#আমার_তুমি
#পর্বঃ৬
#Tanisha_Sultana (writer)
কলেজের মাঠে বসে আছে তুলি। তুলির পাশে জিসান আর তমাও আছে।
“তুলি ক্লাসে যাবি না
জিসানের কথায় তুলি বিরক্ত নিয়ে তুলির দিকে তাকায়।
” এভাবে তাকাচ্ছিস কেনো? আমি কি তোকে যুদ্ধে যেতে বলেছি না কি?
“আমি ক্লাসে যাবো না। তোরা যা
” তোকে ছাড়া আমরা ক্লাসে যাবো না (তমা)
“তো যাস না। তোদের যেতে কে বললো।
সায়ান আসে ওদের কাছে।
” তুলি তোকে বাড়ি যেতে বলেছে
“আমি ভার্সিটিতে এসেছি কোথাও আড্ডা মারতে আসি নি
” আমি না তোর বাবা তোকে বাড়ি যেতে বলেছে
“কেনো?
” জানি না বাট আর্জেন্ট
“চল
তুলি জিসান তমাকে বিদায় দিয়ে বাইকে ওঠে। সায়ান তুলির পেছনে বসে আছে।
” তুলি বাইক থামা
“কেনো
” আগে থামা না
তুলি বাইক থামায়
“কি হয়েছে বল
” চল না শপিং করি
“ফাজলামি পাইছো?
” প্লিজ জানটুস না করিস না প্লিজ
বিরক্তি নিয়ে তুলি শপিং মলের দিকে হাঁটা শুরু করে। সায়ান আর তুলি একটা শাড়ির দোকানে যায়৷ ওই দোকানে একটা ছেলে আর মেয়ে শাড়ি কিনছে
“বেবি আমি কোন শাড়িটা নেবো (মেয়েটা)
” রিমি তুমি?
সায়ান বলে। রিমি তো সায়ানকে দেখে ভয় পেয়ে যায়। তুলি সায়ানের দিকে তাকিয়ে আছে
“না মানে
” মানে মানে বাদ দাও। এই ছেলপটা কে?
“আআমার ককককাজিন
তুতলিয়ে বলে রিমি
” আমি তোমার কাজিন মানে টা কি? রেগে বলে ছেলেটা। রিমি এবার পরেছে মহা বিপদে।
“ওই মাইয়া তুই কি পাড়ার অধ্যেক ছেলেকেই তোর কাজিন বানিয়ে রেখেছিস? খারাপ মাইয়া। ব্রেকআপ তোর সাথে। আর কখনো আমাকে ফোন দিবি না
ছেলেটা চলে যায়। তুলি এবার ফিক করে হেসে ওঠে। সায়ান তুলির মুখের হাসি দেখে নিজেও একটু হাসে। তারপর রিমিকে তারিয়ে দেয়। তুলি এবার কোনোরকমে হাসি থামিয়ে বলে
” সিরিয়াসলি সায়ান এরকমও মেয়ে হয়। তোর গার্লফ্রেন্ড এমনই হবে আমি আগেই জানতাম।
“যাক বাবা তোকে হাসাতে পারলাম। একবছর পরে তোর মুখে হাসি দেখলাম। এরকমই সব সময় হাসিখুশি থাকবি। বাইরের একটা ছেলের জন্য তুই কেনো মুড অফ রাখবি বল। তোর মুখে হাসি দেখলে তোর বাবা মা ভাই কতো খুশি হবে বল তো
” হুম বুঝলাম। এবার বল কি কিনবি
“শাড়ি
” কেবল তো ব্রেকআপ হলো এখন শাড়ি দিয়ে কি করবি
“তোর আর রাই ভাবির জন্য
“স্পেশাল কিছু আছে কি?
” সেটা তো সারপ্রাইজ
“ওকে
সায়ান আর তুলি অনেক অনেক শপিং করে বাড়ি চলে আসে।
ড্রয়িং রুমে জীম জীমের বাবা মা তুলির মা বাবা ভাই রাই সবাই বসে গল্প করছে।
” আন্টি কেমন আছো?
তুলি জীমের মা কে বলে
“আলহামদুলিল্লাহ সোনা। তুমি
” ফাটাফাটি। আংকেল আপনি
“ভালোই। পড়ালেখা কেমন চলছে?
” ভালোই।
তুলির বাবা মা ভাই রাই সবাই অবাক। কতোদিন পরে ওরা তুলির মুখে হাসি দেখছে। জীমের মনটা ভালো না। গার্লফ্রেন্ডের বিয়ে হয়ে গেছে। মুখ গোমড়া করে ফোন দেখছে। জীম একবার তুলির দিকে তাকায়। কিন্তু তুলি একবারও তাকায় না।
“যখন মায়া বাড়িয়ে লাভ হয় না, তখন মায়া কাটাতে শিখতে হয়”
তুলি সবাইকে বাই বলে রুমে চলে যায়। আজ তুলির খুব ভালো লাগছে। জীমকে দেখে না বাবা মায়ের মুখে হাসি দেখে। এতোদিন তো হাসি শব্দটা ওদের জীবন থেকে চলেই গেছিলো।
তুলির মা তুলির রুমে আসে।
“তুলি
তুলি শুয়ে ফোন দেখছিলো মাকে দেখে উঠে বসে
” মামনি বসো না
তুলির মা তুলির পাশে বসে।
“তোকে হাসতে দেখে খুব ভালো লাগছে।
” আমি এখন থেকে সব সময় হাসবো
“তোর বাবা আর ভাই তোকে বিয়ে দিতে চায়
” আমিও বিয়ে করতে চায় ?
“মায়ের সামনে বিয়ের কথা বলতে লজ্জা করছে না
” নাহহ। বিয়ে তো করতেই হবে শুধু শুরু লজ্জা পেয়ে লাভ আছে। তুমি বলো কবে বিয়ে
“তুই ছেলে কে জানতে চাইবি না
” না। আমি জানি আমার বাপি আর ভাইয়া আর জন্য বেস্ট কাউকে চুজ করবে
“এতো কনফিডেন্স
” ইয়াহহ। বললে না কবে
“সামনে সপ্তাহে
” ওকে যাওও আমি বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছি
“ঠিক আছে
তুলির মা চলে যায়। তুলি দরজা বন্ধ করে দেয়। জীম আর তুলির অনেক গুলো পিক তুলির কাছে ছিলো একটা ডাইরিতে। তুলি ডাইরিটা আলমারি থেকে বের করে।
” আপনাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেছিলাম জীম। আপনার ছায়া হয়ে আপনার পাশে থাকতে চেয়েছিলাম। আপনি সবটা নষ্টটা করে দিলেন। আমার ভালোবাসাকে অপমান করলেন। ভালো করেন নি আপনি। আমি কখনো আপনাকে হ্মমা করবো না। কখনো না।৷ আই হেট ইউ
তুলি ছবিগুলো আর ডাইরিটা নিয়ে বাগানে চলে যায়। ডেসলাইট নিয়ে যায়। ডাইরি আর ছবি গুলোতে আগুন লাগিয়ে দেয়।
তুলি দাঁড়িয়ে দেখছে তুলির ভালোবাসা পুরে যাচ্ছে। দুফোঁটা চোখের পানি গড়িয়ে পড়ে। তুলি মুছে ফেলে।
আজ তুলির গাঁয়ে হলুদ। সুন্দর করে সাজানো হয়েছে তুলিকে। তুলি বারবার নিজেকে আয়নায় দেখছে। সায়ান জিসান তমা তুলির পাশে বসে আছে
“তুই এতো আয়না দেখছিস কেনো?(জিসান)
” আমি এতো সুন্দর এতো সুন্দর যে আমিই আমার ওপর ক্রাশ খাচ্ছি।
“পৃথিবীতে দুজন মানুষ নিজেকে রুপের জাদুঘর মনে করে (সায়ান)
” কে কে?(তমা)
“আলাদীন নাটকের গুলবদন আর আমাদের তুলি
সবাই হাসতে থাকে। তুলির খুব রাগ হয়। তুলি সায়ানের মাথায় চাটি মারে।
” তুলি তোর বরের মাথায় না চুল নেই। মজা করে বলে জিসান
“কিহহহহ
” হুম রে। দেখতে কি কালো (সায়ান)
“আবার ইয়া বড় গোঁফও আছে (তমা)
তুলি এবার চুপচাপ ভাবছে
” না দেখে তুই একটা কাকুকে বিয়ে করতে যাচ্ছিস (জিসান)
তুলির এবার কেঁদে দেওয়ার মতো অবস্থা। তুলির ফেস দেখে ওরা হো হো করে হেসে ওঠে
চলবে
তুলির বিয়ের দাওয়াত রইলো।