রাত যখন গভীর Season:02,Part :01

0
2648

রাত যখন গভীর Season:02,Part :01
জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া

রিনি গায়েব। প্রিন্স বোতল বন্দী হয়ে আছে।ভেসে চলেছে বোতলবন্দী,প্রিন্স (ইনতিয়াজ) গভীর নিস্তব্ধ সমুদ্রে।

প্রিন্সের তেমন কোন কিছু করার নেই এই বোতলের ভিতর। বোতলের ভিতর থেকে প্রকৃতি টা অসাধারণ লাগছে। হালকা হালকা বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে।প্রিন্স প্রকৃতি প্রেমি তাই তার দৃশ্য টা অসাধারণ লাগছে।
?

সাধারণ বৃষ্টির সময় মনে আলাদা এক অনুভূতি জেগে ওঠে। অনেকে বৃষ্টির সময়টা কাঁটায় স্মৃতি বিচরণ করেই।
,,,মেঘলা আকাশ,
,,বিষন্ন হাওয়া,
,,মনের অদ্ভুত লুকোচুরি,
,,,বারবার বহিঃপ্রকাশ করছে,
,,,ভালোবাসি প্রিয়তমা।।।
(কবিতাঃলেখিকা আমি নিজেই)

প্রিন্স আজকাল অদ্ভুত অদ্ভুত ছড়া রচনা করে। রিনির সাথে দেখা হলে সব রিনিকে শুনাবে প্রিন্স মনে মনে ঠিক করলো।কবিতা শুনে তার প্রিয় তমা খিলখিল করে হেসে দিবে।হাসিটা একদম হৃদয় ঘায়েল করে দেয়।

প্রিন্স বিষন্ন মনে ছেয়ে আছে আকাশের দিকে জান্নাতুল মাওয়া মহুয়া আকাশে যেমন মেঘের আনাগুনা।প্রিন্সের মনে ও তেমন কালো মেঘের আনাগোনা চলছে । মন তার বড্ড জ্বালাচ্ছে।সে বোতল বন্দী হয়েছে আজ এক সপ্তাহ ধরে।আসলে মনটা খুব বেশি অবুঝ। কাকে জানি মিস করে যাচ্ছে প্রতি টা সময় !অনেক বুঝালেও বুঝতে নারাজ এই মন।

মানুষ যতই জ্ঞানি আর বুদ্ধিমান হোক না কেন মনের অজানা দুর্বলতার কাছে প্রায় বোকা বনে যেতে হয়।?

মন কে বুঝনো দায় হয়ে গেছে। প্রিন্স একটা মুচকি হাসি দেয়। ঠিক,
পরক্ষণেই তার বিবেক বলে উঠেঃপ্রেম ভালোবাসা তো পূর্ণতার নাম নয়,বিরহকে ও প্রেম বলে।

প্রিন্স এই ৩ বছরে যেমন রাগ,প্রতিশোধের নেশা পোষে রেখেছে। ঠিক ততটা ভালোবেসে ফেলে তার প্রিয়তমা রিনি কে।কেন জানি প্রিন্সের ইচ্ছে জান্নাতুল মাওয়া মহুয়া সেই অপসারী কে এক ঝলক দেখার। রিনিকে এক ঝলক দেখার আশার প্রহর গুনছে।হঠাৎ করে বিবেক নাড়া দেয়।বিবেক বলেঃজগৎ তে অনিশ্চিত অপেক্ষার চেয়ে ভয়ংকর কিছু নেই। রিনির সাথে আধু দেখা হবে নাকি একটা কিন্তু থেকে যায়। মেয়ে টার জীবন তুই অঙ্কুরেই বিনষ্ট করে দিছোস। তুর রাগ আর প্রতিশোধ এর নেশা শেষ করে দিয়েছে সদ্য ফোটা সেই পুষ্পটা কে!

তাইতো আল্লাহ পাক রাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে বলেছেন। আমাদের
প্রিয় হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কে অনেক এ অনেক ভাবে ক্ষতি করেছে অপমান করেছে কিন্তু ওনি কারোর সাথে খারাপ আচরণ করেন নি জান্নাতুল মাওয়া মহুয়া কারো কাছ থেকে প্রতিশোধ নেন নি।ক্ষমা করাই উত্তর কাজ।আমাদের প্রিয় সবাই কে ক্ষমা করে দিতেন।
কিন্তু তুই এমনটা করোস নাই। প্রতিশোধ নিয়েই ধম নিয়েছিস।

হঠাৎ প্রিন্সের মন বলে উঠেঃ যখন অঘটন ঘটলো তখন কই ছিল এই নীতি কথা?
বিবেক আর মস্তিষ্কের এমন যুক্তি শুনে প্রিন্স আস্তে আস্তে অনুতপ্ত অনুভব করছে।
প্রিন্সের প্রতিশোধের নেশায় তার পবিত্র ভালোবাসা আজ সবার চোখে ঘৃণিত কাজ হিসেবে গণ্য হচ্ছে।

আসলে জীবন কখন কি হয় কেউ জানে না।তবে ভালোবাসা সে-তো বলে,কয়ে আসে না।ভালোবাসা আসে হঠাৎ করেই সবার জীবনে।আর দিয়ে যায় ভুলতে না পারা কিছু মূহুর্ত।কারো ক্ষেত্রে এসব মূহুর্ত পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মূহুর্তের মধ্যে একটা। কারো কাছে এসব মূহুর্ত জীবনের কাল বৈশাখী ঝড়ের চেয়ে ভয়ংকর মূহুর্ত।

প্রিন্স লক্ষ্য করলো,আজ আকাশ টা বড্ড অদ্ভুত লাগছে। প্রকৃতির ও মনে তার মতো মন খারাপ। আচমকা একটা সমুদ্রের জলে তীব্র তা বাড়তে থাকে। সমুদ্রের ঢেউ গুলো জোরে জোরে গর্জন করছে। কোথা থেকে একটা ঠান্ডা স্রোতের সাথে উত্তাল ঢেউ জান্নাতুল মাওয়া মহুয়া এসে প্রিন্সের বোতল সাগরের তল দেশে ডুবিয়ে নিচ্ছে। প্রিন্সের সব কিছু ঘোলাটে মনে হচ্ছে। কিছু দেখতে পারছে না।
অন্য দিকে, জীন রাজা ও শাম্মি রাজ্যে ফিরে অনেক দিন হলো। তবে জীন রাজা(রশিদ) এর রানী লোভা,বারবার জিজ্ঞেস করে যাচ্ছে প্রিন্স কই?
আমার ছেলে কে কোথায় রেখে আসলে?
উত্তর দাও প্লিজ!!!!

এমন সময় শাম্মি এসে বলেঃমা প্লিজ কান্না বন্ধ কর।
বাবা, আমি মা কে সব সত্যি বলে দিচ্ছি।
জীন রাজা নিরব ভাষায় বুঝিয়ে দিলেন। আচ্ছা, বলে দে!
অতঃপর শাম্মি তার মা লোভা কে সব খুলে বলে।প্রিন্স রিনির সাথে কি কি করেছে।

সব শুনে জীন রানী বলে উঠেঃ ওই মানুষ মেয়ে টা জন্য আমার ছেলে আজ ১ সপ্তাহ অবধি সমুদ্রের জলে ভেসে বেড়াচ্ছে।আমার ছেলে টার সঠিক সন্ধান ও তোমরা জানো না।ওই রিনি মেয়ে টাকে আমি ছাড়বো না।ধ্বংস করে দিব সব।

শাম্মি তার মাকে এমন ভাবে রেগে যেতে কখনো দেখেনি।

রানী লোভা বলেঃ শাম্মি তুকে আমি রাজ্য থেকে বিতাড়িত করলাম।আমার ছেলে কে ফিরিয়ে আনতে পারলে আসিস।

রশিদ বলে উঠেঃ তুমি একটা মেয়ে হয়ে কেমনে অন্য মেয়ের অপরাধীর পক্ষ নিচ্ছো।সমাজে এমন অনেক মানুষ ও জীন অবশ্য আছে যারা অপরাধী দের সাহায্য করে। তবে জেনে রাখা উচিত, অন্যায় যে করে,সে সহ্য করে এবং সে অন্যায়কারীর সাথে সহযোগিতা করে বা পক্ষ নেই সমান ভাবে দোষী।শাম্মির কি দোষ ছিলো? ও প্রিন্স কে ওদের সামনে ডেকে এনে ওর স্বীকার উক্তি নেয়া টা কি ওর খুব অন্যায় কাজ হয়ে গেছে? রিনির সাথে না হয়ে জীন রাজ্যের কেউ যদি আমাদের মেয়ের সাথে রাত যখন গভীর তখন এমন কিছু করতো তুমি কি তখন ও অন্যায় কারীর পক্ষ নিতে?

লোভা কোন প্রশ্নের উত্তর দেয় নি।লোভা এতকিছু বুঝে না।তার শুধু তার ছেলে ইনতিয়াজ কে চাই।

সকালে কলের শব্দে কামালের ঘুম ভেঙ্গে গেলো।সেদিন এর পর থেকে রাবেয়া ও কামাল রাতে ঘুমাতেই পারে না। রাবেয়া তো পাগল প্রায় মেয়ের শোকে। সেদিনের ঘটনার পর দিন সকালে রাবেয়া ও কামাল শহরে ফিরে আসে।

কল বেজেই চলেছে।
কামাল কল রিসিভ করতেই অপর প্রান্ত থেকে একজন বলে উঠেঃ মিস্টার কামাল।আপনি একটা মিসিং রিপোর্ট করেছিলেন আমাদের থানায় ।সে প্রেক্ষিতে, আজ আমরা হিমছড়ির ঝর্ণার তীরে একটা মেয়ের লাশ উদ্ধার করি।বয়স আনুমানিক ১৭ হবে ।আপনি আপনার মেয়ের যে বিবরণ দিয়েছেন অলমোস্ট সব মিল পেয়েছি। আপনি সদর হাসপাতালে মর্গে এসে চিহ্নিত করে যাবেন।
অপর প্রান্ত থেকে কল কেটে গেছে। কামাল পাশে তাকাতেই দেখে,…..

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here