#ইস্ক_সুফিয়ানা
#পর্ব – ০৩
#লেখনীতে : #Aloñe_Asha (ছদ্ম নাম)
#Kazi_Meherin_Nesa
মেহেদী রাঙা হাতজোড়ার দিকে তাকিয়ে আছি আমি, গাল বেয়ে সরু হয়ে গড়িয়ে পড়ছে চোখের পানি..চাচীর জোরাজুরি তে একটা হলুদ শাড়ি গায়ে জড়িয়েছি কারণ একটু বাদেই গায়ে হলুদ আর কাল সন্ধ্যায় আমার বিয়ে..জানিনা কেনো তবে খুব কষ্ট হচ্ছে, ছোটবেলায় স্বপ্ন দেখতাম লাল টুকটুকে বউ সেজে বসে থাকবো আমি আর পঙ্খিরাজ ঘোড়ায় চেপে আমার রাজকুমার এসে ঘোড়ায় চাপিয়ে নিয়ে যাবে আমাকে কোনো এক সুন্দর রাজপ্রাসাদে..কিন্তু সে তো শুধু আমার স্বপ্ন হয়েই থেকে গেলো..একটু বাদেই চাচা আমার ঘরে এলেন, অনেক দেখে চোখ মুছে বিছানা থেকে উঠে দাড়ালাম আমি..সূক্ষ্ম একটা হাসি দিলাম
“আমাকে কেমন লাগছে?”
আমার কথায় চাচা অসহায় দৃষ্টিতে তাকালেন, তারপর মাথায় হাত বুলিয়ে দেন
“খুব সুন্দর লাগছে রে মা, আজকে তোকে দেখে ভাবির কথা মনে পড়ে গেলো”
ঠোঁট চেপে ধরে আমি নিজের কান্না লুকানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি কিন্তু পারছি না, আবারও একটু একটু করে অশ্রুধারা বইতে শুরু করলো আমার, চাচা তখন আমার দু হাত জোড় করে দাড়ালেন
“আমাকে ক্ষমা করে দিস মা, তোর চাচী যে কবে বাড়ির পেপারগুলো সিন্দুক থেকে নিয়ে এই কান্ড করেছিলো আমিও জানতে পারিনি,আগে জানলে ওকে আটকাতাম আমি”
সাথে সাথে চাচার হাত নামিয়ে দিলাম আমি
“চাচা এ তুমি কি করছো, আমার সামনে এভাবে হাত জোড় করাটা তোমাকে মানায়না, এরকম করো না”
“না রে মা, আমি তোকে বড় করেছি ঠিকই, তোর দায়িত্ব নিয়েছি কিন্তু আজ যখন সবথেকে বড় দায়িত্ব পালনের সময় এলো, আমি আর পারলাম না”
দীর্ঘশ্বাস ফেলে আমি বললাম
“তোমার কোনো ব্যর্থতা নেই চাচা, আর চাচী হয়তো কোনো দরকারেই টাকাগুলো নিয়েছিলো, পরে খোঁজ নিয়ে দেখলে হয়তো জানবে তোমাদের ভালোর জন্যেই..আমার আর কি, একদিন না একদিন তো এই বাড়ি ছেড়ে যেতেই হতো আমাকে”
“এভাবে আমি তোকে বিদায় করতে চাইনি রে, চেয়েছিলাম ধুমধাম করে তোর বিয়ের আয়োজন করবো, একটা ভালো ছেলের হাতে তুলে দেবো তোকে কিন্তু তার কিছুই হলো না”
চাচার বিলাপ শুনে নিজের থেকে বেশি কষ্ট ওনার জন্যে হচ্ছে, চাচী ওনার কথার কোনো দাম দেয়না, উনি আমাকে সাপোর্ট করেন সেটাও সহ্য করতে পারেন না, আমার জন্যে ওনাকেও অনেক কথা শুনতে হয়েছে তাই ওনার এই অসহায় কথাগুলো বুঝতে কষ্ট হয়নি আমার
” আমি ব্যর্থ হয়ে গেছি রে রুহি, ক্ষমা করে দিস আমাকে”
আমি কিছু না বলে চাচাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলাম, উনিও আমার মাথায় হাত বুলিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করলেন আমাকে, সত্যিই আজ অনুভব হচ্ছে যাদের মা বাবা নেই তাদের মতো দুঃখী আর এই জগতে দুটি নেই তবে নিজেকে এই ভেবেই শান্তনা দিয়েছি আমি তাদের জন্যে এই ত্যাগ করছি যারা আমাকে জীবনের এতগুলো বছর লালন পালন করেছেন..ওদিকে অনেকটা সময় পেরিয়ে গেলেও আরমান কোনো খবর পাচ্ছে না, সিফাত সেই যে গেছে এখনও ফেরেনি, আরমানের ফোন ও ধরছে না বিধায় মারাত্মক রেগে আছে ছেলেটা..সকাল থেকে কম করে দশবার ফোন করেছে কিন্তু সিফাতের ফোন সেই বন্ধ..কিছুটা বিরক্ত হয়ে এবার বিছানার ওপর ফোন ছুড়ে মারে ও
“ড্যাম ইট! ইডিয়টটা কাজের টাইমে ফোন বন্ধ করে রেখেছে কেনো? তাহলে আমি জানবো কিভাবে কি হচ্ছে? তার ওপর এই রুহি ও ফোন বন্ধ করে রেখেছে..বিয়ে বলে ফোন বন্ধ রাখতে হয় নাকি?”
ক্রমশ চিন্তা বেড়ে যাচ্ছে আরমানের, বারবার মনে হচ্ছে মেয়েটা ঠিক আছে তো, ওর বাড়িতে সব ঠিক আছে তো? ওর কোনো গুরুতর সমস্যা হলো না তো? এরকম নানান চিন্তা মাথায় নিয়ে রুমের মধ্যে পায়চারি করছে ছেলেটা..একটু বাদে আবারও ফোন নিয়ে সিফাত আর রুহি দুজনকেই ফোন করে কিন্তু ওপাশ থেকে আবারও উত্তর এলো “সরি, দ্যা ইউ হ্যাভ ডায়ালড ইজ কারেন্টলি সুইচ অফ”..মাথা গরম হয়ে যায় আরমানের
“এই সিফাতকে ১২ ঘণ্টা হলো একটা খবর নিতে পাঠিয়েছি আর তাতে এতো টাইম লাগে? এর থেকে আমি নিজে গেলেই বেটার হতো, যদি সত্যিই কোনো সিরিয়াস ব্যাপার থেকে থাকে তাহলে অ্যাট লিস্ট হেল্প তো করতে পারতাম”
বিকেলে ড্রইং রুমে বসে টিভি দেখছিল আরমান, মিনাল ওর পাশে বসে ভিডিও গেমস খেলছে..আরমানের মা টেবিলে কফি কাপ দেখে বসলেন, কিন্তু উনি দেখলেন টিভির চ্যানেল চেঞ্জ করছে ঠিকই আরমান অন্যদিকে তাকিয়ে কিছু ভাবছে
“কি হয়েছে তোর? খাচ্ছিস না কেনো?”
মায়ের কথা শুনে ধ্যান ভাঙ্গে আরমানের, টিভি বন্ধ করে দিয়ে কফি কাপ হাতে নিয়ে থমথমে গলায় বলে ওঠে
“আমার ম্যানেজার, আই মিন রুহির বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে, কালকে এসেছিলো নিউজটা জানাতে, তোমরা বাড়িতে ছিলে না”
আরমানের মা খুশি হয়ে যান খবরটা শুনে কারণ রুহিকে উনি অনেক ভালো জানেন, মিনাল ও অনেক ভালোবাসে ওকে..
“সে কি? কবে ঠিক হলো? বললি না তো কিছু..কবে বিয়ে বল, আমি আর মিনাল না হয় যাবো রুহির বিয়েতে”
“হ্যা ভাইয়া, আমি তো আগে থেকেই ঠিক করেও রেখেছিলাম রুহি আপুর বিয়েতে কি দেবো, কত্তো ভালো রুহি আপু তাইনা মা?”
“সে আর বলতে? মেয়েটা বেশ নম্রভদ্র আর আরমানকেও তো সবসময় সাহায্য করেছে, মেয়েটার এই খুশির দিনে সামিল হবো না আমরা সেটা হয়?”
যেখানে রুহির বিয়ের কথা শুনে নিজে চিন্তায় মরছে সেখানে মা আর বোনের এক্সাইটমেন্ট দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছে আরমান, কিছুটা বিরক্তি নিয়ে ও বলে
“তোমরা এতো এক্সসাইটেড কেনো হচ্ছো ওর বিয়ের কথা শুনে? তাছাড়া ও তো আমাকে ইনভাইট ও করেনি”
মিনাল মুখ ভেংচিয়ে বলে
“তোকে করেনি তাতে আমাদের কি? আমাদের তো আর বলেনি যেতে পারবো না, কিন্তু তোকে এতো ডিস্টার্ব লাগছে কেনো বলতো?”
“তোকে জ্যোতিষগিরি করতে হবে না, চুপ করে বসে থাক”
“এই, কি এখনও কথায় কথায় ঝগড়া করিস তোরা? শান্ত হয়ে থাক..আমি একটু রান্নাঘর থেকে আসছি”
আরমানের মা উঠে গেলেন, তখনই সিফাতের ফোন এলো, আরমান দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে ফোন রিসিভ করে ইশারায় মিনালকে ওখান থেকে যেতে বললো, মিনাল ও আর কথা না বাড়িয়ে উঠে গেলো
“ফোন বন্ধ করে রেখেছিলি কেনো তুই ইডিয়ট? জানিস না আমি ওকে নিয়ে কতোটা চিন্তায় আছি, তোকে কি আমি বলেছি ইনফরমেশন আনতে গিয়ে ফোন বন্ধ করে রাখবি?”
“ব্রো! আমাকে বকাবকি পড়ে করিস আগে পুরো কথা শোন..কেসটা অনেক গুরুতর, আর এই সবকিছুর মুলে আছে রুহির চাচী..ওনার জন্যেই সব হচ্ছে”
সিফাত এর কথায় শান্ত হয় আরমান
“রুহির চাচী ওকে জোর করে বিয়ে দিচ্ছে?”
“তাই ধরে নে..উনি নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্যে রুহানির জীবন নষ্ট করতে উঠেপড়ে লেগেছে”
“খুলে বল সবকিছু”
সিফাত আরমানকে জানায় সবকিছু, সবশেষে আরমান বুঝতে পারে রুহির চাচী নিজের লোভে বশবর্তী হয়ে ভুল করেছে আর তারই প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ রুহির জীবন শুলে ছড়াচ্ছেন..সবটা শোনার পর কিছুক্ষণ চুপ থাকে আরমান তারপর গম্ভীর স্বরে বলে..
“কালকে বিয়ের আগেই ওই বাড়ির পেপারস যেভাবেই হোক হাতে চাই, রুহিকে যাতে বিয়ে না করতে হয় তার জন্যে বাড়ির পেপারস গুলো দরকার, বুঝেছিস? একটু দেরি হলেই কিন্তু রুহির লাইফ স্পয়েল হয়ে যাবে”
“হোয়াট? একটা অন্য লোকের বাড়ি থেকে রুহির চাচার বাড়ির পেপারস কালেক্ট করা তো ভীষণ রিস্কি ব্যাপার! এসব কেনো করবো আমরা? দেখ ভাই ফেঁসে গেলে কিন্তু বিপদ হয়ে যাবে”
“তুই না পারলে বলে দে, আমি কোনো ওয়েতে কাজটা করিয়ে নেবো কিন্তু করবো..রুহির বিয়ে ওই ছেলের সাথে হতে দেবো না”
সিফাত এর কোনো ইচ্ছেই নেই এসব জড়ানোর, আরমান কেনো এসব ঝামেলায় জড়াতে চাইছে বুঝতে পারছে না ও তবে বন্ধুকে একা ছাড়তে চায় না তাই সাহায্য করতে রাজি হয়ে যায় ও
রাতে অনেক কষ্টে চোখ দুটো জোর করে চেপে ধরে রেখেছিলাম, ঘুম আসছিলো না..অনেক চেষ্টার পর যেই চোখে একটু ঘুম ধরেছে অমনি আমার জানালায় মৃদু ঠকঠক শব্দ শুনতে পেলাম..হকচকিয়ে উঠে বসলাম আমি, ঘড়ির দিকে তাকিয়ে রাত ১২ টার বেশি বাজে দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে গেলাম, এতো রাতে আমার জানালায় আওয়াজ কিসের? আমার রুমটা আবার পেছনের দিকে বিধায় ওদিকে বাইরে ঘুটঘুটে অন্ধকার, বিকেলেই জানালা বন্ধ করে রাখি আমি..আওয়াজটা যেনো থামছেই না, বারবার হচ্ছে, ভয়ে আমি ঢোক গিললাম, মনে মনে ভাবলাম..
“এখন এরকম আওয়াজ কেনো হচ্ছে? ভূত, না না ভুত বলে কিছু হয় না, তাহলে কি চোর এলো? হায় আল্লাহ এ আবার নতুন কোন বিপদে ফেললে তুমি!”
হাত পা গুটিয়ে বসে থাকলে তো কাজ হবেনা, তাই সাহস করে উঠলাম বিছানা থেকে, ঘরে একটা ফুলদানি ছিলো ওইটা হাতে নিয়ে আল্লাহ আল্লাহ করতে করতে পা টিপে টিপে জানালার কাছে গেলাম, আজকে চোর ব্যটার মাথা এই ফুলদানি দিয়ে ফাটিয়ে দেবো, কিন্তু বন্ধ জানালার সামনে দাড়াতেই আওয়াজটা ভালোভাবে উপলব্ধি করে চমকে উঠলাম..পরপর ৩ বার ঠকঠক হচ্ছে, তারপর একটু থেমে আবারো ৩ বার ঠকঠক হচ্ছে..কম না আবার বেশিও না..হুট করে আমার মনে পড়লো এটা তো আরমান স্যারের স্বভাব! উনিও টেবিলে আঙ্গুল দিয়ে এরকম করে..অনেকদিন ওনার সাথে কাজ করেছি বিধায় ওনার এই স্বভাব সম্পর্কে অবগত,তবুও দ্বিধা ছিলো যে আমার ভাবনা ভুল হতে পারে..আরমান স্যার এতো রাতে এখানে কেনো আসতে যাবে? কিন্তু জানালা খুলে সত্যিই যখন ওনাকে দেখলাম আমার ধারণা সত্যতায় পর্যবসিত হলো, সত্যিই উনি এসেছেন..আমি কাপা কাপা কণ্ঠে বলে উঠলাম
“আ..আরমান স্যার!!”
“এত্তো ঘুম তোমার জানা ছিলো না তো, ঠুকতে ঠুকতে আঙ্গুলের হাড় ব্যাথা হয়ে গেছে আমার”
আমি নিষ্পলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম কিছুক্ষন ওনার দিকে, বিশ্বাস করতে পারছি না এখনও যে উনি সত্যিই এসেছেন এখানে? কিন্তু কেনো? আমার জানালা একটু ছোটো তবে শিক নেই, উনি জানালা টপকে আমার রুমের মধ্য চলে এলেন, এবার আরো ঘাবড়ে গেলাম আমি..জলদি গিয়ে আমার রুমের দরজা বন্ধ করে দিলাম, কেউ দেখে ফেললে তো বিপদ! উনি আমার বালিশের পাশে থাকা ফোনটা হাতে তুলে অন করে দিলেন! আমি অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি ওনার দিকে
“ফোন নিজের কাছে রেখে দিয়েছো তাও আবার বন্ধ করে,? দুদিন ধরে ফোন করছি, বন্ধ করে রেখেছো কেনো তুমি?”
আমি কিছু ভীতসতস্ত হয়ে আলতো করে ঠোঁট দুটো ভিজিয়ে বলে উঠলাম..
“আ..আপনি এতো রাতে এখানে কি করছেন? আর সোজা আমার রুমে ঢুকে এলেন? চলে যান প্লিজ!”
আমার কথায় উনি ভ্রু কুঁচকে তাকালেন, তারপর বাঁকা একটা হাসি দিয়ে হুডির পকেটে দু হাত গুজে আমার রুমের মধ্য দুটো চক্কর দিলেন!
“কি করছেন আপনি? যেতে বললাম তো!”
“একদিন হলো জব ছেড়ে এসেছো আর এখনি এতো অসম্মান করছো? বস ছিলাম আমি তোমার, ডোন্ট ফরগেট দ্যাট!”
আমি উত্তর দিলাম না, উনি রুমটা দেখে বললেন
“নাইস রুম!! একচুয়ালী এতদিন ধরে তুমি আমার বাড়িতে যাওয়া আসা করছো কিন্তু একবারও আমাকে নিজের বাড়িতে আসতে বলনি, ইন ফ্যাক্ট বিয়েতে অব্দি ইনভাইট করলে না তাই নিজেই দেখতে চলে এলাম”
অন্ধকারে উনি আমার রুমের কি দেখলেন কে জানে? তবে সেসব জানার ইচ্ছে নেই আমার
“আপনি দয়া করে যান এখান থেকে”
“আমি তো অচেনা কেউ নই, এতদিন ধরে চেনো আমাকে তারপরও এতো ভয় কেনো?”
“চেনাজানা বড় কথা নয়, কালকে আমার বিয়ে আর আজকে যদি এখানে আমাকে আপনার সাথে কেউ দেখে ফেলে তাহলে আপনার তো ক্ষতি হবে না, তবে আমার বদনাম রটে যাবে”
উনি এবার এসে আমার মুখোমুখি দাড়ালেন, আমার দিকে কিছুটা ঝুকলেন
“তোমার কি মনে হয় রাত ১২.১০ এ এই এলাকার কেউ জেগে বসে আছে আমি তোমার বাড়ি এসেছি সেটা দেখার জন্যে?”
আমি একটু পিছিয়ে এলাম, তারপর ওনার চোখে চোখ রেখেই থমথমে গলায় বললাম
“অঘটন কিন্তু অসময়েই ঘটে”
আমার কথায় উনি সরু একটা হাসি দিলেন, জানালা খোলা থাকায় সেই হাসিটার আবছা অবয়ব আমার নজরে পড়েছে, ওনার দিক থেকে চোখ সরিয়ে জানালার কাছে এসে দাড়ালাম আমি
“ফিরে যান, আর আমার যা বলার কালকেই বলে এসেছি, এর বাইরে কিছু জিজ্ঞাসা করলে আমি উত্তর দেবো না”
“কিছু জিজ্ঞাসা করতে আসিনি, জাস্ট ইনফর্ম করতে এসেছি বিয়েটা কালকে তুমি করছ না”
চমকে উঠলাম আমি, উনি টুপ করে কথাটা বলেই জানলা টপকে আবার বাইরে বেরিয়ে এলেন আমার রুম থেকে, আমি হন্তদন্ত হয়ে বলে উঠলাম
“বিয়ে করবো না মানে? দেখুন, এটা সম্পূর্ণ আমার নিজস্ব ও ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, এখানে আপনার কিছু বলার অধিকার আছে বলে আমার মনে হয় না”
“কারো ভালোর জন্যে কিছু করতে অধিকারের দরকার পড়ে না, আর আমিও কোনো অধিকার নিয়ে তোমার ভালো করতে চাইছি না”
“বিয়েটা না হলে কি ভালো হবে আমার? আমার পরিবারের ক্ষতি হবে তাতে, আর সেটা আমারও ক্ষতি! আপনি দয়া করে এসব বিষয়ে নাক গলাবেন না”
“আমি সেটাই করি যেটা আমার মন চায় আর যেটা ঠিক, এবারও একটা ভুলকে ঠিক করবো আমি তুমি চাও বা না চাও..কালকে তোমার বিয়ে হচ্ছে না সেটা ভালোভাবে মাথায় ঢুকিয়ে নাও”
তারপর উনি হুট করেই চলে গেলেন, রাত হওয়ায় আমি যে জোরে ডেকে ওনাকে জিজ্ঞাসা করবো সেটাও করতে পারলাম না..আমাকে এত্তোগুলো প্রশ্নের মুখে ফেলে যেনো রীতিমত উধাও হয়ে গেলেন উনি..ইতিমধ্য ওনার কথাগুলো বারবার মাথায় ঘুরতে শুরু করেছে, চিন্তা আর ভয় ঘিরে ধরেছে আমাকে.. কালকে উনি কি এমন করবেন যাতে বিয়েটা হবেনা?
চলবে…