রাখালের_বউ_যখন_বিসিএস_ক্যাডার,১২পর্ব,১৩

0
654

#রাখালের_বউ_যখন_বিসিএস_ক্যাডার,১২পর্ব,১৩
লেখক:-রাসেল (কালো ভূত)
১২পর্ব

জেরিন গিয়ে দরজা খুলতেই অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে,কেননা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে শাওন,

শাওন:- আসসালামুয়ালাইকুম ভাবি কেমন আছেন,

জেরিন:- ওয়ালাইকুমাসালাম,ভাইয়া আমি ভালো আছি আপনে কেমন আছেন,আর আপনে ঢাকায় কবে আসলেন,

শাওন:-আলহামদুলিল্লাহ আমিও আল্লাহ রহমতে অনেক ভালো আছি,আর আমি আপনার ভাবি কে নিয়ে ঢাকায় এসেছি ডাক্তার দেখাতে,

রাসেল দরজার কাছেই দেখতে পায় ওর বন্ধু শাওন জেরিনের সাথে কথা বলতাছে,

রাসেল:-দোস্ত কেমন আছিস,
আর কবে আসলি,

শাওন:-ভালো আছি,আর বলিস না তোর ভাবি অসুস্থ আমাদের ঐখানে অনেক ডাক্তার দেখাইছি কিন্তু কোনো কাজই হয়না, তাই এইখানে ডাক্তার সবুজের কাছে এসেছি,

রাসেল:-তা ভাবি কোথায় তাকে তো দেখছিনা,
অনেকটাই অবাক হয়ে,

শাওন:-আর বলিস না দোস্ত হাসপাতালে এসে পরেছি ইয়া বড় এক লম্বা সিরিয়ালে,আর তোদের বাসার ঠিকানা তো আমাকে বলেছিলি, তাই
হাসপাতালে তোর ভাবি কে রেখে আমি আসলাম তোদের সাথে একটু দেখা করতে,

জেরিন:-ওহহহহ আচ্ছা ভাইয়া আপনে আগে ভিতরে আসেন বসে তার পর সব কথা বলবেন কেমন,

রাসেল:-দেখছেননি আপনেরা কি মেয়ে এটা আমার সাথে কতো খারাপ আচরণ করে অথচ আমার বন্ধুদের সাথে কত ভালো ব্যবহার করতেছে,আসলেই এইমেয়ের মনে কখন কি চলে সেটা বোঝা বড় দায়,

শাওন:-না ভাবি আমি এসেছিলাম দেখা করতে,আর দেখাতো হলই আর ওখানে আপনার ভাবি আবার চিন্তা করবে,

জেরিন:-ভাইয়া আপনে আমাদের বাসাই এসেছেন আর আমি আপনাকে না খেয়ে যেতে দিবো এটা কিভাবে হয়,

অনেক জোড়াজুরি করার পরে শাওন ভিতরে এসে খাবার খেয়ে নেই,

রাসেল:-আচ্ছা দোস্ত গ্রামের সবাই কেমন আছে,

শাওন:-সবাই অনেক ভালো আছে,সবাই শুধু তোর কথা অনেক বলে,একবার গিয়ে একটু ঘুরে আসলেই তো পারিস,

রাসেল:-যাবো কিছুদিন পরে,
তোর ভাবি কে সাথে নিয়ে ঘুরে আসবো,

শাওন জেরিনের কথা বলার ধরন দেখে রাসেল কে কানে কানে বলে,

শাওন:-আচ্ছা দোস্ত ভাবি এতো ভালো ব্যবহার করতেছে,তাহলে কি তোর সাথে সব ঠিক হয়েছে নাকি,

রাসেল:-সেই কপাল কি আমার আছে বল,তবে আগের থেকে এখন একটু ভালো ব্যবহার করে,

জেরিন:-এই তোমরা কি ফুসুর ফুসুর করতেছো,
শুনি

রাসেল:-না তো কিছু বলছিনা,
একটু এমনি কথা বললাম,আচ্ছা জেরিন আমি শাওন কে একটু আগাই দিয়ে আসি,

জেরিন:-হুম যাও আর শোনো ভাবির জন্য খাবার নিয়ে যাইও কেমন,

শাওন:-ভাবি এটার কি দরকার বলেন এমনি অনেক করলেন আমার জন্য,

জেরিন:-ভাই আমরা আপনাদের উপকারে আসতে পারলেই নিজেদেরকে ধন্য মনে করবো,

তারপর আরো অনেক কথা বলে শাওন ও রাসেল খাবার নিয়ে বেরিয়ে যায় হাসপাতালের উদ্দেশ্যে,
একটা রিক্সা নিয়ে,

শাওন:-রাসেল ভাবি পুলিশ হয়ে কি তোর সাথে খারাপ ব্যবহার করে,

রাসেল:-হুম আগে অনেক খারাপ ব্যবহার করতো কিন্তু কিছু দিন হলো তেমন খারাপ ব্যবহার
করেনা,কিন্তু আমি আগের মতো আর ওর পিছনে থাকি না, কি লাভ মিথ্যে মায়া বাড়িয়ে,

শাওন:-সেটাও ঠিক বলেছিস,তবে আমার মনে হয় ভাবি এখন আগের থেকে অনেক টাই পাল্টে গেছে,তা না হলে এতো ভালো ব্যবহার করতো না,

রাসেল:-এইসব কথা বাদ দে আর নাম হাসপাতালে চলে এসেছি,

তারপর দুই বন্ধু রিক্সা থেকে নেমে ভাড়া মিটিয়ে হাসপাতালের ভিতরে চলে যায়,

রাসেল:-ভাবি কেমন আছেন,

ঐশী:-কেমন থাকি বলেন ভাই,
এই রোগবালাই নিয়ে বেঁচে আচি কোনো রকম,
তা আপনে ভাবি কেমন আছেন,

রাসেল:-হুম ভালো,
আর চিন্তা করবেন না সব ঠিক হয়ে যাবে শুধু আল্লাহর উপরে ভরসা রাখুন,আর কয়েকজন পরে সিরিয়াল,

ঐশী:-আরো নাকি বিশ জন আছে,
অনেক করে বললাম আমরা দূরে থেকে এসেছি আমাদের একটু আগে দেখতে কিন্তু কেউ আমার কথা শুনলো না,

রাসেল:- দাঁড়ান আমি দেখছি কি করা যায়,
আপনে এখানে বসেন আর শাওন আমার সাথে আই,

শাওন:-কোথায় যাবো এখন আবার,
অনেকটাই অবাক হয়ে,

রাসেল:-আমার পিছে পিছে আই তারপর দেখ কোথায় যায়,

তারপর রাসেল সোজা সবুজের রুমে ডুকে পরে,
কেউ বাধা দিলোনা কারণ সবাই তো ওকে চেনেই,

সবুজ:-কিরে রাসেল তুই এখানে,আর হটাৎ কি মনে করে আসলি সেটা কি জানতে পারি,

রাসেল:-চাচ্চু আমি কিন্তু বাবা কে বলে তোমার ডাক্তারি বন্ধ করে দিবো,

সবুজ:-কেনো আমি আবার কি করলাম সেটা আগে বল,

এইদিকে এদের কথা শুনে শাওন কিছুই বুঝতে পারছে না সব যেনো মাথার উপর দিয়েই যাচ্ছে,

রাসেল:-আমার বন্ধু গ্রাম থেকে তার স্ত্রী কে নিয়ে এসেছে তুমি এখনো তাকে বাইরে রেখেছো কোন সাহসে,

সবুজ:-বাবা দেখ সব কিছুই তো নিয়মকানুন মেনেই করতে হবে তাইনা,

রাসেল:-আমি এতো নিয়মকানুন মানতে পারবো না,তুমি এখন ভাবি কে দেখবে শেষ কথা,

সবুজ:-না দেখে কি কোনো উপায় আছে নাকি তুই কি আর আমার কথা শুনবি নাকি,

তারপর শাওনের স্ত্রী কে দেখে সব পরিক্ষা নিরিক্ষার কাজ শেষ করে,তেমন কোনো সমস্যা নেই ওষুধ খেলেই ঠিক হয়ে যাবে,

শাওন:-আচ্ছা দোস্ত ডাক্তার সাহেব কে তুই কিভাবে চিনলি সেটা তো বুঝতে পারছিনা,

রাসেল:-আরে ইয়ার তোকে তো বলতেই ভুলে গেছি,আমি আমার বাবা মা কে পেয়েছি,
আর ডাক্তার হলো আমার চাচা,

শাওন:-কি বলিস এইসব অনেকটাই অবাক হয়,

রাসেল তারপর সব কিছু খুলে বলে,
যেটা শুনে শাওন অনেকটাই খুশি হয়,যে রাসেলের কষ্ট একটু হলেও কমবে,

শাওন:-দোস্ত ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস তাইনা,
দেশের নামকরা বিজনেস ম্যানের একমাত্র ছেলে হয়ে ও তাকে মানুষ হতে হয়েছে রাখালের ঘরে এতিম হয়ে,

রাসেল:-হুম দোস্ত কিন্তু এটা তুই কাউকে বলিস না জেরিন এখনো এই কথাটা জানেনা,আমি জানাতে চাইনা,

এরপর আরো অনেক কথা বলে শাওনরা চলে যায় আর রাসেল বাইরে কিছু কাজ করে বাসাই চলে আসে,আর বাসাই এসেই রাসেল তো অবাক কেননা জেরিন রান্না করতেছে,

রাসেল:-বারে এ আবার রান্না করতে শিখলো কবে থেকে শেটা তো বুঝলাম না,দেখি একটু রহস্য টা শুনে আসি,

রাসেল ধিরে ধিরে রান্না ঘরের দিকে আসতে থাকে,
আর খাবারের গন্ধে ততই মুগ্ধ হচ্ছে,

রাসেল:-খুব সুন্দর গন্ধ আসতাছে মনে হয় খাবার খুব টেস্ট হবে,আহ বউ আমার মনে হয় পাক্কা রাধূঁনি হয়েছে,কি বেপার ম্যাডাম পুলিশ আজকে রান্না ঘরে,

জেরিন:-ওহহহ তুমি,আমি একটু রান্না করতেছি তোমার তো অনেক কষ্ট হয় রান্না করতে,তাই ভাবলাব আজকের রান্না টা আমি করি,

রাসেল:-কেয়া বাত হে, আজকে রান্না করতেছো তো কাজের মেয়ে মনে হবে না তোমাকে বলো,

জেরিন:-কাজের লোক মনে হবে কেনো হুম,
আমি তো তোমার বউ আর বউদের সংসারের কাজ করতেই হবে,এটাইতো আমাদের সমাজের নিয়ম,

রাসেল:-আরে বা আজকে তুমি সব নিয়ম বুঝতে পারলে,তাহলে আগে সব কি উল্টো নিয়ম ছিলো নাকি সেটা একটু বলো দেখি,

জেরিন:-এইসব কথা বাদ দিয়ে বলো ভাবির কি অবস্থা দেখলে,আর তারা কি চলে গেছে নাকি,

রাসেল:-না তেমন কিছু হয়নি সামান্য একটু সমস্যা যা ওষুধ লিখে দিছে খেলেই ঠিক হয়ে যাবে,আর ওরা চলে গেছে,

এইভাবে তাদের দুইজনের মাঝে আরো অনেক কথা হয়,রাসেল রুমে চলে আসে ফ্রেস হওয়ার জন্য,রাসেল ওয়াশরুমে আছে তখনই ওর ফোনে নিধির কল আসে যা জেরিনের চোখ এড়াই না,
জেরিন ফোনটা রিসিভ করে,

জেরিন:-হ্যালো কে বলছেন,
নিধি:-আমি নিধি বলছি,আপনে কে আর রাসেলের ফোন আপনার কাছে কি জন্য,

জেরিন:-জামাইয়ের ফোন বউয়ের কাছে থাকবে না তো কোথায় থাকবে শুনি একটু,আজব ধরনের কথা বলে আপনে,

নিধি:-কিহহহ বউ মানে কিসের বউ আপনে মিথ্যা বলতাছেন,রাসেলের তো কোনো বিয়েই হয়নি,
আপনে প্লিজ মজা করিয়েন না,

তখনই ওয়াশরুম থেকে রাসেল বেরিয়ে এসে জেরিনের হাত থেকে ফোনটা নিয়ে কল কেটে দিয়েই ঠাসসসস ঠাসসসস করে দুইটা থাপ্পড় লাগিয়ে দেয়,

রাসেল:-তোর সাহস কি করে হয় আমার ফোন রিসিভ করার,আর নিজের স্বামীর কাছে স্বামীর অধিকার দিতে লজ্জা করে তোর,তাহলে অন্যের কাছে যে আমার বউ বলে পরিচয় দিচ্ছিস লজ্জা করছেনা,তোর মানসম্মানে বেজে আছসে না রাখাল কে নিজের স্বামী বলে দাবি করতে,

জেরিনের চোখে পানি,রাসেল তো সব ঠিকই বলেছে এইসব কথাই রাসেল কে জেরিন বলতো এখন তো তাকে এইসব শুনতেই হবে,

জেরিন:-দেখো তুমি আমাকে মারো কাটো জা খুসি করো আমি কোনো প্রতিবাদ করবো না,শুধু তোমার পায়ের নিচে আমাকে একটু স্থান দাও
এটাই আমার কাছে বড় পাওয়া হবে,নিধি তোমাকে কেনো ফোন দিবে বলো,

রাসেল:-বোন তো ভাইয়ের সাথে কথা বলতেই পারে এটা কি অসাভাবিক কিছু নাকি,আজব তো,

জেরিন:-শোনো যদি ভাই বোনের সম্পর্কের মতো কথা শুনে মনে হতো তাহলে আমি কিছুই বলতাম না,নিধির কথার ধরন শুনেই বোঝা যায় ও তোমাকে ভালোবাসে,আমার থেকে তোমাকে কেড়ে নিতে চাই,প্লিজ আমাকে ছেড়ে চলে যেয়োনা আমি বাঁচতে পারবো না,(কেদে কেদে)

রাসেল:-ও আমাকে ভালোবাসলেই তাই তোর কি হুম,তুই তো নিজের মুখেই বলেছিস আমি তোর স্বামী হওয়ার যোগ্য না,কিন্তু নিধি আমাকে ওর যোগ্য মনে করে,কখনো রাখাল মনে করেনা,

জেরিন:-শোন তুই যদি ঐ মেয়ের সাথে মেলামেশা করি তাহলে একেবারে খুন করে ফেলবো এই আমি বলে দিলাম,আগে তোকে খুন করবো তারপর তোমার বুকে মাথা রেখে হাসতে হাসতে নিজের জীবনটা দিয়ে দিবো,

জেরিন কেদেঁ কেদেঁ রাসেলের কলার ধরে উপরের কথাগুলো বললো,

রাসেল:-হাহাহা হাহাহা আমার জন্য তুই তোর মূল্যবান জীবন দিবি হাসালিরে,তোর সাথে কথা বলাই বৃথা, হট তেরি,

রাসেল কথাটা বলেই বাইরে চলে যায়,আর জেরিন বসে বসে কান্না করেই যাচ্ছে,আজ যেনো তার চোখের পানি কো বাধা মানছেই না,সবকিছু তার ভুলের জন্যই সহ্য করতে হচ্ছে,এটা যে তার ভাগ্যের লিখন মেনে নিতেই হবে,

জেরিন:-তুমি যতই আমাকে কষ্ট দাওনা কেনো এই জীবন থাকতে আমি তোমাকে ছাড়বো না,পরের জনমেও আমার জীবন সঙ্গী হিসাবে বিধাতার কাছে তোমাকেই চাইবো,

রাসেল রাস্তা দিয়ে হাটতে হাটতে নিরিবিলি একটা জায়গায় এসে গাছের নিছে টুপ করে বসে পরে,
আকাশের দিকে তাকিয়ে আনমোনা হয়ে ভাবছে কিছু সময় আগে ঘটে যাওয়া ঘটনা,কি করবে সে কিছুই বুঝতে পারেনা,এক দিকে জেরিন একদিকে নিধি,এইসব ভাবছে হটাৎ রাসেলের চোখ আটকে যায় সামনের দিকে,ডিজের লোক ফোনে বলতাছে আজকে নাকি ডিজে আসবে,রাসেল ও ঐ
লোকটার পিছনে পিছনে চলে যায় ফলো করতে করতে,এক সময় লোকটা সেই বাড়িতে ডুকে পরে,কিছু সময় পরে ডিজে অনেক গুলো গাড়ি নিয়ে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে,রাসেল ছদ্মবেশে পুলিশ আসতে বলে,কিছু সময়ের মধ্যেই পুরো বাড়ি ঘিরে ফেলে,এক সময় ডিজের লোকের সাথে পুলিশের যুদ্ধ হয়,যাতে ডিজের অনেক লোক মারা যায় আর কিছু পুলিশ ও আহত হয়,তবুও রাসেলের মিশন সম্পূর্ণ হয়,ডিজেকে ধরে পুলিশ কে দিয়ে থানায় পাঠিয়ে দিয়ে সেও বাসাই চলে আসে,জেরিন দরজার সামনে বাইরের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,মনে হচ্ছে রাসেলের জন্য অপেক্ষা করতেছে,

রাসেল:-কি বেপার ম্যাডাম এখনো এখানে দাঁড়িয়ে আছেন যে,

জেরিন:-তোমার জন্য অপেক্ষা করতেছিলাম,
যাও গিয়ে হাত মুখ ধুয়ে আসো আমি খাবার রেডি করতেছি,

রাসেল কিছু না বলেই ওয়াশরুমে চলে যায় ফ্রেস হতে আর তখনই জেরিনের ফোনে একটা কল আসে,আর কলটা রিসিভ করার পরে ঐ পাশ থেকে যা বলে সেটা শুনে জেরিন তো অনেক টাই অবাক হয়ে যায় কেননা,,,,,,,

চলবে…….

#রাখালের_বউ_যখন_বিসিএস_ক্যাডার
লেখক:-রাসেল (কালো ভূত)
______১৩পর্ব______
?
?
ঐ পাশ থেকে যা বলে সেটা শুনে জেরিন তো অনেক টাই অবাক হয়ে যায়,কেননা ডিজে কে ধরার খবর টাই জেরিন শুনতে পায়,কিন্তু যেই অফিসার ধরেছে তাকে নাকি এখনো কেউ দেখতে পারেনি,এইদিকে রাসেল চলে আসে,

রাসেল:-কি বেপার এতো খুসি খুসি লাগার কারণটা কি আমি একটু জানতে পারি,

জেরিন:-তুমি শুনেছো আমাকে যেই সন্ত্রাসী ডিজে কে ধরার আদেশ দিছিল তাকে ঐ থানার এক অফিসার ধরেছে,সারা মিডিয়া জগতে তরপার শুরু হয়ে গেছে,

রাসেল:-হাহাহা সেই কথা শুনেই এতো খুসি আর যদি জানতে সেই মানুষ টাই আমি,তাহলে তো মাটিতে পা পযর্ন্ত রাখতে না,মনে মনে,
তাই তো বলি এতো খুসি হবার কারণ কি,আচ্ছা সেই অফিসার টা মনে হয় অনেক সাহসী তাইনা,

জেরিন:-সেটা তো মানতেই হবে কারণ যাকে এতো বছর হলো কেউ ধরতে পারছে না আর ঐ অফিসার ধরেছে,সাহস না থাকলে কি আর সম্ভব হতো নাকি, কিন্তু আফসোস ঐ অফিসার কে আজ পযর্ন্ত কেউ দেখতে পাইনি জানিনা কেনো,
তবে আমি শুনেছি ঐ অফিসারের বাড়ি ও আমাদের সিরাজগঞ্জ জেলাতেই,

রাসেল:-ওরে বাবা,
এটাতো খুব ভালো খবর,এক জেলায় নামকরা দুইজন পুলিশ তাও আবার বিসিএস ক্যাডার,

রাসেল বিসিএস বলার কারণে জেরিন একটু অবাক হয়ে যায়,আর রাসেল কে উদ্দেশ্যে করে বলে,

জেরিন:-আচ্ছা আমি তো একটি বারের জন্য বলিনি সেই অফিসার বিসিএস ক্যাডার,তাহলে তুমি কিভাবে জানলে সে বিসিএস ক্যাডার,

রাসেল:-এইরে কিথেকে কি বলেফেললাম এখন বুঝি ধরা পরতেই হয়,মনে মনে,
আরে তুমি এইসব কি বলো হুম,যাকে নিয়ে মিডিয়া জগতে ঝড় হচ্ছে তার সম্পর্কে এইটা জানা কি বড় বেপার নাকি,

জেরিন:-সেটাও তো কথা,
জানো ঐ অফিসারের নাম রাসেল মাহমুদ,
ইশশশশশ যদি আজ তুমি সেই অফিসার হতে তাহলে আমার মনের সকল আশা পূর্ণ হতো,

রাসেল:-হাহাহা নাম এক হলেই কি মানুষ এক হয় নাকি হুম,আর একটা রাখাল কে নিয়ে এই স্বপ্ন দেখা আর পেঁপে গাছ দিয়ে ফার্ণিচার বানানো একই কথা,

জেরিন:-হয়ছে হয়ছে এতো কথায় কথায় যুক্তি দেখাতে হবে না,আসো খেতে বসো,

তারপর রাসেল এসে খেতে বসে,
খুব আদরের সাথেই জেরিন খাবার গুলো পরিবেশন করছে রাসেলের প্লেটে,রাসেলের ও ভালোই লাগছে জেরিন তাকে আজ আপন ভাবতে শুরু করেছে,খাবারের টেস্ট টা কেমন সেটা বলা মুশকিল কিন্তু খাবারের গন্ধ টা অস্থির,রাসেল খুসি খুসি মনে খাবার মুখে দিয়েই মুখ আড় নাড়াই না,
এতো পরিমাণ লবণ আর মরিচ দিয়েছে যে কান দিয়ে ধোয়া বের হচ্ছে,

রাসেল:-ঐ এটা তুই কি রান্না করেছিস,
আমার তো কান দিয়ে ধোয়া বের হচ্ছে,

জেরিন:-কি বলো আমি কতো ভালোবাসা দিয়ে তোমার জন্য কষ্ট করে খাবার বানিয়েছি,যদিও রান্না ভালো করতে পারিনা,

রাসেল:-চুপ তোর খাবার তুই খা,
আমি বরং নিধির কাছে গিয়ে খাবার খেয়ে আসি,
অনেক সুন্দর করে রান্না করতে পারে নিধি,

নিধির কথা শুনেই জেরিনর মনটা ছোট হয়ে যায়,
শুধু নিধি কেনো এই পৃথিবীর সকল মেয়েই তার আপনজনের মুখে কোনো মেয়ের কথা শুনলে এমন করে,

জেরিন:-তুমি ঐ মেয়ের কাছে যাবেনা তোমার পায়েপরি প্লিজ,আমি তোমাকে ছাড়া একটা মূহুর্ত ভাবতে পারিনা,যেইটা আগে কখনো অনুভব করতে পারিনি,(কেদে কেদে)

রাসেল রাগ সামলাতে না পেরে ঠাসস ঠাসসস করে থাপ্পড় লাগিয়ে দেয়,

রাসেল:-তোর সাহস কি করে হয় আমার শরীর স্পর্শ করার হুম,আর হঠাৎ করেই এখন এতো ভালোবাসা কোথা থেকে আসলো,তোর গর্বের সন্তান যে আমার সেটা আমি কেনো বিশ্বাস করবো,নাইট ক্লাবে কি করেছিস তোর মনে নেই,

জেরিন:-এটা তুমি বলতে পারলে নিজের সন্তান কে নিয়ে,আর তুমি জানোই আমি নেশার ঘোরে ছিলাম,তুমি না থাকলে আমার সর্বনাশ হতো যার হাত থেকে তুমি আমাকে রক্ষা করেছো,

রাসেল:-শোন তুই আমার বউ সেটা ভেবে তোকে বাঁচাইনি,আমি নারী জাতিকে কে সম্মান করি,তাহলে চোখের সামনে একটা নারীর ইজ্জত নষ্ট হতে কি করে দিতাম,তুই বাধে অন্য কেউ থাকলে আমি এটাই করতাম,

জেরিন:-তুমি তো অন্য কারো জন্য সেখানে যাওনি আমাকে খোঁজার জন্যই গিয়েছিলে,আর আমার সাথে যা করেছো তাতে আমি হয়তো নেশার ঘোরে ছিলাম কিন্তু তুমি তো আর নেশার ঘোরে ছিলেনা তাহলে কেনো বলছো এইসব,যেই সন্তানেরআকৃতি পযর্ন্ত এখনো হয়নি তার নামে এমন কথা বলবে না প্লিজ,তোমার যতো ইচ্ছে আমাকে মারো কাটো যা খুসি করো তবুও আমাদের সন্তান কে নিয়ে মিথ্যা অপবাদ দিবেনা,হতে পারি আমি তোমার কাছে খারাপ কিন্তু আমার এই নিষ্পাপ শিশু তো আর খারাপ না,ও তো তোমারি রক্ত,(কেদে কেদে)

রাসেল:-তোর সাথে কথা বলে আমার সময় টুকুই নষ্ট,যা ভাগ এখান থেকে,

বলেই রাসেল হনহন করে ওর বাড়িতে মায়ের কাছে চলে আসে,এইদিকে জেরিন সেখানে বসেই কেদেঁ যাচ্ছে,কি করবে সে রাসেল কে আপন করে পেতে,

রহিমা:-কিরে বাবা মন খারাপ কেনো কি হয়েছে তোর,

মায়ের মন সন্তানের চেহারা দেখেই সব বুঝে যায়,
রাসেল গিয়ে ওর মায়ের কোলে শুয়ে পরে,আর সকল ঘটনা খুলে বলে,রুমে আর কেউ নেই,

রহিমা:-কি বলিস এতো কিছু হয়ে গেছে অথচ আমি এর কিছুই জানিনা,

রাসেল:-মা আমি তোমাকে বলিনি এইসব যদি আমার কর্মকাণ্ডের কথা শুনে রাগ করো তাই,

রহিমা:-দেখ বাবা বলিকি তুই জেরিন কে মেনে নে,
তুই জিবনে অনেক কষ্ট সহ্য করেছিস আমি চাইনা আরো কষ্ট তোর জীবনে আসুক,আর আমি আমার বউমা কে আমার বাড়িতে নিয়ে আসবো,

তখনই দরজার কাছ থেকে রাসেলের বাবা বলে ওঠে,

রায়হান:-কে কার বউমা কিছুই তো বুঝলাম না,একটু বুঝিয়ে বলো তো,

রহিমা:-তোমার কিছু বুঝতে হবে না আমরা মা ছেলে বুঝলেই হলো বুঝেছো,

রায়হান:-কি আর করা ছেলে কে পেয়েছো এখন এই সংসারে তোমার জোর টাই বেশি,আমি আবার কোথাকার কি মন খারাপ করে,

রাসেল:-বাবা তুমিও না একটু ও বোঝনা আসো এখানে বসো,

রহিমা:-তুমি যানো রাসেল বিবাহিত,

রায়হান:-কি বলো এইসব রাসেল বিয়ে করেছে আর আমি সেটা জানি না,

রহিমা:-আমাদের সাথে পরিচয় হবার আগে থেকেই রাসেল বিবাহিত,আর আমার বউমা টা কে জানো,

রায়হান:-তুমি যদি না বলো তাহলে আমি জানবো কি করে হুম,

রহিমা:-আমাদের পুলিশ ম্যাডাম জেরিন রাসেলের বউ,যেটা আমি জেনেছি নিধির মামা বাড়িতে,

রায়হান:-কি এতো সুন্দর একটা বউমা থাকা সত্বেও আমি এখনো শশুর হওয়ার মজাটাই পেলাম না,

রাসেল:-উমমম আমি স্বামী হয়ে ও এখন পযর্ন্ত স্বামীর মর্যাদা পেলাম না আর তুমি পোরে আছো শশুরের মর্যাদা নিয়ে,আর বাবা আমি কিন্তু চাইনা জেরিন জানুক আমি তোমাদের হারিয়ে যাওয়া সন্তান,

রায়হান:-কেনরে,
আর এটা শুনলে তো জেরিন অনেক খুশি হবে আর তোখে রাখাল বলবে না,

রাসেল:-বাবা আমি চাই ও আমাকে রাখাল হিসেবেই ভালোবাসুক কোনো ধনী ছেলে ভেবে না,

রহিমা:-আচ্ছা ঠিক আছে তবে এটা বল আমার বউমা কে এইখানে কবে আনবি সেটা বল,

এইদিকে রাসেলের সকল কথা দরজার আড়াল থেকে নিধি সব শুনতে পায়, কান্নায় ভেঙে পরে,
জীবনে এই প্রথম কাউকে সে ভালোবেসেছে আর সেটাও অন্য কারো মনের মানুষ কে,

রাসেল:-আচ্ছা আমি একদিন নিয়ে আসবো তবে তোমরা কিন্তু কিছুই বলবে না,ও শুধু জানে তোমরা আমাকে ছেলে বানিয়েছো,

রায়হান:-আচ্ছা বাবা ঠিক আছে,
আর শোন আমি অফিস করতে পারবো না তোর জিনিস তুই সব বুজে নে,আমি রেস্ট নিতে চাই,

রাসেল:-বাবা তোমার জিনাস তুমি রাখো আমার জিনিস শুধু তুমি আর মা বুঝলে,

রহিমা চৌধুরীর চোখে পানি ছেলের এমন কথা শুনে, সত্যি এমন কথা কোনো ছেলেই আজকাল বলে না,কারণ সবাই অর্থের পূজারী,আর বাবা মাকে বানিয়ে দেয় বৃদ্ধাশ্রমের যাত্রী,
রহিমা চৌধুরী রাসেল কে জড়িয়ে ধরে কান্না কলে দেয়,

রাসেল:-মা এখন তাহলে আমি আসি আমাকে এক জায়গায় জেতে হবে,

রহিমা:-আচ্ছা বাবা দেখে শুনে যাস আর বউমার খেয়াল রাখিস তাকে যেনো কোনো কষ্ট দিসনা,তাহলে তোর খবর আছে এই আমি বলে দিলুম,

রাসেল:-বউমার প্রতি কতো দরত আর ছেলের প্রতি একটু দরত নেই হুম,

রহিমা:-বাবা শোন জেরিন হলো অন্য বাড়ির মেয়ে আমরা যদি ওকে ভরসা না দেই তাহলে ও কাকে ভরসা করবে বল,জানিস বাবা একটা মেয়ে বিয়ে করে যখন স্বামীর ঘরে আসে তখন সবচেয়ে ভরসার মানুষ হয় তার স্বামী আর শশুর শাশুড়ি,
আর স্বামী, শশুর শাশুড়ি যদি ভালো না হয় তাহলে তার মতো দুখি নারী এই পৃথিবীতে হয় না,

রাসেল আর কিছু না বলেই চলে আসে সোজা ওর স্যারের (অনিক)কাছে,

রাসেল:- আসসালামুয়ালাইকুম স্যার কেমন আছেন,

অনিক:- ওয়ালাইকুমাসালাম আরে রাসেল সাহেব যে,আমি ভালো আছি,আপনে কেমন আছে,

রাসেল:- আলহামদুলিল্লাহ স্যার আপনাদের দোয়া আর আল্লাহ রহমতে অনেক ভালো আছি,

অনিক:-যেই কাজ এতো বছর হলো কেউ করতে পারেনি সেটা আপনে করেছেন,এর জন্য সরকার আপনাকে অনেক কিছু উপহার হিসাবে দিবে,

রাসেল:-স্যার আপনে আমাকে সাহায্য করেছেন বলেই আমি কিন্তু কাজটা করতে পেরেছি,

অনিক:-সেটা তো আমার কর্তব্য ছিলো,তা রাসেল সাহেব আপনে এতো বড় পুলিশ অফিসার হয়েও এইভাবে গা ডাকা দিয়ে আছেন কি জন্য,

রাসেল:-স্যার আপনার এই প্রশ্নের উত্তর আমি পরে দিবো,আজকে তাহলে আসি স্যার আসসালামুয়ালাইকুম,

রাসেল সোজা বাসাই চলে আসার জন্য রাস্তা দিয়ে হাটতে থাকে,কিছু পথ আসতেই দেখতে পায় একটা ছেলে একটা মহিলার গলা থেকে চেন ছিনতাই করে দৌড়াতে থাকে,আর রাসেল ধরে ফেলে,কথা বার্তা বলার পরে বুঝতে পারে ছেলেটা প্রফেশনাল কোনো ছিনতাইকারী না,বরং মায়ের জন্য ওষুধ কেনার টাকা নেই বলেই এটা করতে বাধ্য হয়েছে,অনেকের থেকে টাকা চেয়েছে কেউ দেয়নি,রাসেল তাই ঐ ছেলে কে কিছু টাকা হাতে দিয়ে কিছু জিনিস কিনে দেয় যা বিক্রি করে সংসার চালাতে পারবে,রাসেলের এই ঘটনা কেউ একজন দূর থেকে লক্ষ্য করতেছিলো,তার এই ঘটনা দেখে খুব ভালো লাগে আর রাসেলের প্রতি বিশ্বাস টা আরো বেরে যায়,সেই লুকিয়ে থাকা ব্যক্তি টা হলো,,,,,,,,,

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here