সিনিয়র বস #পার্ট: ১৫,১৬

0
1228

#নাম: সিনিয়র বস
#পার্ট: ১৫,১৬
#লেখক: Osman
#পার্ট: ১৫

__আমি ম্যানেজার রুমে গেলাম। ম্যানেজার কিছুটা মনি আপুর বাবার বয়সি। কোম্পানির সবকিছু উনিই সামলায়। মনি আপু শুধু মাসে মাসে হিসেব নেই। আমি ম্যানেজার এর কাছে গিয়ে সালাম দিলাম। আমি বললাম

আমি: স্যার আমাকে সারা পাঠিয়েছে।

__ম্যানেজার এর নাম রশিদ।

রশিদ: তুমিই আসছো। আসলে তেমন কোনো কাজ নেই। আজকে একটু পর আমার ছেলে রিফাত কানাডা থেকে আসবে। ভাবলাম তুমিই যেহেতু অবসর আছো। তুমিই গিয়ে তাকে ড্রপ করো। কোনো সমস্যা আছে?

আমি: না। কখন আসবে?

রশিদ: এই একঘন্টার ভিতরে নামবে। এই যে আমার ছেলের ছবি এই নাম্বার ফোন দিলেই পেয়ে যাবে । তাকে সোজা বাসায় নিয়ে যাবে। ড্রাইবারকে বললে নিয়ে যাবে। আসলে আমি একটু ব্যাস্ত। আজকে ম্যাডামের সাথে একটা মিটিং আছে‌।

আমি: প্রোবলেম নেই।

রশিদ: এক্ষুনি বেরিয়ে পড়ো। রাস্তায় আবার জ্যাম থাকতে পারে।

আমি: ওকে।

__আমি ম্যানেজারের অফিস থেকে বের হয়ে। ম্যানেজারের গাড়ি নিয়ে সোজা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম। একঘন্টা পরে ফোন দিলাম। ফোন ধরলো।

আমি: রিফাত ভাই আমি আপনাকে ড্রপ করতে আসছি। আপনি এখন কোথায়?

রিফাত: আমি বিশ মিনিটের ভিতরে টার্মিনাল এক এ আসছি।

আমি: ওকে।

__বিশ মিনিট পর আমরা টার্মিনাল এক এ প্রবেশ করলাম। দেখি রিফাত দাঁড়িয়ে আছে। আমি দেখেই চিনতে পারলাম। আমি গিয়ে বললাম

আমি: হ্যালো আপনি রিফাত?

রিফাত: ইয়েস।

__আমরা দুজন হ্যান্ডশ্যাক করলাম। আমি তার ব্যাগ গুলো গাড়িতে ওঠালাম। আমরা গাড়িতে বসলাম। ড্রাইবারকে বললাম। ম্যানেজারের বাড়িতে যেতে। রাস্তায় রিফাত বললো। রিফাতকে মোটামুটি বয়স্ক মনে হলো । আনুমানিক ২৫+ হতে পারে। তার শরীর দেখেই বোঝা যায় জিম করে সেই লেভেলের বডি। এরকম বডি ১০০ তে একজন ‌। রিফাত বললো।

রিফাত: তুমি কি আমাদের কোম্পানির নতুন কর্মচারী।

আমি: হুম।

রিফাত: তুমিই কি আমাদের বসের প্রতিবেশি। কিছুদিন আগেই তোমার মা মারা গেছে। তাই না
আমি: হুম।

__উনি থাকেতেন কানাডা । আমার সম্পর্কে এতো কিছু জানে কি করে? তাহলে কি আমার সব খবর তার কাছে কেউ পাচার করে। কে হতে পারে? একজন আছে সেটা সারা হতে পারে। ভাবলাম রাহাতকে দিয়েই জিজ্ঞেস করাবো। রাহাতের সাথেই মিথ্যা কথা বলবে না ছাড়া আমি কিছুটা অবাক হলাম। আমরা কিছুক্ষণের মধ্যেই ম্যানেজারের বাড়িতে পৌঁছে গেলাম। সব কিছু নামিয়ে গাড়ি নিয়ে অফিসে চলে আসলাম। অফিসে কিছুক্ষণ বসে রইলাম। একটু পর সারা আসলো। বললো

সারা: ম্যানেজার তকে কি কাজ দিলো?

আমি: উনার ছেলে আসছে কানাডা থেকে তাকে গিয়ে ড্রপ করলাম।

__ম্যানেজারের ছেলের কথা শুনেই সারার মুখটা কালো‌ হয়ে গেলো। বললো

সারা: তাড়াতাড়ি গিয়ে ম্যাডামকে খবর দেই। উনি যে আসবে কাওকে বলে নাই।

__এই বলে সারা চলে গেলো। আমি কিছুক্ষণ পর রাহাতকে কল দিলাম ‌। রাহাত কল ধরলো
আমি বললাম

আমি: শুন তকে সারাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করতে হবে।

রাহাত: কি কথা?

আমি: আমাদের কোম্পানির ম্যানেজার এর‌ ছেলে আসছে কানাডা থেকে। সে আমার সম্পর্কে সব কিছু জানে ‌। এখন তুই সারাকে জিজ্ঞেস করবি তিনি কিভাবে আমার সম্পর্কে জানছে। কে বলছে?

রাহাত: তুই জিজ্ঞেস কর না।

আমি: আমাকে সত্যি কথা নাও বলতে পারে কিন্তু তকে সত্যি কথা বলবে।

রাহাত: আচ্ছা আমি এখন ব্যাস্ত আছি। অবসর হয়ে আমি জিজ্ঞেস করছি।

আমি: ওকে।

__অফিসে দুই একটা কাজ আসছে সেগুলো করলাম। একটু পর মনি আপু কল দিলো। বললো তার অফিসে যেতে। আমি মনির অফিসে গেলাম। গেলে মনি আপু বললো

মনি: ম্যানেজারের ছেলে কিন্তু একটা পাগল। সব সময় এর থেকে দূরে থাকবি।

আমি: আপনি ভয় পান নাকি?

মনি: না ‌। নয়তলায় যাবি।

আমি: কেনো?

মনি: এমনি একটু ঘুরে আসি। রিফাত এই নয়তলার কথা সে জানে না। তাই চল সে আসার আগে ঘুরে আসি।

আমি: সারাকে নিয়ে যান।

মনি: তুই হয়তো নিয়ম জানিস না। নয়তলায় যাওয়ার নিয়ম হলো। যদি তিনজন সদস্য হয়ে থাকে। তাহলে সর্বোচ্চ দুইজন নয়তলায় যেতে পারবে। যদি তিনজন সদস্য লিফটে ওঠি । তাহলে লিফট নিচে নামবে না। মানে একজনকে উপরে থাকতে হবে। আর এই দেখ আমার মোবাইল তেসলা মোবাইল। এটা মাটির তলা থেকেও নেট পায়। আমার আর সারার মোবাইল। (তেসলা মোবাইল এটা এখনো বাজারে আসে নাই । খুব শীঘ্রই বাজারে আসছে। এই মোবাইল তৈরির মালিক হলো স্পেসএক্স এর মালিক এলন মাস্ক। এর মূল্য আইফোন ১৩ এর ডাবল হতে পারে। )

আমি: ওকে। কিন্তু সেখানে গিয়ে কি করবো?
সেখানে তো কিছুই নেই। খালি কয়েকটি মনিটর ‌। কয়টা সোফা আর একটা খাট।

মনি: আয় তো। অনেক কিছুই আছে।

আমি: ওকে।

__মনি আপু আজকে পশ্চিমা ড্রেস বাদ দিয়ে বাঙালি পোশাক পড়ছে শাড়ি। এতো সুন্দরী লাগছে বলার বাইরে। এখন সত্যি কারের একজন ব্যাজনেস ম্যান মনে হচ্ছে। একটা গোলাপী শাড়ি ম্যাচিং করা হাতাকাটা ব্লাউজ। আর গলায় একটা হিরার নেকলেস। গলার দিকে তাকাতেই আমার শরীর নাড়া দিয়ে ওঠে। আবার দুইজন যাচ্ছি মাটির নয় তলা নিচে। না জানি আবার সেখানে কি হয় ? আমরা দুজন লিফটে উঠলাম। মনি আপুর কার্ড স্ক্যান করালো। কি যেনো টিপলো তারপর নিজের ফ্রিন্গার প্রিন্ট দিলো । বললো

মনি: এখানে ফ্রিন্গার প্রিন্ট দে ।

__আমি দিলাম। মনি আপু বললো

মনি: এদিকে আয় ‌। আরো কাছে আয় । একেবারে আমার সাথে লেগে দাঁড়া।

__আমি মনি আপুর সাথে দাঁড়ালাম। মনি বললো

মনি: আরো কাছে আয় একেবারে লেগে দাঁড়া। দুজনের মুখ স্ক্যান করতে হবে।

__আমি মনি আপুর সাথে লেগে দাঁড়ালাম। মনি আপুর শরীর থেকে একটা পারফিউমের গন্ধ বের হচ্ছে। যেটা এতো ভালো লাগছে বলার বাইরে ‌। মন চাচ্ছে জড়িয়ে ধরে মনের ইচ্ছা মতো পারফিউমের গন্ধটা নিতাম। আমি ভাবলাম যেহেতু সুযোগ আসছে মিস করে লাভ নেই। আমি আরো শরীরের সাথে লেগে দাঁড়ালাম । একটা হাত নিয়ে মনি আপুর কোমড়ের খালি জায়গায় ধরলাম। ধরে আমি মনি আপুকে নিজের আরো কাছে আনলাম ‌। আমার হাতের ঠান্ডা নরম হাতের ছোঁয়ায় মনি আপু কেঁপে উঠলো । মনি আপুর ঐ যায়গাটা খুব নরম আর খুব উষ্ণ ‌। এক মিনিট আমাদের দুজনের মুখ স্ক্যান করলো । তারপর দেখি সাকসেস হয়েছে। সাকসেস হওয়ার সাথে সাথে মনি আমাকে ধাক্কা দিয়ে ধুরে ঠেলে দিলো। বললো

মনি: তরতো সাহস কম না। তুই আমার ঐ যায়গায় হাত দিয়েছত কেনো?

আমি: আপনিই তো বললেন লেগে দাঁড়াতাম ‌।

মনি: তরে বলছি আমি লেগে দাঁড়াতি । ঐখানে ধরতে বলি নাই। আর তর হাত এতো ঠান্ডা ‌।

আমি: সরি।

মনি: নেক্সট টাইম যেনো এরকম ভুল না হয়।

আমি: ওকে।

__মনি আপু নয়তলায় ক্লিক করলো। একটু পর আমাদের নয়তলা নিচে নিয়ে আসলো। রুমে ঢুকার সাথে সাথে স্বয়ংক্রিয় ভাবে সবকিছু চালু হয়ে গেলো। মনি আপু গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো। আমি গিয়ে সোফায় বসলাম। মোবাইল ধরে দেখি একটুও নেটওয়ার্ক নাই‌ । মনি আপু বিছানা থেকে উঠে একটা মনিটরের সামনে দাঁড়ালো। মনিটরে টাচ করার সাথে সাথে নতুন ইন্টার ফেস চালো হলো । বললো

মনি: এদিকে আয়।

__আমি কাছে গেলাম। মনি আপু আবার বললো

মনি: মনিটরে খেয়াল কর। দেখ ১৯৯০ সালে আমাদের এই কোম্পানি প্রতিষ্ঠিতো হয়। আমার আব্বার রশিদ সাহেবের যৌথ মিলনে । তখন কোম্পানির নাম ছিলো আমার মার নামে। কিন্তু সেখান থেকে কোনো ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছিলো না। তখন রশিদ সাহেব ঠিক করেছিলো তিনি এটা ছেড়ে দিবেন। কিন্তু আব্বার একজন পার্টনার দরকার ছিলো। তাই রশিদ সাহেব কে আব্বা অনেক কষ্টে বুঝিয়ে রাখে। পরে আব্বা নতুন করে আমার ছোট বোনের নাম দিয়ে আরো কিছু টাকা ইনভেস্ট করে এই কোম্পানি খুলেন। এটা ভালো সাড়া পায়। এবং বাজারের অর্ধেক মাঠ আমরা দখল করে নেই। এখন আমার মাসে ইনকাম আছে ১০ কোটি টাকা। এখানে কোম্পানির যতো ডাটা আছে সব এখানে এসে জমা হয়। আব্বা এটা রশিদ সাহেবের আড়ালে করেছিলেন। এখানে অনেক পুরোনো ডাটা আছে। এখন আমার ইচ্ছা হলো রশিদ সাহেবের শেয়ারটা আমি কিনে ফেলবো। এবং পুরো কোম্পানির মালিক আমি হবো।

আমি: এখানে কি আমার ডাটা আছে?

মনি: হুম আছে।

আমি: দেখি।

__মনি আপু মুখে জাষ্ট বললো ।

মনি: মি: রাফিদ সম্পর্কে সব তথ্য দেখান।

এর মধ্যে কয়েক জন রাফিদ নামের লোক এলো। তারপর মধ্যে মনি আমার ছবির উপর ক্লিক করলো।
দেখি আমার সম্পর্কে সব কিছু আছে। আমাল জন্মসাল কোথায় বাড়ি কিসে‌ কিসে পড়ছি রেজাল্ট কি? কবে আমার মা মারা গিয়েছে ‌সব কিছু।
আমি বললাম

আমি: আমার মা কিভাবে মারা গিয়েছে। সে সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই।

মনি: তুইতো তর মার পোস্টমর্টেম করস নাই। করলে অবশ্যই থাকতো।

আমি: রিফাত আমার সম্পর্কে জানে কি করে?

মনি: প্রত্যাকটা কর্মচারীর খবর রাখার অধিকার আছে রিফাতের। কারণ তারা এই কোম্পানির শেয়ার আছে। কোম্পানির লস হলে তাদের ও লস হবে। সে জন্য

আমি: আপনার তথ্য যায়।

মনি: আমার আর সারার বাদে সবার। আচ্ছা তুইকি এখানের সব ডাটা হ্যাক করতে পারবি।

আমি: এটার সিকিউরিটি ‌আমি জানি না। আমার তৈরি কিছু ভাইরাস দিয়ে হ্যাক করতে পারবো।
এক্ষেত্রে আপনার সকল ডাটা ডিলিট হয়ে যাবে।

মনি: আমি দেখতে চাই।

আমি: সকল ডাটা কেটে যেতে পারে।

মনি: ডাটা গুলো তর মোবাইলে ট্রান্সফার কর।

আমি: আমার মোবাইলে জায়গা হবে না।‌

মনি: আমারটায়‌ কর।

__আমি মনি আপুর তেসলা মোবাইল হাতে নিলাম। সব ডাটা ট্রান্সফার করলাম। পরে আমার মোবাইল থেকে সব চেয়ে নরমাল ভাইরাসটা ছেড়ে দিলাম। ভাবছিলাম সিকিউরিটি খুব শক্ত হবে। কিন্তু না মনি আপুর আব্বা হয়তো ভাবতেই পারেনি। এখানে কে ডাটা দেখতে আসবে। তাই হয়তো নরমাল সিকিউরিটি দিয়েছে। এন্টিভাইরাস ও নাই ।
কিছুক্ষণ এর মধ্যেই সকল মনিটর ঘোলা হয়ে গেলো। মনি ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলো। বললো

মনি: এটা কি করে সম্ভব?

আমি: আমি সব চেয়ে নরমাল ভাইরাসটা ছাড়ছি। আরো ভালো উন্নত মানের ভাইরাস ছাড়লে। সব ডাটা কেটে যাবে। এবং আপনার কোম্পানীর প্রত্যাকটা কম্পিউটার এরকম ঘোলা হয়ে যাবে।

মনি: ঠিক করতে কতক্ষন লাগবে।

আমি: ২০ মিনিট।

মনি: ঠিক কর।

__আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঠিক করতে‌ লাগলাম । মনি আপু পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো ‌। আমার কাঁধে মাথা রাখলো । আমি বললাম

আমি: ছাড়ো ।

মনি : না ছাড়বো । দেখি তুই কিভাবে ঠিক করস।

আমি: ছাড়ো ভালো লাগছে না।

মনি: কেনো ভালো‌ লাগবে না ঐ সময় যে আমার ঐখানে ধরছিলি তখন আমার কেমন লাগছিলো।
ছাড়াবো না।

আমি: ওকে।

(হ্যাকিং সংক্রান্ত আমার ধারণা কম। কোনো ভুল হলে মাফ করবেন।)

চলবে….

#নাম: সিনিয়র বস
#লেখক: Osman
#পার্ট: ১৬

মনি: কেনো ভালো‌ লাগবে না ঐ সময় যে আমার ঐখানে ধরছিলি তখন আমার কেমন লাগছিলো।
ছাড়াবো না।

আমি: ওকে।

__মনি আপু আমার সাথে এতো মিশুক কেনো? সে কি আমাকে ভালোবাসে? নাকি আমাকে ব্যাবহার করছে। মনি আপু আমার থেকে কি আশা করছে?
মনি আপুর তুলনায় আমি কিছুই না। আমি বললাম

আমি: আচ্ছা মনি তুমি কি আমাকে ভালোবাসো?

মনি: না বাসি না।

আমি: ওহ তাহলে আমার কাঁধ থেকে সরেন।

মনি: না সড়বো না।

আমি: কেনো?

মনি: তকে আমার ভালো লাগে কিন্তু তকে ভালোবাসি না।

আমি: ওহ।

মনি: যদি তূই আমার সুখে দুঃখে সব সময় আমার ছায়া হয়ে থাকস। তাহলে আমার থেকে তুই এমন পুরস্কার পাবি । যা তুই কল্পনাও করতে পারস না।

আমি: সব সময় আপনার পাশে থাকতে পারবো না।

মনি: কেনো?

আমি: জানিনা। কিছুদিন পরতো ঈদের ছুটি পাচ্ছি । বাড়িতে যাবেন না।

মনি : যেতে পারি।

আমি: এই নেন ঠিক হয়ে গেছে। এখন ছাড়েন।

__মনি আপু আমাকে ছেড়ে দিলো। বললো

মনি: কোম্পানিতে সামনে একটা ঝামেলা হচ্ছে। দুই একদিন কোম্পানি বন্ধ থাকতে পারে। এদিকে আব্বা এমপি নির্বাচন করছে। যদি আব্বা পাশ করতে পারে। তাহলে আমাদের দেখে কে?

আমি: একটা সত্যি কথা বলি?

মনি: বল।

আমি: আমি দেখি আপনি অধিকাংশ সময় শার্ট প্যান্ট পড়েন। ঐ সময় আপনাকে দেখতে অনেক বাজে লাগে। আজকে আপনাকে এতো সুন্দরী লাগছে। তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। সত্যি আপু আপনি অনেক সুন্দরী।

মনি: ধুর আমি দেখতে একটু সুন্দুরী না। ছোট বেলা আমি কতো কালো ছিলাম। তরাইতো আমাকে কতো খেপাইতি। মনে আছে একবার আমাকে কালো বলার কারণে তদের ল্যান্টো করে দাঁড় করিয়ে রাখছিলাম। আর তরা কি কাঁদা কাঁদছিলি। সেই কথা মনে হলে এখন হাসি পায়। সেই ছোট্ট রাফিদ কিনা আজ আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ভাবতেই অবাক লাগে।

আমি: না আপু আপনি অনেক সুন্দরী।

মনি: হয়েছে থাক আর প্রশংসা করতে হবে না।

আমি: আমি গিয়ে একটু বিছানায় শুই।

মনি: তুই শু আমি গোসল করে আসি।

আমি: ওকে।

__আমি গিয়ে নরম বিছানায় শুয়ে পড়লাম। মনি আপু গিয়ে কাপড় নিয়ে গোসল করতে ঢুকলো। আধাঘণ্টা ধরে মনি আপু গোসল করলো। নতুন একটা নীল শাড়ি পড়লো মনি আপুকে এতো সুন্দরী লাগছিলো। আমি যেনো চোখ সড়াতে পাড়ছিনা। আমি বললাম.

আমি: তুমি সত্যিই অসাধারণ।

মনি: হুম। ধন্যবাদ।

__মনি আপু চুল গুলো শুকাতে লাগলো। আমি চোখ দিয়ে মনি আপুকে ধর্ষণ করতে লাগলাম। মনি বললো

মনি: চোখটা অন্যাদিকে ফিরা। লজ্জা লাগছে।

আমি: ওকে।

__আমি মনি সেজে গুজে বললো।

মনি: চল উপড়ে যাই ‌।

আমি: ওকে।

__আমি আর মনি আপু উপড়ে আসলাম। অফিসে গেলাম গিয়ে বসে রইলাম। একটু পর সারা আসলো বলল

সারা: কিরে তরা এতক্ষণ নয়তলায় গিয়ে কি করছিস। আবার দেখি ম্যাডাম কাপড় চেঞ্জ করে নতুন কাপড় পড়ছে। তদের বেশি ভালো ঠেকছে না।
কিরে কি করছিস এতক্ষন?

আমি: ম্যাডামকে গিয়ে জিজ্ঞেস করো।

সারা: তুই বল।

আমি: না বলবো না।

সারা: এখন আমি গিয়ে একঘন্টা লাগিয়ে গোসল করবো। ঐখানের ঠান্ডা পানি এতো ভালো লাগে। মন চায় সারাদিন পানিতে পড়ে থাকতে।

আমি: যান ঐখানে কি আমার গোসল করার ব্যাবস্থা আছে।

সারা: না।

মনি: শুন এই নয়তলার কথা কাওকে বলবি না। রিফাত যদি জিজ্ঞেস করেও তাহলে বলবি না।

আমি: ওকে।

সারা: আজকে বিকালে রাহাতকে নিয়ে ঘুরতে যাবো।

আমি: শুধু ঘুরতে যাইয়েন অন্য কিছু করেন না।

সারা: করলে করবো তর কি?

আমি: কিছু না।

সারা: সেটাই।

আমি: হুম।

__সারা চলে গেলো। কিছুক্ষণ পর মনি আপু ফোন দিয়ে বললো তার অফিসে যেতে।‌ আমি তার অফিসে গেলাম। গেলে বললো

মনি: দেখতো রাফিদ আমার পিসিতে কি সমস্যা হচ্ছে।

আমি: দেখি কি সমস্যা?

__আমি কিছুক্ষন দেখে বুঝলাম কেউ পিসি হ্যাক করার চেষ্টা করছে। আমি বললাম

আমি: কেউ পিসি হ্যাক করার চেষ্টা করছে।

মনি: কি বলিস? আমার পিসি ?

আমি: সেটা বলতে পারছি না। আমি ভালো সিকিউরিটি দিয়ে দিচ্ছি। পরে আর কোনো সমস্যা হবে না।

মনি: ওকে। একজনকে আমার সন্দেহ হচ্ছে। আমি সিউর না। সে হয়তো জানে আমাদের কোম্পানির সব ডাটা একটা জায়গায় জমা হচ্ছে। সে সেটা পেতে চায়। আমি এক্ষুনি আব্বাকে বলতাছি।

আমি: ওকে

__আমি বাসায় চলে আসলাম। রুমে এসে ফ্রেস হলাম। সন্ধ্যায় রাহাত আসে। দুজনে কিছুক্ষণ কথা বলে ঘুমিয়ে যাই ।

__মনি বুঝতে পারছে। রিফাতের মতিগতি ভালো না। সে কিছু ঝামেলা করতে চাচ্ছে। এক্ষুনি আব্বার সাথে আলাপ করে এর সমাধান বের করতে হবে। মনি সোজা গাড়ি নিয়ে নরসিংদী বাড়িতে আসলো। এসে আব্বাকে খুঁজে বের করলো । মনি এসে দেখে তার আব্বা চা খাচ্ছে। মনি গিয়ে তার আব্বাকে বললো

মনি: আব্বা রিফাত কিন্তু অনেক সমস্যা করতেছে।

আব্বা: তুই এতো ধুর থেকে আসছস। ফ্রেস হয়ে রেষ্ট নে। পরে কথা বলি।

মনি: না আপনার সিন্ধান্ত নিয়েই আমি ফ্রেস হবো।

আব্বা: ওকে মাথা ঠান্ডা কর। বল কি হয়েছে?

মনি: আব্বা রশিদ সাহেবের শেয়ারের দাম কতো হবে?

আব্বা: তর শেয়ারের দাম কতো?

মনি: ৫০০ মিলিয়ন হবে ।

আব্বা: তাহলে রশিদ সাহেবের শেয়ারের দাম ততই ।

মনি: আব্বা আমি তার শেয়ার কিনে। পুরো কোম্পানি নিজের করে নিতে চাই।

আব্বা: রশিদ সাহেব যদি তকে এই কথা বলে? তর শেয়ার তারে বিক্রি করে দিতে। তখন তুই কি বলবি?

__মনির মাথা কাজ করছে না।

মনি: আপনিই বলেন।

আব্বা: তারচেয়ে ভালো তরে একটা ভালো উপদেশ দেই। রশিদ সাহেবের ছেলের নাম জানি কি? রিফাত তুই তারে বিয়ে করে ফেল। তাহলেই সব ঝামেলা শেষ হয়ে যায়। ওর যেটা আছে সেটা তর আর তার যেটা আছে তর। মানে দুজনের মিলে একিই।

__মনি টেনশনে পড়ে গেছে। আব্বার কথা হারে হারে ঠিক। মনির মাথা কাজ করছে না। রিফাত কে মনি দুই চক্ষে দেখতে পারে না। মনি সারাটা জীবন শুনে আসছে রশিদ সাহেবের ছেলে কানাডা থাকে। ঐখান থেকে মাঝে মাঝে মনির সাথে কথা বলতো। কোম্পানির এটা সেটা খুঁজ খবর নিতো। আর ঝামেলা সৃষ্টি করতো মনির উপর অধিকার খাটাতে আসতো। মনি সেটা একদমই পছন্দ করে না। মনি চায় তার আন্ডারে সবাই কাজ করবে তার কথা প্রত্যেকে শুনবে। কোনো প্রতিপক্ষ থাকবে না। বাজারে প্রতিপক্ষ আছে সেটা কোনো সমস্যা নেই। একটা দিয়ে লস হলে আরেকটি দিয়ে ওঠে যায়। কিন্তু ঘরের ভিতরে যদি প্রতিপক্ষ থাকে তাহলে কেমন হয়। যে করেই হোক মনিকে পুরো কোম্পানিতে নিজের আধিপত্য বিস্তার করতেই হবে। কিন্তু সেটা কি করে। সেটা খুব কষ্ট হবে কিন্তু কি করে?

মনি: রিফাত কে আমি কোনো ভাবেই বিয়ে করবো না। ওকে আমার এক বিন্দু পরিমাণ ভালো লাগে না।

আব্বা: এ ছাড়া আর কোনো ব্যাবস্থা নেই। তাহলে যেভাবে আছে সেভাবেই থাক। এভাবে চলতে থাক।

মনি: রশিদ সাহেবের কোনো অধিকারই নেই এই কোম্পানিতে থাকার সে কি করছে?সব করছেন আপনি। কি জন্য যে তাকে শেয়ারে রাখলেন।

আব্বা: যেটা হয়ে গেছে সেটাতো হয়েই গেছে। এটা নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই। আর রিফাতকে বিয়ে করার মন মানসিকতা তৈরি কর। আর আমাকে এই সন্বন্ধে টেনশন দিস না। আমার সামনে নির্বাচন। তরে একটা পজিশন দিয়েছি। সেই পজিশন ধরে রাখার চেষ্টা কর।

মনি: আব্বা।

আব্বা: চুপ এখন গিয়ে ফ্রেস হয়ে রেষ্ট নে।

__মনি রুমে চলে আসলো। নিয়ত করলো আগামীকাল অফিসে যাবে না। আগামীকাল বাড়িতেই থাকবে। মনি কোনো ভাবেই রিফাত কে বিয়ে করতে পারবে না। কারণ এতো দিনে মনির মন অন্য কেউ দখল করে ফেলেছে। সেটা হলো রাফিদ। মি: আজিমের সাথে ঝামেলা মনি আরো আগেই শেষ করে ফেলেছে। যখন দেখছে প্রজেক্টে আজিম গুরুত্ব দিচ্ছে না। তখনই মনি তাকে ওয়ার্নিং দিয়েছিলো । পরে‌ আজিমের সন্বন্ধে ভালো করে খুঁজ খবর নিয়ে দেখে তার এক ডিভোর্সি বউ আছে। সেটা দেখেই মনি সাথে আজিমের সাথে সম্পর্ক শেষ করে ফেলে। ঐ প্রজেক্টা অন্যা আরেকটি কোম্পানির শেয়ারে করতাছে। রাফিদের সাথে মনির অনেক পুরোনো স্মৃতি রয়েছে এমনিতেই রাফিদ ছোট বেলা খুব হ্যান্ডসাম ছিলো। রাফিদ কে ছোট বেলা মনির খুব ভালো লাগতো হোক সে ছোট । মানুষ তো তারোতো মন আছে একটা। ঢাকা যাওয়ার কারণে এতো দিন রাফিদ কে ভুলেই গিয়েছিলো মনি। ঐদিন রাফিদ কে দেখে মনি প্রথমে চিনতে পারেনি। পড়ে পরিচয় দেওয়ার পর চিনলো। রাফিদ যেনো আগে থেকে আরো অনেক বেশি হ্যান্ডসাম হয়েছে। রাফিদের একটা জিনিস মনির সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে সেটা হলো তার হাসি । ছোট বেলা হাসি দিলে রাফিদের ঘালে টুল পড়তো‌ । মনি যে কতো রাফিদের ঘালে ধরে টানতো সেগুলো মনে হলে মনির এখনো হাসি পায়। সত্যিই মনির রাফিদ কে দেখলেই পায়ের গোড়ালিতে শির শির করে ওঠে। মনি ঠিক করে ফেলেছে । বিয়ে করলে রাফিদ কেই করবে। অন্তত একটা রাতের জন্য রাফিদ কে নিজের মতো করে নিতে। মনি জানে মনি যতই কিছু করুক না কেনো রাফিদ সব সময় মনির ছায়া হয়ে থাকবে এটা মনির বিশ্বাস। এখন যে করেই হোক রিফাত কে কোম্পানি থেকে বের করতে হবে। টাকা কোনো সমস্যা নেই। ৫০০ মিলিয়ন দিয়ে শেয়ারটা কিনলে ঐ টাকা ওঠাতে সর্বোচ্চ ১৫ মাস লাগবে। কিন্তু সব চেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে রশিদ সাহেব তো শেয়ার বিক্রি করবে না। কি করলে রশিদ সাহেব শেয়ার বিক্রি করবে । মনির মাথায় কাজ করছে না। আচ্ছা আর ১৫ দিন পর আব্বার নির্বাচন । নির্বাচন শেষ হলে পরে এই বিষয়ে আব্বার সাথে কথা বলা যাবে। মনি ফ্রেস হয়ে খাওয়া দাওয়া করে । বিছানায় শুয়ে পড়লো। আজকে শুধু একটা জিনিস মনে হচ্ছে আজকে সকালে রাফিদের কাজটা । রাফিদ যখন মনির খালি নরম কোমড়ে ঠান্ডা হাতটা রাখছিলো তখন মনির যে কেমন লাগছিলো সেটা বলার মতো না। যদি রাফিদ যদি একটা চিপ দিতো তার নরম কোমড়ে তাহলে সেখানেই মনি পাগলের মতো কিস শুরু করতো। কিন্তু নাহ বাঁচা গেলো । এখন রাফিদ কি করছে? মনি সারাকে কল দিলো?

মনি: কিরে কি করিস?

সারা: শুয়ে শুয়ে বয়ফ্রেন্ডের সাথে ম্যাসেজ করছি?

মনি: তর আবার কবে বয়ফ্রেন্ড ছিলো?

সারা: ছিলো না বাট এখন হয়েছে?

মনি: কেরে সে হতভাগা?

সারা: অনুমান করেনতো?

__মনি খেয়াল করলো। সারার যতোটুকু দরদ ছিলো সেটা হলো রাফিদের বন্ধু রাহাতের জন্য। তাহলে কি রাহাত?

মনি: রাহাত নাকি?

সারা: হুম।

মনি: শয়তান তুই এতো বড় অসাধ্য সাধন করে ফেলছস তুই আমাকে একবারো বললি না।

সারা: সব রাফিদের কারনে?

মনি: সিকিউরিটির দিক দিয়ে তর কাছে সব চেয়ে আগে কেরে?

সারা: আপনি ।

মনি: দ্বিতীয় কে?

সারা: এতো দিন কেও ছিলো না এখন একজন হয়েছে।

মনি: কে?

সারা: রাহাত । আমার ভালোবাসা। আমার জান আমার সব। বাঁচলে তার জন্যাই বাঁচবো মরলে তার জন্যই মরবো।

মনি: তাহলে দেখছি রাহাত আমার আগে। ওকে যা রাহাত সবার আগে পরে নাহয় আমি কিন্তু তারপর কে?

সারা: পরে একজন হয়তো হবে ।

মনি: হবে না হয়ে গেছে?

সারা: কে?

মনি: বলতো কে?

সারা: রিফাত।

মনি: বাল আমার মোডটাই নষ্ট করে দিলি।

সারা: হয়তো তাহলে আমি বুঝতে পারছি। রাফিদ!!
আসলে কি জানেন প্রথম দেখাতেই আমি রাফিদের উপর ক্রাশ খেয়েছিলাম। পরে যখন জানতে পারি রাফিদ আপনার প্রতিবেশী। তখন আমি আর নাই।

মনি: তুই মাত্র ঐদিন খেয়েছত‌। আর আমি সেই ছোট্ট বেলা থেকেই খেয়েছি। দেখ যেটা আছে সেটা নিয়েই খুশি থাক। আর আমার পরে রাফিদ কে প্রোটেক্ট করার দায়িত্ব তকে দিলাম।

সারা: ইস এমন ভাব ধরে যেমন নিজে কিছুই পারেনা। একদিনোতো আপনার সাথে মারামারিতে পাড়ি নি। আমার মতো পাঁচটা দাঁড়ালেতো আপনার সামনে টিকতে পারবে না।

মনি: চুপ এটা সবার কাছে অজানায় থেকে যাক।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here