নিষ্কলুষচিত্ত তুমি-১১
লেখা : মান্নাত মিম
সেদিন রাতে পলকের ঘর থেকে আসার পর থেকে সারারাত আর ঘুমায়নি নন্দিতা। আসেইনি দু’চোখের পাতায় ঘুমেরা নেমে। অসহনীয় ব্যথারা জেঁকে বসেছিল মনের ঘরের কোণে কোণে। সে যে ভালোবেসে ফেলেছে পলক’কে। অবশ্য ভালোলাগা থেকে ভালোবাসার আগমন। মন’কে পারল না হাজারো বেঁধে রেখে, ফের ভালোবাসা নামক গণ্ডিতে পদধূলি দেওয়া থেকে আঁটকাতে। ছুটে গেল সেই জীবন বাঁচানো পুরুষের হাতে নিজের জীবনকে সঁপে দিতে। কিন্তু বাঁধা, দেয়াল নামক বস্তুগুলো যাবে কোথায়? যেই চিন্তা-ভাবনা করে ভাবল বেহায়া হয়ে ভালোবাসার ব্যক্ত করবে, সেই তখন সকাল সকাল লায়লা বেগমের ডাকে ধূলিসাৎ হয়ে গেল সে-সকল চিন্তাধারার। দুরুদুরু বুকে এগিয়ে গেল লায়লা বেগমের রুমের দরজার সম্মুখে। ললাট বেয়ে ঘামের উদ্বেগ সৃষ্টি হলো, বেয়ে পড়ল সেটা ঘাড়ে। কীসের জন্য ডেকেছেন তিনি? ভাবনা এলো মনে মনে। এমনিতেই লায়লা বেগমের সাথে নন্দিতার বেশ একটা সখ্যতা গড়ে ওঠেনি। এতদিন হয়ে এলো বাড়িতে থাকে নন্দিতা অথচ বারকয়েক ছাড়া কখনো হাসিমুখে থাকতে দেখেনি লায়লা বেগম’কে। এখন কথা হলো আগে-পরে তো হাসির স্বর ঠিকই শোনা যেত আর তা কেবল আপনজনদের সাথেই। এতেই বোঝা যায় নন্দিতার সাথে দেখা হলেই মুখে গাম্ভীর্যের ভাব কেন এঁটে রাখতেন তিনি।
“এসো।”
লায়লা বেগমের কথায় ক্রাক’ শব্দে দরজা ধাক্কা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করল নন্দিতা আলতো পায়ে। যদি-ও আগে একবার এসেছিল লায়লা বেগমের রুমে। তবুও কেন জানি নন্দিতার কাছে মনে হচ্ছে আজই প্রথম প্রবেশ করল। হয়তো ভীত হওয়ার কারণ এটা।
“বসো।”
আধশোয়া হয়ে বিছানায় বসে লায়লা বেগম নন্দিতাকে সামনের সোফাটাতে বসতে বললেন। নন্দিতা সোফায় আসন গ্রহণ করলে লায়লা বেগম বিছানা থেকে নেমে সোফার আরেকপাশে গিয়ে বসেন নন্দিতার মুখ বরাবর হয়ে। অতঃপর কথা শুরু করেন।
“তোমার শরীর এখন কেমন?”
প্রত্যুত্তরে নন্দিতার ছোট্ট করে জবাব,
“ভালো।”
ভীত হয়ে গুটিয়ে বসা নন্দিতাকে পরখ করে নিলেন লায়লা বেগম। মেয়েটা যে তাঁকে ভয় পায় সেটার সম্পর্কে অবগত তিনি। অবশ্য তিনি-ও চান নন্দিতা যেন তাঁকে এভাবেই ভয় পায়। কেন জানি মেয়েটার এই ভয়টা তিনি ভাঙাতে চান না।
“তা ভালো হয়ে গেছ যেহেতু, সেহেতু বাবা-মা’র কাছে ফিরে যেতে চাও নিশ্চয়ই?”
কথাটা শোনে যে পরিমাণ অবাক হলো নন্দিতা, তা কেবল অন্তঃকরণে’ই রেখে দিলো। বুকের ভেতর থাকা নরম মনটাতে কেবল ভাঙন ধরুক। মুখে প্রকাশের যে জো নেই আর না অধিকার আছে। উপরন্তু লায়লা বেগম পরোক্ষভাবে তাকে বাড়ি ফিরে যেতে বলছেন, সেটা খুব ভালো করে বুঝল সে। কিন্তু কারণটা কী হতে পারে সেটাই কেবল নন্দিতা ধরতে পারছে না। পলক’কে ভালোবাসার কথা কি জেনে গেলেন নাকি?
“বললে না যে, বাড়ি ফিরে যেতে চাও নিশ্চয়ই? তা ঠিকানা বলো দিয়ে আসি। তবে যাওয়ার আগে যে মামলা করেছ সেটা গিয়ে উইথড্র করে আসবে।”
এই ব্যাপার তাহলে! নন্দিতার মাথায় এখন বিষয়টা খেলে গেল। নিশ্চিত কোনো খবর তাঁর কানে পৌঁছেছে, যার কারণে মামলার কথাটা এসেছে। কিন্তু কথাটা কী হতে পারে? কাইয়ূম কিছু বলেনি তো?
“জি, আন্টি বুঝতে পারছি না মামলার বিষয়টা?”
এবার লায়লা বেগম আক্রোশে ফেটে আক্রমণাত্মক কণ্ঠে বললেন,
“কিছু বুঝো না, না? অথচ নিজের শরীর বিলিয়ে দিতে বুঝো ঠিকই। প্রেম করে প্রেমিক’কে শরীর বিলাতে গিয়ে তার বন্ধুদের হাতে ধর্ষণ হও। আর এখন কিছু বুঝো না। বেহায়া, বেশরম মেয়েছেলে কোথাকার!”
বিস্ময়ে বিসৃত হয়ে গেল নন্দিতার মুখমণ্ডল। কণ্ঠস্বর কেঁপে কেঁপে উঠল, সাথে ঠোঁটের নড়নচড়ন-ও। গলায় একদলা কষ্টের কাঁটা এসে আঁটকে গেল। শুধু মুখ ফোটে অস্ফুট শব্দ নির্গত করল বেশ কষ্টে।
“আপনাকে কে বলল এসব?”
কাট কাট গলায় মুখ কুঁচকে লায়লা বেগম বললেন,
“কে আবার তোমার প্রেমিক কাইয়ূম খান।”
যা বোঝার বুঝা হয়ে গেল নন্দিতার। শুধু একটা ক্লিষ্ট দীর্ঘশ্বাস ফেলে নন্দিতা বলল,
“সে আমার প্রেমিক নয়, আর মামলা আমি এমনিতেও উঠিয়ে নেব চিন্তা করবেন না।”
“চিন্তা করব না! তোমার মুখে মানায় না এসব। তোমাকে বাঁচালো আমার ছেলে। আর আজ কি না তার জান নিয়েই টানাটানি করছে তোমার প্রেমিক। আবার ফোন করে হুমকি দেয়, মামলা না উঠালে নাকি ছেলেকে আর দেখতে পারব না। আমি বুঝি না বাপু তোমাকে বাঁচিয়ে কি পাপ করলাম? তুমি সুস্থ এখন যা করার বাড়ি ফিরে করো না ভাই, আমাদের রেহায় দেও।”
নিজেকে বেশ শক্ত করে সোফার সাথে এঁটে রেখেছে নন্দিতা। চোখের জলকে ছলকে বেরিয়ে না আসতে দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে সে। দূর্বল দেখাতে চায় না সে নিজেকে। কেন দেখাবে এদের নিজের কষ্টটাকে? আর না ভাঙাবে ভুল মতিভ্রম হওয়া ভাবনাগুলো। পলক যে তার হবে না জানা কথা এখন যেন আরো সেটা মস্তিষ্কে গেঁথে গেল। তাচ্ছিল্যের হাসি হাসল নিজের ওপর। বেহায়া হতে চেয়েছিল ভালোবাসার কথা বলার জন্য। ভালোবাসা মানুষকে কী থেকে কী বানিয়ে দেয়!
“শোন মেয়ে, আজই গিয়ে মামলা তুলে নেবে। আর বাড়ির ঠিকানা দেবে তোমাকে দিয়ে আসব। দু’দিন পর ছেলেটার বিয়ে দেব অথচ দেখ বাচ্চাটা আমার কীভাবে বিছানায় পড়ে আছে। যখন থেকে অলক্ষ্মী মেয়েটার আমার চৌকাঠে পা পড়েছে, তখন থেকেই একের পর এক মসিবত আসছে আমাদের ওপর।”
মাথা নেড়ে সায় দিয়ে দ্রুত পায়ে বেরিয়ে এলো নন্দিতা। কোনোমতে হেলে-দুলে পা চালিয়ে নিজ রুম পর্যন্ত পৌঁছাতে পারল। পা যেন ভেঙে আসতে চাইছে। অতঃপর রুমে ঢুকেই দরজা ভেজিয়ে ওয়াশরুমে প্রবেশ করে গলা ছেড়ে আর্তচিৎকারে প্রতিটি দেয়াল ভরে তুলল। যা কিছুই হোক না কেন দোষ সর্বক্ষেত্রে মেয়েদেরই। নারী সকল পাপের মূল এবং শেষ। কথাটা শুধু কথ্যরূপেই নয়, বেশ প্রচলিতও; আর কথাটার সৃষ্টিকারী এই সমাজ। ধর্ষণ করে পুরুষেরা, ধর্ষিত হয় নারীরা। সেখানে দোষ নারী’দেরই। কেন নারীরা কি নারীদের দ্বারা ধর্ষিত হয় যে, নারীদের দোষী ভাবে সমাজ? প্রশ্ন অনেক উত্তর শূন্য।
_______
অতঃপর মামলা উঠিয়ে নেওয়ার খবর পলকের কর্ণগোচর হলে সে বেশ ক্ষেপে গিয়ে জখম করল নন্দিতাকে। অবশ্য নন্দিতার কাছে সেটা ভালোবাসার চিহ্ন হিসেবে লাগল। যত্ন করে রেখে দিলো সেটা। বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিলো, বলতে গেলে মনের প্রস্তুতি সেটা। মনটা যে বারংবার কেঁদে চলেছে। পলক জানে না তার চলে যাওয়ার কথা। মামলা তুলে নেওয়ার কথাটাও জানার আগ্রহ দেখায়নি, স্বাভাবিক অভিমান যে তাকে জেঁকে ধরেছে। প্রিয়র অভিমান ভালো লাগে উপলব্ধি করতে। কেউ একজন তাকে খুব ভালোবেসে অভিমান করে বসে আছে। কিন্তু হায়! ভাঙানের মতো যে অধিকার নন্দিতার নেই। শুধু অনুভব করার ক্ষমতাটা রয়েছে। একবুক কষ্টানুভূতি নিয়ে দূর পানের আকাশে চেয়ে সুখ তারকাকে খোঁজার অনর্থক চেষ্টা চালাল নন্দিতা। পেল না হাজার তারার ভিড়ে তাকে খোঁজে। গভীর রাতে না ঘুম আসার ফলে ছাঁদে এসে দাঁড়িয়ে নন্দিতা। অগভীরভাবে ছুঁয়ে যাচ্ছে হিম করা শীতলতা। এই যে একাকীত্বের রাতটুকু শুধুই তার একান্তের। এভাবে করে যদি আরেকটাবার পলক’কে কাছ পেত! বড্ড লোভ জন্মাচ্ছে পলক’কে কাছে নিজের করে পাওয়ার। তার মতো একজন ধর্ষিতাকে সমাজে সুষ্ঠুভাবে জীবনযাপন করা মানায় না। ‘ধর্ষিতা’ শব্দটা কিছু পলের জন্য ভুলেই গিয়েছিল পলকের যত্নমাখা ভালোবাসার জন্য। কিন্তু দিনশেষে বাদবাকি সবাই সেটা স্মরণ করিয়ে দিলো। দেখিয়ে দিলো তার স্থান কেবল ওই রাস্তায়। শেষ রাত কাটানো হিসেবে আজ না ঘুমানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে এখানে উপস্থিত হওয়া। কতশত ভাবনা যে মনের আকাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তবে তার মাঝে একটা কথাই কেবল মস্তিষ্কে বারবার হানা দিচ্ছে। সে চলে গেলে পলক কি কখনো তাকে মনে করে কাঁদবে? হা হা হাসি পেল তার, ঠোঁটের কোণে খেলেও গেল সেটা। যেখানে ফারজানা তার কথা স্মরণই করতে দিবে না, সেখানে মনে করে কান্নার বিষয়টা বেশ ছেলেখেলা স্বরূপ। একা একা বিভিন্ন হিসাব-নিকাশ করল ভোরের আলো ফোটার পর্যন্ত। তন্মধ্যে সবচেয়ে বড়ো সিদ্ধান্ত হলো, বাড়ি না ফেরার চিন্তাটা। কারণ কোথায় ফিরে যাবে, কাদের কাছে? যাদের জঘন্যতম চরিত্রের কারণে বলি হতে হয়েছে তাকে। বাবা-মা দু’জন সমান অপরাধী। বাবা তো অপরাধ করে, আর মা সেটাকে প্রশ্রয় দিয়ে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে অপরাধী। সারারাত কান্নার ফলে চক্ষুদ্বয় রক্তলাল বর্ণে পরিণত হলো। ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে নিচে নেমে এলো নন্দিতা।
______
“আপনাকে এত বলার পরও আপনি কী করলেন?”
পাশে রিফাত বিছানাতে আধশোয়া হয়ে বসে আছে। বিছানার অপরপাশে বসে কাইয়ূমকে জিজ্ঞেস করছে ফারজানা। কাইয়ূমের এমন ভাব যেন সে ফারজানার কোনো প্রশ্নই শুনতে পায়নি। ফারজানা তার থেকে কোনো সদুত্তর না পেয়ে বিরক্তিকর হতাশ দৃষ্টি নিক্ষেপ করল রিফাতের দিকে। রিফাত জেলের হাওয়া খেয়ে বেশ অসুস্থবোধ করছে। ফারজানার দৃষ্টির বিষয়টা বুঝলেও তার বলার আপাতত কিছুই নেই, জেলের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছে এই ঢের। এখন যে যারটা বুঝুক, নিজে বাঁচলে নিজের নাম। সেখানে বাপদাদার নাম আমলে নেওয়ার মতো মানুষ সে নয়। দু’টো প্রাণীর থেকে নিজের করা প্রশ্নের জবাব তো দূরে থাক, ফিরে তাকানোর দেখা পর্যন্ত পেল না বিধায় আত্মসম্মানে আঘাত লাগল। ওঠে চলে যেতে নিলে কাইয়ূমের শক্ত হাতের বাঁধ পেলে তার নরম হাতের মধ্যে। পিছু ফিরে কাইয়ূমকে হাত ধরতে দেখে হাত ঝারা দিয়ে চোখ রাঙিয়ে বোঝাল, ‘ডোন্ট ক্রস ইউর লিমিট’। আর সেটা বুঝতে পেরে কাইয়ূম হাত ছেড়ে কাঁধে ওপরে তুলে ধরল স্যারেন্ডার ভঙ্গিতে। অতঃপর ফারজানা ফোঁস শব্দে রাগের বহিঃপ্রকাশ করে সোফায় বসল।
“আজ যদি পলক’কে আহত না করতাম, তাহলে নন্দিতার মনে ভয় কাজ করত না। আর না সে মামলা তুলে নিত।”
কথার প্রেক্ষিতে ফারজানা ক্ষোভের সহিত বলল,
“তবুও যদি গাড়িটা ও’র ওপর দিয়ে যেত? তখন আপনাদের একটাকেও ছাড়তাম না আমি।”
“গাড়ি চালককে বলেই দেওয়া হয়েছে, সে তার কাজ সঠিকভাবে করতে পেরেছে। তবুও যদি আপনার দ্বিধা থেকে থাকে, তাহলে ছাড়তে বলেছে কে, ধরে রাখুন।”
মৃদু হেসে বলার বিপরীতে ফারজানার ক্ষেপাটে মুখখানা চোখে লাগার মতো। বেশ লাগে তাকে রাগাতে কাইয়ূমের। এমনই এক সিংহী মেয়েকে বেশ ভালো লাগত, অতঃপর অতি তেজস্ক্রিয় হওয়ার কারণে নিজের সম্ভ্রম হারাতে হলো তাকে। নন্দিতার কথাই ভাবছে। হঠাৎই উচ্চস্বরে হেসে উঠল। আর তার এই হাসির শব্দে বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে রইল ফারজানা ও রিফাত। হাসির ফোয়ারা কেমন জানি ধ্বংসাত্মক শোনাল।
________
খুশির খবরেও কেন যেন বাতাসে বিষণ্ণতা কাজ করছে। বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে দিয়েছে কেউ বোধহয় বাতাসে। কেমন যেন মন খারাপের মত নিশ্বাস বন্ধ হওয়ার উদ্বেগ! নন্দিতার চলে যাওয়ার আজ প্রায় পনেরো-বিশ দিন হবে। এরইমধ্যে একবার লায়লা বেগম বাগদানের কাজ সারতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ছেলের মতিগতি ভালো না বিধায় বাগদানটা স্থগিত করেন। সেই থেকে ছেলের ওপর একটা চাপা রাগ কাজ করছে, তবুও ছেলের শুকিয়ে যাওয়া চোখে-মুখের দিকে তাকিয়ে কষ্ট ভরা দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করেন। নন্দিতার ওপর তিনি এখনও রেগে, গেলো তো গেলো সুখের সংসারটাকে ভেঙে রেখে গেল। ছেলেটা তাঁর কলকাঠির মতো চলাফেরা করে। হা, হু ছাড়া ভালো-মন্দ দুয়েকটা কথা বের হয় না মুখ দিয়ে। সায়মার সাথে প্রায়ই কেঁদে কেঁদে সেসব বলে লায়লা বেগম নালিশ করেন। আর ভাই পাগল মেয়েটাও মা’কে হালকা-পাতলা বুঝ দিয়ে সে-ও কেঁদে ফেলে মাঝেমাঝে। এখন সামনের দিনের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ফারজানার সাথে বিয়ে দেওয়ার কথা পলকের কানে তুলেন তিনি। কিন্তু যেইসেই অবস্থা, পলকের নিরুত্তাপ উদাসীনতা নিষ্ঠুরতার সহিত কাঁদায় লায়লা বেগমের মনকে। তাঁর কী করার নন্দিতার মতো মেয়েকে পলকের মুখ চেয়ে যদি ছেলের বউ হিসেবে মেনেও নিতেন তবুও দেখা যেত সমাজ সেটা মেনে নিবে না। মানুষ সমাজের দাস। সেখানে বাকি জীবন সমাজের কটুক্তি শোনে কতটুকই বা টিকতো পলকের বিবাহিত জীবন সংসার? একজন মা হিসেবে সন্তানের ভালো চাওয়াটা খানিক সময়ের জন্য কষ্টের হলেও পরে সুখের কারণ হবে।
চলবে…