সিনিয়র বস #পার্ট: ২১,২২

0
1339

#নাম: সিনিয়র বস
#পার্ট: ২১,২২
#লেখক: Osman
পার্ট: ২১

মনি: দেখছত আমার হাত। এটা দিয়ে দিবো একটা নাক বরাবর সারাজীবন আমাকে মনে রাখবি । যে আমার হাতের মাইর খাইছে সে জানে।

আমি: ওকে । কিন্তু বেতনটা বাড়াও।

মনি: তর যা লাগে আমাকে বলবি টাকা দিয়ে তুই করবি কি?

আমি: এখানে ভালো লাগে না। বাড়িতে চলে যাবো।

মনি: ওহ বুঝতে পারছি তুই আমার থেকে দূরে চলে যেতে চাস।

আমি: আরে নাহ।

মনি: তো।

আমি: মাঝে মাঝে তোমাকে কাছে টাকা চাইতে লজ্জা করেতো সে জন্য।

মনি: আচ্ছা যা। এখন থেকে মন দিয়ে কাজ করবি।‌

আমি: না‌ করবো না।

মনি: না করলে আরো ভালো।

__এভাবে ভালই চলছিলো। মনির সাথে আমার সম্পর্ক আরো বেশি গভীর হলো। মনিকে আমি এখন সত্যিই অনেক ভালবাসি। মনিও ভালোবাসার কোনো কিছুই কমতি রাখলো না। আমার প্রমোশন দিয়ে মনি আমাকে কম্পিউটার সিকিউরিটির দায়িত্বে দিলো । কম্পিউটারের যেকোনো সমস্যা ভাইরাস এগুলো । বেতন দিলো ৫০ হাজার। আস্তে আস্তে এই মাস শেষ হয়ে গেলো। একদিন রাতে আমি আর ঘুমাচ্ছি। রাত ৩টায় কে জানি দরজায় টোকা দিচ্ছে। আমি ঘুম থেকে উঠে গেলাম রাহাতো। রাহাত বললো

রাহাত: এতো রাতে কে আসলো?

আমি: জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখতো।

__রাহাত বিছানা থেকে ওঠে জানালা দিয়ে উঁকি দিলো। উঁকি দিয়ে বললো

রাহাত: তিন জন লোক দাঁড়িয়ে আছে। হাতে লাঠি।

আমি: কি বলিস? মোবাইল বের করে মনিকে কল দিলাম ।

__দরজার উপার থেকে বললো

অচেনা: দরজা খুলবি নাকি দরজা ভেঙে ঢুকবো।

__নাহ মনি কল ধরছে না । মেসেজ করলাম “মনি আমাদের দরজায় অচেনা কয়েকজন এসে দরজা নাড়ছে মনে হয় কোনো সমস্যায় পড়তে হবে” আমি রাহাতকে বললাম সারার কাছে মেসেজ দিতে। রাহাত ও মেসেজ পাঠালো । রাহাত বললো

রাহাত: কি করবো এখন?

আমি: না দাঁড়িয়ে থাক। দরজা খুলা যাবে না । দেখি তারা কি করে? কাঠ নিয়ে দাঁড়া। তিনজন না। আমরাই পারবো। খালি মাথায় বারি দিবি।

রাহাত: আচ্ছা।

__তারা আমাদের লাষ্ট ওয়ার্নিং দিলো। কিন্তু কে শুনে কার কথা। আমি রাহাতকে বললাম লাইট বন্ধ করে দিতে। রাহাত লাইট বন্ধ করে দিলো। বাইরে ছিলো চান্নি রাত । ওরা দরজা ভেঙে ঢুকলে দেখা যাবে।
একসময় তাড়া ধাক্কা দিয়ে দরজা ভেঙে ফেললো। আমরা দুজন আড়ালে গিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম । খেয়াল করলাম তিনজন রুমে ঢুকলো। আমি একজনের মাথা বরাবর বাড়ি দিলাম। সে সেখানেই দাঁড়ানো থেকে মাটিতে পড়ে গেলো। রাহাতও একটার মাথায় বাড়ি দিলো। সেও নিচে পড়ে গেলো। আরেক জন লাইট জ্বালিয়ে দিলো। তারপর আমি আর রাহাত এক সাথে দিলাম আরেকটারে বাড়ি সে চিল্লাতে লাগলো। এক সময় আমি দিলাম তার মাথায় বাড়ি। সে অজ্ঞান হয়ে গেলো । তখন হড়হড় করে আরো পাঁচ ছয়জন লোক ঢুকলো রুমে। দুই জন গেলো রাহাতের কাছে আর দুই জন আসলো আমার কাছে। একজন আমাকে ধরতে আসলে আমি তার মেডেল স্টেম বরাবর কিক চালালাম। সে সেখানেই মাটিতে পড়ে গেলো ঐখানে ধরে। পরক্ষনেই আমি আমি আরেকজনের দিকে দৌড় দিয়ে তার ঘাড়ে ধরে তার কোমরে ভর দিয়ে তাকে উল্টে ফেললাম মনির দেওয়া টেকনিকে পরে তার শরীরের উপর উঠে তার মুখে ঘুষি দিতে লাগলাম।
কে জানি পিছন থেকে আমার মাথায় আঘাত করলো । মাথাটা মনে হয় আর সাথে নাই। আমি বসা থেকে মাটিতে পড়ে গেলাম আর কিছু মনে নেই। কারো চোখে পানি দেওয়াতে চোখ খুললাম। নিজেকে এক পরিত্যাক্ত গোডাউনে আবিষ্কার করলাম। আমাকে এক চেয়ারে বেঁধে রাখলো। তাকিয়ে দেখি রাহাতকে কে এক পিলারের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে। দেখি রাহাতের মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছে। রাহাতকে মনে হয় অজ্ঞান করতে পারে নাই।
মাথাটা প্রচন্ড ভারি হয়ে আছে। আমি সামনে থাকা একজনকে বললাম।

আমি: ভাই আপনার নাম কি?

অচেনা: টিটু ।

আমি: টিটু ভাই আমাকে একটু পানি দেন।

__টিটু আমাকে পানি দিলো। আমার জীবনটা যেনো নতুন করে পেলাম।

আমি: আপনাদের এখানে বস কে?

টিটু: আমিই বস।

আমি: ভাই শুধু শুধু আমাকে এখানে ধরে আনছেন কেনো? আমি কি আপনাদের কোনো ডিস্ট্রাব করছি।

টিটু: উপর থেকে অর্ডার আসছে। তকে ধরতে । কিন্তু তর ঐ বন্ধু ঝামেলা করছে। সেজন্য তারেও ধরে আনছি।

আমি: ভাই আপনার বাড়িতে কি বাচ্চা নেই?

টিটু: আছে।

আমি: মনে করেন আপনার বাচ্চাকে কেও ধরে নিয়ে গেলো? তখন আপনার কেমন লাগবে।

টিটু: খারাপ লাগবে।

আমি: আপনি শুধু দোয়া করবেন। যেই ধরে নিয়ে যাক না কেনো? আপনি শুধু বলতে থাকবেন আপনার বাচ্চাকে ফিরিয়ে দিতে। এখন মনে করেন আমি আপনার বাচ্চা এখন কি আপনি আমাকে ছেড়ে দিবেন না?

টিটু: আসলে কি জানিস ? আমার বাচ্চা কাচ্চা কিছুই নেই । আসলে আমি অনেক জনকে কিডন্যাপ করেছিতো । অনেকজন আমাকে অনেক রকম কথা শুনিয়েছে তাই ভাবলাম তরটাও শুনি।

__আমি ভাবলাম এই হালায়তো দেখি আমার থেকে এক লাইন আগে।

আমি: ধুর হালা।

টিটু: কিহহ তুই আমাকে বকা দিছত। তরতো সাহস কম না। এখানে দেখছত কতো জন লোক সবাই যদি তরে একটা করে ঘুষি দেয় তাহলে তর বেঁচে থাকা কষ্ট কর হয়ে যাবে। সামনে বার সাবধানে কথা বলবি।‌

আমি: দেখ আমাদের ছেড়ে দে। তাতে তরেই ভালো হবে মনি যদি জানতে পারে আমাদের এখানে তরা ধরে আনছত। তদের একটাকেও আর বাঁচতে দিবেনা।

টিটু: একটা মেয়ে আমাদের মেরে ফেলবে।

__বলে হাসতে লাগলো। তার দেখা দেখি সবাই হাসছে। আমি এদিক সেদিক তাকিয়ে দেখি। এখানে কম পক্ষে ১০ জন মানুষ। তার মধ্যে থেকে একজন এসে আমাকে মুখে দুইটা ঘুষি দিলো। বললো

অচেনা: কুত্তার বাচ্চায় তামিমের মাথায় ভারি দিয়েছে। ওর এখনো জ্ঞান ফেরেনি। তামিমের যদি কিছু হয় তাহলে আমি তারে মেরেই ফেলবো।

__আমার নাক দিয়ে রক্ত পড়তে লাগলো।

টিটু: ওরে কিছু করার অনুমতি নাই আমাদের। তামিম ধরতে পারে নায় । এটা তামিমের ব্যার্থতা।

আমি: কোথায় আপনাদের বস?

রাহাত: হাতটা খুলে দে মাদার..তদের সবগুলোকে মাইরা জাহান্নামে পাঠাবো।

টিটু: বস আসতাছে।

আমি: এখন কয়টা বাজে?

টিটু: কেনো?

আমি: এমনি।

__এমন সময় দেখি আরেকজন অচেনা লোক ঢুকলো। তার সাথে রিফাত আমি রিফাত কে দেখে একটুও অবাক হয়নি। আমি জানতাম এই কাজ রিফাতই করতে পারে। রিফাত আমার সামনে আসলো । বললো

রিফাত: কিরে মাদা… কি খবর?

আমি: ভালো করে কথা বল।

রিফাত: তরে কিছু প্রশ্ন করবো ? সঠিক সঠিক উত্তর দিবি আর বেঁচে যাবি। নাহলে দেখছত এটা কি ট্রিগার চাপলেই তর মাথার খুলি উড়ে যাবে।

আমি: সালা ধর্ষক….মাদা….নরকের কীট। তরে আমি এক বিন্দু পরিমাণ ভয় পাই না।

__রিফাত ঠাস ঠাস করে আমার গালে চড় বসালো।

রিফাত: আমাকে বকা দিস তর সাহস তো কম না।

আমি: তরে বকা দিতে সাহস লাগবে নাকি। সালা ধর্ষক।

__রিফাত আমার কানে এক চড় বসালো। আমি মনে হয় আর আনে আর কিছু শুনছি না।

রিফাত: তরে মারার আমার কোনো ইচ্ছায় নেই।‌ যা বলছি সব বল। নয়তলায় কি করে যেতে হয় বল?

আমি: কিসের নয়তলা কোথায় নয়তলা?

রিফাত: তরে মারার আমার কোনো ইচ্ছায় নেই।

আমি: আমি কিছু জানিনা।

রিফাত: আচ্ছা বল আমি যে কানাডায় ধর্ষণ করছি সেটা তরা জানিস কিভাবে।

আমি: কানাডায় লোক পাঠাইছি।

রিফাত: তুই কি জানতি? আমি কানাডায় এরকম কান্ড করছি।

আমি: না ।

রিফাত: তাহলে তুই সিউর না হয়ে কানাডা লোক পাঠাইছত।

আমি: হুম। এমনি দেখার জন্য তর সম্পর্কে কিছু জানতে পারি কিনা। কিন্তু না চাওয়ার চেয়ে বেশি পেয়ে গেছি।

রিফাত: সেটাই তর মৃত্যুর কারণ হয়েছে। তরকি মনে হয় এখান থেকে বেঁচে ফিরতে পারবি। তর জন্য আমার বাবা অপমানিত হয়েছে। তুই নাটের গুরু। সেজন্যই তো বলি হাবাগোবা মনির মাথায়তো এরকম চিন্তা আসতেই পারে না। আর কিছু দিন পর মনিকে বিয়ে করে পুরো কোম্পানি নিয়ে নিতাম আমি। তর কারণে সব ভেস্তে গেলো? তর এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই।

রাহাত: তুই আমার হাতে মরবি সিউর।‌

রিফাত: তুই বেঁচে থাকলেতো আমাকে মারবি। আর একটু পর তরা মরতাছত । সেটা ভাবতেই আমার কষ্ট লাগছে। মরার আগে যা জানস সব বলে যা।

__আমি ভাবতে লাগলাম । হয়তো রিফাত সত্যি বলছে। কারণ রিফাতের চোখে প্রতিশোধের আগুন জ্বলতাছে। আর তার হাতের রিভলবারটাও অরিজিনাল। এখন একটা কাজ করা যায় তা হলো সময় নেওয়া। দেখি কোনো সাহায্য পাই কিনা।

আমি: ভাই যা বলবেন সব বলবো । প্লিজ ভাই আমাদের বাঁচতে দিন।

রাহাত: রাফিদ তুই পাগল হয়ে গেছত। এই নরকের কীটের কাছে হাত জোড় করছত।

আমি: যা বলবেন সব বলবো।

রিফাত: বল নয়তলায় কি করে যেতে হয়?

আমি: যেহেতু সারা রাহাতের গার্লফ্রেন্ড ছিলো । অধিকাংশ সময় সারার আমার দেখা হতো। আর একদিন আমি সারার মুখ থেকে নয়তলার কথা শুনছিলাম। আমি কৌতুহল বসত সারাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম নয়তলার কথা। তখন সে যেটা বললো আমিতো বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না।

রিফাত: কি বলছিলো?

আমি: সারা বলেছিলো ওখানে নাকি প্রত্যাকটা জিনিস স্বর্নের তৈরি ‌। আর হিরার গ্লাস। খাটও বলে স্বর্নের। মনির সব‌ টাকা বলে সেখানে নষ্ট করে। আর সেখানে বলে অনেক স্বচ্চ পানি। সেখানে একটা ঘড়ি আছে যেটার দামই বলে দুইশো মিলিয়ন টাকা। পরে লাষ্টে সারা কি বলেছিলো জানেন।

রিফাত: কি বলেছিল?

আমি: এগুলো সব মিথ্যা একটাও সত্যি কথা না। দেখেন ভাই মেজাজটা কেমন হয়।

__এটা শুনে রাহাত জুড়ে জুড়ে হাসতে লাগলো। আমিও হাসতে লাগলাম। রিফাতের চোখে মুখে তখন আগুন। রিফাত বললো

রিফাত: এই দুইটারে মেরে মাটিতে পুঁতে ফেল ।

__এটা বলার সাথে সাথে আমার চেয়ার নিচে ফেলে দিলো আর কয়েকজন আমাকে মারতে লাগলো। রাহাতকে ও । এমন সময় একটা গাড়ির আওয়াজ শুনলাম। গোডাউনের দরজা ভেঙে ঢুকলো। দেখি এটা মনির গাড়ি। সবাই মারা থামিয়ে দিলো। গাড়ি থেকে মনি আর সারা নামলো। তাদের ড্রেস কালো ।কালো প্যান্ট কালো গেঞ্জি কালো লেদার। আর মনি আর সারার হাতে হকিস্টিক।

চলবে…..

#নাম: সিনিয়র বস
#পার্ট: ২২
#লেখক: Osman

__এটা বলার সাথে সাথে আমার চেয়ার নিচে ফেলে দিলো আর কয়েকজন আমাকে মারতে লাগলো। রাহাতকে ও । এমন সময় একটা গাড়ির আওয়াজ শুনলাম। গোডাউনের দরজা ভেঙে ঢুকলো। দেখি এটা মনির গাড়ি। সবাই মারা থামিয়ে দিলো। গাড়ি থেকে মনি আর সারা নামলো। তাদের ড্রেস কালো ।কালো প্যান্ট কালো টি_শার্ট কালো লেদার। আর মনি আর সারার হাতে হকিস্টিক।

__মনি সকালে ফুরফুরে মেজাজে ঘুম থেকে উঠলো। রাতে রাফিদের সাথে কথা বলতে বলতে অনেক দেরি হয়ে গেছিলো। তাই আজকে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়েছে। ঘুমটাও ভালো হয়েছে। আজকে ছুটির দিন। মনি ভাবছে আজকে রাফিদ কে নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাবে। কোথায় যাবে সেটাই সিন্ধান্ত নিতে মনি ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হলো । কাজের মেয়ে এসে কফি দিয়ে গেলো। মনি এখনো মোবাইল হাতে নেইনি কারণ অন্য দিন হলে মনি রাফিদ কে ঘুম থেকে জাগিয়ে দিতো। কিন্তু আজকে ছুটির দিন উপলক্ষে মনি ভাবতে লাগলো একটু ঘুমাক। মনি কফি খেয়ে বেলকনিতে গিয়ে একটু বেয়াম করলো। তখন ঘড়ির কাটা দশটা ছুঁই ছুঁই। মনি দেখে সারা হন্তদন্ত করে বাসায় ঢুকছে। দেখে বুঝা যাচ্ছে সারা কাঁদছে। কি হলো মনি বুঝা পাচ্ছে না? কেও মারা গেলো নাকি। নাকি কোনো সমস্যা হয়েছে। মনিকে ফোন না দিয়ে ডাইরেক্ট চলে আসলো। এসেই মনিকে জড়িয়ে ধরে জুড়ে জুড়ে কাঁদতে লাগলো। মনি কিছুই বুঝতে পারছে না কি হলো? সারার চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়ছে। মুখেই কিছু বলতেও পারছে না।

মনি: সারা শান্ত হো। কি হয়েছে আমাকে বল।

সারা: রাহাত… রাহাত ।

মনি: রাহাতের কি হয়েছে?

সারা: রাহাত আর রাফিদ কিডন্যাপ হয়েছে।

__বলে আবার ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো। মনির পায়ের তলা থেকেও মাটি সড়ে গেলো। তাড়াতাড়ি মোবাইল বের করলো। দেখে রাফিদের একটা কল রাত তিনটায় । পড়ে মেসেজ দেখলো । মেসেজ দেখে মনির পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেলো। মনি বিছানায় শুয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো। কেঁদে কেঁদে সারাকে জিজ্ঞেস করলো?

মনি: রাফিদের কি হয়েছে?

সারা: আমি সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি রাহাতের মেসেজ। তারপর তাড়াতাড়ি রাহাতের রুমে গেলাম।
গিয়ে দেখি কেও নাই ঘর লন্ডভন্ড হয়ে আছে।

__মনি কাঁদতে কাঁদতে বললো

মনি: সব দোষ আমার আমি যদি ফোনটা ধরতে পারতাম। তাহলে তাদের কিছু হইতো না।

সারা: আমি রাহাতকে চাই। রাহাতরে ছাড়া আমি বাঁচবো না।

মনি: রাফিদকে ছাড়া আমি এ পৃথিবী তুচ্ছ।

__মনি ও সারাকে জড়িয়ে ধরে অনেকক্ষণ কাঁদলো। সারা ছোট বাচ্চার মতো কেঁদেই চলেছে। মনি কাঁদতে কাঁদতে বললো

মনি: রাফিদকে কে কিডন্যাপ করতে পারে?

সারা: জানি না।

মনি: রাহাত আর রাফিদের মোবাইল কোথায়?

সারা: দেখি নাই।

মনি: দেখতো ওপেন আছে কিনা।

সারা: নেই অনেকবার ট্রাই করছি।

__এই বলে সারা আবার কাঁদতে লাগলো। মনির ভিতরটা জ্বলে যাচ্ছে। মনির চোখ দিয়ে অঝোরে অশ্রু বের হচ্ছে। মনির কারণে আজ রাফিদের এই অবস্থা। মনিই রাফিদ কে এসব বিষয়ে জড়িয়েছে। যদি মনি রাফিদ কে এসব বিষয়ে না জড়াতো তাহলে
হয়তো রাফিদের কিছু হইতো না। রাফিদ….. আমার রাফিদ আজকে রাফিদ কে নিয়ে কতো কিছু প্ল্যান করেছিলো মনি। বুকটা হাহাকার করছে মনির যে করেই হোক রাফিদ কে ফিরে পেতেই হবে। এখনো হইতো সময় আছে রাফিদ কে বাঁচানোর। মনি সারাকে বললো

মনি: শুন কাদিস না। তর কষ্টটা আমি বুঝি জানি তুই রাহাতকে অনেক ভালোবাসিস। আমিওতো রাফিদকে অনেক ভালোবাসি। রাফিদ কে ছাড়া আমার জীবন মূল্যহীন। এতো বড় কোম্পানি এতো টাকা পয়সা সব কিছু মূল্যহীন। রাফিদই একমাত্র আমার মন দখল করতে পেরেছে। রাফিদ আমার প্রথম ভালোবাসা। এখনো হয়তো সময় আছে তাদের বের করার জন্য। তারা হয়তো আমাদের পথ চেয়ে বসে আছে।

সারা: রাহাতকে আমি আমার জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসি। তারজন্য যদি জীবন দিতে পারি তাহলেও নিজেকে সার্থক মনে হবে। আল্লাহ তুমি রাহাতকে যেখানেই রাখো ভালো রাইখো।

মনি: দেখতো রাহাতের মোবাইলের লাষ্ট লোকেশন কোথায় দেখাইছে।

সারা: লেপটপ দেন।

__মনি লেপটপ দিলো । সারা লোকেশন বের করলো। দেখে রাফিদের রুম থেকে এক কিলো দূরে লাষ্ট লোকেশন দেখাইছে।

মনি: রাহাতের ।‌

__একই যায়গা দুইটা । যায়গাটা আবার ব্রিজের উপর যেখানে দিনের বেলা জাম লেগেই থাকে। মনি বললো

মনি: তর কি মনে হয় কে কিডন্যাপ করতে পারে?

সারা: আমার সবচেয়ে বেশি সন্দেহ হচ্ছে রিফাত কে। তাকে আমরা কোম্পানি থেকে বের করে দিয়েছি। সে মনে হয় প্রতিশোধের আগুনে জ্বলছে। সেজন্য রাফিদের উপর প্রতিশোধ নিচ্ছে। বেচারা রাহাতের কি দোষ তাকেও কেনো? ধরে নিয়ে গেলো? আমার রাহাত।

মনি: রিফাতের লোকেশন বের কর।

সারা: আমি যতোটুকু জানি । রিফাত নাম্বার পাল্টিয়ে ফেলছে।

মনি: রশিদ সাহেবকে ফোন দিয়ে নতুন নাম্বার নে।

সারা: ওকে।

__সারা রশিদ সাহেবকে ফোন দিলো। রশিদ সাহেবের কাছ থেকে সারা নতুন নাম্বার নিলো। তারপর ঐ সিমের লোকেশন বের করলো। দেখে এক নির্জন এলাকায় লোকেশন দেখাচ্ছে। মনি বললো

মনি: রাফিদের সিমের লাষ্ট লোকেশন কোথায় দেখাইছে।

সারা: এই খানে । এইখান থেকে এক রাস্তায় ধরে তিন কিলোমিটার দূরে রিফাতের লোকেশন। এই খানেই মনে হয় রাহাত আছে।

মনি: চল সেখানে যাওয়া যাক।

সারা: পুলিশকে বললেই হয়।

মনি: পুলিশকে বললে তারা কতো কিছু জিজ্ঞেস করবে তাঁরপর তারা রাফিদের রুমে যাবে। সেখানে কতো কিছু এটা সেটা । ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে যাবে। যা করার আমাদেরই করতে হবে।

সারা: আপনার কাছে না একটা রিভলবার আছে লাইসেন্স করা।

মনি: আছে ঐটা সাথে নিবো।

সারা: রাহাতের বিনিময়ে আমি যে কাওকে খুন করতে পারি।

__সারার চোখে মুখে দুঃখ যন্ত্রনা কষ্ট আর প্রতিশোধে হাহাকার করছে। মনি যতোটুকু জানতো সারার মনটা অনেক শক্ত। এই শক্ত মনটার ভিতরে রাহাত যায়গা করে নিয়েছে। সেই রাহাতকে যদি কেও কেরে নিতে চাইবে । সারা তাকে কোনো ভাবেই বাঁচাতে দিবে না । রাফিদের যদি কিছু হয় মনিও তাকে বাঁচতে দিবে না।

মনি: সেখানে হয়তো গিয়ে মারামারি করতে হবে।
এই নে ড্রেস পড়ে নে।

__মনি সারাকে কালো স্টিজ প্যান্ট কালো টি_শার্ট কালো লেদার। জুতাগুলো সাদা । মনিও সারাকে দিলো । মনিও নিজে পড়লো চুল গুলো খুপা করে বাঁধলো। ঠোঁটে গাঢ় কালো লিপস্টিক দিলো। দুজনে একই স্টাইলে সাঁজলো। দুজনকে কি সুন্দরী লাগছিলো বলার বাইরে যেনো এক ভিন গ্রহের দুই পরি সাজছে যেখানে শুধু সৌন্দর্যের চর্চা হয় । তারপর তারা গাড়ি নিয়ে বের হলো আসার সময় দারোয়ানের কাছ থেকে নতুন দুইটা হকিস্টিক নিয়ে আসলো। মনি সারাকে জিজ্ঞেস করলো ।

মনি: যেতে কতক্ষন লাগবে।

সারা: ২০ মিনিট

মনি: আল্লাহ ২০টা মিনিট তুমি আমার রাফিদকে বাঁচিয়ে রাইখো।

সারা: রাহাতের যদি কিছু হয় রিফাত কে আমি সেখানে নিজ হাতে খুন করবো। রাহাতকে ছাড়া আমি বাঁচবো না। রাহাত আমার প্রথম ভালোবাসা। তাকে আমি কোনোভাবেই হারাতে চাইনা।

__এই বলে সারা আবার কাঁদা শুরু করলো। মনির ভিতরটাও জ্বলে যাচ্ছে। রাফিদ মারা যাওয়ার কথা মনে হতেই ভিতরে এক অন্যরকম আরেকটি যন্ত্রনা কাজ করে। এটাই হয়তো সত্যিকার ভালোবাসা।

__বিশ মিনিট পর তারা একটা পরিত্যাক্ত গোডাউনে প্রবেশ করলো । মনি ইশারায় বলে দিলো গোডাউনে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকতে । সারা গাড়ির স্পিড বাড়িয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলো । গাড়ি থেকে হকিস্টিক হাতে নিয়ে নামলো ।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here