#Mr_Husband,পর্ব_৪০
#লেখিকা: আবনী ইবনাত মুন
মুন আর রাতের মাঝে তুমুল ঝগড়া হচ্ছে। বাচ্চাদের মতো ঝগড়া করছে ওরা দুজন। তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ লাগিয়ে দিয়েছে দু’জনে। আর দুজনের মাঝখানে গালে হাত দিয়ে বসে একবার মুনের দিকে আরেকবার রাতের দিকে তাকাচ্ছে আর ওদের ঝগড়া দেখছে ঊর্মি আর মিষ্টি। মুন আর রাতের মাঝে বর্ডার হয়ে বসে আছে ওরা দুজন। দুজনেই নিরব দর্শক। ঝগড়ার এক পর্যায় মুন রেগে নিজের রুমমে গিয়ে ঠাশ করে দরজা লাগিয়ে দিলো। রাতও গটগট পায়ে হেঁটে নিজের রুমে গিয়ে মুনকে শুনানোর জন্য শব্দ করে দরজা লাগিয়ে দিলো। ওদের দুজনের কাহিনী দেখে ঊর্মি আর মিষ্টি দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো।
কিছুক্ষণ আগের কথা,
মেয়েটা দরজা খুলে কিছু বলতে যাবে তার আগেই মুন মেয়েটির গালে স্বজোরে চড় বসিয়ে দিলো আর মেয়েটা গালে হাত দিয়ে ওর দিকে বিষ্ফোরিত চোখে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। এতোক্ষন এগুলো কল্পনা করছিলো মুন। ভাবতেই মুনের খুশি খুশি লাগলো। হ্যাঁ ও ঠিক এরকমই করবে। এই মেয়ে তো একটা চড় ডিজার্ভ করেই। আগে পিছে কিছু না ভেবে এই ব্রেন লেস বিম্বো টাইপের মেয়েগুলো ছেলেদের বিশ্বাস করে নিজেদের সর্বশ্য দিয়ে বসে থাকে। তারপর যখন ছেলেদের প্রয়োজন ফুরিয়ে যায় আর ছুড়ে ফেলে দেয় তখন এরাদের মনে হয় এরা ভুল করেছে। সেটা হোক বিদেশি অথবা বাংলাদেশি। তারপর আরকি? চোখে মরিচ লাগিয়ে কান্না শুরু। এ ছাড়া এরাদের আর কি বা করার থাকে? নিজের হাতেই তো নিজের সব শেষ করে। মুন এসব ভাবতে ভাবতেই রাতের বলা রুমের দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলো। রাত আগেই খুলে রেখেছিলো দরজাটা। মুন দেখললো রাত শুয়ে আছে আর তার উপরে মেয়েটি শুয়ে আছে। মুন গিয়ে আক্রমণ করলো মেয়েটির উপর মেয়েটিকে রাতের উপর থেকে উঠিয়ে ঠাটিয়ে একটা চড় মারলো। এ দৃশ্য দেখে রাগে মুনের মাথায় দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। এই ক্যারেক্টার লেস কয়েকটা মেয়ের জন্যই পুরো মেয়ে জাতির বদনাম হয়। ছেলেরা ভালোবসে দুটো কথা বললেই সব দিয়ে দিতে হবে? মুনের ইচ্ছে করছিলো আরো কয়টা দিতে। কিন্তু রাতের কথা শুনে থেমে গিয়ে ওর দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালো।
—“মুন তুমি! এখানে?”
বিষ্মিত হয়ে বলল। রাত যেন এখুনি আকাশ থেকে টুপ করে জমিনে পরেছে এমন একটা ভাব করছে। বাহ্! বাহ্! কি সুন্দর অভিনয়। যেন ভাজা মাছটাও উল্টে খেতে জানে না। ইচ্ছে তো করছে চড়িয়ে বত্রিশ পাটি খেলে ফেলতে। কিন্তু করলো না। মুন মেয়েটির দিকে তাকিয়ে দেখে মেয়েটা এখনো বিষ্ফোরিতো চোখে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। মুন কিড়মিড় করে বাংলায় বলল,
—“এই মেয়ে তোমার সাহস কিরে হয় ওর উপর উঠে ঢলাঢলি করার?”
মেয়েটি রাতকে দিকে তাকিয়ে ইংরেজিতে বলল,
—“রাত কে এই মেয়ে? আর আমাকে মারার সাহস হয় কি করে ওর?”
মুন মেকি হেসে মেয়েটাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলল,
—” ‘ও’ কে কি জিজ্ঞেস করছো? আমি বলছি।”
মেয়েটি বলল,
—“হ্যাঁ বলো, কে তুমি?”
—“আমি ওর স্ত্রী।”
মেয়েটি চমকে তাকালো রাতের দিকে। রাত কাচুমাচু করে দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েটা এতটা শক খেয়েছে যে মনে হচ্ছে, ওর শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। মেয়াটা জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলো। তারপর হাপাতে হাপাতে বলল,
—“তোমার বউ আছে?”
রাত চোরা দৃষ্টিতে চাকালো মেয়েটির দিকে। মুন বলল,
—“শুধু বউ না ওর পাঁচ বছরের একটা বাচ্চাও আছে।”
মেয়েটা মনে হয় এবার হার্ট অ্যাটাক’ই করবে। ঊতো শক এক সাথে হয় তো নিতে পারছে না। সে বুকে এক হাত চেপে ধরলো। মুন ভাবলো, এর কি আবার হ্যার্টের সমস্যা টমস্যা আছে নাকি? এমন করছে কেনো? মেয়েটা কাদো কাদো হয়ে বলল,
—“তোমার বাচ্চাও আছে!”
মেয়েটা মুনের দিকে তেড়ে গিয়ে বলল,
—“তুমি আমাদের মধ্যে এসেছো। আমি তোমাকে……..”
আর কিছু বলার সুযোগ গিলো না মুন মেয়েটাকে। দিলো আরেক গালে চড় বসিয়ে। না হলে আবার বিয়ে হবে না। মেয়েটি চড় খেয়ে ঘুরে সে আবার রাতের গলে চড় মারে। রাত গালে হাত দিয়ে ব্যক্কেলের দাঁড়িয়ে রইলো। মেয়েটি রেগে বলল,
—“ইউ চিটার, বাটপার, বিশ্বাস ঘাতক, বেইমান। তুমি আমাকে ঠকিয়েছো। তোমার বউ, বাচ্চা আছে। এ্যা এ্যা।”
—“লিজা আমার কথাটা শুনো। আমি তো……”
রাত বলতে বলতে মেয়েটার দিকে হাত বাড়াতেই মেয়েটা রাতের হাত ধাক্কামেরে সরিয়ে দিয়ে কাদতে কাদতে বলতে লাগলো,
—“ডোন্ট টাচ মি। আমি তোমার মুখও দেখতে চাইনা। আর কখনো আমার সামনে আসলে ড্যাডকে বলে জেলে ঢুকিয়ে দিবো।”
বলেই কাদতে কাদতে মেয়েটি চলে গেলো। রাত যেন হাফ ছেড়ে বাচলো। এরকম কত মেয়ের সাথে যে ওর ব্রেকআপ হয়েছে তার ঠিক নেই।
—“থ্যাংস এ্যাংরি বার্ব। আজ কি এ্যাক্টিং’ই না করেছো তুমি। তোমার তো ফিল্মে থাকা উচিত ছিলো। তা না করে কি ডিজাইনিং নিয়ে পরে আছো। কিন্তু ওক চড় কেনো মারলে? যাক মেরেছো ভালোই করেছো। লিজার মুখটা তখন দেখার মতো ছিলো।”
বলেই শব্দ করে হাসতে হাসতে বেডের ধপ করে শুয়ে পরলো। মুনের প্রচুর রাগ হলো। পাশে সেন্টার টেবিলের উপর একটা ওয়াটার বোতল ছিলো। মুন রেগে ওয়াটার বোতলটা নিয়ে ওটা দিয়েই মারতে শুরু করলো রাতকে। রাত হাসতে হাসতে মুনকে থামানোর চেষ্টা করছে। মুন এক সময় থেমে গেলো। আর রেগে বলল,
—“রাত তুমি এরকম কেনো করো? কেনো ওই মেয়েগুলোর সাথে অন্যায় করো? কেনো ওদের কষ্ট দেও? ওদের সাথে কেনো খেলছো?”
রাত ভাবলেস হীন ভাবে জবাব দিলো,
—“আমার কি দোষ? আমি ওদের কাথে যাই না ওরা নিজেরাই স্বচ্ছায় আমার কাছে আসে।”
মুন কপাল চাপড়ে বলল,
—“তুমি জীবনেও বদলাবে না। আমিই পাগল যে বারবার তোমাকে বোঝাতে আসি।”
রাত টোল পরা গালে হেসে ভ্রু নাচিয়ে বলল,
—“তাহলে স্বীকার করছো…তুমি পাগল?”
মুন দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলল,
—“তোমার সাথে কথা বলাই বেকার। দেরী হয়ে যাচ্ছে চলো। মিষ্টি মনে ও খুজছে। আর এতোক্ষনে এ্যানাউন্সমেন্ট ও করে দিয়েছে হয়তো।”
—“হুম চলো।”
.
রাত আর মুন এসতেই মিষ্টি দৌড়ে গিয়ে রাতের গলা জড়িয়ে ধরলো। রাত মিষ্টিকে কোলে নিতেই মিষ্টি ওর ছোট্ট লাল টকটকে ফুলা ফুলো ঠোঁটে রাতে গালে চুমু খেলো। রাত ও মিষ্টির কপালে ভালোবাসার পরশ এঁকে দিলো। মুন আর ঊর্মি সিটে বসে পরলো। রাত ও মিষ্টিকে কোলে নিয়ে মুনের পাশের সিটে বসে পরলো। একটু আগেই অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। কিছুক্ষণ পর এ্যানাউন্সমেন্ট শুরু করা হলো। এখনি উইনারের নাম এ্যানাউন্স করা হবে। একটা এশিয়ান লোক ইংলিশে এ্যানাউন্স করা শুরো করলো।
—“হ্যালো লেডিস এন্ড জেন্টালম্যান। আমার হাতে আছে এই কন্টেস্টের রেজাল্ট। কে হতে পারে এই প্রতিযোগিতা উইনার? এনি ওয়ান গ্যাজ দ্যাট?”
বসে থাকা সব স্রতারা তাদের পছন্দের বড় বড় ফেমাস ডিজাইনারদের নাম চিল্লাতে লাগলো। মুন এখনো কিছুই না। কেউ ওকে তেমন চেনেও না। তাই রাত, মিষ্টি আর ঊর্মি মুনকে উৎসাহ দিতে ওর নাম বলে চিল্লাতে লাগলো। লোকটা সবাইকে থামিয়ে বলল,
—“এভরিবডি প্লিজ ক্যাম ডাউন। সবাই ধৈর্য্য ধরে বসুন আমি এক্ষুনি বিজয়ীর নাম ঘোষণা করতে যাচ্ছি। দি উইনার ইজ………!”
মুনের বুক দুরু দুরু করে। বুকের মধ্যে কিছু একটা পেঙ্গুইনের মতো লাফাচ্ছে। মুধ প্রচুর ন্যারভার্স ফিল করছে। রাত সেটা খেয়াল করে। মুনের হাতটা নিজের হাতে নিয়ে ওর আঙ্গুলের ভাজে নিজের হাতের আঙ্গুল বিচরণ করে। মুনকে আস্থা দেয় যে ভয় পাওোআর কিছু নেই ওই উইনার হবে। ছমুন কিছুটা শন্ত হলো।
—“দি উইনার ইজ ‘আবনী ইবনাত মুন’। কংগ্রেস মিসেস আবনী। প্লিজ কাম অন দি এস্টেজ।”
সবাই ক্লাপিং করতে লাগলো। মুনের বিশ্বাস’ই হচ্ছে না যেও উইনার হয়েছে। ওর এখনো সব কিছু স্বপ্নই মনে হচ্ছে। মুন চিকচিক করা চোখে রাতের দিকে তাকালো রাত মুনের হাত আরো শক্ত করে ধরে মাথা নাড়ালো। তারপর বলল,
—“যাও। তোমার স্বপ্নের পথে এগিয়ে যাও।”
মুন এস্টেজের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো। সবার দৃষ্টি ওর উপরই নিবদ্ধ। মুনের ড্রেসআপ খুবই নরমাল। নেভী ব্লু লেডিস জিন্স আর হোয়াই কালারের লেডিস শ্বাস। কর্লার গলা থেকে কাধ পর্যন্ত নামানো। যার জন্য সাধের এক সাইড দৃশ্যমাধ হয়ে কাধের এক সাইড দৃশ্যমান। আর্ধেক লার্ট ইন করা। হালকা ব্রাউন কালার করাচুল গুলো পেছনে ঝুটি করা। হাতে ব্লাক কালারের লেডিস ওয়াচ। ঠোঁটে হালকা চকলেট কালারের লিপস্টিক। পায়ে হাই হিল’স। মুনের সাজ এটুকুতেই সীমাবদ্ধ আছ। কাজের চাপে নিজের কথাই ভুলে গেছে। মুন এস্টেজে যেতেই স্পেশাল গেস্টদের হাত দিয়ে ওকে ফুল আর ট্রফি দেওয়া হলো। সাথে 70লাখ টাকার একটা চেক। সবাই এক সাথে হাততালি দিলো। সবাই ওকেই দেখছে। আজ এখান থেকেই ওর পথ চলা শুরু। এখন থেকে সবাই ওকে চিনবে। মুনের চোখ দুটো চিকচিক করে। এই বুঝি গড়িয়ে মরবে এক ফোটা জল। মিষ্টি রাতের কোলে বসে মাম্মাম, মাম্মাম চিৎকার করছে। রাত ও মুনের নাম নিয়ে চিৎকার করছে। মিষ্টির কত’ই না খুশি লাগছে ওর মাম্মাম জিতেছে। এরপর সবার জন্য একটা মিউজিক ফাংশনের ও ব্যবস্থা করা হয়েছে। সুপারস্টার রাত রায়জাদাকে এর জন্য আনা হয়েছে। রাত ক্যাপ, মাক্স, সানগ্লাস পরে এসেছে যাতে কেউ চিনতে না পারে। কারণ চিনতে পারলেই ঝাপিয়ে পরবে। মুন স্টেজ থেকে নামতেই রাত মুনকে একটা বড় লাল গোলাপ দিয়ে উইশ করে। আর নিজের টোল পরা গালের মিষ্টি হাসি উপহার দেয়। মুন ফুলটা নিয়ে রাতকে জড়িয়ে ধরে এ্যাজ এ ফ্রেন্ড। কারণ রাতের জন্যই আজ ও এতো দূর আসতে পেরেছে। রাত না থাকলে হয়তো কখনোই পারতো না। মিষ্টি মুনের কোলে ঝাপিয়ে পরলো। মুনের গালে চুমু দিয়ে ওকে উইশ করলো। বিনিময়ে মুনও অনেক গুলো চুমু দিলো মিষ্টিকে। ওদের দেখে রাতের মুখটা একটুখানি হয়েগেছে। ওর ও একটু চুমু খেতে ইচ্ছে করছিলো। কিন্তু কেউ ওকে দিলোই না। মা-মেয়ে দুইটাই পাজি। মুন আর মিষ্টি এক সাথে রাতকে বলল,
—“অল দি বেস্ট।”
রাত হেসে চলে গেল স্টেজে।
.
একটা রুমের সোফায় রাত আর মুন বসে আছে। ওদের সামনে বসে আছে এই ফাংশনে আসা কিছু গেস্ট আর এই ডিজাইনিং কন্টেস্টের ক্রিয়েটর। উনি ইংলিশে বললেন,
—“মিসেস মুন আপনাকে এক বছরের জন্য ট্রেনিং নিতে বাংলাদেশ যেতে হবে। ওখানে আমাদের একটা বড় কম্পানি আছে। সেখানি আপনাকে বিগত এক বছর কাজ করতে হবে। এটা আপনার জন্য আবশ্যক। তারপর’ই আপনাকে আমরা এখানে সুযোগ দিবো। এর থেকে ভালো অপর্চনিউটি আপনি আর পাবেন না। এখন বলুন আপনি কি আমাদের শর্তে রাজি?”
মুনের চোখ মুখ শক্ত হয়ে আসে মন কিছু বলবে, তার আগেই রাত হাসি হাসি মুখে বলে উঠে,
—“ইয়েস। হোয়াই নট। এটাতো খুব ভালো আইডিয়া। এর দ্বারা ও এই এক বছরে অভিজ্ঞ ও হয়ে যাবে। আর পরে কাজ করতেও সুবিধা হবে। কোনো পাগলই এতো বড় অপর্চুনিউটি হাত ছাড়া করবে।”
লোকটা খুশি হয়ে বলল,
—“আপনাদের কোনো অসুবিধা নেই শুনে খুশি হলাম। টিকিটের খরচ আমরা বহন করবো। পরের সপ্তাহে আপনাদের ফ্লাইট। তাহলে এই এক সপ্তাহের মধ্যে সব কিছু গুছিয়ে নিন।”
—“জ্বী অবশ্যই।”
মুন রাতের দিকে শুধু অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। পারলে ওকে আখনি ভষ্ম করে দেয়। রাত মুনকে নিয়ে বের হতেই। মুন হনহনিয়ে একা একা হাটতে লাগলো। রাত ঔকে বোঝানোর চেষ্টা করেও লাভ হলো না। ঊর্মি মিষ্টিকে নিয়ে অনেক আগেই চলে গেছে। তাই ড্রাইভ মুন করছে। ফুল স্প্রিডে উরাধুরা গাড়ি চালাচ্ছে। রাতের কলিজা আর ওর বুকে নেই। ভয়ে গলার কাছে এসে পরেছে। রাত চেচাচ্ছে। কিন্তু তা মুনের কান পর্যন্ত পৌচাচ্ছে না। বাড়ির সামনে এসে জোরে গাড়ির ব্রেক কষলো মুন। রাতের অন্তর আত্মা যেন বেলিয়ে আসতে চালো। রাত বুকে হাত দিয়ে হাপাতে হাপাতে বলল,
—“পাগল নাকি? একটুর জন্য মেরেই দিচ্ছিলে। মরতে মরতে বাঁচলাম।”
মুন কিছু না বলে গাড়ি থেকে নেমে গটগট করে শব্দ তুলে হেঁটে বাড়ির ভেতরে চলে গেলো।রাত ও কিছুক্ষণ পর আস্তে ধীরে বাড়িতে প্রবেশ করলো। গিয়ে দেখলো। মুন সোফায় বসে সাপের মতো ফোস ফোস করছে। রাত কিছু বলল না সিঙ্গেল সোফায় গিয়ে হেলান দিয়ে চোখ বুজে বসে পরলো। ঊর্মি রাতকে এক গ্লাস পানি এনে দিলো। রাত পানি খেয়ে গ্লাসটা রাখতেই মুন ফোস ফোস করে বলে উঠলো,
—“তুমি আমার কথা না শুনে ওদের হ্যাঁ কেনো বললে? আমি বাংলাদেশে যাবো না। কোনো ভাবেই না।”
রাত বলল,
—“এই জন্যই তুমি সারা রাস্তায় ওভাবে গাড়ি চালিয়ে আমাকে মারতে মারতে আধমরা বানিয়েছো?”
—“হ্যাঁ, তুমি সব কিছু যেন্র কেনো ওদের শর্তে রাজি হলে? আমি সব ছেড়ে যেখান থেকে পালিয়ে এসেছি, তুমি আমাকে সেখানেই ফিরতে বলছো! তুমি সব যেনেও এরকম ডিসিশন কি করে নিতে পারো রাত?”
রাত শান্ত গলায় বলল,
—“আমি কিছুই জানি না মুন। আর জানতেও চাইনা। তুমি তোমার হাসবেন্ডকে ছেড়ে চলে এসেছো। আর তোমার হাসবেন্ড মিষ্টির সম্পর্কে কিছু জানে না। তাই তুমি ভয় পাচ্ছো যে সে জানতে পারলে মিষ্টিকে তোমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে যাবে। এই এটুকুই আমি তোমার সম্পর্কে জানেছি। আর এর থেকে বেশি কিছু আমার জানার দরকারও নেই। মুন তুমি ভুলে যেওনা মিষ্টি আমার মেয়ে। তোমার হাসবেন্ড কখনো তোমার খোজ পেলেও মিষ্টি যে তার মেয়ে তা কখনো জানতে না পারে এই জন্যই তো তুমি আমি পুরো দুনিয়ার সামনে হাসবেন্ড ওয়াইফের এক্টিং করছি। যাতে সেও ভাবে যে মিষ্টি আমাদের মেয়ে। এতো সুন্দর প্লানিং করেছো তুমি যে তোমার হাসবেন্ড কেনো তোমার ফ্যামেলিও কিছু জানতে পারবে না। এর পরও তুমি ভয় পাচ্ছো।”
মুন অন্যদিকে মুখ করে বলল,
—“এতো কথা বুঝি না। আমরা বাংলাদেশে যাচ্ছি না এটাই ফাইনাল।”
রাত মুখ ভাড় করে রেগে বলল,
—“আমি কথা দিয়েছি তুমি শুনতে পাওনি? তুমি বিডি যাচ্ছো ”
মুন চেচিয়ে বলল,
—“আমি যাবো না মানে যাবো না।”
বলেই মুন টি টেবিলের উপর রাখা গ্লাসটা আছাড় মারলো। শব্দ শুনে মিষ্টি আর ঊর্মি দৌড়ে এলো। মুন গ্লাস ভাঙ্গায় রাতেরও রাগ উঠে গেলো। রাত হনহন করে কিচেনে চলে গেলো। কিছুক্ষণ পর আবার ফিরে এলো। কিন্তু একা আসে নি হাতো দুটো গ্লাস ও নিয়ে এসেছে। রাত চোয়াল শক্ত করে বলল,
—“তুমি বিডি যাবে মানে যাবে।”
বলেই মুনের সামনে আছাড় দিয়ে দুটে গ্লাস’ই ভেঙে ফেলল। মিষ্টি আর ঊর্মি চোখ বড় বড় করে দুজনের কান্ড দেখছে। ওরা বুঝতে পারছে না আবার কি হয়েছে যে দুজনেই এতো রেগে গেছে। একজন বলছে যাবে।। আরেকজন বলছে যাবে না। কিছুই বুঝতে পারছে না ওরা। মুন রেগে কটমট করে তাকিয়ে বলল,
—“তুমি গ্লাস ভাঙ্গলে কেনো?”
রাত পাল্টা প্রশ্ন করলো,
—“তুমি ভাঙ্গলে কেনো?”
—“আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই।”
রাত ও বলল,
—“আমারো ইচ্ছে হয়েছে তাই ভেঙ্গেছি।”
মুন আঙ্গুল উচু করে শাসিয়ে বলল,
—“রাত তুমি কিন্তু ঠিক করছো না।”
—“ভুল কিছুও করছি না।”
মুন বিরক্ত হয়ে বলল,
—“তোমার সমস্যা কোথায়? আমার ইচ্ছে আমি যাবো না। তুমি কেনো জোর করছো?”
—“আমার কোনো সমস্যা নেই। আমি শুধু চাই তুমি বিডি যাবে আর এক বছর ওখানে কাজ করবে। এতো বছরের পরিশ্রম তোমাকে এভাবে কি করে নষ্ট করতে দিবো?”
—“যেখানে আমার কোনো সমস্যা হচ্ছে না সেখানে তোমার এতো সমস্যা হচ্ছে না?”
—“কারণ আমিও অনেক পরিশ্রম করেছি তোমার এই স্বপ্নের জন্য। এমন অপর্চুনিউটি কিছুতেই আমি তোমাকে হাত ছাড়া করতে দিবো না। এটা তোমার লক্ষ্যএর সিড়ি। এই সিড়ি দিয়েই তোমাকে উপরে উঠতে হবে। অনেক বড় ডিজাইনার হতে হবে। তাহলেই আমার প্ররিশ্রমিক আমি পেয়ে যাবো।”
—“আমি এ বিষয়ে তোমার সাথে আর কোনো কথা বলতে চাই না। আমি যাবো না ব্যাস এটাই ফাইনাল।”
এতো বুঝিয়েও লাভ হচ্ছে না। এবার রাতের রাত উঠলো। ও টি টেবিলে লাথি মেরে চেচিয়ে বলল,
—“তুমি যাবে, যাবে, যাবে। তোমাকে যেতেই হবে। নিজ ইচ্ছায় না গেলে জোর করে নিয়ে যাবো। তোমাকে তার কাছে দিয়ে আসবো। আর বলবো, ভাই আপনার জিনিস আপনিই সামলান। আমার দ্বারা এই পাগলকে আর সামলানো যাচ্ছে না।”
মুন ক্ষেপে গেলো রাতের দিকে তেড়ে গিয়ে বলল,
—“এই আমি পাগল?”
রাত সরে গিয়ে বলল,
—“পাগল না হলে কেউ এতো ভালো সুযোগ হাত ছাড়া করতে চায়?”
মুন রেগে সোফা থেকে একটা পিলো নিয়ে রাতের মুখে ছুরে মেরে বলল,
—“আর তুমি কি হ্যাঁ? তুমি কি? ক্যারেক্টার লেস লোক একটা। মেয়ে দেখলেই পেছনে পেছনো ঘুরঘুর করতে শুরু করে।”
রাত রেগে চেচিয়ে বলল,
—“মুন! তুমি আমার মেয়ের সামনে কি সব বলছো?”
মিষ্টি অবুঝ চোখে একবার রাতের দিকে তাকাচ্ছে একবার মুনের দিকে তাকিচ্ছে। ঊর্মিও কিছু বলতে পারছে না ওদের। মুন দাঁত চেপে বলল,
—“একদম ঠিক বলছি। ওর ও তো জানা দরকার ওর পাপা একটা মেয়েবাজ।”
রাত ও এবার একটা পিলো মুনের মুখে ছুরে মারলো। মুন ফায়ার হয়ে রাতের দিকে একের পর এক পিলো ছুরতে লাগলো। রাত ও থেমে থাকলো না। দুজনের পিলো দিয়ে মারামারি করছে আর ঊর্মি, মিষ্টি ওদের মাঝখানে বসে গালে হাত দিয়ে ওদের ঝগড়া মারামারি দেখছে। মিষ্টি ঊর্মির কানে ফিসফিস করে বলল,
—“ঊমি তুমি কার দলে? আমি আমার পাপার দলে।”
ঊর্মিও মিষ্টির মতো ফিসফিস করে বলল,
—“আমি আমার বেস্টির দলে।”
মিষ্টি হেসে বলল,
—“দেখা যাক কে জিতে মাম্মা না পাপা।”
ঊর্মি ও হেসে বলল,
—“দেখা যাক।”
মারামারির এক পর্যায় মুন বলল,
—“রাত তুমি খুব খারাপ তুমি আর আমার সাথে কথা বলবে না।”
—“তুমিও আমার সাথে কথা বলবে না। কিন্তু মনে রেখো বিডি তোমাকে যেতেই হবে।”
মুন কিচছু বলল না। রেগে হনহন করে নিজের রুমে গিয়ে ঠাস করে দরজা লাগিয়ে দিলো। রাতও গটগট করে নিজের রুমে গিয়ে শফ্দ করে দরজা লাগিয়ে দিলো। ঊর্মি আর মিষ্টি জোরে নিশ্বাস ছাড়লো। বিরবির করে বলল,
—“এরা কখনো শুধরাবে না।”
দুদিন কেটে গেল কেউ কারো সাথে কথা বলছে না। রাত আস্তে আস্তে সব প্যাকিং করছে। বেশি কিছু নিবে না। রে গুলো বেশি ইম্পর্টেন্ট সেগুলোই গুছাচ্ছে। জামা কাপড়ও বেশি কতগুলো টেনে নিবে না। এখান থেকে কিছু নিয়ে যাবে পরে বিডিতে গিয়ে কিনেবে। মুন কিছু বলছে না। শুধু চুপচাপ চেয়ে দেখছে রাতের কান্ড। ঊর্মিও রাতকে সাহায্য করছে। ঊর্মি মুনকে অনেক বুঝিয়েছে। রাত কবির খানকেও এ বিষয়ে ফোন করে জানিয়েছে। উনি মুনকে ওর যা ভালো লাগে তাই করতে বলেছে। কারণ মুনের উপর আর উনি কিছু চাপিয়ে দিতে চান না। একবার ভুল করেছে আর না। পরশু ওদের ফ্লাইট রাত আবার গেছলো মুনের কাছে। শান্ত ভাবে ওকে খুব সুন্দর করে বুঝালো। মিষ্টিও মুনের কানের কাছে ঘ্যানঘ্যান করছে ও বিডি ঘুরতে যাবে। সবার জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে মুন রাজি হয়ে গেছে। মনে মনে বলল,
—“যা হবে দেখা যাবে। এভাবে আর পালিয়ে বাঁচা সম্ভব না। এবার যদি ওকে আঁধারের মুখোমুখি হতে হয় তাহলে ‘ও’ তাই হবে। আঁধার যদি মিষ্টির কথা জেনে যায় তো যাক। এমনিতেও সত্যি বেশি দিন চাপা থাকে না। একদিন না একদিন মুনকে আঁধারের মুখোমুখি হতেই হতো সব সত্যি ও আঁধারের সমনে আতোই। তাই মুন আর ভয় পাবে না। পিজের মাতৃত্বের উপর ওর পুরো বিশ্বাস আছে। কোনো শক্তি একটা বাচ্চাকে তার মায়ের কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারবে না। কোনো ভাবেই না।”
.
প্লেন উড়ে এসে পরলো ঢাকা এয়ারপোর্টে। পেলেন থেকে নামতেই মাতৃভূমির মাটির মিষ্টি গন্ধ মুনের নাকে বাড়ি খেলো। দেশের মন কাড়া ফুরফুরে বাতাস মুনের সারা শরীরে মাখামাখি হলো। মুন প্রাণ ভরে শ্বাস নিলো। নিজের মাতৃভূমির উপরে দাঁড়িয়ে আছে ভাবতেই মুনের মন আনন্দে ভরে উঠছে। ওরা এয়ারপোর্টের ভিতরে এলো। মুন আর রাত চেকিং করতে গেছে। মিষ্টি ওয়াশরমে যাবে তাই ঊর্মি মিষ্টিকে নিয়ে ওয়াশরুমে গেলো। মিষ্টি আগে বেড়িয়ে ঘুরেঘুরে দেখতে লাগলো। সব কিছু ওর জন্য নতুন। এদেশের মানুজ-জন ও তাদের পোশাক- আশাক ও ভিন্ন। বিদেশে সব সাদা চামড়ার মানুষদের মধ্যে বড় হয়েছে মিষ্টি কিন্তু এখানে সব ধরনের বর্নের মানুষ জন ঘুরে বেড়াচ্ছে। কারো গায়ের রঙ কালো, কারো বা শ্যাম বর্নের আবার কারো ফর্সা। মিষ্টি নতুন পরিচিত হচ্ছে। মিষ্টি এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে হাটছে এমন সময় কারো সাথে ধাক্কা লেগে সোজা নিচে পরে যায়। মিষ্টির পরে ব্যথা পায়। হাত ছিলে যায়। টলমলে চোখে মিষ্টি ধাক্কা দেওয়া ব্যক্তিটির দিকে তাকালো। অনেক লম্বা। ধবধবে ফর্সা বর্নের। পরনে কালো কোর্ট, সাদা শার্ট, কালো প্যান্ট। হাতে ব্যান্ডেড কালো ঘড়ি। পায়ে কালো সু। চোখে কাচের চিকন ফ্রেমের চশমা। কাচ ভেদ করে চোখের নীলাভ মনি দুটো স্পস্ট দেখা যাচ্ছে। হালকা বাগামী রঙের তুর্কি স্টাইলের চুলগুলোয় জেল দেওয়া। খোচা খোচা চাপ দাড়ি। রক্ত জবা পাতলা ঠোঁট। ঠোঁটের কোণায় একটা কালো কুচকুচে তিল উকি দিচ্ছে। মিষ্টি টলমলে চোখে ড্যাবড্যাব করে ব্যক্তিটিকে দেখছে। মিষ্টি অবাক হয়ে বলল,
—“পাপা!”
ব্যক্তিটি ভ্রু কুঁচকে মিষ্টির দিকে তাকায়। মিষ্টি খুবই চঞ্চল তাই পরক্ষণেই বুঝে ফেলে এটা ওর পাপা নয় পাপার মতো দেখতে। মিষ্টি নিজের হাতের গিকে তাকিয়ে দেখে ক্ষত স্থানে বিন্দু বিন্দু রক্ত জমেছে। মিষ্টির চোখের জল গুলো যেন এক্ষুনি গড়িয়ে পরবে। মিষ্টি নিজে নিজে উঠে কোমর হাত দিয়ে জল টলমল করা চোখে অগ্নি দৃষ্টিতে ব্যক্তিটির দিকে তাকিয়ে রেগে ধমকিয়ে বলল,
—“দেখে চলতে পারো না? মিষ্টিকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিলে কেনো? মিষ্টি ব্যথা পেয়েছে না? মিষ্টিকে সরি বলো।”
ব্যক্তিটি আগা গোড়া মিষ্টিকে দেখে নিলো। এতো টুকু একটা বাচ্চা মেয়ে ওকে সরি বলতে বলছে। দ্যা গ্রেট আঁধার রেজওয়ানকে! অবিশ্বাস্য! কিন্তু কেনো যেনো মেয়েটাকে দেখে আঁধারের কেমন যেন একটা টান অনুভব হচ্ছে। একজনের কথা খুব মনে পরছে মেয়েটাকে দেখে। সেও তো এভাবেই কোমরে হাত দিয়ে মাঝরাস্তায় দাঁড়িয়ে তার সাথে ঝগড়া করেছিলো। আঁধার দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো। তারপর মিষ্ঠির সামনে হাটু গেড়ে বসে মিষ্টির হাতের দিকে তাকিয়ে নরম গলায় বলল,
—“খুব ব্যথা পেয়েছো?”
মিষ্টি মাথা নাড়ালো। আঁধার ছোট্ট করে বলল,
—“সরি। আমি দেখতে পাইনি।”
মিষ্টি হেসে দিয়ে বলল,
—“ইট’স ওকে।”
আঁধার আজ এখানে এসেছিলো আলিয়াকে পিক করতে। আলিয়া লন্ডনে গিয়ে ছিলো টুরে। আজ’ই ফিরেছে। ওকেই নিতে এসেছে আঁধার। আঁধার ছোট্ট শ্বাস ফেলে মিষ্টিকে একটা চেয়ারে বসিয়ে বলল,
—“তুমি এখানে বসো আমি ফাস্ট অ্যাইড বক্স নিয়ে আসছি।”
মিষ্টি মাথা নাড়ালো। আঁধার চলে যেতেই কিছুক্ষণ পর মিষ্টিকে খুজতে খুজতে মুন এলো। মিষ্টিকে দেখে ওর কাছে ছুটে গেলো। পিছনে পিছনে রাত আর ঊর্মিও আসছে। মুন দেখলো মিষ্টির হাত ছুলে গেছে বিন্দু বিন্দু রক্ত ও জমে আছে। তা দেখে মুন অনেক বকলো মিষ্টিকে। রাত মুনকে থামালো। মিষ্টি মুখটা ছোট করে রাখলো। মুন পানি দিয়ে মিষ্টির হাত ধুয়ে দিলো। যাতে ইনফেকশন না হয় বাড়ি গিয়ে ওষুধ লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করে দিবে। মুন মিষ্টিকে কোলে নিলো ওরা বেরিয়ে পরলো। মিষ্টি বারবার পেছনে ফিরে তাকাচ্ছে। এরই মধ্যে আঁধারও বক্স নিয়ে এলো আর দেখলো মিষ্টি চলে যাচ্ছে ওর ফ্রমিলির সাথে। আঁধারকে দেখে মিষ্টি ঠোঁটে হাসি টেনে হাত নাড়িয়ে টাটা দিলো। আনমনে আঁধারও টাটা দিলো। ধীরে ধীরে মিষ্টি আঁধারের চোখের সামনে থেকে অদৃশ্য হয়ে গেলো। নিশ্বাসের সাথে আঁধারের ভেতর থেকে চাপা আত্মনাদ বেরিয়ে আসতে চাইলো। আঁধার চোখ ফিরিয়ে সামনে হাটা ধরলো।
#চলবে,