#চাদর_জড়ানো_চিরকুট
#পর্বঃ- ০৯
রবিউল বের হবার সময় লতাকে বললো,
– আপনি যদি রাস্তায় উল্টাপাল্টা কিছু করেন তবে কি ভয়াবহ অবস্থা হতে পারে জানেন নিশ্চয়ই?
লতা সামান্য মাথা নাড়লো। তার চোখের সামনে এখন ফিরোজের মুখ ভেসে বেড়াচ্ছে। সে এখনো হয়তো হাসপাতালে রয়েছে কিংবা কাটাছেঁড়া হয়ে গেছে রাতেই। এমন একটা অদ্ভুত সত্য, মানুষটার সঙ্গে এ জীবনে আর দেখা হবে না। গতকাল সেই দেখাটাই তার সঙ্গে শেষ দেখা।
লতা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মনে মনে ফিরোজের আত্মার উদ্দেশ্যে বললো, ” আমাকে ক্ষমা করে দিও, তোমার এই হতভাগা স্ত্রী তোমার জন্য কিছু করতে পারলো না। এমনকি তোমাকে যে খুন করেছে এখন তার সঙ্গেই থাকতে হচ্ছে। ”
– কথা বলছেন না কেন?
– আপনি শুধু আমার পেটের সন্তানের কোনো ক্ষতি করবেন না। আপনি যা বলবেন আমি তাই শুনবো।
– পেটে হাত রাখুন।
– কেন?
– পেটে হাত দিয়ে সন্তানের কসম দিয়ে বলেন যে সত্যি সত্যি রাস্তায় কোনো ঝামেলা করবেন না।
– কসম কাটা কি ঠিক?
– ঠিক বেঠিক জানি না, কিন্তু এ দেশে অনেকেই এটা করে। আপনি যদি রাস্তায় ঝামেলা করেন তবে কি হবে নিজেও জানি না। একটা কথা মনে রাখবেন, পৃথিবীতে আমার কেউ নেই। আমার কিছু হারানোর ভয় নেই। তবে আপনার স্বামী খুন হলেও আপনার গর্ভে সন্তান আছে। সুতরাং সেই সন্তান নিয়ে বাঁচতে চাইলে কোনো ঝামেলা করবেন না আশা করি।
– ঠিক আছে করবো না।
– চলুন তাহলে।
বাসা থেকে বের হয়ে গেল রবিউল ও লতা চৌধুরী দুজনেই একসঙ্গে। পুরনো একটা বাড়ি, গেইটে কোনো দারোয়ান নেই। রাস্তার পাশে একটা দোকান আছে, বৃদ্ধ দোকানদার বসে বসে অলস সময় পার করছেন। লতার জন্য রবিউল একটা বোরকা বরে করে দিয়েছিল।
লতা অবাক হয়েছিল কারণ সে বুঝতে পেরেছে রবিউল সবকিছু প্ল্যান করে করতেছে। নাহলে সে এখান থেকে সকালে বের হবার সময় তার জন্য বোরকাও নিয়ে এসেছে।
লতাকে দাঁড় করিয়ে রবিউল বৃদ্ধের কাছে গিয়ে বললো,
– লাভ ক্যান্ডি চকলেট আছে?
– হা আছে।
– ১০ টা লাভ ক্যান্ডি দেন।
১০ টা চকলেট নিয়ে রবিউল তাকে ১০০০ টাকার নোট দিয়ে রেখে দিতে বললো। তারপর তাকে বললো,
– আপনার নাম্বারটা দেন তো?
বৃদ্ধ বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে রইল। রবিউল তার কাছে আরেকবার চাওয়ার আগে সে নাম্বার দিয়ে দিল। রবিউল চলে যাবার পরও বেশ অবাক হয়ে সে তাকিয়ে আছে। রাস্তার পাশে লতার দিকেও তাকালো কিছুক্ষণ।
আধা ঘণ্টা পরে তার নাম্বারে কল দিয়ে রবিউল বললো,
– আঙ্কেল আপনার দোকানের সামনে যে বাড়িটা থেকে আমি বের হলাম সেই বাড়িতে চারটা লাশ আছে। আরেকটা অসুস্থ বৃদ্ধ আছে, আপনি কষ্ট করে পুলিশের কাছে খবর দেন।
একই সিম দিয়ে সাজুর কাছেও মেসেজ দিয়েছে রবিউল। তারপর সেই সিম মোবাইল থেকে বের করে রাস্তার পাশে ফেলে দিল। লতা শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতে লাগলো।
★★★
বৃদ্ধের সেই কল পেয়েই পুলিশ এসেছে এখানে। এক এক করে সবগুলো লাশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পোস্টমর্টেম করতে। সাজু তার হাতের মোবাইলে তাকিয়ে আছে।
এতবড় মিথ্যা?
কেউ এরকম ভাবে মিথ্যা কথা বলতে পারে এটা যেন কল্পনার বাইরে ছিল তার। তিথি বিথির নাম করে কি হৃদয় বিদারক ঘটনা সে বলে দিল। অথচ এখন সেটা নাকি সম্পুর্ন গল্প, হায় আল্লাহ।
লতার বাবার সেই বন্ধুকে সুস্থ করার চেষ্টা করা হয়েছে। জ্ঞান ফিরেছে, স্বাভাবিক ভাবে কথা বলতে আরেকটু সময় লাগবে মনে হচ্ছে। সাজু ও এসআই নিজাম মিলে দোকানদারের কাছে ঘটনা জানতে চাইলো।
বৃদ্ধ সবকিছু বললেন। সাজু বললো,
– কোন নাম্বার দিয়ে কল করেছে?
বৃদ্ধ নাম্বার বের করলেন। সাজু সেই নাম্বার দেখে মোটেই অবাক হলেন না। একই নাম্বার দিয়ে তার কাছেও মেসেজ এসেছিল। সুতরাং রবিউল ওই মেসেজ আর বৃদ্ধকে কল কাছাকাছি সময়ে করেছে। সাজু সঠিক সময়ে মেসেজ চেক করে নাই তাই দেখেনি।
চারটা খুন আলাদা। তিনজনের কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই, অতিরিক্ত মদ্যপান হতে পারে। অথবা হতে পারে বিশেষ কিছু খাইয়েছে। কিন্তু মিজানের শরীরে গুলির আঘাত আছে, তাছাড়া এসআই নিজাম অবাক হয়েছে বেশি। কারণ এই চারজন এর ভিডিও ফুটেজ সে গতকাল রাতে দেখেছে। এরা সবাই স্টেশনে বহুক্ষণ বিরক্ত মুখে অপেক্ষা করেছে। আবার এরাই এখন খুন হয়েছে।
সাজু ভাবছে অন্য কিছু। লোকগুলো যদি লতার বাবার হয়ে থাকে তাহলে তিনি পুলিশের কাছে তো একবারও এদের কথা বলে নাই। তিনি তার বন্ধু আর লতার হারানোর কথা জানিয়েছেন। তাহলে এরা কার হয়ে কাজ করে?
রবিউলের?
কিন্তু রবিউলের হয়ে কাজ করলে এদের সবাইকে কেন খুন করা হবে? রবিউল তো তার সহকর্মী কাউকে মারে না৷ সেবার খুলনায় আব্দুল কাদির পুলিশের হাতে ছিল তাকে বাঁচাতে অনেক কিছু করেছে রবিউল।
হাসলো সাজু।
রবিউল অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে। তার পক্ষে একটা যেকোনো কিছু করা সম্ভব। যে মানুষ খুন করতে পারে সে তার সঙ্গে মিথ্যা কথা বলেছে এতেও অবাক হবার কিছু নেই। তবে সাজু ভাবছে রবিউলকে বিশ্বাস করে ভুল হয়ে গেল।
লতার বাবার বন্ধুর সাথে কথা বলে তেমন কিছু জানা গেল না। গাড়িতে ওঠার পরে নাকি চারজন লোক এসে হুড়মুড় করে গাড়িতে উঠে। তারপর আর কিছু মনে নেই। রাতের আধারে এতগুলো খুন হয়ে গেছে কিছুই জানে না সে।
রবিউলের পাঠানো ঠিকানাটা ডিবি হাসানের কাছে পাঠিয়ে দিল সাজু ভাই। যদিও রবিউলকে আর বিশ্বাস করবে না, কিন্তু মিরপুরের ওই ঠিকানা হাসানের বাসার কাছে। তাই একটু শুধু খোঁজ নিতে বলে দিল সে৷
★★★
হোটেল রেডিসন ব্লুর বিপরীত দিকে একটা রেস্টুরেন্টে মুখোমুখি বসে আছে সাজু ভাই ও রামিশা। দুজনের কেউ এখনো নাস্তা করেনি অথচ সময় গড়িয়ে যাচ্ছে।
নীরবতা ভেঙ্গে রামিশা বললো,
– তাহলে কি ঢাকায় যেতে হবে?
– হ্যাঁ ঢাকাতেই যেতে হবে। আমার মনে হয় এই রবিউলকে নিয়ে চিন্তা না করে চাদর জড়ানো চিরকুটের লেখা নিয়ে চিন্তা করতে হবে।
– কিরকম?
– লতার বাবার সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে হবে। ঢাকার সেই দাদাজানের সঙ্গে লতার বাবার কি যোগাযোগ আছে সেটা বের করতে হবে। এদের সঙ্গে রবিউলের কি শত্রুতা সব যদি জানতে পারি তাহলে রবিউলের পরিকল্পনা বুঝতে পারবো৷
– রবিউল বারবার মিথ্যা বলে কেন?
– যাতে আমি তার তথ্য অনুযায়ী কৌতূহল নিয়ে অনুসন্ধান করি। আমার মনোযোগ ঘুরিয়ে দিয়ে সে নিজের কাজটা করতে চায়। প্রতিটি কাজের আগে সে আমাকে একেকটা চিন্তার মধ্যে ফেলে দেয়।
– লতার প্রতি তার আক্ষেপ কেন?
– সেটা জানতে হলে যেতে হবে সেই অদ্ভুত মেয়ে, মানে সাবরিনার কাছে। তাকে জিজ্ঞেস করে বের করতে হবে রবিউলের সঙ্গে লতার পূর্ব পরিচয় ছিল কিনা।
– আপনার এই মামলাটিই সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জ মনে হচ্ছে সাজু ভাই।
– আরেকটা সমস্যা আছে।
– কি?
– লতাকে রবিউল গুলি করেনি। কারণ লতার শরীরে যে গুলি লেগেছিল সেই বুলেট পুলিশের গাড়ির মধ্যে পাওয়া গেছে গতকালই। কিন্তু আজ সকালে মিজানের কোমড়ে একটা পিস্তল পাওয়া গেছে। লতার শরীরের বুলেট মিজানের পিস্তল থেকে বের হয়েছে, মানে গুলি মিজান করেছে।
– বলেন কি?
– হ্যাঁ রামু।
– ঢাকায় কখন রওনা দিবেন?
– ভাবছি এখান থেকে বের হয়ে হোটেলে ফিরে সবকিছু গুছিয়ে রওনা দেবো।
– আচ্ছা আমিও তাহলে বাসায় গিয়ে আমার যা যা দরকার নিয়ে আসি। আপনি আমাকে কোথা থেকে তুলে নিবেন?
– তোমার যা যা লাগবে মানে? তুমি কোথায় যাবে?
রামিশা চোখ বড় বড় করে সাজুর দিকে তাকিয়ে বললো,
– আমার দিকে তাকান।
– কি?
– কি বলছেন আরেকবার বলেন তো।
– তুমি কি আমার সঙ্গে যাবে?
– জ্বি মহারাজ, আমিও আপনার সঙ্গে যাচ্ছি।
– ঠিক আছে বাসায় গিয়ে সবকিছু গুছিয়ে তুমি দামপাড়া কাউন্টারে আসবে।
– আচ্ছা ঠিক আছে।
★★★
হোটেল ” টাইম স্কয়ার ” কুমিল্লা।
সোহাগ স্কানিয়া এসি বাস এখানে ২০ মিনিটের যাত্রা বিরতি দিয়েছে। লতা রবিউলের কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে। বাসে উঠে সে প্রচুর কেঁদেছে। রবিউলের কাছে বারবার জিজ্ঞেস করেছে তার স্বামীর লাশের কোনো খবর আছে কিনা। রবিউল বারবার শুধু ধমক দিয়ে বলেছে এরপর আবার যদি কিরোজের কথা জিজ্ঞেস করে তাহলে ভালো হবে না।
কাঁদতে কাঁদতে লতা ঘুমিয়ে গেছে। জীবনের প্রথম একটা ভয়ঙ্কর রাত সে গতকাল পার করেছে। সেই ক্লান্তি এখন তাকে অবশ করে রেখেছে। লতার মাঝে মাঝে মনে চায় চিৎকার দিয়ে সবাইকে বলে যে সে বিপদে আছে। তার পাশের লোকটা গতকাল তার স্বামীকে হত্যা করেছে।
কিন্তু লতা বলতে পারে না। বারবার বলতে গিয়ে আবার থমকে যায়। রবিউল তার হাত দিয়ে একটা সিরিঞ্জ বের করে তাকে বলেছে,
” যদি ঝামেলা করেন তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আপনার শরীরে এটা দিয়ে দেবো। আপনি মরবেন না কিন্তু বাচ্চা নষ্ট হয়ে যাবে। আবার মরেও যেতে পারেন। তাই কোনো কিছু করার প্ল্যান করবেন না। আমি একা মরবো না, আপনাকে নিয়ে ই মরবো। ”
রবিউলের ধাক্কায় জেগে ওঠে লতা চৌধুরী। আর নিজেকে রবিউলের ঘাড়ে মাথা রাখতে দেখে লজ্জা পেয়ে যায়।
রবিউল বললো,
– চলেন এখান থেকে হালকা নাস্তা করে তারপর আবার বাসে উঠি। আপনি চাইলে ওয়াশরুমে যেতে পারেন। বাস কিন্তু ঢাকার আগে আর কোন বিরতি দেবে না।
– আমি যাবো না।
– না গেলেও নামতে হবে, আমি যাবো। আপনি আমার সঙ্গে যাবেন, আমি নাস্তা করবো সেখানে বসে থাকবেন।
লতা নামলো, দোতলায় এসি পরিবহনের জন্য আলাদা ব্যবস্থা। লতাকে ওয়াশরুমে পাঠিয়ে দিয়ে রবিউল নিজেও ফ্রেশ হতে চলে গেল।
ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে লতাকে দেখতে পাচ্ছে না। এতক্ষণ তো দেরি হবার কথা নয়। রবিউল নিচে গিয়ে একটু উঁকি দিয়ে আসলো। তারপর পকেট থেকে মোবাইল বের করলো। এটা তো ব্যক্তিগত মোবাইল। সাবরিনা আর অন্য এক বিশ্বস্ত মানুষ ছাড়া কেউ এই নাম্বার জানে না।
সাবরিনার নাম্বার দিয়ে একটা মেসেজ, আর সেই মেসেজে একটা মোবাইল নাম্বার। নাম্বারের নিচে লেখা আছে ” দাদাজানের নাম্বার “।
রবিউল সঙ্গে সঙ্গে তার বাটন মোবাইল বের করলো। তারপর মানিব্যাগ দিয়ে আরেকটা সিম বের করে নিল। প্রথম যে সিমটা লাগালো সেটা রেজিষ্ট্রেশন ফেইল। তারমানে সিমের মালিক এই সিম রিপ্লেস করে নিয়েছে।
রবিউল আরেকটা সিম ওপেন করলো৷ তারপর নাম্বারটা উঠিয়ে কল দিল। তিনবার রিং বাজার পরে রিসিভ হলো। ” হ্যালো ” শুনেই রবিউলের মাথার রক্ত গরম হয়ে গেল।
রবিউল বললো,
– আমি রাজধানীতে আসতেছি দাদাজান।
– কে? রাব্বি?
– জ্বি দাদাজান, আপনার রাব্বি। রবিউল ইসলাম রাব্বি, চিনতে পেরেছেন তাহলে?
– লতা কোথায়?
– আমার কাছেই আছে।
– লতাকে নিয়ে কেন টানাটানি করছো? তোমার টার্গেট আমি হতে পারি তাই তুমি লতাকে কেন কিডন্যাপ করলে?
– আমার হিসাব এখনো পুরোপুরি মেটেনি, তাই লতাকে দরকার দাদাজান।
– ওকে ছেড়ে দিয়ে সামনাসামনি দেখা করো। এসব ঝামেলা আমি আর চাই না। তোমার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি কিন্তু পারিনি। লতাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসো।
– লতাকে আর কেউ পাবে না দাদা, আমার কাজ শেষ হয়ে গেলে আমি তাকেই আগে শেষ করবো।
– কিসের কাজ? মানে কি?
– লতা চৌধুরীর সব সম্পত্তির জন্য আমি দলিল করতে দিযেছি৷ দলিল রেডি হলেই সেখানে লতার সাক্ষর সংগ্রহ করা হবে। লতা তার গর্ভের সন্তানের প্রতি দুর্বল, তাই তাকে দিয়ে কাজ করানো খুব সহজ হাহাহা। তারপর ফিরোজের মতো লতার জন্যও পৃথিবীর আলো বাতাস বন্ধ হয়ে যাবে।
– তুমি এবার খুব বাড়াবাড়ি করছো রাব্বি, এর ফলাফল বেশি ভালো হবে না।
– দুজনের হাতে যদি পিস্তল থাকে তাহলে সেখান থেকে একজন মারা যাবে নিশ্চিত। যে বেশি বুদ্ধি খরচ করতে পারবে সেই বেঁচে থাকবে। হয় আমি মরবো নাহয় আপনারা মরবেন।
রাফসান সাহেব?
রবিউল পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখে লতা দাঁড়িয়ে আছে। রবিউল আর কথা না বলে কলটা কেটে দিল।
– লতা।
– ভোররাতে যে খাবার আপনি দিলেন সে ধরনের খাবার আমি কখনো খাইনি। বমি করতে করতে আমি ক্লান্ত হয়ে গেছি।
– ঠিক আছে তাহলে দেখি টক জাতীয় কিছু পাওয়া যায় কিনা।
তারা দুজন মিলে একটা টেবিলে বসলো। লতা শুধু একটা টক জুসের অর্ডার করলেন। রবিউল হালকা নাস্তার জন্য বললো। তাড়াতাড়ি খেতে হবে কারণ অলরেডি ১০ মিনিট পার হয়ে গেছে।
রবিউল নাস্তা খাচ্ছে আর লতা খাচ্ছে জুস। পুরোটা জুস শেষ করে সে মুমূর্ষের মতো বসে রইল। রবিউলের নাস্তা খাওয়া প্রায় শেষ।
কিন্তু সেই মুহূর্তে টেবিলের উপর লতা গড়গড় করে বমি করে দিল।
স্বাভাবিক বমি নয়, রক্তবমি৷ বমির সঙ্গে লাল রক্ত দেখে অবাক হয়ে গেল রবিউল ও লতা।
রবিউল তখন সেই ওয়েটারকে বললো,
– কি ব্যাপার? কি ছিল এই জুমের মধ্যে?
রবিউল অবাক হয়ে দেখলো ছেলেটা হাসছে। খুব কুৎসিত সেই হাসি। হাসি মনে হচ্ছে অনেক কিছু বলে দিচ্ছে।
চলবে….
লেখা:-
মোঃ সাইফুল ইসলাম।