সাঁঝক বাতি,০২,০৩
নূরজাহান আক্তার (আলো)
[০২]
প্রণয়ের অসংখ্য রুপ। ক্ষেত্রবিশেষ হাসি কান্নার কারণও বটে। তবুও এব্যাধিতে অাক্রান্ত শতশত মানব। দিনশেষে কেউ হাসে, কেউ পুড়ে। নতুবা
প্রাণনাশের পন্থা অবলম্বন করে। তবে হাস্যকর হলেও, অনেকে লোকসম্মুখে নিদারুন অভিনয় করে। এত ত্রুটিশূন্য অভিনয় বোঝাও মুশকিল। যদিও মানবজাতি অভিনয়ে পারদর্শী। এজন্যই
বুঝি; অভিনয়কে তারা স্বকীয়ভাবে কাজে লাগায়। শুধুমাত্র ধরণটাকে ভিন্নরুপে রুপান্তরিত করে।
_____________________________
সিগ্ধ সকাল! পাখিদের গুঞ্জরণ ভেসে আসছে।
অনেক মানুষ রাস্তায় হাঁটতে নেমে পড়েছে। কেউ শখে কেউ বা বাধ্য হয়ে। দিগন্ত হেঁটে মসজিদ থেকে বাসায় ফিরছে। সচারচর মসজিদে সালাত আদায় করে সে। এতে প্রশান্তি অনুভূত হয়। সুখ সুখ লাগে। এখন যেমন হচ্ছে। চেনা মানুষদের সঙ্গে কথা বলে ধীর পায়ে হাঁটছে। মনটাও ফ্রেশ। কিন্তু বাসার কাছে আসতেই সে ভ্রুজোড়া কুঁচকে নিলো। গেটের সামনে বাইকে একটা ছেলে বসে আছে। সাধারনত বাসায় সুন্দরী মেয়েরা থাকলে বখাটেরা উঁকিঝুঁকি মারে। আশেপাশেও ঘুরঘুর করে। ওরা দুই ভাই! প্রশান্ত আর দিগন্ত। বোন নেই। মেয়ে বলতে সর্বদা মা আর ভাবি থাকেন। গতকালকে শিফা এসেছে। শিফাকে তো চেনার কথার না। বখাটের এত সাহসও হবে না। কারণ ওরা স্থানীয় সবাই চেনে। তাহলে এই ছেলে কে? আর এখানে কেন? দরকারে এসেছে? নাকি বিপদে পড়েছে? বাইকের তেল শেষ হতেও পারে।বেশভূষা উচ্চমানের তবে দেখতে অগোছালো লাগছে। দিগন্ত মনমতো যুক্তি না কষে এগিয়ে গিয়ে বলল,
-‘কাউকে খুঁজছেন?’
-‘শিফাকে ডেকে দেওয়া যাবে?’
-‘তা রাস্তায় কেন? বাসায় চলুন।’
-‘না, অন্যদিন।’
দিগন্ত এত বলেও ছেলেটাকে নিয়ে যেতে পারল না। তাই বাসায় ডুকে শিফাকে খুঁজে, ডাকল। শিফা রান্নাঘরে শাশুড়ির সঙ্গে কাজ করছিল। খুব সকালেই উঠেছে। এটা ওর পুরনো অভ্যাস! শিফা দিগন্তের সামনে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাল। ওর দৃষ্টির মানে বুঝে দিগন্ত জানাল, বাইরে কেউ ওর অপেক্ষায় আছে। হয়তো চেনা কেউ। শিফা রান্নাঘরের দিকে একবার তাকিয়ে বলল,
-‘আমি কী যাবো?’
-‘রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলা বেমানান। উনাকে বাসায় নিয়ে এসো।’
-‘আচ্ছা।’
শিফা ওড়নাটা মাথায় টেনে বেরিয়ে গেল। দিগন্ত ড্রয়িংরুমে বসল। ব্যাপারটা সে স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছে। শিফা বাইরে গিয়ে দেখে, এটা স্বপ্নীল। ওকে এখানে মোটেও আশা করে নি সে। ছেলেটা এমন কেন? দিগন্তের বাড়ির লোক দেখলেই বা কী ভাববে? তার তো বোঝা উচিত, আবেগ দিয়ে জীবন চলে না। বাস্তবতা গ্রহন করা বুদ্ধিমানের কাজ। সেটা যতই কষ্টসাধ্য হোক! না, সুযোগ দেওয়া যাবে না। নয়তো পাগলামি বেড়ে যাবে।
শিফা দ্রুতপায়ে সেদিকে এগিয়ে গেল। রাগটাকে দমন করে কঠোর কন্ঠে বলল,
-‘বিরহ সহ্য করতে না পারলে, বিষ খান। তবুও ভুলেও আমার সামনে আসবেন না। কী, এক্ষুণি
বিদায় হোন।’
স্বপ্নীল ছলছল চোখে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
বুকে অসহ্য যন্ত্রনা হচ্ছে। সারারাত নিরবে অশ্রু
ঝরিয়েছে। নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। অথচ এই মেয়েটা বুঝেও বুঝছে না। নিষ্ঠুরতা কেন শিফা? এমন তো ছিলে না? আমার কষ্টটা অনুভব করে তো দেখো, কতটা কষ্ট বুকে জমেছে। ভালোবাসি
কথাটা হয়তো বলা হয় নি। সিগ্ধ অনুভূতিগুলো কখনো প্রকাশও করি নি। তুমি তো সব জানতে, বুঝতেও। তাহলে সব জেনে কেন এত নিষ্ঠুরতা? এতবছরের যত্ন করে গড়া আমার ভালোবাসাকে,
এভাবে হেলা করো না। মানতে পারছি না। বুকে অসহ্য যন্ত্রনা হচ্ছে। মুখে বলি নি বিধায় শাস্তি? শাস্তিটা আমার শান্তি কেড়ে নিচ্ছে, একটু সদয় হও। ব্যাপক কষ্টে দগ্ধ হচ্ছি। চোখের তৃষ্ণা আর মনের খোরাক মিটাতে বেহায়া হয়ে ছুটে এসেছি।
স্বপ্নীল মনে মনে এসব বললেও মুখে বাক্শূন্য।
শিফা আশেপাশে তাকিয়ে সতর্ক হয়ে নিলো।না, আর দাঁড়ানো ঠিক হবে না। ভুল বুঝতে পারে।
তাছাড়া রাস্তায় কথা বলা দৃষ্টিকটু। স্বপ্নীল কিছু বলার আগে শিফা বলল,
-‘সাফার ভাই বিধায় ভদ্রতা দেখাচ্ছি। নয়তো
বুঝিয়ে দিতাম। এখানে যেন আর না দেখি।’
-‘তোমার কেউ হই না?’
-‘না।’
-‘মেয়েরা তো নরম মনের হয়। তাহলে তুমি এত
নিষ্ঠুর কেন শিফা?’
-‘ফালতু কথা বন্ধ করুন। না আপনার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল, না হবু বউ ছিলাম। সম্পর্ক ছিল, সাফার ভাই হিসেবে। সাফ নেই, সম্পর্ক’ও শেষ। এখন খেঁজুরে আলাপের সময় নেই।এবার বিদায় হোন।’
শিফা একরাশ বিরক্ত নিয়ে তাকিয়ে স্থান ত্যাগ করল। অহেতুক কথা বাড়ানোর মানেই হয় না।
সে আর পিছু ফিরল না। সে সব জেনে, বুঝে,
স্বজ্ঞানে করেছে। তাই পিছু ফিরে মায়া বাড়ানো
অনর্থক। যা ইচ্ছে বলে চলে গেল। অপরজনকে কিছু বলার সুযোগও দিলো না। স্বপ্নীল দুইহাতে চোখ মুছে বাইকে উঠে বসল। ঝাপসা দু’চোখে রাস্তা দেখা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। কত চেষ্টা করেও অশ্রু থামাতে পারছে না। মনটা পুড়ছে বিধায় দু’চোখ ব্যাকুল হয়ে কাঁদছে। সেও কাঁদছে, কষ্ট পাচ্ছে। তাহলে ওর মানুষটা বুঝছে না কেন? সে কেঁদে বুকে মুখ লুকাচ্ছে না কেন? একবার ডেকে বলছে না কেন, স্বপ্নীল আমি তোমাকেই চাই।’
সে আর ভাবতে পারছে না। পুরো শরীরের শক্তি যেন কেউ শুষে নিয়েছে। মস্তিষ্কও ফাঁকা লাগছে।
স্বপ্নীল একবার গেটের দিকে তাকিয়ে, ছুঁটল এক অজানা পথের দিকে। মনটা বড্ড অশান্ত।শান্তি খুঁজতে হবে। এখন তার শান্তির প্রয়োজন। তা
নয়তো দম আটকে মারা যাবে। সিগ্ধ সকালটা আজ বিষাদপূর্ণ। চারিপাশটা যেন বিষাদে ছেঁয়ে
গেছে। শাস্তি আর সুখের আকাল। হয়তো তার মন পুড়ছে তাই সবকিছু এমন লাগছে। কথাতে আছে, ‘যার পুড়ে সে বুঝে। বাকিরা মজার পন্থা খুঁজে।’ ওর ক্ষেত্রেও তাই। স্বপ্নীল অনেক ভেবে বোনের কাছে যাচ্ছে। আদরের বোন চিরনিদ্রায় মগ্ন। শত ডাকলেও আর আসবেনা। কষ্ট পাচ্ছে দেখে বলবে না, ‘ভাইয়া কষ্ট পাস না। শিফুকে আমি বকে দিবো।’ একথাটা আর কখনো শোনা হবে না। কারণ বলার মানুষটা এখন অন্ধকার
কবরের বাসিন্দা।
শিফা বাসায় ঢুকে রান্নাঘরে গিয়ে পুনরায় কাজে হাত লাগাল। জা, শাশুড়ির সঙ্গে খাবারগুলো সাজিয়ে রুমে গেল। একটু ফ্রেশ হওয়া দরকার।
দিগন্ত অফিসে যাবে। গোসল সেরে কেবল বের হয়েছে। শিফাকে দেখে বলল,
-‘ছেলেটা এসেছে?’
-‘না, সে আসবে কেন?’
-‘পরিচিত কেউ, আসলে সমস্যা কোথায়?’
-‘সাফার ভাই। বিয়ের কথা শুনে দেখা করতে এসেছে।’
-‘সাফারা যখন ভাড়া থাকত, তখন ছেলেটাকে দেখিনি।’
-‘ওদের বাসায় কাজ চলছিল। তাই পাঁচ মাসের মতো এখানে থেকেছে। আর ভাইয়া কানাডাতে থাকত। সাফার মৃত্যুর খবর শুনে কিছুদিন হলো এসেছে।’
দিগন্ত আর কথা বাড়াল না। হঠাৎ বিয়ে হয়েছে, দেখা করতে আসা স্বাভাবিক।আর সাফার ভাই, শিফার পূর্ব পরিচিত। সাফা নেই! শিফাকে খুব
স্নেহ করে তাই হয়তো এসেছিল। দু’জনেই ফ্রেন্ড।
নেগেটিভ ভাবার কিছু নেই। দিগন্ত এই ব্যাপারে অযথা জলঘোলা করল না। নির্বিরোধী মানুষ, ঝামেলা থেকে দশহাত দূরে থাকে। এমনই সে।
শিফা ফ্রেশ হয়ে শাশুড়ির ডাকে বেরিয়ে গেল। একটুপরে, দিগন্তও রেডি হয়ে নাস্তার টেবিলে বসল। সবাই উপস্থিত রয়েছেন। শিফা আর নিহা (জা) মিলে খাবার বেড়ে দিচ্ছে। টেবিলে হরেক রকমের নাস্তা সাজানো, যে যেটা খাবে। প্রশান্ত নিহাকে পানি দিতে ইশারা করে শিফাকে বলল,
-‘শিফা কোনো সমস্যা হচ্ছে না তো?’
-‘জি না ভাইয়া।’
তখন দিগন্তের বাবা কেশে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বললেন,
-‘দিগন্ত, বিয়ের অনুষ্ঠানটা করে ফেলতে চাচ্ছি। বিয়ের কথা সবাইকে জানানো দরকার।’
-‘জি বাবা। যেটা ভালো হয় করুন।’
শিফা নির্বাক হয়ে শুনল। কিছু বলার প্রয়োজন মনে করছে না। উনারা পরশুদিন অনুষ্ঠান সেরে ফেলতে চাচ্ছে। দিগন্ত মতামত জানিয়ে একবার শিফার দিকে তাকিয়ে রুমে চলে গেল। শিফাও ‘আসছি’ বলে রুমে গেল। দিগন্ত তখন রুমের
যাওয়ার ইশারায় করেছে। হয়তো কিছু বলবে।
শিফা রুমে ঢুকতেই দিগন্ত বলল,
-‘অনুষ্ঠানের ব্যাপারে তোমার মতামত কী?’
-‘মতামত নেই।’
-‘কি কি লাগবে নোট করে দাও। আসার সময় নিয়ে আসব।’
শিফা মৃদু হেসে কাগজে কিছু লিখে দিগন্তের হাতে ধরিয়ে চলে গেল। দিগন্ত ওর যাওয়ার দিকে একবার তাকিয়ে চিরকুট খুলে দেখে,
-‘আসার সময় হাসি কিনে আনবেন। আর হ্যাঁ,
হাসির মালিক যেন দিগন্ত’ই হয়। অন্যের হাসি আমার সুট করে না। মনগহীনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
দেখা দেয়। এর ফলাফলও ভয়ংকর হয়। এজন্য দিগন্তের হাসিই লাগবে।’
চিরকুটটা পড়ে দিগন্ত মুচকি হাসল। এই হাসিতে কৃত্রিমত্তা নেই। মনে অন্তস্থল থেকে হাসির জন্ম,
এজন্য বুঝি এতটা প্রাণবন্ত। আর মেয়েটা সত্যি পাগলি। ওর কার্যকলাপে বেশ বুঝেছে। নয়তো বিয়ের জন্য এত পাগলামি কেউ করে। এজন্য প্রথমবার বিয়েতে না বলে, দ্বিতীয়বার ফেরাতে পারে নি। এত ভালোবাসা ফিরানোর সাধ্য ওর নেই। তবে মেয়েটা খুব শক্ত ধাঁচের। আর পাঁচটা মেয়ের মতো আবেগপ্রবণ নয়। বুদ্ধিমতীও বটে। ‘সুন্দরী মেয়েরা বোকা হয়।’ এই যুক্তিটা শিফার ক্ষেত্রে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বরং প্রমাণ করছে, ‘মেয়েদের মনও শক্ত হয়। এতটা শক্ত, না কারো অশ্রুতে ভিজে না আর্তনাদে গলে।’
ওদের পথচলা কেবল শুরু। শক্তমানবীকে সিক্ত প্রণয়ে কাঁবু রাখবে। এসব ভেবে দিগন্ত পুনরায় মুচকি হাসল। তখন শিফা পর্দার আড়াল থেকে মুখ বের করে বলল,
-‘হুম, হুম, এই কোম্পানিরই হাসি লাগবে।’
-‘পুরো কোম্পানিই তোমার। শোন..!’
দিগন্তকে কিছু বলতে না দিয়ে শিফা চলে গেল।
ক্ষুধা পেয়েছে। খাওয়া দরকার, নয়তো ওর মাথা কাজ করবে না। শাশুড়ির পাশে বসে খাওয়াতে মনোনিবেশ করল। আহা, পেট শান্তি তো দুনিয়া শান্তি। আর দুনিয়া শান্তি করতে বুদ্ধির দরকার।
আর খাবার বুদ্ধি বাড়তে সহায়তা করে। অর্থাৎ
প্রয়োজন খাবার ও বুদ্ধি। তবেই না বাজিমাত!
ততক্ষণে দিগন্ত ঠোঁট কামড়ে হেসে চিরকুট’টা বুকপকেটে রেখে বেরিয়ে গেছে। তার ভাষামতে, মেয়েটা অদ্ভুত! তবে চিরসঙ্গী হিসেবে মন্দ নয়।
শিফার ওর মামার সঙ্গে কথা বলে ফোন কাটল।
ওর ভ্রুজোড়া কুঁচকে আছে। কপালে দুই আঙ্গুল ঘষে ভাবনায় মগ্ন। তখন ওর শাশুড়ি রুমে এসে বললেন,
-‘শিফা, কি ভাবছো?’
-‘ভাবছি, আপনাদের ঘোল খাওয়াব।’
-‘মানে?’
-‘না মানে, মামার সঙ্গে কেবল কথা বললাম। উনি বললেন ঘোল স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী।
এতে নাকি ঘুম ভালো হয়। একাধিক মিনারেলস ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্সে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়। কোলেস্টেরলের মাত্রা এবং ব্লাড প্রেসার কমায়। এজন্য রোজ একগ্লাস করে ঘোল খাওয়া দরকার। আমার মামি একজন ডাক্তার। এজন্য কথায় কথায় ঘোলের কথা উঠল আর কি!’
কথাগুলো বলে শিফা মুচকি হাসল। ওর শাশুড়ি
মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালেন। হুম, আসলেই ঘোল খাওয়া দরকার। একজন ডাক্তার অহেতুক কথা বলবে না। একগ্লাস ঘোলের উপকারিতা, উনি জানতেন না। এজন্য বংশে ডাক্তার থাকা ভালো। কত কিছু জানা যায়, শেখা যায়। শিফা
শাশুড়িকে বুঝাতে পেরে পুনরায় হাসল। তৃপ্তির হাসি। এমন মিষ্টি পুত্রবধূ পেয়ে শাশুড়িরও মনে মনে খুশি হলেন।
To be continue……..!!
-‘সাঁঝক বাতি-‘
নূরজাহান আক্তার (আলো)
[০৩]
শিফা আর ওর শাশুড়ির গল্প এখনো চলমান।
তবে গল্পের প্রসঙ্গের বদল ঘটেছে।এখন চলমান
প্রসঙ্গ; উনাদের পরিবার। এই যেমন, দিগন্ত খুব বাধ্য ছেলে! ঝোঁট-ঝামেলার মধ্যে নেই! বাসায় কখনো অভিযোগ আসে না। ছোট থেকেই শান্ত প্রকৃতির। নরম মনের। তবে হ্যাঁ, দাবা খেলায় বেশ পারদর্শী। কারো থেকে হেরেছে এমন রেকর্ড নেই। ওদের বাবা আর দিগন্ত উনাদের ব্যবসায় ভালোই সুনাম কুড়িয়েছে। আর প্রশান্ত প্রাইভেট হসপিটালে প্রধানের দায়িত্বে নিযুক্ত! সেও তার দায়িত্বে অটল। হসপিটালের মালিক ডেনমার্কে
থাকেন। ওদের বাবার বন্ধু! উনি নিজে দায়িত্বটা প্রশান্তকে দিয়েছেন। আর নিহা তেমন কিছু করে না। পড়াশোনা, চাকরি, কোনোটাই পছন্দ নয়।
গৃহকর্মরই তার ভালো লাগে। তাই উনার মতো সেও গৃহিণী। শিফা এতক্ষণ চুপ করে সব শুনে বলল,
-‘আন্টি, আমার একটু বাইরে যাওয়া দরকার।’
ইয়ে মানে..!
কথাটা বলে মাথানিচু করে ফেলল। এমনভাব
যেন লজ্জায়, মরি! মরি! শাশুড়ি হেসে যাওয়ার অনুমতি দিলেন। মেয়েদের কত কী লাগে৷ সব কী আর সবাইকে বলা যায়! শিফা ঝটপট উঠে,
শাশুড়ির থেকে শাড়ি নিয়ে পরে বেরিয়ে গেল।
কিছু জরুরী কাজ আছে, না করলেই নয়। অটো নিয়ে সে সাফার বাসায় চলে গেল। এইতো বিশ মিনিটের পথ। স্বপ্নীল দরজা খুললে শিফা ওকে সরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করল। স্বপ্নীলের ঠোঁটের কোণে হাসির ঝলক স্প্ষ্ট। সে মনে প্রাণে চাচ্ছে, ওর ভাবনা যেন সত্যি হয়। শিফা শুধু একবার বলুক, ‘এসেছি, গ্রহণ করো আমায়।’
সাফার বাবা-মা ড্রয়িংরুমে বসে ছিলেন। শিফা
উনাদের সামনে দাঁড়িয়ে বলল,
-‘মামানি, কালকে আমার বিয়ের অনুষ্ঠান করা হবে। আব্বু তোমাদের বলবে। আমিও এসে বলে গেলাম, অপেক্ষায় থাকব।’
শিফা কারো জবাব না শুনে সাফার রুমে প্রবেশ করে দরজা আটকে দিলো। সাফার ফটোফ্রেমের হাতে তুলে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল। কাঁদল না!
তবে স্বাভাবিকভাবে বলল,
-‘তোর ভাইকে আমার পথ থেকে সরতে বল।
নয়তো তাকে মূল্য চুকাতে হবে।’
তখন স্বপ্নীল বেলকনি দিয়ে রুমে প্রবেশ করল। শিফার কথার জবাবে সেই প্রত্যুত্তর করল,
-‘চুকাতে প্রস্তুত, তুই আমার হয়ে যা।’
-‘ভালোবাসো আমাকে?’
-‘প্রচন্ড!’
-যা চাইব দিবে?’
-‘একবার চেয়ে তো দেখ।’
-প্রমিস।’
-‘পাক্কা, প্রমিস।’
-‘আমার পথ থেকে সরে যাও। নয়তো তুমিও মারা পড়বে।’
স্বপ্নীল এবার রেগে ওকে দেওয়ালে সাথে চেপে ধরল। মেয়েটা এবার অতিরিক্ত করছে। ওর’ও ধৈর্য্যসীমা বলে কিছু বলে আছে৷ আর কত সহ্য করবে? ওর বিয়ের দাওয়াত দিতে এসেছে। অথচ
একবারও ভাবে নি, একথা শুনে স্বপ্নীলের কেমন লাগবে? কষ্টে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মারতে এই মেয়ে উঠে পড়ে লেগেছে। কেন এত শাস্তি? শুধু ওকে ভালোবাসার অপরাধে? স্বপ্নীল শিফার দুই গাল শক্ত চেপে ধরে হিসহিসিয়ে বলল,
-‘আমরা তোর হাতে মোয়া, হুম? দিগন্ত আর আমার জীবন সস্তা? আমরা তুচ্ছ? ওই ছেলেটা কি করেছে, তাকে কেন জড়ালি? কেন আমাদের
সাফার করাচ্ছিস? কিসের এত তেজ? এসবে কি সুখ পাচ্ছিস?’
শিফা হাসল। স্বপ্নীলে হাতটা কোনোমতে সরিয়ে চোখে চোখ রেখে বলল,
-‘বেশ করেছি, পারলে ঠেকাও।’
-‘শিফা অতিরিক্ত কিছুই ভালো নয়! কেন এমন করছিস? আচ্ছা বল না, তুই কী সত্যি আমাকে ভালোবাসিস না?’
-‘বাসি তো, এখনো ভালোবাসি।’
-‘তাহলে দিগন্তকে বিয়ে করলি কেন?’
-‘ভালোবাসলে বিয়ে করতে হবে? কোথায় লিখা
আছে? অন্যরা করে বিধায় আমাকে করতে হবে,
কেন? আমি করলাম না, তো কি হয়েছে? আজ থেকে তোমাকে ভালোবাসব না। দিগন্ত’ই বেস্ট!
আমাদের অপ্রকাশিত সম্পর্কটাও এখানে শেষ করলাম।’
স্বপ্নীল ওকে ছেড়ে মাথা চেপে ধরে বসে পড়ল।
ভালোবাসে ওকে বিয়ে করল দিগন্তকে।এ’কেমন ভালোবাসা? এই মেয়ে কোন ধ্বংসলীলায় মেতে উঠল? সে কেন বুঝছে না, এটা জীবন! খেলনা নয়। স্বপ্নীলকে বসতে দেখে শিফাও পাশে বসল।স্বপ্নীল মুখ তুলে কাতর সুরে বলল,
-‘এমন কেন করছিস শিফা? জীবন খেলার বস্তু
নয়।’
-‘জানি। কেন করছি, বলব?’
-‘হুম।’
-‘তোমার বোন সাফা দিগন্তকে পছন্দ করত। সে চাইত, দিগন্ত ভালো থাক! সাফা নেই আমি তো আছে। আর সাফার পছন্দের জিনিস হারাতে দি কিভাবে? তুমি তো জানো সাফা আমার প্রাণ? এজন্য দিগন্তকে বিয়ে করলাম।’
-‘সাফা কী বলেছিল, বিয়ে করতে?’
-‘না তো।’
-‘আমি বোকা নই, শিফা।’
-‘বোকা বানানোর সুযোগ পেলে কে বা মিস করে বলো? আমিও করতে চাইলাম, হলে না। কি আর করার।’
স্বপ্নীল বাকশূন্য। তারমানে শিফা সত্যিই বোকা বানিয়ে এড়িয়ে যেতে চাচ্ছিল। কিন্তু কেন? শিফা উঠে সাফার ফোটোফ্রমটা হাতে নিয়ে যেতে যেতে বলল,
-‘খবরদার, তোমার মুখ আর আমাকে দেখাবে না। নয়তো বুক বরাবর ছুরি চালাতে দু’বার ভাববো না। জানিয়ে দিলাম, পরে দোষ দিও না, গেলাম!’
কথাটা বলে শিফা গুনগুন করতে করতে বেরিয়ে গেল। তার মুখে আছে না কষ্টের রেশ; না চাপা আতনার্দের। একদম স্বাভাবিক। যেন কথাগুলো
খুব সাধারণ। এতটাই সাধারণ ওর মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া কাজ করছে না। বরং গাইছে,
-‘আ’ম সো লোনলি, ব্রোক্যান এঞ্জেল।
আ’ম সো লোনলি, লেস সাম টু মাই হার্ট।’
ব্রোক্যান এঞ্জেল! গানটা ওর পছন্দের তালিকার শীর্ষে। সর্বদা গুনগুন করে। শিফা সাফার বাবা মাকে বলে বেরিয়ে গেল। যতক্ষণ থাকবে দু’জনে কাঁদতে থাকবেন। এখন যেমন কাঁদছেন।যতবার সে আসে ততবার’ই কেঁদে বিদায় দেন। হয়তো সাফার কথা মনে হয়। একমাত্র আদরের মেয়ে ছিল। আর বাবা-মা সন্তানকে কখনো ভুলে না।পৃথিবীর সমস্ত সুখ হাতের মুঠোয় পেলেও না।
এদিকে, স্বপ্নীল নিশ্চুপ হয়ে শিফার ভাবনায় মগ্ন। কারণ শিফা বরাবরই খুব কঠোর মনের অধিকারী। খুব সহজে আবেগ কনট্রোল করতে পারে। যেন সব স্বাভাবিক, হাতের মোয়া। এমন ধাঁচের মেয়ে স্বপ্নীল আগে দেখিনি। হয়তো তাই এতটা ভালোবাসে। শিফা অর্থলোভী নয়। আর
হলেও তাকে ছাড়ত না। কারণ দিগন্তের চেয়ে ওর অর্থসম্পদ কম নেই। তাছাড়া, শিফার বাবারও অঢেল সম্পদ। তাই অর্থলোভীর দূর্বল যুক্তিটা ওর সঙ্গে যাচ্ছে না। তবে ছলনাময়ী, হৃদয়হীনা, স্বার্থপর, তো বটেই।
শিফা দ্রুত কিছু কেনাকাটা সেরে বাসায় ফিরল। নয়তো মিথ্যে অজুহাত ফিঁকে হতো। শাশুড়িরও সন্দেহ করত। আসল কাজটা হয়েছে, এই ঢের!
শিফা ফ্রেশ হয়ে নিহার সঙ্গে রান্নার কাজে হাত লাগাল। বাসার কেউ বুয়ার রান্না খায় না। নিহা কিংবা ওর শাশুড়িই রান্না করেন। ওকেও করতে হবে। কথার ছলে যতটুকু বোঝা গেল, নিহা খুব বোকাসোকা। যে যা বলে তাই বিশ্বাস করে। সত্য যাচাই করার রেশ ওর মধ্যে নাই। হ্যাঁ পরহিংসাও
বটে! বাসার কাজের মহিলা কাজ সেরে শিফার সঙ্গে গল্প করলেন। চারবছর ধরে উনি এবাসায় কাজ করেন, এখানেই থাকেন। বিয়ে করেন নি।
মধ্যবয়সী মহিলা, নাম হচ্ছে সুফিয়া। পছন্দের খাবার পান। উনার বক্তব্যেই জানা গেল। পান নিয়ে প্রশান্ত খ্যাচ খ্যাচ করলেও শোনে না। ভাত ছাড়তেও রাজি তাও পান নয়। এটা যেন অমৃত।
দুপুর ছেলেরা কেউ বাসায় আসে না। একেবারে সন্ধ্যায় বা রাতে ফিরে। তাই কেউ বসে না থেকে গোসল সেরে খেয়ে নিলো। শিফাও খেয়ে রুমে গিয়ে ঘুম দিলো। সে বাবা আর ভাইয়ের প্রতি অভিমানে কথা বলে নি। অভিমান কমলে পরে বলবে। এখন অভিমান কবে ভাঙবে; এটা বলা দায়।
দুপুর গড়িয়ে বিকেলের আগমন ঘটল। এখনো রোদ আছে। রোদের তাপ’ও প্রচুর। সূর্য’টা রেগে ভালোই দাপট দেখাচ্ছে। যেন তার দৃঢ় সংকল্প,
‘যতক্ষণ থাকব তেজ নিয়ে’ই থাকব। এই তেজে একেবারে ঝলসে দিবো। তাই লাগতে এসো না।’ বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে, নিহার টানাটানিতে শিফা ঘুম থেকে উঠে ছাদে গেল। রোদ নেই।বেশ লাগছে, ফুরফুরে বাতাস। সূর্যটা নত হয়ে বিদায় জানাচ্ছে। বেলাশেষে হার মানল! এদিকে ধীরে ধীরে সন্ধ্যা নামছে। নিহা আর শিফা ছাদে আর কিছুক্ষণ থেকে নিচে নামল। তারপর একে একে পুরো বাসায় জ্বালিয়ে দিলো, সাঁঝক বাতি।
–
-‘ছ্যার আচার লইবেন, আচার? খুব মজাদার আচার। আমার আম্মা বানাইছে।’
কথাটা বলে ছেলেটা দিগন্তের দিকে তাকাল। জবাবের আশায়! বয়স বারো কি তেরো। পরণে
জীর্ণবস্ত্র আর এলোমেলো রুক্ষ চুল। মলিন মুখ! হয়তো সারাদিনে বিক্রি হয় নি, খায়ও নি। দিগন্ত আচার দেখে বলল,
-‘সবগুলো’ই দাও, এই আচার অনেকদিন ধরে খুঁজছিলাম।’
ছেলেটার চোখ দু’টো চকচক করে উঠল। হয়তো খুশিতে! তার খুশিটা ঠিক, চাতকপাখির অধীর হয়ে চাওয়ার পর একপশলা বৃষ্টি পাওয়ার মতো। পেটের ক্ষুধা আর শূন্য পকেট। এই দু’টো থেকে
সীমিত সময়ের জন্য মুক্তি পাওয়ার খুশি। ওর হাসিটা, মাকে গিয়ে উৎফুল্ল হয়ে ‘আম্মা আইজ সবডি বেইচ্চালাইছি’ বলার প্রান্তবন্ত হাসি। এই হাসি ও খুশির তাৎপর্য বোঝা সবার কম্য নয়।
যদিও যেঁচে কেউ বোঝার চেষ্টাও করে না। দিগন্ত ছেলেটার খুশি দেখে হাসল। অমায়িক হাসি।তবে ছেলেটা দাম কষতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে লজ্জিত কন্ঠে বলল,
-‘আপনেই হিসাব করেন, ছ্যার। আমি এত বড় হিসাব পারুম না।’
দিগন্ত ফোনে হিসাবটা করে ওকে দেখাল। যাতে মনে না হয়, সে ঠকেছে। ছেলেটা খুশি হয়ে টাকা আর ঝুড়ি নিয়ে বিদায় হলো। হেঁটে নয়, দৌড়ে যাচ্ছে। হয়তো এভাবে ওর আনন্দটাকে প্রকাশ করছে।
দিগন্ত কয়েকপ্যাকেট রেখে টোকাইদের সব দিয়ে দিলো। বাকিগুলো গাড়ির ড্রাইভারকে। ঢাকার জ্যাম নিয়ে কিছু বলাও বৃথা। রোজকার সমস্যা।
জ্যামে আটকে প্রায় দেড়ঘন্টা যাবত বসে আছে। কখন ছুটবে, কে জানে! ড্রাইভার উঁকিঝুঁকি মেরে দেখে গাড়ি এগোচ্ছে। দিগন্ত সিটে মাথা হেলিয়ে চোখজোড়া বন্ধ করল। হঠাৎ শিফাকে স্মরণে আসল। মেয়েটাকে সারাদিনে খুব মিস করেছে। দিগন্ত ওর ভাবনায় মগ্ন হলো। শিফাকে সে প্রথম দেখেছিল, ওর বাগানের ফুল ছেঁড়ার সময়। তাও পছন্দের ফুল। এতে প্রচুর রাগ ও বিরক্ত দু’টোই হয়েছিল। শিফা ফুল ছিঁড়ে সাফার লম্বা মোটা বেনুনিতে গেঁথে দিচ্ছিল। সাফা ভয়ার্ত দৃষ্টিতে আশেপাশে তাকিয়ে বারণ করছিল। দিগন্ত ঠিক ওদের পেছনে দাঁড়িয়ে সব দেখে বলেছিল,
-‘ফুল গাছেই বেশি মানায়।’
শিফা একবার দিগন্তের দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকে বলল,
-‘এটা কে রে সাফা?’
-‘বাড়িওয়ালার ছেলে, নাম দিগন্ত।’
শিফা অবিলম্বে আরেকটা ফুল ছিঁড়ে অকপটে উত্তর দিলো।
-‘মনে করানোর জন্য, ধন্যবাদ। বাড়িওয়ালার ছেলে বিধায় ভাষণ দিবেন? তো শুনুন, এই যে আমার বান্ধবী, ওর বেনুনিতে ফুল দিতে ইচ্ছা করছিল। তাই সামনে ফুল দেখে ছিঁড়ে ফেলেছি।
বলা উচিত ছিল, এজন্য দুঃখিত। তবে সাফার আবার ইচ্ছে করলে, আমি আবার ছিঁড়ব এবার
আগেই বলে দিলাম।’
কথাগুলো বলে শিফা সাফাকে নিয়ে চলে গেল।
দিগন্ত চুপ করে দেখল। মেয়েদের সঙ্গে তর্ক করা,
শোভনীয় নয়। এরপরেও শিফা ফুল ছিঁড়েছিল।
সেদিন ভদ্রভাবে নিষেধ করেছিল। গাড়ির হর্ণের শব্দে দিগন্তের ভাবনায় ছেদ ঘটল। জ্যাম ছুটে, গাড়ি দ্রুতগতিতে ছুঁটে চলছে। উফ,এবার শান্তি।
যথাসময়ে দিগন্ত বাসায় পৌঁছে আগে ফ্রেশ হয়ে নিলো। শিফা ছুরি হাতে নিয়ে একটু একটু করে আপেল কেটে খাচ্ছে।
দিগন্ত শিফাকে রাগাতে হাতের ভেজা তোয়ালেটা ছুঁড়ে মারল। শিফা চোখ তুলে তাকিয়ে পুনরায় আপেল কাটতে মনোযোগ দিলো। দিগন্ত এবার হেসে ওর আপেলটা কেড়ে কামড়ে বসাল। তখন শিফা বলল,
-‘খুব ইচ্ছে করছে।’
-‘কী?’
-‘ছুরিটা দিয়ে আপনার হৃদয়টা খুঁচিয়ে দিতে।’
দিগন্ত হতভম্ব। মুখের আপেলটুকু চিবাতে পারল না। চোখে অবাকের চাহনি। সামান্য আপেলের জন্য একথা কেউ বলে? এই মেয়ে মজাও বুঝে না। এমন কেন মেয়েটা? এমনভাবে বলল, যেন বিরাট অপরাধ করে ফেলেছে। দিগন্তের মুখভঙ্গি দেখে শিফা উচ্চশব্দে হেসে উঠল। হাসি আর থামছে না। দিগন্তকে বোকা বানানোই ছিল, তার উদ্দেশ্যে। সফল হয়েছে!
এসবে সে বরাবরই পটু। এমনকি বাবা, ভাইকেও ছাড় দেয় না। এটা হয়তো দিগন্তের জানা ছিল না।
To be continue……!!