Mr_Husband,পর্ব_৪১,৪২

0
2765

#Mr_Husband,পর্ব_৪১,৪২
#লেখিকা: আবনী ইবনাত মুন
#পর্ব_৪১

সময়ের সাথে তাল মালিয়ে সব কিছু পাল্টে গেছে। শহর, পরিবেশ, রাস্তা-ঘান, গাছ-পালা সব কিছুই নতুন নতুন লাগছে। যেন অচেনা কোনো দেশে এসে পরেছে। গাড়ি এসে থামলো খান ভিলার সামনে। গাড়ি থেকে নামতেই মুনের মনের মধ্যে এক শীতল হাওয়া বয়ে গেলো। এক শূন্য অনুভুতিতে জর্জরিত হলো। এই ছয় বছরে অনেক কিছু পাল্টে গেছে। পাল্টেছে রাস্তা-ঘাট, বাড়ির নাচে কানাচের পরিবেশ। আশে পাশে অনেক বাড়ি ঘর ও তৈরি হয়েছে। কিছু আর আগের মতো নেই। সত্যিই কি কিছুই নেই আগের মতো? সব কিছুই কি পাল্টে গেছে সময়ের সাথে সাথে? না চাইতেও মুনের ভেতর থেকে এক দীর্ঘ শ্বাস বেরিয়ে এলো। মিষ্টির আর রাতের কথপকথনে ঘোর কাটলো।

—“পাপা এটা কার বাড়ি? আমরা এখানে কেনো এসেছি?”

রাত মিষ্টির সরু নাকটা টেনে দিয়ে বলল,

—“এটা তোমার মাম্মামের বাড়ি। মানে তোমার নানু বাড়ি। আর আমরা এখানে তোমার নান্না-নানুর সাথে দেখা করতে এসেছি।”

মিষ্টি ঠোঁট গোল করে বলল,

—“ওওওও!”

ঊর্মি বলল,

—“সব কিছু কেমন পাল্টে গেছে তাই না মুন?”

মুন কিছু বলল না। রাত তাড়া দিয়ে বলল,

—“দাঁড়িয়ে আছো কেনো? চলো। আমার খুর টায়ার্ড লাগছে।”

বলেই রাত মিষ্টিকে কোলে নিয়ে আগে হেঁটে চলে গেলো। আর যাওয়ার আগে ড্রাইভারকে বলল,

—“লাগেজ গুলো সাবধানে নিয়ে আসুন।”

মিষ্টি রাতের কোলো বসে কলিংবেল চাপলো। কবির খান সোফায় বসে নিউজ পেপার পড়ছিলেন, কলিংবেলের কিছুটা বিরক্ত হলেন। বিরক্ত নিয়ে পেপারটা টি টেবিলের উপর রেখে উঠে গেলেন দরজা খুলতে। দরজা খুলে রাতকে দেখে কিছুটা চমকালো কবির খান। আঁধারের সাথে চেহাহার মিল পেয়ে চরম অবাক হলেন। রাতের কোলে থাকা মিষ্টিকে দেখেও একি অবস্থা। ওরা আসবে তাও তিনি জানতেন না। মুন জানায়নি। রাতের সাথে কবির খানের অনেক বার ফোনে কথা হয়েছে কিন্তু ওকে কখনো দেখেনি তাই প্রথম দেখায় এতো অবাক হলেন। রাত মিষ্টিকে কোলে নিয়েই হালকা ঝুকে সালাম করলো। আর হেসে জিজ্ঞেস করলো,

—“কেমন আছেন আঙ্কেল?”

কবির খান অবাক হয়েই জবাব দিলেন,

—“আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তুমি।”

—“আই এম গুড।”

মিষ্টি রাতের কাধে মেরে রাতকে ওর দিকে ফিরালো। রাত ফিরতেই চোখের ইশারায় জিজ্ঞেস করলো ‘কে’। রাত ফিসফিস করে বলল,

—“নান্না”

মিষ্টির চোখ চকচক করে উঠলো। কবির খানকে ডাক দিলো,

—“নান্না!”

কবির খান অবাক হয়ে মিষ্টিকে দেখছে। মিষ্টির ভ্রু আর চোখের গঠনটা একেবারে মুনের মতো। কবির খান চাতক পাখির মতো চারদিকে চোখ বুলালো হাতে গড়া প্রিয় পুতুলটার খোজে। আর পেয়েও যায়। কিছুটা দূরে গেটের কাছে দাঁড়িয়ে আছে তার আদরের ছোটকন্যা। নিজ হাতে গড়ে তোলা সেই পুতুলটা। যে একসময় তাকে ছাড়া কিছু বুঝতো না সে আজ কতটা দূরে সরে গেছে। ছলছল নয়নে তারদিকে তাকিয়ে আছে। নেত্রকোণ থেকে কয়েক ফোঁটা জলও গড়িয়ে পরে মষৃণ গাল ভিজিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু তার ভাবমূর্তি একদম স্বাভাবিক। কবির খান ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলেন মেয়ের দিকে। মুনও স্বাভাবিক ভাবে কয়েক কদম এগিয়ে গেলো। কবির খান মেয়ের গালে হাত রাখলেন। তার আঁখি যোগলে অনেক আগেই জল জমা হয়ে ভরে উঠেছে। মুন তখনো স্বাভাবিক। মুনের গাল দু হাতে মালিশ করে করুণ স্বরে বললেন কবির খান,

—“মা’টা তার আব্বুর উপর এখনো অভিমান করে আছেন? ক্ষমা করতে পারেন নি এখনো? তার আব্বু ক্ষমার এতোটাই অযোগ্য যে আজ এতো বছর পর দেখা হওয়ার পরও আব্বু বলে ডাকছে না, কথা বলছে না, দৌড়ে এসে ও জড়িয়ে ধরছে না? মরার পর যদি তোমার ক্ষমা পাই। তা না হলে মরেও শান্তি পাবো না। পরকালেও তোমার এই অভিমানের বোজা বয়ে বেরাতে হবে।”

মুন এবার আর নিজেকে আটকে রাখতে পারলো না ‘আব্বু’ বলে ঝাপিয়ে পরলো কবির খানের বুকে আর বাচ্চাদের মতো ফুপিয়ে কাদতে লাগলো। কবির খান চোখে জল নিয়েও হেসে ফললেন। তার ছোট্ট পরি। এখনো তো বড় হয়নি সেই ছোট্টটি’ই আছে। মুখের বাচ্চা বাচ্চা মায়া জড়ানো ভাবটা এখনো রয়ে গেছে। কবির খান মুনের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললেন,

—“মাফ করেছে আমার মা’টা আমাকে?”

মুন মাথা এপাশ ওপাশ করলো। কবির খান শব্দ করে হেসে দিলেন। তারপর বললেন,

—“সত্যি?”

কবির খান আবারো সশব্দে হাসলেন মুনও হেসে দিলো। ঊর্মি,মিষ্টি রাত মুগ্ধ নয়নে দেখছে বাবা মেয়ের ভালোবাসা। ঊর্মি খুব ভালো করেই জানে যখন এখানে ছিলো তখন কবির খানের প্রতি মুনের এরকম ভালোবাসা অনেক দেখেছে তখন। তাই ‘ও’ আগে থেকেই অবগত। মিষ্টি তো রাতের সাথে একেবারে মিশ শক্ত করে জড়িয়ে ধরে গালের সাথে গাল মিলিয়ে তার মাম্মাম আর নান্নার ভালোবাসা দেখছে। মিষ্টির রাতের গলা জড়িয়ে ধরে ঠোঁট গোল করে আধো আধো স্বরে বলল,

—“পাপ্পা”

রাত মেয়ের কান্ডে হেসে দিলো। মুন গিয়ে মিষ্টিকে কোলে নিয়ে কবির খানের সামনে দাঁড়িয়ে জ্বলজ্বল চোখে তাকালো। মুনের চোখ থেকে খুশি উপচে পরছে। মুন ধরা গলায় বলল,

—“আব্বু আমার মেয়ে।”

কবির খান অবাক হয়ে মুনের দিকে তাকিয়ে আছে। তার ছোট্টপরিটার রাজকন্যা এটা ভাবতেই অবাক লাগছে। কত তাড়াতাড়ি বড় হয়ে গেছে তার পরিটা। এতো দ্রুত বড় না হলেও পারতো। আরো কিছুদিন থাকতো তার ছোট্টপরি হতেই। কবির খান হেসে দিলেন। হাত বাড়ালেন মিষ্টির দিকে। মিষ্টি মুনের কোল থেকে ঝাপ দিলো কবির খানে কোলে। বাড়ির বাইরেই হাসি, কান্না, ভালোবাসায় কেটে গেলো কিছু মুহূর্ত আর কেউ টেরও পেলো না। বাইরে থেকে কথা বলার আর হাসার শব্দ শুনে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে এলেন তাহমিনা খান। মেয়ের দিকে চোখ যেতেই যেন একেবারে শান্ত হয়ে গেলেন। কত বছর পর এই মায়ায় জড়ানো মুখ খানা দেখছেন জানেন না। মনে হচ্ছে অনেক যুগ পর দেখছে। মেয়েটা বড় হয়ে গেছে অনেক। পরিবর্তন ঘটেছে অনেক। মুন দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে ডাকলো,

—“আম্মু”

তাহমিনা খান এখনো বিশ্বাস করতে পারছেন না। সে মুনের মুখে হাত ছুঁয়ে দিয়ে দেখতে লাগলেন। খুশিতে তার চোখ বেয়ে একের পর এক জলের ফোঁটা গড়িয়ে পরতে লাগলো। সে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলল,

—“আ’আমার মেয়ে। আ’আমার চাঁদ। এতো বছর গেগে গেল আসতে?”

বলেই শক্ত করে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরলো আর কপালে গভীর চম্বন আঁকলো। মুন বাচ্চাদের মতো কেদে কেদে বলল,

—“সরি আম্মু।”

রাত এগিয়ে এসে তাহমিনা খানকে সালাম করে বলল,

—“কেমন আছেন আন্টি?”

তাহমিনা খান হেসে বলল,

—“ভালো বাবা। তুমি।”

রাত হেসে মজা করে বলল,

—“আপনার মেয়ে খারাপ থাকতে দিলে তো।”

মুন রাগী চোখে তাকাতেই রাত কিউট একটা হাসি উপহার দিলো। তাহমিনা খান ঊর্মিকে দেখে বলল,

—“ঊর্মি মা ওখানে দাঁড়িয়ে আছো কেনো? এদিকে এসো। কত বছর পর তোমাকে দেখছি।”

ঊর্মি এগিয়ে আসতে আসতে বলল,

—“কি করবো আন্টি? সবাই তো আমাকে ভুলেই গেছে। তাই এক কোণায় এতিমের মতো দাঁড়িয়ে আছি।”

তাহমিনা খান ঊর্মিকেও জড়িয়ে ধরে আদর করে দিলেন। মিষ্টিকে তো দেখেই খুশিতে আত্মহারা হয়ে উঠলো। তার ছোট মেয়ের সন্তান। ভাবতেই খুশি খুশি লাগছে। তাহেরার ছেলে হয়েছে। তাই তার নাতনির খুব শখ ছিলো। যা মিষ্টি এসে পরণ করে দিয়েছে। কবির খান বললেন,

—“আর কতক্ষণ এখানে দাঁড়িয়ে থাকবে? ভেতরে চলো সবাই। ক্লান্ত হয়ে গেছো খুব। ফ্রেশ হয়ে খেয়ে রেস্ট নিবে।”

তার কথায় সবাই সম্মতি জানালো আর ভেতরে চলে গেলো।

#চলবে

#Mr_Husband
#লেখিকা: আবনী ইবনাত মুন
#পর্ব_৪২

মুন এসেছে শুনে বিকেলেই তাহেরা স্বামী আর ছেলে নিয়ে ছুটে আসে। ছোট বোনটা এতো বছর পর দেশে ফিরেছে নে এসে আর থাকতে পারলো না। এসে মুনকে জড়িয়ে 40 মিনিট কেদেই গেছে। তাহেরার ছেলে তিশান শেখ। মিষ্টির থেকে ৯ মাসের বড়। দেখতে একদম বাবার মতো হয়েছে। চুপচাপ, শান্তশিষ্ট, নিরিবিলি স্বভাবের। উজ্জল শ্যামলা গায়ের রং। মাথায় কালো ঝাকড়া চুল। মুন তিশানকে কোলে নিয়ে কতোগুলো যে চুমু খেলো হিসাব নেই। মিষ্টি দেখে তো পুরো ফায়ার। মাম্মাম ওকে তো এতো আদর করে না শুধু বকে আর বকে। মিষ্টির রাগ হলেও সেটা দেখায় না। রাগটা একদম আঁধারের মতো। তিশানের উপর শোধ তুলতে মিষ্টি ওকে অনেক জ্বালিয়েছে কিন্তু তিশান কিচ্ছুটি বলেনি। কারণ মিষ্টি ছোট তাই। অবশ্য তিশান মিষ্টিকে বুঝিয়েছে কিন্তু মিষ্টি তো না’ই আরো তিশানকে তিশু বলে ক্ষেপিয়েছে। অবশ্য তিশানের এতে কিছু যায় আসেনি। ওকে পরিচয় করানোর সময় তাহেরা বলে দিয়ে ছিলো,

—“তৃশ বাবা ও হলো তোমার ছোট বোন। ওকে সব সময় আদর করবে। ভুল করলে আগলে রেখে শুধরে দিবে। ভুল পথে গেলে সঠিক পথ দেখিয়ে দিবে কিন্তু কখনো ওকে বকবে না কষ্ট দিবে না।”

তিশান ও হ্যাঁ বলেছিলো। মিষ্টিকে তিশানের স্কুলেই ভর্তি করা হবে। যাতে মিষ্টির একা মনে না হয় আর তিশান মিষ্টিকে দেখে রাখতে পারে।

.
মিরপুরের মধ্যেই একটা বাংলো কিনে নিয়েছে রাত। এখন সেখানেই আছে। এক সপ্তাহ হয়েছে এসেছে। কবির খান তাহমিনা খান কিছুতেই মুনদের অন্য কোথাও থাকতে দিতে চাইছিলো না। তাহমিনা খান তো বলেই দিয়ে ছিলো যে ‘মিষ্টিকে নিয়ে এখান থেকে এক পাও বাইরে রাখলে পা ভেঙ্গে দিদো’। কবির খানও ওদের যেতে দিতে চায় নি কিন্তু মুনের কথা শুনে তার আর কিছু বলার ছিলো না। মুন কবির খানকে আলাদা নিয়ে বুঝিয়ে ঠিক এমন ভাবে বলেছিলো,

—“আব্বু তুমিই বলে ছিলে যে আঁধার এখনো আমার খোজ করছে। প্রতিদিন এখানে এই বাড়িতে তোমার সাথে দেখা করতে আসে। আমার খোজ চায়। এই ছয় বছরে নাকি এমন একটা দিন যায় নি যেদিন নাকি উনি আসেন নি। সেখানে আমি রিক্স নিয়ে কি করে থাকি? আমি কোনো ভাবেই উনার সামনে আসতে চাই না।”

কবির খান শান্ত কন্ঠে বলল,

—“পৃথিবীটা খুবই ছোট আম্মু। আর বাংলাদেশ তার চেয়েও বেশি ছোট। তোমাদের ভাগ্য, তোমাদের কখন একে অপরের মুখোমুখি এনে দাঁড় করায় বলা যায় না।”

মুন চোখ মুখ শক্ত করে বলে,

—“সেটা তখন দেখা যাবে। আমি যতক্ষণ পারি ততক্ষণ নিজকে তার থেকে লুকিয়ে রাখবো। আর যদি দেখা হয়েও যায় তার কিছুই করার থাকবে না। কারণ এখন আমার একটা মেয়ে আছে পরিবার আছে। সে আমাকে কোনো ভাবেই ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না।”

কবির খান দীর্ঘ শ্বাস ফেলে তারপর তাহমিনা খানকে বুঝিয়ে বলে। মুন এই এক সপ্তাহ সময় পেয়েছে সব গোছগাছ করার। কাল থেকে ওকে অফিস জয়েন করতে হবে। বাড়ি গোছগাছ করা শেষ। আজ মিষ্টিকে স্কুলে ভর্তি করে অনেক কিছু কেনা কাটা আছে সেগুলো করতে হবে। মুন মিষ্টিকে ফটাফট রেডি করিয়ে দেয়। লাল রঙের মিনি ফ্রক। মিষ্টির ব্রাউন কালার এস্ট্রেট চুল গুলো কাধের কিছুটা নিচে পরে। সামনে দিয়ে বেবী কার্ট দেওয়া। পেছনে কিছু চুল খোলা রেখে দুপাশে লাল রঙের হেয়ার ব্যান দিয়ে ঝুটি করে ক্লিপ মেরে দেয়। পায়ে লাল রঙের জুতো পরে মিষ্টি মুনের বেবী পিংক কালার লিপস্টিক নিয়ে নিজে নিজে দিতে শুরো করে। মিষ্টি নিজের ড্রেসের সাথে মিলিয়ে রাতকে লাল রঙের একটা শার্ট আর কালো রঙের জিন্স বের করে দেয়। মিষ্টির উপর দিয়ে কিছু বলার স্পর্ধা কি রাত করতে পারে? একদম না! তাই রাত যথা আগ্গা বলে মিষ্টির চুজ করা কাপড়’ই পরে। রাত আর মিষ্টি সোফায় বসে দুষ্টুমি করছে। মুন কিছুক্ষণ পরই রেডি হয়ে বেরোয়। মুন পরেছে হোয়াই লং স্কার্ট, সিল্ভের ব্লু শার্ট। কোমরের কাছে গিট দেওয়া। গলায় পেচানো হোয়াইট অর ব্লু মিক্স স্কার্ফ। হাইলাইট করা ইউ কার্ট দেওয়া চুল গুলো খোলা। গলায় ঝুলছে মুক্তোর মালা। হাতে মুক্তোর ব্রেসলেট। কানে সাদা পাথরের টপ। পায়ে হাই হীল। ভরাট ঠোঁটে বেবী পিংক লিপস্টিক। মিষ্টি আর রাত মুনকে দেখে মিটিমিটি হেসে ‘উউউউ’ জাতীয় শব্দ করলো। মুন রাগী চোখে তাকাতেই মিষ্টি বলল,

—“মাম্মাম, ইউ লুকিং সো বিউটিফুল!”

মিষ্টির কথা শুনে মুন সীমিত হাসলো।

.
প্রিন্সিপাল ম্যামের কেবিনে বসে আছে মুন রাত মিষ্টি। প্রিন্সিপাল ম্যাম হেসে জিজ্ঞেস করলো,

—“হোয়াট ইজ ইউর নেম বাচ্চা?”

মিষ্টি সুন্দর করে জবাব দিলো,

—“মাই নেম ইজ আঁধরিকা রায়জাদা এন্ড মাই নিক নেম ইজ মিষ্টি।”

—“সো বিউটিফুল নেম মিষ্টি! ওকে টোল্ড মি, হাউ ওল্ড আর ইউ?

—“আই এম ফাইভ ইয়ার’স ওল্ড ম্যাম।”

—“হোয়াট ইজ ইউর ফাদার্স ওর মাদার্স নেম?”

—“মাই ফাদার্স নেম ইজ রাত রায়জাদা। এন্ড মাই মাদার্স নেম ইজ ইবনাত মুন।”

প্রিন্সিপাল ম্যাম হেসে মিষ্টির মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। তারপর মুন আর রাতের দিকে তাকিয়ে বলে,

—“মিস্টার এন্ড মিসেস রায়জাদা ইউর’স ডটার ইজ সো স্মার্ট গার্ল। এন্ড সি লুক লাইক ইউ মি.রায়জাদা।”

রাত গালে টোল ফেলে হাসলো। মিষ্টিকে ভর্তি করিয়ে ওর ক্লাস রুম দেখতে যায় ওরা। আজ অবশ্য ক্লাস করবে না মিষ্টি কাল থেকে করবে। তিশানের সাথে দেখা করে আর ক্লাস রুম দেখেই চলে যাবে বসুন্ধরা শপিংমলে। ক্লাস টু এর সামনে এসে দেখে তিশান খুব মনোযোগ দিয়ে ক্লাস করছে। মুন ক্লাস টিচারকে বলে তিশানকে বাইরে নিয়ে আসে। মুন তিশানকে দুটো বড় বড় ক্যাটবেরি দিয়ে ওর গালে চুমু খেয়ে বলল,

—“আমার বাবা’টা কেমন আছে?”

তিশান হালকা হেসে জবাব দেয়,

—“ভালো মনি’মা। তুমি কেমন আছো?”

—“আমিও খুব ভালো।”

তিশান রাতকেও জিজ্ঞেস করলো,

—“আঙ্কেল আপনি কেমন আছেন?”

রাত তিশানের গাল টেনে বলল,

—“ভালো।”

তিশান মিষ্টির দিকে তাকালো তারপর বলল,

—“আঁধরিকা কেমন আছো?”

মিষ্টি ভাব নিয়ে বলল,

—“আ’ম অলওয়েজ গুড।”

মুন তিশানের মাথায় হাত বুলিয়ে কপালে চুমু খেয়ে ওর হাতে দুটো বড়বড় ক্যাটববেরি দিয়ে বেরিয়ে পরলো।

.
গাড়ি এসে থামলো বসুন্ধরা শপিংমলের সামনে। মুন আর মিষ্টিকে নামিয়ে দিয়ে রাত গাড়ি নিয়ে পার্কিং এরিয়ায় গলো। কিছুক্ষণ পর রাত আসতেই ওরা শপিংমলের ভেতরে গেলো। মুন আগে মিষ্টির জন্য অনেক ড্রেস কিনে শপিং ব্যাগ গুলো রাতের হাতে ধরিয়ে দিলো। মিষ্টি ডলের জন্য বায়না করতেই রাত মিষ্টিকে নিয়ে টয় শপে গেলো। এদিকে মুন সব দোকান গুলো ঘুরে ঘুরে দেখছে। নিজের জন্য জিন্স, টি-শার্ট, শার্ট, স্কার্ট’স, টপ’স এই ধরনের ড্রেসেস কিনছে। মুন হাটতে হাটতে হঠাৎ কারো সাথে ধাক্কা খায় আর হাত থেকে শপিং ব্যাগ থেকে গুলো পরে যায়। মুন সামনের ব্যক্তিকে খেয়াল না করেই ‘সরি’ বলে নিজের ব্যাগ’স গুলো উঠাতে লাগলো। মুন ব্যাগ গুলো নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে সামনে থাকা মানুষটিকে দেখে থমকে যায়। মুনের বিশ্বাস’ই করতে পারছে না নিজের চোখকে। দুজনেরই চোখে জল টলমল করছে। কারো মুখ থেকেএই দিয়েই কথা বেরোচ্ছে না। মুন অস্পষ্ট স্বরে বলল,

—“মা…!”

#চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here