গল্পঃ রোমান্টিক সিনিয়র চাচাত বোন
পর্বঃ ১৬ (শেষ পর্ব)
লেখকঃ শাওন আহমেদ নীল
আমিঃ এটা দিয়ে কি করবেন?
নার্সঃ সেলাই করতে হবে , তাই ইনজেকশন দিয়ে
অবস করে নিবো।
আমিঃ আপু আমি ইনজেকশন দিবো না।
নিধীঃ ইনজেকশন দেওয়াটা কি খোব জরুরি।
নার্সঃ হ্য আপু নাহলে অনেক ব্যথা পাবে,, আর ওনার মতো কিউট ছেলেকে আমি ব্যথা দিতে পারবো না।
নিধীঃ আপনাকে এখানে কে কিউট সেটা দেখতে পাঠানো হয়েছে।।
নার্সঃ স্যরি
নিধী আপু আমাকে জড়িয়ে দরলো তারপর আমাকে ইনজেকশন দিয়ে দিলো,, আসলে ইনজেকশন অনেক ভয় পাই আমি। তার পর হাত ওয়াশ করে সেলাই করে দিতে লাগলো।
তারপর নার্স বললো আচ্ছা একটা প্রশ্ন করি।
আমি বললাম ওকে করেন।
নার্সঃ আচ্ছা আপনারা কি কাজিন?
আমিঃ হ্য
নার্সঃ বাট আপনাদের ব্যবহারে ত মনে হচ্ছে না।
আমিঃ আসলে নিধী আপু আমার চাচাত বোন,,
এবং হবু বউ।
নার্সঃ ওহ তার জন্যই ত বলি একটা কাজিন ত আর জড়িয়ে দরবে না এমন করে।
কথা বলতে বলতে সবকিছু কম্পিলিট হয়ে গেলো।
আমরা আংকেল এর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে, হাসপাতালের সামনে চলে আসলাম।। সিএনজি ড্রাইভার এখনো সিএনজি নিয়ে বসে আছে। আমরা গিয়ে সিএনজিতে বসলাম।। বাসার ঠিকানা বললাম । আমাদের বাসার সামনে
সিএনজি ব্রেক করলো। আমরা বাড়া মিটিয়ে বাসায় গিয়ে কলিংবেল বাজালাম।। দেখি নানু মামা মামি লিমা হিয়া সবাই আছে।
আমরা দুজন সবার সামনে গিয়ে দাড়ালাম।।
মামাঃ এতো রাতে তোমাদের বাসার বাহিরে কে যেতে বলেছে।
আমিঃ স্যরি মামা।
মামাঃ আজকে তোমাদের কিছু হলে আপু কে কি জাবাব দিতাম আমি।
মামিঃ কিছু হয়নি ত। যাও নীল তুমি গিয়ে রেস্ট করো।।
আমিঃ ওকে।
এই বলে আমি রুমে চলে গেলাম। আমার পিছনে পিছনে নিধী আপু ও আসলো।। আপু এসে আমার পাশে বসলো।
নিধীঃ আজকে আমার জন্য তর এই অবস্থা হলো।
আমিঃ এই কথা টা আরেকবার বললে তোমার খবর আছে বলে দিলাম।
নিধীঃ ডিনার করবি না?
আমিঃ না
নিধীঃ কেন?
আমিঃ দেখো না হাত টা কাটা আমার।
নিধীঃ ওয়েট আমি নিয়ে আসছি।
নিধী আপু নিচে চলে গেলো। নিচে গিয়ে আমার জন্য খাবার নিয়ে আসলো। হাত দুয়ে আমার সামনে খাবার তুলে দরলো। আমি খেয়ে নিলাম।
আমিঃ তুমি খাবে না?
নিধীঃ পড়ে খাবো।
আমিঃ আমার সাথে খাও।
নিধীঃ তর সাথে কি করে খাবো।।
আমিঃ এক লোকমা তুমি খাবে আরেকবার আমাকে খাইয়ে দিবে।
নিধীঃ ওকে।
এভাবে আমাদের খাওয়া শেষ হলো। খাওয়া শেষে নিধী আপু প্লেট নিয়ে নিচে চলে গেলো। আবার রুমে এসে আমার পাশে বসলো।।।।
আমিঃ অনেক রাত হয়ছে রুমে চলে যাও।
নিধীঃ না আজকে আমি তর সাথেই থাকবো।
আমিঃ না হবে না।
নিধীঃ কেন.
আমিঃ যদি আমি কিছু করে ফেলি?
নিধীঃ আমি ত এটাই চাই। আর তর জুড় করতে হবে না,, তুই চাইলে এমনিতেই হবে।
আমিঃ পাগল হয়ে গেছো তুমি?
নিধীঃ কেনো?
আমিঃ সব মেয়ে তার ইজ্জত রক্ষা করতে চাই,
আর তুমি কি না।
নিধীঃ তুই ত আমার স্বামী ।
আমিঃ হুম বাট হবু স্বামী।
নিধীঃ ফের এক কথা দারা তর ব্যবস্থা করতেছি।
এই বলে আপু আমার মোবাইল টা নিলো। নিয়ে আম্মুর নাম্বারে কল করলো।।। আম্মু কল রিসীভ করলো।
আম্মুঃ কেমন আছিস নীল।
নিধীঃ ছোট আম্মু আমি নিধী
আম্মুঃ হ্য মামনী বলো।
নিধীঃ ডাকা আসলেই আমাদের বিয়ে দিয়ে দিবে।
আম্মুঃ এতো তাড়াতাড়ি করার কি দরকার তোমাদের লেখাপড়া শেষ হক তাড়পর।
নিধীঃ না আমি এতোদিন ওয়েট করতে পারবো না।
আম্মুঃ আচ্ছা দেখা যাবে আগে ডাকা আসো।
নিধীঃ না সিওর দিয়ে বলো নাহলে,, আমরা কাজি অফিসে গিয়ে বিয়ে করে ফেলব।
আম্মুঃ না তোমাদের বিয়ে করতে হবে না,, আসলেই তোমাদের বিয়ে দিয়ে দিবো।।
নিধীঃ ধন্যবাদ আম্মু।
আম্মুঃ আমার ছেলেটাকে পাওয়ার জন্য একবারে মরিয়া হয়ে গেছিস।
নিধীঃ কি করব বলো তোমার ছেলেকে ছারা যে কিছু ভাবতে পারি না।।
আম্মুঃ আচ্ছা নীলের কাছে দে।
নিধীঃ ওকে।
এরপর আমি আম্মুর সাথে কথা বলে কল কেটে দিলাম।। নিধী আপুকে রুম থেকে বাহির করে আমি দরজা লাগিয়ে দিলাম। আমি সাধারণত রুমের দরজা লক করি না,, বাট গতকাল রাতের মতো আজকেও রুমে আসতে পাড়ে।।
আমি ঘুমিয়ে পড়লাম । কালকের পরেরদিন আমার জন্য একটা স্পেশাল দিল। কালকে অনেক কাজ বাকি আছে।
সকালে দরজা দাক্কানোর শব্দে আমার ঘুম ভেঙে গেলো।। দাক্কাচ্ছে ত দাক্কাচ্ছে থামার কোনো নাম ই নেই। এটা নিধী আপু ছাড়া আর কারো কাজ না। একরাশ বিরক্ত নিয়ে দরজা টা খুলে দিলাম।।।।
খুলে দেখি নিধী আপুই দাড়িয়ে আছে।
আমিঃ এতো সকালে ডাকতেছো কেন?
নিধীঃ কয়টা বাজে খেয়াল আছে?
আমিঃ হ্য নয়টা বাজে।
নিধীঃ এখন ও তর সকাল।
আমিঃ তা নয়ত কি?
নিধীঃ ফ্রেশ হবি না?
আমিঃ হুম
নিধীঃ একা একা পাড়বি?
আমিঃ না।
এরপর নিধী আপু আমাকে নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো।। ফ্রেশ হয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হলাম। নানু মামা মামি রুমে আসলো। এখন কেমন আছি এসব জেনে সবাই চলে গেলো।। নিধী আপু বললো আমি এখন যায় ত্রিশ মিনিট পরে খাবার নিয়ে আসবো। নিধী আপু চলে গেলো। হিয়া আর লিমা রুমে আসলো।
হিয়াঃ এখন কি অবস্থা ভাইয়া?
আমিঃ ভালো।
একটা কাজ করে দিতে হবে তোমাদের দুজনের।
লিমাঃ কি কাজ?
তারপর আমি সব কিছু বুঝিয়ে বললাম। ওরা রাজি হয়ে গেলো। নিধী আপু রুমে আসলো রুমে এসে আমাকে খাইয়ে দিলো।।
এভাবে দুপুর হয়ে গেলো। দুপুরে খাবার খাইয়ে দিলো নিধী আপু।
নিধীঃ আচ্ছা কালকের দিনের কথা কি তর মনে আছে?
আমিঃ কেন কালকে কি হয়েছিলো?
নিধীঃ সত্যি জানিস না নাকি ফান করছিস।
আমিঃ কালকে কি তোমার নানার জন্মবার্ষিকী নাকি?
নিধীঃ এইরকম স্পেশাল একট দিন ভুলে গেলি।
আমিঃ আচ্ছা কি হয়েছে বলবা তা। আর কালকে কি।
নিধীঃ কিছুনা।
নিধী আপু রুম থেকে চলে গেলো,,কালকে নিধী আপুর জন্মদিন। আপু ভাবছে সত্যি আমি ভুলে গেছি তাই মন খারাপ করে চলে গেলো রুম থেকে।
আমি ফোন দিয়ে লিমা আর হিয়া কে আসতে বললাম ওরা আসলো। প্লানিং মোতাবেক হিয়া আর লিমা নিধী আপু কে নিয়ে বাহিরে যাবে,,এই সময়ে আমি সবকিছু ব্যবস্থা করে রাখব। আপুকে সার্পাইজ দেওয়ার জন্য।।।
নিধী আপু বাহিরে যেতে চাইলো না,, বাট হিয়া আর লিমার অতিরিক্ত জুর করাতে সাথে গেলো। আমি এদিকে সজীব কে কল করে গাড়ি নিয়ে আসতে বললাম। এরপর আমরা মার্কেটে চলে গেলাম প্রয়িজনীয় সব কিছু কেনা কাটা করে বাসায় চলে আসলাম।
ছাঁদে চলে গেলাম আমি আর সজীব,, ছাদে গিয়ে ফাস্ট এ ছাঁদ লাইটিং করলাম। আস্তে আস্তে সব কিছু শেষ দিলাম। সন্ধ্যা হয়ে গেলো,,আমি আর সজীব আমার রুমে চলে গেলাম।।। রাত আট টার দিকে নিধী আপু বাসায় আসলো,, হিয়া আর লিমাকে মনে মনে একটা ধন্যবাদ দিলাম।
নিধী আপু বাসায় এসে আমার রুমে আসলো,, সজীব কে আমার রুমে দেখে একটু কথা বলেই চলে গেলো।। হিয়া সজীবকে দেখে আরো বেশি অবাক হলো। আমি হিয়াকে বললাম নিধী আপুর দিকে নজর রাখতে কোনোমতেই জানি নিধী আপু ছাঁদে যেতে না পারে।।। আর লিমাকে পাঠালাম ছাঁদে কিছু কাজ বাকি আছে সেগুলা কম্পিলিট করতে। রাতে সবাই ডিনার করে যে যার রুমে চলে গেলাম,, রাত বাজে পনে এগারোটা। আমি সজীবকে ছাদে যেতে বললাম। নানু মামি মামা হিয়া লিমা ছাদে চলে গেলো। আমি নিধী আপু রুমে গেলাম দেখি আমার পিক দেখতেছে ফোনে।
আমিঃ আপু
নিধীঃ তুই আমার রুমে কি মনে করে।
আমিঃ এদিকে আসো।
নিধীঃ আচ্ছা।
নিধী আপু আসলো আমি নিধী আপুর চোখটা বেদে ফেললাম। নীল কি করছিস কি। চুপ করে থাকো। আমি নিধী আপুকে কোলে তুলে নিলাম।
নিধীঃ আজকে এতো রোমান্টিক
আমিঃ এতো উজন কেন তুমি?
নিধীঃ এতোটুকুতেই এইরকম ,, যখন বেবি হবে তখন ত মোটা হবো তখন নিবি কি করে।
আমিঃ দেখা যাবে।
আমি নিধী আপুকে নিয়ে হাঁটতে লাগলাম। নিধী আপু বলতেছে কই নিয়ে যাচ্ছিস আমি কিছু বলছি না ছাঁদে চলে গেলাম। একটা টেবিলে কেক রাখা হয়েছে কেকের সামনে আপু কে নামিয়ে দিলাম।
রাত বারোটা বেজে গেলো। আমি আপুর চোখ মুক্ত করে দিলাম। সবাই একসাথে বলতে লাগলাম Happy birthday to you..
happy birthday dear nidhi
এসব দেখে নিধী আপু আমাকে জড়িয়ে দরে কেঁদে দিলো। আমি নিধী আপুকে আমার বাহুডোরে নিয়ে নিলাম। পড়ে মামা বললো আরে আজকের দিনে কাঁদতে নেই। এরপর নিধী আপু কেক কাটলো ফাস্ট এ আমাকে খাইয়ে দিলো তারপর নানু কে একে একে সবাইকে খাইয়ে দিলো।। সবায় গিফ্ট দিয়ে নিচে চলে গেলো। আমি নিধী আপুর হাতে একগুচ্ছ কাঠগোলাপ দিলাম। আপু খুশি হয়ে আমাকে একটু মিষ্টি খাইয়ে দিলো।।
একটা দোলনা ফুল দিয়ে অনেক সুন্দর করে সাজানো হয়েছে৷ আমরা গিয়ে ওটাই বসলাম। নিধী আপু আমার বোকে মাথা রাখলো।।।
নিধীঃ দুপুরে যখন জিগাইলাম তখন না করলে কেন.?
আমিঃ বললে কি সার্পাইজ টা থাকবে।
নিধীঃ জানো কতোটা কষ্ট পেয়েছি।
আমিঃ স্যরি আর হবে না।
নিধীঃ সবসময় এমন করে ভালোবাসবে ত।
আমিঃ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তোমাকে ভালোবেসে যাবো।
নিধী আপু আমাকে অনেক শক্ত করে জড়িয়ে দরলো। আর বললো কেক এর নাম লেখাটা অনেক সুন্দর ছিলো৷
কেকে লেখা ছিলো Happy birthday সিনিয়র প্রেয়সী।।
আমিও আপুকে অনেক শক্ত করে জড়িয়ে দরলাম। আপু আমার বোকে ঘুমিয়ে পড়লো। আমি নিধী আপুর কপালে একটা চুমু খেয়ে বললাম। ভালোবাসি পাগলি নিজেই চাইতে বেশি।।।।
#সমাপ্ত