#নাম: সিনিয়র ডক্টর
#পার্ট:৮
#লেখক:Osman
_আমি কোচিং ছুটি দিয়ে রেস্টুরেন্টে চলে গেলাম।
গিয়ে দেখি সে এখনো আসেনি। আমি একটা সিটে বসে অপেক্ষা করতে লাগলাম। একটু পর দেখলাম আনিকা আসছে । আমার আনিকাকে দেখেই রাগ ওঠে যায়। কারন আনিকার মুখে নাই কোনো নেকাব আর টাইট একটা বোরকা পড়েছে।যা দেখে আমার পুরো মেজাজ গরম হয়ে যায়। আমি নিজেকে কন্ট্রোল করে । হাসি মুখ নিয়ে বললাম
আমি: আসছো তুমি?
আনিকা: হুম। তোমার কি আগের সমস্যা?
আমি: হুম ।
_আমি টেবিলে মাথা দিয়ে মাথা নিচু করে বসে রইলাম। তার সাথে কথা বলতে ভালো লাগছে না।
সে অন্তত নেকাবটা দিয়ে আসতো।
আনিকা: তোমাকে সিটি স্ক্যান করাতে হবে।
_এই বলে আনিকা আমার মাথাটা হাতিয়ে দিচ্ছে। আমার খুব লাগছে। এভাবে ১০ মিনিট মাথা হাতাইয়া দিলো। আমার এখন অনেক ভালো লাগছে। আমি ইচ্ছা করে প্রসংসা করলাম না। কারন সে আমার কথা শুনেনি।
আনিকা: ভালো লাগছে?
আমি: হুম।
_আনিকা এই পাশ থেকে ওঠে । আমার পাশে বসলো পাশে বসে আমার মাথা হাতিয়ে দিচ্ছে। এভাবে আরো ১০ মিনিট মাথা হাতিয়ে দিলে। আমি মাথা ওঠালাম।
আমি: মাথা ব্যথা অনেকটা কমে গেছে।
আনিকা: দেও আরেকটু মাথাটা হাতিয়ে দেই ভালো লাগবে।
আমি: না আপাতত চলবে।
আনিকা: ওকে ।
_আসলে মাথা ব্যথা অনেকটা কমে গেছে।তাই প্রসংসা না করে পারলাম না।
আমি: বিয়ের পর কিন্তু কিছু করো আর না করো। এভাবে মাথা কিন্তু হাতিয়ে দিতেই হবে।
আনিকা: আমার মাথা বানানো ভালো লাগে।
আমি: হুম ।
আনিকা: থ্যাংকস ।
আমি: আমাকে কোনো সময় থ্যাংকস দিবা না। দরকার হলে বকা দিবা তবু ও থ্যাংকস দিবা না।
আনিকা: ওককে। শোনো একটা কফি খাও ভালো লাগবে
।
আমি: ওকে। আনিকা তুমি কিন্তু আমার একটা কথা মানো নি।
আনিকা: কি কথা?
আমি: এতো তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে।
আনিকা: কাজে ব্যস্ত থাকিতো । মেইসটেক হতে পারে।
আমি: নেকাব।
আনিকা: ওহহ মনেই থাকে না।
_আর সাথে সাথে নেকাব লাগিয়ে ফেলল।
আমি: ঠিক আছে। সাথে তোমার আরো দুইটি কাজ করতে হবে।
আনিকা: কি কি?
আমি: তোমাকে আরো লুস বোরকা পরতে হবে।আর তোমার ড্রাইভারকে বাদ দিতে হবে মেয়ে ড্রাইভার দেখো পাও কিনা।
আনিকা: ওকে দেখা যাক। মুখটা কালো করে বলল।
আমি: তুমি রাগ করছো?
আনিকা: না।
আমি: দেখ আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমি চাই তুমি আর আমি একসাথে সারাজীবন থাকি। আমার স্বপ্নের মতো করে তোমাকে সাজাতে। এখন যদি তুমি আমাকে সে সুযোগ না দাও । তাহলে তো হচ্ছে না।
আনিকা: হুম।
_আনিকা ব্যাগ থেকে একটা বড়ি বের করলো। দিয়ে বলল
আনিকা: এখন বাসায় গিয়ে কিছু খেয়ে এটা খাবে।
আমি: ওকে। তুমি চলে যাচ্ছো?
আনিকা: হুম।
আমি: আরেকটু বস কফিইতো খাওয়া হলো না।
আনিকা: তুমি খাও । আমি গেলাম।
_এই বলে আনিকা চলে গেলো। আমি কফির অর্ডার দিলাম। কফি খেয়ে আমি বাসায় চলে আসি । বড়ি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
_আনিকাও বুঝতে পারছে ঈশানকে ছাড়া আনিকার জীবন অচল। ঈশানকে আনিকা ভিতর থেকে ভালোবেসে ফেলেছে। ঐ আশিকের ক্ষেত্রে এরকম ছিলো কিন্তু ঈশানের প্রতি যেমন অনুভূতি তেমন ছিলো না। আনিকা ইচ্ছে করে ঈশানের সাথে এরকম করছে। কারন আনিকা ইশানকে পরিক্ষা করছে।
আনিকা যুক্তিটা এভাবে দেয়েছে । ঈশান আমাকে ভালোবাসে । আমি ঈশান কে ভালোবাসি। ঈশান চাইবে না আমি পর্দা না করি। সে চাইবে না আমি অন্য একটা ছেলের সাথে ঘুরি। সে চাইবে আমি সব সময় তার কথা শুনি তার কথা মতো চলি। এখন যদি
আমি ঈশানের কথা না শুনি । তাহলে ঈশান রাগ করবে। এই রাগ করার মানেই ঈশান আমাকে ভিতর থেকে ভালোবাসে। এখন যদি ঈশান রাগ না করে । তারমানে ঈশানের মন থেকে আনিকা ওঠে যাচ্ছে। ঈশান মনে মনে ভাববে আনিকা থাকুক আনিকার মতো আর আমি থাকি আমার মতো। তারপর আস্তে আস্তে কয়েকদিন যাওয়ার পর দু’জনের সম্পর্ক খারাপ হয়ে যাবে। আর ঈশান যদি আনিকাকে মন থেকে ভালোবাসে তাহলে যত কষ্টই হোক আনিকাকে নিজের কাছে আগলে রাখবে এখন যদি নিজেকে কঠোর হতে হয় তাহলে ঈশান তাই করবে।
এভাবে আনিকা যুক্তি দিলো ঈশানকে পরিক্ষা করার জন্য কারণ আনিকা চায় না আশিকের মতো ঈশানকে হারাতে। ঈশানের সামনে গেলে আনিকা ইচ্ছে করে নেকাব খুলে যায় অন্য যেকোনো সময় আনিকা নেকাব পরে থাকে। আর আনিকা নতুন ড্রাইভার দেখে ফেলেছে। আর কয়েকটা লুস বোরকা যেগুলো ঈশানের ভালো লাগে সেগুলো কিনে রাখছে। আনিকা বিকালে ঈশানের কাছ থেকে এসে
রুমে বসে আছে। এমন সময় শারমিন আনিকাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরল আনিকা বলল ।
আনিকা: তোর কি হয়েছে এত খুশি লাগতেছে কেনো?
শারমিন: ফাহিম না আমাকে ভালোবাসে।
আনিকা: তুই কেমন করে বুঝলি ফাহিম তকে ভালোবাসে?
শারমিন: তার কথা-বার্তা আচার-আচরণ আর সবসময় আমাকে কেয়ার করে।
আনিকা: ভালো তাহলে বিয়ে দিয়ে দেই।
শারমিন: দিয়েদে না করছেকে?
আনিকা: সত্যি।
শারমিন: হুম।
আনিকা: দাঁড়া তরে দেখাচ্ছি মজা।
_এই বলে আনিকা জুড়ে জুড়ে মা মা বলে ডাকতে লাগলো। শারমিন আনিকার মুখে হাত দিয়ে ধরলো।
বলল
শারমিন: আপু ডাকিস না মাকে ডাকিস না।
আনিকা: ওকে আর ডাকবো না। এখন মুখ ছাড়।
_শারমিন মুখ ছেড়ে দেয়। আনিকা আবার বলল
আনিকা: দোয়া কর আগে ঈশানের সাথে আমার বিয়ে হোক। তারপর তুই যাকে বলবি তার সাথে তর বিয়ে দিবো।
শারমিন: সত্যি।
আনিকা: হুম।
_এমন সময় আনিকার মা ঘরে প্রবেশ করলো। প্রবেশ করে বলল
আনিকার মা: শারমিন তুই একটু ঘরে যাতো ।
আনিকার সাথে আমার কথা আছে।
শারমিন: আমি শুনি।
আনিকার মা: না ঘরে যা।
_শারমিন চলে যায়।
আনিকার মা: মা তুই কি বিয়ে করবি না?
আনিকা: হুম করবো।
আনিকার মা: তাহলে তুই কিছু বলছিস না কেনো?
আনিকা: কি বলতাম?
আনিকার মা: দেখ তর জন্য এখন অনেক সম্মন্ধ আসছে। আর কয়েকদিন পর কি এমন সম্মন্ধ আসবে। দেখ মা সামনে শুক্রবার তকে দেখতে আসবে না করিস না।
আনিকা: কিন্তু মা আমার একজন পছন্দের মানুষ আছে।
আনিকার মা: তাহলেতো সেটা খুশির খবর। ছেলেটা কে ?
আনিকা: শারমিনের কলেজে থার্ড ইয়ারে পড়ে।
আনিকার মা: তাহলে ছেলেটাকে একদিন বাড়ি নিয়ে আস।
আনিকা: ওকে মা।
_আনিকার মা চলে যায়। আনিকার মা চলে গেলে শারমিন আবার অনিকার কাছে আসে এসে বলল
শারমিন: আপু মা কি বললরে?
আনিকা: বলল ঈশান কে বাড়িতে নিয়ে আসতে ।
শারমিন: তাহলে আপু তোদের বিয়ে হচ্ছে।
আনিকা: নারে এখনো বলতে পারিনা দোয়া কর যাতে বিয়েটা হয়ে যায়।
শারমিন: ঈশানের বাড়ি থেকে কি হ্যাঁ বলেছে তুইকি তার বাবা মার সাথে দেখা করেছত?
আনিকা: না এ বিষয়ে তার সাথে কথা বলবো।
শারমিন: আপু তুই আমার একটা উপকার করবি ।
আনিকা: কি উপকার ?
শারমিন: তুই ঈশান ভাইকে জিজ্ঞাসা করবি ফাহিম আমাকে মন থেকে ভালোবাসে কি না।
আনিকা: ওকে জিজ্ঞাসা করবো না ।
শারমিন: তাহলে আমি যাই ।
আনিকা: ওকে যা।
_আনিকা শুয়ে শুয়ে ভাবছি ইশান এখনো কল দিচ্ছে না কেনো প্রতিদিনতো এই সময়ে কল দেয় । তাহলে কি ঈশান রাগ করেছে। এতো তাড়াতাড়িতো রাগ করার কথা না। আনিকা নিজেই কল দিলো । ধরছে না । তিন নাম্বার বার দেয়ায় ধরলো।
আনিকা: ফোন ওঠাতে দেরি হলো কেনো?
ঈশান: তুমি যেই বড়ি দিয়েছিলা। সেটা খেয়ে ঘুমিয়ে গেছিলাম।
আনিকা: এতো তাড়াতাড়ি।
ঈশান: হুম।
আনিকা: আগামীকালতো আমরা দুজন অবসর ।চলো না আমরা দুজন ঘুরতে যাই।
ঈশান: কোথায়?
আনিকা: কাল দেখা করলে যায়গা সিলেক্ট করবো।
ঈশান: ওকে।
আনিকা: তাহলে আগামীকাল সকালে দেখা হচ্ছে।
ঈশান: ওকে ।এখন রাখি। অনেক ঘুম পাচ্ছে।
আনিকা: লাভ ইউ।
_এই বলে আনিকা ফোন রেখে দিলো । আনিকা ভাবছে কোনো ভুল করছেনাতো সে। আনিকা আবার আগের মতো টাইট বোরকা আর নেকাব না পড়ে ঈশানের সামনে যাবে এবং দেখবে ঈশানের প্রতিক্রিয়া কি আসে?
চলবে……..