উপন্যাসঃ পাহাড়ে মেঘের ছায়া পর্ব – ৩০

0
2537

উপন্যাসঃ পাহাড়ে মেঘের ছায়া
পর্ব – ৩০
(নূর নাফিসা)
.
.
আবার হাত ধরে হাটতে হাটতে দুজন পাহাড়ি রাস্তায় সন্ধ্যার অন্ধকারের সৌন্দর্য উপভোগ করতে লাগলো। মেঘ হাটতে হাটতে নাফিসাকে রেস্তোরাঁয় নিয়ে এলো। একটা ফাঁকা টেবিলের কাছে এসে নাফিসাকে বসতে ইশারা করলো। নাফিসা বললো,
– এখানে কেন?
– এখানে সবাই কেন আসে?
– খাওয়ার জন্য।
– তাহলে আমরাও খাওয়ার জন্য এসেছি।
– শুধু শুধু টাকা নষ্ট করার প্রয়োজন নেই। বাসায় রান্না করে খাওয়াবো, চলুন।
– শুধু শুধু কোথায়! খাবারের বিনিময়েই তো টাকা দিবো।
নাফিসাকে বসিয়ে চেয়ার কাছে টেনে মেঘও বসলো। এমনিতেই ফোনটা বেজে উঠলো। ফোন হাতে নিয়ে দেখলো বৃষ্টি কল করেছে তাও আবার ভিডিও কল! বাবা মা কেউ পাশে থাকলে সর্বনাশ হয়ে যাবে তাই মেঘ রিসিভ করলো না। ওয়েটারকে ডেকে খাবার অর্ডার করলো। আবার ফোন বেজে চলেছে। মেঘ নাফিসার বিপরীতের চেয়ারে বসে ফোন রিসিভ করলো।
– কি হয়েছে তোর?
– কেমন আছি, জিজ্ঞেস না করেই আগে বলে কি হয়েছে তোর!
– জানিই তো তুই কেমন থাকলে আমাকে মনে করিস। আচ্ছা বল কেমন আছিস?
– জানো যেহেতু আর বলবো না। তোমরা কেমন আছো?
– আমরা মানে?
– মানে বুঝো না! ভাবি কেমন আছে?
– ওই তোর পাশে কে আছে?
বৃষ্টি ফোন চারিদিকে ঘুরিয়ে দেখিয়ে বললো,
– এই দেখো কেউ নেই। আমি একা আমার রুমে। এবার বলো।
– আলহামদুলিল্লাহ, আমরা ভালো আছি। বাবা-মা কেমন আছে?
– হুহ্! তুমি জানো নাকি! এমন ভাব করছো যেন বাবামায়ের সাথে তোমার কথাই হয়না! আমি সব জানি, প্রতিদিন দুইতিন বার করে কথা বলো। শুধু আমাকেই মনে করো না।
– এই যে মনে করেই তো ফোন রিসিভ করেছি।
– হ্যাঁ, একেবারে শাব্বাস! তুমি এখন কোথায় আছো?
– সিলেট।
– ধ্যাত! আমি জিজ্ঞেস করেছি এখন কোথায় মানে রেস্টুরেন্টে বসে আছো নাকি!
– রেস্তোরাঁয়।
– ওই একই, বাংলা আর ইংরেজি। তুমি এখানে কি করো?
– রেস্তোরাঁয় আবার কি করে? ডিনারে এসেছি।
– কেন, ভাবি কি খাবার দেয় না!
কথাটা বলে বৃষ্টি হাসতে লাগলো ইচ্ছেমতো। মেঘ মুচকি হেসে এই চেয়ার থেকে উঠে আবার নাফিসার পাশের চেয়ারে বসলো। নাফিসাকে দেখে বৃষ্টি হাসি থামিয়ে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে বললো,
– ওয়াও! ভাইয়া, তুমি ভাবিকে নিয়ে ডিনারে এসেছো! হাউ সুইট! ওফ্ফ! আমি যদি এখানে থাকতাম!
– তুই কেন আসবি আমাদের মাঝে!
– অহ! তাইতো! তোমরা তো জোড়া পাখি। বাদ দাও, তুমি অফ যাও ভাবির সাথে কথা বলবো। কেমন আছো ভাবি?
নাফিসা মুচকি হেসে জবাব দিলো,
– আলহামদুলিল্লাহ। তুমি কেমন আছো?
– আমিও আলহামদুলিল্লাহ। আফসোস একটাই, সরাসরি তেমন কথা বলতে পারলাম না তোমার সাথে! এখন তো আমি সেই দিন গুনছি যেদিন তুমি বাসায় আসবে। আলাদীনের প্রদীপ থাকলে আমি তোমাকে ছো মেরে নিয়ে আসতাম। তোমাকে কিন্তু খুব সুন্দর লাগছে, কোথাও গিয়েছিলে আজ? আই মিন, কোনো প্রোগ্রামে?
হুট করে মেঘ বললো,
– অনেক বলেছিস, এইবার তুই অফ যা। খাবার এসেছে, শান্তিতে খেতে দে। আল্লাহ হাফেজ।
মেঘ সাথে সাথে কল কেটে দিলো। বৃষ্টি মেসেজ পাঠালো, ” বউ নিয়ে বাহাদুরি করছ! বাসায় আয় একবার ভাবিকে আমার পক্ষে নিয়ে আসবো। ”
মেঘ কোনো প্রতুত্তর দিলো না। দুজনেই খেয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলো।
৩০.
বাসায় ফিরে দুজনেই খরগোশের সাথে খেলা করলো আর তাদের একটু যত্ন নিলো। খরগোশ ছানাদের আম্মির রুমে রেখে এসে দেখলো মেঘ খাটে বসে ল্যাপটপ নিয়ে কিছু করছে। নাফিসা মেঘের উপর দিয়েই মশারী টানালো। খাটে উঠে বালিশ ঠিকঠাক করে বললো,
– ঘুমাবে না?
– প্রতি রাত তো ঘুমিয়েই কাটাই। আজ গল্প করে কাটাতে পারবে না?
– শুনতে পারবো, বলতে পারবো না।
মেঘ হেসে উঠলো নাফিসার কথায়!
– আচ্ছা, তাহলে শুনাই। এদিকে এসো।
নাফিসাকে কাছে টেনে বসিয়ে ল্যাপটপে বাবা মা ও বৃষ্টির ছবি দেখালো। তাদের সম্পর্কে কিছু ধারণা দিলো। তারপর অনলাইনে কিছু মনোমুগ্ধকর জায়গা দেখালো। এভাবে প্রায় এক ঘন্টার মতো জেগে থেকে গল্পের সমাপ্তি ঘটিয়ে ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমালো।
সকালে ঘুম থেকে উঠে নাফিসা রান্না বসিয়েছে। মেঘ নামাজ পড়ে আবার ঘুমিয়ে পড়েছে। রান্না শেষ হতেই নাফিসা ডেকে তুললো মেঘকে। মেঘ হাত মুখ ধুয়ে ঘরে এসেছে। আর এদিকে নাফিসা খাবার আনতে গিয়েছে। মেঘের ফোন বেজে উঠলে দেখলো মা কল করেছে। সে রিসিভ করে লাউড স্পিকারে রেখে কথা বলতে লাগলো আর আলমারিতে জামাকাপড় ঘাটতে লাগলো।
– আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছো মোর জননী?
– ওয়ালাইকুম আসসালাম। আলহামদুলিল্লাহ আমি তো ভালোই আছি। আমার পুত্র কেমন আছে?
– আলহামদুলিল্লাহ, ভালো। নাস্তা করেছো?
– হ্যাঁ। তুই?
– না করবো।
– সময় মতো কিছু হয় না! কি অবস্থা করেছিস দেহের কে জানে! কবে বেরিয়েছে আর ফেরার খবর নেই!
– ওহহো! আমাকে নিয়ে শুধু শুধু দুশ্চিন্তা করো না তো! তোমাদের খেয়াল রাখো। জানোই তো একটা কাজ হাতে নিয়েছি ওটা শেষ না করে কিভাবে আসি!
– কাজ অন্য কাউকে বুঝিয়ে দিয়ে আয়। এবার তো তোকে আসতেই হবে। তোর বাবা মারিশার বাবার সাথে তোর আর মারিশার বিয়ের কথা পাকা করছে। বুড়ো হয়ে যাচ্ছি, ছেলের সংসার দেখে যাবো না! ইচ্ছে তো আগেরই ছিলো এবার সেটা পূরণ করার সময় এসেছে।
– হোয়াট! মারিশার সাথে আমার বিয়ে!
– হ্যাঁ, সমস্যা কোথায়। আমার ও তোর বাবার খুব পছন্দ। তাছাড়া তোদের সম্পর্কও তো ভালো। তুই বাসায় ফিরে আয় আগে, তারপর কথা বলি।
মায়ের কথা শেষ না হতেই এদিকে কোন এক শব্দ হলো! মেঘ পেছনে তাকিয়ে দেখলো নাফিসা দরজার সামনে দাড়িয়ে! চোখে তার অশ্রু, দৃষ্টি মেঘের দিকেই। তার হাতে যে খাবারের বাটি ছিলো সেটা মাটিতে পড়েই এমন শব্দ হয়েছে। মেঘ তাকানোর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে নাফিসা দৌড়ে চলে গেলো বাইরের দিকে। মেঘ বললো,
– মা, আমি তোমার সাথে পরে কথা বলছি। আল্লাহ হাফেজ।
– ওকে, আল্লাহ হাফেজ।
মেঘ কল কেটে সাথে সাথে দ্রুত গতিতে বাইরে বেরিয়ে গেলো। নাফিসাকে খুজছে সে! উঠুনে নেমে লক্ষ্য করলো নাফিসা চালতা গাছের নিচে বেঞ্চিতে বসে আছে। কাছে এসে দেখলো বাড়ির বাইরের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট কামড়ে ধরে নিরবে কাদছে! মেঘ দ্রুত পাশে এসে বসলো। নাফিসাকে ধরে বললো,
– মেঘা! কাদছো কেন তুমি! এই, কি হয়েছে!
নাফিসা কোনো জবাব না দিয়ে মেঘের হাত সরিয়ে উঠে দাড়ালো। চোখ মুছতে মুছতে সে ঘরের দিকে দ্রুত পায়ে অগ্রসর হলো! মেঘও পিছু পিছু ছুটছে। নাফিসা বিয়ের কথা শুনে মনে আঘাত পেয়েছে এটা মেঘের অজানা নয়! নাফিসা ঘরে এসে দরজা বন্ধ করে দিতে চাইলো কিন্তু তার আগেই মেঘ দরজা ঠেলে খুলে ফেললো। নাফিসা আম্মির রুমে চলে যাওয়ার জন্য বের হতে গেলে মেঘ তাকে টেনে রুমের ভেতরে এনে দরজা লাগিয়ে দিলো। তাকে খাটে বসিয়ে বললো,
– এমন করছো কেন তুমি? ব্যাপারটা তো বুঝো আগে। আমি..
– বিয়ে করে নিন আপনি।
মেঘকে থামিয়ে নাফিসা হঠাৎ এমন কথা বলায় মেঘের রাগ উঠে গেছে! তবুও রাগ প্রকাশ করেনি! ঠান্ডা স্বরে বললো,
– কান্না করো না শুধু শুধু। আমাকে বলার সুযোগ দাও। বুঝতে চেষ্টা করো।
নাফিসা মেঘের হাত ছাড়িয়ে উঠে দাড়িয়ে বললো,
– কিছু বুঝাতে হবে না আমাকে। আপনি বিয়ে করে নিন। বাবামাকে কষ্ট দেওয়ার প্রয়োজন নেই! মুক্ত করে দিলাম আমি আপনাকে। ভুলে যান নাফিসা বলে কেউ ছিলো!
এবার মেঘ উঠে দাড়ালো। রেগে গেছে খুব! নাফিসার বাহু চেপে ধরে ঝাকিয়ে বললো,
– কিসের মুক্তি দিবি আমাকে বল? কিসের মুক্তি? সবাইকেই তোর বাবার মতো মনে হয়! এতোদিন ধরে পড়ে আছি শুধু তোর জন্য, আর আজ বলছিস মুক্ত করে দিয়েছিস! এতোটাই সহজ জীবন? পুতুল খেলা মনে হয়? এতো দেমাক কিসের তোর? কম চেষ্টা করেছি তোকে পাওয়ার জন্য? কম চেষ্টা করেছি তোর দুঃখ মুছে তোকে রঙিন জীবনের সন্ধান দিতে! আর আমাকে ভাবছিস আমি বিয়ে করে নিবো! মা বলেছে শুধু আর আমি বিয়ে করে ফেলেছি! বিরক্ত হয়ে যাস আমাকে দেখলে তাই না! খুব বোঝা মনে হয় আমাকে! চলেই তো যাচ্ছিলাম সেদিন! বাধা দিলি কেন! আবার এখনই দূরে সরিয়ে দিচ্ছিস কেন! কথায় আছে বানরকে আশ্রয় দিলে মাথায় উঠে বসে! হুম ঠিকই! অতিরিক্ত ভালোবাসা দিয়ে ফেলেছি, তার উপযুক্ত ফল এখন পাচ্ছি! যাহ, আসবো না তোর কাছে।
মেঘ প্রচুর রেগে গেছে তাকে কিছু বলার সুযোগ না দেয়ায় ! দরজা খুলে হনহন করে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেলো! নাফিসা কান্না করতে করতে মাটিতে বসে পড়লো! কি করবে! এজন্যই তো পুরুষ মানুষের সাথে অন্তরঙ্গ হতে চায়নি সে! পুরুষের মায়ায় জড়াতে চায়নি নিজেকে! কিন্তু মেঘের ভালোবাসা বাধ্য করেছে তাকে আপন করে নিতে! সে ও তো মেঘকে চায়! এটাও জানে মেঘ তাকে অনেক ভালোবাসে! কিন্তু না চাইতেও মেঘকে আঘাত করেছে! সহ্য হয় না তার কিছু! প্রিয়জনকে হারানোর ভয়ে থাকে সবসময়! যে ভয়টা সবসময় তাকে দুশ্চিন্তায় রাখে সে ভয়টাই এখন বাস্তবের দিকে যাচ্ছে! মেঘের বাবা-মা যদি নাফিসাকে মেনে না নেয়! মেঘের অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও যদি মেঘকে জোর করেই বিয়ে করতে বাধ্য করে! তাহলে তার কি হবে! মেঘকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছে সেটা কি শেষ হয়ে যাবে! মেঘকে সে চিরতরে হারিয়ে ফেলবে তাহলে!
নাফিসা শব্দ করে কেদে উঠলো! কিন্তু তার কান্নার শব্দ শুধু তার ঘর পর্যন্তই! বেশ কিছুক্ষণ কান্না করেছে কিন্তু শান্তনা দেওয়ার মতো কেউ নেই পাশে! কিছুক্ষণ নিশ্চুপ হয়ে বসে রইলো নাফিসা। পরক্ষণেই মেঘের কথা মনে হলো। এই মানুষটা তার সাদাকালো জীবনকে রঙিন করে তুলেছে! তাকে খুব ভালোবেসেছে! সে নিশ্চয়ই তাকে ধোকা দিবে না! এটা কি করলো সে! শুধু শুধু এভাবে কেন কষ্ট দিলো তাকে! সে তো কোন অপরাধ করেনি, তাহলে সে কেন শাস্তি পাবে! সকালের নাস্তাও করা হয়নি! ক্ষুধা লেগেছে নিশ্চয়ই, কিন্তু কোথায় গেছে!
নানান কথা ভাবতে ভাবতে এবার বললো,
– না, এভাবে বসে থাকলে হবে না। খুঁজে দেখতে হবে।
নাফিসা চোখমুখ মুছে ঘরে তালা লাগিয়ে বের হলো বাসা থেকে। ঘন্টাখানেক হয়ে গেছে মেঘ বেরিয়েছে। কোথায় যেতে পারে সে! আবার ঢাকা ফিরে যায়নি তো অভিমান করে! মনের ভেতর নানান চিন্তা নিয়ে পথে খুজতে লাগলো মেঘকে! পথে খুজতে খুজতে সে চা বাগান পেরিয়ে সেই পাহাড়ে এসেছে। পাহাড়ে উঠে এখানেই মেঘকে বসে থাকতে দেখে খুব বড় একটা নিশ্বাস ছাড়লো! এতো চিন্তা নিয়ে হাটতে হাটতে হাপিয়ে গেছে সে! কয়েকটি দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে মেঘের কাছে এসে বসলো। মেঘ দু’হাতে হাটু বেধে বসে আছে। নাফিসার উপস্থিতি টের পেয়েও তাকায়নি একবারও! নাফিসা দু’হাতে মেঘের একহাত জড়িয়ে ধরে কাধ বরাবর হেলান দিলো মেঘের হাতের উপর! মেঘের কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখে বললো,
– সরি। আর কখনও এসব বলবো না। তোমার কথা আগে শুনবো। ক্ষুধা লাগেনি? নাস্তা করবে না?
মেঘ কিছু বলছে না। শুধু পলকহীন তাকিয়ে আছে সেই দূর পাহাড় পর্বতের দিকে। নাফিসার খুব কষ্ট হচ্ছে। কিভাবে এখন মানাবে কিছুই বুঝতে পারছে না! সে উঠে মেঘের সামনে বসলো। নিজ হাতে হাত ছাড়িয়ে হাটু দুটোর বাধন খুলে পা টেনে তার দু’দিকে ছড়িয়ে দিলো। সে এখন মেঘের দু পায়ের মাঝে বসা! মেঘ এখন দৃষ্টি নাফিসার দিকে দিয়ে তার কান্ড দেখছে। নাফিসা আরেকটু পেছনে এসে মেঘের শরীরে হেলান দিলো। মেঘের দুহাত তার পেটের উপর দিয়ে নিয়ে নিজেকে বন্দী করার চেষ্টা করলো কিন্তু মেঘের কোন প্রতিক্রিয়া দেখছে না! ঘাড় ঘুরিয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে মেঘের মুখে তাকিয়ে বললো,
– সরি তো। আর কখনো বলবো না! রাগ করো না প্লিজ! ক্ষমা করে দাও!
বাচ্চাদের মতো দৃষ্টিভঙ্গি দেখে মেঘ মন খারাপ থাকা সত্ত্বেও ফিক করে হেসে নাফিসাকে দু’হাতে বেধে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো। মাথার একপাশে মাথা ঠেকিয়ে বললো,
– রাগ করিনি তোমার উপর! খুব বড় চিন্তায় আছি আমি, মেঘা! বাবামায়ের কাছে কিভাবে তোমার কথা তুলে ধরবো বুঝতে পারছি না! এখন মনে হচ্ছে যখন বিয়েটা হয়েছিলো তখনই সবটা জানানো প্রয়োজন ছিলো! এখন যদি জানে বিয়ে করেছি সেই কবে অথচ জানিয়েছি এতোদিন পর তাহলে তো আরও বেশি কষ্ট পাবে! আর কি সিদ্ধান্ত নিবে সেটা আমি ধারণা করতে পারছি না! এতো চিন্তার মাঝেও তুমি আবার উল্টাপাল্টা বলা শুরু করেছো তাই রেগে গেছি!
– সরি।
– আর কখনো এসব বলবে না। আমি তোমাকেই ভালোবাসি। একাধিক বিয়ে করার কোনো ইচ্ছাও আমার নেই! পারলে ভালো কোন আইডিয়া দাও কিভাবে আমি বাবামায়ের কাছে বলবো বিয়ের কথাটা! মারিশার সাথে বিয়ে পাকা করার আগেই আমাকে ঢাকা ফিরে সবটা জানাতে হবে!
– না, কোথাও যাবে না!
মেঘ নাফিসার মাঝে ভয়টা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে! তাই পেছন থেকে কপালের একপাশে ভালোবাসার স্পর্শ একে জড়িয়ে ধরে বসে রইলো। কয়েক মিনিট অতিবাহিত হতেই নাফিসা বললো,
– নাস্তা করবে না?
– হুম। চলো বাসায়।
খরগোশের জন্য কিছু নরম ঘাস হাতে নিয়ে নাফিসা মেঘের সাথে বাসায় ফিরে এলো। দুজনেই একসাথে নাস্তা করে নিলো। খাবারের বাটি পড়ে যাওয়ায় দুপুরের জন্য নাফিসা আবার রান্না বসালো। মেঘ কাজে বেরিয়েছে। দুপুরের পরে ফিরেছে বাসায়। গোসল করে দুজনেই খেয়ে ঘুম দিয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here