রৌদ্র_কুয়াশা,পর্ব ২১,২২

0
1598

#রৌদ্র_কুয়াশা,পর্ব ২১,২২
Suvhan Årag(ছদ্মনাম)
পর্ব ২১

ভাবনা থেকে বেরিয়ে এলো মাহির।ওপর থেকে চোখ নামিয়ে আবার সদর দরজার উদ্দেশ্যে পা চালালো।

এদিকে ইলাও দাড়িয়ে মাহিরকেই দেখছিল।নিবিড়ের চাহনি গুলো বড্ড বেশিই ভালো লাগে তার।প্রতিটি চাহনিই যেন কিছু বলে।বিশেষ কিছু কথা।মাহিরকে দরজার দিকে এগিয়ে আসতে দেখে ইলা ও বেলকনি থেকে ছুট দিল নিচে যাওয়ার জন্য।

কেশবতী কন্যা তার ঘনকালো লম্বা কেশ গুলো ছেড়ে রেখেছে।হাওয়ার তালে তালে কেশ গুলো ও যেন একটু একটু করে নাচছে।

মাহির মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ইলার দিকে।বুকে হাত রেখে দাড়িয়ে ঘনঘন শ্বাস নিচ্ছে ইলা।বলতে গেলে হাপাচ্ছে।এতোটাই জোরে সে দৌড়ে এসেছে দরজা খোলার জন্য যে মাহিরের কলিংবেল বাজানোর প্রয়োজন পড়েনি।তার আগেই ইলা দরজা খুলে দাড়িয়ে হাপাচ্ছে।

খোলা দরজা দিয়ে ঠান্ডা বাতাস ভেতরে আসছে।ইলার খোলা চুলগুলো ও বাতাসের তালে তালে দিব্যি খেলছে।শাড়ির আঁচল টাও বাতাসের তালে একটু একটু উড়ছে।গা থেকে অনেকটাই সরে যাচ্ছে আঁচল।সিল্কের শাড়ি।তার মধ্যে ইলা হয়তো শাড়িতে সেফটিপিন ব্যবহার করেনি।মাহির হা হয়ে তাকিয়ে আছে ইলার দিকে।এভাবে খোলা চুলে ইলা তার সামনে আসেই না বললেই চলে।

-পানিজল।

ইলা এবার একটু স্থির হয়ে দাঁড়ালো।মাহিরের দিকে তাকালো।

-হুম।
-আজ হাওয়াটা বড্ড বেশি বেপরোয়া।তাই না?
-কেন?
-বেহায়াও বটে।

মাহিরের কথার আগা মাথা কিছুই বুঝছে না ইলা।

-কিভাবে?
-অনেক কিছুই উড়িয়ে দিচ্ছে।অনেক কিছুই সরিয়ে দিচ্ছে।যেটা আমার করার কথা ছিল সেটা এই হাওয়াই করে দিল।আমার জন্য ও রাখলো না।ইশ!নিজের কাছেই তো কেমন লাগছে আমার।

ইলা মাহিরের কথার কিছুই বুঝছে না।ড্যাপ ড্যাপ করে তাকিয়ে আছে মাহিরের দিকে।ইলার তাকানো দেখে মাহির হেসে দিল।ইলা যেন বোকা বনে গেল মাহিরের এমন কাজে।মাহির ইলাকে সরিয়ে দরজা লাগিয়ে দিয়ে ইলার মুখোমুখি দাড়ালো।ইলা এখনো ড্যাপ ড্যাপ করে তাকিয়ে আছে।

-কি?
– কি?
-কিছু বুঝলে না?
-উহুম।

ইলা মাথা নাড়িয়ে জবাব দিল।মাহির হুট করে ইলার কাঁধে হাত রেখে আঁচলটা ধরতে গেল।ইলা সাথে সাথে মাহিরের হাত আটকে ধরে চোখ বড় বড় করে তাকালো মাহিরের দিকে।মাহিরের দিকে তাকিয়ে আরেক দফা অবাক হলো সে।

মাহির রক্তচক্ষু নিয়ে তাকিয়ে আছে।ফর্সা নাকের আগাটাও লাল হয়ে গেছে।ইলা ভয়ে ঢোক গিললো।সে তো এটাই বুঝতে পারছে না মাহির কেন এভাবে তার দিকে তাকিয়ে আছে।

ইলা কাপা কাপা কন্ঠে বললো,

-আআআপনি,,,।
-আজ কিছু বললাম না।এরপর এমন হলে খুব খারাপ হয়ে যাবে ইলা।খুব খারাপ।তুমি কল্পনাও করতে পারবে না।
-কি করেছি আমি?
-বারে বারে নেচে তো মানুষ কে নিজের অনেক কিছুই দেখিয়ে ফেলেছো।এখন দরজা খুলে আঁচল উল্টা পাল্টা করেও কি সেই এক কাজ করবে!

মাহিরের কথা শুনে কেঁদেই দিল ইলা।নিজের দিকে তাকালো।মাহিরের রাগের কারণ সে বুঝতে পারছে।কিন্তু সে তো জেনে বুঝে এমন করেনি!

-এখন রাত।এখন যদি দিন হতো।তুমি বুঝতে পারছো ইলা!তুমি এখন বার ড্যান্সার নও।আমার স্ত্রী।এটা কি বার বার মনে করিয়ে দিতে হবে তোমাকে?

মাহির বেশ ধমকের সুরে কথাগুলো বললো।ইলা কেঁদেই যাচ্ছে।কোথ থেকে কি হয়ে গেল কিছুই বুঝছে না সে।

-আমার সম্পদ তুমি বাইরের লোককে দেখাতে পারবে না।আমার সম্পদের এক চুল ও যদি বাইরের কেউ দেখে ইলা মনে রেখো সেদিন তোমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ দিন হবে।তুমি কল্পনাও করতে পারবে না।

ইলাকে ছেড়ে দিয়ে মাহির গটগট করে উপরে চলে গেল।ইলা কাঁদতে কাঁদতে বসেই পড়লো।মাহির তো সব জেনেশুনেই তাকে এনেছে।তাহলে কেন এখনো সেই বার ড্যান্সার বলে তাকে খোটা দেবে?

“ভালোবাসি বলা সহজ,
ভালোবেসে সব মেনে নেব বলা সহজ,
কিন্তু বাস্তবতা কঠিন।
এ যেন এক স্বাধীনতা যা অর্জন করার চেয়ে রক্ষা করা কঠিন।”

৬২

রাস্তার ধারের ছোট্ট চায়ের দোকানে বসে চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছে নিবিড়।এতো রাত।কিন্তু তবুও চায়ের দোকানে বেশ লোকের সমাগম।চায়ের দোকানে রাত দশটা এগারোটা অবধি আড্ডা স্বাভাবিক।সবাই খোশ গল্পে মেতে আছে।কেউ বা টিভিতে সিনেমা দেখছে।নিবিড়ের কোন দিকেই মনোযোগ নেই।তার মাথায় সন্ধ্যার ঘটনা ঘুরছে এখনো।

এই তো সন্ধ্যবেলায় এক দম্পতি এসেছিল শপিং করতে। রিক্সা থেকে নেমেই সামান্য ভাড়া নিয়ে স্বামী স্ত্রীই কি ঝগড়া লাগিয়ে দিয়েছিল।আর পাচটা লোকের মতো নিবিড় ও চায়ের দোকানে বসে সব দেখছিল।মহিলাটা কি না বাজে ব্যবহার করছিল স্বামীর সাথে।মানুষ জন মানামানি নেই।পারলে বোধ হয় লোকটার গায়েই হাত তুলতো।লোকটার চেহারা স্পষ্ট মনে আছে নিবিড়ের।দেখেই বোঝা যাচ্ছিল লোকটা এসবে অভ্যস্ত।অসহায় চেহারটা সবই জানান দিচ্ছিল।

নিবিড়ের বড্ড রাগ হচ্ছে।এতোটাই রাগ এখনো যেন তার রক্ত গরম হয়ে গেছে।

-মেয়ে মানুষ এমন ঔদ্ধত্য হবে কেন?মেয়ে মানুষ কে হতে হবে নিরব।একজন পানির মতো শীতল,সচ্ছ,সাবলীল।তাকে সব পাত্রের আকার ধারণ করতে হবে।স্বামী রাগ করলেও তার ওপর রাগ করা চলবে না।চুপচাপ স্বামীর সব চাহিদা তাকে মেটাতে হবে।ঠিক যেমনটা আমার অনু।

“আমার অনু”।শব্দ টা মনে আসতেই উঠে দাঁড়ালো নিবিড়।চায়ের কাপটা কাঠের বেঞ্চির ওপর রাখলো।

-মামা বিল কতো হলো?
-আপনে তো মামা এই নিয়ে সাত কাপ চা খাইলেন।মাঝে কেক ও নেছিলেন।পঞ্চাশ টাকা দেন।

দোকানদারের কথা শুনে প্যান্টের পকেট থেকে মানিব্যাগ টা বের করলো নিবিড়।টাকা বের করতে গিয়েই নজর পড়লো মানিব্যাগের ভেতরে অনুর একটা ছোট্ট ছবি রয়েছে।সে নিজেই রেখেছিল।কেন রেখেছিল নিজেও বলতে পারে না নিবিড়।দোকানদার কে টাকা পরিশোধ করে দিয়ে মানি ব্যাগ টাকে হাতে নিয়েই হাঁটা শুরু করলো নিবিড়।

বার বার মনে হচ্ছে কিসের জন্য আজ সে বাড়ি ফিরছে?রোজ অফিস থেকে সে বাড়ি তাড়াতাড়ি ফিরতো।অনুর ওপর সব রাগ ঝাড়তো।আবার রাতের গভীরতার সাথে নিজেও ডুব দিত অনুর গভীরতায়।আজ কাকে বকবে সে?আজ তার ঘরটা ফাঁকা ফাঁকা লাগবে।ঘরের কোনে গুটিশুটি মেরে কেউ দাড়িয়ে থাকবে না।ভয়ে থরথর করে কাঁপবে না।

“প্রেয়সীর ছবি ফোনের ওয়ালপেপারে না বরং মানিব্যাগেই সাজে।ওয়ালপেপার তো ক্ষণিক।সারাদিন ফোনের ওপর ঘাঁটাঘাঁটি চলে।মানি ব্যাগ টা যে বেশ সযত্নে প্যান্টের পকেটে থাকে।”

৬৩

বিছানা ছেড়ে উঠে দাড়ালো মাহির।মাথাটা বড্ড ধরেছে তার।ফ্রেশ হয়ে এসেই শুয়ে পড়েছিল সে।ইলার কথা মনে পড়তেই উঠে দাঁড়াতে হলো তাকে।

-উহ!আমি কি করেছি এটা!পানিজল আমার কথাতে নিশ্চয়ই কষ্ট পেয়েছে।না হলে এখনো অবধি একবার ও ঘরে এলো না ডাকতে।রাত হয়েছে।কোথায় ও?

মাহির ঘর থেকে বেরিয়ে নিচ তলাতে খুঁজতে গেল।কোথাও পেল না ইলাকে।উপরের ঘর গুলোতে খুঁজতে গিয়ে একটা ঘরের সামনে এসে থেমে গেল মাহির।ঘরের দরজাটা একটু ফাঁকা আছে।এটি সেই ঘর।যেখানে মাহির প্রথম ইলাকে এনে রেখেছিল।মাহির দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলো।ঘরের মধ্যে ও কাউকে দেখতে পেলো না মাহির।বেলকনি থেকে কান্নার আওয়াজ আসছে।কেউ ফুপাচ্ছে।মাহির বেলকনির দিকে এগিয়ে গেল।

বেলকনির কোনের দেয়াল ঘেঁষে ইলা হাত পা ছড়িয়ে বসে আছে।মাহির ইলার পাশে গিয়ে বসলো।ইলার তাতে কোনো হেলদেল নেই।সে উদাস হয়ে গ্রিলের ফাঁক ভেদ করে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।মাহির ইলা র আরো কাছে ঘেষে বসলো।ইলা এবার নড়ে চড়ে উঠলো।মাহিরের দিকে তাকালো।

-পানিজল।

ইলা ভ্রু কুচকে ঠোট উল্টে মাহিরের দিকে তাকালো।মাহির ইলাকে কাছে টেনে কপালে চুম্বন করলো।

-পানিজল আমি,,,।
-খালবিল।বিল খাল।বিল চিল।

ইলার কথা শুনে মাহির হা হয়ে তাকিয়ে আছে ইলার দিকে।

-এগুলো কি?
-খালবিল।
-কি খালবিল করছো?
-আপনি আমাকে পানিজল বলেন কেন?

ইলা ঠোট উল্টে প্রশ্ন করলো।মাহির ইলাকে তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করছে।ইলার কথাবার্তা স্বাভাবিক লাগছে না তার।

-বলুন বলুন।
-ভালোবেসে বলি।কেন?
-আমি পানিজল হলে আপনি খালবিল।
-কিহ!
– আচ্ছা কবে হবে?
-কি কবে হবে?
-বাচ্চা।
-বাচ্চা!

ইলা মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিল,

-হুম।তিন হালি বাচ্চা।আমার এতো গুলো বাচ্চা হবে।আমি ওদের সববাইকে বিয়ে দেব।তারপর ওদের বাচ্চা হবে।আমরা হানিমুনে সাজেক যাব।

মাহির ইলার কথা শুনে যেন আকাশ থেকে পড়লো।

-তোমার কি হয়েছে বলোতো?কি সব বকছো?

মাহিরের কথা শুনে ইলা ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কেঁদে দিল।মাহির বোকা বনে গেল ইলার কান্ডে।

-কাদছো কেন?
-আপনি আমাকে বকেন কেন?
-সরি।আসলে তোমাকে বোঝাতে পারব না কেন,,,।
-চুমু খাব।
-কিহ!

ইলা দাঁত কেলিয়ে হেসে দিল।আর এদিকে মাহিরের চোখ খুলে আসার উপক্রম।

-দেন না।
-এই তোমার কি হয়েছে?
-আমার একটা বর ছিল জানতো না তো কেউ, সেই বরটা খারাপ ছিল জানতো না তো কেউ।
-কি খারাপ করেছি আমি?
-আমাকে একটুও ভালোবাসেন না ওর মতো।
-কার মতো?
-আমার ঝড়ো হাওয়ার মতো।

ঝড়ো হাওয়া কথাটা শুনে মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে গেল মাহিরের ।ইলা বলতে শুরু করলো,

-আমার ঝড়ো হাওয়া।কেন চলে গেল বলুন তো?ও চলে গেল সাথে আমার সব কিছু ফিরিয়ে দিয়েও আবার নিয়ে গেল।আচ্ছা খালবিল একটা কাজ করবেন।
-কি?
-ওকে গুগলে সার্চ দিয়ে খুঁজে এনে দেবেন?আমি ওর কাছে চলে যাব।
-কোথাও যাবে না তুমি?উল্টা পাল্টা কথা বন্ধ করো।নইলে খবর আছে তোমার।
-জানেন আমার একটা স্বপ্ন ছিল।
-কি?
– না আপনাকে বলব না।আমি শুধু ঝড়ো হাওয়াকেই বলব।
-এই ঝড়ো হাওয়াটা কে ইলা?
-আমার ঝড়ো হাওয়া।

ইলা পাশ থেকে আবার বোতল টা নিয়ে তাতে মুখ দিল।মাহিরের চোখে এবার আরো বিস্ময়।এতক্ষণে মাহির বুঝলো কেন ইলা উল্টা পাল্টা বকছিল।

-ওয়াইন!ওহ শিট।

৬৪

ঘুমের মধ্যে বড্ড পানির পিপাসা লেগেছে অনুর।নাহ আর সহ্য করা যাচ্ছে না।অনু কাথা সরিয়ে শোয়া থেকে উঠে বসলো।পাশে তুলি বেশ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।তুলিকে এ অবস্থায় ডাকা ঠিক হবেনা ভেবে অনু নিজেই ধীরে ধীরে খাট থেকে নামলো।দরজা খুলে বাইরে এলো।বসার ঘরে একটা ডিম লাইট টিপ টিপ করে জ্বলছে।অনু লাইট জ্বালানোর জন্য সুইচ খুঁজতে লাগলো।পেলো না।এ বাড়ির কোথায় কি কিছুই সে জানে না।অনু দেয়াল ধরে ধরে পা টিপে টিপে রান্না ঘরের দিকে যেতে লাগলো।

হঠাৎ করেই থেমে গেল।ঢোক গিললো ভয়ে।আয়তাল কুরসি পড়া শুরু করেছে অনু।একটা আলো যেন ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে তার দিকে আলো টা ওপর থেকে নিচে পড়ছে।মনে হচ্ছে যেন শূন্যে ভাসছে।অনু ভয়ে দু পা পিছিয়ে গেল।আলোটা যেন এগুতেই থাকলো।অনু আর পারলো না।

ভয়ে চিৎকার করে উঠলো,

-ভূত,ভূত,,,,,,।

চলবে———-

#রৌদ্র_কুয়াশা
Suvhan Årag(ছদ্মনাম)
পর্ব ২২

অনু চোখ বুজে জোরে চিৎকার শুরু করলো।কিছুক্ষণ চিৎকার করার পর কোনো সাড়াশব্দ পেলো না অনু।উল্টো তার মনে হচ্ছে যে ঘরের ভেতর যেন সূর্য উঠেছে।অন্ধকার ঘরটাতে যেন আলোর বিচ্ছুরণ হচ্ছে।ঘুম থেকে হঠাৎ করে উঠলে চোখে আলো পড়লে যেমন অনুভূতি হয় আর কি।অনু চোখ খুললো।সামনে তুলি অবাক চোখে অনুর দিকে তাকিয়ে দাড়িয়ে আছে।তার পাশেই এক জোড়া চোখ বিরক্তি নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে।

-কি হয়েছে অনু?তুমি এভাবে চিৎকার করলে কেন?

তুলি অনুর কাছে এগিয়ে গিয়ে অনুর কাঁধে হাত রাখলো।অনু সামনের দিকে তাকিয়ে আরো চুপসে গেছে।কালো সাদা চেকের ট্রাউজার পড়ে দাড়িয়ে আছে আরিয়ান।গায়ে কালো রঙের টি শার্ট।চুল গুলো এলোমেলো।অনু আরো অবাক হলো আরিয়ানের হাতের দিকে তাকিয়ে।আরিয়ানের হাতে ফোন।ফোনের ফ্লাশ অন করা।আর আলোটা মেঝেতে পড়ছে।অনুর আর বুঝতে বাকি রইলো না শূন্যে কেন আলো ভাসছিল।

তুলি অনুকে চুপ থাকতে দেখে আলতো করে ধাক্কা দিয়ে বললো,

-অনু!কিছু তো বলো?

অনু একবার তুলির দিকে তাকিয়ে মাথা নিচু করে ঢোক গিলে বললো,

-ভূঊত।ইয়ে মানে ভয় পেয়েছিলাম।
-কিহ!আমাদের বাড়িতে ভূত!তুমি অন্ধকারে ভয় পেলে আমাকে ডাকতে পারতে!আর লাইট কেন অন করো নি।
– আমি এতো অন্ধকারে সুইচ খুঁজে পাইনি।আর তুমি এ শরীর নিয়ে ঘুমোচ্ছিলে তাই আর ডাকিনি।
-তুমিও না।কিন্তু ভয় পেলে কি করে ?আর ভাইয়া তুই এখানে কি করছিস?

তুলির প্রশ্ন শুনে আরিয়ান একরাশ বিরক্তি নিয়ে অনুর দিকে তাকিয়ে বললো,

-আমি রাতে কফি খাই তুই তো জানিস।অনেক রাত অবধি জেগে থাকি।রান্না ঘরে গিয়ে লাইট জ্বালাতে ই বাল্ব কেটে গেল।ড্রয়িং রুমের লাইট ও অন ছিলো না।তাই ফোনের টর্চ দিয়ে লাইট অন করতেই আসছিলাম।এর মধ্যে চিৎকার শুরূ।

তুলি একবার অনুর দিকে তাকাচ্ছে।আরেকবার আরিয়ানের দিকে।তুলির আর বুঝতে বাকি রইলো না কি থেকে কি হয়েছে।তুলি হো হো করে হেসে উঠলো।

-যাই বলিস ভাইয়া।মাঝরাতে ভালোই সার্কাস দেখালি।
-তোর কাছে এটা সার্কাস মনে হচ্ছে!অসহ্য কর পরিস্থিতি।তুই জানিস আমিই ভয় পেয়ে গেছি।হুট করে কেউ এভাবে চিৎকার করলে এই রাতে কি অবস্থা হয় বোঝ!

অনু খুব লজ্জিত নিজের কাজে।এই রাতে কি একটা ঘটনা ঘটিয়ে ফেললো সে।

-আমি দুঃখিত।আসলে এভাবে অন্ধকারে মাঝ বরাবর লাইট জ্বলছে দেখে ভয় পেয়েছিলাম।

অনু মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে।এমনিতেই হুট করে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে এখানে সে।তার মধ্যে এখানেই এদের ও বিরক্তি তে ফেললো।

অনুর কথা শুনে আরিয়ান অনুর দিকে তাকালো।গভীর রাতে এতো কিছুর মাঝে ভুলেই গেছে মেয়েটা তার ঘোমটা খোলা।নয়তো আরিয়ান এখনো অবধি অনুর মুখটাও ভালো করে দেখেনি।মাঝখানে সিথি কাটা পেছনের মোটা বিনুনিটা কাধের এক পাশে আছে।চুলগুলো ও অনেকটা এলোমেলো।অনুর বয়স এমনিতেই অনেক কম।বয়স যেমন ছোট চেহারায় ও কম বয়সী ছাপ।দেখে মনে হচ্ছে আশির দশকের যুবতী মেয়ে।তখন যেমন মেয়েরা শাড়ি পড়ে চলাচল করত।এভাবে মাথায় সিথি কেটে বিনুনি করে।আধুনিকতার ছিটেফোঁটাও তখন ছিল না।অনুকে ঠিক তেমনই লাগছে আরিয়ানের কাছে।

আরিয়ান গম্ভীর সুরে বললো,

-তুলি তোরা ঘরে যা।ঘুমিয়ে পড়।রান্না ঘরের বাল্ব টা আমি ঠিক করে দিচ্ছি।
-ভাইয়া তুই না কফি খাবি।উঠেছি যখন চল তোকে কফি করে দেই।
-না।এই শরীর নিয়ে যেতে হবে না।আমি পারব।
-আরে জেগেই তো গেছি।এখন এতো সহজে ঘুম আসবে না আমার।
-বলেছি লাগবে না।তো লাগবে না।যা বলছি।
-যাচ্ছি।

তুলি ঘরের দিকে চলে গেল।অনু ঘরে যাওয়ার জন্য মোড় নিতে যাবে তার আগে আরিয়ান পিছু ডাকলো।

-এই যে শুনুন।

অনু থেমে গেল।পেছন থেকেই বললো,

-জি।
-আপনি রান্নাঘরে কেন এসেছিলেন?
-পানির পিপাসা লেগেছিল খুব।এজন্য।
-ওখানে দাঁড়ান তো।

অনু আরিয়ানের কথা মতো মাথা নিচু করে দাড়িয়ে রইলো।আরিয়ান দ্রুত পা চালিয়ে রান্নাঘরের দিকে গেল।একটা পানির বোতল এনে অনুর দিকে পেছন থেকে এগিয়ে দিল।

-এটা নিয়ে ঘরে রাখুন।

অনু মাথা নাড়িয়ে আরিয়ানের থেকে বোতলটা নিল।

-সব সময় হুতোশভরে না হেঁটে নিজের দিকেও খেয়াল রাখবেন।যাকে যেটাতে মানায় তার স্থান সেখানে।

আরিয়ান আর কিছু না বলে দ্রুত পা চালিয়ে নিজের ঘরে চলে গেল।অনু এখনো দাড়িয়ে আছে।আরিয়ানের কথা গুলো বেশ ভাবাচ্ছে তাকে।হুট করেই অনুর মাথায় হাত চলে গেল।অনু জ্বিভ কামড়ে পেছনে তাকালো।কিন্ত আরিয়ান ততক্ষণে নিজের ঘরে চলে গেছে।

-এই যাহ!আমার ঘোমটা!

অনু এবার বুঝতে পেরেছে আরিয়ানের কথার অর্থ।

৬৫

“আমি নদী তুমি জল
আমি হাস তুমি বাঁশ
আমি গরু তুমি মরু
আমি পাগল তুমি ছাগল”

-সুন্দর না?

মাহির ওয়াইন এর বোতল টা হাতে নিয়ে অসহায় দৃষ্টিতে ইলার দিকে তাকিয়ে আছে।ইলা পাগলের মতো এটা ওটা বলেই যাচ্ছে।ইলা মাহিরকে ধরে জোরে ঝাকালো ।

-বলুন না।আমার গান কেমন হয়েছে?
-খুব ভালো।
-খাল বিল।
-কি!
-আমার খিদে পেয়েছে।
-এখনো খিদে আছে!এই সব ছাইপাশ খাওয়ার পর!

মাহির ইলার সামনে ওয়াইনের বোতল টা ধরে দেখালো।

-ওটা তো জুস।শরবত।খুব টেস্ট।দিন না।আরেকটু খাব।

ইলা হাত পারলো মাহিরের দিকে।

-হ্যা আমি তো পাগল তোমাকে দেই এখন।সেই কখন থেকে বসে বসে পাগলামি করছো।এবার পুরো রাস্তায় চলে যাবে।
-আমি খাব।খিদে পেয়েছে।

ইলা ঠোট উল্টে মাহিরকে বললো।বেচারা মাহির তো সেই বিরক্ত ইলার কান্ডে।মাহির নিজে উঠে দাঁড়ালো।তারপর ইলাকে কোলে তুলে নিল।কোলে উঠেই ইলা আরো হাত পা ছুড়ছে।

-লাফাচ্ছো কেন?
-কি মজা আমি কোলে উঠেছি।
-উহ!আমিতো ভুলেই গিয়েছিলাম আমি কাকে কি বলছি।

মাহির ইলাকে নিজের ঘরে নিয়ে গিয়ে খাটের ওপর বসিয়ে দিল।

-এখানেই বসে থাকবে।আমি খাবার নিয়ে আসছি।
-আচ্ছা।

মাহির বেরিয়ে গেল।একটু পর খাবার নিয়ে ঘরে এসে দেখে ইলা নেই।মাহির খাটের পাশের ছোট্ট টেবিলে প্লেট রেখে ইলাকে খুঁজতে লাগলো।

-আরেহ!গেলো কোথায়?

হঠাৎ করেই মাহিরের কানে পানির শব্দ ভেসে আসলো।মাহির খেয়াল করলো ওয়াশরুম থেকেই আসছে।ওয়াশরুমে দরজা আধ খোলা।লাইট জ্বালানো।মাহির দৌড়ে ওয়াশরুমে ছুটে গেল।ওয়াশরুমে ঢুকেই মাহিরের চোখ চড়ক গাছ।

ইলা বাথটাবের ভিতর শুয়ে পানির ভেতর হাত পা নাড়িয়ে খেলছে।

-ইলললা!এসব কি?

মাহিরের গলা শুনে ইলা দরজার দিকে তাকালো।

-আপনি এসে গেছেন।আমি কখন থেকে ডাকছি আপনাকে।সেই কখন বললাম আমি কক্সবাজার ঘুরতে যাব।আপনি তো এলেন না।তাই কুয়াকাটা এসে নিজেই চন্দ্রবিলাস করছি।

মাহিরের এবার গলা ছেড়ে কাদতে মন চাইছে
সারাদিন এতো খাটুনি।এর মধ্যে ইলার পাগলামি।

-ইলা!তোমার তো খবর আছে আজ।

মাহির রেগে গিয়ে ইলার দিকে তেড়ে গেল।

৬৬

সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই নিবিড়ের মাথা বিগড়ে গেল।চিৎকার দিতে শুরু করলো নিবিড়।

-অনু।অনু।এই মেয়ে কোথায় তুই?সামনে আয় বলছি।দশটা বেজে গেছে।আমার অফিসের টাইম চলে গেছে।ডাকিস নি আমাকে।আজ তো তুই শেষ।

নিবিড় রেগেমেগে উঠে পড়লো।অফিস বাদ।আজ তো অনুকে সে দেখেই ছাড়বে।খুন ই করে ফেলবে তাকে।দরজা খুলে চিৎকার দিতে দিতে বাইরে চলে গেল নিবিড়।

গ্যাসের চুলায় লোহার তাওয়ার ওপর রুটি সেকছেন ইসমাত বেগম।নিবিড়ের চিৎকার শুনেই রুটিগুলো গরম করতে এসেছেন তিনি।না হলে আটটার মধ্যে নিজের সকালের খাবার শেষ করেন ইসমাত বেগম।

গলা ছাড়তে ছাড়তে নিবিড় রান্নাঘরে চলে গেল।

-আম্মাজান।আম্মাজান।
-বলো।কি হয়েছে?
-আম্মাজান সব আপনার জন্য হয়েছে।আপনাকে বার বার বলেছি পায়ের জুতো মাথায় তুলতে নেই।আপনার প্রশ্রয় পেয়ে অনু এতো ঘাড়ত্যাড়া হয়েছে।আজ তো ওকে আমি উচিত শিক্ষা দেব।
-কি করেছে অনু?
-আম্মাজান।দশটা বাজে।
-তো?
-আমার অফিস সাড়ে আটটায়।আর ঐ অনুর বাচ্চা এখনো ঘুম থেকে ডাকেনি আমাকে!
-নিবিড় তুমি কিছু ভুলে যাচ্ছো না তো?
-মানে?কি ভুলব?
-অনু চলে গেছে নিবিড়।

ইসমাত বেগমের কথা শুনে চুপ হয়ে গেল নিবিড়।এতক্ষণে তার খেয়াল হলো অনু তাকে ছেড়ে চলে গেছে।

-অনু নেই এখানে।তুমি ও দরজা বন্ধ করে রেখেছিলে।কে ডাকবে তোমাকে?
-অনু ছিল তো।ওই তো ডাকতো।
-স্বীকার করছো তো অনু তোমার অভ্যাস ছিল।
-মানে?
-তোমরা পুরুষ মানুষ বড়ই অদ্ভুত।স্ত্রীকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করো।তার দোষ ধরো সারাদিন।একবার কি চোখ বুজে ভাবো কে তোমাকে অফিসের কথা মনে করিয়ে দেয়?অফিসের ড্রেসটা কে গুছিয়ে দেয়?কে তোমার পরিবারের খেয়াল রাখে?উহুম।কখনো ভাবো না।শুধু নিজেদের টাই দেখো।
-আম্মাজান।অনু কোথায় গেছে?আপনি কি জানেন?
-জানিনা।জানতেও চাই না।শুধু এটুকু জানতে চাই ও খুব ভালো আছে কি না।
-আম্মাজান!
-অভ্যাস খুব খারাপ জিনিস।অনু তোমার অভ্যাস হয়ে গেছে নিবিড়।এটা কাটানোর চেষ্টা করো।সে তোমাকে অনেক কিছুই দিয়েছে।কিন্তু তুমি তার যোগ্য না।
-আম্মাজান!
-যেটা সত্যি সেটা সত্যি।তুমি চাইলে সত্যি কখনো মিথ্যা হবে না।মিথ্যা কখনো সত্যি হবে না।যতই অস্বীকার করো আড়াল করো।

৬৭

সোফার ওপর বসে চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছে মাহির।সামনে ইলা অপরাধীর মতো দাঁড়ানো।

-আমি এখন বের হব ইলা।কথা না বলে যাও এখন।
-আমি সত্যি জেনে বুঝে করিনি।এ রকম বোতল তো বারেও দেখেছি।এ বোতলে তো জুস ই পেতাম।আমি সেটা ভেবে খেয়েছি।
-তুমি যাবে এখান থেকে?
-আপনিই বলুন এ বাড়িতে এটা কিভাবে এলো।আপনি কি এসব খান?
-কিহ!কখনো না।
-তাহলে?
-ইশতিয়াক ছাড়াও আমার এখানে আরেকজন কেয়ার টেকার ছিল।ঐ ছেলেটা লুকিয়ে এখানে মদ এনে খেতো।আমি জানতাম না।ইশতিয়াকের সামনে ধরা পড়ে এটা।ছেলেটা পুরো বাড়ি জুড়ে মদ এখানে ওখানে লুকিয়ে রাখত।যাতে আমি টের না পাই।ওকে কাজ থেকে ছাঁটাই করার পর পুরো বাড়ি থেকে এগুলো খুঁজে ফেলে দিয়েছিলাম।কে জানে এই বেলকনির কোনে একটা থেকে যাবে!আর এই রকম ঘটনা ঘটবে।
-আমি ইচ্ছে করে করিনি।জানলে কখনো এমন করতাম না আমি।
-আমি কথা বাড়াতে চাই না ইলা।

মাহির কাপটা সামনের টি টেবিলের ওপর রেখে উঠে দাঁড়ালো।বেরোনোর উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো।তার আগেই ইলা এসে মাহিরের হাত ধরে ফেললো।

-কি হচ্ছে কি ইলা?
-ইলা কেন বলছেন?আপনার মুখে এটা মানায় না।
-কেন মানাবে না?
-আপনিই ভালো জানেন সেটা।

ইলা ছলছল চোখে মাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে।মাহির নিজেকে শান্ত করে ইলার দিকে ফিরলো।সে কখনোই ওয়াইন জিনিসটাই পছন্দ করে না।তার মধ্যে ইলা এমন করাতে কাল রাত থেকেই যথেষ্ট মাথা গরম হয়ে আছে তার।

-হাত ছাড়ো।
-সরি।
-হাত ছাড়ো।
-সরি।আপনি বিশ্বাস করুন,, ।
-বিশ্বাস করি বলেই এখানে আমার সামনে আমার বউ হিসেবে আছো।
-এমন করছেন কেন তাহলে?
-আমার অফিস আছে।রাতে এসে কথা বলব।
-না এখনি বলবেন।
-ইলা কেন বাচ্চাদের মতো ব্যবহার করছো?বলছি না অফিসে যেতে হবে আমাকে।

মাহিরের ধমক শুনে ইলা মাহিরের হাত ছেড়ে মাহিরের কলার ধরে বসলো।

-আপনি বাচ্চাদের মতো ব্যবহার করছেন।আমি না।এই ব্যাটা তোর সমস্যা কি হ্যাঁ?এই বল তোর সমস্যা কি?খুব তো নাটক করে বলিস তোমার চোখের পানি দেখতে পারিনা।হেন পারিনা।তেন পারিনা।তাহলে?এই তোর বউ আগে না তোর অফিস আগে?আগে এই বস কে সামলাবি তারপর যেখানে খুশি যাস।

ইলার কথা শুনে মাহিরের চোখ বড় বড় হয়ে গেল।ইলার আপাতত সেদিকে খেয়াল নেই।সে এতোটাই রেগে আছে এখন।

-কে বস?
-আমি। আমি।কেন দেখিস না আমাকে?চোখ কি গাউছীয়া মার্কেটে বেচে এসেছিস?সেই ধরে অফিস অফিস করছিস।এই আমি তোর বউ।আগে আমি।তারপর তোর ঐ অফিস।অফিস টাকে পুরো সতীন বানিয়ে রেখেছে আমার। সারাদিন ঐটা নিয়েই পড়ে থাকবে।রাত করে বাড়ি ফিরবে।আমি যে সারাদিন একা বাড়িতে থাকি।সেই খেয়াল আছে তোর?আমার রাতে ভয় করে তুই জানিস?এর জন্য কাথা মুড়ি দিয়ে টিভি চালিয়ে বসে থাকি।

মাহির ইলার চোখে চোখ রেখে ইলাকে একটু কাছে টেনে নিল।নিজের সাথে জড়িয়ে ধরলো।মাহিরের এমন কাজে ইলা ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে।

-কি?
-খুব মিস করছিলাম।
-কি?
-এতোদিন।
-কি?
-সেই আগের পানিজলকে।আমি তো এই পানিজলকেই প্রতি মূহুর্তে চাই যে আমাকে শাসন করবে।ছোট্ট করে ভালোবাসা মাখা বকা দেবে।কষ্ট হলে আমার বুকে লুটিয়ে পড়বে।খুশি থাকলেও সেই আমার বুকেই লুটিয়ে পড়বে।এই বউ টাই চাইছিলাম আমি।

মাহিরের কথা শুনে ইলা নিজের মধ্যে থেকে যেন বেরিয়ে আসলো।লজ্জায় চোখ নামিয়ে নিল।মাহিরের কলার থেকে হাত নামাতে গেলেই মাহির হাতদুটো ধরে ফেললো।

-উহুম।এতো সময় তো দিতে পারব না।কবে বুঝবে আমাকে?পানিজল একটু তাড়াতাড়ি বোঝো না আমাকে।একটু তাড়াতাড়ি।পানিজল এমন না হয় তোমার বোঝার সময় ঠিকই আসলো কিন্তু আমার সময়ের কাটা থেমে গেল।তোমার বোঝাটাও আমাকে তখন আনতে পারবে না।হারিয়ে যাব অতলে।

মাহিরের কথা শুনে এক অজানা ভয় গ্রাস করলো ইলার মনে।ইলা ভয়ার্ত দৃষ্টিতে মাহিরের দিকে তাকালো।

৬৮

-স্যার আপনার থেকে যা চাই দেবেন।
-অবশ্য ই দেব।আমার ছোটো ভাই ই তো হোস।
-কখনো যদি আপনার প্রিয় কোন জিনিস চেয়ে বসি।দেবেন তো?

প্রিয় জিনিস কথা টা শুনে চমকে গেল আরিয়ান।তার কি আদৌ কোনো প্রিয় জিনিস আছে?কই নাতো।আরিয়ান ভেবে উওর দিল,

-প্রিয় থাকলে অবশ্যই দেব।
-কথা ঠিক তো।
-একদম।

চলবে———–

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here