সিনিয়র বস,পার্ট: ৭,৮

0
1106

#নাম: সিনিয়র বস,পার্ট: ৭,৮
#লেখক: Osman
পার্ট: ৭

__রাত ১টা সময় দরজায় টোকা দেওয়ার কারণে আমি কিছুটা হকচকিয়ে উঠলাম। আমার মাথায় কাজ করছেনা কে দরজায় টোকা দিলো। আমি লাইট জ্বালিয়ে চশমা চোখে দিয়ে। দরজার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম কে?

__মনির জীবনটা খুব অদ্ভুত। মনির আব্বু তাকে ব্যাবসা দিয়ে দিয়েছে। বলছে তার নিজের মতো করে
ব্যাবসা সাজিয়ে নিতে। মনিও তার কোম্পানি ধরে রাখতে অনড়। সে জন্য সে খুব কঠোর আচরণ করে কর্মচারীদের সাথে। ব্যাবসার পিছনে ছুটতে ছুটতে কখন যে তার বয়স ২৫ কোঠায় গিয়ে ঠেকেছে সে নিজেও জানে না। মনির একজনকে খুব প্রয়োজন।
তার কোম্পানির সাথে অন্য আরেকটি কোম্পানি মিলিতো হয়ে যৌথ মিলনে নতুন একটা প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছে। যার সাথে কাজ করা হচ্ছে। তার নাম হচ্ছে মি: আজিম। তার সাথে মনির খুব ভাব । অনেক সময় সে মিট করতে চায়। মনিও আপত্তি করে না। কারণ তার এখন একজনকে খুব দরকার। মনি তার চাহিদা গুলো বুঝতে পারছে। মনির টাকার অভাব নেই। মনির যে টাকা আছে। সে টাকা দিয়ে মনির চৌদ্দ গুষ্টি খেয়ে যেতে পারবে। মনির সেক্রেটারি সারা খুব ভালো মেয়ে। কিন্তু খুব যেদি। অব্যশ্য মনির কম যেদ না। কিন্তু সারা মারামারিতে উস্তাদ। একাই দুই জন পুরুষকে কাবো করে ফেলতে‌ পারে। এজন্যই সারা এক হিসাবে মনির বডিগার্ড আবার সেক্রেটারি ও। ও মনির মতোই এখনো বিয়ে করেনি। সে এখন মনিকে নিয়ে ব্যাস্ত । মনি বিয়ে করলে ও করবে। কিন্তু মনি ইদানিং একটা সমস্যায় পড়েছে। সেটা হলো‌ রাতে ঘুমাতে পারে না। তার কারণ হলো কিছুদিন আগে তার প্রতিবেশী একজন তার কোম্পানিতে জয়েন করে । তার নাম হলো রাফিদ। অন্য সবার থেকে সে একটু অন্যরকম। এই রাফিদ কিনা ছোট বেলা মনিকে কোমড়ে ঘুষি মারছিলো। এটা মনে হতেই মনির মাথায় রক্ত উঠে যায়। সে জন্য রাফিদকে আচ্ছা মতো ধোলাই দিয়েছে। কিন্তু মারটা একটু বেশিই হয়ে যায়। বেচারা মরতে বসেছিলো । কিন্তু ভাগ্যর বিষয় হলো রাফিদের রক্ত আর মনির শরীরের রক্ত একই। তাই মনি তাড়াতাড়ি এক ব্যাগ রক্ত দেয়। যার জন্য রাফিদ বেচারা বেঁচে যায়। এটা ভেবে খুশি লাগছে মনির মতোই রাফিদকে কানা বানাতে পারলো। মনি জানে রাফিদ আর তার কোম্পানির মুখ দেখবে না। সেসব ভেবে মনির লাভ নেই। আর তাকে সরি বলার কোনো ইচ্ছা নেই মনির। সব কিছুই ঠিক ছিলো সমস্যা হয়েছে রাতে । রাতে ঘুমানোর পর মনি রাফিদ কে নিয়ে সপ্ন দেখে । দেখে রাফিদ সেই রক্তাক্ত মুখ নিয়ে মনির পাশে শুয়ে আছে । দেখে তার মুখ থেকে টপ টপিয়ে রক্ত পড়ছে ।
দেখে রাফিদ মনির আরো কাছে চলে এসেছে । এসে মনিকে জড়িয়ে ধরলো । তার নাক মুখ থেকে যে রক্ত গুলো পড়ছে সেগুলো মনির মুখে পড়ছে। মনি চিৎকার দিয়ে ঘুম থেকে উঠে যায় । উঠে তাড়াতাড়ি এক গ্লাস পানি খায় । মনি এমন সপ্নের কথা মনে হলেই শরীর কাঁটা দিয়ে ওঠে। ওই দিন রাতেই আর মনি ঘুমায়নি। পরদিন অফিসের কাজ শেষ করে অনেক রাতে আসলো মনি । প্রচন্ড ঘুমে ধরছিলো।
তাই ফ্রেস না হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুমের মধ্যে আবার দেখতে থাকে মনি। রাফিদের সেই রক্তাক্ত মুখ নাক দিয়ে টপটপিয়ে রক্ত পড়ছে এক চোখ বন্ধ । দেখে হেঁটে তার খাটের কাছে আসলো এসে মনির পাশে শুয়ে পড়লো শুয়ে মনির ঠোঁটের কাছে মুখ নিতে থাকে। একেবারে যখন ঠোঁটের কাছে মুখ চলে আসে তখন মনির ঘুম ভেঙ্গে যায় । এই এসির মধ্যই মনির শরীর দিয়ে টপটপিয়ে ঘাম বের হচ্ছে। মনি বুঝতে পারছে না এসব কি হচ্ছে মনির সাথে ।‌ শুধু রাফিদ কেনো আসবে তার সপ্নে। মনি বুঝতে পারছে রাফিদের সাথে অন্যায় করছে। সে জন্য সপ্নে আসছে রাফিদ বার বার। আচ্ছা যদি রাফিদের কাছে ক্ষমা চায় তাহলে বোধহয় আর আসবেনা রাফিদ সপ্নের মধ্যে। আচ্ছা আসুক ভালো কথা কিন্তু এভাবে রক্তাক্ত মুখ নিয়ে আসলে কে ভয় না পাবে। আবার আসে আমাকে কিস করতে কতো বড় সাহস। মনি গিয়ে ফ্রেস হলো। ঘুমানোর কোনো ইচ্ছায় নেই মনির। ঘুমালে যদি আবার ঐ সপ্ন দেখে ।
মনি সারা রাত কোম্পানির কাজ নিয়ে শেষ করে ফেললো । যদিও শেষ রাতে ঘুমিয়ে যায়। সকালে ঘুম থেকে উঠে মনের মুখটা দেখার মতো ছিলো। দুই চোখ লাল । গাল গুলো ফুলা ফুলা। সারা মনির এমন অবস্থা দেখে । অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো।

সারা: ম্যাডাম আপনি কি রাতে ঘুমান নাই?

মনি: কেনো?

সারা: আপনার চোখ এমন কেনো? চোখ দুটো লাল হয়ে আছে।

মনি: তেমন কিছু না। রাতে অফিসের কাজ নিয়ে একটু ব্যাস্ত ছিলাম।

__সারা অবাক হয়ে বললো

সারা: ওহ।

মনি: মনে হয় রাফিদকে একটু বেশিই মেরে ফেলছি।

__মনির মুখে রাফিদের কথা শুনে । সারা যেনো
আকাশ থেকে পড়লো। বললো

সারা: জী ম্যাডাম একটু বেশিই মেরে ফেলেছেন।

মনি: আমার কি তার কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। আচ্ছা তুই কি রাফিদের লোকেশন বের করতে পারবি।

সারা: জী ম্যাডাম । আর আমার মনে হয় তার প্রয়োজন নেই।

মনি: ওহ।

সারা: আপনার যদি শুধু রাফিদের ঐ ঘটনার কথা মনে পড়ে । তাহলে আপনি মি: আজিমের সাথে ভালো একটা সময় কাটাতে পারেন।

মনি: একদম ঠিক বলেছত। এক্ষুনি মি: আজিমকে ফোন কর বল । তার সাথে আজকে দেখা করবো।

সারা: ওকে। ম্যাডাম তাড়াতাড়ি একটা বিয়ে করেননা । আমারওতো বিয়ে করতে মনে চায় ।

মনি: সারা তুই প্রতিশ্রুতি দিয়ে কি বিপদে পড়ছত দেখছত। এর চেয়ে ভালো তুই প্রতিশ্রুতি উঠিয়ে নে।

সারা: এখন আপাতত থাক। মনের মতো কাওকে পেলে উঠিয়ে নিবো।

মনি: তর আবার পছন্দের বাকি আছে।

সারা: ওকে।

__সারা আর মনি অফিসে গেলো। অফিসে সারাটা দিন ঘুমিয়ে কাটালো। রাতে মি: আজিমের সাথে দেখা করলো। মি: আজিমের সাথে ভালো একটা মুহূর্ত কাটালো। রাতে বাসায় ভাবলো মনের মতো করে একটা ঘুম দিবে। শুয়ে সাথে সাথে ঘুমিয়ে গেলো । আবার একি সপ্ন কিন্তু এবার এসে রাফিদ সোজা মনির উপরে উঠে গেলো । আস্তে আস্তে রাফির রক্তাক্ত ঠোঁট মনির ঠোঁটের কাছে আনতে লাগলো আর মাত্র এক ইঞ্চির ব্যাবধান তখনই মনির ঘুম ভেঙ্গে যায় । চোখ খুলে দেখে কেও নাই। মনির শরীর দিয়ে ঘাম বের হচ্ছে। এক গ্লাস পানি খেলো । ঐ দিন রাতেও মনি ঘুমাতে পারলো না। পরদিন সারাকে বললো তার বাসায় থাকতে। মনি ঠিক করলো যদি আজকে রাতেও যদি এই সপ্ন দেখে তাহলে কিছু একটা করবে। মনি ক্লান্ত শরীরটা নিয়ে শুয়ে পড়লো । তিন দিন ধরে মনি ঘুমাতে পারে না। বিছানায় গা এলিয়ে দেওয়ার সাথে সাথে মনি ঘুমিয়ে পড়লো‌ । মনি সপ্ন দেখতে লাগলো । রাফিদের রক্তাক্ত ঠোঁট মনির গোলাপী মিষ্টি দুটি ঠোঁটের থেকে ইঞ্চিখানিক দুরে। মনি অনেকটা যেদের বসেই । রাফিদের রক্তাক্ত ঠোঁটের সাথে নিজের ঠোঁট লাগিয়ে দিলো । অনেকক্ষন মনি রাফিদ কে কিস করলো । কিস করতে যে এতো ভালো লাগে মনি সেটা আগে জানতো না। মনি এখন রাফিদকে ছাড়তে চাচ্ছে না। মনি আস্তে আস্তে রাফিদকে জড়িয়ে ধরলো কিন্তু ততক্ষণে রাফিদ মিলিয়ে গেলো । মনি ঘুম থেকে উঠে সারাকে কল করলো বললো।

মনি: রাফিদের ঠিকানা বের করছস?

সারা: জী ম্যাডাম ।

মনি: এক্ষুনি গাড়ি বের‌ কর? এক্ষুনি রাফিদের বাসায় যাবো।

সারা: ম্যাডাম এখন রাত ১টা বাজে সকালে যাই।

মনি: না এক্ষুনি বের হো।

সারা: ওকে ম্যাডাম।

__সারা গাড়ি নিয়ে বের হলো। মনি গাড়িতে উঠে সোজা রাফিদের বাসার সামনে এসে বললো।

মনি: যা ওরে ধরে নিয়ে আয়।

সারা: ওকে। ।

__সারা গিয়ে দরজায় টোকা দিলো।

__দরজার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম কে?
উপার থেকে একটা মেয়ে কন্ঠ ভেসে আসলো । বুঝলাম এটা সারা ।

সারা: আমি সারা দরজা খুল।

আমি: কেনো আসছেন?

সারা: তুই দরজা খুল পরে বলছি।

আমি: না দরজা খুলবো না। এতো রাতে আমার এখানে কেনো আসছেন। আমাকে মেরে ফেলার চিন্তা করছেন ।

সারা: তেমন কিছু না । ম্যাডাম আসছে তর সাথে কথা বলবে।

আমি: আপনারা দুজন চলে যান। আপনাদের সাথে কোনো কথা নাই। আপনারা দুজন শুধু আমাকে মারতে আসছেন। প্লিজ সারা আমাকে ছেড়ে দেন ।

সারা: ম্যাডাম তর সাথে দেখা করতে আসছে। প্লিজ ম্যাডামকে ফিরিয়ে দিস না।

আমি: আপনাদের কাওকে আমি চিনিনা। চলে যান।

সারা: তুই যদি দরজা না খুলস। নাহলে কিন্তু দরজা ভেঙে ঢুকবো।

__এই বলে দরজায় লাথি দিতে লাগলো। আমি বললাম

আমি: ওকে ম্যাডামকে বলেন আসতে।

সারা: আচ্ছা।

__একটু পর মনি আপুর কন্ঠ শুনতে পারলাম।

মনি আপু: রাফিদ তর সাথে কথা আছে। প্লিজ‌ দরজা খুল।

আমি: ওকে আপু আমমি দরজা খুলছি। যদি কিছু করার চেষ্টা করেন। তাহলে আপনাদের দুজনকেই আমি মেরে ফেলবো।

মনি আপু: আচ্ছা।‌

__আমি হাতের মধ্যে একটা ছুরি নিয়ে দরজা খুললাম। দরজা খুলার সাথে সাথে । সারা আমার হাত থেকে ছুরি কেড়ে নিলো। আমার টি_শার্টের কলার ধরে । গাড়ির সামনে নিয়ে গেলো । গাড়ির দরজা খুলে আমাকে গাড়ির ভিতর ঢুকিয়ে দিলো। দেখি আমার পাশে মনি আপু বসে আছে।

চলবে…..

#নাম: সিনিয়র বস
#পার্ট: ৮
#লেখক: Osman

__আমি হাতের মধ্যে একটা ছুরি নিয়ে দরজা খুললাম। দরজা খুলার সাথে সাথে । সারা আমার হাত থেকে ছুরি কেড়ে নিলো। আমার টি_শার্টের কলার ধরে । গাড়ির সামনে নিয়ে গেলো । গাড়ির দরজা খুলে আমাকে গাড়ির ভিতর ঢুকিয়ে দিলো। দেখি আমার পাশে মনি আপু বসে আছে। মনি আপু বললো।

মনি: অফিসে যাস না কেনো?

আমি: আর আর আপনার কোম্পানীতে চাকরি করবো না।

মনি: দেখ তকে আমি এভাবে এসে বলতাছি এটা তর সৌভাগ্য ।

আমি: লাগবে না আমার সৌভাগ্য। আপনি চলে যান।

মনি: সরি আমি অত্যান্ত দুঃখিতো। তর সাথে এমন করার জন্য।

__মনি আপুর মুখ থেকে সরি শুনে নিজেকে অন্যরকম মনে হচ্ছে। আমি ভাবলাম মনি আপু টাকার পিছনে ছুটে শুধু। আসলে কি জানেন? প্রত্যাকটা মানুষেরই একটা মন থাকে এই অতিরিক্ত রাগের কারনে মানুষ সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। সময় ফুরিয়ে গেলে সঠিক সিদ্ধান্ত মাথায় আসে। তখন যদি সে সেটা সমাধান করে। সেটা হলো বুদ্ধিমানের কাজ । মনি আপু সেটাই করছে।

আমি: ইটস ওকে। নো প্রবলেম।

__বললাম মুখে হাসি টেনে। মনি আপু আমার মোবাইল দিয়ে বললো

মনি: এই নে তর মোবাইল।

আমি: ধন্যবাদ।

মনি: আগামীকাল থেকে অফিসে জয়েন কর।

আমি: ওকে। কিন্তু আপু সারাকে বলেন। আমার সাথে ভালো ব্যাবহার করতে।

মনি: আচ্ছা বলবো।

__আমি মনি আপুর মুখের দিকে তাকালাম। দেখি চোখে দুটো চশমা। চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে। বুঝতে পারলাম না কেনো? কেঁদেছে অনেক । আমার তা মনে হয় না। মনি আপুর হাত থেকে মোবাইল নেওয়ার জন্য হাত বাড়ালাম। মোবাইল নেওয়ার সময় মনির হাতের সাথে আমার হাত লেগে যায়। আমি তার হাতটা অনুভব করলাম। আমি হাতের তুলনায় মনি আপুর হাতটা অনেক উশ্ন । নিজের শরীরের মধ্যে বিদ্যুৎ খেলে গেলো। আমি বললাম।

আমি: আমি যাই।

মনি: ওকে যা। আগামীকাল তকে যেনো অফিসে দেখতে পাই।

আমি: জী আপু।

মনি: অফিসের মধ্যে কিন্তু আপু ডাকিস না ।

আমি: ওকে।

__আমি চলে আসলাম। গাড়ির আওয়াজ শুনলাম। তারা চলে গেছে। আমি ভাবতে লাগলাম। মনি আপু মনে হয় আমাকে একটু বেশিই কেয়ার করছে। তার কি কোনো কারন আছে। নাকি আবার নতুন কিছু করার ফন্দি করছে। কেনো জানি মনি আপুর জন্য মনের ভিতর নতুন একটা ফিলিংস‌ কাজ করছে। ফিলিংস কাজ করলে কি লাভ হবে। আমার সব কিছু ঘিরেই মাকে নিয়ে। মা যেভাবে চায় সবকিছুই সেভাবে হবে। মা যে মেয়েকে বলবে বিয়ে করতে আমি সে মেয়েকে চোখ বুজেই বিয়ে করবো। আমার আব্বা সেই অনেক আগেই মারা গেছে যখন আমার পনেরো বছর আর এখন 23 চলে মানে আট বছর আগে আমার পিতা মারা গেছে। আট বছরে মা আমাকে তিল তিল করে বড় করেছে। কোনো কিছুর অভাব হতে দেয়নি। যে সময় যেটা চেয়েছি। সে সময় সেটা দিয়েছে। এখন কোনো কিছুর জন্য আমি মাকে কষ্ট দিতে চাইনা। আর কোথায় মনি আপু আর আমি। আমি কি চিন্তা করছি। এখন যেহেতু মনি আপু রাত ১টা সময় এসে বলে গেছে তার কোম্পানিতে জয়েন করতে। তাহলে অবশ্যই আমি জয়েন করবো। আমি পরদিন অফিসে হাজির হলাম। গিয়ে আমার কাজে মনোযোগ দিলাম। কাজ করতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পর খেয়াল করলাম কে জানি মোবাইল এ কল দিলো। আমি চিন্তে পারলাম এটা রাহাত।

আমি: রাহাত কি খবর? কেমন আছোস?

রাহাত: ভালো। মামা তুই কোথায় জানি চাকরি করস।

আমি: জেনি ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড।

রাহাত: এটা কোথায়?

__আমি যায়গার ঠিকানা বললাম।

রাহাত: সেই যায়গার আশেপাশে একটা কোম্পানিতে আমি আজ চাকরির ইন্টারভিউ দিতে আসবো। আমি কি এক রাত থাকতে পারবো তর সাথে

আমি: অবশ্যই।

রাহাত: আমি আগামীকাল আসছি।

আমি: ওকে এসে কল দিস।

রাহাত: আচ্ছা।

__আমি রাহাতের ফোন কেটে দিলাম। ভাবলাম একটা কফি খাওয়া যাক। অফিসের মধ্যে কফি বানানোর মেশিন আছে। যে যার মন ইচ্ছা মতো কফি বানিয়ে খেতে পারে। আমি কফির মেশিনের কাছে গিয়ে কফি বানাতে লাগলাম। এক মেয়ে এসে বললো।

মেয়ে: একটু তাড়াতাড়ি করেন? আমার কাজ আছে।

আমি: আমিতো আর মেশিন না । আপনি মেশিনকে বলেন তাড়াতাড়ি করতে।

মেয়ে: না আপনিই তাড়াতাড়ি করেন।

আমি: আচ্ছা দাঁড়ান আমারটা আপনি নিয়ে যান।

মেয়ে: আপনি কি সোগার বেশি খান?

আমি: হুম।

মেয়ে: আমি কম খাই ওকে। এখন তাড়াতাড়ি করেন।

__এই বলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে। নিজে যায়গা দখল করে নিলো। আমি এতক্ষন মেয়েটার দিকে না তাকিয়ে কথা বলছিলাম । তাকিয়ে দেখি সারা। আমি ভাবলাম সারা ছাড়া এই কাজ আর কেইবা করতে পারে। ও কন্ঠস্বর চেঞ্জ করে এমন করছে। আমি বুঝলাম এটা ইচ্ছেকৃত আমি বললাম।

আমি: এটা কি করলেন?

__সারা হাঁসি দিয়ে বললো

সারা: মজা করলাম। এই নে তর কফি ।

__আমি কফি হাতে নিলাম সারা বললো।

সারা: আচ্ছা তুই কি ভাব একটু কম ধরে অফিসে আসতে পারস না। এমন ভাব ধরে আসছ যেনো তুই অফিসের বস আর আমরা কর্মচারী।

আমি: কই আমি ভাব ধরলাম।

সারা: আবারো ভাব ধরিস।

আমি: আবার কোথায় ভাব ধরলাম?

সারা: আবারো।

আমি: রাখেন আপনার ভাব আমি গেলাম।

__এই বলে আমি হাঁটা ধরলাম। কি ভেবে যেনো পিছনে তাকালাম । পিছনে তাকিয়ে দূই পা আগালাম। সামনে কার সাথে যেনো ধাক্কা খেলাম। ধাক্কা খেয়ে আমার হাতের গরম কফি উনার শরীরে পড়ে গেলো। উনি হকচকিয়ে উঠে আমাকে কষে একটা চড় দিলেন। আমার চশমা পড়ে গেলো। আমি চশমা চোখে দিয়ে বললাম।

আমি: সরি‌ স্যার সরি স্যার।

স্যার: চুপ বেয়াদব। দেখেশুনে হাঁটতে পারিস না।

আমি: সরি স্যার‌ আমারি ভুল।

স্যার: ভুলতো‌ তরি।

__এই‌ বলে তিনি তার শরীর থেকে শার্ট খুলে ফেললেন। দেখি উনার‌ সিক্স প্যাক‌ সেই লেভেলের বডি। অফিসের সকল মেয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইলো। কারণ হ্যান্ডসাম ছেলে । সিক্স পেক। আমিও একটা সময় সিক্স প্যাকের ট্রাই করেছিলাম। পরে অলসতার জন্য আর করা হয়নি। সারা এসে বললো

সারা: সরি সরি স্যার কিছু মনে করবেন না ।

স্যার: কেনো কিছু মনে করবো না। সেতো ইচ্ছা করেই আমার শরীরে কফি ঢেলে দিলো।

সারা: সরি স্যার। এই তুই দেখে চলতে পারস না। থাবড়াইয়া দাঁত সবগুলো ফেলে দিবো। ঠিক মতো কাজ করবি নাতো চলে যাবি।

আমি: সরি ম্যাডাম।

সারা: আবার আমাকে সরি বলস। স্যারকে বল।

আমি: সরি স্যার ।

__দেখি তার বডিগার্ড গুলো আইসা তাকে নতুন পোশাক পড়িয়ে দিলো। আমি আমার অফিসে চলে আসি। দোষটা আমার ছিলো সেটা আমি মানলাম। কিন্তু সারা আমাকে কি অপমানটাই না করলো। উনি নিশ্চয় বড় কোনো ব্যাক্তি হবে। সে জন্য সারা তাকে স্যার স্যার বলতাছে। কিছুক্ষণ পর সারা আসলো। আমার এখানে বললো।

সারা: সরিরে তরে অনেক অপমান করছি। কিছু মনে করিস না। উনি আমাদের বিজনেস পার্টনার। ওনাকে ম্যাডামো খুব সম্মান করে। সে জন্য সাথে এমন করছি। কিছু মনে করিস না।

আমি: ওকে সমস্যা নেই। দোষটা আমার ছিলো।‌

সারা: জানি তরে চড় মারছে। কিছু মনে করিস না।
আসলে উনি এমনই।

আমি: সমস্যা নেই। এসবের সাথে আমার অভ্যাস হয়ে গেছে। ঐদিন মনি আপু মারলো আজকে এক অচেনা ব্যাক্তি এসে মারলো। পরদিন আপনি মারবেন এরপরে অফিসের সবাই আমার শরীরে হাত উঠাবে।

সারা: আমি থাকতে এই অফিসের কেও তর শরীরে ফুলের টোকাও দিতে পারবে না।

আমি: এটা যদি মনি আপু বলতো। তাহলে বিশ্বাস করতাম ‌।‌

সারা: তুই আমাকে বিশ্বাস করিস না।

আমি: না করি না।

সারা: শুন ঐ লোকটার সাথে বেশি ঝামেলা করিস না। উনি ম্যাডামের বয়ফ্রেন্ড । উনার যদি কিছু করস ম্যাডাম তকে মেরে ফেলবে। আর তুইতো জানিস ম্যাডাম যেই দিকে আমি সেদিকে ‌।

আমি: মনে হয় না । এই অফিসে বেশিদিন টিকতে পারবো।

সারা: পারবি পারবি । আস্তে আস্তে অভ্যাস হয়ে যাবে।

আমি: সেটা আপনি ঠিক বলেছেন। একটা প্রশ্ন করি

সারা: কর।

আমি: ম্যাডামকে আপনি কি রকম চোখে দেখেন?

সারা: আমার কাছে ম্যাডামকে খুব ভালো লাগে। উনি আমার সকল সমস্যা বোঝে। আমিতো নিয়ত করেই ফেলছি ম্যাডামের বিয়ের পর আমি বিবাহ করবো। আর মনে হয় শীঘ্রই বিয়ে করে ফেলবে উনাকে।

আমি: ওহ ভালো। আপনি কাকে বিয়ে করবেন। আপনাকেতো কেও পছন্দ করবে না।

__বললাম মুখে হাসি টেনে

সারা: আমাকে বিয়ে করবেনা এরকম মানুষের অভাব।

আমি: হুম ‌অভাব। যদি আমাকে বলেন তাহলে আমিই রাজি হবো না।

সারা: তুই রাজি না হলে । তরে কিডন্যাপ করে বিয়ে করবো।

আমি: কতো শখ।

সারা: শখেইতো আল্লাহ আল্লাহ কর যাতে কেও আমাকে পছন্দ করে। পছন্দ করলে তুই বেঁচে যাবি।
নাহলে তর খবর আছে।

আমি: সেটা দেখা যাবে।

সারা: আমি যাই ‌।

আমি: ওকে।

__আমি আর কিছুক্ষন অফিসে থেকে । রুমে চলে আসলাম। পরদিন রাহাত আসলো। সে গিয়ে তার কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিলো। ইন্টারভিউ দিয়ে এসে বললো খুব ভালো হয়েছে রাহাত বললো।

রাহাত: দোস্ত আমি মনে হয় চাকরিটা পেয়ে গেছি। এখন বাড়ি চলে যাই। কোম্পানি থেকে মনে হয় দুই একদিনের ভিতর কল আসবে। তখন একেবারে ঢাকা চলে আসবো। তর এখানে থাকার ব্যাবস্থা আছে না।

আমি: আছে । আজকে থাইকা যা।

রাহাত: থাকলেই দেরি হয়ে যাবে আমি গেলাম।

আমি: ওকে। ফোন দিস।

রাহাত: আচ্ছা।

__রাহাত চলে গেলো । রাহাত আসলে ভালই হবে। দুইজন একসাথে মজা করতে‌ পারবো। তিন দিন পর রাহাত আসলো । এসে কোম্পানিতে জয়েন করলো।
এভাবে এক মাস চলে যায়।

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here