শুকনো_ঘাস_ফুল?,part::17,18 last

0
3163

#শুকনো_ঘাস_ফুল?,part::17,18 last
#natasa_islam_muntaha
#part::17

????

আহাধ একপা একপা করে ছুরিটার দিকে আগাতে থাকে আর তার মুখো বিজয়ের হাসি ফুটিয়ে

আহাধ আস্তে গিয়ে হাত বারিয়ে ছুরিটা হাতে নেয় …আর ডান হাত দিয়ে বা হাতের শিরায় ছুরিটা ধরে .

.যখনই টান দিয়ে হাত কাটতে যাবে ঠিক সেই মুহূর্তেই আহাধ এর ফোনটা বেজে ওঠে আহাধ ছুরি টা পাশে রেখে ফোনের কাছে যায় ..

.রাহুল ফোন করেছে তাকে ..আহাধ ফোনটা রিসিভ করে কানের সাথে লাগায়

রাহুল:ভাই আমি জানি …আহিবার সাথে যা হয়েছে এতে তোমার কোনো দোষ নেই …কিন্তু আহিবার তো এটাই ফাস্ট বেবী ছিল তাইনা …সে হয়তো বুঝতে পারবে তাকে তুমি কিছুদিন সময় দাও …আমরা সবাই তাকে বুঝাবো …আশা করি সেও বুঝতে পারবে ..ভাই ওর অপারেশন টা হয়েছে মাএ আজ ৪ টা দিন ওর মাথার উপর জোর দেওয়া কখনই ঠিক হবে না …আমি জানি হয়তো তুমিও আমার উপর রাগ করেছো মিষ্টিকে এভাবে নিয়ে আশার জন্য…কিন্তু আমি কি করতাম বলো ..ওকে ওখানে রেখে আসলেই ও চিল্লা চিল্লি করতো এমনিতেই ওর ঐ সময় চিল্লা চিল্লি করা ঠিক হয়নি …এর পর যদি আরো বেশী রাগা রাগি করতো সেটা কি ওর জন্য খারাপ হতো না বলো …

আহাধ:হুম ..কিন্তু রাহুল আমি আহিবাকে ছারা থাকবো কি করে নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছা করছে

রাহুল:ভাই মৃত্যুই কিন্তু সব সাময়িক কষ্ট থেকে হয়তো তোমায় বাচাতে পারবে কিন্তু এটা কিন্তু কখনও কোনো জিনিস এর সমাধান না …তাই এমন কাজটা ভুলেও করো না ….ভাই আমরা মুসলিম পরকাল বলেও তো একটা জীবন আছে আমাদের …নিজেকে নিজে শেষ করলে কি সেটার জন্য তুমি কখনও আল্লাহর কাছে জায়গা পাবে …আর না কখনও ভালো কিছু পাবে …মিষ্টিকে আমরা সবাই বুঝাবো তবে এখন না কয় একটা দিন যাক তবে ..আমি চাইনা মিষ্টির কোনো ক্ষতি হোক আশা করি তুমিও চাইবে না

আহাধ:হুম ..তুই ঠিক বলছিস…আচ্ছা আহিবার দিকে খেয়াল রাখিস ..আর কি করছে সে

রাহুল হাসি দিয়ে :পুরো বাড়ি শাসন করছে বড় ভাইয়ারা ও এসেছে ..সবাই এতোদিন পর তাদের কলিজাকে পেয়ে মেতে আছে আর মিষ্টি ও ..সবার সাথে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে

আহাধ:ওহ আর কাকিয়া কেমন আছে
রাহুম:মা ও এখন এমনিই তারাতারি সুস্থ হয়ে উঠবে সবাইকে পেয়ে চৌধুরী বাড়ু এসে যেন সে প্রান ফিরে পেয়েছপ আবার নতুন করে

তারপর আর কিছু টুকটাক করে বলে আহাধ ফোন রাখে আর ভাবতে থাকে কত বড়ই না একটা ভুল করতে যাচ্ছিল সে …যাক রাহুল না বল্লে হয়তো সে ওটাই করে ফেলতে ….

আহাধ:সবুরে নাকি মেওয়া ফলে দেখি কি হয় …আমি তো তোমায় কম কষ্ট দেইনি ..নাহয় এবার আমার কষ্ট পাওয়ার পালা শুরু দেখি আমায় কত কষ্ট দিতে পারো তুমি …..কিন্তু ডিভোর্স এহো জন্মে পাবা নাহ হুম

বলেই ফ্রেস হতে চলে যায়

আহিবা সবার সাথে হাসছে কথা বলছে ঠিকই কিন্তু কোথাও তার একটা শুন্যতা কাজ করছে …রাত অনেক হয়েছে সবাই আহিবার কাছ থেকে বিদায় নেয় তাকে ঘুম পরতে বলে …এনি আজ আহিবার সাথে থাকবে ..আহিবাকে ঠিক করে দিয়ে সে নিজেও আহিবার কাছে সুয়ে পরে

এনি:কি রে আহু ওহ সরি তুই তো সবার মিষ্টি পাখি ..আমার ননদ একদিকে ..অন্যদিকে ভাবি আর একদিকে বোন হাহাহা ?..বেশ তাই না

আহিবা:আপু একটা কথা বলি
এনি:বলে ফেল পারমিশন নেওয়ার কি আছে
আহিবা:আপু উনি কেন আমার বেবীটাকে মেরে ফেল্লেন বকতে পারো

এনি:জানিস বোন …মানুষ মাঝে মাঝে এমন পরিস্থীতির স্বিকার হয় …যেখানে সে চাইলেও ভালো কিছু করতে পারে না ..চাইলেও নিজের অংশ বিশর্জন দিতে হয় …আহাধ এর সাথেও তেমন হয়েছে …তোর বয়সটা যে কম তার সাথে ব্রেন টিউমার আর অন্যদিকে বেবী …একটা বাচ্চা গর্ভে আশা পর থেকেই একটু একটু করে মায়ের রক্ত নিয়ে নিজেকে তৈরী করে ..আর একটা টিউমারও ..ঐ মানুষটার শরীর থেকে রক্ত চুশে নিয়ে নিজের বিস্তার করে …তুই এখনও pregnancy এর জন্য প্রাপ্ত বয়সকো হোশ নি ..বেবী নিতে গেলে এমনি তোর লাইফ ঝুকি আছে তার মধ্যে টিউমার ..দেখ আহাধ এর কি আছে বলতো ওতো এখন তোকে নিয়েই বেচে আছে যদি তোর কিছু হয়ে যেতো কি নিয়ে বাচতো ও ..ওর বাবা মা বোন সবকে হাড়িয়ে তোকে আকড়ে বেচে থাকার নতুন স্বপ্ন দেখেছে ..দেখ যা হয়েছে এতে আহাধ এর দোষ নেইরে দোষটা তোদের ভাগ্যের …আহাধ এর উপর তোর রাগ হওয়াটাই সাভাবিক কিন্তু আহাধ এর যে কিছুই করার ছিল না

আহিবা:আমায় একটা বার জানাতে পারতো
এনি হালকা হেসে :তুই কখনই তোর বাচ্চার ক্ষতি হওয়ার চিন্তা মাথায়ও আনতি না ..

আহিবা চুপ করে আছে ..

এনি:কি রে কিছু বলছিস না যে
আহিবা:আপু রাত অনেক হয়েছে ঘুমিয়ে পরো আমার ও যে চোখ জোরা লেগে আসছে

এনি ভালোই বুঝতে পারছে আহিবা কথাটা কাটাতে চাচ্ছে তাই এনিও আর জোর করে সে ঘুমিয়ে পরে

কিন্তু আহিবার চোখে ঘুম নেই সে সুয়ে এক দৃষ্টিতে বড় জানালার বাহিয়ে তারা হীন আকাশটার দিকে তাকিয়ে আছে যেখান থেকে মেঘ গুলো ক্রমশ ছোটা ছুটি করছে …মাঝে মাঝে কিছু বাদুর ও উরছে হয়তো তারাও তাদের বারি ফিরবে ..চারিদিকে জেনাকির আলো হালকা হালকা মাঝে মাঝে জ্বলে উঠছে

আহিবা:সত্যি আপু তো কিছু ভুল বলে নি …তবে আমি কি অযথাই ঐ মানুষটাকে ভুল বুঝলাম …মানুষটাকে কষ্ট দিয়ে ফেল্লাম …ধূর কাজটা কি ঠিক হলো …

আহিবা আহাধ এর কথা ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে পরে ..হঠাৎ কারো পায়ের আওয়াজে ঘুম ভেগে যায় ..আহিবা পিট পিট করে চোখে খুলে দেখে রাহুল রুমে এসে ঘুর ঘুর করছে ..আহিবা ভালোই বুঝতে পারছে এনির জন্য এসেছে সে…

কিন্তু আহিবাকে অবাক করে দিয়ে রাহুল আহিবার মাথায় কাছে বসে তার কপালে একটা চুমু দেয় …আহিবা আুপ করে ঘুমের ভান ধরে সুয়ে আছে

রাহুল:বোন তোকে প্রতিদিন কতটা মিস করেছি তা তোর জানা নেই …তোকে ফিরে পেয়ে যেন নিজের কলিজাটা ফিরে পেলাম ..বলেই উঠে চলে যায়

আর একটু গিয়েই আবার ফিরে আসে এনিকে কলে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়

আহিবা ও ফিক করে হেসে দেয়

আহিবা:আহারে রাহুল ভাই আমার পুরাই বউ পাগল …হিহি …ভালোই মানিয়েছে দুজনকে …আহাধ ও

বলেই থেমে যায় ..আহিবার মনে পরে যায় পুরনো কথা আহিবা যদি কখনও কোনো কিছুতে না করতে আহাধ ওকে কলে নিয়ে সেই কাজটা নিজেই করতে কিন্তু আহিবাকে সাথে নিয়েই
মাঝে মসঝে গাড় ত্যারামি করলে সোজা কোলে নিয়ে বাতটপে ফেলে দিতো ….

আহিবা:মিস করছি আপনাকে …কিন্তু আমায় না বল এতো বড় একটা সিদ্বান্ত নেওয়ার সাস্তি তো আপনাকে একটু দিতেই হয় ..

.
এভাবেই কেটে যায় তিন তিনটা দিন

আহাধ বিছানায় না সুয়ে বারান্দার রকিং চেয়ারে বসে আসে নিশ্তব্ধ শহর টার দিকে

আহাধ:ভালো লাগছে না কিছুই কিন্তু কি করবো ..বউ আমার যে অভিমান করেছে বড্ড ..উফফ এই ভাবে বউ না থাকলে মামুষ একা থাকে কিভাবে ভেবেই পাইনা ….কি আজব না ..৩ মাস আগেও আমি একাই ছিলাম আর এখন বউ বউ করছি …ধূর কেমন ফাকা ফাকা লাগছে ঘরটা …এই জন্যই বলে মেয়ে না বউ হলো ঘরের লক্ষি …না থাকলেই খালি খালি …উফ করে যে আসবে কে জানে …আমি একটা নিরিহ পাবলিক হয়ে গেলাম …
হুহ

আহাধ একা একা কথা বলতে বলতে কখন যে ঘুমিয়ে যায় সেটা সে নিজেই বুঝতে পারে না …

সকালে চারিদিকে আলো ফুটে উঠছে পাখির কিচির মিচির এর আওয়াজ ..যে কারো মন ছুয়ে যাবে..

সকালে সূর্যের আলোটা আহাধ এর মুখে পরতেই নরে ওঠে কিন্তু কোনো একজোরা হাত এসে আহাধ এর মুখের উপরে পরে থাকা আলোটা নিজের হাতে ঠেকে দেয় আহাধ হালকা একটু নরে আবার ঘুমিয়ে পরে …তার একটা হাত জড়িয়েই ….

সেই হাত ওয়ালা :আমি চাই সব সময় এভাবেই থাকতে আহাধ

চলবে ,,,,

#শুকনো_ঘাস_ফুল?
#natasa_islam_muntaha
#part::18 &last

সেই হাত ওয়ালা :আমি চাই সব সময় এভাবেই থাকতে আহাধ

আহাধ হাতটাকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে রেখেছে এই হাতটা তার কাছে খুব চেনা …

রাহুল তখন ওখান এ আসে আর

রাহুল:মিষ্টি ওহ সরি ভুল সময় আসলাম ..আমি আসি কেমন ….পরে না হয় আবার একদিন আসবো
আহিবা:ভাইয়া প্রথম আসলা কিছু খেয়ে যাও
রাহুল:নাহ রে মিষ্টি পাখি পরে একদিন আসবো কেমন
আহিবা:আচ্ছা আপুকেও নিয়া আসবা
রাহুল:আচ্ছা আনবো সাবধানে থাকিস বোন …নিজের খেয়াল রাখিস ..আর কোনো সমস্যা হলেই জানাবি আমায় ..
আহিবা:হুম ভাইয়া

রাহুল চলে যেতেই আহাধ চোখটা পিট পিট করে খোলে …আর মুখে বিশাল একটা হাসি দেয়

আহাধ:আমি জানতাম তুমি আসবে
আহিবা:ওহ হো তাই নাকি ..আপনি কি জ্যোতিষী নাকি যে জানতেন
আহাধ:হুম তো আমি ভালোবাসার জ্যোতিষী
আহিবা:হুম হয়েছে এখন হাতটা ছারুন

আহাধ আহিবাকে টান দিয়ে নিজের কোলের উপরে বসিয়ে দেয় ..

আহাধ:আমার বউ আমার বাড়ি কাকে ছারবো আর না ছারবো সেটা আমি বুঝবো বুঝলা
আহিবা;এইটা কেমন কথা ছারুন তো
আহাদ:ওকে এখন অসুস্থ দেখে ছেরে দিলাম ..সুস্থ হও তারপর আর কোনো ছারা ছারি নেই

আহাধ আহিবার কপাল এ চুমু দিয়ে ছেরে দেয়

দুজনের ঘুনশুটিতেই কাটতে থাকে তাদের সময় আহিবার ১ বছর পর আবার পড়াশুনা শুরু করে ..সাথে আহাধ একদিন নিজের পড়াশুনা অন্যদিকে অফিস সামলায় ..বেশ ভালোই দিন কাটে

বাসায় আসতেই নিছা কে নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে যায় ..নিছা বাসার সবার চোখের মনি …এই ৫ বছরে পাল্টে গেছে অনেক কিছুই ..

এনি আর রাহুল একটা এক্সিডেট এ মারা যায় কপাল গুনে বেচে যায় ছোট নিছা …ডাক্তার আহিবাকে বলেছে সে চাইলেও আর কখনই মা হতে পারবে না …আহিবা ভেগে পরেছিল বড্ডা …..

কিন্তু রাহুল আর এনির মৃত্যুর পর আহিবা নিছাকে নিজের কাছে নিয়ে আসে ..নিজের মেয়ের মতো তাকে বড় করে তোলে একটু একটু করে নিছার বয়স মাএ দেড় বছর ..তার আদো আদো কথা ভড়িয়ে রাখে সমস্ত বাড়িটাকে …

রাফি বিয়ে করছে ..মিমকে মাশা-আল্লাহ তার যেমন রুপ তেমন ব্যাবহার …নিছাও তার চোখের মনি কেউ কখনও বুঝতে দেয়না ..নিছা এই পরিবারের সদস্য না …

নিছা:মাম্মা আমলা এখানে ক্যান এতেসি
আহিবা:এটা কবর স্থান সোনা ..তোমার আর একটা মাম্মা আর বাবাই

হুম আজ রাহুল আর এনির প্রথম মৃত্যু বার্ষিকি তাই আহিবা আর আহাধ কবর জিয়ারত করতে এসেছে ছোট নিছা কে নিয়ে ….

নিছা:বাবাই মাম্মা কি বলতে আর এলটা মাম্মা আর বাবাই মানে
আহাধ:মানে তোমার তারাও একটা মাম্মা আর বাবাই হয় সোনা .
নিছা:ওহ আমি বুলতে পেরেচি…
আহিবা :হুম তো এখন চলো
আহাধ:হুম

আহাধ আহিবা আর নিছা কিছুটা দূরে এসে আবার পিছন ফিরে তাকায় আহিবা আর একটা ছোট দীর্ঘস্বাস ফেলে

আহিবা ;আপু তোরা চলে যাওয়ায় যতটা কষ্ট পেয়েছি তা হয়তো তোরা বুঝবি না ..কিন্তু তোদের নিছাকে জড়িয়ে আমি সেই সব কষ্ট ভুলতে থাকতে পেরেছি …আল্লাহ আমার মা হওয়ার ক্ষমতা কেরে নিয়েছেন ঠিকই কিন্তু আমার কোল অন্ধকার করে দেন নি ….আপু তোরা ভালোথাক …এটাই কামনা করি ….মনে মনে কথা গুলো বলতে বলতেই চোখের কোনা থেকে গড়িয়ে পরেছে কয় এক ফোটা পানি

মানুষের কপাল এ কখন কি আছে কেউ জানে না ….রাহুল এনি মারা গিয়ে আহিবার সংসার পরিপূর্ন করে দিয়েছে ……তাদের জন্য সুখের দিন ছিল সিমীত …..এটাই তাদের ভাগ্যের খেলা ….যাক ভালোথাক এমন ভাবে সব সময় ….আর গল্পটাও আজই শেষ ..কিন্তু কাহিনি চলতে থাকুক সারা জীবন…

সমাপ্ত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here