দ্যা_লিফট #অন্তিম_পর্ব

0
1192

#দ্যা_লিফট
#অন্তিম_পর্ব
#Writer_Shanta_islam

-সরি তোমার প্ল্যান আমার পছন্দ হয়নি। আর তুমি এখনি এখান থেকে বের হবে, এটাই আমার শেষ কথা।
-প্লিজ অভি আমার কথাটা তো একবার শুনুন।
-না কোনো কথা শুনবো না। চলো এখান থেকে।
-এটা কাজ করবে। ট্রাস্ট মি! আমার কিছু হবে না।
অভি ইশার হাত ধরে বের হতে নিলে ইশা আবারো বাধা দিয়ে বললো- আপনি হয়তো ভুলে যাচ্ছেন আমি ব্লাক স্টনের তৃতীয় ধারক। আমার কাছে স্টনের পাওয়ার আছে। আমার কিছু হবে না।
-স্টনের পাওয়ার আছে বলেই ভয় হয়। লিং সান তোমাকে মেরে পাওয়ার ছিনিয়ে নিতে চাচ্ছে। বুঝতে পারছো না।
-বুঝতে পারছি বলেই তো বলছি, প্লিজ বিশ্বাস করুন এটা করলে লিং সানকে পরাজিত করা সহজ হবে। একবার চারপাশটা তাকিয়ে দেখুন। যুদ্ধে আমাদের অবস্থা খারাপ।
অভি ইশার কথায় একবার চারোদিকে চোখ বুলিয়ে দেখে ওয়াইট রিমাসরা মারা যাচ্ছে। ইশার প্ল্যানটা মন্দ না। কিন্তু ওর যদি কিছু হয়ে যায়।
-না কখনোই না। তোমার প্ল্যান ভালো কিন্তু আমি এটার অনুমতি দিচ্ছি না তাই চুপ করে এখান থেকে চলো।
অভি ইশার হাত ধরে টান দিতেই ইশা আচমকা বলে উঠলো- এর আগেও তো জেনি আপুর উপর এই টেকনিক ইউস করা হয়েছে। তাহলে আমার বেলায় কেনো নয়?
অভি থমকে গেলো,ইশা একেবারে পয়েন্টে প্রশ্ন করেছে। যে প্রশ্নের উত্তর অভির কাছে নেই। কীভাবে তাকে বোঝাই তার কিছু হলে আমি যে মানতে পারবো না। অভি কিছুক্ষন চুপ থেকে বললো- ঠিকাছে, তোমার কথাই রাখলাম। কিন্তু তোমার কিছু হ,,
-আমার কিছু হবে না। ভরসা রাখুন আমার উপর।
অভি ইশাকে একা রেখে চলে গেলো। ইশা আবারো লিং সানের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু ইশাকে একা পেয়ে ব্লেক রিমাসদের দল ঘিরে ফেলেছে।

-সাদ সব কিছু বুঝে গেছো?
-চিন্তা করবেন না ভাই আমি সামলে নিব।
-ওকে সবাই এক সাথে থাকো। কিছুক্ষণ পর আমরা সবাই একত্র হব।
জেনি সাদের ব্যাগ থেকে যতগুলো বোমা ছিলো সব গুলো বের করে ফেলেছে। নেহাও জেনির সাথে তাল মিলিয়ে ক্যারোসিনের সাথে আগুন লাগিয়ে ব্লেক রিমাসদের গায়ে ছুরে মারছে।

ইশাকে ব্লেক রিমাসরা ঘিরে রাখায় সে কিছু করতে পারছে না। রিমাসগুলো ইশার কাছ থেকে স্টনের পাওয়ার টেনে নিচ্ছে। এমন মনে হচ্ছে শরীর থেকে আত্না টেনে নেওয়া হচ্ছে। ইশা মাছের মতো ছটফট করতে থাকে।
কিছুক্ষণ পর ইশা ছটফট করা বন্ধ করে দেয়। রিমাসগুলো মনে করে সে মারা গেছে। যখনি তারা ইশার কাছ থেকে একটু দূরে সরে দাঁড়ায় সাথে সাথে ইশা চোখ খুলে সামনে থাকা রিমাসটাকে দু টুকরো করে ফেলে। ব্লেক রিমাসরা আবারো তার থেকে পাওয়ার নেওয়ার জন্য ঘিরে ধরলে ইশা চোখ বন্ধ করে কিছু একটা করলো আর সাথে সাথে সেখানে উপস্থিত সবগুলো রিমাসদের শরীর থেকে আলো বের হয়ে ইশার মধ্যে চলে গেলো। দেখে মনে হচ্ছে ইশার শরীরে আলোর রশ্নী প্রবেশ করছে। এবার ইশা উল্টো ওদের থেকে সবগুলো পাওয়ার কেরে নেয়। এবার ব্লেক রিমাসরা আর রিকোভার হতে পারছে না।
বিষয়টা লিং সানের চোখে পড়ে। লিং সান ইশাকে দেখতে পেয়ে ওর দিকে ছুটে আসছে।
-আয় লিং সান আয়, আমাকে তোর কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নেই এখন তুই আমার কাছে ছুটে আসবি।
ইশা মাঠ থেকে কিছুটা দূরে সরে আসে। যাতে লিং সান ওয়াইট রিমাসদের মারা বন্ধ করে তার পিছু ছোটে। ইশার প্ল্যান অনুযায়ী লিং সান রিমাসদের মারা বন্ধ করে ইশার থেকে পাওয়ার কেরে নেওয়ার জন্য ওর পিছু ছোটে।
— hello little girl. Do you know who am i?
-yaeh i know.
-Good very good. I think you also know what i want.
-yes!
-Then give me the Power. Rather i will kill you.
ইশা কিছু না বলে লিং সানের উপর হামলা করলো। কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না। লিং সানের হাতিয়ার খুব পাওয়ারফুল, ইশার উপর টানা এট্যাক করে যাচ্ছে। এক পর্যায়ে ইশা মাটিতে লুটে পরে।
–Give me all the power.
–ok ok I will. i will give you the power. Please Don’t kill me.
লিং সান অট্টহাসি হেসে রিমাসটার কাধ থেকে নেমে ইশার কাছ থেকে পাওয়ার ছিনিয়ে নিতে যায়। ইশার হাত ধরে পাওয়ার নিজের মধ্যে টেনে নিতে গেলেই হঠাৎ লিং সানের কাধের উপর একটা ছোট চকলেট বোমা ফাটলো। বোমাটা আর কেও নয় সাদ লিং সানের উপর ফেলেছে। লিং সান চোখ বড় বড় করে সাদের দিকে তাকিয়ে বললো- What rubbish! সাদের দিকে মনোযোগ যাওয়ায় ইশা লিং সানের হাত উল্টো করে ধরে ফেলে। এবার লিং সান এমন ভাবে পেচিয়ে পরেছে যে সে না পারছে নরতে না পারছে ইশার উপর এট্যাক করতে। তার ব্লেক রিমাসকে ডাকা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। লিং সান যেই ব্লেক রিমাসের কাধে চরে হাতিয়ার দিয়ে হামলা করেছিলো সেই রিমাসটাকে ডাকতে থাকে। কিন্তু তার রিমাসকে এতো ডাকার পরও আসছে না লিং সান গাড় ঘোরাতেই দেখলো ওই রিমাসের শরীরে আগুন লেগে মাটিতে ছটফট করছে। পাশে অভি দাড়িয়ে আছে। আর অভির হাতে লিং সানের সেই হাতিয়ার। এবার সে বুঝতে পারছে ইশার হার মানা, তার কাধে ছোট বোমা ফাটিয়ে মনোযোগ অন্য দিকে করা সব কিছু একটা প্ল্যান ছিলো। লিং সান রেগে ইংরেজিতে একটা গালি দিলো। অভি মুচকি হেসে বললো,
-তুই শেষ লিং সান। কথাটা বলে অভি লিং সানের দিকে ওর হাতিয়ার দিয়ে ওকে টার্গেট করে আর তৎক্ষনাৎ ইশা দূরে সরে যায়। মূহুর্তের মধ্যেই অভি সেই হাতিয়ার ব্যবহার করে লিং সানের বুক ঝালাফালা করে দিলো।
লিং সানের মৃত্য শরীর মাটিতে পরে আছে। লিং সান মারা গেছে এটা দেখে ব্লেক রিমাসরা অনেকটা ঘাবড়ে গেলো। তাদের টিমের লিডার আর নেই। এখন তারা জিতবে কীভাবে? ইশা মাটিতে বসে হাপাচ্ছে। লিং সান ইশাকে অনেক বার এট্যাক করেছিলো তাই সে আঘাত পেয়েছে। অভি দৌড়ে ইশার কাছে যায়।
-ইশা তুমি ঠিকাছো। কই দেখি কোথায় লেগেছে? দেখেছো কতোটা লেগেছে, মাথা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। বার বার বলেছিলাম এসব করার দরকার নেই। তুমি আমার কোনো কথাই শুনো না। সব সময় তেরামি। একটু তো আমার কথা শুন,,
-অভি অভি অভি আমি ঠিকাছি। থামুন, এমন অচেতন হওয়ার কিছুই হয়নি। শুধু একটু ব্যাথা পেয়েছি।
এমন সময় সাদ, জেনি, নেহা টিমের বাকি সবাই এক সাথে ইশার কাছে চলে আসে।
-আপু তোর মাথা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে।
-হ্যা অল্প কিন্তু আমি ঠিকাছি। তোমাদের এখন যেতে হবে।
-যেতে হবে মানে? কোথায় যাবো? কি বলছো এসব!
-হ্যা অভি আপনাদের প্রবেশ দারের সামনে যেতে হবে। আমি ভুলে ওটা খোলা রেখে এসেছি। ব্লেক রিমাসরা ওখানে এট্যাক করতে পারে।
-কি তুমি ওটা খোলা রেখে এসেছো? ব্লিডিংয়ের কেও লিফটে উঠতে নিলে সবকিছু দেখে ফেলবে।
-সেটাই তো বলছি জেনি আপু। আপনাদের সবাইকে এখনি ইমিডিয়েটলি লিফটের কাছে যেয়ে প্রবেশ দার বন্ধ করতে হবে।
-ঠিকাছে জেনি তুমি সাদ আর নেহাকে নিয়ে লিফটের কাছে যেয়ে প্রবেশ দার বন্ধ করো। এখানে আমি ইশার সাথে আছি।
অভির কথায় ইশা চেচিয়ে বলে উঠলো – না
ইশার চেচানো শুনে সবাই একটু অবাক হলো এই সাধারণ কথায় চেচিয়ে উঠার কি আছে?
-না মানে ওখানে আপনার যাওয়া দরকার। যদি ব্লেক রিমাসরা ওখানেও এট্যাক করে তাহলে তো আগে বিল্ডিংয়ের লোকজনদের ক্ষতি করবে। আপনি প্লিজ তাড়াতাড়ি যান। আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে কিছু ব্লেক রিমাস লিফটের প্রবেশ দারের সামনে চলে যাচ্ছে।
-ওহ নো! ইশার যদি এমন মনে হয় তাহলে নিশ্চয়ই লিফটের ওখানে কিছু হতে চলেছে। অভি আমাদের তারাতারি প্রবেশ দারের সামনে যেতে হবে।
-হ্যা আপু আপনারা তারাতাড়ি করুন। নাহলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। অভি আপনার এখন ওখানে যাওয়া প্রয়োজন, রিমাসরা যদি ঝাক বেধে এট্যাক করে তাহলে এরা একা পারবে না। এখানে ডেবিড আর আমি সব কিছু সামলে নিব। তাছাড়া এখন আমাদের আর্মির সংখ্যা বেশি। লিং সানও মারা গেছে। যুদ্ধ অনেকটা আমাদের হাতে। এখানটা আমি সামলে নিব তাই ওখানে সামাল দেওয়ার মতো মানুষ প্রয়োজন।
-কিন্তু,
-কোনো কিন্তু নয় অভি,আমার কাছে স্টনের পাওয়ার আছে। কেও আমার কিছু করতে পারবে না। লিং সান তো মারাই গেছে। শুধু ব্লেক রিমাসদের থামাতে হবে। ওটা আমি ইজিলি পারবো।
অভি রাজি না হলেও কিছুক্ষণ জোরাজুরির পর অভি যেতে বাধ্য হলো।
-ঠিকাছে আমি যাচ্ছি কিন্তু আমাকে ওয়াদা করতে হবে তোমার যাতে কিছু না হয়, আর লড়াই শেষ হওয়ার সাথে সাথে ফিরে আসবে।
ইশা অভির হাতদুটো ধরে বললো- ওয়াদা করছি আমি ফিরে আসবো।
ইশা আর অভি দুজন দুজনের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। এ চাহুনি যে দুজন ব্যক্তির অন্তরের অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ করছে তা অন্যদের চোখ এড়ালো না। জেনির ভিতরটা ছারখার হয়ে যাচ্ছে। তবে কি অভি ইশাকে,,জেনি ব্যাগ কাধে নিয়ে বললো আমি যাচ্ছি তোমরা আসতে থাকো। কথাটা বলতে দেরি জেনির ওখান থেকে হেটে যেতে দেরি হলো না। ব্যাপারটা কেও না বুঝলেও ইশা ঠিকি বুঝেছে।
-অভি এখন যান, আমি ফিরে আসবো। ওয়াদা দিলাম।
ইচ্ছে না হলেও ইশাকে একা রেখে চলে আসতে হলো।
সবাই চলে যাওয়ার সাথে সাথে ইশা সজোরে হাত নাড়ালো আর তৎক্ষনাৎ ধমকা হাওয়া এসে চারোদিকের আবহাওয়া বদলে দিলো। হাওয়ার গতি এতোটাই ছিলো যে লড়াইয়ে থাকা সবগুলো রিমাস নড়ে উঠে। রিমাসদের চোখ যায় ইশার দিকে।
-তোমাদের লিডার মারা গেছে,তোমরা কি এখনো লড়াই করতে চাও?
ব্লেক রিমাসগুলো হুংকার করে উঠে। তারা পিছু হাটতে রাজি নয়। ইশা চোখ বন্ধ করে স্থির হয়ে দাড়ালো। মুহুর্তের মধ্যে সবগুলো রিমাস থেমে গেলো। রিমাসগুলোর চোখও বন্ধ হয়ে এলো। ইশা তাদের লিং সানের সত্ত্যটা দেখাচ্ছে। আসলে লিং সান তাদের কীভাবে ব্যবহার করে নিজের সার্থ অর্জন করতে চেয়েছে। ইশা চোখ খোলার সাথে সাথে সবগুলো রিমাসের চোখ খুলে গেলো।
– আমি তোমাদের সত্ত্যটা দেখালাম। তোমরা তো জানোই স্টনের পাওয়ার যার কাছে সে অন্যের মাইন্ড রিড করতে পারে এবং অন্যদের বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি দেখাতে পারে। আমিও তাই করলাম। এখন সবকিছু তোমাদের হাতে। তোমরা কী করবে? লড়াই করবে নাকি এখানেই যুদ্ধের সমাপ্তি টানবে। তোমরা যদি লড়াই চাও তাহলে এখানে থাকা সবগুলো ব্লেক রিমাস এখানি মারা যাবে। আর যদি শান্তি মতো স্বজাতীর সাথে বাচতে চাও তাহলে এখনি যুদ্ধের সমাপ্তি টানতে হবে।
ময়দানে উপস্থিত সবগুলো রিমাস লিং সানের সত্ত্যটা জানার পর নিজেদের ভুল বুঝতে পারে এবং ইশাকে কুইন হিসেবে গ্রহণ করে হাটু ঝুকিয়ে সম্মান জানায়। সেখানে উপস্থিত রিমাসগুলোর মধ্যে একজন ব্লেক রিমাস বললো- আমাদের ক্ষমা করবেন কুইন। আমরা জানতাম না লিং সান আমাদের এভাবে ব্যবহার করবে। সে আমাদের নতুন রিওয়ার্ল্ডের স্বপ্ন দেখিয়েছিলো। সে বলেছিলো,,
-আমি জানি লিং সান তোমাদের কি বলেছে। আমি তোমাদের সকল ইচ্ছা পূরন করবো। আজ পর্যন্ত কোনো কিং বা কুইন যে কাজ করেনি আজ আমি সেটাই করবো। ইশার কথায় ডেবিড কিছুটা হকচকিয়ে যায়। মিস ইশা কি করতে চাইছে?

অভি সাদ জেনি নেহা সবাই লিফটের কাছে প্রবেশ দারের সামনে চলে আসে।
-কই এখানে তো কোনো রিমাস দেখা যাচ্ছে না! তবে কী ইশার ধারনা ভুল ছিলো। অভির ভাবনার জগতে ছেদ পরে সাদের ডাক শুনে -অভি ভাই কোনো রিমাস তো দেখতে পাচ্ছি না। দেখলে বলবেন বোমা আমার ব্যাগেই আছে। সাদের কথার উত্তরে অভি কিছুই বললো না।
লিফটের ভিতরে রিওয়ার্ল্ডের দৃশ্য আর বাহিরে নরমাল বিল্ডিংয়ের ফ্লোর দেখা যাচ্ছে। বাহির থেকে পাখির কিচমিচ আওয়াজ শোনা যাচ্ছে মনে হয় ভোর হয়ে এলো।
-বাইরে ভোর হয়ে আসছে,বিল্ডিংয়ের কেও জেগে উঠার আগেই লিফট অফ করে আবার সবকিছু আগের মতো স্বাভাবিক করতে হবে। কথাটা বলে যেই জেনি লিফটের বাটনে ক্লিক করতে যাবে অভি জেনির হাত ধরে ফেলে।
-থামো জেনি, কি করছো? ইশা আসবে তো!
-তুমি হয়তো ভুলে গেছো ইশার কাছে পাওয়ার আছে ও যেকোনো সময় রিওয়ার্ল্ড থেকে এখানে আসতে পারবে।
সাদ পকেট থেকে ফোন বের করে এক্সাইটেড হয়ে বললো- দাড়ান একটা সেলফি তুলে নেই। এমন অদ্ভুত দৃশ্য ক্যামেরায় বন্ধি না করলে পাপ হবে। অভি ভাই আসেন একটা সেলফি তুলি।
-ভালো লাগছে না সাদ, একটু চুপ থাকো।
-আপনার আবার কী হলো। একটু আগেও তো ভালো ছিলেন?
-জানি না! কেমন জেনো লাগছে।
-ওহ বুঝেছি ইশা আপুর জন্য চিন্তা হচ্ছে তাই তো? চিন্তা করবেন না একটু পর ইশা আপু চলে আসবে।
-ইশাকে এতো ভালোবাসো?
জেনির প্রশ্ন শুনে অভি চমকে উঠে।
-আরে না কি যে বলো জেনি। ইশাকে আমি ভালোবাসতে যাবো কেনো? ওর তো অলরেডি বয়ফ্রেন্ড আছে?
-কিহ? ইশাপুর বয়ফ্রেন্ড আছে? এটা আপনাকে কে বললো?
-কেনো তোমার বোনই তো বলেছে ওর বয়ফ্রেন্ড আছে।
-ওয়াট? কিন্তু আমি ভাবলাম আপনার আর ইশা আপুর মধ্যে কিছু চলছে। আর এর আগে ইশা আপুর কোনো বয়ফ্রেন্ড ছিলো না। ওর বয়ফ্রেন্ড থাকলে আমি অবশ্যই জানতাম। আপু আপনাকে মিথ্যে কথা বলেছে। জেনি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো- তুমি টেনশন করো না। যুদ্ধ হয়তো শেষ, একটু পরই ইশা চলে আসবে। এখন কেও চলে আসার আগে আমাদের লিফট বন্ধ করতে হবে। অভি কিছু বললো না,চুপ হয়ে সে ভাবছে ইশা কেনো তাকে এতো বড় মিথ্যা কথা বললো? সে কি ইচ্ছে করেই অভির থেকে দূরে সরে যাওয়ার জন্য মিথ্যে বলেছে?
আসার সময় ইশা বলে দিয়েছিলো লিফটের যেকোনো একটা বাটনে ক্লিক করলে লিফট আবার আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে যাবে তাই জেনি লিফটের একটা বাটনে ক্লিক করে আর সাথে সাথে লিফটের ভিতরের পরিবেশ আবার আগের মতো হয়ে যায়।
-দূর আপু কি করলেন? একটা সেলফি তো তুলতে দিতেন? সাদ কিছুটা আনন্দে আছে। এই প্রথম সে মন্সটারদের সাথে লড়াই করেছে। অনেকটা মুভির হিরোর মতো ফিলিংস লাগছে। হঠাৎ মৃদ্র কান্নার আওয়াজ ভেসে এলো। সবাই নেহার দিকে তাকায়।
-কিরে গাধি কান্না করছিস কেনো? সব কিছু আবার আগের মতো হয়ে গেছে ভালো করে দেখ।
-আহ সাদ ঝগড়া করো না, ও হয়তো ভয় পেয়েছে। ব্যাগ থেকে পানির বোতলটা দেও। জেনি নেহাকে পানি দেওয়ার জন্য বললে সাদ তার ব্যাগ খুলে পানি খুজলো কিন্তু পেলো না। ইশার ব্যাগটা সাদের কাছে রয়ে গেছে তাই সাদ ইশার ব্যাগে পানি খুজতে লাগলো হঠাৎ সাদের হাতে কতোগুলো ছেরা কাগজ বাধলো। সাদ কাগজ গুলো বের করে বললো- আপুটা না আসলেই পাগল। যুদ্ধের সময় কেও ছেরা কাগজ নিয়ে যায়? সাদের হাতের কাগজগুলো খুব চেনা চেনা লাগছে।
-দেখিতো সাদ, কাগজগুলো আমার হাতে দেও। জেনি কাগজগুলো সাদের হাত থেকে নিয়ে অবাক হয়ে গেলো।
– এগুলো তো,,অভি দেখো তো এগুলো সেই হারানো পৃষ্টা না?
অভি ইশার কথা চিন্তা করছিলো হঠাৎ জেনির ডাক শুনে হুস ফিরলো।
-হ্যা এগুলো সেই ব্লাক স্টনের বইয়ের ছেরা পৃষ্টা।
-পৃষ্টাগুলো ইশার ব্যাগ থেকে পেয়েছি। কিন্তু ইশা যে বলেছিলো ও নাকি অল্প কিছু পৃষ্টা পড়েছে,পুরো বই শেষ করতে পারেনি। তবে কি ও আমাদের মিথ্যে বলেছিলো?
অভি ছেরা পৃষ্টা গুলো পড়ছে, জেনি সাদকে প্রশ্ন করে তুমি কি জানো এই পেজগুলো ইশা কোথা থেকে পেয়েছে?
-আমি কি করে জানবো? আমি তো এখনি এগুলো পেলাম।
হঠাৎ অভির হাত থেকে পেজগুলো পড়ে যায়,চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি ঝড়ছে। ইশা ওদের আগেই পুরো বই পড়ে ফেলেছিলো।
-না এটা হতে পারে না, ইশা এটা করতে পারে না। ও এমনটা করতে পারে না। অভিকে এমন আচরণ করতে দেখে জেনি অবাক হলো হঠাৎ কি হলো অভি এমন আজব আজব কথা বলছে।
-অভি কি হয়েছে? কি বলছো এসব? অভি বার বার লিফটের বাটনে ক্লিক করছে।
-কি হয়েছে অভি? এমন পাগলামো করছো কেনো?
-রিওয়ার্ল্ডে যেতে হবে। জলদি! এই লিফটকে কিছু একটা করো। আমাকে এখনি রিওয়ার্ল্ডে যেতে হবে। অভির এমন পাগলামো দেখে নেহা আরো জোরে কান্না করে দেয়। অভি নেহার দিকে রাগান্বিত দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললো-তুমি আগে থেকেই সব জানতে তাই না? ইশা তোমাকে সব দেখিয়েছিলো? তুমি আমাদের কেনো বলো নি? কেনো? অভি ধমক দিয়ে নেহাকে কথাগুলো বলে। নেহা কান্না করতে করতে উত্তরে বলে- এ ছাড়া আমার কাছে উপায় ছিলো না। ইশা আপু বলেছিলো সবাই যাতে কিছু জানতে না পারে। বিশেষ করে সাদ। সাদকে সামলানো জন্য আপু আমাকে রিওয়ার্ল্ডে নিয়ে গিয়েছিলো।
-সামলানোর জন্য মানে? কি বলতে চাইছিস তুই? আপুর কি হয়েছে? সাদ ঘাবড়ে নেহাকে প্রশ্ন করছে। কিন্তু নেহা আর কিছু বলছে না। সে কান্না করতে করতে নিচে বসে পড়ে। জেনি কিছু বুঝতে পারছে না এরা আসলে কি বলছে? ফ্লোর থেকে পেজগুলো উঠিয়ে পড়তে শুরু করলাম, পেজগুলো পড়ার পর বুঝতে পারলাম ইশা আসলে কি করতে চাইছে? স্টনের সব শক্তি রিওয়ার্ল্ডের হাওয়ায় ছেরে দিয়ে রিওয়ার্ল্ডকে সতেজ করতে চাইছে। যাতে রিমাসদের বেচে থাকার জন্য স্টনের শক্তির উপর নির্ভর থাকতে না হয়। শেষের পৃষ্টায় বড় বড় অক্ষরে স্পষ্ট লিখা আছে যে কিং বা কুইন এ কাজ করবে সে হাওয়ায় শক্তি বিলিন করার সাথে সাথে মারা যাবে।

ইশার নিথর শরীর হাওয়ায় ভাসছে। তার ভিতর থেকে সবগুলো আলো আস্তে আস্তে রিওয়ার্ল্ডের হাওয়ায় মিশে যাচ্ছে। আলো যত বের হচ্ছে রিওয়ার্ল্ড ততো সবুজ সতেজ হয়ে উঠছে। খালি ময়দানে ছোট ছোট গাস ফুটে উঠে,সাথে ফুলের মুকুলও দেখা যাচ্ছে। রিমাসদের শ্বাস নিতে এখন আর কোনো সমস্যা হচ্ছে না। রিওয়ার্ল্ড এখন নতুন আলোয় আলোকিত হয়েছে। কিছুক্ষন পর হাওয়ায় ভাসা ইশার শরীর নিজ থেকে মাটিতে লুটে পরলো। হাওয়ায় শক্তি বিলিন করার আগে ইশা দূর থেকে ডেবিডকে বলেছিলো আমার শরীরটা ওপারে দিয়ে এসো। একজনকে ওয়াদা করেছি ফিরে যাবো। ডেবিড মানুষ রুপ ধারন করে দৌড়ে ইশাকে আটকাতে যায়। কিন্তু তাকে থামাতে পারেনি, ততক্ষনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। সবগুলো রিমাস ইশার নিথর দেহকে সামনে রেখে সম্মান জানায়। ইশার নিথর শরীর কোলে নিয়ে ডেবিড প্রবেশ দারের সামনে আসে। সে জানে দেয়ালের ওপারে ইশার জন্য অনেকেই অপেক্ষা করছে।
অভি পাগলের মতো লিফটের দরজায় বারি মারছে। বার বার বাটনে ক্লিক করছে কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। পাশে দাঁড়িয়ে সাদ চিৎকার চেচামেচি করছে। আর নেহা মাটিতে বসে কান্না করেই যাচ্ছে। জেনি সবাইকে এক সাথে সামাল দিয়ে পারছে না।
হঠাৎ একটা আওয়াজ শোনা গেলো। কিছু খোলার আওয়াজ সবাই পিছু তাকিয়ে দেখে ভিষন আলো দেখা যাচ্ছে। আলোটা কমতেই দেখা গেলো ডেবিড ইশাকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অভি ইশাকে দেখে দৌড়ে ডেবিডের কোল থেকে ওকে ছিনিয়ে নেয়। ইশার শরীরটা ঠান্ডা হয়ে আছে। নরছে না,শ্বাসও নিচ্ছে না।
– ইশা,এই ইশা,ইশা? ইশা কথা বলো!
-ইশাপু,,ওই ইশাপু,কিরে? চোখ খুলছিস না কেনো? ওই ইশাপু,এমন করছিস কেনো? অভি ভাই ও এমন করে সুয়ে আছে কেনো? ওরে চোখ খুলতে বলেন তো! অভি ইশার নিথর শরীর ঝাকাচ্ছে। কিন্তু ইশা উঠছে না।
-শেষ বারের মতো উনি বলেছিলেন উনার শরীরটা যেনো পৌছে দেওয়া হয়। কাওকে ফিরে আসার ওয়াদা করেছিলো তাই। আমি উনাকে থামাতে পারিনি। আমি পারিনি,,ডেবিড আর কিছু বলতে পারলো না। কোনো হিউম্যানের প্রতি একজন রিমাসের এমন টান কখনো অনুভব করেনি ডেবিড। এক টিম হয়ে কাজ করতে যেয়ে কতো হাসি ঠাট্টা করেছে। মন্সটার হয়েও এই কয়েকদিনে কিছু অপরিচিত মানুষের সাথে এতোটা ঘনিষ্ঠ হয়েছে যে সবার সাথে একটা অজানা সম্পর্কে জড়িয়ে গেছে। ডেবিড আর সহ্য করতে পারলো না। দেয়ালের ভিতর দিয়ে রিওয়ার্ল্ডে চলে গেলো।
অভি ইশাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে,
-তুমি এটা করতে পারো না ইশা। টুসির মতো তুমিও আমাকে ছেরে চলে যেতে পারো না। এখনি তো অন্ধকার থেকে বের হতে শিখছিলাম। আর এখনি তুমি চলে যেতে চাইছো। না হবে না। তুমি কোথাও যাবে না। তাকাও ইশা,প্লিজ তাকাও!
সাদ নেহা জেনি সবাই কান্না কাটি করছে। একটা মানুষ যে কতোগুলো মানুষের জীবনের সাথে জড়িয়ে গিয়েছিলো।
-আপু তাকা না,তাকা দেখ আমি আর কখনো তোর সাথে মজা করবো না। তুই যা চাবি তাই হবে। আমার কোনো পাওয়ার ধারনকারী বোন চাই না। আমার শুধু আমার সাধারণ ইশাপুকেই চাই।
সাদের কথায় হঠাৎ অভির মনে পরে ব্যাগে থাকা সেই খোসাগুলোর কথা।
অভি ব্যাগ খুলে দেখে মাত্র একটা খোসার টুকরো বাকি আছে। বাকিগুলো থেকে সে লড়াই করতে যেয়ে শক্তি নিয়েছে।
-কিছু হবে না তোমার,আমি কিছু হতে দিব না। অভি খোসার টুকরোটা ইশার ডান হাতে রেখে বললো- প্লিজ প্লিজ প্লিজ, কাজ করো প্লিজ। শ্বাস নেও ইশা প্লিজ।
জেনি কান্না করতে করতে বললো- অভি মৃত শরীরে স্টনের পাওয়ার প্রবেশ করবে কীভাবে? এটা দিয়ে আর কোনো কাজ হবে না। ইশা আর নেই,
শেষ একটা আশা ছিলো তাও আর হলো না। এটাকেই বুঝি নিয়তি বলে একজনকে হারালাম নিজের ভুলে আরেকজনকে হারালাম নিজের অজান্তে।

অভির চোখ দিয়ে দুফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো। ছোট ছোট দুটো আঙুল অভির হাত আকড়ে বললো- বাবাই কোলে নেও। অভি বাচ্চাটাকে কোলে নিলো। বাচ্চাটা অভির চোখের পানি মুছে বললো- বাবাই কাদছো কেনো?
-এমনি আম্মু,পুরোনো কিছু কথা মনে পড়ে গেছে তাই।
বাজারের ব্যাগ হাতে নিয়ে পিছন থেকে একজন কঠোর গলায় বললো- কি হলো এভাবে লিফটের দিকে হা করে তাকিয়ে আছো কেনো?
-কই তাকিয়ে আছি,তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।
-হয়েছে হয়েছে মেয়েকে নামাও। এতো ভারি ভারি ব্যাগ আমাকে একা টানতে হচ্ছে।
-না নামবো না। আমি কোলে থাকবো। মেয়েটা তার বাবার গলা শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
-টুসি এবার কিন্তু আমার হাতে মার খাবি!
-এহ সাহস কত? একবার টার্চ করে দেখো আমার মেয়েকে, তোমার বাপের গায়ে জ্বর উঠবে।
-আচ্ছা তাহলে এই ব্যাগগুলো টানবে কে শুনি?
অভি এক হাতে মেয়েকে নিয়েছে আরেক হাতে বাজারের ব্যাগ নিয়ে বললো- ওই যে লিফট খালি হয়েছে আসেন। অভি তার মেয়ের নাম বোনের নামে রেখেছে “টুসি”।
এক টুসিকে হারিয়ে অভি আরেক টুসিকে পেয়েছে। টুসির বাবা মা লিফটে উঠার সাথে সাথে টুসি মুচকি হেসে দিলো।
-কিরে তুই হাসছিস কেনো?
-মনে আছে তুমি প্রথম বার বাবাইকে ভূত ভেবে এখানে মেরেছিলে?
টুসির সাথে ইশাও হেসে পড়ে।
-হ্যা তোর বাবাই আমার হাতে যেই কেলানি খেয়েছিলো।
-এই থামো থামো মা মেয়ে মিলে আমার প্রেস্টিজের বারোটা বাজাচ্ছো।
সেদিন ইশার হাতে খোসা রেখে যখন অভি কান্নায় ভেঙে পরে তখন স্টনের সল্প শক্তি দিগুণ হয়ে যায়। কারণ অভির কান্নায় ইমোশন ছিলো। আর স্টনের শক্তি ইমোশন দিয়ে কাজ করে। ইশা সেদিন বেচে গিয়েছিলো আর ইশার সাথে বেচে গিয়েছিলো অভির ভালোবাস।

ইশা আর টুসি দুজন হেসে অভির মজা উরাচ্ছে।
-এই তোমরা থামবে আমি মেয়ে মানুষ আর কুকুরদের মারি না তাই সেদিন বেচে গেছিলে।
-বাবাই মামার মতো কথা বলছো।
-না একদমি না। আমি সাদের মতো বলতে যাবো কেনো?
-সাদের নকল করছো। সাদের সঙ্গ থাকতে থাকতে এই অবস্থা হয়েছে। নেহাকে বলতে হবে সাদটাকে একটু টাইট দিতে।
-মামি মামাকে মারবে ইয়াহু!
-ছি বাবা এসব বলে না। মামি মামাকে মারবে না। ইশা কি করছো মেয়ের সামনে এসব বলো না তো।
-বারে আমি কি বললাম?
-কি বললা মানে এখনি তো বললা নেহাকে বলবো সাদকে টাইট দিতে। এটা কোনো কথা? এমনিতেই নেহা সাদের উপর যেই অত্যাচার করে।
-ওর বউ ওর উপর অত্যাচার করবে,এতে তোমার এতো লাগছে কেনো?
-ওর কস্টটা আমি বুঝি! ছেলেটার অবস্থা হয়েছে আমার মতো করুন।
অভি নিজের মন মতো কথাগুলো বলছিলো হঠাৎ অভির দৃষ্টি যায় ইশার দিকে। ইশা চোখ দুটো বড় বড় করে অভির দিকে তাকিয়ে আছে। অভি একটু ঢোক গিলে বললো- নাওযুবিল্লাহ, আজ আমি শেষ।
লিফট থেকে নামতেই অভির ফোন বেজে উঠে। ফোন রিসিভ করতেই একটা ছোট বাচ্চা অভিকে আংকেল আংকেল বলে ডাকছে।
-হাই জেমস ভাইয়া!
টুসি তুমি ভাইয়ার সাথে পরে কথা বলো। এখন বাসায় যাও। আমরা আসছি। টুসি বাবার কোল থেকে নেমে ছোট ছোট পায়ে বাসায় ডুকে গেলো।
-জেমস গিভ মি দ্যা ফোন!
জেনি তার সাত বছরের বাচ্চাটা থেকে ফোন কেরে নেয়।
-জেনি আপু কেমন আছো?
-ভালো আছি। একটা ইম্পোর্টেন্ট কথা জানাতে ফোন দিলাম। তোমরা কী কোনো খবর পেয়েছো?
অভি-খবর? কীসের খবর?
-ডেবিড আমাকে মেসেজ পাঠিয়েছে। রিওয়ার্ল্ডে নাকি রেড ফায়ার ফ্লাওয়ার ফুটেছে।
-এটা আবার কী?
-রিওয়ার্ল্ডে এই ফুল তখনি ফুটে যখন তাদের নতুন কিং বা কুইন প্রথম ধাপে শক্তি পাওয়া শুরু করে।
-ওয়াট! তুমি কি বলতে চাইছো স্টনের পাওয়ারের চতুর্থ ধারক আসছে?
-হ্যা অভি,আশ্চর্য হলেও সত্যি আমারো তাই মনে হচ্ছে। আমি পরশুর ফ্লাইটেই দেশে ফিরছি।
জেনি ফোন কেটে দিলো। বিষয়টা অভি আর ইশাকে খুব ভাবাচ্ছে।
হঠাৎ টুসি তার বাবাকে ডাকলো।
-হ্যা সোনা আসছি। অভি মেয়ের কাছে যাওয়ার জন্য বাসায় ডুকে গেলো। ইশা লিফটের সামনে দাঁড়িয়ে ভাবছে স্টনের শক্তির চতুর্থ ধারক কে?
কিছু একটা ভেবে ইশা চমকে উঠলো-প্রথম দেখায় আমি অভিকে ভূত ভেবে মেরেছিলাম এটা টুসি জানলো কীভাবে?তাহলে কী টুসি? না না এটা আমি কি ভাবছি টুসি কখনোই চতুর্থ ধারক হতে পারে না।
এতো বছর পর আবার সেই লিফট আর স্টনের কাহিনি ভেসে উঠছে। উঠবে নাই বা কেনো? মায়ের শক্তি যে তার মেয়ে পেয়েছে। ইশার অগোচরে তার মেয়ে যে এখন স্টনের শক্তির চতুর্থ ধারক।

সমাপ্ত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here