শেষটা_সুন্দর #পার্ট_১০(অন্তিম পর্ব)

0
2609

#শেষটা_সুন্দর
#পার্ট_১০(অন্তিম পর্ব)

মা’র থেকে বিদায় নিয়ে সেদিন আমি আর শিশির ঢাকা ফিরে আসলাম,,মা বললেন সামনের সপ্তাহে পুরো ছুটি আছে,,মা জিনিকে নিয়ে তখন আসবেন আবার ঢাকা,,ঢাকায় এসে বাড়িতে আবার কি রকম ফাঁকা ফাঁকা লাগতে শুরু করলো,,ওখানে যাও মা আর জিনি ছিলো এখানে তো আমি শুধু একা,,আর শিশির?সে থাকা আর না থাকা তো সেম,,

রোজকার মতো ডিউটি করে শিশির এসে ফ্রেশ হয়ে নিলো,,দুজনে রাতের খাওয়া টুকু শেষ করলাম,,শিশির শিশিরের রুমে গিয়ে বিছানার উপর ল্যাপটপ নিয়ে বসে গেলো,,আমিও সব গুছিয়ে আসলাম শিশিরের রুমে,,এসে শিশিরের গা ঘেঁষে শিশিরের কম্বলের ভেতর ঢুকে গেলাম

শিশিরঃ এখানে কি চাই রোদ

রোদেলাঃ আপনাকে

শিশিরঃ হোয়াট

রোদেলাঃ না মানে,,ও ঘরে একা একা থাকতে ভয় করছে ভীষণ তাই জন্য তো আমি

শিশিরঃ এর আগে জেনো তুমি কখনো একা থাকো নি

রোদেলাঃ হ্যা থেকেছি কিন্তু এতোদিন পর এসে

শিশিরঃ ঠিক আছে ঘুমোও

রোদেলাঃ আর আপনি

শিশিরঃ আমার কাজ আছে

রোদেলাঃ না আপনাকে কাজ করতে হবে না আপনি এখন আমার সাথে গল্প করবেন

শিশিরঃ না___অনেক বাজে তুমি এখন ঘুমাবা ফাস্ট

রোদেলাঃ এই শুনুন আমি আহির ভাইয়া না হ্যা আপনি ওডার করবেন আর আমি শুনবো,,আমি আপনার বিয়ে করা বউ সো আমি যা বলবো আপনি তাই শুনতে বাধ্য

শিশিরঃ যদি না শুনি

রোদেলাঃ ব্যাগ গুছিয়ে বাপের বাড়ি চলে যাবো?

শিশিরঃ পা ভেঙে রেখে দেবো

রোদেলাঃ আমি আপনার হাত ভেঙে রেখে দেবো

শিশির আমাকে শুইয়ে দিয়ে আবার ল্যাপটপে মন দিলেন,,কিন্তু আমার চোখে নেই এক ফোঁটা ঘুম,,আমি ওখানেই একবার এ পাশ একবার ও পাশ ছটফট করছি দেখে শিশির শেষে বাধ্য হয়ে ল্যাপটপ থুইয়ে আমার পাশে শুইয়ে পড়লেন,,আর শুইয়ে পড়তেই আমি ঘপ করে শিশিরের দিকে কাত হয়ে শিশিরের বুকের উপর আমার একটা হাত রাখলাম,,শিশির আমার দিকে ঘুরলেন,,আমার হাতের ভাঁজে নিজের হাত টা গুঁজে দিলেন❤️

শিশিরঃ কি ঘুম কোথায়

রোদেলাঃ বেড়াতে গেছে

শিশিরঃ কাল বাড়ি যাবা তাহলে

রোদেলাঃ যাই না অনেকদিন ধরে তো মা বাবা নিরু আপু কাউকে দেখি না

শিশিরঃ ঠিক আছে বাট আমি রাতে ডিউটি করে এসে তোমাকে নিয়ে আসবো,,থাকা চলবে না

রোদেলাঃ ??ঠিক আছে

শিশিরঃ সময় কেনো কাটে না তোমার,,পড়াশুনা করা লাগবে না___নাকি ঔ উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেই সারাজীবন কাটিয়ে দেবা

রোদেলাঃ পড়াশুনা আবার!!এই কয়দিন কতো ভালো ছিলাম

শিশিরঃ আর ভালো থাকতে হবে না,,পড়াশুনা করলে সময় এমনিতে চলে যাবে

রোদেলাঃ আর কিছু দিন পর থেকে শুরু করি

শিশিরঃ না,তোমার জন্য ভার্সিটিগুলো সব অপেক্ষা করে থাকবে না,,পাবলিকে তো আর হবে না তোমাকে দিয়ে মাথায় তো গবর ছাড়া কিছুই নেই,,তবু আমি কোচিং এ ভর্তি করায় দেবো সেকেন্ড টাইম পারা যায় কি না চেষ্টা করবা

রোদেলাঃ পারবো না আমি ওসব খাটাখাটুনি করতে,,আপনার না খুব টাকা তো আপনি আমাকে প্রাইভেটে ব্রাক বা নর্থ সাউথ
এ ভর্তি করিয়ে দেবেন,,যতো টাকা লাগবে সব আপনার

শিশিরঃ আবদার!!___পড়াশুনা করে আগে চেষ্টা করবা তারপর যদি না হয় আমি ওসব কতো লাখ খরচ করতে হয় সব করে তোমাকে না হয়

রোদেলাঃ এই শুনুন আপনার জন্য আমার ফিউচার লাঠে উঠেছে হ্যা,তাই আপনি এখন সেটাকে ঠিক করে দেবেন,,এটা আপনার ফরজ কাজ এখন,,কিন্তু ওসব পড়াশুনা করে আমি পরীক্ষায় বসতে পারবো না___জীবনে আপনার জন্য এই আমাকে অনেক পরীক্ষা দিতে হয়েছে,,পরীক্ষা দিতে দিতে দিতে দিতে অসহ্য লাগে এখন পরীক্ষার নাম শুনলে

উজানঃ আচ্ছা বেশ আর বলবো না,,কিন্তু পড়াশুনা টা তোমাকে শেষ করতে হবে এটা ফাইনাল

রোদেলাঃ সে আমি পড়ে ভাববো

শিশিরঃ পড়ে না এক্ষুনি,,এটলিস্ট মা কে দেখে কিছু তো শিখতে পারো মা কিভাবে সব হারিয়ে আবার নতুন করে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে

রোদেলাঃ শিশির একটা কথা বলি,,আপনি যদি এখন এইসব বানী দিতে আমাকে জাগিয়ে রাখেন তাহলে বলুন আমি এক্ষুনি আহির ভাইয়া কে ডেকে এনে বলি আমাকে এক্ষুনি বাড়ি দিয়ে আসতে,,বলবো

শিশিরঃ এটা কোনো কথা রোদ,,আমি তো তোমার ভালোর জন্যেই,,আর মা-ও চাইছে তুমি

রোদেলাঃ আমি কি যাবো উঠে এখন এখান থেকে

শিশিরঃ আচ্ছা আজকে আর এসব বলবো না,,ঘুমোও তুমি

রোদেলাঃ একটা কথা জিজ্ঞেস করি শিশির

শিশিরঃ করো

রোদেলাঃ যদি অভ্র ভাইয়ার সাথে আমার বিয়ে হয়ে যেতো আপনি কি করতেন তখন,,আর তখন যদি আপনি জানতে পারতেন আমি কিছু করি নি আপনি শুধু শুধু আমাকে ভুল বুঝে,,তাহলে

শিশিরঃ হয়তো মরে যেতাম

রোদেলাঃ সত্যি মরে যেতেন

শিশিরঃ জানি না রোদ হয়তো বা যেতাম,,আমি না রোদ ক্লান্ত হয়ে গেছি এই কষ্ট গুলো সহ্য করতে করতে আমি পুরো বিধস্ত হয়ে গেছি রোদ,, তার উপর প্রথম সব কিছু কে ছাড়িয়ে তোমাকে নিয়ে বেঁচে থাকতে চেয়েছিলাম কিন্তু তুমিও যদি আমার একটা ভুলের জন্য আমার না হয়ে অভ্রর হয়ে যেতে আমি পারতাম না বাঁচতে,,সেই ধাক্কা টা সামলানো আমার পক্ষে

রোদেলাঃ আমাকে আজকে একটা কথা দেবেন আপনি

শিশিরঃ বলো

রোদেলাঃ আর কখনো কোনোদিন অতীতে কি হয়েছিল সেটা মুখে আনবেন না

শিশিরঃ আনবো না কিন্তু

রোদেলাঃ কিন্তু

শিশিরঃ শুভ্রকে যে ভুলতে পারবো না আমি রোদ,,শুভ্র থাকা মানে অতীত টাও সারাজীবন আমাদের সাথে থাকবে

রোদেলাঃ আপনার কি মনে হয় বাচ্চা টা হারানোর কষ্ট শুধু আপনার একারই আছে আমার নেই,,আপনি কি করে ভাবতে পারলেন আমি শুভ্রকে ভুলে যাবো___শুভ্র থাক না আমাদের একটা সুন্দর স্মৃতি হয়ে

শিশিরঃ হুম____ তুমি আমাকে ক্ষমা করেছো তো রোদ

রোদেলাঃ করেছি,,তবে আপনি কিন্তু হ্যা আর ভুলেও যদি আমাকে রেখে অন্য মেয়েদের দিকে তাকিয়েছেন তাহলে কিন্তু আমি

শিশিরঃ তুমি আমার জীবনে আসার পর কি আমি কখনো অন্য মেয়েদের দিকে তাকিয়েছি রোদ!!

রোদেলাঃ তাকেন নি তাহলে ঔ পার্টিতে ঔ রহমান আঙ্কেলের মেয়ের সাথে কি করছিলেন,,চড়ুইভাতি খেলছিলেন?

শিশিরঃ ওটা তো জাস্ট তোমাকে দেখানোর জন্য

রোদেলাঃ দেখানোর জন্য না?,,,,,,আমি এখন আপনাকে দেখানোর জন্য অভ্র ভাইয়ার কাছে ফিরে যাই

শিশিরঃ যাও না যাও গিয়ে অভ্রর সাথে অভ্রর দ্বিতীয় বউ হয়ে সংসার করো

রোদেলাঃ দ্বিতীয় বউ মানে!!

শিশিরঃ তুমি সত্যি খুব বোকা রোদ,,এখনো সবাইকে কতো সহজে বিলিভ করো

রোদেলাঃ মানে

শিশিরঃ অভ্র তোমাকে এমনি এমনি বিয়ে করতে রাজি হয় নি রোদ,,অভ্র কানাডায় এক কানাডীয়ান এর সাথে লিভ ইন করে তাকে বিয়ে করে,,বাহিরের অবস্থা তো তুমি জানো ওদের দেশে এই সব লিভ ইন বিয়ে কোনো ম্যাটার না,,অভ্রও ওখানে

রোদেলাঃ এসব কি বলছেন আপনি

শিশিরঃ যা শুনছো তাই বলছি,,তুমি মানুষ কে এতো টাই উদার কি করে ভাবতে পারো রোদ!!___একটা মেয়ের সাথে একটা ছেলে নোংরামো করার পর এই সমাজের কোন ছেলে তাকে বিয়ে করতে চাইবে এটা একবারো মাথায় আসে নি তোমার

রোদেলাঃ শিশির আমি!!

শিশিরঃ সেদিন যখন অভ্র এসে তোমাকে বললো না সে আমাদের এই বাচ্চা টাকেও একটা নাম দিবে নিজে দায়িত্ব নিয়ে মানুষ করবে সেদিনই সন্দেহ হয়েছিলো আমার,,কোনো ছেলে তাও আবার অভ্রর স্ট্যাটাসের বিয়ে অবধি ঠিক আছে কিন্তু অন্যাের বাচ্চা কে নিজের নাম দেওয়া এতো টা সহজ না রোদ এতো টা সহজ না___আমি ঠিক করি আমি অভ্রর সম্পর্কে খোঁজ নেবো,,আর নিয়ে যা জানতে পারি সব তো তোমাকে বললাম

রোদেলাঃ রিফাত আঙ্কেল জানে এই কথা,,উনি তাহলে জেনেও আমার বাবা কে কি করে ঠকাতে চেয়েছিলো

শিশিরঃ রিফাত আঙ্কেল জানে না,,উনি মানুষ টা ভালো অনেক,,উনি মন থেকে তোমার বাবার সাথে ওনার বন্ধুত্ব টা টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিলো,,তাই

রোদেলাঃ মানুষ কি করে এতো খারাপ হয় শিশির,,আমাকে ঠকিয়ে কি লাভ হতো অভ্র ভাইয়ার

শিশিরঃ অনেক লাভ হতো রোদ,,অনেক,,তুমি ওসব বুঝবে না___আচ্ছা বাদ দেও এখন অনেক রাত হচ্ছে ঘুমাও এখন

রোদেলাঃ আমি না ভাবতে পারছি না শিশির,,অভ্র ভাইয়া কি করে,,আমি কতো বিশ্বাস করেছিলাম ওনাকে আপনি জানেন,,আমি ভাবতাম আপনি যতোটা নোংরা অভ্র ভাইয়া ঠিক ততোটাই ভালো!!!!

শিশিরঃ এখন তুমি আমাকে আর খারাপ ভাবো না তো রোদ

শিশিরের প্রশ্নে আমি শিশিরের বুকে মুখ লুকিয়ে শিশির কে জড়িয়ে ধরলাম,,এই বুক টাই মনে হয় নিরাপদ আশ্রয় এখন আমার কাছে❤️

রোদেলাঃ না ভাবি না,,আপনি কখনো আমাকে আর কষ্ট দেবেন না তো,,আমাকে ভুল বুঝে আবার কোনো অন্যায় করবেন না তো আমার সাথে

শিশিরঃ না রোদ,,একবার ভুল করে তোমাকে হারাতে বসেছিলাম কখনো সেই আবার একই ভুল

রোদেলাঃ ঠিক আছে,,তাহলে আজ থেকে সব বাদ,,আমরা কাল থেকে নতুন করে সব টা শুরু করবো,,আর কাল আপনার ফাস্ট ডিউটি হচ্ছে আপনি গিয়ে আগে আমার বাবার সাথে কথা বলবেন,,আমি জানি বাবা এখনো আপনার উপর খুব রেগে আছে তাই বাবার মান ভাঙ্গানোর দায়িত্ব আমার

শিশিরঃ আর কোনো কাজ পেলে না দেবার জন্য,,তোমার বাবা কে দেখলেই তো আমার কি রকম ভয় করে,,মনে হয় কখন বুঝি আমার গালে চড় থাপ্পড় বসিয়ে দেয়

রোদেলাঃ একটা দুটো চড় খেলে খাবেন,,আপনি তার আদরের মেয়ে কে তুলে নিয়ে ওসব করেছেন তার কাছে তো এই সামান্য কটা থাপ্পড় কিছুই না

শিশিরঃ বেশি পাকা,,দেখি

রোদেলাঃ কি

শিশিরঃ একটা কিস করি তোমার কপালে

রোদেলাঃ বাহ সেদিন তো খুব জোড় দেখিয়েছিলেন আজ পারমিশন চাচ্ছেন

শিশিরঃ চাচ্ছি আর তুমি কি হ্যা একটু আগে নিজে বললে আগের সব কথা বাদ এখন নিজে আবার পুরোনো কথা তুলছো

রোদেলাঃ ওহ সরি সরি

শিশিরঃ আর সেদিন কি আমি শুধুই তোমাকে জোর করেছিলাম আমার স্পর্শে কি তুমি একটুও ভালোবাসা পাও নি

রোদেলাঃ না পাই নি হয়তো আপনি ভালোবাসা দিয়েছিলেন কিন্তু আমি বুঝি নি

শিশিরঃ ইডিয়ট যে বুঝবা কিভাবে

রোদেলাঃ আর আপনি কি সাদা বিলাই

শিশিরঃ ইডিয়ট

শিশির আমার কপালে একটা স্নেহের পরশ আঁকতে গিয়ে আমার পুরো মুখে ওনার ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলেন,,আমি প্রথমে কিছু না বললেও পরে শিশির কে থামিয়ে দিয়ে একটা ফিঁক করে হাসি দিলাম

রোদেলাঃ ????

শিশিরঃ কি!!

রোদেলাঃ আমার না পিরিয়ড হয়েছে,,আমি চাইলেও আজ কিছু হবে না

শিশিরঃ হোয়াট!!___পাকনি একটা,,আমি একবারো বলেছি আমি কিছু করবো তোমার সাথে

রোদেলাঃ হ্যা মানে ঔ

শিশিরঃ তুমি আমার থেকে বেশি পাকা রোদ,,দেখি চোখ বন্ধ করো আমি মাথায় হাত বুলে দিচ্ছি

রোদেলাঃ হুম দিন এটা বেস্ট হবে

সেদিন শিশিরের থেকে মাথায় হাত বুলিয়ে নিয়ে আমি ঘুমিয়ে গেলাম,,পরের দিন শিশির আর আমি প্রথম একসাথে বাড়িতে গেলাম,,এই হিয়ে শিশির দু বার আমার বাড়িতে গেলেন,,বিয়ের দিন একবার আর আজ একবার,,সবাই প্রথমে অবাক হয়ে গেলেও আস্তে আস্তে সব স্বাভাবিক হতে শুরু করলো,,শিশির বাবার কাছে গিয়ে ক্ষমা চাইলেন বাবা বেশি কথা বললো না শুধু আর একবার ভরসা করে তার ছোট মেয়ের হাত উনি শিশিরের হাতের উপর তুলে দিলে।

এইতো চলতে থাকলো সময়,,হ্যা সব মেয়েরই একটা ড্রীম হয় তার জীবনের মনের মানুষ টা এরকম হবে সেরকম হবে,,শিশিরের মতো কেউ কোনো মেয়ের স্বপ্নের নায়ক হবে এটা অকল্পনীয়,, শিশির হয়তো কোনো পক্ষীরাজ ঘোড়াতে চড়ে আমার জীবনে আসে নি,,এসেছিলো ভয়াবহ এক ঝড় হয়ে কিন্তু শিশিরের ভালোবাসা আমাকে আমার সব ব্যাথা ভুলিয়ে দিতে যথেষ্ট ছিলো,,অনেকেরই তো ভালোবেসে বিয়ে হবার পর পরকীয়া নামক নষ্টামো শব্দে জীবন শেষ হয়ে যায় কিন্তু আমার ক্ষেএে তার উল্টো হয়েছিলো,,শিশির আমার জীবনে ঝড় হয়ে এসে আমার পুরো জীবন থেকে খড়কুটো যা ছিলো সব পরিষ্কার করে দিয়েছিলো,,হ্যা তবে ধর্ষনকে আমি কখনো সাপোর্ট করি না ধর্ষন মানেই সেটা ধর্ষন,,সবার গল্প যে আমার আর শিশিরের মতো হবে এমন টা কখনোই না,,তাই আমি চাই এই ধর্ষনের বিরুদ্ধে সবার এক হয়ে কাজ করা উচিৎ,,একজন ধর্ষিতাকে সম্মানের চোখে দেখা উচিৎ কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার আমরা মেয়ে হয়েই আজ কাল অন্য মেয়েকে সম্মান করতে ভুলে যাই,,নিষিদ্ধ পল্লী মানেই ওখানকার মেয়েদের খারাপ চোখে দেখি কিন্তু একটা মেয়ে কেনো নিজের সব টা বিক্রি করে ঔ নোংরা জায়গাটাতে বাস করে কেউ সেটা কখনো বুঝতে চাই না কেউ না,,,,!!!!
___________________

আজ ৫বছর পর

আমার আর শিশিরের কোল আলো করে এসেছে আমাদের ছোট্ট মেয়ে বর্ষা,,বয়স সবে মাএ চারের কোঠায়,,বাবার আদরের নানু ভাইয়ের কলিজার টুকরা,,বাবা ঠিক ই বলেছিলো সেদিন,আমার যে মেয়ে হবে সে হবে বর্ষায় আসা বৃষ্টির মতোনই চঞ্চল,,সত্যি বাবার কথা একদম খাপে খাপ মিলে গেছে,,বর্ষা এতো টাই চঞ্চল আর দূরন্ত হয়েছে যে আমার বাড়ির কোনো কিছুই এখন আর অক্ষত থাকে না,,প্রতিদিন তার হাত দিয়ে কিছু না কিছু ভাঙ্গা চাই চাই,,আর আজ তার হাত দিয়ে ভেঙে গেছে আমার সাধের কেনা একটা অনেক দামি ফুলদানি,,ফুলদানি টা ছিলো আমার খুবই পছন্দের দশটা দোকান ঘুরে আমি ওটা কিনেছিলাম,,আর আমার মেয়েকে দেখো।

আজ শুক্রবার বলে শিশিরের ছুটি,,তাই সে এখন বেলা দশটা অবধি ঘুমোচ্ছে,,কাল রাতে ডিউটি করে আসতে অনেক রাত করেছিলো তাই আমিও আর শিশির কে সকালে ডেকে তুলি নাই,,আর মেয়ে আমার সাধের ফুলদানি ভেঙে এখন ভয়ে পুরো ঘাবড়ে গিয়ে দৌড়ে তার বাবার কম্বলের ভেতর ঢুকে তার ছোট্ট হাত দুটো দিয়ে তার বাবা কে ডাকতে ব্যস্ত

বর্ষাঃ বাবা বাবা,,বাবা উঠো না বাবা___বাবা ও বাবা___আরে আমি ডাকচি(ডাকছি) তাও উঠে না___বাবা

বর্ষা রেগে গিয়ে ওর হাত দুটো দিয়ে তার বাবার খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি গুলো টেনে ধরে,,আর আমার সাদা বিলাই এবার চোখ খুলতে বাধ্য হয়

শিশিরঃ কি মা,,লাগছে তো আমার,,বাবার কষ্ট হচ্ছে না

বর্ষাঃ বাবাআআআ আমি না আজকেও আম্মুর একটা জিনিস ভেঙে দিছি

শিশিরঃ তুমি তো রোজই কিছু না কিছু ভাঙ্গো আম্মু,,আজ কি এমন স্পেশাল জিনিস ভাঙ্গছো যে এতো ভয় পাচ্ছো

বর্ষাঃ বাবা আমি না মা-র কিনে আনা ফুলদানি টা

বর্ষার কথায় শিশিরের চোখ ঠিকরে বেড়িয়ে আসে,,শিশির জানে ফুলদানি টা আমার কতো পছন্দের ছিলো,,বর্ষার সাথে সাথে এবার শিশির এর ও বুক ভয়ে কেঁপে ওঠে

শিশিরঃ আর কিছু পেলি না মা,,দরকার হলে আমার ল্যাপটপ টা ভাঙ্গতি আমার ফোন টা ভাঙ্গতি আমার রুমের এই টিভি টা ভাঙ্গতি,,তোকে ঘুরে ফিরে তোর মা-র

বর্ষাঃ বাবা এখন কি অবে(হবে),,আমার কুব(খুব)ভয় করছে

শিশিরঃ আরে আমার প্রিন্সেসের জন্য আমি আছি না,,আমি তোকে বাঁচাবো,,

শিশির বর্ষাকে একদম তার কম্বলের ভেতর লুকিয়ে নেয়,,বর্ষাও ভয়ে তার বাবার বুকে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে ঘাপটি দিয়ে লুকিয়ে পড়ে❤️

রোদেলাঃ বর্ষা বর্ষা কোথায় তুই,,আজ যদি আমি মেরে তোর পিঠের চামড়া তুলে না দিয়েছি তো আমিও তোর মা না,,বর্ষাআআ___কোথায় কোথায় লুকাবি,,কি ভাবিস তুই আমি আমি পাবো না তোকে খুঁজতে____বর্ষা

বর্ষাকে খুঁজতে আমি শিশিরের রুমে ঢুকলাম,,রাগে মাথা পুরো গজ গজ করছিলো আমার,,রুমে এসেই আমি সব জানালা খুলে পর্দা সরিয়ে দিয়ে শিশির কে ডাকতে শুরু করলাম

রোদেলাঃ শিশির তুমি উঠো না,,কয়টা বাজে___

শিশিরঃ উঠি

রোদেলাঃ উঠো আর কতো ঘুমাবা

শিশিরঃ হুম___তা ম্যাডাম আজ হঠাৎ সকাল সকাল এতো ক্ষেপে আছে যে বড়

রোদেলাঃ ক্ষেপবো না আমি,,রাগ উঠবে না আমার,,তোমার মেয়ে আজ কি করেছে জানো,,আমি সেদিন ওতো দাম দিয়ে ফুলদানি টা কিনে আনলাম আর তোমার মেয়ে সেটা

শিশিরঃ কি করছে ভাঙ্গছে নাকি আবার

রোদেলাঃ তাছাড়া আর কি কাজ পায় তোমার মেয়ে,,শুনো শিশির আমি তোমাকে একটা কথা বলে দিলাম তুমি যদি আজ বর্ষা কে শাসন না করছো আমি কিন্তু তাহলে তোমার মেয়ে কে মেরে মেরে সোজা করে দেবো

শিশিরঃ খবরদার রোদ আমার সামনে অনন্ত এই ভুল তুমি করবা না?

রোদেলাঃ ও এটা ভুল তোমার কাছে,,কি শেখাচ্ছ তুমি শিশির তোমার মেয়ে কে,,ওটা কতো দামি একটা ফ্লোয়ার ভাস ছিলো আর তুমি কি না

শিশিরঃ ঠিক আছে ভাঙ্গছে,,আমি কিনে দেবো তোমায়,,কিন্তু আমি যেনো না দেখি তুমি ভুলেও বর্ষাকে

রোদেলাঃ শোনো বর্ষার বাবা,,তুমি তোমার মেয়ে কে আদর দিয়ে দিয়ে নষ্ট করো আমার সমস্যা নেই কিন্তু আমি বর্ষাকে আমার মতো মানুষ করবো,,,বর্ষাকে বুঝতে হবে বাবার টাকা আছে মানে সেটাকে এভাবে নষ্ট করা ওর স্বভাব না

শিশিরঃ করলে করবে টাকা নষ্ট,,আমার করবে তোমার করছে কি?

রোদেলাঃ ও ওমনি এখন আমার টাকা হয়ে গেলো,,আর এমনি সময় তো আমাদের আমার যেটা তোমার সেটা বলে বলে খুব আদিক্ষ্যেতা করো তার মানে আমি ধরে নেবো ওসব তোমার নাটক

শিশিরঃ তুমি একটা সামান্য কথা কে কোথায় থেকে কোথায় টেনে নিয়ে যাচ্ছ রোদ____তুমি শাসন করবে বর্ষাকে ঠিক আছে করো,,কিন্তু তার জন্য গায়ে হাত তুলতে কেনো হবে তুমি তো বর্ষাকে বুঝিয়েও সেটা করতে পারো

রোদেলাঃ তোমার মনে হয় বোঝার মতো মেয়ে বর্ষা

শিশিরঃ একদম বাজে কথা বলবা না,আমার মেয়ে যথেষ্ট বুঝে,,আজ অবধি কারো সাথে কোনো বেয়াদবি করে নি শুধু ওর খেলার প্রতি ঝোঁক টা বেশি এই যা

রোদেলাঃ তাই বলে জিনিস এভাবে সে নষ্ট করবে

শিশিরঃ নষ্ট কোথায় করছে,,তুমি তো জানো ও কতো চঞ্চল এক জায়গায় স্থির হয়ে সে বসে থাকতে পারে না,,তাই জন্য হাত লেগে হয়তো

রোদেলাঃ তোমাকে না সত্যি কিছু বলার নেই আমার শিশির,,তোমার যা মন চায় তুমি করো___আমি আর কিচ্ছু তোমাকে বলবো না,,কিন্তু আজ তোমার মেয়েকে শুধু আমি পাই দেখো আমি ওর কি অবস্থা করি___বর্ষা বর্ষা কোথায় তুই,,আমি খুঁজে পেলে কিন্তু হাড় হাড্ডি কিচ্ছু আজ আস্ত রাখবো না,,বর্ষাআআ

আমি বর্ষাকে খুঁজতে নিচে নামলাম এদিকে আমার মেয়ে যে তারই বাবার বুকে লুকিয়ে সে কি আর আমি জানতাম,,এদিকে আমি চলে আসার পর শিশির বর্ষাকে বুঝাতে লাগলো একটু শান্ত হতে এতো তাড়াহুড়ো করলে তো ওর ও শরীরের কোথাও লাগতে পারে,,

এদিকে আমি নিচে এসে বর্ষাকে খুঁজছি কিন্তু কোথাও ওকে খুঁজে পাচ্ছি না,,একটা সময় আমার ভয় হতে শুরু করলো,,একটা অন্য রকম ভয় আমাকে ঘিরে ধরলো,,আমি বাড়ি পুরো তন্নতন্ন করে খুঁজে চলছি কিচেন বাড়ির ছাঁদ সব রুমের ওয়াশরুম উঠোন সব সব জায়গা খুঁজছি কিন্তু কোথাও বর্ষাকে পাচ্ছি না,,এদিকে শিশিরকে বলতে ভয় লাগছিলো যে বর্ষাকে আমি পাচ্ছি না,,কারণ বর্ষা যে শিশিরের কি সেটা শুধু আমি না পুরো ফ্যামিলি জানে,,শিশির মনে করে শুভ্র বর্ষার রুপ নিয়ে আমাদের জীবনে ফিরে এসেছে তাই সে একবার শুভ্র কে হারালেও দ্বিতীয় বার কখনোই সে বর্ষাকে হারানোর ব্যাথা সহ্য করতে পারবে না কখনোই না,তাই শিশির ভুলেও কোনোদিন বর্ষা কে একটা বকুনি বা চোখ রাঙিয়ে কথা বলে নি,,আমার চাইতেও শিশির বর্ষা কে জানপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসে,মানে এমন অবস্থা যে আমি না থাকলেও তার চলবে,,কিন্তু বর্ষা ছাড়া তার কিছুই হয় না,,ইভেন আমরা মা-র সাথে গ্রামে গেলেও শিশির ওটি ওপিডি শেষ করে বর্ষার সাথে সারারাত জেগে ভিডিও কলে দুনিয়ার রাজ্যের গল্প করবে কিন্তু ভুলেও বলবে না একটু আম্মু কে ফোন টা দে তো তোর মা টাকে একটু দেখি❤️❤️❤️❤️

পুরো বাড়ি বর্ষাকে খুঁজে আমি পুরো পাগল হয়ে যাচ্ছি,,না এবার শিশির কে জানানো খুবই জরুরি আমার,,এরপর বড় কিছু হয়ে গেলে,,আমি দৌড়ে শিশির কে তুলতে শিশিরের রুমে গেলাম

রোদেলাঃ শিশির শিশির উঠো না শিশির,,শিশির বর্ষাকে না আমি গত এক ঘন্টা ধরে খুঁজছি কিন্তু কোথাও পাচ্ছি না,,শিশির শিশির উঠো না____শিশির আমার ভীষণ ভয় করছে___শিশির তুমি কি করে এখনো এতো নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছ,,,আমি মাকেও ফোন করলাম মা বাজার থুইয়ে এক্ষুনি আসছে____শিশির উঠো না___শিশির

আমি এবার পুরো অঝোরে কেঁদে ফেললাম

রোদেলাঃ ও শিশির উঠো না,,শিশির

শিশিরঃ কাঁদছো কেনো এখন,,তখন না খুব বলে গেলে মেরে আজকে আমার প্রিন্সেসের তুমি পিঠের চামড়া তুলে ছিঁড়ে দেবে

রোদেলাঃ না আমি ওকে মারবো না,,তুমি আমার মেয়ে কে এনে দেও শিশির,,,উঠো না তুমি,,আমার খুব ভয় হচ্ছে একটু বুঝো___আমার মা টা আমার মা টা কোথায় গেলো,,,আমি আমি ওকে আর কখনো বকবো না কখনো রাগ করবো না___শিশির উঠো না তুমি

আমি কাঁদতে কাঁদতে শিশিরের গা থেকে কম্বল টা এক টানে তুলে দিলাম,,আর তুলতেই আমার পাগলি মেয়ে টা উঠে বসে ফিঁক করে আমাকে দেখে হাসি দিয়ে দিলো????কম্বলের ভেতরে লুকিয়ে মেয়ের চুলের আমার বিধস্ত অবস্থা,,সব চুল এলো মেলো হয়ে মুখের এ পাশ ওপাশ বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে,,,আমি বর্ষা কে দেখা মাএই তাকে আমার বুকে লুকিয়ে নিলাম,,আগলে ধরলাম নিজের সব দিয়ে,,চুমু এঁকে দিলাম তার পুরো মুখে❤️❤️❤️❤️❤️❤️

রোদেলাঃ কোথায় ছিলি মা তুই,,আমার সোনা মা এরকম করে মার সাথে কেউ লুকোচুরি খেলে,,আর কখনো আমার চোখ থেকে আড়াল হবি না ঠিক আছে

বর্ষা আমার চোখ মুছে দিয়ে আমার চুল ঠিক করে দিলো

বর্ষাঃ তুমি যে আমাকে মারবে বললে ওজন্যই তো আমি

রোদেলাঃ না মা তুই তো আমার সোনা মা আমি তোকে মারবো,,কিন্তু তুই এতো দুষ্ট হলে কি করে হবে বল তো আমাকে___এসব জিনিস কিনতে টাকা লাগে মা আমরা কেনো শুধু শুধু টাকা নষ্ট করবো মা এটা তো ঠিক না বল

বর্ষাঃ তুমি আর কান্না করো না মা,,বাবা আমাকে বুজালো(বুঝালো) তো,,আমি আর হুরাহুরি (হুড়াহুড়ি) করবো না

আমার মা মেয়ের কান্ড দেখে শিশির পুরো মনে মনে হেঁসে একটা নীরব হাসি দিলো,,আমি বর্ষার মাথায় হাত বুলে দিচ্ছি আর বর্ষা আমাকে শান্ত করছে,,এর মধ্যে মা আমার ফোন পেয়ে অর্ধেক বাজার থুইয়ে দৌড়ে চলে আসলেন,,

বাসবিঃ কোথায় কোথায় আমার নাতনি,,বর্ষা____এই তো আমার তিড়িং বিড়িং করে লাফানো ফড়িং টা,,,তুই যে বললি ওকে পাওয়া যাচ্ছে না

মা র প্রশ্নে আমি মা কে সব খুলে বললাম,,মা এবার সব শুনে হাসতে হাসতে বর্ষাকে কোলে তুলে নিলেন

বাসবিঃ নানু বুড়ি যাবি আমার সাথে বাজারে,,আমরা অনেক কিছু কিনবো এখন চকলেট কিনবো,,বাদাম কিনবো,,আইসক্রিম কিনবো

বর্ষাঃ আইতক্রীম___ইয়েএএএ___চলো চলো

রোদেলাঃ এই জামা পড়ে যাবি,,,দাঁড়াও মা জামা টা পাল্টে দেই,,নাস্তা তো অর্ধেক খায় আর অর্ধেক জামা তে মাখে___দেখি আয় এদিকে

আমি কাবাড থেকে নতুন জামা এনে রোদ কে রেডি করে দিতে থাকলাম,এদিকে শিশির উঠে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলেন ফ্রেশ হতে,,আমি বর্ষাকে কে রেডি করে দিয়ে মা র সাথে পাঠিয়ে দিলাম,,বর্ষাকে মার সাথে পাঠিয়ে দিয়ে আমি শিশিরের বিছানা গুছাতে শুরু করলাম,,শিশির টাওয়াল দিয়ে হাত মুখ মুছতে মুছতে রুমের গেট লাগিয়ে দিলেন,,এদিকে এসে আমার মেলে দাওয়া জানালার পর্দা গুলো আবার নামিয়ে নিলেন,,লাইট টা ওফ করে আমাকে এসে ঘাপ করে ধরে নিলেন

রোদেলাঃ এটা কি হচ্ছে

শিশিরঃ কাল,কে জানি আমাকে বললো আমি বুড়ো হয়ে গেছি,দিন দিন আনরোমান্টিক হয়ে যাচ্ছি তারপর তারপর কি যেনো হ্যা আমি ফ্যাকশে,পানসে একজনের দিকে ঘুরেও দেখি না

রোদেলাঃ দেখোই না তো

শিশিরঃ আচ্ছা

রোদেলাঃ কি করছো তুমি বর্ষার বাবা,,আরে

শিশিরঃ আর সেদিন কে জানি আরো একটা কথা বলেছিলো বাড়িতে ভোরের শিশির আছে গ্রীস্মের রোদ আছে বৃষ্টির জন্য বর্ষা আছে এবার একটা তার শরৎের সাদা মেঘ চাই❤️

রোদেলাঃ কে আবার বলবে,,এই আমি ছাড়া বাড়িতে আর কারো ভালো কথা বলার সময় আছে নাকি

শিশিরঃ তাই না,,ভালো কথা বলার হয়তো সময় নেই কিন্তু ভালো কাজ করার সময় ঠিক আছে

রোদেলাঃ আরে কি করছো কি,,আমার কাতুকুতু লাগছে শিশির

শিশিরঃ চুপ___বর্ষা ফেরা অবধি পুরো সময় টা এখন তুমি আমায় দেবা

রোদেলাঃ ঠেকা আমার

শিশিরঃ ঠেকা তাই না,,কার ঠেকা বুঝাবো আমি এখন তোমাকে

রোদেলাঃ তাই বুঝি___আচ্ছা বেশ আমি এখন আমার পুরোটা সময় আপনার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবো কিন্তুউউউউ

শিশিরঃ কিন্তু

রোদেলাঃ কিন্তু আমার একটা শর্ত আছে

শিশিরঃ কিসের শর্ত আবার

রোদেলাঃ বলছি কি শিশির,,মা-র না স্কুলে সোমবার এ একটা ফাংশন আছে তুমি যদি বলো আমি তাহলে বর্ষাকে নিয়ে

শিশিরঃ উমহুম,,সে বার মনে নেই দু দিনের কথা বলে পাক্কা দশ দিন থেকে তার পর এলে,,তোমাকে আরো আমি ছাড়ি

রোদেলাঃ তুমি এরকম পাষাণ কেনো শিশির,,আমি আর বর্ষা তো শুধু একটু

শিশিরঃ তুমি আর বর্ষা শুধু একটু কি সব জানি আমি,,দেখি এদিকে তাকাও

রোদেলাঃ না তাকাবো না,,দেখবো না আমি তোমাকে,,সারাদিন আমি বর্ষাকে নিয়ে একা একা বাড়িতে থাকি কতোক্ষন আর একা একা এভাবে ভালো লাগবে বলতে পারবা তুমি,,___বাড়িতে যাই তখনো ঔ তোমার জন্য রাতে ফিরতে হয় রাতে নাকি আমাকে আর বর্ষাকে পাশে না পেলে তোমার শান্তি হয় না___দুদিন একটু গ্রামে গিয়ে থাকতে চাইছি আর এনাকে দেখো

শিশিরঃ এক নিশ্বাসে কতো কথা বলো তুমি রোদ,,ঠিক আছে গ্রাম থেকে ঘুরে আসো সমস্যা নেই আমার,,বাট জাস্ট দুদিন

রোদেলাঃ ??সত্যি

শিশিরঃ হুম সত্যি,,,,,তা এবার একটু দুদিনের পাওনা টা পুষিয়ে দিয়ে যাও

রোদেলাঃ আচ্ছা দিচ্ছি দিচ্ছি??

___________সমাপ্ত_____________

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here