#Mr_Husband,এক্সট্রা_পার্ট
#লেখিকা: আবনী ইবনাত মুন
নামি দামি হোটের একটি রুমে রাত আর তার নিউ গার্লফ্রেন্ড বসে আছে। দুজনের হাতেই ওয়াইনের গ্লাস। মেয়েটি এক চুমুকে ওয়াইন টুকু শেষ করে রাতের কোলে উঠে বসলো। রাত নেশাক্ত চোখে মেয়েটির চোখের দিকে তাকিয়ে টোল পরা গালে হেসে দিলো। মেয়েটি রাতের গলা জড়িয়ে ধরে ওর গালে টোলে ডিপলি একটা কিস দিলো। রাত মেয়েটার ঠোঁটের দিকে উদ্বোদ্ধ হতেই মেয়েটির কথা শুকে থমকে গেলো। চোখ বড় বড় করে মেয়েটির দিকে তাকালো। মুহূর্তেই সব নেশা কেটে গেলো। মেয়েটি বলল,
—“রাত আমি পাপাকে তোমার কথা বলেছি যে, আমি তোমাকে ভালোবাসি আর বিয়ে করতে চাই। পাপা তোমার সাথে দেখা করতে চেয়েছে আমাদের বিয়ের কথা বলার জন্য।”
রাত সটান করে উঠে দাঁড়ালো। সাথে সাথে রাতের কোলে বসে থাকা মেয়েটি নাচে পরে গেল। আর আর্তনাদ করে উঠলো,
—“আহ্!”
রাত বলল,
—“আমি একটু ওয়াসরুম থেকে আসছি।”
বলেই রাত ওয়াসরুমে ঢুকে গেলো। মেয়েটাকে কিছু বলার সুযোগ ও দিলো না। মেয়েটি রাতের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো অবাক হয়ে। রাত ওয়াসরুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দরজার সাথে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে হাপাতে হাপাতে লাগলো আর জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলো। কি ভয়ংকর শব্দ ‘বিয়ে’। শুনতেই কানটা ‘ঝা ঝা’ করে উঠলো। রাত বুঝতে পারে ও খুব ভালো ভাবে ফেসে গেছে। এখন শুধু ‘ও’ কে এক মাত্র মুন’ই বাঁচাতে পারে। যেই ভাবা সেই কাজ। রাত পকেট থেকে ফোন বের করে মুনকে কল করলো। দু’বার রিং হতেই রিসিভ হলো। রাত বিচলিত হয়ে বলল,
—“হ্যালো মুন?”
—“হ্যালো পাপা! ইট’স মিষ্টি।
ওপাশ থেকে মিষ্টির গলার আওয়াজ শুনে রাতের বিষন্ন মুখে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠলো। কন্ঠ স্বর নরম করে বলল,
—“ওহ! প্রিন্সেস, আমা প্রিন্সেসটা কি করছে?”
মিষ্টি মন খারাপ করে গাল ফুলিয়ে বলল,
—“পাপাকে মিস করছে।”
—“পাপা ও মিস করছে মিষ্টিকে।”
—“আজ মাম্মার কন্টেস্টের রেজাল্ট দিবে। পাপা তুমি কখন আসবে?”
রাত জ্বিবে কামড় দেয়। একেবারে ভুলেই গেছিলো। রাত জিজ্ঞেস করলো,
—“মিষ্টির মাম্মাম কোথায়?”
—“মাম্মাম একটা আঙ্কেলর সাথে দাঁড়িয়ে কথা বলছে।”
—“প্রন্সেস তোমার মাম্মামকে ফোনটা দেও তো।”
মিষ্টি গিয়ে ফোনটা মিষ্টিকে দিয়ে বলল,
—“মাম্মাম, পাপা।”
মুন ফোন নিয়ে সাইডে চলে গেলো। তারপর বলল,
—“হ্যাঁ, রাত বলো? একটু পরেই তো অ্যানাউন্সমেন্টশুরু হবে। এখনো আসছো না কেনো? মিষ্টিও অপেক্ষা করছে তোমার জন্য।””
রাত অসহায় কন্ঠে বলল,
—“মুন আমি এখানে ফেসে গেছি।”
মুন অপ্রস্তুত হয়ে বলল,
—“মানে?”
—“মানে, আমি খুব খারাপ ভাবে ফেসে গেছি।”
মুন অবাক হয়ে বলল,
—“কোথায় কি ভাবে?”
রাত একে একে সব খুলে বলল মুনকে। মুন সব শুনে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাওয়ার অবস্থা। কোনো মতে হাসি থামিয়ে বলল,
—“একদম ঠিক হয়েছে। যেমন কর্ম তেমন ফল।”
রাত অসহায় মুখ করে বলল,
—“হেসো না তো। অনেক টেনশনে আছি। তাড়াতাড়ি এখানে চলে এসো”
মুন ভ্রু কুঁচকে বলল,
—“কেনো? আমি গিয়ে কি করবো?”
রাত বুক ফুলিয়ে বলল,
—“তুমি আমার বউ তাই তোমাকে এসেই সব করতে হবে।”
মুন একটু রাগ দেখিয়ে বলল,
—“রাত!”
রাত করুন স্বরে বলল,
—“আরে মেরি বাচ্চেকি মা! হাত জোর করছি প্লিজ তাড়াতাড়ি এসো আর আমাকে বাচাঁও। এই মেটার বাপ পুলিশ। তাই তো এতো ভয় নাহলে কোনো চাপই ছিলো না।”
মুন ভাব নিয়ে বলল,
—“আচ্ছা, এতো রিকোয়েস্ট করছো যখন, তখন আসছি।”
রাত গদগদ করে বলল,
—“আমি এ্যাড্রেস ম্যাসেজ করে দিচ্ছি।সি ইউ।”
বলেই রাত ফোন কেটে দিলো। ঊর্মি এসেছে একটু আগেই। মুন মিষ্টিকে ঊর্মির কাছে রেখে রওনা হলো গন্তব্যে। এখনো একঘন্টার মতো লাগবে এ্যাউন্সমেন্ট শুরু করতে। এখনো অনেক ভি.আই.পি গেস্ট আশা বাকি আছে। মুন যেতে যেতে আওড়ালো পাগল একটা। এই ছেলে যেমন এর সাথে রিলেশনে জড়ানো মেয়ে গুলোও তেমন। এদের কাছে রুম ডেট সামান্য একটা বিষয়। এতো বড় বিষয়টাকে এরা তেমন গুরুত্ব দেয় না। মুন কত বুঝিয়েছে রাতকে যে, এরকম না করে ভালো একটা মেয়ে দেখে বিয়ে করে নিলেই তো পারে। কিন্তু রাতের এক উওর যা বরাবরের মতোই শুনে মুনের কান থেকে ধোঁয়া বেরতে থাকে। উওর টা ঠিক এরকম,
—“বিয়ে না করে যেখানে সব পাচ্ছি, সেখানে বিয়ে করে কি করবো? আর বিয়ে ছাড়াই এক মেয়য়ের বাবাও হয়ে গেছি। আমি বোকা নই যে, বিয়ে করে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারবো!”
মুন ভেবে পায় না, এটা কোনো কথা? ভাবতে ভাবতেই মুন রাতের বলা জায়গায় এসে গাড়ি থামালো। তারপর কিছু না ভেবেই হোটেলপর ভিতরে ঢুকে গেল। রাত ১৩৩ নম্বর রুমে গিয়ে জোরো জোরো দরজা নক করতে লাগলো। মুন কিছু না বলেই চড় বসিয়ে দিলো মেয়েটার গালে। মেয়েটা গালে হাত দিয়ে বিষ্ফোরিত চোখে তাকিয়ে রইলো।
#চলবে।