#নাম: সিনিয়র ডক্টর
#পার্ট:৪
#লেখক:Osman
_এই বলে আনিকা শারমিনের হাত থেকে মোবাইল নিয়ে ছবিটি ভালো করে দেখতে লাগলো।বলল
আনিকা: ঈশান মাহমুদের উপর যতগুলো মেয়ে ক্রাশ খেয়েছে। তার একটা লিস্ট আমাকে দিবি।
শারমিন: কেনো তুইও ক্রাশ খেয়েছত ? তাহলে আশিক ভাই?
আনিকা: সে আমার পেসেন্ট।
_অনিচ্ছা কৃত ভাবে আনিকা শারমিনের মোবাইলের ছবি গুলো দেখতেছে ।একটা ছবির উপর আনিকার চোখ আঁটকে যায়। বলল
আনিকা: এই ছবির মধ্যে এটা কে?
শারমিন: তুই দেখে ফেলছত?
আনিকা: মানে।
শারমিন: কয়েকদিন আগে আমরা কয়েকজন ফ্রেন্ড মিলে গিয়েছিলাম একটা রেস্টুরেন্টে । সেই রেস্টুরেন্টে আশিক ভাই আরেকটা মেয়ে বসে ডেট করছিলো। সুযোগ বুঝে এই ছবিটা আমি তুলে রাখছিলাম। ভাবছিলাম তরে দেখাবো কিন্তু পরে ভাবলাম যদি তুই কষ্ট পাস । সেজন্য আর দেখাইনি।
আনিকা: ঠিক আছে। আমি জানতাম সে তলে তলে আরেক মেয়ের সাথে ডেট করে । তুই এই ছবিটা আমাকে দে। তার সাথে এখনই ব্রেকআপ করবো।
শারমিন: তারপর কি ঈশানের সাথে প্রেম করবি?
আনিকা: চুপ বেয়াদব । গিয়ে পড়াত বস।
শারমিন: উপকার করলেও দোষ।
_এই বলে শারমিন চলে গেলো। আনিকা ছবিটা আশিকের কাছে টেক্সট করলো। তারপর ফোন দিলো।
আনিকা: মেয়েটা কে?
আশিক: কে এটা আমি জানি না।
আনিকা: তরে আমি কতো ভালোবাসতাম আর তুই কিনা আমারে ভালোবাসার এই ফল দিলি।
আশিক: আরে তুইতো একটা বুড়ো ব্যাটি । আর তুই আমারে টাইম দেস ।তুইতো থাকস তর কাজ নিয়া।
আর ছবির মধ্যে যে মেয়েটা দেখছস। জানস তার বয়স কতো ১৯ মাত্র ১৯। তর মতো বুড়ো না।
_আনিকা আশিকের মুখ থেকে এসব কথা শুনে অবাক হয়ে যায়। আর কাঁদতে থাকে।
আনিকা: তুই ঠিকই বলছত । আমি বুড়ো । যা তর সাথে ব্র্যাকআপ । তুই এই শাস্তি একদিন না একদিন পাবি।
_এই বলে ফোন কেটে দেয়। আর কাঁদতে সাড়া রাত কাটিয়ে দিলো।
_আমি সকালে ঘুম থেকে উঠে। আমি আমার জীবন যুদ্ধে লেগে গেলাম। আমার খালি ডক্টরের কথা মনে পড়ে। পরক্ষনেই আবার মনে পড়ে আরে ডক্টরের না বয় ফ্রেন্ড আছে। এভাবে একটা সপ্তাহ চলে যায়। ডক্টরের ঔষধ গুলো নিয়ম মাফিক খাওয়ার ফলে আর মাথা ব্যথা উঠে নাই। আমি বোধহয় ডক্টরের কথা জীবনেও ভুলতে পারবো না। বাড়ি থেকে ফোন
আসলো সামিয়ার বিয়ার তারিখ ঠিক হইছে। আর একসপ্তাহ পর বিয়ে। আমি ফাহিমকে নিয়ে চলে গেলাম বাড়িতে। বিয়ে শেষ করে ঢাকায় আসতে ১৫ দিন লাগছে ফাহিম আগেই চলে এসেছে। পরে শেষমেষ আমার কাছ থেকে দেড় লাখ টাকায় দিতে হলো। যৌতুক পুরুটা দেওয়া হয় নাই। জানি পরে। আমাকেই দিতে হবে। আমার সামনে পরিক্ষা আসতাছে। সকল কিছু ঠিক রেখে পরিক্ষার পড়া পড়তে হবে। আমি ছাত্র হিসেবে এতো খারাপ না। পরিক্ষা দিলাম। পরিক্ষা খুব ভালো হলো । রেজাল্ট ভালো আসলো। এখন একটা কোচিং একটা প্রাইভেট পড়াই। একটা প্রাইভেট ফাহিমকে দেই। আমার রেজাল্ট ভালো দেখে ফ্রাস্ট ইয়ারের কয়েকটা ছেলে মেয়ে এসে বলল প্রাইভেট পড়াইতে।আমি অনেক না করি। কিন্তু কে শুনে কার কথা। শেষ পর্যন্ত আমার রাজি হতেয় হলো। পরদিন থেকে তাদের কোচিং করাই। এভাবে ২ মাসের মতো চলে যায়। মাথা ব্যথা যেহেতু ওঠেই না। ঔষধ খাওয়া আরো আগেই ছেড়ে দিয়েছি। ঔষধ দেখলেই ডক্টরের কথা মনে পড়ে। ঔষধও দেখা হয় না আনিকার কথা মনেও পড়ে না। ফ্রাস্ট ইয়ারের যে ব্যাচটা আমি পড়াই । সেখানের একটা মেয়ে আমাকে কি যেনো বলবে? আমি পড়া ছাড়া অন্য কোনো টপিক নিয়ে কথা বলি না। সেরকম কোনো চান্স দেই না। একদিন তাদের পড়িয়ে চলে যাচ্ছি। এমন সময় এই ব্যাচের সব চেয়ে সুন্দরী মেয়েটা আমাকে ডাক দিলো। আমি কয়েকদিন ধরে লক্ষ্য করছি মেয়েটার চেহারার সাথে ডক্টরের অনেকটা মিল আছে তাহলে সেকি ডক্টরের ছোট বোন? কাছে আসলে বললাম।
আমি: কি বলবা বলো?
শারমিন: কিছু না। (মেয়েটার নাম শারমিন)
আমি: তাহলে ডাক দিছো কেনো? আমি গেলাম।
শারমিন: প্লিজ যাবেন না । আপনার বন্ধু ফাহিম।
আমি: ফাহিম কে? কি করছে। (আমি বুঝতে পারছি
শারমিন অনেক ভয় পাচ্ছে।)
শারমিন: তার নাম্বারটা একটু দিবেন।
আমি: আমি কেনো দিতে যাবো তার নাম্বার?
শারমিন: প্লিজ দেন না। প্লিজ প্লিজ
আমি: নাম্বার নিয়ে কি করবা?
শারমিন: সেটাও বলতে হবে?
আমি: হুম।
শারমিন: তাকে কল দিয়ে বলবো। তাকে আমি…..
আমি: ভালোবাসি…তাই না
শারমিন: হুম। (বলল লজ্জা মিশ্রিত কন্ঠে)
আমি: দেখো আমি তোমাকে একটা কথা বলি। এসব প্রেম ভালোবাসা বাদ দিয়ে পড়া লেখায় মনোযোগ দেও।
শারমিন: দিবেন না আগেই বলতেন। কেনো এতক্ষণ ঘুরালেন? ধুর আমি গেলাম।
_এই বলে চলে যাচ্ছে। আমি কি যেনো ভেবে আবার শারমিন কে ডাক দিলাম। আসলে বললাম
আমি: তোমারা কয় ভাই বোন।
_শারমিনের মুখে বাঁকা হাসি ফুটে উঠলো। বলল
শারমিন: দেখছেন মানুষকে কিভাবে প্রয়োজন পড়ে।
আমি: দেখছি। এখন বলো তোমরা কয় ভাইবোন।
শারমিন: আপনার সব প্রশ্নের উত্তর দিবো । আগে আমাকে ফাহিমের নাম্বার দিয়ে নেন।
_আমি ভাবছি নাম্বার দিবো নাকি দিবো না। ফাহিম বেচারা একবার ছ্যাঁকা খেয়ে আর প্রেমের নাম নেয় নাই। আর শারমিনতো অনেক সুন্দরী। দিয়েই দেই নাম্বার ।
আমি: উঠান।
শারমিন: থ্যাংকিউ একটা হাসি দিয়ে বলল।
_নাম্বার উঠাইলে আমি বললাম
আমি: এবার আমার প্রশ্নের উত্তর দেও।
শারমিন: কি?
আমি: কতবার বলবো। তোমারা কয় ভাই বোন?
শারমিন: আস্তে বলেন। নাহলে কিন্তু চলে যাবো।
আমি: ওকে বলেন। (মনে মনে কি মেয়ের পাল্লায় পড়লামরে বাবা।)
শারমিন: আমরা দুই বোন ভাই নাই ।
আমি: বোনকি তোমার বড়।
শারমিন: হুম ।
আমি: কি করে?
শারমিন: আমি এতো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবোনা।
গেলাম।
আমি: কোথায় যাও । বলে যাও।
শারমিন: বলতে পারবো না।
আমি: তোমাকে ভুল নাম্বার দিয়েছি।
_কথাটা বললাম সম্পূর্ণ অনুমানে কারন এই সময় ফাহিম ঘুমায়। আর সে ঘুমানের সময় মোবাইল বালিসের নিচে ফেলে ঘুমায়। তার মানে নেটওয়ার্ক নাই। চালাক মেয়ে কল দিয়ে ও ফেলেছে। যেটা ভাবছিলাম সেটাই কোনো রেসপন্স নেই। এসে বলল।
শারমিন: আমার বড় বোন ডাক্তারি করে।
আমি: কোন হসপিটালে।
শারমিন হসপিটালে নাম বললে । আমার চিন্তে কষ্ট হয় নাই এটা যে আনিকার ছোট বোন।
শারমিন: এবার সঠিক নাম্বারটা দেন।
আমি: এটাই সঠিক নাম্বার। আবার চেষ্টা করো।
_শারমিন আবার চেষ্টা করে । এবার কল ঢুকে । উপায় থেকে বলল । আসসালামুয়ালাইকুম কে?
_ শারমিন কথা বলতে বলতে চলে গেলো। আমার চোখটা গাছতলায় যায়। দেখি তিনটা ছেলে আমার দিকে আন্গুল দিয়ে কি যেনো দেখাচ্ছে?ছেলে তিনটা সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে । ক্যাম্পাসের মধ্যে ফ্রাস্ট নতুন ইয়ারের ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে রেগিং করে। আমার সাথে তেমন চান্স নাই। জানে চড় থাপ্পড় গালে পড়বে। যাইহোক তাদের চাওয়া আমার কাছে সুবিধার লাগলো না। কিছু একটা হতে পারে । সাবধান থাকতে হবে। আমার বাসায় যেতে রাত । বাসার পিছন দিয়ে একটা গলি আছে। এই গলি আমরা চলাফেরা করি। এই গলিতে তেমন মানুষ থাকেনা সন্ধ্যার পর । আমি মাত্র গলিতে ঢুকলাম।
দেখি আমার পিছনে আরো দুজন গলিতে ঢুকছে ।
তাদের দিকে চোখ যায় আমার চিনতে কষ্ট হলো না গাছতলায় বসা তিনজনের মধ্যে দুজন ।
চলবে…..