#নাম: সিনিয়র ডক্টর
#পার্ট:৭
#লেখক:Osman
_আমি ওঠে আস্তে আস্তে বের হচ্ছি । এমন সময় আবার আনিকা আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে।
বলল
ডক্টর: আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি ঈশান।
তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে।
আমি: না কক্ষনো।
ডক্টর: আমি জানতাম।
আমি: এবার ছাড়ো ব্যাথা লাগছে।
ডক্টর: তুমি বাইরে গিয়ে একটু দাঁড়াও আমি আসছি।
আমি: ওকে ।
_এই বলে আনিকা আমাকে ছেড়ে দেয়। আমি বাইরে বেরিয়ে আসি ফাহিমের কাছে। ফাহিম আমাকে ভালো করে দেখছে। আমি বললাম
আমি: কি দেখছিস এরকম ভাবে?
ফাহিম: দেখছি তুই ঠিক আসিছ কিনা।
আমি: ঠিক আছি মানে?
ফাহিম: তুই এতক্ষণ ডক্টরের চেম্বারে কি করে থাকলি?
আমি: কেনো কি হইছে?
ফাহিম: আর বলিস না। তুই ভিতরে যাওয়ার একটু পর ডক্টর বেরিয়ে আসলো। এসে নার্সকে ডেকে আনলো । এনে দিলো এক ধমক যে কেউ ভয় পেয়ে যাবে। তারপর আমাকে ডাকলো। এবং আমার কাছে মাফ চাওয়ালো। পরে রিসেপশনে গিয়ে কি যেনো বলল। তারপর আবার চেম্বারে ঢুকে গেলো। এতক্ষন পুরো হসপিটাল নিস্তব্ধ ছিলো।
আমি: ডক্টর অনেক জেদি । কিন্তু তার এরকম করা ঠিক হইনি।
ফাহিম: বিল দিতে হবে না?
আমি: না। ডক্টর আমাদের সাথে বাসায় যাবে।
ফাহিম: এই ডক্টর ?
আমি: হুম।
ফাহিম: না দোস্ত না দোস্ত।
আমি: আরে টেনশন করিস কেনো? আমি আছি না।
ফাহিম: তরা দুজন প্রেম করছ।
আমি: হুম।
ফাহিম: আল্লায় জানে তুই এই মেয়েরে কেমনে কন্ট্রোল করবি।
আমি: ঐ দেখ সে আসছে চুপ।
_আনিকা এসে বলল
ডক্টর: তাহলে চলো।
_আনিকা মুখে নেকাব ছাড়াই এসেছে। এটা দেখে কেনো জানি আমার একটুও ভালো লাগলো না।
আমি: চলো ।
_নিচে গিয়ে দেখি আনিকার পার্সোনাল গাড়ি আছে।
গাড়ির ড্রাইভার একজন ইয়ং বয়সের ছেলে। এটাও দেখে আমার ভালো লাগলো না। যাইহোক গাড়িতে বসলাম । আমার পাশে আনিকা বসলো। এতক্ষন হাঁটার পর আমাকে ক্লান্তি গিরে ধরলো। আমি গাড়ির ছিটে বসে মাথাটা এলিয়ে দিলাম। আমি গাড়ির মধ্যে ঘুমিয়ে গেলাম। চোখ খুলে দেখি আনিকা আমাকে ডাকছে। ফাহিম বলল
ফাহিম: দোস্ত বাসায় চলে এসেছি ।
_নামার সময় আনিকা আমাকে হেল্প করলো । আস্তে
আস্তে হেটে রুমে গেলাম । গিয়ে বিছানায় শুইলাম। আমার পাশে আনিকা বসলো। আমাদের দেখে ফাহিম বাইরে চলে যায়।
আনিকা: এটা তোমার জন্য।
আমি: কী?
আনিকা: মোবাইল।
আমি: তোমাকে কে বলছে মোবাইল কিনতে?
আনিকা: কেউ না।
আমি: তাহলে কেনো কিনলে?
আনিকা: ভালোবাসি বলে।
_এখানে আমার আর কিছু বলার নেই। আনিকা আমাকে ভালোবাসি বলে কিনে দিলো । এখানে ফিরিয়ে দেওয়ার কোনো মানে হয় না।
আমি: ঠিকাছে।
আনিকা: আর শোনো আমি তোমাকে ঔষধ খাওয়ার সময় হলে কল দিবো।
আমি: তোমার এতো কষ্ট করতে হবে না । তুমি বলে যাও ।
আনিকা: না আমি তোমাকে কল দিবো।
আমি: ওকে।
_আমি আনিকার স্কার্ট ধরে নেকাবের মতো করে।
বললাম।
আমি: তোমাকে নেকাব অবস্থায় বেশি সুন্দরী লাগে।
আনিকা: সত্যি ।
আমি: হুম।
_আনিকা সুন্দর করে নেকাব পড়ে। বলে
আনিকা: এবার ঠিক আছে।
আমি: হুম।
আনিকা: তাহলে আমি যাই।
আমি: যাও ।
_এই বলে আনিকা চলে যায়। আনিকা চলে গেলে।
ফাহিম এসে বলল।
ফাহিম: সব ঠিকঠাকতো।
আমি: হুম।
ফাহিম: এখন বল তিন ছেলের কি করবি?
আমি: তুই আগামীকাল গিয়ে তিনটারে খুঁজে বের করবি। তারপর কলেজের ভিপিরে সব বলবি। দেখ তারা কি করে? আর আগামীকাল গিয়ে ফ্রাস্ট ইয়ারের যে বেসটা আমি পড়াই। তাদের বলবি দুসপ্তাহ তাদের বন্ধ । অথবা শারমিন ফোন দিলে শারমিনকে বলতে পারিস।
ফাহিম: ওকে।
_আমার সব ক্লান্তি এসে ঘিরে ধরলো । আমি দিলাম এক ঘুম। এক ঘুমে বিকাল। বিকালে ওঠে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করলাম। করে আনিকার কাছে কল দিলাম। সাথে সাথে রিসিভ করে বলল।
ডক্টর: ঘুম হয়েছে।
আমি: হুম ।
_আনিকা ঔষধের নাম বলল। সেগুলো খেয়ে নিলাম। এভাবে প্রতিদিন আনিকা টাইম টু টাইম কল দিয়ে আমাকে ঔষধ খাওয়াতো। একদিন কি এক বেলাও মিস হয়নি। আনিকার প্রতি আমার ভালোবাসা বাড়তে থাকে। টাইম টু টাইম ঔষধ খাওয়ার পর ১০ দিনে সম্পুর্ন সুস্থ হয়ে গেলাম। এই কয়েক দিনে আনিকা আমার কাছে ৫ বার এসে দেখে যায়। আমি আবার আগের মতো কোচিং প্রাইভেট পড়াতে শুরু করি। আমাকে যে মারলো ছেলে গুলো। তাদের বিচার হয়েছে। ভিপিরে বলার পর ভিপি চড় থাপ্পড় দিয়ে মিলায় দিলো। এতে আমার শরীরের রাগও কমলো না ফাহিমেরও না। তাই আমাদের বেসের কয়েকজনকে নিয়ে রাতের বেলা তিনটারে ইচ্ছে মতো গনধোলায় দিলাম সবাই মুখোশ পড়া ছিলো তাই কে মারলো কেউ কিছু বলতেও পারলো না। এর মধ্যে বাড়ি থেকে মৃত্যু সংবাদ আসলো দাদা মারা গেছে। সংবাদ আসলো রাতে । আমি ঠিক করলাম রাতেই বাড়ি যাবো । দাদা ছোট বেলা আমাকে খুব আদর করতো। দাদার মৃত্যু সংবাদ শুনে আমার ভিতর থেকে কান্না চলে আসে। আমি আনিকাকে কল দিলাম।
আমি: আসসালামুয়ালাইকুম কি করো?
ডক্টর: কিছু না শুয়ে আছি।
আমি: আমার দাদা মারা গেছে। আমি গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি।
ডক্টর: ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন।
কেঁদোনা মানুষকেতো একদিন মরতেই হবে।
আমি: হুম।
ডক্টর: তুমি এখন কোথায় আছো?
আমি: বাসায় রেডি হচ্ছি ফাহিম যাবে আমার সাথে।
ডক্টর: তুমি একটু ওয়েট করো আমি আসছি।
আমি: তোমার আসা লাগবে না । আমি তোমাকে পরে ফোন দিবো।
ডক্টর: ঈশান তুমি একটু দাঁড়াও। আমি আসছি।
_এই বলে আনিকা ফোন কেটে দিলো। আমি আর ফাহিম রাস্তায় গিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম।
একটু পর আনিকার গাড়ি আসলো। আনিকা গাড়ি থেকে নেমে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।আমিও জড়িয়ে ধরলাম। আনিকা বোরকাও পড়ে নাই।
স্কার্ট ও বাঁধে নাই। ওড়না পেঁচিয়ে চলে আসছে।
ফাহিম আনিকাকে এই অবস্থায় দেখে সাথে সাথে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। আনিকার এই কাজটা আমার একটুও ভালো লাগলো না। ভাবলাম পরে এই বিষয়ে কথা বলবো। আমি ছেড়ে দিয়ে বলল।
আমি: তুমি কোনো টেনশন করো না।
ডক্টর: তুমি কতদিন থাকবা?
আমি: জানিনা।
আনিকা: ওকে। তাহলে কিন্তু কল দিবা।
আমি: ওকে তাহলে যাই।
আনিকা: হুম।
_আনিকা গাড়িতে ওঠে চলে গেলো। আমি আর ফাহিম বাড়ি যাই । সেখানে সব করে আসতে দুদিন সময় লাগলো। আমি এসে আগের মতো প্রাইভেট কোচিং শুরু করি। আমি খেয়াল করেছি ফাহিম আর শারমিনের মধ্যে ভালয় চলছে। কিন্তু ফাহিম সবসময় বিষন্ন হয়ে থাকতো শারমিনকে হারানোর ভয়ে। এদিকে আমি বুঝতে পারছি আমি আনিকাকে ভিতর থেকে ভালোবাসি। যে ভালোবাসা এত সহজে ছিন্ন করা যাবে না। এভাবে একটি মাস চলে যায়।
এক মাসের মাথায় আমার প্রচন্ড মাথা ব্যথা উঠে। কারন আজকে শরীরের উপর দিয়ে বেশি পরিশ্রম গেছে। তাই মাথা ব্যথা ওঠেছে। তখন বিকাল ৫ টা। আমি একটা কোচিং করাচ্ছি। এমন সময় আনিকা সোজা ভিডিওকল দিলো । আমি বাইরে বের হয়ে রিসিভ করলাম।
আনিকা: তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেনো?
আমি: প্রচন্ড মাথা ব্যথা করছে।
আনিকা: কোথায় তুমি?
আমি: কলেজে।
আনিকা: শুনো আমি কলেজের আশে পাশেই আছি। তোমাকে আমি একটা রেস্টুরেন্টের ঠিকানা দিচ্ছি।যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চলে আসো।
আমি: ওকে।
আনিকা: লাভ ইউ।
আমি: লাভ ইউ টু।
_আমি কোচিং ছুটি দিয়ে । রেস্টুরেন্টে চলে গেলাম।
গিয়ে দেখি সে এখনো আসেনি। আমি একটা সিটে বসে অপেক্ষা করতে লাগলাম। একটু পর দেখলাম আনিকা আসছে । আমার আনিকাকে দেখেই রাগ ওঠে যায়। কারন আনিকার মুখে নাই কোনো নেকাব। আর টাইট একটা বোরকা পড়েছে।যা দেখে আমার পুরো মেজাজ গরম হয়ে যায়।
চলবে…….