শুভ্র_নীলের_প্রেমপ্রহর,পর্ব ১৫,১৬

0
1015

#শুভ্র_নীলের_প্রেমপ্রহর,পর্ব ১৫,১৬
লেখক- এ রহমান
পর্ব ১৫

শরতের নির্মল স্নিগ্ধ কোমল চাঁদের আলো উপরের আকাশের মতো নিচেও দৃশ্যমান। শান্ত নদীর পানিতে যেন আকাশের মেঘ বালিকা নেমে এসেছে। নদীর পানিতে আকাশের মেঘের ভেলা সাথে এক ফালি চাঁদ আর তারার পসরা ভেসে বেড়ানোর প্রতিচ্ছবি দেখেই মনটা ভালো হয়ে গেলো ঈশার। এলোমেলো হাওয়ায় অবাধ্য চুল গুলো উড়ে বেড়াচ্ছে। দুই হাত ব্রিজের রেলিঙ্গে ভর দিয়ে নিচে তাকিয়ে আছে। ঠোটে প্রশস্ত হাসি। তার থেকে একটু দূরে ইভান দাড়িয়ে ফোনে কথা বলছে। বাসায় জানিয়ে দিচ্ছে যে তাদের আসতে দেরি হবে। প্রথমে একটু আপত্তি জানালেও পরে ইভান আর ঈশান থাকায় তেমন কোন অসুবিধা হবে না সেটা ভালো করে বুঝিয়ে দেয়ায় আর আপত্তি করেনি কেউ। সোডিয়াম বাতির হলদেটে আলোয় কি অপূর্ব লাগছে ইভান কে। ঈশা মুগ্ধ হয়ে দেখছে তাকে। ইভান পাশ ফিরতেই ঈশার দিকে চোখ পড়ল। ঈশা অপ্রস্তুত হয়ে চোখ নামিয়ে আবার নিচে তাকাল। ঠোটের হাসিটা একটুও কমেনি। ইভানের ভারাক্রান্ত মনটা ভালো হয়ে গেলো ঈশাকে হাসতে দেখে। রাত প্রায় ১২ টা বাজে। এদিকটায় তেমন যানবাহন চলাচল এখনও শুরু হয়নি। শহর থেকে একটু দূরে নতুন তৈরি হয়েছে এই ব্রিজটা। আর এতো রাতে এমনিতেই রাস্তা ফাঁকাই থাকে। ওরা কয়েকজন ছাড়া কেউ নেই বললেই চলে। মাঝে মাঝে দুই একটা গাড়ির দেখা মিলছে। উচ্চ শব্দে হর্ন বাজিয়ে তীব্র গতিতে চলছে। একদিকে ইরিনা আর ইফতি ছবি তোলা নিয়ে ব্যস্ত। আরেক দিকে ঈশানের হাত ধরে ইলু ব্রিজের রেলিঙ্গে উঠে বসেছে। মাঝে মাঝে পড়ে যাবার ভয়ে চিৎকার করছে। আর ঈশান তার বোনের উপরে খুব বিরক্ত হচ্ছে এটা ভেবে যে ভাইয়ের উপরে তার বিন্দু মাত্র বিশ্বাস নেই। ঈশা সেদিকে তাকিয়ে হেসে ফেলল। ইভান ঈশার দিকে তাকাল। হলদেটে আলোয় রুপবতির হাসি যেন ঝলমলিয়ে উঠছে। চোখ ধাধিয়ে গেলো তার। ইফতি ইভানের কাছে এসে বলল
–ভাইয়া তুমি ভাবি আপুর কাছে গিয়ে দাড়াও। তোমাদের ফটো তুলব।

ইভান কোন কথা না বলে ঈশার পাশে গিয়ে দাঁড়ালো। ঈশা নদীর পানি দেখতেই ব্যস্ত। ইফতি নিজের ক্যামেরা ঠিক করে নিতেই ইভান এক টানে ঈশাকে ঘুরিয়ে দিলো সামনে। হঠাৎ এমন টানে ঈশা নিয়ন্ত্রন হারিয়ে পড়ে যেতে নিলে ইভান তাকে দুই হাতে ধরে নেয়। ঈশা ইভানের বুকের শার্ট খামচে ধরে হা করে তার দিকে তাকিয়ে আছে। আর ইভান ঈশাকে দুই হাতে ধরে তার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষন পরেই ইভান বিরক্তিকর গলায় বলল
–এতক্ষন লাগে? তাড়াতাড়ি কর বলদ।

ইফতি দাত বের করে হেসে বলল
–হয়ে গেছে।

বলেই এক দৌড়ে ইভানের কাছে আসতেই সে ঈশাকে ছেড়ে দিলো। ঈশা সোজা হয়ে দাঁড়ালো। সে এখনও ইভানের দিকে তাকিয়ে আছে। ইভান ছবিটা দেখে নরম গলায় বলল
–নাইচ। যত্ন করে রেখে দিস।

বলেই একটু দূরে গিয়ে দাঁড়ালো। ইফতি ঈশার কাছে এসে বলল
–তুমি দেখ ভাবি আপু।

ঈশার ছবিটা দেখে লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছা করছে। ইফতি ছবিটা দেখতে দেখতে বলল
–এটা বড় করে ভাইয়ার ঘরে টাঙ্গাব।

ইফতির কথা শুনে ঈশা আবারো হা হয়ে গেলো। নামানো গলায় বলল
–তোর ভাইয়া ঠিকই বলেছে। তুই আসলেই বলদ।

ইফতি ভ্রু কুচকে বলল
–কত রোমান্টিক একটা ছবি তুলে দিলাম। বিনিময়ে বলদ উপাধি পেলাম। হায় ভাগ্য।

ঈশা আশে পাশে তাকিয়ে দাতে দাত চেপে বলল
–ছবি তোলার আগে আমাকে বলতে পারিস নি? আমি নিজে নিজে ঠিক হয়ে যেতাম।

ইফতি মিন মিনে গলায় বলল
–বলেছিলাম তো। শোন নি?

ঈশা আর কথা বলল না। সে জানে ইফতির সাথে কথা বলে কোন লাভ নাই। ইভান দূর থেকে তাদের কথা শুনছিল। ঈশার অবস্থা বুঝতে পেরে একটু হাসল। ঈশা ইভানের দিকে তাকাল। কিন্তু হাসিটা চোখে পড়ল না।

————–
সোজা রাস্তা ধরে সোডিয়াম বাতির আলোয় কয়েকজন যুবক যুবতী হেটে চলেছে নিজেদের গন্তব্যে। এলোমেলো ভাবে হাঁটছে। মাঝে মাঝে থেমে থেমে ব্রিজের উপরে উঠে চিৎকার করছে। আবার কখনও একজন আরেক জনের পিছনে দৌড়ে ধরার চেষ্টা করছে। অবাধ্য মনটার সকল আবদার আজ পুরন করতে ব্যস্ত তারা। ঈশা পিছনে ছিল। ইভান ফোনে কার সাথে যেন কথা বলছিল। হঠাৎ থেমে সামনে তাকিয়েই পিছনে হাত বাড়িয়ে দিলো। ঈশা একটু থেমে গেলো। হাত বাড়ানোর কারন বুঝতে পেরে মুচকি হেসে হাত ধরে ফেলল। ঈশা হাত ধরে তার পাশে দাড়াতেই ইভান হাটার গতি কমিয়ে দিলো। কথা শেষ করে ফোনটা পকেটে ঢুকিয়ে সামনে তাকিয়ে ঈশার হাত শক্ত করে ধরে হাঁটছে। কিছুদুর এগিয়ে গিয়ে দেখল রিক্সা দাড়িয়ে আছে। ইভান একটু গলা তুলে বলল
–চল রিক্সায় উঠি।

সবাই থেমে গেলো। আবার জোড়া ধরে রিক্সায় উঠল। চলতে লাগল বাড়ির দিকে। কিছুক্ষন থেমে ঈশা মৃদু কণ্ঠে বলল
–কয়টা বাজে?

ইভান যেন কথাটা শুনল না। খানিক্ষন পর মুখ ফিরিয়ে গম্ভির আওয়াজে বলল
–১.৩০।

ঈশা আঁতকে উঠল। এতো রাত পর্যন্ত বাইরে সে! ভাবতেই গায়ে কেমন কাটা দিয়ে উঠল। আচমকা ঠাণ্ডা হাওয়া এসে গায়ে আরও কাপন ধরিয়ে দিলো। ঈশা ওড়নাটা ঠিক করে মেলে পুরো গায়ে জড়িয়ে নিলো। ইভান বুঝতে পারল তার ঠাণ্ডা লাগছে। হুডটা উঠিয়ে দিলো। ঈশা প্রথমে একটু বিরক্ত হলেও পরে মনে মনে খুশি হল। কিছুদুর যেতেই ক্লান্ত ভঙ্গিতে ভয়ে ভয়ে ইভানের ঘাড়ে মাথা রাখল। কিন্তু ইভানের কোন প্রতিক্রিয়া হল না। এমন কি ঈশার দিকে ঘুরেও তাকাল না। ঈশা এতেই খুশি যে তাকে উঠিয়ে দেয় নি। সে আর একটু সুযোগ নিয়ে ইভানের হাত জড়িয়ে ধরল। এবার ইভান ঈশার দিকে ঘুরে তাকাল। খুব শান্ত দৃষ্টিতে। ঈশা ভয় পেয়ে গেলো। কিন্তু ইভানের দৃষ্টি দেখে সস্তি পেল। ইভান সামনে তাকিয়ে আদুরে গলায় বলল
–খারাপ লাগছে?

ঈশা কথাটা শুনে নিজের খুশিটা চেপে রাখতে পারল না। হাসি হাসি মুখেই বলল
–না ভালো লাগছে।

ইভান মুখ ফিরিয়ে মুচকি হাসল। ঈশা সারা রাস্তা ওভাবেই থাকল। রিক্সার ঝাকুনিতে আর ইভানের উষ্ণতায় হালকা তন্দ্রা ভাব এসে গেলো। রিক্সা এসে থামতেই ঈশার তন্দ্রা ঘোর কেটে গেলো। একে একে সব রিক্সা এসে থামল। ঈশা কি ভেবে নিজের ব্যাগে হাতড়াল অনেকটা সময়। কিন্তু কাঙ্খিত জিনিসটা না পেয়ে অসহায়ের মতো মুখ করে বলল
–ইলু আপু আম্মু এতক্ষনে ঘুমিয়ে গেছে। আমার চাবিটাও খুজে পাচ্ছি না। আমি তোমার সাথে যাব।

ইরিনা খুশি হয়ে ঈশার হাত ধরে বলল
–খুব ভালো হইছে। চল একসাথে থাকব সবাই।

ইলু ইরিনার হাত ঈশার কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে হাসি মুখে বলল
–তোর বর নেই। তোর দায়িত্ব আমি নিতে পারি। কিন্তু এই বিবাহিত মহিলার দায়িত্ব আমি কোনভাবেই নেব না।

মহিলা কথাটা শুনেই ঈশা রেগে গেলো। একটু ঝাঝাল গলায় বলল
–কি বলছ এসব? আমি মহিলা মানে?

ইভান উলটা দিকে ঘুরে দাড়িয়ে মানি ব্যাগ থেকে ইফিতকে বাড়ির চাবি বের করে দিচ্ছিল। ইফতি চাবি নিয়ে উপরে গেলো তালা খুলতে। আর ইভান ওভাবেই দাড়িয়ে থাকল। ইলু ইভানের দিকে হাত দিয়ে ইশারা করে বলল
–তোর জলজ্যান্ত বর নিজে উপস্থিত আছে। আর শশুর বাড়ির সামনে দাড়িয়ে আছিস। সেখানে আমি কি করে তোর দায়িত্ত নেই বল।

ঈশা কথার মানে বুঝতে পেরে অপ্রস্তুত হয়ে গেলো। আপত্তি জানাতে প্রস্তুতি নিয়েও লাভ হল না। ইলু দাত কেলিয়ে বলল
–তুমি তোমার বরের সাথে শশুর বাড়িতে যাও। প্রথমবার বলে কথা। নতুন বউ। আমরা ঘুম থেকে উঠেই দেখতে আসব। প্রমিস। একটুও মিস করার সুযোগ দেব না।

বলেই ইরিনার হাত ধরে টেনে নিয়ে ইভানের দিকে তাকিয়ে বলল
–অল দা বেস্ট ভাইয়া।

ইভান পিছনে ঘুরে কঠিন দৃষ্টিতে তাকাল তার দিকে। সে মাথা ঘুরিয়ে ইরিনা কে নিয়ে চলে গেলো। ইভান সামনে ঘুরে নিশব্দে হেসে ফেলল। ঈশা অপ্রস্তুত হয়ে দাড়িয়ে আছে। কি করবে বুঝতে পারছে না। তার ইচ্ছা করছে এই মুহূর্তে দৌড় দিয়ে বাসায় চলে যেতে। কিন্তু সেটারও উপায় নাই। ঈশাকে ওভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে ইভান ঘুরে বলল
–আপনার জন্য কি ইনভাইটেশন কার্ড ছাপাতে হবে?

ঈশা কোন কথা না বলে দ্রুত পায়ে সিঁড়ি বেয়ে উঠে গেল। ইভান একটু হেসে তার পিছনে পিছনে গেলো। ভিতরে ঢুকে দেখে সব অন্ধকার। ইফতি নিজের ঘরে চলে গেছে। ঈশা মাঝখানে দাড়িয়ে গেলো। এই বাড়িতে আগেও অনেকবার থেকেছে। কিন্তু এরকম অনুভুতি হয়নি। আর সব সময় ইভানের মায়ের সাথেই থেকেছে। কিন্তু আজ তো উনি ওনার ঘরে ঘুমিয়ে পড়েছেন। তাহলে কোথায় থাকবে? তার ভাবনার মাঝেই ইভান নিজের দরজার সামনে দাড়িয়ে হেলানি দিয়ে বলল
–কি হল? ওখানে দাড়িয়েই কি রাত পার করে দেয়ার ইচ্ছা আছে নাকি?

ঈশা চমকে উঠল। ঢোক গিলে একটা জোরে শ্বাস টেনে দ্রুত পায়ে ইভানের ঘরের দিকে গেলো। ইভানের পাশ কেটে যাওয়ার সময় খেয়াল করলো রহস্যময় হাসি। সেই হাসিই যেন ঈশার এতক্ষনের সব তন্দ্রা ভাব কেটে দিলো। ঝরঝরে হয়ে গেলো মস্তিষ্ক। ইভান ঘরে ঢুকে বিছানায় শুয়ে পড়ল পা ঝুলিয়ে। ঈশা ব্যাগটা টেবিলে রেখে এদিক সেদিক ঘুরে দেখছে। ইভান মাথাটা একটু তুলে বলল
–ছোট বেলা থেকেই এই ঘরে ঘোরাফেরা করার পরেও কি আজ অপরিচিত মনে হচ্ছে?

ঈশা নিজেকে স্বাভাবিক করে নিয়ে বলল
–না। টায়ার্ড লাগছে। আমি ফ্রেশ হব।

বলেই ওয়াশ রুমে চলে গেলো। ইভান উঠে বসলো। ঠোট কামড়ে নিজের চুল ঠিক করতে করতে হাসল। আলমারি থেকে নিজের কাপড় বের করে নিয়ে আবার বিছানায় বসে পড়ল। কিছুক্ষন পর ঈশা ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে এলো। ইভান ঈশার দিকে একবার তাকিয়ে উঠে ওয়াশ রুমে গেলো। পানির আওয়াজ পেয়ে ঈশা ভাবল ইভান গোসল করছে। বের হতে দেরি হবে। তাই ওড়নাটা বিছানার উপরে রেখে চুল গুলো আঁচড়িয়ে বাধতে লাগল। কিন্তু চুল বাধা শেষ হওয়ার আগেই ইভান বের হল। দরজা খুলেই আগে চোখ পড়ল ঈশার দিকে। ঈশা তাড়াতাড়ি করে ওড়না গায়ে জড়িয়ে নিলো। ইভান চোখ নামিয়ে নিলো। এগিয়ে গিয়ে বারান্দার দরজা খুলে তোয়ালে মেলে দিয়ে আবার লাগিয়ে দিলো। ঈশার দিকে তাকাল না। দরজার কাছে গিয়ে মৃদু সরে বলল
–অনেক রাত হয়েছে এখন ঘুমান উচিৎ।

ঈশা কিছু না বুঝেই ইভানের দিকে না তাকিয়েই জিজ্ঞেস করলো
–তুমি কোথায় যাচ্ছ?

ঈশার কথা কানে আসতেই ইভানের এতক্ষনের বাধ্য চিন্তারা কেমন অবাধ্য হয়ে উঠল। গোছানো অনুভুতি বর্বর হয়ে গেলো। চোখ বন্ধ করে নিজেকে স্বাভাবিক করে নিলো। তারপর নরম গলায় বলল
–বাসায় আব্বু আম্মু আছে। এখানে থাকাটা ঠিক হবে না। আমি ইফতির ঘরে ঘুমাব।

ইভানের কথা বুঝতে পেরে ঈশা সোজা সাপটা উত্তর দিলো
–আমি সেটা বলিনি। কোথায় ঘুমাবে তাই জানতে চাচ্ছিলাম।

ইভান কোন উত্তর না দিয়ে লাইট অফ করে বের হয়ে গেলো। কিছুক্ষন সোফায় বসে ফোন নিয়ে কাজ করলো। ঈশা শুয়ে পড়ল। বেশ কিছুক্ষন পর ইভান উঠে ইফতির ঘরে যাওয়ার আগে নিজের ঘরের দরজা খুলে ভিতরে ঢুকল। ঈশাকে ঘুমাতে দেখে মুচকি হেসে পায়ের কাছে বসে পায়েলটা সাবধানে পরিয়ে দিলো। উঠে মাথার কাছে এসে কপালে আলতো করে একটা চুমু দিয়ে ফিস ফিস করে বলল
–তুমি নামক অভ্যাসটা বড়ই ভয়ংকর! একবার করে ফেললে এর থেকে যে আর কোনভাবেই আমার নিস্তার নেই। তাই গোছানো অনুভুতি গুলোকে এলোমেলো করতে চাইনা জান।

চলবে………

#শুভ্র_নীলের_প্রেমপ্রহর
লেখক- এ রহমান
পর্ব ১৬

মৃদু আওয়াজ কানে আসতেই ঘুম ভেঙ্গে গেলো ঈশার। চোখ খুলতে পারছে না। অনেক রাতে ঘুমানর ফলে মাথাটা কেমন ঝিমঝিম করছে। কষ্ট করে চোখ খুলে ফেলল। অন্ধকার ঘর। কিন্তু সকাল হয়েছে সেটা বোঝা যাচ্ছে। ফ্যানের বাতাসে জানালার পর্দাটা উড়ছে। সেটার ফাক দিয়ে মৃদু আলো আসছে। ঈশা উঠে বসলো। ফ্যানের শব্দটা কম মনে হচ্ছে। ফ্যানের স্পীড কমানো আছে। কিন্তু ঘুমানর আগে তো সে কমায়নি। তার মানে ঘুমানোর পরে ইভান এসেছিলো ঘরে। ঈশা বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ালো। রুনু ঝুনু আওয়াজ কানে আসতেই পায়ের দিকে খেয়াল করলো। সেই পায়েল। তার মানে ইভান এসে তাকে পরিয়ে দিয়ে গেছে। মনে মনে খুব খুশি হল। জানালার পর্দা সরিয়ে বারান্দার দরজা খুলে দিলো। সকালের স্নিগ্ধ বাতাসটা এসে লাগতেই মনটা ভরে গেলো। এবার ঘরের দরজা খুলতেই দেখল ইলু আর ইরিনা বাইরে দাড়িয়ে আছে। তারা যেন দরজা খোলার অপেক্ষাতেই ছিল। ঈশাকে দেখে দাত কেলিয়ে বলল
–গুড মর্নিং!

ঈশা হেসে ঘুম জড়ানো কণ্ঠে বলল
–গুড মর্নিং!

ঈশা পুরো দরজাটা খুলতেই ইলু আর ইরিনা দুজনেই ঘরে উকি ঝুকি দিলো। কাউকে দেখতে না পেয়ে ইরিনা ফিস ফিস করে বলল
–ভাইয়া কোথায়? ওয়াশ রুমে?

ঈশা ক্লান্ত সরে বলল
–ইফতির ঘরে।

কথাটা শুনে ইলু আর ইরিনা চোখ বড় বড় করে তাকাল। তারপর একে অপরের দিকে তাকিয়ে ঈশাকে এক প্রকার ধাক্কা দিয়ে ভিতরে ঢুকল। ঈশা তাদের এরকম আচরনে বেশ অবাক হল। সেও ধির পায়ে গিয়ে বিছানার উপরে বসলো। ইরিনা ভ্রু কুচকে ঈশার দিকে তাকিয়ে বলল
–ভাইয়া ইফতির ঘরে এতো সকাল সকাল কি করছে?

ঈশা ক্লান্ত সরে বলল
–ঘুমাচ্ছে।

দুজনি একসাথে চিৎকার করে বলল
–ঘুমাচ্ছে মানে?

ঈশা চমকে তাকাল তাদের দিকে। কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বলল
–এভাবে চিৎকার করার কি আছে? ইফতির ঘরে থাকা নিষেধ আছে নাকি?

ইলু একটু ঝাঝাল কণ্ঠে বলল
–নিষেধ মানে কি! মহাপাপ!

ঈশা বিরক্ত হল। কোন কথা বলল না। ইরিনা সন্দিহান দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল
–ভাইয়া কি রাতে ওখানেই ঘুমিয়েছিল?

ঈশা ক্লান্ত ভঙ্গিতে মাথা নাড়ল। ইরিনা আবারো সরু চোখে তাকিয়ে বলল
–তোরা কি ঝগড়া করেছিস নাকি?

ঈশা বিরক্তিকর শব্দ করে বলল
–কি আশ্চর্য! ঝগড়া কেন করতে যাব?

–তাহলে ইফতির ঘরে কেন ভাইয়া ঘুমিয়েছে?

ইলু প্রশ্ন শেষ করতেই ঈশা এবার তেতে উঠে বলল
–কি তখন থেকে ঘুরিয়ে পেচিয়ে একি কথা বলছ। সমস্যা কি? কেন ঘুমিয়েছে আমি কিভাবে জানব? তার মন চেয়েছে ঘুমিয়েছে। এটা নিয়ে এতো সিন ক্রিয়েট করার কি আছে?

থেমে আবার ক্লান্ত সরে বলল
–তাছাড়া ইফতির ঘরে ঘুমালে সমস্যা টা কি সেটাই আমি বুঝে উঠতে পারছি না।

ইলু ঝাঝাল কণ্ঠে বলল
–অনেক সমস্যা। নতুন বউকে একা ঘরে রেখে রাতে অন্য ঘরে ঘুমানো অনেক সমস্যা। নতুন বর বউ আলাদা ঘুমায় সেটা বাইরে কেউ জানতে পারলে মান সম্মান থাকবে না।

এবার ঈশা ওদের কথা বুঝতে পারল। তীক্ষ্ণ চোখে তাকাল। আবার কিছু বলতে যাবে তার আগেই ইভানের গলা শুনে থেমে গেলো।
–এতো সকাল সকাল আড্ডা দিতে চলে এসেছিস। তোরা ঘুমাস না বলে কি আমার বউটাকেও ঘুমাতে দিবিনা।

ইরিনা গম্ভির গলায় বলল
–তোমার বউ নিজে নিজেই উঠে গেছে। আমরা বিরক্ত করিনি।

ইভান ঘরে ঢুকার আগেই ওদের কথা শুনেছে। ঈশা যে তাদের এসব কথার উত্তর দিতে পারবে না সেটাও বুঝে গেছে। তাই পরিস্থিতি সামলাতে ঈশার পাশে গিয়ে বসলো। নরম সরে জিজ্ঞেস করলো
–ঘুম হয়েছে রাতে?

ঈশা চোখ নামিয়েই মাথা নাড়াল। ইরিনা সন্দিহান কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো
–তুমি বউকে একা রেখে ইফতির ঘরে কেন ঘুমিয়েছিলে?

ইভান ভ্রু কুচকে তাকাল দুজনের দিকে। এতক্ষন ঈশাকে প্রশ্ন করে মেরে ফেলছিল সেটা পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু তারা যে ইভান কেও এভাবে প্রশ্ন করবে সেটা সে ভাবেনি। তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে উত্তর দিলো
–আমার একটু কাজ ছিল। ঈশা তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েছিল। আর আমার কাজ শেষ করতে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিলো। তাই আর বিরক্ত করিনি। ওর ঘুম ভেঙ্গে যাবে বলে ইফতির ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়েছিলাম।

ইভানের কথা যে তাদের বিশ্বাস হয়নি সেটা মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু ইভান সেটাকে পাত্তা না দিয়ে ঈশাকে বলল
–ব্রেক ফাস্ট করতে হবে না? ঔষধ খেতে হবে তো।

ঈশা মাথা নাড়িয়ে উঠে ওয়াশ রুমে চলে গেলো। ইভান সস্তির নিশ্বাস ছেড়ে উঠে বাইরে গিয়ে সোফায় বসলো।

————-
ভর সন্ধ্যা বেলা। বারান্দায় দাড়িয়ে রাস্তার দিকে নিচে তাকিয়ে আছে ঈশা। দূরে কোথাও বৃষ্টি হচ্ছে মনে হয়। সেটারই ঠাণ্ডা হাওয়াটা গায়ে এসে লাগছে মাঝে মাঝে। খোলা চুল গুলো মুখে এসে পড়ছে। বেশ বিরক্ত লাগছে। হাত খোপা করে আবার নিচে তাকাতেই চোখে পড়ল ইফতি হেটে যাচ্ছে। ঈশা উপর থেকেই চেচিয়ে বলল
–ঐ ইফতি। কই যাস?

ইফতি ঈশার গলা শুনে উপরে তাকাল। সেও একটু গলা তুলে বলল
–এমনি হাটি। কোথাও যাই না।

ঈশা একটু ভাবল। তারও এখন হাটতে ইচ্ছে করছে। তাই আর কিছু না ভেবেই বলল
–আমিও যাব। দাড়া।

ইফতি ভালো করে দাড়িয়ে বলল
–আসো।

ইফতির কথা শেষ হতেই পাশের বারান্দা থেকে ইভান ধমক দিয়ে বলল
–এতো চেচামেচি করছিস কেন? কি হয়েছে?

ঈশা আচমকাই এরকম ধমক খেয়ে চমকে উঠল। ইফতি নিচ থেকে বলল
–ভাবি আপুকে নিয়ে হাটতে যাব।

ইভান ইফতির দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে ঈশার দিকে তীক্ষ্ণ ভাবে তাকাল। ঈশা ওড়নাটা মাথায় টেনে দিয়ে নিচে তাকিয়ে আছে। ইভান কিছু বলার আগে ইফতি আবার বলল
–নিচে আসো।

ইভান এবার গলা তুলে ইফিতকে ধমক দিলো। বলল
–আবার যদি চিৎকার করেছিস তো তোর খবর আছে। ঈশা কোথাও যাবে না। তুই যা।

ইফতি গেলো না। কিছুক্ষন অপেক্ষা করলো। ইভান গম্ভির ভাবে বলল
–তুই যাবি না আমি আসব।

ইফতি বুঝতে পারল আর দাড়িয়ে থাকা সম্ভব না। তাই চলে গেলো একা একা। ঈশা অসহায়ের মতো তাকিয়ে আছে ইফতির দিকে। সেদিক থেকে চোখ ফিরিয়ে মুখ ভার করে ইভানের দিকে তাকাতেই ইভান বলল
–আসতে কথা বলতে বলেছিলাম। মনে নেই?

ঈশা মুখ ভার করেই বলল
–এখান থেকে আসতে কথা বললে কি নিচে শোনা যায়?

ইভান এবার রেগে গেলো। ধমক দিয়ে বলল
–এখান থেকে নিচে কথা বলার দরকার কি ছিল? না বললে কি দুনিয়া ধ্বংস হয়ে যেত?

ঈশা কিছু বলতে গেলো কিন্তু আবার ইভান ধমক দিয়ে বলল
–চুপ। একদম চুপ। আর একটা কথাও যেন মুখ দিয়ে না বের হয়।

ঈশা কিছু বলল না। তার খুব মন খারাপ হল। মাথা নামিয়ে নিলো। এর মাঝেই ঈশান নিচে থেকে গলা তুলে বলল
–ইভান ভাইয়া।

ইভান নিচে তাকাল। ঈশানকে দেখে বলল
–কই যাস?

ঈশান দুষ্টুমির সুরে বলল
–তোমাদের কাছেই যাচ্ছিলাম। আম্মু নতুন বর বউকে বাসায় ডাকে। তাড়াতাড়ি আসো।

ইভান হাসল। ঈশা কিছু বলতে গিয়েও ইভানের দিকে তাকিয়ে থেমে গেলো। ইভান গম্ভির গলায় বলল
–আর একটা কথাও যদি আমার কানে আসে তাহলে ধরে মাইর লাগাবো।

ঈশা চোখ নামিয়ে নিলো। ইভান ঈশানের দিকে তাকিয়ে বলল
–তুই যা আমরা আসছি।

ঈশান হেসে চলে গেলো। ইভান ঈশার দিকে তাকাল। মন খারাপ করে দাড়িয়ে আছে। ইভান আদুরে কণ্ঠে বলল
–এখানে দাড়িয়ে থাকলে কিভাবে যাব? নিচে নামতে হবে তো।

ইভানের কথা শুনে ঈশার মন গলে গেলো। কিন্তু সে কিছুতেই ইভান কে বুঝতে দিবে না। তাই কোন কথা না বলে ভাব নিয়ে ঘরে চলে গেলো। ইভান মুচকি হেসে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলো। সে ঈশাদের বাড়ির নিচে অপেক্ষা করছে। এতক্ষন মেয়েটা কি করছে কে জানে। কিছুক্ষন পর ঈশাকে নামতে দেখল। সিঁড়ি বেয়ে নামছে কিন্তু চোখ ফোনের মাঝে। এতো মনোযোগ দিয়ে ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে যে ইভান কেও সে দেখেনি। ইভান একটু বিরক্ত হল। কিন্তু মাথায় দুষ্টুমি খেলে গেলো। দুটো সিঁড়ি উপরে উঠল। একদম ঈশার বরাবর দাড়িয়ে গেলো। ঈশা খেয়াল করেনি। সে আনমনে ইভানের সামনে চলে আসলো। ইভান মুখে হাসি নিয়ে দাড়িয়ে আছে। ঈশা আর একটা সিঁড়ি পা বাড়াতেই ইভানের সাথে ধাক্কা খেলো। পড়ে যেতে নিলে ইভান তাকে দুই হাতে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। আচমকা এসব হওয়াতে ঈশা কিছুই বুঝতে পারল না। কিছুক্ষন পর সব মাথায় ঢুকতেই নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করলো। কিন্তু ইভান অনেক শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে। কিছুতেই ছাড়াতে পারল না। মাথা তুলতেই ইভানের অনেক কাছাকাছি এলো। ঈশা চোখ নামিয়ে নিলো। ইভান ঈশার মুখটা ভালো করে দেখে নিয়ে বলল
–যাকে দেখার দরকার তাকে ছেড়ে অন্য দিকে তাকালে এমনি হবে।

ঈশা ভ্রু কুচকে তাকাতেই ইভান তাকে ছেড়ে দিলো। ঈশা দুই টা সিঁড়ি উপরে উঠে দাঁড়ালো। ইভান কে দেখে নিয়ে বলল
–আমার ভুল না। তুমি ভুল জায়গায় দাড়িয়ে আছ। তুমি সামনে না দাঁড়ালে আমি ঠিক ঠাক নেমে যেতাম।

ইভান গম্ভির সরে বলল
–আমি যদি ভুল জায়গায় দাড়িয়ে থাকি আর সেটার জন্য যদি তোর কোন বিপদ আসে তাহলে আমিই সেটা সামলাবো।

ঈশা কঠিন কণ্ঠে বলল
–কিভাবে সামলাবে? লুকিয়ে? সামনে তো এরকম কিছুই করোনা। যা করো সব লুকিয়ে।

ঈশার কথা ইভান প্রথমে বুঝতে না পারলেও পরে ঠিকই বুঝতে পারল। আর কথাটা শুনে খুব রেগে গেলো। একটা সিঁড়ি উপরে উঠে শক্ত করে হাত ধরে ফেলল। দাতে দাত চেপে বলল
–সেটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমি আমার কোন কাজের জন্য কারো কাছে কৈফিয়ত দিতে রাজি না।

হাত ছেড়ে দিয়ে সামনে পা বাড়াল ইভান। ঈশার মুখে হাসি ফুটে উঠল। কারন ইভান তার সাথে আবার আগের মতো ব্যবহার করছে। তার মানে অভিমানটা অনেকটা কমে গেছে। ঈশা মুচকি হেসে ইভানের পিছে পিছে পা বাড়াল। ঈশানদের বাড়ির সামনে এসে বলল
–পায়েলটা কখন পরিয়ে দিয়েছ?

ইভান তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাল। সেই দৃষ্টির মানে স্পষ্ট যে সে কিছুই বলবে না। ঈশাও নাছোড়বান্দা। আবার বলল
–আমি যখন ঘুমাইছিলাম তখন তুমি ঘরে এসেছিলে?

ইভান থেমে গেলো। বিরক্ত হয়ে বলল
–বলেছি না সব বিষয়ে এতো কৌতূহল ভালো না।

ঈশা ভ্রু কুচকে বলল
–কেন? আমার জানার অধিকার আছে। আমি জানতে চাই। তোমাকে বলতেই হবে।

ইভান ঈশার দিকে ঘুরে দাঁড়ালো। অভিমানী সুরে বলল
–জানার অধিকার থাকলেই কি সব কিছু জানা যায়? আমি কি জানতে পেরেছিলাম?

ইভানের তীব্র অভিমানী কণ্ঠটা ঈশার বুকে ধারালো ফলার মতো আঘাত করলো। মুহূর্তেই চোখে পানি জমে গেলো। কণ্ঠের অসহায়ত্ব সাথে এক রাশ অভিমান। সবটা যেন উছলে পড়ছে। চোখ নামিয়ে নিলো। চোখের পাতা পিট পিট করে পানি লুকাবার চেষ্টা করলো ঈশা। ইভান সবটা বুঝতে পারলো। কিন্তু তারই বা কি করার। যখনি মনে পড়ে যায় এতো বড় একটা ঘটনা ঈশা তার কাছ থেকে লুকিয়ে তাকে দিনের পর দিন অবহেলা করে গেছে তখনি মনের কষ্টটা বেড়ে যায়। সব কিছু না জেনেও সে তাকে সামলে নিতে পেরেছিল। তাহলে জানালে কি সামালতে পারত না? কেন ঈশা তাকে বিশ্বাস করতে পারলো না। শুধু তাই নয় সে ইভানের কথা একবারও ভাবল না। তার কিছু হয়ে গেলে ইভান কিভাবে বাঁচবে সেটাও ভাবল না।

ঈশা নিজের চোখের পানি আটকাতে ব্যর্থ হল। না চাইতেও গাল বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ল। ইভান দাড়িয়ে সবটা দেখছে। ঈশার চোখে পানি দেখে আন্দাজ করতে পারলো ভিতরের কষ্টটা। তার অভিমান এক জায়গায় আর ঈশার কষ্ট আরেক জায়গায়। ঈশা যে এতো বেশী কষ্ট পাচ্ছে সেটা ইভানের ধারনাও ছিল না। সে বুঝতে পারেনি খুব বেশী কষ্ট দিয়ে ফেলেছে। নিজের মধ্যে অপরাধবধ তৈরি হল। একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে কিছু বলতে যাবে তার আগেই পিছন থেকে ইফতি দৌড়ে এসে বলল
–তোমরা এসে গেছ? ইলু আপু ফোন করেছিল। সেজো মা নাকি ডাকছে।

ঈশা আড়ালে চোখের পানি মুছে ফেলল। ইভান কোন কথা বলল না। দ্রুত পায়ে হেটে ভিতরে চলে গেলো। ইফতি ঈশার কাছে এসে বলল
–ভাবি আপু কি হয়েছে? কোন সমস্যা? ভাইয়া মনে হল রাগ করেছে।

ঈশা সামনে তাকিয়েই বলল
–কত আর রাগ করে থাকবে? আমি ঠিক সামলে নিবো। তুই ভাবিস না। চল।

চলবে………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here