দ্যা_লিফট #পর্ব_১৬,১৭

0
696

#দ্যা_লিফট
#পর্ব_১৬,১৭
#Writer_Shanta_islam
পর্ব_১৬

–অভি ভালো থাকবেন!
চলে যাওয়ার সময় ইশা চোখে চোখ রেখে কথাটা বললো। ওর টলটল করতে থাকা উজ্জ্বল চোখগুলো আর কেও না দেখলেও আমি ঠিকি দেখতে পেয়েছি। মেয়েটাকে বোঝা বড় মুসকিল। কি বলতে চায় কি করতে চায় বুঝে উঠতে পারি না। যেতে ইচ্ছে করছে না। কেমন যেনো পিছু টান লাগছে। মনকে শক্ত করে সামনে এগোতে লাগলাম। এই যুদ্ধ শেষ করতে হবে। এরা যাতে কখনো পৃথিবীতে আক্রমণ করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।

-নেহা সাদ তোমাদের দুজনকে এক সাথে কাজ করতে হবে!
-কিহ? না কখনোই না,ইশা আপু তুই পাগল হয়ে গেছিস আমি এই পেত্নীর সাথে কখনোই কাজ করবো না।
নেহা সাদের মাথায় একটা ঘুসি দিয়ে বললো-তোর মতো ভিতুর সাথে কে কাজ করতে চায় রে?
-সাদ নেহা ঝগড়া করো না,তোমাদের দুজনের কাজটা খুবই ইম্পোর্টেন্ট। তাই এখানে ঝগড়া করা যাবে না। নেহা এই খোলা মাঠটা দেখছো এখান থেকে দাড়িয়ে কত ডিগ্রিতে গোলা ছুরে মারলে মাঠের পুরোপুরি মধ্যে যেয়ে পরবে ক্যালকুলেশন করে বের করো। আর সাদ তোর টার্গেট খুব ভালো। তাই নেহা মাঠের যেই যেই যায়গায় পয়েন্ট করে মারতে বলবে। তুই সেই সেই জায়গায় টার্গেট করে মারবি। রিমেম্বার ওয়ান থিং ওয়াইট রিমাসদের গায়ে একটাও আগুনের গোলা যেনো না লাগে। তোমাদের দুজনের উপর অনেক বড় দায়িত্ব পারবে তো?
-চিন্তা করিস না আপু আমি ঠিকি পারবো। ওই পেত্নী পারবে কী না সন্দেহ।
-বাহ তাহলে এই দু’জনকে এর জন্য নিয়ে আসা হয়েছে? ভালো প্ল্যান ইশা, এভাবে আমরা ওদের অর্ধেক আর্মি গায়েল করতে পারবো।
-হ্যা জেনি আপু আর আমি মাঠে ওদের সাথে লড়াই করবো। নেহা আর সাদ এখান থেকে ওদের উপর টার্গেট করে মারবে। নেহা তোমার উপর সব থেকে বড় দায়িত্ব,তুমি পারবে তো?
নেহা একটু থেমে কাদোকাদো কন্ঠে বললো- আপু প্লিজ আমি পাড়বো না। আপনি প্লিজ ওটা করবে,,,নেহা পুরো কথা শেষ করার আগেই ইশা নেহার গালে হাত রেখে বললো- তুমি ভালো করেই জানো তোমাকে কি করতে হবে। আর আমি জানি তুমি পারবে। সামলে নিও প্লিজ!
নেহা ইশাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয়।
জেনির বিষয়টা অদ্ভুত লাগলেও বুঝা যায় নেহা খুব ছোট। ভয় পাওয়াটা স্বাভাবিক।
– নেহা তুমি কি ভয় পাচ্ছো? ওরা এখান পর্যন্ত পৌছাতে পারবে না। তোমরা সেফ থাকবে। নেহা ইশাকে ছেরে জেনির কথায় মাথা নাড়িয়ে সায় দেয়।
-ওকে তাহলে মশাল তৈরি করা শুরু করো।
-আর আমি মাঠে জাগায় জাগায় ফাদ পেতে রাখছি, যাতে ওরা ক্ল্যানের মধ্যে প্রবেশ করতে না পারে।
-ঠিকাছে জেনি আপু।

ওদিকে অভি আর ডেবিড লুকিয়ে লুকিয়ে ব্লেক রিমাসদের জোনে প্রবেশ করে।
-একি এখানে কেও নেই কেনো?
-সেটা তো আমিও ভাবছি, একটা রিমাসকেও দেখতে পারছি না। ওরা কি তাহলে যুদ্ধের জন্য ওয়াইট রিমাসদের ক্ল্যানে চলে গেছে?
-ওহ সিট তাহলে তো আমাদের ওখানে যাওয়া উচিৎ।
-ঠিক বলেছেন।
অভি আর ডেবিড ফিরে যাওয়ার জন্য পা বারাতেই কিছু অদ্ভুত শব্দ শুনতে পেলো।
-এই শব্দ তো,, ডেবিড বাক্যটা অর্ধেক বলে শব্দের পিছু নিতে লাগলো। নিশ্চয়ই ও কিছু টের পেয়েছে। অভিও ডেবিডের পিছু নেয়। ডেবিড আর অভি একটা বড় গাছের সামনে এসে পৌছায়, গাছ থেকে একটু সামনে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে একটা রিমাস দাঁড়িয়ে কিছু একটা করছে। ডেবিড সাথে সাথে মানব রুপ ছেরে রিমাস রুপ ধারন করে সেই রিমাসের উপর হামলা করে বসে। দুজনের মধ্যে জটিল লড়াই হচ্ছে। কেও কোনো অংশে কম নেয়। এভাবে চলতে থাকলে ডেবিড আহত হতে পারে। অভি ব্যাগ থেকে পিস্তল বের করে ওই রিমাসটার উপর গুলি মারতে থাকে। এতে রিমাসটা একটু গায়েল হলেও কিছুক্ষন পর আবার রিকোভার হয়ে যাচ্ছে। কীভাবে পসিবল, এতো বার গুলি লাগার পরও ক্ষতগুলো রিকোভার হয়ে যাচ্ছে কীভাবে?
হঠাৎ অভি খেয়াল করে ওই রিমাসটা যেখানে দাড়িয়ে ছিলো সেখানে কিছু ডিমের খোসা পড়ে রয়েছে। খোসাগুলো চকচক করছে। এটা যদি রিমাসের ডিমের খোসা হয়েই থাকে তাহলে এভাবে চকচক করছে কেনো? না এসব আমি কি ভাবছি,আমাকে ডেবিডের সাহায্য করতে হবে। অভি ব্যাগ থেকে কিছু জিনিসপত্র বের করে ফটাফট একটা মশাল তৈরি করে ফেলে। মশালে আগুন জ্বালিয়ে সেই রিমাসটার উপর ছুরে মারতেই কিছুক্ষনের জন্য রিমাসটা দিশেহারা হয়ে যায়। ডেবিড অনেক ঘায়েল হয়ে গেছে। ডেবিডের শরীর থেকে রক্ত ঝড়ছে। ডেবিড মানুষ রুপ ধারন করে মাটিতে পড়ে যায়। অভি দৌড়ে ডেবিডের কাছে যায়।
-ডেবিড তুমি ঠিক আছো?
-হ্যা, আমি ঠিকাছি।
-ডেবিড তোমার আঘাত গুলো থেকে রক্ত ঝড়ছে। আগে তোমার রক্ত ঝড়া থামাতে হবে। অভি ব্যাগ খুলে কিছু বের করতে নিয়ে হঠাৎ থেমে যায়। এক মিনিট ডেবিড তোমাকে মারার পর তুমি ঠিকি ঘায়েল হচ্ছো কিন্তু ওই রিমাসটার শরীরে এতো বার গুলি মারার পরও কিছু হচ্ছে না কেনো?
-মি.অভি আমি এখানে স্টনের শক্তির আভাস পাচ্ছি। কিন্তু আমি দেখতে পারছি না।
অভি হঠাৎ কিছু একটা চিন্তা করে ডেবিড কে রেখে দৌড়ে সেই ডিমের খোসাগুলোর কাছে যায়।
-আমি যদি ভুল না হই তাহলে ইশার শরীরে এই ডিমটার ভিতর থেকে স্টনের পাওয়ার ডুকেছে। আর এখন এর অবশিষ্ট খোসাগুলো থেকে রিমাসটা শক্তি নিচ্ছিলো। অভির পিছন থেকে হুংকারের শব্দ শোনা যায়। অভি পিছু তাকিয়ে দেখে সেই রিমাসটা আবার রিকোভার হয়ে যাচ্ছে। অভির উপর রিমাসটা ঝাপিয়ে পড়তেই সাথে সাথে অভি ডিমের একটা খোসা উঠিয়ে চোখ বন্ধ করে সামনে ধরে। রিমাসটার শরীরে আবারো আগুন লেগে যায়। অভির হাত থেকে আলো বের হচ্ছে। তার মানে আমি সঠিক ছিলাম এটাতেই ব্লাক স্টনের পাওয়ার রাখা ছিলো। অভি বসা থেকে উঠে দাঁড়ায় রিমাসটার শরীরে আগুন জ্বলে ছাই হয়ে যায়। এবার অভি দৌড়ে ডেবিডের কাছে যায়।
-ডেবিড চোখ খোলো, এটা থেকে শক্তি নেওয়ার চেষ্টা করো। ডেবিড আস্তে আস্তে খোসাটায় হাত রাখে। তার শরীরের সমস্ত ক্ষত আস্তে আস্তে ঠিক হতে লাগলো। ডেবিড পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠে দাঁড়ায়।
-তুমি ঠিকাছো ডেবিড?
-হ্যা মি.অভি। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আজ আপনার জন্য আমার প্রান বাচলো।
-আরে না ব্যাপার না। কিন্তু তুমি জানতে না স্টনের পাওয়ার এখানে আছে।
-হ্যা ফিল তো করেছিলাম। কিন্তু দেখতে পারছিলাম না। লড়াইয়ে ব্যস্ত ছিলাম তাই কোথা থেকে শক্তি নিচ্ছে সেটাও বুঝতে পারিনি। ভালোই হয়েছে স্টনের দ্বিতীয় ধারক আমার সাথে ছিলো নাহলে স্টনের অবশিষ্ট পাওয়ার দেখাও হতো না আর আমার বাচাও হতো না।
অভি পরে থাকা সব গুলো খোসা ব্যাগে ডুকিয়ে নেয়।
-এখানে এগুলো রাখা রিস্কি। ব্লেক রিমাসরা এখান থেকে পাওয়ার নিতে পারে।
-পাওয়ার নিতে পারে না নিয়ে নিয়েছে।
কন্ঠটা অভিদের পিছন থেকে আসছে। অভি আর ডেবিড পিছনে তাকিয়ে দেখে একটা রিমাস দাঁড়িয়ে আছে। অভি ব্যাগ থেকে খোসা বের করতে নিলে ডেবিড অভিকে থামিয়ে দেয়-মি.অভি ও একজন ওয়াইট রিমাস। অভি ব্যাগের ভিতর থেকে হাত সরিয়ে নেয়।
-অহ তাহলে তুমিই সেই প্রতারক যে আমাদের মধ্যে থেকে আমাদের ধোকা দিয়ে যাচ্ছো?
রিমাসটা মানুষ রুপ ধারন করে হাটু গেরে মাটিতে বসে পড়ে।
-এ ছাড়া আমার কাছে আর কোনো উপায় ছিলো না।
-তুমি কি বলতে চাইছো? তুমি তোমার জাতীর সাথেই প্রতারণা করে এখন বলছো এটা ছাড়া তোমার কাছে আর কোনো উপায় ছিলো না?
-লিং সান আমার পরিবারকে আটকে রেখেছে। এমনকি অনেক গর্ভবতী রিমাসদের ডিম আটকে রেখে নস্ট করার হুমকি দিয়ে স্বজাতীর বিরুদ্ধে প্রতারণা করতে বাধ্য করাচ্ছে। আমরা নিরুপায়।
-লিং সান? এই লিং সান কে?
-একজন বড় বিজ্ঞানী। ও ব্লেক রিমাসদের টেকনোলজির লোভ দেখিয়েছে। ব্লেক রিমাসদের ওয়াদা করেছে ও এই রিওয়ার্ল্ডের কিং হতে পারলে পৃথিবীর মতো এখানেও সবুজ স্যামলে ভরে যাবে, রিওয়ার্ল্ড হবে আরো উন্নত। স্টনের শক্তি ছাড়াও ওরা বেচে থাকতে পারবে। এমনি মানুষের রক্ত তৈরি করা হবে। এতে মানুষ না মেরেও ওরা রক্ত খেতে পারবে।
-কিহ? এটা কখনোই সম্ভব না? রক্ত কখনোই তৈরি করা যায় না।
-মি.অভি শুধু রক্ত নয় পৃথিবীর মতো রিওয়ার্ল্ড কখনোই সবুজ স্যামল হতে পারবে না। শুধু স্টনের পুরো পাওয়ারি পারবে এটা। যদি স্টনের সকল পাওয়ার একে বারের জন্য এই রিওয়ার্ল্ডের হাওয়ায় ছেরে দেওয়া হয় তাহলেই এক মাত্র এই রিওয়ার্ল্ড সতেজ হয়ে উঠবে। এতে করে রিমাস জাতীর বাচার জন্য আর স্টনের শক্তির উপর নির্ভর থাকতে হবে না। কিন্তু কোনো কিং বা কুইন কখনোই এটা করেনি। কারণ যেই কিং বা কুইন এই কাজ করবে সে নিজের প্রান হারাবে।
-তোমাদের এর আগের কিং মারা যাওয়ার আগে এই কাজটা করলে হয়তো ভালো হতো। মরলো তো সেই ব্লেক রিমাসদের হাতেই, রিওয়ার্ল্ডের জন্য মরলে কি হতো? অন্তত ব্লেক রিমাস আর ওয়াইট রিমাসদের মধ্যে দন্ধটা মিটে যেতো। আর বেচে থাকার জন্য রক্তের উপর নির্ভর থাকতে হতো না।
-কেও কি স্বইচ্ছায় নিজের প্রান হারাতে চায় ভাই।
-আসলেই জেনি ঠিক বলেছিলো রিমাসরা ক্ষুদ্র মস্তিষ্কের। তাদের তৃতীয় পক্ষ ব্যবহার করে নিজের সার্থ অর্জন করছে এরা সেটা বুঝতে পারছে না।
-লিং সান তার মহলে ওয়াইট রিমাসদের বন্ধি করে রেখেছে। আর আজ ওয়াইট রিমাসদের ক্ল্যানে হামলা করা হবে।
-আমাদের আগে লিং সানকে থামাতে হবে। আর যেসব রিমাস বন্ধি আছে তাদের মুক্ত করতে হবে।
-সেখানে ডোকা মুসকিল,
-ঠিকাছে তুমি আমাদের ওখানে নিয়ে চলো। এর পর কি করতে হবে সেটা আমরা দেখে নিবো।

-ওই পেত্নী তুই কি সত্যি সত্যি পালাতে যাচ্ছিলি?
-হ্যা,
-তোকে আবার কোন ছেলে পছন্দ করলো?
-তোকে সেটা জানতে হবে না। দূরবিনটা দে।
এর আবার কি হলো মুড অফ করে আছে।
-আমার ব্যাগে দূরবিন নেই। ওয়েট ইশা আপু এখানে ব্যাগ রেখে গেছে ওর ব্যাগে থাকতে পারে।
-এই নে।
ইশা সাদের হাত থেকে দূরবিন নিয়ে ময়দানটায় ভালো করে চোখ বুলিয়ে নিচ্ছে।
-তোর কি হয়েছে রে? মুখটা এমন পেচার মতো করে রেখেছিস কেনো?
সাদ আশা করছিলো হয়তো নেহা ওকে তেরা কথা শুনাবে। কিন্তু সাদকে ভুল প্রমান করে নেহা সাদের দিকে ছলছল দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো- সাদ
-কি? কিছু বলবি?
-না কিছু না,
-কি হয়েছে বল, তোর হাপ ভাব ভালো ঠেকছে না।
-আচ্ছা তুই ইশা আপুকে কতোটা ভালোবাসিস?
-দূর ওকে আবার ভালোবাসতে যাবে কে? ও আমার জীবন থেকে গেলেই বাচি। আপদ বিদেয় হবে।
নেহা সাদের গালে ঠাস করে একটা চড় মেরে বসে।
– মারলি কেনো?
-ইচ্ছে হয়েছে তাই,
-মেয়ে মানুষ বলে বেচে গেলি,আমি কুত্তা আর মেয়ে জাতীকে মারি না। নাহলে,
নেহা সাদের কথায় জবাব না দিয়ে আবারো দূরবিনে চোখ দেয়।

ইশা আর জেনি ওয়াইট রিমাসদের নিয়ে ফাদ পাতছে।
-জেনি আপু আপনার তো এদের সম্পর্কে ভালোই অভিজ্ঞতা আছে দেখছি!
-হ্যা মোটামুটি আছে বলতে পারো।
-স্টনের শক্তি আমি না পেয়ে আপনি পেলে ভালো হতো। অন্তত শক্তির সঠিক ব্যবহার হতো।
-আমি একবার স্টন হাতে নিয়েছিলাম কিন্তু অর্ধেক অংশ। পুরোটা নেওয়াও হয়নি আর শক্তিও পাওয়া হয়নি। স্টনের পাওয়ার তোমাকে বাছাই করেছে হয়তো এর পিছনে কোনো কারণ আছে।
-কারন তো আছে বটে। আচ্ছা জেনি আপু একটা কথা মি.অভির খেয়াল রাখবেন,
– হঠাৎ এ কথা কেনো বলছো?
ইশার হাত থেকে একটা মশাল পরে যায়।
-ওরা আসছে?
-কি? ইশা কি হয়েছে?
-জেনি আপু ওরা আসছে। সবাই পছনে যাও এখনি। যাও,পিছনে যাও ইশা চেচিয়ে চেচিয়ে ওয়াইট রিমাসদের পিছনে যাওয়ার জন্য বলছে।
হঠাৎ জেনি খেয়াল করে পায়ের নিচের মাটি কাপছে। মনে হচ্ছে ভূমিকম্প আসছে।
–মাটি কাপছে কেনো? ভূমিকম্প আসছে নাকি?
-ভূমিকম্প নয়,ব্লেক রিমাসরা আসছে। ওরা ঝাক বেধে আসছে। সবাই প্রস্তুত হও,যুদ্ধ শুরু হতে চলেছে।

চলবে,,

#দ্যা_লিফট
#পর্ব_১৭
#Writer_Shanta_islam

ইশার আদেশ মতো ওয়াইট রিমাসের আর্মি ময়দান থেকে দূরে সরে যায়।
ইশা ওয়াকিটকি দিয়ে সাদ আর নেহাকে প্রস্তুত থাকতে বলে।
-ইশা তুমিও এখান থেকে চলো,ওরা সবার আগে তোমার উপর এট্যাক করবে।
-না আপু আপনি সাদ আর নেহার কাছে যান। এখানে আমার প্রয়োজন।
-কিন্তু অভি বলেছে,
-হ্যা উনি আমাকে প্রোটেক্ট করতে বলেছে। কিন্তু আপনি আমাকে যতটুকু শিখিয়েছেন ততোটা নিজেকে প্রোটেক্ট করার জন্য যতেষ্ট। ওরা সংখ্যায় আমাদের থেকে দিগুণ। আপনি এক কাজ করুন সাদ আর নেহার কাছে যান আমি যখনি ইশারা দিব তখনি আগুনের গোলা ছুরতে বলবেন।
-কিন্তু ইশা,
-কোনো কিন্তু নয়, ওরা এসে পড়েছে। জলদি যান।
না চাইতেও ইশাকে একা মাঠে রেখে চলে আসতে হলো। ইশার অনেকটা পিছনে ওয়াইট রিমাসরা দাড়িয়ে আছে আর সামনে ঝাক বেধে ব্লেক রিমাসদের দল আসছে। যেই মেয়েটা কিছু হলেই ভয়ে থরথর করে কাপতো সে আজ যুদ্ধের জন্য ময়দানে নেমেছে। এটাকেই হয়তো বদলে যাওয়া বলে।

-এটাই তাহলে লিং সানের মহল।
চোখ ধাধানো একটা জায়গা,যে কেও দেখলে প্রশংসা না করে পারবে না।
-মহলের বাইরে কোনো রিমাসকে দেখা যাচ্ছে না। মনে হয় সব গুলো রিমাস যুদ্ধে গেছে।
– আমাদের তারাতাড়ি করতে হবে। যুদ্ধে ইশাদের সাহায্যের প্রয়োজন হতে পারে।
-ঠিক বলেছেন মি.অভি। এখানে কেও নেই,তার মানে মহলে ডোকা খুব একটা কঠিন হবে না।
-একটা কাজ করো তুমি আর ডেবিড বন্ধি ওয়াইট রিমাসদের মুক্ত করো। আর আমি লিং সানকে খুজতে যাচ্ছি।
অভির কথা মতো ডেবিড ওয়াইট রিমাসটাকে নিয়ে অন্যান্য রিমাসদের মুক্ত করতে গেলো। এদিকে অভি মহলের প্রতিটা কোনায় লিং সানকে খুজছে। অদ্ভুত কোনো রিমাস তো দেখাই যাচ্ছে না,লিং সানেরও কোনো খবর নেই। অভি হাটতে হাটতে একটা রুমে ডুকে গেলো। রুমটার চারপাশ ছমছমে,দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার্য আসবাবপত্রে ভরা। দেখেই মনে হচ্ছে এখানে কোনো মানুষ বসবাস করে। অভি খুব সতর্কের সাথে পিস্তল সামনে রেখে রুমে প্রবেশ করলো। এক পা দু পা করে রুমের চারপাশটা ঘুরে দেখা হলো। লিং সানের নাম গন্ধও নেই। তার মানে ও এখানে নেই। দেয়ালের মাঝ বরাবর একজন মানুষের ছবি জোলানো আছে। এটাই মনে হয় লিং সান। ছবিটার কাচ অন্য রকম লাগছে। নরমাল মনে হচ্ছে না। অভি ছবির উপর হাত রাখতেই সাথে সাথে দেয়ালের এক সাইড থেকে গুপ্ত দরজা বেরিয়ে এলো। দরজাটা অবশ্য খোলা। অভি পিস্তল হাতে নিয়ে গুপ্ত রুমে প্রবেশ করলো। রুমে ডুকতেই চোখ কপালে উঠলো।
-একি এখানে রিমাসদের লাশ জুলানো আছে। লিং সান নিজের আর্মিকেই মেরে জুলিয়ে রেখেছে কিন্তু কেনো? কিছুই বুঝতে পারছি না,লিং সান কি করতে চাইছে। দুপা আরেকটু সামনে এগোতেই দেখা গেলো বড় বড় কাচের বোতলে কিছু রাখা। অভি পরক্ষ করে বলতে পারছে না এগুলো কি জিনিস? হাটতে হাটতে একটা টেবিলের সামনে এসে দাঁড়াই। টেবিলের উপর কিছু কাগজপত্র রাখা আছে। এটা যে লিং সানের ঘর তা নিশ্চিত হলাম। টেবিলে রাখা একটা কাগজ হাতে নিতেই পায়ের শব্দ শোনা গেলো। অভি সতর্ক হয়ে পিস্তল উপর করে পিছু ফিতরেই দেখলো ডেবিড আর ওই রিমাসটা দাঁড়ানো।
– মি.অভি আপনি তো আমাদের জানেই মেরে ফেলবেন। ভয় পাইয়ে দিলেন।
-সরি ডেবিড আমি ভেবেছিলাম লিং সান এসেছে।
ডেবিডের পাশে দাঁড়ানো ওয়াইট রিমাসটা বললো-লিং সান মহলে নেই হয়তো যুদ্ধে গেছে। আপনাকে ধন্যবাদ সকল রিমাসদের মুক্ত করা হয়েছে।
অভি পিস্তল নিচে নামিয়ে বললো- তোমরা এখানে কীভাবে এলে?
-আপনাকে খুজতে খুজতে লিং সানের রুমে চলে এলাম। কিন্তু ওখানে আপনি ছিলেন না। পরে দেখলাম দেয়ালের সাথে আরেকটা দরজা খোলা রয়েছে। এখানে ডুকতেই যা দেখলাম।
-লিং সান রিমাসদের মেরে জুলিয়ে রেখেছে। কিন্তু কেনো? যে রিমাসদের বোকা বানিয়ে সার্থ অর্জন করা যাচ্ছে তাদেরকেই কেনো মারছে?
-কারন ও রিমাসদের বডি পার্টস জমা করছে। আসার সময় কাচের বড় বড় বোতলে তো দেখেছেনি রিমাসদের বর্ডি পার্টস।
-ওহ সিট ওই বোতল গুলোতে রিমাসদের বর্ডি পার্টস ছিলো। কিন্তু ওগুলো দিয়ে ও কি করবে?
হঠাৎ অভির চোখ যায় টেবিলে রাখা একটা ফাইলের উপর। অভি ফাইলটা খুলতেই দেখলো তাতে রিমাসদের শরীরের বিভিন্ন অংশের ব্যবহার লিখা আছে। আরেক পৃষ্টা উল্টাতেই দেখা গেলো ওসব শরীরের অংশ দিয়ে কীভাবে টেকনোলজি ব্যবহার করে হাতিয়ার বানানো যায়।
-ও মায় গুডনেস! এগুলো তো,,
-কি হয়েছে মি.অভি। এগুলো কীসের কাগজ?
-লিং সান ব্লেক রিমাসদের শরীরের অংশ জমা করেছে কারণ রিমাসদের শরীরে অলৌকিক শক্তি আছে। যেগুলো ব্যবহার করে হাতিয়ার বানানো যাবে।
– আমাদের বৈশিষ্ট্যগুলো হলো দেয়ালের এপার ওপার যাওয়া, সামনে কী হবে আগে থেকে আভাস পাওয়া, গন্ধ শুঙে কিছু বের করা, বড় থেকে বড় জিনিস বহনের সক্ষমতা রাখা। এসব জিনিস দিয়ে লিং সান কি হাতিয়ার বানাবে আর বানিয়েই বা কী করবে?
– রিমাসদের শক্তি অনেক, এই অলৌকিক শক্তিকে যদি হাতিয়ার বানানো হয় তাহলে পুরো পৃথিবী থাকবে লিং সানের হাতের মুঠোয়। পৃথিবীতে যার কাছে শক্তিশালী হাতিয়ার বেশি সেই রাজা। লিং সান শুধু রিওয়ার্ল্ডে নয় পৃথিবীতেও রাজ্যত্ব করতে চাইছে।
-রিমাসদের মেরে হাতিয়ার বানাতে চাইছে ওই জানোয়ার। ওকে আমি কাচা গিলে খাবো। আমার আর সহ্য হচ্ছে না। ওকে না মারা পর্যন্ত শান্তি পাবো না।
-ও হয়তো যুদ্ধের ময়দানে গেছে। আমাদেরও এখন ওখানে যাওয়া উচিৎ। তার আগে এই সব কিছু জ্বালিয়ে নষ্ট করতে হবে। যাতে রিমাসদের কেও ব্যবহার করতে না পারে।
অভির সাথে সায় দিয়ে ডেবিড আর ওয়াইট রিমাস ওখানে থাকা সব কিছু নষ্ট করে দেয়।

ব্লেক রিমাসরা ঝাক বেধে ইশার দিকে ছুটে আসছে। মাটি প্রচন্ড কাপছে। আজ ইশার ভয় করছে না। সে একা যুদ্ধের ময়দানে দাঁড়িয়ে আছে আর তার পিছে দাঁড়িয়ে আছে শত শত ওয়াইট রিমাসদের আর্মি। যারা তাদের কুইনের আদেশের অপেক্ষা করছে। যতক্ষণ পর্যন্ত ইশা তাদের আদেশ না করছে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা এগোতে পারবে না। ইশা চোখ বন্ধ করে শেষ বারের জন্য দীর্ঘশ্বাস নিলো। আজ তার উপর নির্ভর করছে রিওয়ার্ল্ডের আগামি দিনের ভবিষ্যৎ তাকে যে পারতেই হবে। ব্লেক রিমাসরা মাঠের মাঝ বরাবর আসতেই ইশা ডান হাত উচু করে বললো- “এখনি” আর সাথে সাথে উপর থেকে তীরের মতো আগুনের গোলা তাদের উপর নিক্ষেপ হলো। যার যার গায়ে আগুনের গোলা পড়ছে তাদের পুরো শরীরে আগুন লেগে যাচ্ছে।
-ইয়েস! ইশার প্ল্যান কাজে দিয়েছে। প্রায় অর্ধেক আর্মি ঘায়েল হয়ে পরে যাচ্ছে। সাদ এখনি বোমা মারা শুরু করো।
নেহা চোখে দূরবিন লাগিয়ে সাদকে বলছে কোথায় কোথায় বোমা ছুরতে হবে। সাদ নেহার ইন্সট্রাকশন অনুযায়ী সেখানে সেখানে টার্গেট করে বোমা মারছে। সাদের টার্গেট গুলো খুব নিখুঁত যেখানে যেখানে বলছে সেখানেই বোমাগুলো পড়ছে। ছেলেটা বক বক করলেও ট্যালেন্ট আছে বটে। ব্লেক রিমাসদের অবস্থা সূচনীয়। জেনি তীরের মতো আগুনের গোলা মেরে কনফার্ম করলো যুদ্ধে তাদের বিজয় নিশ্চিত।
-বাহ ব্লেক রিমাসদের অবস্থা খারাপ হয়ে পড়েছে। যুদ্ধ আমরাই জিতবো সাদ দেখে নিও।
জেনি বিজয়ী হাসি হেসে কথাগুলো বলছিলো। হঠাৎ নেহা কিছু একটা দেখতে পেলো।
-জেনি আপু এসব কি হচ্ছে?
নেহার কথায় জেনি ময়দানে তাকিয়ে দেখে ঘায়েল হওয়া ব্লেক রিমাসরা আবার রিকোভার হয়ে উঠছে। সাথে সাথে জেনির ঠোঁটের বিজয়ী হাসি গায়েব হয়ে গেলো।
-ওয়াট! এটা কীভাবে সম্ভব। ব্লেক রিমাসরা আবার রিকোভার হচ্ছে কীভাবে? এটা তো শুধু একমাত্র স্টনের পাওয়ারি করতে পারবে। কিন্তু এখন স্টনের পাওয়ার তো ইশার কাছে। তাহলে এসব কীভাবে হচ্ছে? হঠাৎ জেনির ওয়াকিটকি বেজে উঠলো। ওপাশ থেকে অভির কন্ঠ ভেসে আসছে।
-জেনি তোমরা সবাই ঠিক আছো?
-হ্যা অভি আমরা সবাই ঠিক আছি। কিন্তু এখানে এসব কি হচ্ছে বুঝতে পারছি না।
-কি হয়েছে? খারাপ কিছু ঘটেনি তো? ইশা ঠিক আছে তো?
-হ্যা ইশা ঠিক আছে। কিন্তু ওয়াইট রিমাসরা ঘায়েল হওয়ার পর আবার রিকোভার হয়ে উঠছে, বুঝতে পারছি না কীভাবে?
-অনেক বড় কাহিনি জেনি। ওরা সবাই খোসা থেকে স্টনের পাওয়ার নিয়েছে।
-কিহ খোসা? কীসের খোসা?
-পরে সব খুলে বলবো। আরেকটু অপেক্ষা করো আমরা কিছুক্ষনের মধ্যেই ওখানে পৌছাবো। আর হ্যাঁ ইশার খেয়াল রেখো। লিং সান আগে ইশার উপর এট্যাক করবে। ওর থেকে স্টনের শক্তি কেরে নেওয়ার চেষ্টা করবে। ইশার গায়ে যেনো একটা আচরও না লাগে।
এখন কী বলবে জেনি? ইশা যে যুদ্ধের ময়দানে একা দাঁড়িয়ে আছে। না এখান থেকে এট্যাক করলে চলবে না। ইশাকে প্রোটেক্ট করতে হবে। জেনি ওয়াকিটকি রেখে ইশার উদ্দেশ্যে পা বাড়াতেই পিছন থেকে অদ্ভুত হিংস্র আওয়াজ ভেসে এলো। সবাই পিছনে তাকাতেই দেখলো ব্লেক রিমাস ওদের জোনে ডুকে গেছে। জেনি সাদ আর নেহাকে রক্ষা করার জন্য সেই রিমাসটার সাথে লড়াই করে যাচ্ছে। জেনি হাতে আঘাত পেয়েছে। এতো বড় মন্সটারের সাথে খালি হাতে লড়াই করা সম্ভব না। সাদ ব্যাগ থেকে ক্যারোসিন বের করে রিমাসটার উপর ছুরে মারে আর হাতে থাকা লাইটারটায় আগুন জ্বালিয়ে ব্লেক রিমাসটার উপর ছুরে মারতেই আগুন ধরে যায়।
নেহা-তোর ব্যাগে ক্যারোসিন এলো কীভাবে?
সাদ-আমার ব্যাগ হলো ডোরেমনের ব্যাগ। এখানে সব কিছু পাওয়া যায়।
নেহা-তোর কী একটা তার ছেরা? এই সিরিয়াস সময়েও মজা করছিস?
-তার ছেরা না বলদ অভি ভাইয়ের টেকনিক। উনার মতো বুদ্ধি খাটানোর চেষ্টা করছি। তোর মতো বলদের গিলুতে ডুকবে না। নেহা আর সাদের ঝগড়ার মাঝে আরো চার পাচটা রিমাস চলে এলো। এবার জেনি সাদ নেহা তিনজন এক হয়ে লড়াই করছে। সবার হাতেই আগুনের মশাল।

এদিকে ইশা বিন্দুমাত্রও অবাক হলো না যে ব্লেক রিমাসরা আবার রিকোভার হয়ে উঠছে। এমন মনে হচ্ছে ইশা আগে থেকেই সব জানতো। ব্লেক রিমাসদের ঝাক ইশার অনেকটা কাছে চলে আসতেই ইশা তার আর্মিদের আদেশ দিয়ে বললো- “আক্রমণ” সাথে সাথে ওয়াইট রিমাসরা ঝাপিয়ে পরলো ব্লেক রিমাসদের উপর। শুরু হলো বিশাল যুদ্ধ,সেই যুদ্ধ যেটার জন্য এতোদিন সবাই অপেক্ষা করেছে। আজ সেই অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো। দুই দলের মধ্যে প্রবল লড়াই চলছে। ব্লেক রিমাসরা বিশেষ করে ইশার উপর হামলা করছে। ইশা স্টনের শক্তি যতটা সম্ভব কন্ট্রোলে রেখে লড়াই করছে। একটা একটা করে ব্লেক রিমাসদের ধুমরে মুচরে শেষ করছে। হঠাৎ ইশা দূর থেকে আভাস পেলো এতোগুলো রিমাসদের মধ্যে একজন হিউম্যানও উপস্থিত আছে। আরেকটু সামনে এগিয়ে যেতেই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে একটা রিমাসের কাধে বসে ফায়ার করছে সেই ব্যক্তি। তার হাতে হাতিয়ার দেখা যাচ্ছে। দেখে মনে হচ্ছে এটা কোনো নরমাল হাতিয়ার নয়। হাতিয়ার দিয়ে যেখানেই এট্যাক করছে সেখানে বিস্ফোরিত হয়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। ইশা লোকটার মাইন্ড রিড করতেই সব বুঝে গেলো। ওহ তাহলে ইনিই সব কিছুর পিছনে রয়েছে। এই লিং সানি আমাদের মেইন ভিলেন। ইশা ব্লেক রিমাসদের সাথে ফাইট করতে করতে সামনে এগোতে থাকে। যেভাবেই হোক লিং সানকে থামাতে হবে। ওর হাতিয়ারের কারণে ওয়াইট রিমাসদের অর্ধেকের বেশি আর্মি ঘায়েল হয়েছে।

-ওহ সিট! এখানে অলরেডি যুক্ত শুরু হয়ে গেছে। অভি যুদ্ধের ময়দানে পৌছে দেখলো যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে।
-ডেবিড প্রস্তুত হও আমাদেরও লড়াইয়ে নামতে হবে। কথাটা শেষ করতে না করতেই আচমকা একটা রিমাস অভির উপর হামলা করে, ডেবিড মানব রুপ ত্যাগ করে রিমাস রুপ ধারন করে অভিকে বাচায়। ডেবিডের সাথে থাকা রিমাসটাও যুদ্ধের ময়দানে লড়াইয়ে নেমে যায়। অনেক তো হলো স্বজাতীর সাথে প্রতারণা এখন না হয় স্বজাতীর জন্য লড়াই করে প্রান ত্যাগ করলাম।
অভি ব্যাগ থেকে পিস্তল বের করে একের পর এক গুলি মারছে। কাজ হচ্ছে না। পিস্তল রেখে অভি ব্যাগ খুলে মশাল বানানোর জন্য জিনিসপত্র বের করতে নিলে চোখ যায় সেই খোসার উপর।
– সময় এসেছে আবার স্টনের শক্তি ব্যবহার করার। দ্বিতীয় ধারক হিসেবে আবার শক্তিকে গ্রহন করা। অভি এক সাথে তিন চারটা খোসা নিয়ে নিজের মধ্যে স্টনের শক্তি টেনে নেয়। জানি না কতোক্ষন এই শক্তি থাকবে কিন্তু যতোক্ষণ থাকবে ততোক্ষন অন্তত এদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারবো। অভি এবার ভালো ভাবেই শক্তি ব্যবহার করে ব্লেক রিমাসদের মারছে।
দুই আর্মির মধ্যে লড়াই চললেও ওয়াইট রিমাসদের আর্মি অনেক ঘায়েল হচ্ছে। বিশেষ করে লিং সানের হাতিয়ারটার জন্য। হঠাৎ অভি দেখতে পেলো ইশা লিং সানের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
-ইশা যুদ্ধের ময়দানে কী করছে? এই মেয়ে কখনো আমার কথা শুনে না। সব সময় তেরামি করে।
অভি ইশার কাছে যেয়ে একটু আওয়াজ দিয়ে ডাকলো- “ইশা”। চিরো চেনা পরিচিত সেই কন্ঠ শুনে ইশা পিছু ফিরে তাকায়। ইশার ঠোঁটে এক রাশি হাসি ফুটে উঠে এ যে আর কেও নয় অভি। ইশা এক দৌড়ে অভিকে জড়িয়ে ধরে।
-আল্লাহর হাজার শুকরিয়া আপনি ঠিক আছেন।
হঠাৎ যুদ্ধের ময়দানে এভাবে জড়িয়ে ধরতে দেখে অবাক হলাম। মেয়েটা কখন কি করে বসে বোঝা বড় দায়। আমারো খুব করে ইচ্ছে হলো ওকে জড়িয়ে ধরতে। নিজ থেকে হাত দুটো ওকে আকড়ে ধরলো। শক্ত করে মেয়েটাকে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরলাম। ভালো লাগছে খুব ভালো লাগছে। ভিতরে এক মিশ্র অনুভূতি কাজ করছে। ইচ্ছে করছে এভাবেই জড়িয়ে রাখি। না এ আমি কি করছি, ওর যে বয়ফ্রেন্ড আছে। অভি আচমকা ইশাকে দূরে ঠেলে দিয়ে বললো- এই মেয়ে তোমাকে না বলেছিলাম সাবধানে থাকতে। তুমি এখানে কি করছো? কখনো কি আমার কথা শুনবে না? ইশার চোখ থেকে টপটপ করে পানি গড়িয়ে পরলো।
-ভেবেছিলাম আপনাকে আর দেখতে পাবো না। আপনার জন্য ভয় করছি,,কথাটা শেষ করতে না করতেই পিছন থেকে একটা রিমাস অভির উপর হামলা করে। ইশা ক্রোধিত হয়ে সেই রিমাসকে দু-টুকরো করে ছিরে ফেলে।।
-ইশা থামো ইশা,ও মারা গেছে। অভির ডাক শুনে ইশা থেমে যায়।
-তুমি কি পাগল হয়েছো? তোমাকে এখানে লড়াই করতে কে বলেছে? আমি বার বার বলেছিলাম একটা সেফ জায়গায় থাকতে। তুমি কী জানো লিং সান তোমার থেকে শক্তি কেরে নিতে আসছে।
-হ্যা আমি জানি। আমি ওর মাইন্ড রিড করেছি। ও কি চায় সেটাও ভালো করে জানি। কিন্তু এখন আপনাকে এখান থেকে যেতে হবে। আপনি জেনি আপু, সাদ আর নেহাকে নিয়ে এখান থেকে বের হয়ে যান।
ইশার কথায় অভি রাগান্বিত কন্ঠে বললো- তুমি কি সত্যি সত্যি পাগল হয়েছো ইশা। ওয়াইট রিমাসরা হেরে যাচ্ছে, যুদ্ধে আমাদের করুন অবস্থা এদিকে লিং সান তোমার উপর এট্যাক করতে আসছে। আর এই অবস্থায় তুমি আমাকে এখান থেকে চলে যেতে বলছো? তুমি ভাবলে কীভাবে আমি তোমাকে একা রেখে চলে যাবো?
অভি যে আমাকে ছেরে যাবে না সেটা আমি ভালো করেই জানি। কিন্তু এরপর এখানে যা হতে চলেছে সেটা ওরা থাকলে সহ্য করতে পারবে না।
-কি হলো চুপ হয়ে আছো কেনো? ওকে ফাইন তুমি এখনি এই ময়দান ছেরে সেফ জায়গায় যাবে ওকে। অভি ইশার হাত ধরে ইশাকে ময়দান থেকে বের করতে নিলে ইশা অভিকে বাধা দিয়ে বললো- দাড়ান অভি! আমার কাছে একটা প্ল্যান আছে।

চলবে,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here