রাত_যখন_গভীর Season:02,Part :18,19
জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
Part :18
তুই কেন বউ সাজে?
তোর সাহস কেমনে হলো এই রুমে আসার? এই বিছানার মধ্যে এইভাবে বসে থাকার?
তুই জানিস আমি জিন? তোকে এক আচারে মেরে ফেলতে পারবো?
কে তুই তাড়াতাড়ি বল??
সুমি বলেঃ আমি রিনি,আপনার বউ।একটু আগে কবুল বলে,আমি আপনার বউ এবং আপনি আমার স্বামী হয়েছেন।মনে নেই নাকি?
শয়তান জিন রহমান বলেঃশাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করিস না।আমি জানি তুই রিনি নই?
কে তুই বল? অন্যথায় আমি কি করে বসবো নিজে ও জানি না।
সুমি বলেঃ আমি রিনি। আপনার বউ।এ-র বেশি কিছু জানি না আমি নিজে ও।
রহমান প্রিন্স( শয়তান জিন) হঠাৎ করে সুমি মুখের থুতনি টা শক্ত করে ধরে। আর অন্য হাত দিয়ে সুমির হাত দুটো শক্ত করে ধরে।
সুমি ছটফট করছে।রহমান জিন সুমির কাছাকাছি আসছে।সুমি পিছিয়ে যায়। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেল।সুমির বারবার বলছে,সে রিনি।কিন্তু রহমান সুমির মুখ দেখে বুঝতে পারে, এটা রিনি নই।সুমির উপর মায়া জাদু করলে ও তা রহমান জিন এর চোখের উপর কোন মায়ার সৃষ্টি করতে পারে নি। রহমান জিন ও এক্টা কিছু শক্তি ছিল।
রহমান জিন রাগে কটকট করছে।হঠাৎ করে সুমি কে কোলে তুলে ওয়াশরুমে নিয়ে গেল। বার্থটাবে পানি দিয়ে পরিপূর্ণ করছে।
এমন সময়,
সুমি বলেঃ কি করছেন এসব? পানি দিয়ে কি করবেন? প্লিজ আমাকে ছেড়ে দেন।আমার ব্যথা লাগছে।
রহমান টাস করে একটা টপ্পর দেয়। সুমির মাথা গিয়ে লাগে দেয়ালে।রক্ত বের হচ্ছে। সুমির মাথা ঝিমঝিম করছে।
সুমি চোখ জোড়া অশ্রুতে টলটল করছে। মাথার রক্ত চোখের জল মিশে যাচ্ছে। চোখের কাজল লেপ্টে গেছে।
এমন সময়, সুমি প্রশ্ন ছোড়ে দেয় রহমান জিন এর সামনে।
সুমি বলেঃ কে আপনি? আমি এখানে কেমনে? বউয়ের পোশাক কেন?তাছাড়া, রক্ত কিসের আমার মাথা তে?
রহমান বলেঃ এবার তাহলে তুর মায়া কাটছে। তুই কে আমাকে কেন বিয়ে করচস বল?
সুমি বলেঃ আমি কেন বিয়ে করতে যাবো।আমি তো রেস্তোরাঁ থেকে বাসায় যাচ্ছি লাম। কেমনে কি?
রহমানের মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে আবার কারণ, সুমি ঠিকঠাক উত্তর দিচ্ছে না।বাথটাবে পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে।
রহমান সুমির হাতটা ধরে এক ঝটকায় টান দেয়। যার ফলে সুমি বেলেন্স করতে না পেরে আবার পড়ে যায়। পায়ে ব্যথা পেল।মাথা দিয়ে রক্ত পড়ছে।ওয়াশরুম সম্পূর্ণ লাল হয়ে গেছে। রহমান জিন সুমি কে কোলে তুলে নেই। বাথটবে ফেলে দেয়। ঝর্ণাটা ও ছেড়ে দেয়।
রহমান জিন বলেঃ এই বল?
কেন আমার সাথে এমন করলি?
আমার রিনির সাথে অনেক বাঁধা পেরিয়ে আজ এক হতে পারতাম।রিনি আমার বউ হতো।কিন্তু তুই একটা তৃতীয় পক্ষ কোথা থেকে বেরিয়ে আসচস?
আমার সাজানো স্বপ্ন ভেঙ্গে কেন দিলি?
সুমি বলেঃ আমি সত্যি কিছু জানি না বিশ্বাস করেন। আমি সুমি।তাছাড়া রিনি আমার বন্ধুর মেয়ে। আমি ও রিনিকে খুঁজে যাচ্ছি। কিন্তু ও রীতিমতো নিখুজ।
রহমান জিন বলেঃ এতদিন ও আমার কাছে ছিল।আজ বিয়ের দিন কেমনে উদাও হল?
কই গেছে সে?
রাজপ্রাসাদ থেকে বেরিয়ে যাওয়া এত সহজ না।
সুমি বলেঃ আমি এসব কিছু জানি না।আমার ex এর সাথে শেষ বার দেখা করে আসছিলাম।মনের মধ্যে তিব্র কষ্ট ছিল। তাই নিরিবিলি জায়গায় যেতে চেয়েছিলাম।মনটা কে ভালো করতে।তাই,জঙ্গলের রাস্তা ধরে হাঁটবো চিন্তা করি।যখন,।জঙ্গলের কাছাকাছি আসি,তখন কি হয়ছে জানি না।সত্যি।।।।।
রহমান জিন বলেঃ রাখ তো তুর ফাউ কথা। তুরে নিয়ে চিন্তা করার সময় নেই। আমার রিনি কে আমার খুজতে হবে।যদি না পাই,তুর নাম জানি কি সুমি না টুমি তরে শেষ করমো!
রহমান জিন ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসে। ওয়াশরুমের দরজা লক করে রাখে।
এক মুহূর্ত দেরি না করে
রহমান পৃথিবীতে আসে।প্রথমে রিনির বাসায় প্রবেশ করে। একদম নিস্তেজ বাসা।রহমান বুঝতে পারে কেউ নেই বাসায়।
এরপর, অর্ক দের বাসায় আসে। তবে ঘরে প্রবেশ করতে পারছেনা।রহমান জিন এর ধারণা বিশেষ কোন পদ্ধতি প্রয়োগ করছে তাই প্রবেশ করতেই পারচে না।না হয় রহমান জিন এর জন্য প্রবেশ করা কোন ব্যাপার।রহমান জিন এর extra power’s এর জন্য সেদিন রিনি কে গায়েব করতে পেরে ছিল। তবে আজ মনে হচ্ছে, কঠোর ভাবে। মারাত্মক কোন পদ্ধতি প্রয়োগ করছে।
রহমান জিন চিন্তা করে কেমনে বাসায় প্রবেশ করবে।
এমন সময় জান্নাত ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ে। জান্নাত আসলে বাসায় বসে থাকতে থাকতে বিরক্ত। তাছাড়া, সে কিছুক্ষণ একা থাকতে চাই।জান্নাত, সুমি কে মিস করছে।
হঠাৎ,
জান্নাত লক্ষ্য করে একটা ঠান্ডা স্রোত তাকে স্পর্শ করে। জান্নাত এর শরীর অজানা আশংকায় কেঁপে ওঠে।
রহমান জিন একটা মুচকি হাসি দেয়। কারণ বসার মধ্যে প্রবেশ করার মাধ্যম পেয়ে গেছে।
রহমান জিন জান্নাত এর শরীরে প্রবেশ করে। জান্নাত ঘরের ভিতরে যায়। সারা ঘর দেখে কিন্তু কোথাও রিনি নেই।
জান্নাত আবার বেরিয়ে আসে। জান্নাত এখন পুরোটা রহমান জিন এর আওতায়।
রহমান, জান্নাত এর শরীর ছেড়ে দেয়।রিনি হন্য হয়ে খুজেছে।কিন্তু ফলাফল শূন্য। এসব করতে করতে একদিন পুরো নষ্ট হয়ে গেছে রহমান জিন এর।
রহমান নিজের রুমে প্রবেশ করে। রহমান বলেঃ আজ বিয়ে হলো দুদিন হয়ে গেছে। কিন্তু রিনি সাথে বিয়ে হলে আমার সব স্বপ্ন পুরোন হতো।বিয়ের দ্বিতীয় দিনে রিনির জন্য সারপ্রাইজ রেখে ছিলাম।হুহ। সব এখন মাটি হয়ে গেছে।
এমন সময় রহমান জিন এর একটা কথা মনে পড়ে,
রহমান জিন বলেঃ আচ্ছা। ওই মেয়ে টা কই?
ও কি চলে গেছে?
কি জানি নাম টুমি,না না মনে হচ্ছে সুমি।নাম ওর।
রহমান জিন খুজতে লাগে সুমি কে।সারা রুমে খুঁজে কিন্তু পেল না।।হঠাৎ, রহমান জিন ওয়াশরুমের সামনে এসে থমকে দাঁড়ালো।
রহমান জিন বলেঃ হায় আল্লাহ। দরজা বন্ধ!
তার মানে মেয়ে টা প্রায় দেড় দিন মতো ওয়াশরুমের মধ্যে।
জিন রা থাকতে পার ওয়াশরুমের মধ্যে।জিনের একটা প্রিয় জায়গা অবশ্য । কিন্তু ও তো মানুষ?
বেঁচে আছে তো?
রহমান জিন আস্তে করে লক খোলে।দরজা খুলে দেখে……
?
?
?
সকালের আলোতে রিনির চোখ জোড়া খুলে।এখন ও আবছা আবছা আলো ফুটে উঠেছে। রিনি রুমে তাকিয়ে দেখে প্রিন্স (ইনতিয়াজ) নেই।
রিনি, প্রিন্স কে প্রিন্স এর রুমে খুজতে লাগে কিন্তু পেল না।অবশেষে সারা ঘর খুজতে লাগলো। হঠাৎ রিনি লক্ষ্য করে বারান্দায় কে যেন আছে।
রিনি বারান্দায় গিয়ে দেখে। প্রিন্স ঘুমিয়ে আছে। পাশে গিটার রাখা।চোখের জায়গায় কিছু টা ফোলা হয়ে গেছে।
রিনি আজ এই ঘুমন্ত প্রিন্স কে দেখছে।রিনির কাছে শ্রেষ্ঠ সুন্দর একজন মনে হচ্ছে প্রিন্স কে। রিনি লক্ষ্য করে, প্রিন্স এর মুখে মায়া আছে।
রিনি বলেঃ প্রিন্স,
আসলে খারাপ নাকি ভালো?
জানি না বুঝতে পারছি না। তবে মনের মধ্যে মায়া সৃষ্টি হয়ে গেছে তার জন্য ।
রিনি বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে ছিল। তারপর প্রিন্স কে বালিশ দেয়। একটা চাদর জড়িয়ে দেয়। রিনি চাদর জড়িয়ে দেয়ার সময় একটু কাছাকাছি হয়ে গেছিলো প্রিন্স এর শরীর এর সাথে। রিনি তখন অনুভব করল, প্রিন্স এর শরীরে একটা খুব সুন্দর ঘ্রাণ আছে।
রিনি বলেঃ আচ্ছা এটা কি পারফিউম এর ঘ্রাণ নাকি বাস্তবে তার শরীর থেকে আসছে?
প্রিন্স নড়ে চড়ে আবার ঘুমিয়ে পড়লো। রিনি তাড়াতাড়ি সেখান থেকে চলে আসে। কারণ, সে চাই না প্রিন্স জানোক।সে যে চুপিচুপি আজ প্রিন্স কে দেখেছে।
রিনি ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আসে। একটা সাদা ড্রেস পরে আছে। বেশ কিছুক্ষণ পর,প্রিন্স আসে।
প্রিন্স বলেঃ আসো বেলকনিতে বসি।আজকে সূর্য টা অনেক মৃদু আলো ছড়াচ্ছে। কালকের বৃষ্টির পর প্রকৃতি অসাধারণ লাগছে।চল।
রিনি বলেঃ আচ্ছা চলেন।
প্রিন্স ও রিনি দাড়িয়ে আছে। প্রিন্স রোদ দেখছে।আর আড়চোখে দেখছে রিনি কে।কারণ, এই রৌদ্রময় সকাল টা তে। রৌদ্র এসে পড়েছে রিনির মুখের উপর। সাথে রিনি আজ সাদা কাপড় পড়েছে।রিনি কে আজ রৌদ্রময়ী রূপসী লাগছে।
প্রিন্স কয়েক টা হার্টবিট মিস করলো।বুকের বা পাশে নাড়া দিচ্ছে রিনি এই রূপের জাদু।প্রিন্স বুকে হাত দিয়ে তাকিয়ে আছে রিনির দিকে।
প্রিন্স বলে উঠেঃ আসলেই,
” ভালবাসা জিনিস টা
কখনো একা কারো,
জীবনে আসে না।
নিয়ে আসে অনেক,
স্বপ্ন, আবেগ।
অনুভূতি আর
অভিমান।।।
রিনি কে দেখার পর, অনুভুতি নামক যে কিছু আছে। তার অস্তিত্ব টের পেয়ে ছিল প্রিন্স।
হঠাৎ করে, প্রিন্স এর ছোট ছোট স্বরের আওয়াজ শুনতে পেয়ে। রিনি প্রিন্স এর দিকে তাকালো।
এর পর রিনির চোখ পড়ে প্রিন্স এর উপর এবার প্রিন্স বলেঃ you are the love,
That came without warning.
You had my heart before i could say no.
রিনি এক পলকে তাকিয়ে আছে প্রিন্সের দিকে। এবার প্রিন্স বলেঃ রিনি আজকের দিনটা কি আমার কথা মতো অতিবাহিত করা যাবে?
কারণ, কাল কে পৃথিবীতে যাবো।না জানি তোমাকে এভাবে আর পাবো নাকি? শুধু আজ কের দিনটা আমার নামে নাম করণ করে দাও।কি পারবে না?
খুব বেশি কি চাইছি?
আজকের জন্য কি ভুলে যাওয়া যায় না আমার করা অপরাধ টার কথা?
রিনি কিছুক্ষণ চিন্তা করে। তারপর রিনি বলেঃ
চলবে…….
রাত_যখন_গভীর
জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
Season:02
Part :19
************
রিনি কিছুক্ষণ চিন্তা করে। তারপর রিনি বলেঃ একটু পর করে উত্তর টা দিচ্ছি।
এই বলে রিনি রুমে চলে গেল। বেশ কিছুক্ষণ হলো।প্রিন্স রিনি উত্তর এর অপেক্ষাই বসে আছে।
এমন সময় প্রিন্স আপন মনে বলে উঠে,
” তুমি আসবে না?
অপেক্ষার প্রহর কি
শেষ হবে না?
নাকি আজ দিন ও নিশি পোহাবে।
তুম বিন!!!!!
প্রিন্স তাকিয়ে আছে আকাশে দিকে।বেশ কিছুক্ষণ পর রিনি বেলকনিতে আসে আবার।
রিনি বলেঃ অপেক্ষা করা কষ্টের জানি।তাই দুঃখীত এতক্ষণ অপেক্ষা করানোর জন্য।
প্রিন্স বলেঃ এই কষ্টের মধ্যে ও সুখ আছে। তাছাড়া কষ্টের পর অবশ্যই সুখ আসে।
রিনি বলেঃআমি রাজি। দিলাম আপনাকে আমার জীবন থেকে আজকের একটা দিন।আজকের দিনে সব আপনার কথা মতো হবে।তবে একটা পারমিশন ছাড়া কাজ করে ফেলছি।আপনার পারমিশন না নিয়ে আপনার গিটার টা নিয়েছি। তাই সরি।
প্রিন্স বলেঃওহে রিনি, no need any permission,
Always any side,
Anything of mine no need permission for YOU….
রিনি বলেঃ তো এখন কি করবো? কি ভাবে শুরু করতে চাচ্ছেন আজকের দিনটা?
প্রিন্স বলেঃ চল।আগে ফ্রেশ হয়ে নাও।একটা ড্রেস রাখসি ওইটা পরবে।আমি ১ ঘন্টা সময় দিলাম।তোমাকে রেডি হতে। আমি ঠিক ১ ঘন্টা পর নিতে আসবো তোমাকে।
রিনি বলেঃ আচ্ছা ঠিক আছে।
রিনি রুমে চলে গেল। রুমে প্রবেশ করে গোসল করে নেই।তারপর, বিছানায় রাখা কাপড় গুলো দেখছে।রিনি দেখে, বিছানাতে একটা সাদা টপস এবং জিন্স রাখা আছে।
রিনি টপস এবং জিন্স পড়ে নেই। চুল গুলো হালকা করে খোপা করে।হালকা একটু মেকাপ এবং ঠোঁটের মধ্যে গোলাপি রঙের লিপস্টিক।
রিনির সাজা শেষ। এমন সময় দরজাতে উঁকি দেয় প্রিন্স।
প্রিন্স বলেঃ তোমার কি শেষ হলো?
রিনি আয়নার দিকে নিজেকে পারফেক্ট করে রেডি হয়েছে নাকি দেখতে দেখতে বলেঃ হুম শেষ।
রিনি এবার পিছনে ফিরে দেখে।প্রিন্স( ইনতিয়াজ) একটা হলুদ গেঞ্জি গায়ে সাথে জিন্স প্যান্ট। পায়ে সো- জুতো হাতে একটা ঘড়ি।
রিনি মনে মনে বলেঃ বাহ বেশ মানিয়েছে।তবে মুখে প্রকাশ করমো না!
মেয়ে রা এমনি অন্তরে অন্তরে পছন্দ করবে।ক্রাশ খাবে তাও সহজে প্রকাশ করতে চাই না।
রিনি লক্ষ্য করে প্রিন্স হা করে তাকিয়ে আছে তার দিকে।
রিনি বলেঃ এই যে মিস্টার।
এই শুনছেন????
রিনি একটা চুটকী বাজালো। তারপর প্রিন্স নড়ে চড়ে উঠে।
রিনি বলেঃ কই হারিয়ে গেছেন? আর ওভাবে হা করে কেন তাকিয়ে ছিলেন???মুখে যদি মশা বা মাছি ঢুকে যেতো তখন কি হতো?
তাছাড়া আমাকে এই ভাবে কেউ তাকিয়ে থাকলে লজ্জা লাগে।
প্রিন্স বলেঃ
” শুধু তুমি আছো তাই
আমি কথা খুঁজে পাই।
দূর হতে আমি তাই,
তোমায় দেখে যাই।
তুমি একটু হাসো তাই,
আমি চাঁদর মিষ্টি আলো পাই”
ওরে আমার লজ্জাবতী।।
রিনি বলেঃ এটা নাকি আমার প্রশ্নের উত্তর?
এতো কাব্যিক কথা বাপু আমি বুঝতে পারছিনা।কোন কথা বুঝতে না পারলে আমার রাগ উঠে। যার ফলাফল আমি চুপচাপ হয়ে যাবো।আপনার সাথে একটা কথা ও বলব না।তখন মনের সুখে একা একা কাটাবেন আজকের পুরো টা সময়। হুহ।
প্রিন্স আবার বলেঃ ওই শোনো,রাগ হলে, অনেকটা ঝগড়া করে নিবে,দরকার হলে মারপিট ও করে নিবে।কিন্তু চুপচাপ হয়ে থাকিও না।তাতে দূরত্ব বাড়ে প্রিয়।
রিনি বলেঃ এসব কথা না বলি।এখন রেডি তো হলাম কই যাবো?এই বিষয়ে কিছু তো বলেন?
প্রিন্স বলেঃ আগে দুপুরের খাবার টা খেয়ে নি।তারপর বলবো।কই যাচ্ছি।
দুজনের খাবার শেষ করে।
প্রিন্স বলেঃ রিনি, দুঃখীত কিন্তু আমরা একটা জায়গায় যবো।তাই তোমার থেকে আমাকে সেদিন এর মতো জড়িয়ে ধরতে হবে। কি করব বলো এটা ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই।
তবে,মুহূর্তে চলে যেতে পারবো আমি।কিন্তু তোমাকে নিতে হলে এটা একমাত্র উপায়।
রিনি কোন কথা না বাড়িয়ে সোজা এসে প্রিন্স কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। রিনি স্পষ্ট অনুভব করছে প্রিন্স এর হার্টবিট।রিনি যেন অনুভব করছে প্রতিটি হার্টবিট রিনি, রিনি বলছে।
রিনি মনে মনে বলেঃ এটা আবার হয় নাকি?
এটা আমার নিছক মনের ভুল।
তবে,
রিনির এমন কিছু না বলে, বিনা বাক্যে রাজি হয়ে যাওয়া তে প্রিন্স অনেক টা খুশি হলো।তাছাড়া আজ প্রিন্স বড্ড আকৃষ্ট হচ্ছে রিনি প্রতি। কারণ, রিনির চোখ, রিনির ড্রেস আপ বড্ড কাছে টানছিল প্রিন্স কে।
প্রিন্স রিনির চুলের ঘ্রাণ পাচ্ছে। প্রিন্স এর মনে উতালপাতাল ভালো লাগা কাজ করছে। সেই চুলের ঘ্রাণের সৌরভের জন্য।
প্রিন্স মৃদু স্বরে বলেঃ
” i love your eyes
I love your smile
I cherish your ways
And i adore your
Style. You are 24/7
On my mind,even
When i sleep! Good
Night and sleep light.
রিনি সব শুনতে পারছে।কারণ রিনির মাথা টা প্রিন্সের বুকের সাথে আষ্টেপৃষ্টে মিশে গেছে।
ফলে প্রিন্স এর মৃদু স্বরে বলা কথা স্পষ্ট শুনতে পেল রিনি।
প্রিন্স বলেঃ রিনি আমরা চলে এসেছি। তবে তোমার চোখ জোড়া বন্ধ করো।আমি যখন বলবো তখন খুলবে।
প্রিন্স রিনির চোখ জোড়া বন্ধ করে রেখেছে।
প্রিন্স বলেঃ রিনি চোখ জোড়া খুলে দেখো।
রিনি চোখ জোড়া খুলে দেখে। চারপাশে ঘনসবুজ অরণ্য। পাশে দুটা চেয়ার রাখা সাথে একটা টেবিল। সেই জায়গা তে বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছে। তার থেকে আরেক টু দূরে আগুন জালানোর জন্য কাঠ সংগ্রহ করে রাখা আছে।আর আছে একটা ছোট তাবু।
প্রিন্স বলেঃ একটু পর রাত ঘনিয়ে আসবে।চল কিছু রান্না করে নি।
দুজনে মিলে রান্না করছে তাবু তে ।ওদের এই অবস্থাই যে কেউ দেখলে বলবে, তারা একটা সুখী দাম্পত্য জীবন কাটাচ্ছে। কিন্তু সত্যি টা যে বড্ড থেঁতো।
প্রিন্স বলেঃ রিনি তুমি সব ঠিক আছে নাকি দেখো আমি একটু বাইরে যাচ্ছি।তাবু থেকে ।
প্রিন্স গেছে অনেক্ক্ষণ হলো। কিন্তু এখন ও ফিরে আসে নি।তাই রিনি তাবু থেকে বেরিয়ে আসে। কিন্তু একি এইরকম বিদঘুটে অন্ধকার কেন?
রিনির অন্ধকার কে ভয় লাগে।
রিনি বলেঃ কই আপনি?
আমার কিন্তু ভয় লাগছে?
প্রিন্স একটা হাত তালি দেয়। সাথে সাথে কিছু মোমবাতি জ্বলে উঠে আরেকটা হাত তালি দিতেই পুরো জায়গার মধ্যে মোমবাতি জ্বলে উঠে।
মোমবাতির আলো তে আলোকিত হয়ে গেছে সম্পূর্ণ জায়গা টা।
রিনি মুগ্ধ নয়নে দেখছে সব।রিনি রীতিমতো সারপ্রাইজ পেয়ে খুশি হয়ে গেছে।
সারপ্রাইজ পেতে সবার ভালো লাগে। রিনির ও ব্যাতিক্রম হলো না।তার ও পছন্ড ভালো লেগেছে।
প্রিন্স বলেঃ মেম আপনি চেয়ারে বসেন।আমি খবার পরিবেশন করে দিচ্ছি।
রিনি বসে আছে। প্রিন্স খুব সুন্দর করে সব পরিবেশন করেছে।নিস্তব্ধ রাত,খোলা আকাশের নিচে, চারপাশে মোমবাতির আলোতে দুজন মানবি বসে রাতের খাবার খাচ্ছে। খুব সুন্দর একটা মনোরম দৃশ্য ফুটে উঠেছে।
দুজনের খাবার শেষ করে। প্রিন্স আরেকটা হাত তালি দেয়। মোমবাতি নিভে গেছে। আরেক বার হাত তালি দিতেই সংগ্রহ করে রাখা কাঠের মধ্যে আগুন জ্বলে উঠে।
প্রিন্স বলেঃ চল রিনি।ওইখানে বসি।
দু’জনে বসে আছে খোলা আকাশ নিচে।সামনে জ্বলছে আগুন। প্রিন্স আড়চোখে রিনিকে দেখছে।আগুনের লাল শিখাতে রিনি মুখখানা আরো সুন্দর লাগছে। রক্তিম একটা আভা ফুটে উঠেছে।
রিনি বলেঃ আমি জানি আপনি গান গাইতে পারেন।একটু দাড়াঁন আসছি বলে তাঁবু তে গেল রিনি।
রিনি গিটার টা নিয়ে আসে।প্রিন্স বলেঃতুমি কেমনে জানলে? গিটার আনছি?
রিনি বলেঃইটস গালর্স অবজারভেশন।তাছাড়া, আমি এটা আপনার পারমিশন ছাড়া নিয়ে দুপুরে খাবার টেবিলের পাশে রেখেছিলাম যাতে আপনার নজরে পড়ে।
প্রিন্স বলেঃহুম। আমি জাদু করে ছিলাম।তারপর অদৃশ্য করে এখানে এনে তাবুতে রেখেছিলাম।
রিনি বলেঃ জি আমি অনুমান করেছিলাম। জাদু করে গিটার টা আনবেন।
তারপর রিনি আবার বলেঃ যাক সে কথা।
একটা গান শুনাবেন?
প্লিজ,আমার অনুরোধ টা রাখেন!!!
রিনির অনুরোধ জাস্ট প্রকাশ করেছে।হয়তো প্রকাশ করতে দেরি করেছে, কিন্তু
প্রিন্স সেটা পূরণ করতে দেরি করে নি।
সাথে সাথে,
প্রিন্স গিটারে সুর তুলেছে। সুরের তালে তালে গাইছে,,,
Paas aaye
Dooriyaan phir bhi kam naa hui
Ek adhuri si hamari kahani rahi
Aasmaan ko zameen, ye zaroori nahi
Jaa mile… jaa mile…
Ishq saccha wahi
Jisko milti nahi manzilein… manzilein…
Rang thhe, noor tha
Jab kareeb tu tha
Ek jannat sa tha, yeh jahaan
Waqt ki ret pe kuch mere naam sa
Likh ke chhod gaya tu kahaan
Hamari adhuri kahani
Hamari adhuri kahani
Hamari adhuri kahani
Hamari adhuri kahani
Khushbuon se teri yunhi takra gaye
Chalte chalte dekho na hum kahaan aa gaye
Jannatein agar yahin
Tu dikhe kyon nahin
Chaand suraj sabhi hai yahaan
Intezar tera sadiyon se kar raha
Pyaasi baithi hai kab se yahaan
Humari adhoori kahaani
Humari adhoori kahaani
Humari adhoori kahaani
Humari adhoori kahaani
Pyaas ka ye safar khatam ho jayega
Kuch adhura sa jo tha poora ho jayega
Jhuk gaya aasmaan
Mill gaye do jahaan
Har taraf hai milan ka samaa
Doliya hain saji, khushbuein har kahin
Padhne aaya Khuda khud yahaan…
Hamari adhuri kahani
Hamari adhuri kahani
Hamari adhuri kahani?
রিনি মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে। রিনি মনে মনে বলছেঃকেমনে এতো সুন্দর করে গাইলো?
ইস গানে কি আনডাচ নে মুজে পাগাল কার দিয়া।
কিন্তু,
রিনি মুখে কিছু প্রকাশ করেনি।
রিনি শুধু বলেছেঃ ধন্যবাদ অনুরোধ রাখার জন্য। বেশ ভালো হয়েছে।
থাকনা কিছু অনুভূতি লুকায়িত।
রিনির ধন্যবাদ জানানোর পর,
প্রিন্স বলে উঠেঃআমার একটা আবদার আছে।মাস্ট বি রাখতে হবে। না জানি কাল হো নাহো।প্লিজ রাখবে তো?
রিনি বলেঃ হুম বলেন।রাখবো।
প্রিন্স বলেঃ তুমি একটা গান শোনাও।কয়েক বছর আগে শুনেছি তোমার স্বরে গান।আজ এই মনোরম পরিবেশে আবার শুনতে চাই। শুনাবে তো?
রিনি বলেঃ হুম। সুর তুলেন।
প্রিন্স গিটার বাজাচ্ছে। রিনি গান শুরু করেছে।
“””কি করে বলব তোমায়
আসলে মন কি যে চায়
কেন সে পালিয়ে বেড়ায়
তোমার থেকেই
কি করে বলব তোমায়
কেন এই মন হাত বাড়ায়
আবারো হাড়িয়ে সে যায়
তোমার থেকেই
তুমি জানতে পারনি
কত গল্প পুড়ে যায়
তুমি চিনতে পারনি
আমাকে হায়…
কি করে বলব তোমায়
আসলে মন কি যে চায়
কেন সে পালিয়ে বেড়ায়
তোমার থেকেই
পথ ভুলে গেছি চলে
দূরের কুয়াশায়
তবু আমার ফিরে আসার
সত্যি নেই উপায়
তুমি আমার জিতের বাজী
তুমি আমার হার
কি করে বলব তোমায়
আসলে মন কি যে চায়
কেনও সে পালিয়ে বেড়ায়
তোমার থেকেই
যদি বলি চোরাগলি মনের যায় কোথায় আসবে কি?
রাখবে কি?
তোমার ওঠা পড়ায়
তুমি আমার জ্বালিয়ে নেওয়া কোন শুকতারা
কি করে বলব তোমায়
আসলে মন কি যে চায়
কেন সে পালিয়ে বেড়ায়
তোমার থেকেই
তুমি জানতে পারনি
কত গল্প পুড়ে যায়
তুমি চিনতে পারনি
আমাকে হায়…
কি করে বলব তোমায়
আসলে মন কি যে চায়
কেন সে পালিয়ে বেড়ায়
তোমার থেকেই।
গান শেষ হতেই রিনি প্রিন্সের দিকে তাকাই। প্রিন্স বলেঃ রি…….নি
চলবে…….