়া খাবার শেষ করে ঘুমিয়ে পরেছে।
হিয়াকে ঘুমাতে দেখে কাব্য একটু বিরক্ত হলো। এই মেয়ে এতো ঘুম পাই কই? যখন তখন ঘুম আর ঘুম। বুঝি তো সব, আমার কথাগুলোর উত্তর না দেওয়ার জন্যই এই ঘুমের নাটক। বিয়ের পর সব গুনে গুনে হিসাব নিবো,, ওয়েট এন্ড ওয়াচ।।
কাব্য হিয়াকে কোলে তোলে নিলো। হিয়াকে গাড়িতে বসিয়ে নিজেও গাড়িতে উঠে ড্রাইভ করতে লাগলো। হিয়ার অবাধ্য চুলোগুলো উড়ছে, কাব্য মুগ্ধ হচ্ছে, শ্যামলাবর্ণ হিয়ার গায়ের রং দেখতে যেন অপূর্ব।
কিছুক্ষণের মধ্যেই কাব্য হিয়াদের বাসার সমনে এসে গাড়ি থামালো।
কাব্য “হিয়া, হিয়া, ওই পাগলি উঠো,
হিয়া ঘুমঘুম কন্ঠে বলে ” আম্মু প্লিজ আরেকটু ঘুমাতে দাও।
কাব্য রেগে গিয়ে পানি ছিটিয়ে দিলো হিয়ার মুখে, হিয়া হালকা লাফিয়ে উঠলো। চোখ খুলতেই দেখে সামনে কাব্য। ভয়ে আর কিছু বলল না।
কাব্য “তোমাদের সূর্যমুখী হাউজ।
হিয়া চোখ বুলিয়ে দেখে সে বাড়ির সামনেই আছে। একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলো সে।
” আজ একটা কথা জিজ্ঞেস করতে পারি?
“হুম।অন্যদিকে তাকিয়ে বলে হিয়া
“তোমাদের বাড়ির নামটা কে রেখেছে?
“আমি, কেন? একটু অবাক হয়ে।
“এমন নাম কেন?
“কারণ সূর্যমুখী ফুল আমি খুব বেশিই ভালোবাসি।
?
তিনমাস পর
আজ হিয়া আর কাব্যর বিয়ে। পুরো বাড়ি মেতে আছে আনন্দে। আত্মীয় স্বজনে পুরো বাড়ি ভরপুর।
হিয়া বউ সেজে বসে আছে নিজের রুমে। বরযাত্রী এখনো আসেনি।
হিয়ার মা আর বাবা আসছে, হিয়া মা বাবাকে দেখে উঠে দাঁড়ালো, মুখটা কেমন শুকনো শুকনো হয়ে আছে তার।
সব মেয়েকেই একদিন স্বামীর বাড়িতে যেতে হয়, মা বাবার আদরের বাঁধন ছেড়ে যেতে হয়। বাবার এমন কথায় হিয়া বাবাকে খুব জোরে জড়িয়ে ধরে ফুঁফিয়ে কেঁদে উঠে।
শুধু বাবা আদর করে বুঝি, মা বুঝি একটুও আদর করে না? মায়ের এমন কথায় বাবাকে ছেড়ে একটু মুচকি হেসে মাকে জড়িয়ে ধরে।
মা বাবা যেতেই নিহান আসে। আহারে বরযাত্রী আসার আগেই দেখি মেকাপ নষ্ট হয়ে পেত্নী হয়ে গেছিস?
দেখ মজা করবিনা, ভালো হবেনা কিন্তু।
আমার তো ভালো হবে, আমার বিরিয়ানির ভাগ আর কাউকে দিতে হবেনা।
ভাই,তুই কি সত্যি আমায় একটুও মিস করবিনা?
নিহান হিয়ার কপালে চুমু দিয়ে বলে ” আপু তুই ছাড়া এই বাড়িটা বিষাদ হয়ে যাবে রে। দুলাভাইকে নিয়ে সপ্তাহে একবার হলেও আসবি তো।
হিয়া কাঁদো কাঁদো ফেস করে বলে হুম আসবো।
?
বরযাত্রী এসে গেছে। বিয়ের কাজ সম্পন্ন হলো। বিদায়ের সময় হিয়া প্রচুর কান্না করে মা বাবা ভাইকে জড়িয়ে ধরে। হিয়া আর কাব্য আলাদা গাড়িতে করে যাচ্ছে।
কান্না করে পেত্নী হয়েছো কেন?
হিয়া কিছু বলেনা, বেচারি আজকে ভীষণ ইমোশনাল হয়ে পরেছে। কাব্য এক হাত দিয়ে ড্রাইভ করছে আর অন্য হাতে জড়িয়ে ধরে হিয়াকে।
?
বাড়িতে আসার পর কথা হিয়াকে কাব্যর রুমে নিয়ে যায়। ভাবি আপনি বসুন,আমি যাচ্ছি আর কিছু প্রয়োজন হলে আমাকে ডাকবেন না হয় ভাইয়া কে বললেই হবে।
কথা চলে যাওয়ার পর হিয়া পুরো রুম একবার দর্শন করে।বেশ গুছানো রুমটা। হিয়া খাটের একপাশে গিয়ে বসলো। রাত প্রায় ২টা বাজতে চললো কাব্য আসার কোনো নামগন্ধ নেই। হিয়া অপেক্ষা করতে করতে বসাতেই ঘুমিয়ে পরে।
কিছুক্ষণ পর কাব্য রুমে আসে। এসেই দেখে হিয়া ঘুমিয়ে পরেছে। ঘুমানো অবস্থায় একদম বাচ্চা বাচ্চা লাগছে হিয়াকে। কাব্যর মন খারাপ হয়ে গেল। “ঘুম ছাড়া আর কিছুই বুঝেনা এই মেয়েটা। এটা বলেই কাব্য লাফিয়ে খাটে উঠে, খাট টা একটু নড়ে উঠতেই হিয়ার ঘুম ভেঙ্গে যায়।
“আপনি? কখন এলেন?
“যখন তুমি নাক ডেকে ঘুমাচ্ছিলে তখন।
“ওই গরুর গোবর হিয়া নাক ডাকে না,হুঁ
” আচ্ছা এরপর যখন নাক ডাকবে তখন আমি ভিডিও করে দেখাবো তোমায়।
হিয়া মুখ ভেংচিয়ে অন্যদিকে তাকালো। কাব্য হিয়াকে পেঁছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলে “আজ কি বলো তো?
” কি আজ?
“তুমি জানোনা?
” না তো
“আজ আমাদের বাসর রাত, ফিসফিসিয়ে বলে হিয়ার কানে হালকা কামড় দেয়। হিয়া কেঁপে উঠে। লজ্জায় লাল হয়ে গেছে মেয়েটা। হিয়া কোনোমতে কাব্য কে ছাড়িয়ে বলে, ” আমি ঘুমাবো,বলেই শুয়ে পরে। কাব্য একটুখানি রেগে যায়।
“না আজ ঘুমানো চলবেনা।
“কেন?একটু মাথা তুলে বলে
” কারণ আমি ঘুমাতে দিবোনা।
“দে দেখুন। থেমে থেমে বলে হিয়া।
” হুম দেখবো তো। আজ তো আর না দেখে ছাড়ছিনা।এটা বলেই কাব্য হিয়াকে জড়িয়ে ধরে ঘারে মুখ ডুবিয়ে দেয়।হিয়া শিহরিত হয়।
?
সকালে কাব্য ঘুম থেকে জেগে যায় হিয়ার আগে। স্নিগ্ধ সকাল পাশে মিষ্টি বউ, কাব্যর মুখে তৃপ্তির হাসি।
কাব্য হিয়ার কপালে চুমু দিতেই হিয়া জেগে যায়। কাব্য অবাক যে মেয়ের কানের কাছে ঢুল পিঠলেও উঠেনা সে আজ আমার ছোঁয়াতেই উঠে গেলো কিভাবে।
হিয়া চোখ খোলে দেখে কাব্য পাশে আধশোয়া হয়ে বসে আছে। হিয়া খেয়াল করলো তার গায়ে জামাকাপড় নেই,শুধু একটা পাতলা চাদর আছে। হিয়া বেশ লজ্জা পেলো।
“এতো লজ্জার কি আছে?আমিই তো
” আপনি তো খুব পঁচা। আমাকে একা পেলে সবসময় এসব করতে চান। আমি আজকে বাসায় গেলে আর আসবোনা।
“আমিও দেখবো তুমি কিভাবে না এসে থাকতে পারো।
” আপনি যান এখন এখান থেকে।
“কেন?
হিয়া আর কিছু বলেনা। কাব্য হিয়াকে জড়িয়ে ধরে বলে শুধু একবার বলো ভালোবাসি, প্রমিস করছি তোমার পাগলামিতে কখনো বাঁধা দিবোনা। পাগলামি আর ভালোবাসা দুটোই থাকবে আমাদের ভালোবাসায়। অল্প পাগলামি থাকবে আর ভালোবাসা থাকবে সীমাহীন।
” আগে বলুন ভালোবাসি বললে আমাকে বাদাম দিবেন।
“হুম যত চাও তত দিবো, যদি চাও বাদামওয়ালাকে ঘরে নিয়ে আসবো।
” হুম এত্তগুলা ভালোবাসি।
কাব্য একটা মুচকি হাসি দেয়,তৃপ্তির হাসি।হিয়া কাব্যের বুকে মুখ লুকায়।
____সমাপ্ত