তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা,পর্ব২২,২৩

0
1396

#তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা,পর্ব২২,২৩
#Hridita_Hridi
#পর্ব২২

বর্ষণঃ তারমানে কি কেউ বলতে চাচ্ছে আমার উপর তার কোনো অধিকার নেই? নাকি আমি তার কেউ না?

বর্ষণের কথা শুনে বর্ষা ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায়। একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে কেউ কি বলতে চাইলো বা না চাইলো তাতে কি এসে যায় বলো? কেউ কি ভাববে কি ভাবতে পারে, কেউ কিছু মনে করবে কি করবেনা এস ভাবনা বাদ দাও। এগুলো ভেবে শুধু শুধু সময় নষ্ট করোনা। বরং সেটুকু সময় তুমি তোমার পরীকে নিয়ে ভাবো৷ আমার মনে হয় সেটাই ভালো এতে তোমার শরীর মন দুই ই ভালো থাকবে।

বর্ষণঃ তুই আমার জন্য এ..তো ভাবিস! আগে জানতাম না তো!

বর্ষাঃ বয়ে গেছে আমার কারও জন্য ভাবতে হুহ্!
আমি শুধু এটাই বলতে চাই আমায় নিয়ে কাউকে ভাবতে হবে না। আর অযথা ভেবে শরীর ও খারাপ করতে হবেনা।

বর্ষণ বুকের বাম পাশে হাত রেখে ব্যাথা পাওয়ার ভান করে বলে আহ! আমায় কেউ এতো কেয়ার করে, আমার শরীর নিয়ে কেউ এতোটা ভাবে, আমার জন্য কেউ এতোটা সিরিয়াস সেটা দেখলে আমার কলিজায় কেমন কেমন একটা টান অনুভূত হয়।

বর্ষণের এমন হেয়ালিপনা কথায় বর্ষার একটু রাগ হলো। এমনিতেই বেচারি কষ্টে আছে। তার উপর আবার বর্ষণের এমন হেয়ালি, বর্ষার সহ্য হলোনা। রাগ দেখিয়ে চলে যেতে নিলেই বর্ষণ তার হাত ধরে এক টান দিয়ে বলে কোথায় যাস পরী?
বর্ষা আচমকা হাতে টান পরায় পরে যেতে নিলেই বর্ষণ আর এক হাত বর্ষার পিঠের নিচে দিয়ে শক্ত করে ধরে রাখে।
বর্ষা কিছুক্ষণ বর্ষণের দিকে তাকিয়ে থাকে বর্ষণও বর্ষার দিকে তাকিয়ে আছে। এমন মুহুর্তটাকে ক্যামেরা বন্দী করে রাখে সবুজ আর নিপু।

বর্ষণ বললো কি হলো তাকিয়ে কি দেখিস?

বর্ষণের কথায় ধ্যান ভাঙে বর্ষার। বর্ষণকে ছেড়ে সোজা হয়ে দাঁড়ায়।
বর্ষণও পান্জাবির হাতাটা ফোল্ড করতে করতে বলে এখনো ব্যালেন্স ঠিক রাখতে শিখিসনি অথচ রাগ টা তো দেখাতে পারিস খুব।

বর্ষা বর্ষণের কথায় কোনো প্রতিত্তোর না দিয়ে উল্টো প্রশ্ন করে বসে, ” তুমি আমায় কি বলে ডাকলে ভাইয়া”!

বর্ষণঃ কই কিছু বলে ডাকিনি তো?

বর্ষাঃ তাহলে যে আমি স্পষ্ট শুনতে পেলাম তুমি আমায়..
বর্ষণঃ ওহ্, ডেকেছে বুঝি! তাহলে হয়তো ডেকেছি বলেই বর্ষণ একটা রহস্যময় হাসি দিয়ে ঋতুদের কাছে চলে যায়।

বর্ষা কিছুই বুঝতে না পেরে তাকিয়ে থাকে।কিছু একটা ভেবে বর্ষা একটা হাসি দিয়ে বলে এ রহস্য তোকেই খুঁজে বের করতে হবে বর্ষা! এবার বাসায় গিয়ে মিশন শুরু করে দে।

তারপর নিপু বর্ষাকে ডেকে নিয়ে সবাই একসাথে নিচে চলে আসে।

বিয়েতে যাওয়ার জন্য সবাই সকাল থেকে খুব এক্সাইটেড শুধু বর্ষা ছাড়া। বর্ষা সকাল থেকে চুপচাপ আছে। বিয়ে বাড়ি যাওয়া নিয়ে তার কোনো মাথা ব্যাথা নেই। তাই সকালের খাবার খেয়ে আবার রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পরে।

এদিকে বেচারা বর্ষণ সারা বাড়িতে তার পরীকে খুঁজে না পেয়ে অস্থির হয়ে আছে। সবাই বিয়ে বাড়ি যাবে বলে রেডি হচ্ছে এদিকে বর্ষার কোনো খবর নেই।
নিপুকে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো এই নিপু বর্ষাকে দেখেছিস?

নিপুঃ হুম দেখেছি তো। ওর রুমেই আছে ঘুমোচ্ছে।

বর্ষণঃ কিহ্! এখনো ঘুমোচ্ছে মানে টা কি! ডাকিসনি ওকে?

নিপুঃ হুম ডেকেছি। ওঠেনি বলেছে বিয়েতে যাবে না। এখন তুমি পারলে ডেকে তুলো।আমাকে আর এর মধ্যে টেনো না ভাইয়া! তোমরা দুজন যা ভালো বুঝো করো আমি যাই বলেই নিপু ছুট লাগালো।
কারণ নিপু খুব ভালো করে জানে একবার যেহেতু না করে দিয়েছে হাজারবার বলেও ওকে রাজি করানো যাবে না। যদি কেউ রাজি করাতে পারে সে হলো বর্ষণ।

বর্ষণ মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলছে যাহ্ বাবা, এদের আজ হয়েছে টা কি? একবার নিপু বলছে যাবোনা আবার পরী বলছে যাবেনা। নিপুর না যাওয়ার কারণ টা তো জেনে ওকে রাজি করালাম কিন্তু পরীর না যাওয়ার কারণ টা কি?
ভাবতে ভাবতেই বর্ষণ বর্ষার রুমে চলে আসে। এসে দেখে এখনো ঘুমোচ্ছে বর্ষা।
ঘুম থেকে টেনে তুলে বসিয়ে দেয় বর্ষাকে।

বর্ষা বসে ঘুম জরানো কন্ঠে বলে কি হলো ভাইয়া ঘুমোতে তো দাও। রাত ধরে জেগে তো তোমার পরীর গল্প শুনেছি এখন আবার কি বলবে?

বর্ষণঃ এখন যেটা বলবো সেটা শুনতে হলে তো আগে ঘুম থেকে জাগতে হবে তোকে।

বর্ষাঃ হুম বলো আমি জেগেই আছি।

বর্ষণঃ ওয়াশরুমে গিয়ে সাওয়ার নিয়ে রেডি হয়ে নে। বিয়ে বাড়ি যেতে হবে।

বর্ষাঃ আমি যাবোনা ভাইয়া তোমরা যাও।

বর্ষার কথা শুনে বর্ষণ বললো যাবিনা কেনো? নিপু তো যেতে চায়নি ঐ খুত খুঁতে চাচির জন্য। কিন্তু তোর কি হলো?

বর্ষাঃকিছু হয়নি আমার, এমনিতেই ভালো লাগছে না তাই যেতে ইচ্ছে করছে না। তোমরা যাও আমি মামনীর কাছে থাকি।

বর্ষণঃ মানেটা কি হুম মামনির কাছে থাকবি মানেটা কি! তোকে রেখে আমি বিয়েতে যাবো? ওখানে গিয়ে সবার সাথে আনন্দ মজা করবো তাও আবার তোকে ফেলে?

বর্ষাঃ কেনো? তোমার পরী কি এটাও বলে দিয়েছে যে আমায় ছাড়া তোমার কোথাও যাওয়া চলবে না। নাকি বলেছে আমাকে এতোটা কেয়ার করতে হু..

বর্ষণঃ হ্যা বলেছে তো! আমার পরী বলেছে তোকে ছাড়া কোথাও না যেতে। যেখানে যাই সেখানেই যেনো নিয়ে যাই।

বর্ষাঃ তাহলে তো আরও ই যাবোনা। তুমি যাও তোমার পরীকে নিয়ে।

বর্ষনঃ সে যাবি কি না যাবি পরে ভাবা যাবে আগে সাওয়ার নিয়ে আয় যা বলে বর্ষণ বিছানায় বসে রইলো।

বর্ষা আর কোনো উপায় না পেয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। সাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে আসে। হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকিয়ে চিরুনি করছে।
….

এদিকে সবাই রেডি হয়ে ওয়েট করছে বর্ষণ আর বর্ষার জন্য। নিপুকে পাঠালো ওদের দুজনকে ডাকতে।
নিপু এসে বললো ভাইয়া সবাই তোমাদের জন্য ওয়েট করছে নিচে।

বর্ষণ নিপুকে বলে তুই যা আমি আসছি। তারপর বর্ষণ বর্ষার কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো শোন, আমি নিচে থেকে ঘুরে এসে যেনো দেখতে পাই তুই রেডি হয়ে গেছিস। আমায় যেনো আর কিছু বলতে না হয় বলেই নিচে চলে যায়।

বর্ষা একটু সময় ভেবে নিয়ে দৌড়ে চলে যায় রেডি হতে।

বর্ষণঃ নিচে গিয়ে রাফসানকে বলে তোরা বেরিয়ে পর আমরা আসছি কিছুক্ষণের মধ্যেই।

রাফসান তখন বললো একসাথেই বের হবো তোরা আয়। আমরা ওয়েট করছি।আমি তোদের ছাড়া একা ওখানে যেতে চাইনা। তোকে আর আর বর্ষাকে ছাড়া তো নয় ই।

বর্ষণঃ দেখ রাফসান তোরা সবাই মিলে বের হতে হতে আমরা রেডি হয়ে যাবো। ভাবিদের বাসায় তোরা পৌঁছোতে পৌঁছোতে আমরাও পৌঁছে যাবো কোনো টেনশন করিস না বেরিয়ে পর।

সবাই বেরিয়ে পরলে বর্ষণ উপরে গিয়ে তো অবাক। বর্ষা রেডি হয়েছে বিয়ে বাড়ি যাওয়ার জন্য।

মেরুন কালারের গাউন পরেছে একপাশে ওড়না দিয়েছে।লম্বা খোলা চুল কিছু সামনে দিয়েছে আর বাঁকি চুলগুলো পিঠের উপর ছেড়ে রাখা চুলের একপাশে লাল গোলাপ গুঁজে রাখা। গলায় সিম্পল ডায়মন্ড নেকলেস।

বর্ষণকে দেখে বর্ষা রুম থেকে বেরিয়ে এসে সোজা গাড়িতে বসে পরে।
বর্ষণ ও হাসতে হাসতে বর্ষার পিছু পিছু গিয়ে গাড়িতে বসে।
বর্ষা সারাটা রাস্তা একটা কথাও বলেনি বর্ষণের সাথে।

লোকেশন দিয়েছে রাফসান। বর্ষণ লোকেশন অনুযায়ী পৌঁছে যায় ঈশিতার বাসায়। গিয়ে দেখে গেটে রাফসানরা সবাই দাঁড়িয়ে আছে। দেখে বোঝা যাচ্ছে এইমাত্রই এসে পৌঁছালো।
গাড়ি থেকে বর্ষণ নামতেই বর্ষাও নেমে দাঁড়ালো। বর্ষণ বললো শোন! দুরে কোথাও যাবিনা একা একা। আশেপাশেই থাকবি।
বর্ষণের কথা শুনে বর্ষা মাথা নেড়ে সায় দিলো।

সবাই ভেতরে গেলো।বর্ষা গেট দিয়ে ঢোকার সময় একটা ছেলে ওর পিছু নেয়। নাম জিজ্ঞেস করে, পরিচয় জিজ্ঞেস করে আর ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকে সেটা দেখে বর্ষার অসস্থি হয় যার কারণে বর্ষা গিয়ে বর্ষণের এক হাত চেপে ধরে হাঁটতে থাকে।

বর্ষার এমন কান্ড দেখে বর্ষণ বর্ষাকে ফিসফিস করে বলে কি করছিস বর্ষা! এমন গায়ে পরে হাঁটছিস কেনো? আমার পরি তোকে সাথে নিয়ে আসতে বলেছে কিন্তু তোকে নিয়ে এভাবে হাঁটতে বলেনি।

চলবে….

হ্যাপি রিডিং ?

#তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা
#Hridita_Hridi
#পর্ব২৩

বর্ষণের কথা শুনে বর্ষা বললো তোমার পরী নিশ্চয়ই এটা বলেনি, আমাকে কোথাও নিয়ে গিয়ে বিপদে ফেলতে।

বর্ষণঃমানে! কিসের বিপদ? কি হয়েছে?
বর্ষা বর্ষণের হাত ছেড়ে দিয়ে বললো না কিছু হয়নি আমি ঠিক আছি।

বর্ষণ ভ্রু কুচকে তাকালো।বর্ষা পাশ কেটে চলে যায় অন্য দিকে।
বর্ষণ গিয়ে ঐ ছেলেটিকে বললো এই যে ভাই অন্যের বউয়ের দিকে নজর দাও কেনো? ছেলেটা অবাক হয়ে বললো কি যা তা বলছেন। বর্ষণ বললো যা তা নয়, ঠিক তাই।তুমি যাকে ফলো করছো, যাকে ডিসটার্ব করছো, যার দিকে তাকিয়ে আছো সে আমার Wife বুঝলে? ওর থেকে সবসময় দুরত্ব বজায় রাখবে বুঝতে পারছো?

ছেলেটিঃ ভাইয়া একটা প্রশ্ন ছিলো যদি ঠিকঠাক বলতেন!
বর্ষণঃ কি প্রশ্ন?
ছেলেটিঃ না বলছি, ওনার সাথে আপনার বিয়ে হয়ে গেছে নাকি এঙ্গেজড হয়ে আছে।এঙ্গেজড হলে নো প্রবলেম বিয়ে তো আর হয়নি। একটা চান্স তো নিতেই পারি।

বর্ষণঃ দাঁতে দাঁত চেপে ছেলেটার শার্টের কলার চেপে ধরে বললো নেওয়াচ্ছি তোকে চান্স।জীবন থাকলে তবেই না চান্স নিবি!

বর্ষণের এমন কান্ড দেখে সবুজ দৌড়ে এসে ছেলেটাকে বর্ষণের হাত থেকে বাঁচায়। সবুজ বললো কি করছিস কি বর্ষণ! পাগল হয়ে গেছিস নাকি! যেভাবে ধরে রেখেছিস মরে যাবে তো ছেলেটা।

বর্ষণঃ বললো মেরেই তো দিতে চাই ওকে। ওর এতোবড় সাহস হয় কি করে আমার কলিজায় হাত দেওয়ার! আমার পরীর দিকে কেউ তাকালে তার চোখ দুটি তুলে নিবো আমি।
সবুজ অবাক হয়ে বললো তুই পরীকে কোথায় পেলি এখানে?
বর্ষণ সবুজকে কিছু বলতে যাবে তখনই ছেলেটা এসে বর্ষণের কাছে ক্ষমা চায়। আর বলে আপনি চাইলে আমি আপুর কাছে গিয়েও ক্ষমা চেয়ে নিবো।

বর্ষণঃ ছেলেটাকে থামিয়ে দিয়ে বলে, থাক ওর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে না,ইনফ্যাক্ট আমি চাই তুই ওর ধারে কাছেও না যাস।
ছেলেটা তো ছুটতে ছুটতে বললো ঠিক আছে ভাইয়া তাই হবে।সবুজ ছেলেটাকে ডেকে বললো আরে কোন আপু সেটা তো বলে যাও।কার কথা কে শোনে ছেলেটা তো পালিয়ে বাঁচে আগে।

বিয়ের কাজ, খাওয়া দাওয়া সব কমপ্লিট এখন বউ নিয়ে যাওয়ার পালা। বিদায় পর্ব শেষ করে সবাই গাড়িতে উঠে বসে।
বর্ষা নিপুর সাথে গাড়িতে উঠতে গেলেই বর্ষণ হাত ধরে রাখে। বর্ষা হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হলো।
বর্ষণ ফিসফিস করে বললো বৃথা চেষ্টা করিসনা। এমন কথা শুনে বর্ষা বললো হাতটা কেনো ধরে রেখেছো নিপুরা তো সবাই গাড়িতে উঠে পরলো।

বর্ষণ ডন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো, তো! উঠলে উঠুক তোর প্রবলেম কোথায়!
বর্ষা একটু রেগে বললো প্রবলেম কোথায় মানেটা কি? আমি যাবো না?

বর্ষণঃ আমি কি একবারও বলেছি তুই যাবিনা? কিন্তু তুই ওদের সাথে যাচ্ছিস কেনো? ওদের সাথে কি এসেছিস? আসার সময় যেমন আমি বয়ে এনেছি এখনো আমিই বয়ে নিয়ে যাবো, অন্য কারও ঘাড়ে চাপতে হবে না।

বর্ষাঃ তারমানে তুমি কি বলতে চাইছো! আমি তোমার ঘাড়ে চেপে এসেছি?

বর্ষণঃ সেটা কখন বললাম, আমি তো বলতে চাইলাম যে, যার জিনিস তাকেই নিতে হয়,অন্যের কাছে সেটা বোঝা মনে হয়।
বর্ষা আর কিছু না বলে গাড়িতে উঠে বসে। বর্ষণ গাড়ি স্টার্ট দেবে তখন নিপু এসে সামনে দাঁড়ায়। বর্ষণ গ্লাস খুলে জিজ্ঞেস করে কি প্রবলেম।

নিপু বলে ভাইয়া ঐ গাড়িতে জায়গা হবে না যদি তোমাদের সাথে যাই তাহলে কি প্রবলেম হবে? মানে আমাকে আর সবুজকে সাথে নিয়ে গেলে?

বর্ষণঃ নাহ্ প্রবলেম কেনো হবে উঠে বস।

নিপু গাড়িতে উঠতে যাবে তখন কোথা থেকে রোহিত আর ঋতু এসে বললো আমাদের নেওয়া যায়না শালাবাবু?

বর্ষণ বললো তোমাদের আবার কি প্রবলেম হলো?
রোহিত বললো তেমন কিছু না। তোমরা সবাই এক গাড়িতে যাবে আর আমরা আলাদা যাবো ব্যাপারটা কেমন লাগেনা বলোতো!

বর্ষণ বললো হুম সেটাই তো! ওকে তোমরাও উঠে পরো আস্তে করে বলে আমার ঘাড়ে।

বর্ষণের কথা শুনে আর তার অবস্থা দেখে বর্ষা মুচকি মুচকি হাসছে।
বর্ষণ বিড়বিড় করে বলে মজা নিচ্ছিস তাইনা? মজা নিচ্ছিস? আমি ও সুযোগ পাই আগে, তারপর বোঝাবো হুমম।

বর্ষা হালকা গলা ঝাড়া দিয়ে বলে চলো চলো গাড়ি স্টার্ট দাও লেট হয়ে যাবে তো।

বর্ষণ ড্রাইভ করছে আর সবাই বসে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। বর্ষণ কথা বলছে না দেখে রোহিত মাঝে মাঝে বর্ষণের কাছে দু একটা কথা জিজ্ঞেস করছে,বর্ষণ তার জবাবে শুধু হু, হা না এমন জবাব দিচ্ছে।

বর্ষণের গাড়ি আগে থাকায় বর্ষণের গাড়িটা বাসার সামনে আগে পৌঁছায়। গাড়ি পার্ক করতে না করতেই সবগুলো গাড়ি থেকে নেমে দিলো এক দৌড়। বর্ষণ তো কিছু বুঝতেই পারলো না তার আগেই সবগুলো দৌড়।

শুধু দৌড়াতে পারলোনা বেচারি বর্ষা। যেইনা দৌড় দেবে অমনি বর্ষণ ধরে ফেলে আর বলে মাথা কি পুরোই খারাপ হয়ে গেছে? নাকি বরের কোলে চেপে বাঁকি জীবন কাটানের ইচ্ছে হয়েছে কোনটা?
বর্ষা আর কিছু না বলে চুপচাপ ভদ্র মেয়ের মতো ভেতরে যায়।

রাফসান বউ নিয়ে বাসায় আসে সকল আচার অনুষ্ঠানের পর ঋতু নিপুরা নতুন বউকে নিয়ে বাসর ঘরে যায়।আর রাফসান নিচে সবার সাথে কথা বলছে। একটু পরে বর্ষণ রাফসানকে নিয়ে উপরে আসে। বাসর ঘরে ঢুকতে গিয়ে দেখে দরজা লক। রাফসানের সাথে তো বর্ষণ ও অবাক, দরজা লক করে রেখেছে কে!

রাফসান বর্ষণের দিকে আর বর্ষণ রাফসানের দিকে তাকিয়ে আছে। এর অর্থ হলো এরা কেউ ই জানেনা দরজা লক কেনো। বর্ষণ দরজা নক করতেই ভেতর থেকে নিপু বলে ভাইয়া আমাদের কিছু আবদার আছে রাফসান ভাইয়ার কাছে সেটা পুরন করলেই আমরা রাফসান ভাইয়াকে রুমে ঢুকতে দিবো তা না হলে ঢুকতে পারবেনা। সবুজ বলে ভাই রাফসান তুমি আজ ফেঁসে গেছো।

সবুজের কথা শুনে বর্ষণ বলে কিরে সবুজ! তুই ভেতরে কি করিস? তুই থাকতে ওরা দরজা লক করলো কি করে?

সবুজঃ আর বলোনা ভাই আমার কথা এরা শুনেনি। আর আমি তো ভেতরে আছি ভাবিকে দেখেশুনে রাখার জন্য যেনো এরা কেউ কিছু বলতে না পারে নতুন ভাবিকে। হাজার হোক রায় বাঘিনী ননদিনী তো এরা।

রাফসান এবার নিপুকে বলে তা বোন তোমাদের কি আবদার আছে বলো শুনি।

ঋতু বললো আমাদের সবাইকে তোর বিয়ে উপলক্ষে কিছু টাকা মানে একদম সীমিত পরিমানে পেমেন্ট করতে হবে, এটাকে তুই ট্রিট হিসেবে মনে করতে পারিস।

বর্ষণঃ তা আপু তোদের কতো টাকার আবদার বলে ফেল। শুনি তোদের সীমিত আবদার টা।

নিপুঃ অনলি সেভেনটি থাউজেন্ড।

রাফসানঃ এ্যা…..

ঋতুঃ এ্যা নয় হ্যা।

রাফসানঃ আপু এটা তুই করতে পারলি? আমি না তোর ছোট ভাই! একমাত্র আদরের ছোট ভাই! শোন, তার থেকে ভালো একটা ট্রিট দেই তোদের। আগামীকাল সবাই মিলে রেস্টুরেন্টে খেতে যাবো তার পুরো বিল আমি দিবো।

রোহিতঃ না, না, শালাবাবু তা হবেনা। তুমি বরং এই ট্রিট ই দাও আর রেস্টুরেন্টের বিষয়টা আমি দেখে নিবো।

বর্ষণঃ আরে দুলাভাই আপনিও!

রোহিতঃ কি আর করবো শালাবাবু, আমাকেও তো দিতে হয়েছিলো বলো?

রাফসানঃ একটু কম টম করে বলনা আপু! কতো ঝামেলা পোহাতে হলো বলতো? আচ্ছা ঠিক আছে দশ হাজার দিবো খুলে দে দরজা টা।

নিপুঃ তাহলে আজ আর ভেতরে আসতে হবেনা ভাইয়া দরজার ওপাশেই থেকে যাও। আমরা বরং নতুন ভাবির সাথে ঘুমাই সবাই মিলে।

রাফসানঃ এই না না বোন এমন কথা বলোনা! আচ্ছা বিশ হাজার দিবো এবার তো খুলে দাও দরজাটা।

ঋতুঃ শোন, আর একবার যদি দশ হাজার দশ হাজার করে বাড়াস টাকা, তাহলে কিন্তু ডাবল করে দিবো।

বর্ষণঃ আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে, ডাবল করতে হবেনা। আমি দুই তরফ থেকে একটা ডিল করে দেই।
পঞ্চাশ হাজার টাকা ফিক্সড এবার দরজা খুলে দাও।

রাফসান চোখ বড় বড় করে বলে পঞ্চাশ হাজার…
রাফসানের কথা শুনে বর্ষণ বলে তাহলে তুই সারা রাত এখানে দাঁড়িয়ে থাক আর টাকা ডাবল করতে থাক আমি গেলাম বলে পা বাড়াতেই রাফসান বলে না না ভাই যাসনা ঠিক আছে তুই যা বলবি তাই হবে।

ঋতুঃ কথা পাক্কা তো!

বর্ষণঃ হুম একদম ক্যাশ, আমি নিজে হাতে টাকা নিয়ে তোকে দিবো আপু।এবার খুলে দে। বেচারা আর কতক্ষণ বাইরে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে বল।

নিপু তখন ভেতর থেকে বলে কিন্তু ভাইয়া চাবি তো আমাদের কাছে নাই ওটা তো…..

চলবে……

হ্যাপি রিডিং ?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here