#রাখালের বউ যখন বিসিএস ক্যাডার,পর্ব-০১
লেখক:-রাসেল (কালো ভূত)
সিরাজগঞ্জ জেলার যমুনা নদীর পাশেই অবস্থিত,
একটি সুন্দর সবুজে ঘেরা গ্রাম,
গ্রামটিতে যেনো সৌন্দর্যের কোন কমতি নেই,
সেই গ্রামেই বাসকরে আমাদের এই গল্পের নায়ক আবির মাহমুদ রাসেল,সবাই রাসেল বলেই ডাকে,
গ্রামবাসী রাসেল কে খুবই ভালোবাসে,সে যেনো সবার চোখের মনি,
পরিচয় দেবার মতো কিছু নেই কারণ জন্মের পরথেকেই রাসেল তার বাবা মাকে দেখেনি,
আদো জানেনা তার বাবা মা এই পৃথিবীর বুকে আছে কি না,
এক বৃদ্ধ রাসেল কে লালন পালন করতো,
সেও রাসেলের সাত বছর বয়সে মারা যা তখন থেকেই রাসেলের জীবন অন্ধকারে ঢেকে যায়,
এখন এই গ্রামবাসীই যেনো তার পরিবার,
রাসেল কিছু মানুষের সাথে মাঠে কাজ করতেছে,
আকাশ থেকে টিপ টিপ বৃষ্টি পরছে তবুও যেনো থামছে না কারো কাজ,
সবাই আনন্দের সাথে কাজ করেতেই ব্যস্ত,
রাসেল:-শাওন এতো সময় তো একটু একটু বৃষ্টি পরতেছিলো, তাই কাজ চালিয়ে গেছি, কিন্তু এখন আকাশের যে অবস্থা তাতে মনে হয় না যে কাজ করা সম্ভব হবে,
শাওন:-হুম দোস্ত কথাটা ঠিক বলেছিস,
কিন্তু জানিসি তো আমাদের মালিক টা কি রকম খাট্টাস, ঝড় নাই বৃষ্টি নাই তার কাজ করতেই হবে,
তানভীর:-হুম ভাই যা বলেছিস,
সালাই খুব কিপটা,
আল্লাহ তারে এতো কিছু দিছে অথচ কেউ যদি তার কাছে কিছু চাইতে যায়,
তাহলে হলো কেলোর কৃতি,
রাসেল:-তোরা যায় বলিসনা কেনো,
আমাদের মালিকের মনটা কিন্তু খুব ভালো যেটা তোরা দেখতে পারিস না,
শাওন:-ভাই তোমার কাছে ঐ খাট্টাস বেটা ভালো হবেই কারণ এই গ্রামে ঐ বুইড়া যদি একজন লোক কে বিশ্বাস করে, তাহলে সেই লোক টা হলি তুই,
রাসেল:-আমার দ্বারা হয়তো তার অনেক উপকার হয়,তাই আমাকে বিশ্বাস করে,
সিরাজ:-হ ভাই তুমি যা কৈছো,
তোমাকে দিয়েই তো তার উপকার হয়,
কারণ আমরা যদি ঐ বুইড়ার গাছ থেকে ডাব চুরি করে না খেতাম তাহলে, সব ডাবের বাদা ছিড়ে পরে গিয়ে নষ্ট হয়ে যেতো,তাহলে উপকার না এটা বল,
রাসেল:-ভাইরে এইটা তুই কি বললি,
আমার পাঠক পাঠিকারা এখন কি বলবে,
আমি ডাব চুরি করেখাইছি।
তানভীর:-আর না খেয়েই কি করবো,
শালা একটা ডাব কি খাইতে দিতো নাকি,বা কোনদিন দিছে।
শাওন:-ভাই রাসেল কে বিশ্বাস করার আরেক টা কারণ হলো, ও কাগজপত্র বুঝতে পারে,
বুঝিনা যাকে কোনদিন স্কুলের বারান্দায় যেতে দেখলাম না সে কি করে কাগজপত্র বুঝতে পারে,
সিরাজ:-হুম কিন্তু আমরা রাসেল কে জিগ্গেস করলেই শুধু হাসে, যেই হাশির মাঝে লুকিয়ে আছে গভীর রহস্য,যেই রহস্য কেউ জানেনা আজো।
রাসেল:-এই তোরা থামতো,
তোদের সাথে কথা বলতে বলতে আমি তো ভূলেই গেছি, জেরিনের কথা,
ওহহহহ নো আপনেরা অবশ্যই ভাবতাছেন এই জেরিন টা আবার কে,
আপনাদের তো বলতেই ভূলে গেছি জেরিন হলো রাসেলের বউ,
চলেন তার পরিচয়টা ও যেনে আসি,
পুরো নাম ঐশী আক্তার জেরিন,
সবাই ভালোবেসে জেরিন বলেই ডাকে,
এই পৃথিবীতে তার ও কেউ নেই,বাবা ছিলো তিনবছর হলো মারা গেছে, জেরিন কে রাসেলের হাতে তুলে দিয়ে,
পাশের গ্রামেই থাকতো,তখন থেকেই জেরিনের পড়াশোনার দায়িত্ব রাসেল নেয়,যেখানে সংসার চালাতেই হিমসিম খাই,
শাওন:-ভাই ভাবি আবার কি বলছে যেটা তোর মনে নেই, অবাক হয়েই জিগ্গেস করলাম,
রাসেল:-ঐ তো তার অনেক শখ সে বিসিএস ক্যাডার হবে,
তোরাই বল আমাদের মতো গরীবদের কি এই স্বপ্ন দেখা ঠিক যেখানে পেটের ভাত জোগাড় করাই মুশকিল,
সিরাজ:-এই বি পি সি না বিসিএস এটা কি,
খাই নাকা খেতে আবাদি করে,
সবাই একসাথে সিরাজের কথা শুনে হো হো করে হেসে ওঠে,
কি বলছে ও বিসিএস খাইনা খেতে আবাদি করে,
রাসেল:-আরে গাধা তুই তো জানিস না,
বিসিএস হলো একটা বড় ডিগ্রী যার মাধ্যমে অনেক বড়ো বড়ো সরকারি চাকরি মেলে,
যেমন ধর পুলিশের বড় অফিসার,
ডিসি, আরো অনেক কিছু,
সিরাজ:-সেটা আগে বললেই তো আমি সুন্দর বুঝতে পারতাম,
শুধু শুধু সময় নষ্ট করে এখন বুঝালি,
তানভীর:-ভাই সবাই জানে ভাবি অনেক মেধাবী,
তার মতো মেধা আশেপাশের এলাকায় কারো ও নেই, সে বিসিএস ক্যাডার অবশ্যই হতে পারবে,
কিন্তু ভাই তুই এতো কষ্ট করে ভাবিকে বড় করতেছিস,
সে যদি তোকে ভুলে যায়,
রাসেল:-দেখ তানভীর আমি জেরিন কে অনেক ভালোবাসি,
আমি চাইনা জেরিনের কোনো ইচ্ছা অপূর্ণ থাকুক,
আমার রক্ত বেচে হলেও ওকে আমি বিসিএস ক্যাডার করবোই।
তোরা থাক আমি যায়, বাজারে গিয়ে আবেদন করে আসতে হবে,
শাওন:-আচ্ছা যা,
দেখে শুনে যাস কিন্তু,
রাসেল ওর বন্ধুদের বলে চলে আসে,
বাড়িতে আসার সময় সামনে পরে যায় ওর মালিক রফিক মোল্লা,এই গ্রামের সবচেয়ে বেশি ধনী,এক কথায় যাকে বলে মোড়ল।
রফিক মোল্লা:-কিরে রাসেল তুই এই সময়ে বাড়িতে আসতাছিস যে,খেতে কাজ করবে কে,
রাসেল:-চাচা হয়েছে কি,
আজকে একটু বিসিএস পরীক্ষার আবেদন করতে হবে আপনার বউমার জন্য,যানেন তো তার অনেক শখ সে বিসিএস ক্যাডার হবে,
রফিক মোল্লা:-শোন রাসেল আমি বলিকি বউ কে পড়িয়ে টাকা শেষ না করে সেই টাকা দিয়ে বেঁচে থাকার জন্য কিছু কর,নাহলে ছেলে মেয়ে হলে তাদের ভবিষ্যত অন্ধকার,আর যতটা পড়েছে তাতেই মনে হয় না এমন শিক্ষিত কেউ এই জেলার ভিতরে আছে,
রাসেল:-না চাচা আমি চাইনা আমার জন্য ওর স্বপ্ন আশা নষ্ট হয়ে যাক,
রফিক মোল্লা:-হুম বেশি বশি বিসিএস বানাও যখন পাখি খাঁচা ছেড়ে উরে যাবে তখন বুঝতে পারবা এখন তো বুঝবা না,
যা তারাতারি কাজ সেরে খেতে আইসেক আমি যাচ্ছি, দেখে আসি ঐ বদগুলা কি করে,
রাসেল:-যদি কিছু টাকা দিতেন,
তাহলে খুবই উপকার হতো,
রফিক মোল্লা:-আমি সবাই কে মানা করতে পারলেও কেনো যানি তোকে কোনো কিছু তেই মানা করতে পারিনা,
এই নে ধর,কিন্তু মনে রাখিস টাকা অনেক বেশি নিলি
রাসেল:-হুম মনে আছে,
আসসালামুয়ালাইকুম চাচা আসি তাহলে,
রফিক মোল্লা:- ওয়ালাইকুমাসালাম,
আইছে বউ কে বিসিএস ক্যাডার বানাবে,
পেটে ভাত জোটেনা সেইদিকে কোনো চিন্তা নাই,
রাসেল ধিরে বাড়িতে চলে আসে,
বাড়িতে এসেই দেখতে পাই জেরিন বারান্দায় বসে বসে পড়তেছে ছাতা মাথাই দিয়ে,
ওহহহ বুঝলেন না তো সে বারান্দায় তাহলে ছাতা কেনো, আসলে বারান্দা দিয়ে পানি পরে টিনের চাল ফুটো হয়ে গেছে,
নতুন ঘর দিবে সেই টাকা যে নেই রাসেলের,
যা কামাই করে তা দিয়েই সংসার খরচ আর জেরিনের খরচ হয় না।
রাসেল:-জেরিন তোমার খুব কষ্ট হয় তাইনা,
আমার এই অভাবের সংসারে থাকতে,
আমি এক অভাগা স্বামী যে তোমার কোনো ইচ্ছে পূরণ করতে পারিনা।
জেরিন:-আরে বেটা একবার শুধু বিসিএস টা শেষ করতে দে,তার পর তোর কপালে লাথি দিয়ে চলে যাবো, এখন গেলে আমার খরচ কে দিবে তাই তোর ভাঙা ঘরে পরে আছি, মনেমনে,
আরে না আমার কোনো কষ্ট হচ্ছে না,
আবেদন করতে কখন যাবে,
রাসেল:-হুম সেই জন্যই তো আসলাম,
খাবার জন্য কি কিছু আছে নাকি,
জেরিন:-আমি তো ভাত রান্না করি নাই,
আর তুমি তো সকালে রান্না করো নাই,ঘরে বিস্কুট ছিলো সেইগুলা আমি খাইছি,
রাসেল:-ওহহহহ,
কি কপাল আমার ঘরে বউ থাকতে নিজে রান্না না করলে পেটে ভাত পরে না,
মনে মনে,আচ্ছা আমি তাহলে আগে রান্না করি,
জেরিন:-নাহহহ আজকেই আবেদনের শেষ তারিখ, যাও আগে আবেদন করে এসে রান্না করে খাবে,
রাসেল:-আচ্ছা ঠিক আছে আমি এখনি যাচ্ছি,
মনের মাঝে হাজার ও কষ্ট কে মাটি চাপা দিয়ে মুখে এক রাশ হাসি এনে উপরের কথাগুলো বলে,
রাসেল হাত মুখ ধুয়ে ঘর থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে চলে যায় কম্পিউটারের দোকানের উদ্দেশ্যে,
সেখানে গিয়ে সকল কার্য শেষ করে জেরিনের জন্য কিছু বিস্কুট কিনে বাসাই চলে আসে,এসে দেখে জেরিন সুন্দর করে ঘুমিয়ে আছে, ঘুমান্ত অবস্থায় খুব সুন্দর লাগছে,
ইচ্ছে করছে একটু ছুয়ে দিতে কিন্তু যদি কিছু মনে করে,তাই ইচ্ছাটা কে মাটি চাপা দিয়ে বালিশের পাশে বিস্কুট গুলো রেখে না খেয়েই কাজে চলে যায়,ঐদিকে রফিক মোল্লা খেতে যায়,
দূর থেকে দেখতে পায় সবাই কাজ করতেছে,
ধিরে ধিরে কাছে যায়,
শাওন:-এই তোরা মন দিয়ে কাজ কর পেছনে দেখ শালা খাট্টাস বুইড়া আসতাছে,
না জানি রাসেল নেই কি বলে।
তানভীর:-আরে বেটা কিছুই বলবেনা কারণ রাসেল রফিক মোল্লার বিশ্বাস অর্জন করতে পেরেছে।
সবাই কথা বলছে আর মন দিয়ে কাজ করতেছে,
দেখে রফিক মোল্লা পিছন থেকে বলে।
রফিক মোল্লা:-কিরে সব পিশাচের দল,
কাজ করছিস তো এতো কথা কেনো হুম মন দিয়ে কাজ কর,
সিরাজ:-চাচা বৃষ্টি পরতেছে তাও আপনে খেতে আসলেন তাও আবার ছাতা ছাড়াই,
রফিক মোল্লা:-হ আমি ছাতা নিয়ে আসি আর ছাতা টা বৃষ্টি তে ভিজে নষ্ট হয়ে যাক,
আমার তো আক্কেল জ্ঞান নেই।
সবাই মনে ভাবে হাইরে শালা কিপটে রে,
নিজে ভিজে যাচ্ছে তবু ছাতা নষ্ট হবার ভয়ে ব্যবহার করবেনা।
রফিক মোল্লা:-আচ্ছা সবাই মন দিয়ে ভালো করে কাজ কর, এমনিতেই রাসেল নেই কাজ কম হবেনি,
বলেই রফিক মোল্লা খেতে থেকে অন্য কোথাও চলে যায়,
শাওন:-দেখছিস আমি বলছিনা কিছু বলবেনা,
আর এই যদি রাসেল না হয়ে আমাদের মাঝে কেউ হতাম তাহলে শালার বুইড়া কামলার দাম দিতো না।
তানভীর:-হুম ভাই যা বলেছিস,
আমার কি মনে হয় যানস,
শাওন:-তোর তো মনে অনেক কিছুই হয়,এখন আবার কি মনে হলো আল্লাহ ভালো জানে,
তাও বল শুনি তোর মনে এখন আবার কি কথা আসলো।
তানভীর:-আমার মনে হয় রাসেল শিক্ষিত,
তা না হলে ও কাগজপত্র কি করে বুঝবে আর দেখস মাঝে মাঝে কোথায় যেনো চলে যায়, গ্রামে থাকেনা।
শাওন:-হুম এটা ফেলে দেওয়ার মতোও কথা বলস নাই,আর ও যখন এই কথাটা আমাদের বলতে চাইনা সুতরাং এই বেপারে ওকে জোর করা আমাদের ঠিক না,
তবে ও বউ কে বিসিএস বানাইতাছেনা,
ওর কপালে অনেক কষ্ট আছে তোরা আমার কথা মিলিয়ে নিস।
তানভীর:-ভাই এইসব বাদ দে রাসেল শুনলে অনেক কষ্ট পাবে কারণ, জেরিন কে ও অনেক বেশি বিশ্বাস ও ভালোবাসে।
ওরা এইভাবে আরো অনেক রকমের কথা বলতেছে আর কাজ করতেছে,
তখন রাসেল এসে যায়,
রাসেল:-কিরে সবাই এতো কি কথা বলতাছোস শুনি, আর বুইড়া বেটা আইসা কি বলে গেছে।
শাওন:-আরে তেমন কিছু না,
তোর সাথে ঐ খাট্টাস বেটার দেখা হয়েছিল নাকি যাওয়ার সময়।
রাসেল:-হুম রে দেখা হয়েছিল,
কেনো এখানে এসে আবার কিছু বলছে নাকি।
তানভীর:-আরে বেটা ও তোকে কিছু বলবেনা,
সেইটা তুই ভালো করেই জানিস,
রাসেল:-আচ্ছা তারাতাড়ি কাজ কর,
আর ঘন্টা খানেক কাজ করলেই সময় শেষ হবে,
এইভাবে নানান কথা বলেই কাজ শেষ করে সবাই যার যার বাড়িতে চলে আসে,
রাসেল বাড়িতে এসে দেখে জেরিন আনমনে কিছু একটা ভাবতাছে, রাসেল যে বাড়িতে এসেছে সেই দিকে তার কোনো খেয়ালি নেই।
রাসেল:-এই জেরিন কি এতো ভাবতেছো শুনি,
আমি সেই কখন থেকে দেখতেছি তুমি কি যেনো চিন্তা করতেছো।
জেরিন:-ভাবতাছি আমার তো কিছু দিন পরে ঢাকায় যায় তে হবে পরীক্ষা দিতে।
রাসেল:-হুম যাবে তো কি হয়েছে,
এটা নিয়ে এতো ভাবার কি আছে বলো।
জেরিন:-ভাবার কিছু নেই মানে,
আমার কি ভালো কোনো কাপড় আছে বলো,
যা পরে আমি পরীক্ষা দিতে যাবো,
ঐখানে কতা নামি দামি লোক থাকবে মন খারাপ করে।
রাসেল:-ওহহহ এটা তো আমি ভেবে দেখিনি,
আসলেই তো জেরিন ঠিক কথায় বলেছে, তার তো কোনো ভালো ড্রেস নেই,
আচ্ছা তুমি চিন্তা করো না আমি তোমার পরীক্ষার আগে ঠিকই নতুন ড্রেস এনে দেবো।
জেরিন:- সত্যি বলছো,
খুশিতে দৌড়ে এসে রাসেল কে জড়িয়ে ধরে,
রাসেলের খুব ভালো লাগছে,
রাসেল:-ইশ এইভাবে যদি মন থেকে জড়িয়ে ধরতো তাহলে কতই না ভালো হতো,
এখন তো খুশিতে আত্মহারা হয় জড়িয়ে ধরেছে।
জেরিন বুঝতে পারে সে খুশিতে আত্মহারা হয়ে রাসেল কে জড়িয়ে ধরেছে,
তাই লজ্জা পেয়ে দৌড়ে রুমে চলে যায়।
রুমে গিয়ে মনে মনে,,,,,,,,,,
চলবে……..