সিনিয়র বস #পার্ট: ১১,১২

0
1164

#নাম: সিনিয়র বস
#পার্ট: ১১,১২
#লেখক: Osman
পার্ট: ১১

__আমি বাসায় চলে আসলাম। সবাই চলে গেলো। এই পুরো বাড়িতে আমি এখন একা। আপনার বুঝতেই পারছেন আমার মনের অবস্থা। মনটা খুব খারাপ। মার প্রত্যাকটা কথা মনে হচ্ছে। আর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। আমি আমাদের ক্ষেতটুকু ডগি দিয়ে দিলাম কারন আমি চলে গেলে ক্ষেত দেখার কেও নেই। (ডগি মানে হলো দুই অথবা এক বছরের একটা চুক্তি । কিছুটাকার বিনিময়ে আমি আমাদের ক্ষেতটুকু তাকে দিয়ে দিলাম। মানে দুই বছরের জন্য ক্ষেতটা তার )। আমি পরদিন বাড়িটা পরিস্কার করে।
বিছানা উল্টিয়ে সবকিছু কাপড় দিয়ে ডেকে দিলাম। বাড়িতে তালা দিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম আসার সময় মার কবরের পাশে গিয়ে অনেকক্ষন খবর যিয়ারত করলাম। ঢাকায় আসতে আসতে রাত হলো। ঠিক করলাম পরদিন অফিসে যাবো। আমার নিয়ত হলো।‌ দূই থেকে তিনবছর মন দিয়ে কাজ করে কিছু টাকা ইনকাম করে। একেবারে বাড়িতে চলে যাবো। বাড়ির পাশে বাজারে একটা দোকান নিয়ে ব্যাবসা করবো । নিজের পছন্দ মতো একটা বিয়ে করে। মা বাবার কবরের পাশে সারাটা জীবন পার করে দিবো। আমি পরদিন অফিসে গেলাম। মনি আপুর সাথে দেখা করতে হবে। কারণ আমার ওভারটাইম কাজ করা দরকার। অফিসে গিয়ে চুপচাপ বসে রইলাম। কিছুক্ষণ পর সারা আসলো। বললো

সারা: এই নে । এই শার্ট_ টা তর বন্ধু রাহাতকে দিস।

আমি: ওকে।

সারা: তর বন্ধু রাহাত কি‌ করেরে?

আমি: কেনো?

সারা: এমনি।

আমি: তার অজান্তেই আমি কাওকে তার পরিচয় দিতে পারবো না।

সারা: ওকে।

আমি: মনি আপু অফিসে আছে। আমি তার সাথে দেখা করতে পারবো।

সারা: আছে। কিন্তু তিনি এখন দেখা করার অবস্থায় নেই।

আমি: কেনো?

সারা: এখন তিনি তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে একান্তে কথা বলছে সেজন্য।

আমি: ওহ । উনার বয়ফ্রেন্ডের সাথে কথা শেষ হলেই। আমাকে কথা বলার ব্যাবস্থা করে দেন।‌

সারা: দিতে পারি একটা শর্তে।

আমি: কি শর্ত?

সারা: তর বন্ধু রাহাতের নাম্বার লাগবে।

__আমি ভাবলাম সারা নিজেই দেখি রাহাতকে পছন্দ করে। আমি আর রাহাতকে সারাকে কি দেখাবো?কিন্তু আমার মন চাচ্ছে সারার মারামারি দেখতে। বাস্তবে কোনোদিন মেয়েদের মারামারি দেখিনি। রাহাতকে দিয়েই ফাঁসাতে হবে। আমি বললাম

আমি: যদি আমাকে মনি আপুর সাথে কথা বলার সুযোগ দেন । তাহলে আমি দিবো।

সারা: ওকে। আমি ফোন দিলে চলে আসিছ।

আমি: ওকে।

,__সারা চলে গেলো। দুই একটা কাজ আসলো। কাজ গুলো করলাম। কিছুক্ষণ পর সারা কল দিয়ে বললো মনি আপুর অফিসে যেতে। আমি মনি আপুর অফিসে গেলাম। গিয়ে দেখি মনি আপু আর সারা বসে আছে। আমি বললাম

আমি: বসতে পারি।

মনি আপু: বস।‌

আমি: ধন্যবাদ।

মনি আপু: কি বলবি বল?

আমি: ম্যাডাম ওভারটাইম কাজ করার কোনো ব্যাবস্থা আছে।

মনি আপু: নাহ এই অফিসে ওভারটাইম এর কোনো ব্যাবস্থা নেই। কিন্তু আমাদের অন্যন্যা শাখা আছে। ঐগুলোতে ওভারটাইম এর ব্যাবস্থা আছে।

আমি: ওহ। দেখেন না ম্যাডাম ওভারটাইম এর কোনো ব্যাবস্থা আছে কিনা।

মনি আপু: সারা ম্যানেজারকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করতো ওভারটাইম হবে কিনা।

সারা: ওভারটাইম থাকলেও তো রাফিদ কে দেওয়া যাবে না। আমাদের অফিসে যারা পুরোনো তারা কানাঘুষা করবে।

মনি আপু: ঠিক। রাফিদ ওভারটাইম নেই। চট্টগ্রাম শাখায় অনেক ওভারটাইম আছে। ঐখানে এখন লোক নেওয়া হচ্ছে। তুই চাইলে সেখানে ট্রান্সফার করে দিতে পারি।

সারা: রাফিদ ওভারটাইম দিয়ে কি করবে? আর ওভারটাইম এ তো বেশি টাকা পাবি না। তারতো কোনো বাড়িওয়ালা নেই।

আমি: বাড়িওয়ালা হতে কতক্ষন।

__আমার এই কথা শুনে মনি আপু আর সারা হাসতে লাগলো। মনি আপু বললো

মনি আপু: আচ্ছা আচ্ছা। তকে চট্টগ্রামে ট্রান্সফার করে দিচ্ছি। তূই রাজি।

__আমি ভাবলাম। আমার দরকার টাকা এখন যেখানে বলবে সেখানে যাবো। আমি বললাম

আমি: সেখানে কতো টাকা পাবো।

সারা: সেটা তর কাজের উপর নির্ভর করবে।

আমি: ওকে। আমি যাবো।

আমার রাজির কথা শুনে মনি আপু আর সারা অবাক। ভাবছিলো হয়তো আমি মজা করছি। মনি আপু বললো।

মনি আপু: সারা রাফিদ কে ভালো একটা পোষ্টে ঢুকিয়ে দে।

সারা: আচ্ছা দেখছি।

__দেখি সারা কাকে জানি কল দিয়ে কথা বলতে লাগলো। একটু পর বললো

সারা: ম্যাডাম ভালো কোনো পোষ্টে ঢুকানো যাবে না। কারন সে গুলো অলরেডি বুক। আর কাজের দক্ষতা ছাড়া উনি কাওকে ভালো কোনো পোস্টে চাকরি দিবে না।

মনি আপু: বল এটা আমার আদেশ।

সারা: কি করে বলবো? এটাতো আপনারই আদেশ। আপনার আদেশ আপনি নিজেই অমান্য করবেন।

__মনি আপু আমার মুখের দিকে তাকালো মুচকি হাসি দিয়ে বললো

মনি আপু: তুই এখন সিন্ধান্ত নে।

আমি: ম্যাডাম আমি কাজকে সব সময় বড় করে দেখি। যদি ভালো পরিমাণ বেনিফিট পাই । তাহলে আমি যাবো।

মনি আপু: আচ্ছা। সারা আমাদের চট্টগ্রাম যাওয়ার কোনো সিডিউল আছে।

সারা: আছে আগামীকাল।

মনি আপু: আমরা চট্টগ্রাম যাচ্ছি। তুই চাইলে আমাদের সাথে যেতে পারিস।

আমি: ওকে। ধন্যবাদ আমি আগামীকাল তৈরি হয়ে আসবো।

__এই বলে আমি চলে আসলাম বাসায়। এসে রাহাতকে সব বললাম। রাহাত বললো।

রাহাত: তর যেটা ভালো মনে হয় কর। আমি যেখানে আছি সেখানেই থাকবো।

আমি: এই নে তর শার্ট সারা দিয়েছে।

রাহাত: দেখি মামা। আসল কথা জানিস। সারাকে আমার ভালো লাগছে।

আমি: দেখ আমি চট্টগ্রাম চলে যাচ্ছি। সারা কিন্তু অনেক জেদি। কোনো ঝামেলা হলে পরে সামলাতে পারবি কিনা দেখ। শুন আমি তকে একটা গল্প শুনাই।

__আমি তাকে মনি আপুযে আমাকে মার ছিলো সেটা বললাম। রাহাত বললো

রাহাত: তাহলে ভাই আমি নাই। তুই যদি কোনো একটা ব্যাবস্থা করে দিতে পারতি তাহলে আমি কিছু করতাম। এখন তুই চলে যাচ্ছিস আমি আর এগুলোর মধ্যে নেই।

আমি: সেটাই।

রাহাত: কিন্তু তারে যে আমার ভালো লাগে।

আমি: ওয়েট কর । আমিই তকে সুযোগ বের করে দিবো। আমি তাদের কোম্পানির অন্য শাখায় যাচ্ছি। আমিতো আর বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছি না।

রাহাত: ওকে আমি তর মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম। মামা চল না আজ রেষ্টুরেন্ট থেকে খেয়ে আসি।

আমি: আচ্ছা চল ।

__আমি আর রাহাত ভালো একটা রেস্টুরেন্টে গেলাম‌। রাহাত সারার দেওয়া শার্ট টা পড়লো। সারার চয়েস আছে ভালো। রেষ্টুরেন্টে গিয়ে আমরা কিছু পিক তুললাম। খাওয়া দাওয়া করে বাসায় চলে আসলাম। পরদিন প্রয়োজনীয় সব কিছু নিয়ে । সারার দেওয়া লোকেশনে গিয়ে হাজির হলাম। দেখি মনি আপু একটা যা ড্রেস পড়ছে তাকাতেই লজ্জা করছে। টাইট প্যান্ট মেচিং করা শার্ট। চোখে চশমা। সারারো একি ভাব। আমি সারার কাছে গিয়ে বললাম।

আমি: আপনি যে পোশাক পড়ছেন। রাহাত সেটা কোনো ভাবেই পছন্দ করবে না।

__সারা ভাব ধরে বললো।

সারা: পছন্দ না করলে করুক। তাতে আমার কি ?
আমি সারাকে গত রাতের রাহাতের একটা পিক ওয়াটসআপে দিলাম। সারা ছবিটা অনেকক্ষন লাগিয়ে দেখলো বললো।

সারা: রাহাত শার্ট পছন্দ করছে। ইয়েস ইয়েস। এই প্রথম মনে হয় কেও আমার পছন্দ করা জিনিস পছন্দ করছে।

আমি: আচ্ছা আমি রাহাতকে বলবো আপনি কেমন। আপনি কেমন পোশাক পড়েন এখানে।

সারা: রাফিদ ভাইয়া তুই না আমার ভাই লাগস। আজকেই শেষ আর পড়বো না। ।

আমি: ওকে।

__মনি আপু এসে বললো।

মনি আপু: রাফিদ গাড়ি চালাতে পারস।

আমি: না।

সারা: গাড়ি আমি চালাবো ওঠেন।

আমি মনি আপুর সাথে পিছনে বসলাম। সারা বলে গাড়ি চালানোর সময় যদি পাশে কোনো পুরুষ মানুষ থাকে। তাহলে সে বলে গাড়ি চালাতে পারে না। যত্তসব ফালতু কথা। আমি গাড়িতে বসে বিভিন্ন ডকুমেন্টরি ভিডিও দেখতাছি। মনি আপু বললো ।

মনি আপু: এটা বন্ধ কর না ভালো লাগছে না। সারা আর কতক্ষন লাগবে।

সারা: আর এক ঘন্টা।

মনি আপু: আমি ঘুমাই‌‌।

__মনি আপু চোখের মধ্যে কাপড় দিয়ে ঘুমাতে লাগলো। কিছুক্ষণ পর আমার কাধে হেলে পড়লো। আমি সারাকে ইশারা দিয়ে বললাম। কি করবো?
সারাও ইশারায় বুঝালো থাক এভাবে থাক। মনি আপুর গরম নিঃশ্বাস আমার ঘাড়ে এসে পড়ছে। আমার ভিতর কেমন শির শির করছে। আমি রোবটের মতো বসে রইলাম। সারা আমার অবস্থা দেখে হাসছে। কিছুক্ষণ এর মধ্যে চট্টগ্রাম তাদের আরেক কোম্পানিতে চলে আসলাম। দেখি ম্যানেজার আরেকটি সুন্দরী মেয়ে মনি আপুদের রিসিভ করছে। মেয়েটাকে আমি চিনেছি। আগে মনে হয় একবার দেখছিলাম। ওনার লেপটপে সমস্যা হয়েছিলো। পরে আমি ঠিক করে দিয়েছিলাম। ম্যানেজার সাহেব মনি আপুদের নিয়ে । মিটিং এ বসলো । অনেকক্ষন মিটিং করলো। মিটিং শেষে আমার সাথে ম্যানেজারের পরিচয় করিয়ে দিলো। মনি আপুরা চলে গেলো । ম্যানেজার সাহেব বললো

ম্যানেজার: তুমি যেহেতু এই পুরো কোম্পানির বসের স্পেশাল গেষ্ট । তাই তোমাকে পার্মানেট কাজ হলো এখানে বসে তুমি বসে থাকবা। অফিসের অকম্প্লিট কাজ গুলো করবা‌। এখানে তুমি 3 ঘন্টা সময় দিবে‌ ।
আর বাকি 3 ঘন্টা হলো তোমার ওভারটাইম।

আমি: ওভারটাইমে আমি কি কাজ করবো?

ম্যানেজার: আসলে কি জানো? আমার মেয়েটা একটু পাগলামো টাইপের। মাঝে মাঝে কি জানি হয়। সব ভেঙ্গে ফেলে। তাই আমি ঠিক করছি তোমার ওভারটাইম হলো আমার মেয়েকে সময় দেওয়া।

__এই বলে কাকে জানি ফোন দিলো বললো আসতে।

ম্যানেজার: আমার মেয়ে আসতাছে।

__একটু পর দেখি । মেয়েটা আসলো। মেয়েটাকে চিন্তে পারছি। তার লেপটপই আমি ঠিক করে দিয়েছিলাম।

Spoiler: (মনি আপু গল্পের নায়িকা)

চলবে….

#নাম: সিনিয়র বস
#পার্ট: ১২
#লেখক: Osman

__একটু পর দেখি । মেয়েটা আসলো। মেয়েটাকে চিন্তে পারছি। তার লেপটপই আমি ঠিক দিয়েছিলাম। ম্যানেজার বললো

ম্যানেজার: এই হলো আমার মেয়ে ইকা । ইকা আজকে থেকে তকে রাফিদ দেখাশোনা করবে।

ইকা: কেনো আমি কি একা চলতে পারিনা। আমাকে দেখা শুনা করার কি আছে?

ম্যানেজার: ইকা তুই আমার এই পর্যন্ত তেরো লক্ষ্য টাকার জিনিস পত্র ভেঙে ফেলেছত শুধু ‌রাগ করে।
এখন বলস তকে দেখাশোনা করার কি আছে?

ম্যানেজার: আজ থেকে রাফিদ কে মেনে চলবি। যা এখান থেকে।

__ইকা চলে গেলো। আমি বললাম

আমি: কিন্তু স্যার যদি ম্যাডাম কিছু বলে।

ম্যানেজার: ওসব তুমি চিন্তা করো না। তোমাকে যেই কাজ দিলাম। সেটা তুমি মন দিয়ে করো।

আমি: ওকে। স্যার আমার বেতনটা যদি বলতেন।

ম্যানেজার: ওভারটাইম এর জন্য বিশ হাজার টাকা।আর অফিসে কাজের জন্য ৩০ হাজার টাকা। মোট ৫০ হাজার টাকা।

আমি: অনেক ধন্যবাদ স্যার।

ম্যানেজার: আর কোম্পানিতে কোয়ার্টার আছে সেখানে তোমার থাকার ব্যাবস্থা করে দিচ্ছি। দয়া করে আমার মেয়েকে একটু দেখে রাখো।

আমি: স্যার বিয়ে দিয়ে দিলেইতো পারেন।

ম্যানেজার: আমার একটা মাত্রই মেয়ে। সে এখন পড়ালেখা করে । পাশাপাশি আমাকে একটু টাইম দেই। সেটা ভেবে দেখেনি। আমি তাকে জিজ্ঞেস করবো।

আমি: ওকে সার।

__আমি রুমটা পেয়ে খুব খুশি হলাম। একা এক রুম। রুমের মধ্যে সকল কিছুর ব্যাবস্থা আছে। এভাবে পনেরো দিন চলে গেলো। ইকা মেয়েটার সাথে খুব ভালই সম্পর্ক হয়েছে। যতই যেদি হোক মনটা একদম ফ্রেশ। কোনো সময় আমাকে অবহেলা করেনি। আমার সাথে খুব রাগ দেখায়। কিছুদিনের মধ্যেই সব কিছুর সাথে মানিয়ে নিলাম। আমার মা বাবার মৃত্যুর খবর শুনে অনেক কেঁদেছে। আমি সেটা বুঝলাম না। আমাকে চিনে না জানে না এরপরেও আমার কষ্টে সেও কেঁদেছে। কেনো জানি ইকার জন্য ভিতরে দুর্বলতা কাজ করে। ইকা সারার বয়সী। মনি আপুর মতো সুন্দরী ফেস কাটিংটা একটু ভিন দেশী মেয়েদের মতো। ইকা ও কেনো জানি আমাকে একটুও বেশি কাছে পেতে চায়। সারাক্ষণ আমার সাথে ঘুরে খায়। এটা সেটা কতো কিছু। একদিন রাতে ঘুমাতে যাবো চট্টগ্রামে আসার ১৫ দিন পর । দেখি রাত ১০টা সময় সারা কল‌ দিয়েছে। আমি ফোন ধরলাম। ওপার থেকে মনি আপুর কন্ঠ ভেসে আসলো।

মনি আপু: কুত্তা তরে ঐখানে আমি ম্যানেজারের মেয়ের সাথে লুতুপুতু করার জন্য পাঠিয়েছি। তরে আমি পাঠাইছি মন দিয়ে কাজ করার জন্য। তুই সেখানে কিনা ইকার সাথে প্রেম করছ। তর‌ চাকরি নট। এক্ষুনি তুই ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে যা।

আমি: ম্যাডাম কথাটা শুনেন। ম্যানেজার ওভারটাইম হিসেবে তার মেয়ের দেখা শুনা করার‌ জন্য বলছে।

মনি আপু: তুই ও কি লুচ্চা তুই রাজি হয়ে গেলে । বাহ মেয়ের দেখাশোনা করার জন্য তুই রাজি হয়ে গেলি। তরতো চরিত্র ভালো না। টাকার নেশায় তুই অন্ধ হয়ে গেছস। এখন আমি দেখবো তুই কিভাবে টাকা ইনকাম করস। তর চাকরি নট।

আমি: প্লিজ ম্যাডাম। আপনি যা বলবেন আমি তাই করবো।

মনি আপু: যদি চাকরি বাঁচাতে চাস। সকালে ঘুম থেকে উঠে যেনো তকে দেখতে পাই।

__এই বলে ফোন কেটে দিলো। আমি আবার ফোন করলাম। সারা ধরলো

আমি: সারা আপনি বলেন। আমি আগামীকাল আসতাছি। এতো রাতে কি করে আসবো?

সারা: ম্যাডাম প্রচন্ড রেগে আছে। আমি কিছু জিজ্ঞেস করতে পারবো না। যা বলছে তাই কর।

আমি: আচ্ছা আমি অফিসে ম্যাডামের সাথে দেখা করবো।

সারা: ম্যাডাম আগামীকাল অফিসে যাবে না। সকালে ম্যাডামের সাথে দেখা কর।

আমি: ওকে‌ ।

__আমি রাতটা কাটিয়ে । খুব সকালে বেরিয়ে পড়লাম। যেহেতু পূর্ব প্রস্তুতি ছিলোনা অনেক কিছুই নিতে পারলাম না। ইকার কাছ থেকেও বিদায় নিতে পারলাম না। সে নিশ্চয় ঘুম থেকে উঠে ফোন করবে।
আমি বাস দিয়ে ঢাকায় আসলাম। আসতে আসতে রৌদ্র উঠে গেছে। মনি আপুর সাথে দেখা করতে হবে। কিন্তু মনি আপুর বাড়িতো চিনি না। আমি সারাকে কল দিলাম। সারা ফোন ধরছে না। মনে হচ্ছে ঘুমাচ্ছে। আমি রুমে গেলাম। রাহাত এসে দরজা খুললো। রাহাত এতো সকালে আমাকে দেখে অবাক। রাহাত আমাকে বললো

রাহাত: এতো সকালে তুই।

আমি: হরে । একটা সমস্যা হয়েছে।

রাহাত: কি সমস্যা?

আমি: পরে বলবো । এখন বেরুতে হবে।

রাহাত: কোথায়?

আমি: মনি আপুর সাথে দেখা করতে হবে। নাহলে আমার চাকরি শেষ।

দেখি সারা কল ব্যাক করলো।

আমি: তাড়াতাড়ি ম্যাডামের বাসার ঠিকানা দেন। আমার এক্ষুনি দেখা করতে হবে।

সারা: আমার ঠেকা পরছে না দিতাম।

আমি: এসব কি বলছেন? ম্যাডামের সাথে দেখা করতে হবে। নাহলে আমার চাকরি শেষ।

সারা: দিতে পারি একটা শর্তে। তর বন্ধু রাহাতের নাম্বার দে।

__আমি মোবাইলটা দুরে নিয়ে রাহাতকে বললাম।

আমি: এটা সারা তর সাথে কথা বলতে চাচ্ছে। শুধু হাই হেলো বল।

__আমি লাউড স্পিকার দিয়ে রাহাতকে মোবাইলটা দিলাম। রাহাত সালাম দিয়ে বললো।

রাহাত: হাই আমি রাহাত কেমন আছেন?

সারা: ভালো আলহামদুলিল্লাহ। আপনি

রাহাত: জী ভালো।‌ ধন্যবাদ আমাকে ঐদিন শার্ট টা দেওয়ার জন্য।

সারা: আপনার পছন্দ হয়েছে।

রাহাত : হুম।

__আমি রাহাতের হাত থেকে মোবাইল নিয়ে। বললাম

আমি: তাড়াতাড়ি ম্যাডামের বাসার ঠিকানা দেন।

সারা: ওকে দিচ্ছি।

__আমি ফোন কেটে দিলাম। দেখি সারা আমাকে ঠিকানা টেক্সট করলো । এটা বলে দিলো। বাসার সামনে গিয়ে ফোন দিতে। নাহলে দারোয়ান ঢুকতে দিবে না। ম্যাডাম কতো তলায়। কতো নাম্বার রুমে থাকে সেটা বলে দিলো। আমি রাহাতের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে। ম্যাডামের বাসার সামনে গেলাম। দারোয়ানের সাথে সারার কথা বলালাম। দারোয়ান ঢুকতে দিলো। আমি বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করলাম। বাড়িটা এতো সুন্দর কল্পনার বাইরে। আমি দ্বিতীয় তলায় বামের রুমটার‌ সামনে গিয়ে ‌। দরজার কড়া নাড়লাম। ভিতর থেকে আওয়াজ আসলো কে?

আমি: ম্যাডাম আমি রাফিদ।

__একটু পর দরজা খুললো। বললো ভিতরে আসতে। দেখি মনি আপু । একটা হাতাকাটা গেঞ্জি আর লেহেঙ্গা পড়ে‌ বসে আছে। মনি আপুর বুকের উরু দুটো স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। চুল গুলো খুলা এলোমেলো হয়ে আছে এটাই মনে হয় স্টাইল। আমি মনি আপুকে এমন অবস্থায় দেখবো কল্পনাও করিনি। আমি লজ্জায় মাথা নিচু করলাম। মনি আপু বললো

মনি আপু: তর চাকরি নট। এইখানে সাইন কর। আর আমার চোখের সামনে থেকে ভাগ ।

আমি: ম্যাডাম আমিতো ঠিক টাইমেই আসলাম।

মনি আপু: তাতে আমার কিছু যায় আসেনা।

আমি: প্লিজ ম্যাডাম আমার সাথে এরকম করবেন না। আমি আপনার সব কথা মেনে চলবো।

মনি আপু: রাখ তর মিষ্টি মিষ্টি কথা। আর কোনো কথা বলবি না।

আমি: ওকে ম্যাডাম।

__এমন সময় দেখি ইকা কল দিলো। আমি ফোন কেটে দিলাম। একটু পর আবার কল দিলো। আমি কাটতে যাবো মনি আপু বললো

মনি আপু: কে?

আমি: ইকা।

মনি আপু: ফোন ধর । দিয়ে লাউড স্পিকার দে?

__আমি ফোন ধরে লাউড স্পিকার দিলাম। ইকা বললো

ইকা: কিরে ফোন ধরিস না কেনো?

আমি: ব্যাস্ত ছিলাম।

ইকা: ওহ। আজকে এখন একটু দেখা করতে পারবি। আজকে শপিং এ যাবো।

আমি: আসলে হয়েছে কি….

মনি আপু: ইকা আমি তোমাদের ম্যাডাম মনি আপু। রাফিদ কে সেখান থেকে ট্রান্সফার করে ঢাকায় নিয়ে আসছি। চট্টগ্রাম সে আর যাবে না।

ইকা: ম্যাডাম কেমন আছেন?

মনি আপু: ভালো ।‌ আর শুনো রাফিদ কে আর ফোন দিবা না।

ইকা: জী ম্যাডাম।

__মনি আপু ফোন কেটে দিলো। বললো

মনি আপু: এক্ষুনি নাম্বার ব্লক মার।

আমি: জী ম্যাডাম।

__একটু পর কাজের মেয়ে এসে কফি দিয়ে গেলো। মনি আপু কফি খাওয়া শুরু করলো। কাজের মেয়ে বললো

কাজের মেয়ে: ম্যাডাম আরেকটা নিয়ে আসবো।

মনি আপু: না।

কাজের মেয়ে: ম্যাডাম নাস্তা রেডি আছে।

মনি আপু: নাস্তা এখানে নিয়ে আয়।

কাজের মেয়ে: জী ম্যাডাম।

__কাজের মেয়ে চলে গেলো । একটু পর কাজের মেয়ে এসে নাস্তা দিয়ে গেলো। মনি আপু খেতে শুরু করলো। আমি মাথা নিচু করে বসে আছি। কি আজব মেয়েরে বাবা একা একা খাচ্ছে একবার আমাকে জিজ্ঞেসও করলো না। আমি বললাম

আমি: ম্যাডাম আমি যাই।

মনি আপু: নাহ বস।

আমি: ওকে।

__মনি আপু একা একা খেলো। একটি বারো জিজ্ঞেস করলো না। এদিকে আমি সেই রাতে খেয়েছিলাম এখন সকাল ১০টা বাজে একটু পানি পড়ে নাই পেটে খিদায় পেট ঘুরতাছে। আমি বিরক্ত হয়ে বললাম

আমি: ম্যাডাম আমি বাসা থেকে ফ্রেশ হয়ে আসি।

মনি আপু: না ।

আমি: প্লিজ ম্যাডাম আমাকে আর একটা সুযোগ দেন। এবার যদি কোনো ভুল হয়। আমি নিজেই চলে যাবো।

মনি আপু: সত্যি।

আমি: হুম। এখন যাই।

মনি আপু: তর জন্য নাস্তা অর্ডার দিয়েছিলাম। খেয়ে যা।

আমি: না আপু আমি এখনো ফ্রেশ হয়নি। আমি বাসায় যাবো।

মনি আপু: ওকে। আগামীকাল অফিসে দেখা করিস।
আমি বাসায় চলে আসলাম।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here