সিনিয়র বস #পার্ট: ১৭,১৮

0
1183

#নাম: সিনিয়র বস
#পার্ট: ১৭,১৮
#লেখক: Osman
পার্ট: ১৭

সারা: ইস এমন ভাব ধরে যেমন নিজে কিছুই পারেনা। একদিনোতো আপনার সাথে মারামারিতে পাড়ি নি। আমার মতো পাঁচটা দাঁড়ালেতো আপনার সামনে টিকতে পারবে না।

মনি: চুপ এটা সবার কাছে অজানায় থেকে যাক।

সারা: হুম। আগামীকাল অফিসে আসবেন না।

মনি: না।

সারা: তাহলে আমিও যাবো না।

মনি: তুই গিয়ে একটু দেখে আসিস। এখন রাখি ঘুমে ধরছে।

সারা: ওকে।

__মনি ঘুমিয়ে গেলো। পরদিন ঠিক করলো রাফিদের মার কবরটা দেখে আসবে। মনি সেখানে গিয়ে রাফিদের মার কবরের সামনে গিয়ে রাফিদের মার জন্য দোয়া করলো। পরে বিকালের দিকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলো।

__আমি পরদিন সকালে ঘুম থেকে নামাজ পড়ে ওরাধুরা ঘুম দিলাম কারন আজকে জুমাবার।
১১টা পর্যন্ত ঘুমালাম। ঘুম থেকে উঠে গোসল করে কাপড় পরিস্কার করলাম। রাহাত তখনো ঘুমাচ্ছে।
তাকে ঘুম থেকে ওঠালাম। নামাজ পড়ে আসলাম। বিকালের দিকে ভাবলাম মনি আপুকে কল দেই। মনি আপু কল ধরলো

আমি: কেমন আছেন?

মনি: ভালো তুই।

আমি: ভালো। কোথায় আপনি?

মনি: বাড়িতে গিয়েছিলাম। এখন আসতাছি।

আমি: আমারো তো যাওয়ার ইচ্ছা ছিলো। আমাকে সাথে নিয়ে যাইতেন।‌

মনি: তুই আমাকে আগে বলতি। ওকে সামনে গেলে তকে নিয়ে যাবো।

আমি: ওকে।

মনি: শুন আজাইরা বাহিরে ঘুরিস না।

আমি: ওকে।

__পরদিন অফিসে গেলাম। অফিসে বসে কাজ করতাছি। হুদাই পিসিতে এটা সেটা দেখছি। একটু পর জানি কে আসলো? আমি তাকিয়ে দেখি রিফাত। রিফাত বললো

রিফাত: রাফিদ কেমন আছো?

আমি: জী ভালো।‌

রিফাত: তোমার মেন কাজটা কি?

আমি: কারো কম্পিউটার বা‌ লেপটপে কোনো সমস্যা হলে সেটা সমাধান করি।

রিফাত: এটাই তোমার কাজ।

আমি: হুম।

রিফাত: অধিকাংশ সময় দেখি তুমি বসেই কাটাও। অন্যারা দেখো কি সুন্দর করে কাজ করছে। আর তুমি বসে সময় কাটাও। এটা কি ঠিক?

আমি: ওদের মধ্যে সর্বনিম্ন বেতন কতো?

রিফাত: ৮০ হাজার টাকা।

আমি: আমার বেতন মাত্র ৩০ হাজার টাকা পার্থক্যটা বুঝতে পারছেন।

রিফাত: হুম ব্রিলিয়ান্ট। এখন যেহেতু বসেই আছো চলো একটু ঘুরে আসি।

আমি: ওকে।

__রিফাত আমাকে নিয়ে লিফটে ওঠলো আমি বললাম

আমি: কোথায় যাবেন?

রিফাত: নয়তলায়।

আমি: ওকে।

__আমি সাধারণত নয়তলায় চাপলাম। লিফট ওঠা শুরু করলো। আমার বুকের ভিতর পানি নাই। লিফট কোথায় যাচ্ছে? নিচে যাচ্ছে নাকি উপরে যাচ্ছে। একটা জিনিস দেখে নিশ্চিত হলাম লিফট উপরে যাচ্ছে। যখন আমরা নিচে যাই তখন লিফট কতো তলায় আছে সেটা দেখায় না সোজা নিচে গিয়ে থেমে যায়। কিন্তু এখন আমরা কতো তলায় আছি সেটা দেখাচ্ছে। তারমানে লিফট উপরে যাচ্ছি। নয়তলায় আছে কি? কোনো দিন যাবার প্রয়োজন মনে করিনি। লিফট নয়তলায় এসে‌ থেমে গেলো। লিফটের দরজা খুললো। দেখি আবার রিফাত আবার দুই এ চাপ দিলো। তারমানে লিফট আবার অফিসে যাচ্ছে। আমি বললাম

আমি: আসবেন না।

রিফাত: আসলে একটা কাজের কথা মনে হয়েছে। পরে তোমার সাথে কোনো যায়গায় ঘুরতে যাবো।

আমি: ওকে।

__আমি আবার অফিসে চলে আসলাম। আমি ভালো করেই বুঝতে পারছি রিফাত আমাকে সন্দেহ করছে কারণ আমি মনি আপুর সাথে একটু বেশিই ক্লোজ। সেজন্য আমাকে সন্দেহ করছে। আমি সোজা মনি আপুর অফিসে গেলাম অনুমতি না নিয়েই প্রবেশ করলাম। দেখি সারা আর মনি আপু আর দুইজন লোকের সাথে মিটিং করছে। আমি অফিস থেকে বের হয়ে গেলাম। ওরা বের হলে আমি প্রবেশ করলাম। দেখি মনি আপু আর সারা ব্যাজনেস নিয়ে কি আলাপ করছে! আমি বসে শুনতে লাগলাম। ওরা দুজন আমাকে পাত্তাই দিচ্ছে না। আমি বললাম

আমি: ম্যাডাম। ।

সারা: আরেকটু পর আস।

আমি: একটা জরুরী কথা।

__মনি আপু আমার দিকে রাগী লোক নিয়ে তাকালো। আমি সোজা হয়ে বসে রইলাম । ওরা কিছুক্ষণ কথা বললো । মনি আপু বললো

মনি: বল তর কি কথা?

আমি: তেমন কিছু না।

মনি: তাহলে এতক্ষন ম্যাডাম ম্যাডাম করতাছত কেনো? আর দেখছত না মিটিং এ আছি। মিটিং এর সময় কোনো সময় অনুমতি না নিয়ে প্রবেশ করবি না। প্রেম ভালোবাসা অফিসের বাইরে ভিতরে কোনো প্রেম ভালোবাসা হবে না। কথা বলতে চাইলে আমিই তকে টাইম দিবো।

সারা: থাক না ম্যাডাম । ভুল হয়ে গেছে।

মনি: তুই চুপ থাক। এখন কি বলবি বল?

আমি: না মানে জিজ্ঞেস করলাম হইলে সকালে খাওয়া দাওয়া করছেননি।

মনি: এটা জিজ্ঞাসা করার জন্য তুই এতক্ষন বসে আসছ। শুন এটা মজা করার যায়গা না এটা অফিস।
এখানে সবকিছু সিরিয়াস হয়ে থাকে। যা ভাগ এখান থেকে।

__আমি বুঝতে পারলাম মনি আপু প্রচন্ড রেগে গেছে। হয়তো আমার কাজটা পছন্দ হয়নি। কিন্তু এমন খারাপ ব্যাবহার করবে কল্পনাও করিনি। আমি অফিসে এসে বসে পড়লাম। অফিস শেষ করে খাওয়া দাওয়া করে বাসায় আসছি হেঁটে। খেয়াল করলাম পিছন থেকে একটা গাড়ি ইচ্ছা করেই হর্ন দিচ্ছে। আমি বিরক্ত হয়েই । গাড়ির দিকে তাকালাম। ভালো করেই তাকিয়ে দেখি মনি আপুর গাড়ি। আমি ইচ্ছে করেই বিরক্ত হয়েই আবার হাঁটা ধরলাম। যেনো পিছনে কে আছে চিনি না। আমি আবার হাঁটা ধরলাম। গাড়িটা সামনে এসে থেমে গেলো। মনি আপু গাড়ি থেকে বের হয়ে আমার শার্টের কলার ধরে গাড়ি ভিতরে ঢুকালো। আমি যেনো কিছুই করতে পারছি না আমি যেনো তার শক্তির কাছে কিছুই না। মনি আপু গাড়ি চালিয়ে একটা নিরব যায়গায় নিয়ে আসলো। গাড়ির এসি চালো করে । একটু রেষ্ট নিলো বললো

মনি : কি বলবি বল?

আমি: না মানে জিজ্ঞেস করছিলাম লাঞ্চ করছেন কিনা।

__মনি আপু গাড়ির সিটে গা এলিয়ে দিলো। চোখ থেকে চশমা খুলে শান্তির নিশ্বাস ফেললো। বললো

মনি: কি জানি বলবি?

__আমি মনির মোবাইলটা নিয়ে মোবাইল বন্ধ করে দিলাম। আমার মোবাইল ও বন্ধ করে দিলাম। মনি আপু কৌতুহল নিয়ে জিজ্ঞাসা করলো

মনি: মোবাইল বন্ধ করলি কেনো?

আমি: এটাই কথা ছিলো? আমার মোবাইল আপনার আর সারার মোবাইল হ্যাক হতে‌পারে। রিফাত আমাকে সন্দেহ করছে ‌‌।

মনি: কি বলিস আগে বলবি না।

আমি: তুমি নিজেই বলো তুমি আমার সাথে কি করছো?

__মনি আপু আমার মুখের দিকে তাকিয়ে রাইলো। হয়তো তুমি বলাতে। মনি হাঁসি দিয়ে বললো

মনি: সরি সরি ঐ সময় আমার মাথা গরম হয়ে গেছিলো। সেজন্য এমন করছি। তর সাথে রাগ মেটাবো নাতো কি অন্য কারো সাথে রাগ মেটাবো।

আমি: আচ্ছা অসুবিধা নেই। রিফাত আমাকে সন্দেহ করছে। সে আমাকে নয়তলা নিয়ে যেতে বলে। আমি নরমাল নয়তলায় চাপলাম। তখন এটা উপরে উঠে গেলো।

মনি: শুন জীবনেও তাকে নয়তলার কথা বলবি না। ঐটায় সব কিছু।

আমি: এভাবে কতোদিন লুকিয়ে রাখতে পারবেন। একদিন হয়তো রিফাত জেনে যাবে।

মনি: দেখি কি করতে পারি তর মাথায় কোনো আইডিয়া আসছে।‌

আমি: তুমি চাচ্ছো কি?

মনি: আমি চাচ্ছি….

আমি: ওয়েট… এখানে বসে কথা বললে কেও শুনে ফেলতে পারে। বর্তমান যুগে গাড়িও হ্যাক করা সম্ভব। চলো বাইরে কোথাও গিয়ে বসি। আমার রুমে আসো।

মনি: চল

__মনি গাড়ি চালিয়ে আমার বাসায় আসলো। আমি রুমে ঢুকে লাইট জ্বালিয়ে দিলাম। মনি ভিতরে এসে বসলো। আমার বেড কোনটা জিজ্ঞেস করলো আমি দেখিয়ে দিলাম। মনি সেখানে গিয়ে শুয়ে পড়লো। বললো

মনি: আমি চাচ্ছি রিফাতের শেয়ারটা কিনতে। তাদের কোম্পানি থেকে বের করে দিতে চাচ্ছি। আমি একাই কোম্পানি চালাবো।‌

আমি: কিন্তু সেতো কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করবে না।

মনি: সেটাই আমার মাথা কাজ করছে না।

আমি: কি কি কারণে তাকে কোম্পানি থেকে বের করে দিতে পারবেন।

__মনি চশমাটা খুললো। বললো

মনি: আমার খেয়াল নেই। সারা জানে ।

আমি: সারার মোবাইল হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

মনি: ওহ শিট রিফাত আমাকে পাগল করে দিবে। সারাকে বল এখানে আসতে।

__আমি রাহাতকে‌ কল করলাম।

আমি: কোথায় তুই?

রাহাত: সারার সাথে।

আমি: সারাকে সাথে নিয়ে এক্ষুনি রুমে আয়।

রাহাত: ওকে।

__আমি মনির পাশে বসে রইলাম। মনি আমার হাতে নিজের হাত রাখলো। বললো

মনি: তুই কি আমাকে ছেড়ে চলে যাবি?
আমি: ছেড়ে যাওয়ার প্রশ্ন আসলে আমি বলবো কে কাকে ছেড়ে চলে যাবে।

মনি: আমাকে তুই?

আমি: না তুমি আমাকে।

মনি: তর এমন কেনো? মনে হয়।

আমি: প্রথমে প্রশ্ন আসে লেভেলের কথা । তোমার লেভেল আমার লেভেল এক না। তোমাকে মানাবে কোনো কোটিপতি মানুষের সাথে। আমার সাথে না।
তারপর দ্বিতীয় প্রশ্ন আসে ধরো তুমি আমাকে বিয়ে করলে ভালোবেসে কিন্তু তারপরেই ব্যাবসায় তুমি লস খেয়ে একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেলে। তখন আমার কাছেও তেমন কিছু নেই যা তোমাকে একটু সুখ দিবে। তখনো কি তুমি আমার সাথে থাকবা। কারণ তোমারা বিচারো একটু সুখ তোমরা সারাজীবন একটু সুখের পিছনে ছুটো ।

মনি: হয়েছে থাক। আমি বুঝেছি তর মনের কথা।
তর উদ্দেশ্যটা কি বল?

আমি: আমার নিয়ত হলো? তোমার কোম্পানিতে দুই বছর চাকরি করে কিছু টাকা ইনকাম করে বাজারে গিয়ে একটা দোকান নিবো পরে নিজের পছন্দ মতো বিয়ে করে। সারাজীবন মা বাবার কবরের পাশেই কাটিয়ে দিবো।

মনি: তর পছন্দের মেয়েটা নিশ্চয় আমি।

__আমি হেসে দিলাম। মনিও হাসতে লাগলো। আমি খেয়াল করলাম কে জানি দরজায় উঁকি দিলো। উঁকি দিয়ে আবার দৌড় দিলো। আমি গিয়ে দরজা চাপিয়ে দিলাম। আমার কেমন যেনো সন্দেহ হচ্ছে। কেও কি আমাদের ফলো করছে। আমি আবার গিয়ে মনি আপুর পাশে বসলাম। মনি আপু বললো

মনি: আমার কপালে একটা চুমু দে।

আমি: কি বলেন এগুলো?

মনি: দে আমার ভয় করছে।

আমি: এখানে কেও নাই। ভয়ের কি আছে?

মনি: তরে বলছি দিতি। তুই দে।

__বললো অনেকটা রাগী কন্ঠে। আমি নুয়ে মনির কপালে চুমু খেলাম। দেখি মনি আপুর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। আমি সোজা হলে মনি বসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো আর কাঁদতে লাগলো। বললো

মনি: তরে ভালোবাসি রাফিদ!?

__এমন সময় দরজা ঠেলে চারজন ছেলে ঢুকলো। ঢুকেই ভিডিও করতে লাগলো।

চলবে….

#নাম: সিনিয়র বস
#পার্ট: ১৮
#লেখক: Osman

__বললো অনেকটা রাগী কন্ঠে। আমি নুয়ে মনির কপালে চুমু খেলাম। দেখি মনি আপুর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। আমি সোজা হলে মনি বসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো আর কাঁদতে লাগলো। বললো

মনি: তরে ভালোবাসি রাফিদ!?

__এমন সময় দরজা ঠেলে চারজন ছেলে ঢুকলো। ঢুকেই ভিডিও করতে লাগলো। তাদের চারজনেরই মুখ ডাকা। আমি বললাম

আমি: কে আপনারা আর এখানে অনুমতি না নিয়ে ঢুকছেন কেনো? আর এভাবে ভিডিও করছেন কেনো?

__মনি ভয়ে আমার পিছনে গিয়ে চুপ করে বসে রইলো চারজনের একজন বলল।

মুখোশধারী: আমাদের কোনো অনুমতি লাগে না।
আরেকটু ক্লোজ হইতি। তাহলে ভিডিওটা আরেকটু জমবে। থাক যতটুকু হয়েছে তাহলেই চলবে। ঐ মেয়ে তুই সোজা তর মোবাইল দিয়ে বের হয়ে যা। তার সাথে আমাদের কিছু বুঝা পড়ার আছে?

আমি: দেখেন আপনাদের চিনি না জানি না । আর কি জন্য আসছেন? সেটাও বলতে পারবো না।
তাই ভালই ভালই চলে যান। তাতে আপনাদেরই ভালো হবে ‌।

মুখোশধারী: তুই আমাদের ঠ্রেট দিস। তর সাহস তো কম না। ঐ মেয়ে তুই বের হস না।

আমি: মনি তুমি বাইরে যাও। আমি তাদের সাথে কথা বলছি। তুমি গিয়ে পুলিশকে খবর দাও।

মনি: তরে ফেলে আমি কোথাও যাবো না।

আমি: যেটা বলছি করো।

মনি: আচ্ছা।

__মনি ভয়ে ভয়ে দরজার কাছে গেলো। গিয়ে যেটা করলো সেটা দেখে আমি অবাক। দেখি মনি দরজা ওলটা তালা লাগিয়ে দিলো। যাতে কেও বের হতে না পারে। আমি বললাম

আমি: পাগল হয়ে গেছো মনি। এখান থেকে চলে যাও।

মনি: এতক্ষন তদের কথা শুনেছি এখন তরা আমার কথা শুনবি। তদের কে পাঠিয়েছে সেটা বল। আর মোবাইলটা দিয়ে দে। তাহলে তদের কিছু করবো না।

মুখোশধারী: বস বলেছিলো তর কোনো ক্ষতি না করতে এখন দেখি তরেও কিছু শিক্ষা দিতে হবে। ঐ ধর তাকে।

একজন মুখোশধারী গেলো মনিকে ধরতে । মনি সোজা তার মেডেল স্টেম বরাবর কিক চালালো।
বেচারা ঐখানে ধরে মাটিতে গড়াগড়ি খেতে লাগলো। এর পর বাকি তিনজন হকচকিয়ে গেলো। আমি খাটের নিচ থেকে একটা কাট বের করে দিলাম একটারে বাড়ি পিট বরাবর। বারি খেয়ে সে মাটিতে পড়ে চিৎকার করতে লাগলো। আমি তার তল পেটে কিক চালালাম। বেচারা জ্ঞান হারালো। পরক্ষনেই আরেক জন এসে আমার পায়ে লাথি দিলো আমি সামলাতে না পেরে খাটের এক কোনায় গিয়ে বারি খেলাম। মাথার এক কোনায় গিয়ে লাগলো। মনে হলো মাথাটা আর নেই। মাথা ধরে‌ নিচে পড়ে রাইলাম । দেখি মনি এসে আমাকে যে লাথি দিয়েছিলো তাকে এক পেট বরাবর ঘুষি চালালো সে কয়েকফুট দূরে গিয়ে পড়লো। তারপর আমার বের করা কাঠটা নিয়ে উপর আরেকজনকে মারতে লাগলো। আমি খেয়াল করলাম আমার মাথা থেকে রক্ত বের হচ্ছে। মনি তিনজনের সাথে একাই মারামারি করছে। মনি বললো

মনি: রাফিদ ঠিক আসছ?

আমি: হুম ।

__এই বলে একটার পায়ে সুজোরে আঘাত করলো । সে নিচে পড়ে যায় মনি গিয়ে তার কানের নিচে নরম জায়গায় কিক চালায়। সাথে সাথে জ্ঞান হারায়। আরেক জন মনিকে ধাক্কা দিয়ে আমার খাটের উপর ফেলে দেয় সেখানে আমার লেপটপ রাখা ছিলো মনি সে লেপটপ দিয়ে বেচারার মাথায় দেয় বারি। সে সাথে সাথে জ্ঞান হারায় আর ছিলো একজন। সে এসে শুধু শুধু আমাকে লাথি মারছে। আমি তার পা ধরে নিচে ফেলে দিলাম। মনি এসে তার তলপেটে কিক চালালো । সে সাথে সাথে জ্ঞান হারায়। তারপর আমার দিকে তাকালো ‌। দেখি মনির মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। ও প্রচণ্ড মার খেয়েছে কিন্তু তার মার হজম করার ক্ষমতা আছে কিন্তু আমার সেটা নেই। রক্তে আমার ঘাড় ভরে গিয়েছে। মনি একটা কাপড় নিয়ে সেখানে বেঁধে দিলো। দেখি মনির ঘালে একটু কেটে গেছে । মাথার চুল উসকোখুসকো হয়ে আছে। মনি আজকে একটা প্যান্ট পড়ছিলো । মনি গিয়ে সব গুলোর মুখোশ খুললো। একটা কেও চিনি না। মোবাইলটা আমার হাতে দিলো আমি ভিডিওটা ডিলিট করে দিলাম। মোবাইলটা ঢিল দিয়ে ভেঙে ফেললাম। আমি বললাম

আমি: তুমি ঠিক আছো?

মনি: এসব কিছু না।

__এমন সময় দেখি বাইরে থেকে ডাক আসছে আমি বুঝলাম রাহাত। মনি গিয়ে দরজা খুললো । রাহাত আর সারা ভিতরে এসে অবাক। সারা দৌড়ে মনি আপুর কাছে আসলো বললো

সারা: ম্যাডাম কোনো কিছু হয়েছে? ব্যাথা পেয়েছেন।

মনি : তেমন কিছু না ওরা চারজন একটু ঝামেলা করছিলো জীবনের শিক্ষা দিয়ে দিয়েছি। এখন এই চারজনের একটা ব্যাবস্থা কর। আমি রাফিদকে নিয়ে হাসপাতালে গেলাম।

__রাহাত সব কটাকে এক যায়গায় করলো সব গুলোর হাত পা বাঁধলো ঘর তখন লন্ড ভন্ড হয়ে রয়েছে। রাহাত বললো

রাহাত: একটার জ্ঞান ফিরাই। জিজ্ঞেস করি কে পাঠাইছি।

মনি: জ্ঞান ফিরা।

__রাহাত পানি এনে একটার মুখে দিলো। সে চোখ খুললো বলতে লাগলো

মুখোশধারী: ভাই আমার কোনো দোষ নেই আমাকে ছেড়ে দেন। আমরা শুধু টাকার বিনিময়ে কাজ করি।

রাহাত: আচ্ছা তুই বল তদের কে পাঠিয়েছে আর কি জন্য পাঠিয়েছে।

মুখোশধারী: আমাদের বস। সে বিভিন্ন ধরনের কন্ট্রাক নেয় । তার কাছ থেকে পেয়েছি।

রাহাত: তদের কাজ ছিলো কি? বলছে এই আপার মোবাইলটা নিতে। আর উনার মোবাইলটা নিতে।
পারলে বলছিলো তকে রাস্তা থেকে সড়িয়ে দিতে।

রাহাত: তর বসের নাম কি?

মুখোশধারী: আমরা শুধু কাজ পাই।‌ আর কাজ করি বসকে কখনো দেখিনি।

রাহাত: তর বসের নাম বল। কোথায় থাকে বল?

মুখোশধারী: জানিনা।

রাহাত ঠাস ঠাস করে দুইটা চড় দিলো বললো

রাহাত: বল নাহলে কিন্তু আরো দিবো ।

মুখোশধারী: ভাই সত্যি বলছি আমি জানিনা।

__সারা গিয়ে তার মাথায় একটা কিক চালালো। সাথে সাথে আবার জ্ঞান হারালো। আমি বললাম

আমি: কে হতে পারে ? মনে করো।

সারা: এটা একমাত্র রিফাত হতে পারে।

আমি: আমারো তাই মনে হয়।

মনি: তারে যে কিভাবে শিক্ষা দিবো। পুলিশকে জানাবো।

আমি: পুলিশ কিছুই করতে পারবে না। তোমার নয়তলায় কি রিফাত কানাডা গিয়ে কি কি করছে‌?
তার সব ডিটেইলস আছে।

মনি: থাকতে পারে ‌।

আমি: এখন নয়তলায় যাওয়া খুব রিস্ক। এক কাজ করো কাওকে কানাডা পাঠাও । রিফাতের সম্পর্কে সব খবর নিয়ে আসোক। যদি কোনো অপকর্ম করে থাকে তার প্রমাণ লাগবে।

মনি: কানাডা আমার কোনো লোক নেই। আর কাকে পাঠাবো কানাডা ।

আমি: সারা রিফাত সম্পর্কে সব খবর নিতে তোমার
কতদিন লাগবে।

সারা: তিনদিন।

আমি: সারাকে পাঠিয়ে দেও কানাডা। তিনদিনের জন্য ছুটি নিবে। আর সবার মোবাইল পাল্টিয়ে ফেলো এমনকি সিম।

সারা: আমার সাথে যদি রাহাতকে পাঠাইতে পারেন। তাহলে শরীরে আরেকটু জোর পেতাম।

মনি: ও যদি যেতে চায় তাহলে যাক।

রাহাত: অফিস থেকে ছুটি না দিলে। আমি যেতে পারবো না।

সারা: যে করেই হোক ছুটি নেও।

রাহাত: দেখি।

মনি: আজকেই রাতে টিকিট কেটে কানাডার উদ্দেশ্য রওনা দে।

সারা: ওকে।

আমি: এই চারটাকে জনমানবহীন একটা নিরব যায়গায় ফেলে আয়। আর দেখিস সিসিটিভি চেক করে নিস।

মনি: বাইরে গাড়ি আছে। গাড়ি নিয়ে যা। আমি রাফিদ কে নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছি।

রাহাত: ওকে।

মনি: তরা আজকেই এই রুম ছেড়ে দে। আর একটা হোটেলে গিয়ে উঠ।

রাহাত: ওকে।

মনি: যে করেই হোক আমি এর শেষ দেখতে চাই । যতটাকা লাগে দিবো।

__রাহাত সব গুলোকে পাঁজাকোলা করে তুলে নিয়ে মনির গাড়িতে রাখলো‌। তারপর সারা আর রাহাত গাড়ি নিয়ে চলে গেলো। মনি আর আমি একটা রিকশা নিয়ে হাসপাতালে আসলাম। হাসপাতালে আসলেই সেই প্রথম পুরোনো সুন্দরী নার্সের সাথে দেখা। আমি মনির কাঁধে মাথা রেখে হাঁটছিলাম। নার্স আমাদের দেখেই দৌড়ে আসলো। একটা কক্ষে নিয়ে গেলো। আমার মাথা দেখেই বলল

নার্স: মাথায় তেমন কোনো আঘাত হয়নি আমি ব্যান্ডেজ করে দিচ্ছি।

মনি: তর ব্যান্ডেজ করতে হবে না আমিই পারি।

নার্স: আপনি পারবেন না।

মনি: তুই সর এখান থেকে।

নার্স: ওকে। আমি জানতাম তুই তার প্রেমে পড়বি।

মনি: তুইতো দেখি সব জানিস।

নার্স: তুই ভালো হবিনা কোনোদিন। ছেলেটারে তুই এভাবেই মারবি।

আমি: আপনারা তুই তোকারি করছেন কেনো?

নার্স: আমিই বলি। মনি হলো আমার ক্লাসমেট । আর পুরো হাসপাতালের মালিক আমার মিষ্টি বান্ধবী মনি।

আমি: বলেন কি?

নার্স: আমি প্রথমেই সন্দেহ করেছিলাম। তদের দুজনের মধ্যে কিছু একটা চলছে। কারণ ও যেই হ্যান্ডসাম । তুই আবার প্রেমে না পড়ে থাকতে পারস।

মনি: সাদিয়া বেশি বাড়াবাড়ি করিস না।

সাদিয়া: মনি তুই থাকতে রাফিদ কি করে ব্যাথা পেলো।

আমি: আজকে যদি মনি না থাকতো তাহলে । আমি এখন আকাশে থাকতাম।

সাদিয়া: প্রতিবারই তো মনিই এসে আপনাকে বাঁচায়।

মনি: তুই চুপ করবি। নাকি একটা দিবো নাক বরাবর। যা ব্যান্ডিজ বার কর।

__মনি আমার মাথা ওয়াশ করে মাথায় ব্যান্ডিজ করে দিলো।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here