#রাখালের_বউ_যখন_বিসিএস_ক্যাডার,পর্ব-৬,৭
লেখক:-রাসেল (কালো ভূত)
পর্ব-৬
কালো মুখ টা পূর্ণিমার রাতের মতো উজ্জ্বল হয়ে ওঠে কেননা উপরের অংশে রাসেলের রোলটাই ছিলো,খুসিতে আত্মহারা রাসেল,এটা ভেবে যে অবশেষে জেরিনের স্বামী হয়ে ওঠার প্রথম ধাপ অর্জন করেছে,রাসেল কাগজ টা হাতে নিয়েই উপরের কথাগুলো ভাবতাছে ঠিক তখনি জেরিন রুমে আসে,আর দেখতে পাই রাসেল তার ঐ কাগজ টা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে কি যেনো করতেছে,
জেরিন:-এই তুই আমার এই কাগজ নিয়ে কি করস, তোর কি ক্ষমতা হবে নাকি ঐ কাগজে কি লেখা আছে সেটা পড়ার,
রাসেল:-এ বিসিএস ক্যাডার হয়েছে বলে মানুষ কে আর মানুষ বলেই গণ্য করবেনা,নিজেকে এ কি মনে করে সবচেয়ে বেশি শিক্ষিত নাকি,
আরে আমি কি সেইটা যদি তুমি জানতে তাহলে আমাকে অবহেলার মাধ্যমে দাতের উপরে না রেখে মাথায় করে রাখতে, মনে মনে,
আসলে আমি এসে দেখি এই কাগজ টা এইখানে রাখা তাই আমি একটু হাতে নিয়ে বুঝতে চেষ্টা করতেছিলাম একটা কি,
জেরিন:-তা কিছু কি বুঝতে পেরেছিস নাকি,
অনেক তো মনোযোগ দিয়েই খুজতেছিলি আমি দেখলাম
রাসেল:-অনেকটা সময় ধরে খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ে আমি এটা বুঝতে পেরেছি যে এই কাগজ টা সাদা কাগজ না কিছু একটা তো লেখা আছেই, কিন্তু কি লেখা আছে সেইটা তো আমার মাথার উপর দিয়েই গেছে,
এই কথা শুনে জেরিন তো হাসতে হাসতে শেষ,
বলে কি কাগজ টা সাদা না তাতে নাকি কিছু লেখা আছে,
জেরিন:-হাহাহা এই গাধা এই কাগজটা যে সাদা না কিছু লেখা আছে সেটা তো সবাই জানে, কিন্তু পড়তে না পারলে দেখে কি লাভ,সেইটা আমাকে আগে বল।
রাসেল:-তা ঠিক তুমি একটু বলে দিবা এই কাগজে কি লেখা আমার খুব জানতে ইচ্ছে করতেছে,
জেরিন:-আমি তো আজকে খুসি তাই জা তোর সাথি রাগান্বিত হয়ে কথা বলবোনা,
এই কাগজে লেখা আছে, যারা যারা বিসিএস এ টিকেছে তাদের রোল আরো অনেক কিছু,
রাসেল:-ওহহহহ আমি এই সামান্য জিনিস টাই বুঝতে পারলাম না, কি মূর্খ আমি তাইনা, ঐতুমি কি আমাকে একটু পড়াশোনা শিখিবা,
জেরিন:- হ খাইয়া তো আমার কোনো কাম নাই তোর মতো মূর্খ কে পড়িয়ে আমার মাথার বারোটা বাজায়,আমি বলেদিমু, ধ আর বলে ফেলবি দ,,,
রাসেল:-না আমি অনেক সুন্দর করে পড়বো,
আর তোমার মুখের দিকে চেয়ে থাকবো,
জেরিন:-তুই যদি আমার মুখের দিকেই চেয়ে থাকোস তাহলে পড়বি কি ভাবে সেটা একটু শুনি,
রাসেল:-আমি অমনি পড়বো,
তুমি জানোনা আমি অনেক মেধাবী একটা মূর্খ ছেলে,
জেরিন:-হাহাহা এই তুই চুপ কর তোর কথা শুনে আমার শুধু হাসি পাই,
মানুষ আবার মূর্খ মেধাবী কিভাবে হয়,
রাসেল তো জেরিনের হাসি দেখে এক ধ্যানে চেয়ে আছে,এই হাসি দেখেই কাটানো যাবে হাজার বছর, কবিরা অনায়াসে লেখে ফেলবে কবিতা,
জেরিন যে কিছু একটা বলতেছে সেইদিকে কোনো খেয়াল নেই রাসেলের,জেরিন তখন তুরি বাজিয়ে বলে
জেরিন:-ঐ তুই এইভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো কি দেখোস শুনি, আর শোন এইভাবে আমার দিকে তাকিবানা এক দম জেলে ভরে দিবো,
রাসেল:-জেলে কেনো আমি আবার কি করলাম,
আমি তো শুধু পরীর মুখের হাসিটা দেখতেছিলাম,
কিছু তো করিনি,
জেরিন রাসেলের কথায় একটু লজ্জা পেয়ে যায়,
আর রাসেল কে রান্না করার জন্য বলে চলে যায়,
রাসেল:-এই এক আজব ক্যারেক্টার মাইরি, তার মনে কখন কি চলে বোঝা বড় দায়,এই হাসি মাখা চাঁন মুখ আবার এই রাগি মুখ, ধ্যাত কিছু ভালো লাগেনা,বলেই চলে যায়,এইভাবে কিছু দিন কেটে যায়, বিসিএস এর সব কার্য শেষ হয়ে যায় এখন শুধু জয়েন করতে হবে,একদিন রাতে,
জেরিন:-আগামীকাল তো আমি চলে যাবো,
আমাকে সরকার থেকে কোয়াটার দিছে, সেখানেই থাকবো, আর আমি অনেক ভেবে চিন্তা করে দেখছি তোর সাথে আমার মেলে না,
তাই আমি কিছু দিন পরে ডিভোর্স লেটার দিবো তুই সাইন করে নিস,
ডিভোর্সের কথা শুনে রাসেলের হাসি মাখা মুখটা নিমিষেই কালো হয়ে যায়,
রাসেল:-কি বলছো এইসব,আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না, আমাকে তোমার সাথে নিয়ে চলো, স্বামী হিসাবে না রাখলেও কাজের লোক হিসাবে রেখে দিয়ো,(কান্না ভরা কণ্ঠে)
জেরিন:-তুই কেনো বুঝিস না তোর সাথে থাকলে আমি তোকে ভুলতে পারবো না, আবার মানতেও পারবো না,মনে মনে, আচ্ছা যা নিয়ে যাবো যেহেতু তুই আমার স্বপ্ন পূরণ করতে অনেক কষ্ট করেছিস,
তাই তোর জন্য এইটুকু করাটা আমার কর্তব্য।
রাসেল এইবার মহা খুসি কেননা তার প্রিয় মানুষ টার মুখ সব সময় কাছ থেকে দেখতে পারবে,
এতেই ওর অনেক পাওয়া,দুজনেই ঘুমিয়ে যায়,
সকালে ঘুম থেকে উঠে রাসেল গ্রামের সকলকেই বলে বিদাই নিয়ে আসে, অনেকেই কান্না করেছিলো, কারণ রাসেল কে তার নিজের ছেলের মতো ভালোবাসতো,
শাওন:-ভাই দেখ ভাবি তোকে কখনো মেনে নিবেনা, সেটা বুঝেও কেনো তার সাথে যাচ্ছিস,
রাসেল:-দেখ ভাই আমরা জানি এই রাস্তায় রাতে একা চললে ভুত এসে ভয় দেখাই,তাই বলে কি আমরা চলাচল বন্ধ করি,
তানভীর:-ভাই ঐটা কিন্তু একনা,
ভাবি এখানেই তোকে কতো কষ্ট দিছে,আর সেখানে নিয়ে কি করবে আল্লাহ জানে,
রাসেল:-ভাইরে জেরিন কে আমি আমার আদর্শ বউ বানিয়ে এই গ্রামে একসাথে আসবো,
তোরা দেখে নিস,
শাওন:-দোয়া করি আল্লাহ যেনো তোর মনে আশা পূরণ করে,আর দেখেশুনে সাবধানে থাকিস,
মাঝে ফোন করে একটু খবর নিস,
তারপর রাসেল তাদের থেকে বিদাই নিয়ে বাড়িতে চলে আসে, বাড়িতে এসেই দেখতে পাই জেরিন রাগে ফায়ার হয়ে আছে।
জেরিন:-এই তুই সেই কখন গেছিস আর এখন আসার সময় হলো, এখন রান্না করবি কখন আর খেয়ে দেয়ে যাবি কখন,
রাসেল:-আর বলিও না গ্রামের সবাই ছাড়তেই চাইছিলো না,সবাই বেশি আদর করতো তো তাইএকটু দেরি হয়ে গেলো,
জেরিন:-তো থেকে জা না গ্রামের এই মূর্খ মানুষদের সাথে,আমার সাথে যেতে কেনো চাচ্ছিস,
রাসেল:-শোনো জেরিন তোমার যত যা বলার ইচ্ছা হয় আমাকে বলো আমি কিছু মনে করবো না,
কিন্তু আমার এই গ্রামের সহজ সরল মানুষদের সম্পর্কে কিছু বলবে না,ভূলে যেয়োনা তুমিও কিন্তু এই গ্রামেরি একটা অংশ,
জেরিন:-এখন এতো কথা না বলে তারাতাড়ি গিয়ে রান্না টা করে ফেল, না হলে না খেয়েই যেতে হবে,
তখন কিন্তু আমার মেজাজ আরো গরম হয়ে যাবেনি,
রাসেল আর কিছু না বলে চলে যায়, অনেক টা সময় পরে রান্না হয়ে যায়, দুইজনে খেয়ে,রেডি হয়ে বাস স্টান্ডে চলে আসে,দুটি টিকিট কেটে বাসে উঠে বসে পরে, জেরিন জানালার ধারে বসেছে আর রাসেল তার পাশেই,বাস চলতে শুরু করে,রাসেলের খুব ভালো লাগতাছে জেরিনের পাশে বসতে পেরে,জেরিন ঘুমিয়ে যায়,বাতাসে তুল গুলো উরে রাসেলের মুখে এসে পরছিলো,
ইশ এ যেনো এক মাতাল করা সুভাষ,রাসেল জেরিনের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে,খুব সুন্দর লাগছে তাকে,কালো টিপটায় যেনো জেরিনের সৌন্দর্য আরো হাজার গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে,জেরিন ঘুমের ঘোরে রাসেলের কাধে মাথে রাখে,রাসেল আলতো করে চুল গুলো ঠিক করে দেই,
রাসেল:-ইশশশ কতোটা সুন্দর লাখছে, মনে হয় কিছু যানে না,সারাজিবন যদি এইভাবে থাকতো কতটা খুসি হতাম,
এইভাবে অনেক সময় পার হয়ে যায়,আর হঠাৎ জেরিনের ঘুম ভেঙে যায়,আর দেখতে পাই সে রাসেলের কাধে শুয়ে আছে,ভালোই লাগতাছে,
তাই সেভাবেই থাকে,কিন্তু রাসেল কে বুঝতে দেইনা জেরিন জাগ্রত হয়েছে,কিছু সময় পরে বাস দশ মিনিটের জন্য থেমে যায় খাবার খাওয়ার জন্য,
রাসেল:-জেরিন এই জেরিন শুনতেছো,
উঠে পরো কিছু খেয়ে নিবে,
জেরিন:-হুম আর একটু ঘুমাই না,
এমন করছো কেনো,
#সবাইকে জানাই নতুন বছরের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন,
হ্যাপী নিউ ইয়ার ২০২২???
রাসেল:-আরে ঘুমিও পরে আগে ওঠো কিছু খেয়ে নিবে বাস এখানে দশমিনিট থামবে,
তারপর দুইজনে নেমে কিছু খেয়ে নেই,
নিজের মতো করে,তারপর আবার বাসে এসে বসে পরে, বাস আবার একটু পরে ছেড়ে দেই,
কিছু সময় পরে ঢাকায় পৌঁছে যায়,
বাস থেকে নেমে একটা অটো নিয়ে সোজা বাসাই চলে আসে,বলে রাখা ভালো চাবি আগে থেকেই জেরিনের কাছে ছিলো,
রাসেল:-বাবারে বাবা এতো বড় আর সুন্দর বাড়ি আমি তো এর আগে কখনো দেখিনাই,
তবে এমন বাড়ি কিন্তু আমি সিনেমায় দেখেছি,
জেরিন:-দেখবি কি করে, তুই তো একটা মূর্খ গেয়ো ভূত, যদি লেখাপড়া করতি তাহলে আমার মতো হতে পারতি বুজলি,চল জিনিস পত্র নিয়ে ভিতরে,
রাসেল:-হাহাহা মিস রাসেল মাহমুদ জেরিন তুমি তো আর জানো না তোমার স্বামী কি জিনিস,
জানলে আর এটা বলতে না,মনে মনে,
জেরিন:-ঐ তোকে কি কোলে করে ভিতরে নিয়ে আসতে হবে নাকি, তখন থেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি ভাবছিস,
রাসেল আর কোনো কথা না বলে সোজা জিনিস পত্রগুলো নিয়ে ভিতরে চলে আসে,ভিতরে এনে সব কিছু ঘুছিয়ে রাখে,
বাইরের তুলনায় ভিতর টা আরো বেশি সুন্দর,
রাসেল ধিরে ধিরে ছাদে চলে যায়, ছাদে সুন্দর সুন্দর ফুল গাছ দিয়ে সাজানো খুব সুন্দর লাগতাছে, যদি কারো মন খারাপ থাকে তাহলে এইখানে এসে সময় কাটালে অবশ্যই মন ভালো হয়ে যাবে,এইসব ভাবতাছে রাসেল,ঠিক তখনই পিছন থেকে,জেরিন বলে ওঠে,
জেরিন:-এই তুই এইখানে কি করিস হুম,
আর শোন এসেছিস তো কি আর করা, কিন্তু ভুলেও একটা ফুলের গাছে যেনো হাত না দিস,
ফুলগুলো গাছেই সভা পায়,
রাসেল:-আচ্ছা ধরবো না,
আমি তো শুধু ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম, আসলেই তুমি না থাকলে হয় আমি এমন সুন্দর সুন্দর বাড়ি টা দেখতেই পারতাম না,
জেরিন:-আমাকে হেড কোয়াটার থেকে ফোন করে বলল, আমার থেকে উপর পদে নাকি একজন আছে,আর সে নাকি আমাদের সিরাজগঞ্জ জেলার, নামটা কি যেনো বলল মনে নাই,
রাসেল:-ওহহহ আচ্ছা এটা তো ভালো খবর,
একই জেলার দুই জন বিসিএস ক্যাডার,
এটা ভালো না বলো,
জেরিন:-হুম ভালোই তো,এখন চল নিচে গিয়ে সব কিছু ঘুছিয়ে রাখ সব কিছু পরিষ্কার করে।
আমি বরং গিয়ে একটু ঘুমায় খুব মাথা ব্যাথা করতেছে,
রাসেল:-আচ্ছা তুমি গিয়ে ঘুমিয়ে পরো আমি সব কাজ করতেছি,
উমমম নিজের ঘুম পায় আর আমার শরীর মনে লোহা দিয়ে বানানো, অর্ডার করে কাজ করার জন্য, আমি যে তার স্যার সেটা ভাবেও না,
ভাগ্য গুণে একটা বউ পাইছিলাম মাইরি, যে কিনা আমাকে গুণতির বাইরে রাখে তার লেভেলের,
উপরের কথাগুলো ভাবছে আর জেরিনের বলা কাজ গুলো করতে থাকে,
অনেক টা সময় কাজ করে রাসেল ক্লান্ত হয়ে যায়,
তাই ছোফায় গিয়ে রেস্ট নিতে থাকে,
আর ঠিক তখনই কলিং বেল বেজে ওঠে আর রাসেল গিয়ে দরজা খুলে দেই,
আর দরজা খুলতেই অবাক হয়ে যায় কেননা দরজার ঐ পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো,,,,,,,,,
চলবে…..
#রাখালের_বউ_যখন_বিসিএস_ক্যাডার
লেখক:-রাসেল (কালো ভূত)
______৭পর্ব______
?
?
কেননা দরজার ঐ পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো একটা পুলিশ,আর সে রাসেল কে সব কিছু বুঝিয়ে দিয়ে আবার চলে যায়,কারণ রাসেল তো চাইনা জেরিন কিছু বুঝতে পারুক,এই পুলিশ টা রাসেলের কাছেই এসেছিলো,
রাসেল আর জেরিন দুই থানায় পরে,
তার জন্য জেরিন সহজে বুঝতে পারবেনা রাসেলের সম্পর্কে,
জেরিন:-কিরে কলিং বেলের শব্দ শুনতে পারলাম,
তাহলে এখন সে কোথায় গেলো,নাকি তুই তাড়িয়ে দিয়েছিস খারাপ ব্যবহার করে,
রাসেল:-না তেমন না পাশের বাসার একজন এসে আমাদের সম্পর্কে কিছু জিগ্গেস করলো,
আপনে তো ঘুমিয়েছিলেন তাই আর আপনাকে ডাকিনি,
জেরিন:-ওহহহ তাই বল,
ভালো করেছিস, আর আমাকে এখন একটু বের হতে হবে, তুই রান্না করে রেখে দিস আমি এসে খেয়ে নিবো,
রাসেল:-আচ্ছা ঠিক আছে তুমি যাও আমি সব রেডি করে রাখবো,
সাবধানে যাবে কিন্তু যেখানেই যাও,
জেরিন:-সেই কথা তোকে চিন্তা করতে হবে না,
আমি আমাকে নিয়ে ভাবতে পারি বুঝেছিস গেয়ো ভূত,
বলেই জেরিন চলে যায় আর রাসেল বুক ভরা কষ্ট নিয়ে কাজ করতে থাকে, আর ভাবে,
রাসেল:-জেরিন তুমি আমার সাথে যেমন করতেছো,যদি এর একফোটা ব্যবহার আমি তোমার সাথে করতাম হয়তো কবেই এই দুনিয়ার মায়া ছেড়ে যাবার কথা চিন্তা করতে,কেনো বোঝনা আমি তো একটা রক্তে মাংসে গড়া মানুষ আমার ও তো কষ্ট হয়,আমার মন তো আর আথর না যে কষ্ট হবে না,
এভাবেই কেটে যায় অনেক গুলো দিন,
একদিন সকালে রাসেল আর জেরিন খাবার খাইতাছে,তখনই জেরিন বলে
জেরিন:-শোন আমি এখন অফিসে যাচ্ছি,
ফিরবো বিকেলে অনেক কাজ আছে,তুই বরং এই টাকা নিয়ে বাজার জা জা লাগে করে আনিস কেমন,
রাসেল:-আচ্ছা ঠিক আছে,
জেরিন আমি তো তোমার সাথে কোনদিন খারাপ ব্যবহার করিনা,তাহলে তুমি কেনো আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করো,একটু তুমি করেতো অন্তত বলতে পারো,
জেরিন:-তোর সাথে ভালো ব্যবহার করতে আমার বয়েই গেছে,আর বাকি রইল তুমি করে বলা,
তোর যদি আমার ব্যবহার ভালো না লাগে তাহলে এখান থেকে চলে যেতে পারস কোনো আফসোস নেই,কারণ আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে,
আমি এখন বেঁচে থাকার জন্য যা প্রয়োজন সব একাই করতে পারবো,
রাসেল:- সত্যি আমি যদি তোমার জীবন থেকে চলে যায় তাহলে খুব কি খুসি হবে,
জেরিন:-হা হা আমি অনেক অনেক খুসি হবো,
আর শোন আমি ডিভোর্সের আবেদন করেছি,
উকিল সাহেব বলেছে মাস দুই সময় লাগবে তার পরেই তুই তোর রাস্তায় আর আমি আমার রাস্তায়,
বলেই জেরিন হন হন করে চলে যায়,আজকে কেনো জানি রাসেলের অনেক বেশি কষ্টহচ্ছে আগের থেকে, কেনো জানি মনে জেরিনকারো মায়ায় জড়িয়ে পরতেছে,চোখের পানি মুছে বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়,তখনই রাসেলের ফোনে একটা কল আসে,কলটা হেডকোয়ার্টার থেকে অফিসার আদিল করে,তাই রিসিভ করে,
রাসেল:- আসসালামুয়ালাইকুম স্যার কেমন আছেন,,?
আদিল:- ওয়ালাইকুমাসালাম,রাসেল সাহেব আমি ভালো আছি,আর আপনে যেই ভাবে বলেছেন,
আমি সেই ভাবে সব ব্যবস্থা করেছি,আপনাকে কেউ সহজে চিনতে পারবেনা,
রাসেল:- ধন্যবাদ আপনে ভালো করেছেন,
আমার সম্পর্কে তো আপনাকে সবটাই খুলে বলেছি,আমি আশা করি আপনার সম্পূর্ণ সাপোর্ট আমি পাবো,
আদিল:-আরে সেইটা নিয়ে চিন্তা করবেন না আমি,আছিতো আপনার সাথে,আপনাকে কেউ খুজতে পারবেনা,আর হা একটা কথা,একটা
সন্ত্রাসী চক্রের খবর পাওয়া গেছে
আমাদেরএইদিকে, যেইটার দায়িত্ব পরেছে পুলিশ
অফিসার জেরিনের উপরে,আমি চাই এইটাতে আপনেও একটু কাজ করেন ছদ্মবেশী হিসাবে,
রাসেল:-কি বলেন জেরিনের উপরে এই কেসের দায়িত্ব পরেছে, তাহলে এই সন্ত্রাসী চক্র তো অনেক ভয়ংকর,,আমি কাজ করবো সমস্যা নেই,কোনো চিন্তা করবেন না,
আদিল:- ধন্যবাদ,
আর যতো খবর বা সাহায্য লাগে আমাকে জানাবেন আমি যতটা পারি সাহায্য করার চেষ্টা করবো, যদি আপনেই সব করতে পারবেন,
রাসেল:-স্যার আপনে কোনো চিন্তাই করিয়েন না আপনে শুধু ঐ সন্ত্রাসীদের লিডার কে তার কিছু তথ্য দিয়েন,
আদিল:-ওকে আমি সব তথ্য যোগাড় করে আপনাকে পাঠিয়ে দিবো, আপনে ও কোনো চিন্তা করবেন না,
তারপর আরো কিছু কথা বলে রাসেল ফোন কেটে দিয়ে, আবার ও সামনের দিকে হাটা শুরু করে,
ওহ আপনারা তো আবার ভাবতাছেন রাসেলের কাছে ফোন আসলো কি করে, আসলে কাজের জন্য আদিল সাহেব একটা ফোন দিয়েছে,
কারণ তো আপনারা শুনতেই পারলেন উপরে,
হঠাৎ রাসেলের সামনে একটা গাড়ি এসে দাঁড়িয়ে যায়,রাসেল তো একটু ভয় পেয়ে যায়,কেননা এইভাবে আচমকা সামনে গাড়ি দাঁড় করালে ভয় পাওয়াটা কিন্তু সাভাবিক,কিন্তু গাড়ি থেকে যে বেরিয়ে আসে আসে তাকে দেখেই রাসেলের ভয় দূরে পালিয়ে যায়,কেননা সে হলো রায়হান চৌধুরী যাকে রাসেল বাঁচিয়েছিলো,
রায়হান:-কি বেপার রাসেল কেমন আছো,
জানো তোমাকে আমি অনেক খুজেঁছি কিন্তু একটা দিনও কোথাও পাইনি,আজকে পেয়েছি,
রাসেল:-এইতো ভালো আছি, আপনে কেমন আছেন, আর আমাকে পাবেন কি করে আমি তো গ্রামে থাকি, এইখানে প্রায় সাত মাস হলো এসেছি,
কিন্তু আপনার ঠিকানা বা ফোন নাম্বার কোনটাই আমার কাছে নেই তার জন্যই যোগাযোগ করতে পারিনি,
রায়হান:-কি বলো তুমি সাত মাস হলো আমার শহরে আছো আর আমি খুজেই পায়না,
এটা কিন্তু কাঁধের উপরে গামছা রেখে আশেপাশে খোঁজার মতো হয় খেলো তাইনা,
রাসেল:-হাহাহা একদম ঠিক বলেছেন,
তা আপনে এইদিকে কোথায় যায়তাছেন শুনি,
রায়হান:-আমি অফিসে যাচ্ছি,
হটাৎ তোমাকে দেখে ফলো করতে শুরু করি, কিন্তু তুমি ফোনে কথা বলছিলে দেখে ডাকিনি,এখন চলো আমার সাথে বাসাই যাবে,তোমার আন্টি তোমার জন্য অনেক চিন্তা করে,
রাসেল:-আমি তো বাজার করতে এসেছি,
এখন কি ভাবে যাবো বলেন,তারছে বরং আপনে ঠিকানা আর ফোন নাম্বার টা দিন আমি আগামীকাল ঘুরে আসবো আপনার বাসা থেকে কেমন,
রায়হান:-এই কথাটা অবশ্য খারাপ বলোনাই,
কারণ তুমি তো একটা কাজে যাচ্ছই,আর কাজের সময়ে বিরক্ত করাটা আমারও উচিৎ না,
তারপর রাসেল রায়হান সাহেবের সাথে আরো কিছু কথা বলে,বাজার করে বাসাই চলে আসে,
বাসাই এসে দেখতে পায় জেরিন ছোফায় বসে এক মনে ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে কি যেনো করতেছে,
রাসেল:-তুমি না বললে আজকে আসতে নাকি তোমার দেরি হবে, তাহলে এমন সময়ে যে বাসাই,
শরীর খারাপ নাকি,
রাসেলের কথায় জেরেন সামনে তাকিয়ে দেখতে পারে রাসেল উপরের কথাগুলো বলেছে,
জেরিন:-ঐ তোর বাজার করতে কতো ঘন্টা সময় লাগে হুম, নাকি বাইরে গিয়ে কাজ ফাকি দিতে পারস তার জন্য ঘুরে বেরাস কোনটা,
রাসেল:-না আমি বাজারেই তো গেছিলাম,
আর এমনিতেই বাজার টা ভালোই দূরে আর রাস্তায় বের হলেই শুধু জ্যাম আর জ্যাম,
জেরিন:-যা আর এখন গিয়ে বাজার গুলো গুছিয়ে রাখ, তা না করে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমার কথা শুনতেছিস,
রাসেল:-দেখছেন কি ফাজিল মেয়ে, সে নিজেই আমাকে দাঁড়া করিয়ে এতো গুলা কথা শোনাচ্ছে আর এখন কি বলে দেখছেন তো,
একে বলে জোর যার মুল্লুক তার,মনে মনে,
জেরিন:-এই এই তুই ভির ভির করে কি বলতাছোস হুম, মনে হয় আমাকে গালাগালি করতেছোস তাইনা, এইসব বললাম বলে,
রাসেল:-আরে না আমি কি তোমার নামে কোনো কিছু বলতে পারি বলো,তুমি হাজার হলেও আমার বিসিএস দজ্জাল বউ বলে কথা,
বলেই দৌড়,,
জেরিন:-এই এই কি বললি ধারা ধারা,
আমাকে দজ্জাল বলিস তাইনা, ফাজিল একটা,
রাসেল:-যাক বাবা জোর বাচা বেচে গেছি,
যদি ওখানে থাকতাম তাহলে আমার আস্ত রাখতো না, লবণ মরিচ ছাড়ায় আমাকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতো,
এইভাবে অনেক সময় পার হয় যায় তবুও জেরিন সেইভাবে ছোফায় বসে কাজ করতেই আছে,
খাবার খাওয়ার কথা যেনো তার মনেই নেই,
রাসেল:-আচ্ছা জেরিন তুমি তখন থেকে কি সব করতেছো বলতো, আমি কিছুই বুজিনা,
আর ঐ জিনিসটাই বা কি যা দিয়ে এইভাবে কাজ করতেছো,
জেরিন:-আরে গাধা এটা হলো ল্যাপটপ,
আর আমাকে উপর থেকে একটা কাজ দিছে সন্ত্রাসী চক্রকে ধরার জন্য, সেটা নিয়েই নানান ধরনের কাজ করতেছি,
রাসেল:-ওআচ্ছা বুঝতে পেরেছি,কাজ অনেক করেছো,এখন চলো হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেস হয় খাবার খাবে,দরকার হলে কাজ পরে করবে,আগে খাওয়া পরে কাজ,মনে রাখবে পেট শান্তি তো পুরো দুনিয়া শান্তি, ল্যাপটপ টা হাত থেকে রেখে দিয়ে বললাম,
রাসেলের এই কান্ড কেনো জানি জেরিনের অনেকটাই ভালো লাগলো,
তাই কিছু বলতে পারলো না,সে জানে না কেনো ভালো লাগলো,তারপর জেরিন গিয়ে ফ্রেস হয়ে,
এসে খাবার খেয়ে নেয়,সাথে রাসেল ও খেয়ে নেয়,
পরে আবার ও জেরিন কাজ করতে থাকে আর রাসেল বসে বসে দেখছে আর এটা সেটা বলে জেরিন কে বিরক্ত করতেছে,যার কারণে জেরিন অনেক টাকা বিরক্ত ও হচ্ছে আবার খুসি হচ্ছে,
এভাবেই আজকের দিনটা পার হয়ে যায়,
সকালে খাবার খাওয়ার সময়,
রাসেল:-জেরিন তুমি তো অফিসে যাবে আমি একা একা বাসাই বসে কি করবো তাই বলছিআম কি আমি কোথাও ঘুরে আসি,
জেরিন:-আচ্ছা যাস তবে তুই তো এই সহরের তেমন কিছু চেনস না তাই আবার হারিয়ে যেনো না যাস,
রাসেল:-হারিয়ে গেলে তাই কি হুম,
আর যদিও হারিয়ে যায় তাহলে তো আমার পুলিশ বউ আছেই ঠিকই খুজে বের করবে,
জেরিন:-হ আমার তো খাইয়া কাম নাই তোকে খুজতে যাবো, আমার এমনিতেই হাতে কতো কাজ,আচ্ছা তুই থাক আমি অফিসে গেলাম ড্রাইভার বসে আছে,
রাসেল:-আচ্ছা যাও সাবধানে থেকো আর দুপুরে খাবার নিয়ে কি আমি অফিসে চলে আসমু নাকি,
জেরিন:-না সেই ভুল টা মনের ভুলেও করবিনা,
এমনিতেই আমার মানসম্মান কিছুই নেই আর তুই খাবার নিয়ে আসলে তো আরো থাকবে না,
রাসেল:-আচ্ছা তুমি যেটা ভালো মনে করো সেটাই হবে,আর দুপুরে খাবার খেয়ে নিয়ো তুমিতো আবার খাবার আমি না বললে খেতে ও চাও না ঠিক মতো,
জেরিন রাসেলের শাসনের সুরে কথা গুলো শুনেই বের হয়ে যায় অফিসের উদ্দেশ্যে,এইদিকে রাসেল সব কাজ শেষ করে মোবাইল বের করে আদিলের দেওয়া তথ্য গুলো দেখে নেয়, সন্ত্রাসী লিডারের নাম হলো ডিজে কবির সবাই নাকি ওকে ডিজে বলেই চেনে,তারপর সবকিই দেখে রাসেল বাসা থেকে বেরিয়ে হাটতে হাটতে সেখানে চলে আসে যেখানে সন্ত্রাসীদের আড্ডা করতে হামেসাই দেখা গেছে, কিন্তু রাসেল এসে কিছু জানতে না পেরে আবার চলে যায়,তাই রাসেল ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিলো সে এখন রায়হান সাহেবের বাড়িতে যাবে,আর সেই উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে পরে,কিছু সময় পরে পৌঁছে ও যায়,এইদিকে মিসেস রহিমা চৌধুরী ছোফায় বসে পত্রিকা পড়তেছিলো,আর রায়হান চৌধুরী বসে কি যেনো করতেছে,তখনি রাসেল এসে দরজার কলিং বেল টা বেজে ওঠে,
রহিমা:-এখন আবার কে এলো,
নিধি মামুনি গিয়ে একটু দেখতো কে এলো,
আমি তো পত্রিকা পড়তেছি,
নিধি:-ঠিক আছে বড়ো আম্মু তুমি থাকো আমি এখনি যাচ্ছি,
ওহ আপনাদের তো বলাই হয়নি নিধি টা কে,
নিধি হলো রায়হান চৌধুরীর ভাই ডাক্তার সবুজের একমাত্র মেয়ে,এইবার ডাক্তারি পড়তেছে,
খুবই মিষ্টি দেখতে,এবং ব্যবহার টাও মিষ্টি,
তার মাঝে একটুও জ্বালের ছিটাফোঁটা ও নেই বললেই চলে,নিধি গিয়ে দরজা খুলেই থায় দাঁড়িয়ে থাকে রাসেল কে দেখে,আর রাসেল তো নিধি কে ঐ অবস্থায় ফেলে ভিতরে চলে আসে,আর রহিম আর রায়হান সাহেব রাসেল কে দেখতে পেয়ে খুব খুশি হয়,রহিমা চৌধুরী এসেই রাসেল কে দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে,রাসেল তো অবাক হয়ে যায়,
এইভাবে জড়িয়ে ধরার কারণে,নিধি এখনো সেই আগের মতোই দরজায় দাঁড়িয়ে আছে,আর ঠিক তখনই বাইরে থেকে,,,,,,,
চলবে…..