গোধূলির_রাঙা_আলোয়,পর্ব-০৬,০৭

0
1198

#গোধূলির_রাঙা_আলোয়,পর্ব-০৬,০৭
লেখনীতেঃ তাহমিনা তমা
পর্ব-০৬

বেলকনিতে রেলিঙের উপর হাত রেখে শূন্য দৃষ্টিতে সামনে তাকিয়ে আছে শুদ্ধ। মনটা একদমই ভালো নেই তার, সবকিছু তিক্ত লাগছে। এতোকিছু করেও তিয়াসার কোনো খোঁজ পাচ্ছে না।

কফি চলবে ?

কারো আওয়াজে পাশে তাকালো শুদ্ধ। উৎসা এক মগ কফি এগিয়ে দিয়েছে তার দিকে। শুদ্ধ মুচকি হেঁসে কফির মগটা হাতে নিলো।

ধন্যবাদ।

উৎসা বললো, আপনি হাঁসতেও পারেন ?

আমি হাঁসতে পারি না, এটা কেনো মনে হলো তোমার ?

হাসতে দেখি না তো আপনাকে, তাই।

হাসতে কোনো কারণের প্রয়োজন হয়, অকারণে হাসা পাগলের লক্ষণ।

উৎসা মুচকি হাসলো তবে কিছু বললো না। শুদ্ধ চুপচাপ কফির মগে চুমুক দিলো।

উৎসা হঠাৎ বললো, টেনশনে আছেন ?

শুদ্ধ কিছু না বলে জোড় পূর্বক একটু হাসলো। শুদ্ধ মন খোলে কথা বলতে পারে না। নিজের ভেতরের আনন্দ বা কষ্ট নিজের মধ্যেই রাখে।

উৎসা আবার বললো, টেনশন করবেন না ভাবির খোঁজ পাওয়া যাবে।

শুদ্ধ দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বললো, মুগ্ধ আর মিশু দু’জনকে আমি অসম্ভব ভালোবাসি। তবে কখনো সেটা প্রকাশ করিনি। মুগ্ধ এই প্রথম আমার কাছে কিছু চেয়েছে আর সেটা আমি দিতে পারছি না। এই প্রথম নিজেকে ব্যর্থ মনে হচ্ছে।

উৎসা মুচকি হেসে বললো, পৃথিবীর প্রত্যেকটা ঘটনার একটা ভালো আর একটা খারাপ দিক থাকে। কোনো ঘটনায় হয়তো আপনার ক্ষতি হয়েছে আবার দেখা গেলো সেই একই ঘটনায় অন্যকারো উপকার হয়েছে। তবে হয়তো সেটা আপনি কোনোদিন জানতেও পারলেন না। তিয়াসা ভাবির সাথে মুগ্ধ ভাইয়ার এই দুরত্বটা হওয়া প্রয়োজন ছিলো। দুজন দু’জনকে ছাড়া অচল সেটা সহজে উপলব্ধি করতে পারবে এই দুরত্বে।

শুদ্ধ অবাক হয়ে তাকালো উৎসার দিকে আর বললো, বয়সের তুলনায় তুমি একটু বেশি ম্যাচিউরড। এতটা গভীরভাবে আমি চিন্তা করে দেখিনি। তোমার বয়সের মেয়েরা বাস্তবতার চাইতে আবেগে সবকিছুর বিচার করে বেশি।

উৎসা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বললো, আহ্লাদে নয় বাস্তবতার সাথে যুদ্ধ করে বড় হয়েছি। তাই সবকিছু আবেগ দিয়ে নয় বাস্তবতা দিয়ে বিচার করি।

শুদ্ধ ভ্রু কুঁচকে বললো, মানে ?

উৎসা রহস্যময় হেসে বললো, শুভরাত্রি, তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ুন। ডক্টর মানুষ হয়ে নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নেই আপনার।

শুদ্ধর উত্তরের অপেক্ষা না করে রুমে চলে গেলো উৎসা। শুদ্ধ তখনো তাকিয়ে আছে উৎসার যাওয়ার পানে। শুদ্ধ অবাক হচ্ছে মেয়েটার আচরণে। একই বয়সের তামান্না যেখানে এখনো এতোটা ছেলেমানুষ, সেখানে এই মেয়েটার মধ্যে একদমই বাচ্চামো নেই। প্রতিটা কথায় আছে গভীরতা।

উৎসা হঠাৎ ফিরে এসে বললো, আমাকে এতো ভদ্র মনে করার কারণ নেই। আমি সময়ের সাথে নিজেকে খুব সুন্দর করে মানিয়ে নিতে পারি। এখানে নতুন তাই ভদ্র থাকছি।

শুদ্ধ হতভম্ব উৎসার কথায়। এখনই সে নিজে নিজে ভাবছিলো মেয়েটার মধ্যে বাচ্চামি নেই আর পরক্ষণেই তাকে ভুল প্রমানিত করলো। উৎসা যেভাবে এসেছিলো সেভাবেই আবার রুমে চলে গেলো।

শুদ্ধ মুচকি হেসে বললো, মেয়েটা সত্যি রহস্যময়।

পরক্ষণে নিজেকে শাসিয়ে বললো, শুদ্ধ তুমি কেনো মেয়েটার প্রতি এতো ইন্টারেস্ট দেখাচ্ছো। মেয়েটা বয়সের দিক থেকে তোমার অনেক ছোট, নিতান্তই বাচ্চা।

শুদ্ধ উৎসাদের রুমের দিকে একবার তাকিয়ে নিজের রুমে চলো গেলো। সত্যি অনেকটা রাত হয়ে গেছে, ঘুমানো প্রয়োজন এবার।

৬.
সকালে সবাই একসাথেই ব্রেকফাস্ট করলো। শুদ্ধ মুগ্ধকেও নিজের সাথে নিয়ে এসেছিলো কিন্তু মুগ্ধ খাবার নাড়াচাড়া করা ছাড়াও মুখে দিয়েছে কয়বার সেটা বলা মুশকিল। শুদ্ধ হসপিটালের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লো। একটা সরকারি হসপিটালের ডক্টর শুদ্ধ। জয়েন করেছে খুব বেশিদিন হয়নি, তবে নিজের কাজের প্রতি অত্যন্ত সিনসিয়ার। উৎসা আর তামান্না ভার্সিটির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে গেলো। আপাতত তারা এই বাসাতেই থাকবে ঠিক করেছে। একটা রিকশা ডেকে তাতে উঠে পরলো। তামান্না আশপাশটা দেখছে আর চকলেট খাচ্ছে। এদিকে উৎসা ফেসবুকে নিউজফিডে ঘুরাঘুরি করছে।

হঠাৎ কিছু চোখে পড়তেই উৎসা চেঁচিয়ে বলে উঠলো, তাম্বু।

উৎসা এমনভাবে চিৎকার করেছে ভয়ে তামান্নার হাতের চকলেট পরে গেছে আর রিকশাওয়ালা মামাও রিকশা থামিয়ে তড়িঘড়ি করে নেমে পড়েছে।

তামান্না রেগে উৎসার দিকে তাকিয়ে বললো, এমন করে কেউ চিৎকার করে ? এখনই ভয়ে হার্ট অ্যাটাক হয়ে যাচ্ছিলো আমার। কী হয়েছে তোর ?

রিকশাওয়ালা মামাও বললো, আমিও ভয় পাইয়া গেছি, কী হইলো আফা ?

উৎসা ফোনের দিকে তাকিয়েই বললো, তিয়াসা ভাবি।

তামান্না চোখ বড় বড় করে বললো, হোয়াট ? কোথায় তিয়াসা ভাবি ?

তামান্না আশেপাশে তাকিয়ে কথাটা বললে উৎসা নিজের ফোনটা তামান্নার সামনে ধরে। ট্রাভেলার্স বিডি নামক একটা পেইজ থেকে সাজেক ট্যুরের গ্রুপ ছবি পোস্ট করেছে মিনিট দশেক আগে। সবার সাথে দাঁড়ানো তিয়াসাকে চিনতে অসুবিধা হলো না তামান্নার

চোখ বড় বড় করে বললো, ও মাই গড। এটা তো সত্যি তিয়াসা ভাবি কিন্তু ভাবি সাজেক গেলো কীভাবে ? এখনই মুগ্ধ ভাইয়াকে জানাতে হবে।

উৎসা একটু চিন্তা করে বললো, মুগ্ধ ভাইয়াকে জানানো ঠিক হবে না। কোনোকিছু চিন্তা ভাবনা না করে হুট করে সাজেক রওনা হয়ে যাবে। কিন্তু মুগ্ধ ভাইয়ার শারীরিক বা মানসিক কন্ডিশন ঠিক নেই, রিস্কি হয়ে যাবে।

তামান্না চিন্তা মগ্ন হয়ে বললো, তাহলে কী করবো এখন ?

উৎসা বললো, তোর শুদ্ধ ভাইয়ার হসপিটাল চিনিস ?

তামান্না বললো, হ্যাঁ চিনি তো কিন্তু হসপিটাল দিয়ে কী হবে ?

হসপিটাল দিয়ে কিছু হবে না। তবে ডক্টর আরফান সাদিক শুদ্ধকে দিয়ে অনেক কিছুই হবে। রিকশাওয়ালা মামাকে হসপিটালের ঠিকানা বল।

তামান্না হসপিটালের ঠিকানা বললে রিকশাওয়ালা সেদিকে রওনা হলো। বেশি সময় লাগলো না হসপিটালে পৌঁছাতে। রিকশা ভাড়া মিটিয়ে ভেতরে চলে গেলো দু’জনেই। রিসিপশন থেকে শুদ্ধর কথা জানতে চাইলে রুম নাম্বার বলে দিলো। হসপিটালের গন্ধ একদমই সহ্য হয় না উৎসার কিন্তু বাঁধ্য হয়ে আসতে হলো। উৎসা যথাসম্ভব এড়িয়ে চলে হসপিটাল। নিজের কোনো সমস্যা হলেও সয্য হওয়া পর্যন্ত হসপিটালে যায় না। অদ্ভুত বিষয়, সে নিজে হসপিটাল পছন্দ করে না আর যাকে পছন্দ হলো সে কিনা প্রয়োজনে চব্বিশ ঘণ্টাও হসপিটালে কাটায়। চেম্বারের সামনে গিয়ে দেখলো ভালোই রোগীর ভীড়। সরকারি হসপিটালে রোগীর সংখ্যা একটু বেশি হয়। যে ব্যক্তি সিরিয়াল নাম্বার ডাকছে তার কাছে গিয়ে তামান্না নিজের পরিচয় দিলো। লোকটা সাথে সাথেই শুদ্ধকে কল দিয়ে জানালো তার বোন এসেছে দেখা করতে। শুদ্ধ একটু বেশি অবাক হলো তামান্না আর উৎসার কথা শুনে। ভার্সিটি থাকার টাইমে হসপিটালে কী করছে ভেবে পায় না। শুদ্ধ পরের রোগী না পাঠিয়ে ওদের পাঠাতে বলে। লোকটা ওদের দু’মিনিট বসতে বলে। উৎসা আর তামান্না একপাশে গিয়ে বসে।

উৎসা বললো, আমার গা গুলিয়ে আসছে ফিনাইলের গন্ধে।

তামান্না বললো, তাহলে আসতে গেলি কেনো ?

কেনো আসলাম তুই বুঝতে পারছিস না ?

তামান্না কিছু না বলে চুপচাপ বসে রইলো। মিনিট পাঁচেক হতেই ওদের ডাক পরলো। দু’জনে উঠে শুদ্ধের চেম্বারে চলে গেলো।

তামান্না ভেতরে গিয়ে আশপাশটা দেখে বললো, ভাইয়া তুমি এতো ভালো ভালো প্রাইভেট হসপিটালের অফার ছেড়ে, এই সরকারি হসপিটালের জব নিলে কোন শখে। চেম্বারটা তো অনেক ছোট।

শুদ্ধ বিরক্ত গলায় বললো, আমি টাকা ইনকাম করার জন্য ডক্টর হইনি বরং মানুষের সেবা করার জন্য হয়েছি। এখন তোরা নিশ্চয়ই আমার চেম্বার পরিদর্শন করার জন্য এখানে আসিসনি। ভার্সিটি বাদ দিয়ে এখানে কেনো এসেছিস ?

উৎসা বললো, তামান্না তুই বাজে কথা কম বল, আমি বুঝিয়ে বলছি সবটা।

তামান্না মুখ গোমরা করে বললো, যা বল।

শুদ্ধ উৎসার দিকে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকালো আর উৎসা নিজের ফোন শুদ্ধের সামনে ধরলো। স্কিনে তাকিয়ে চোখ বড় বড় হয়ে গেলো শুদ্ধর।

চকিত গলায় বললো, তিয়াসা ?

উৎসা মুচকি হেসে বললো, হুম।

শুদ্ধ ফোনটা নিয়ে একটু ঘেঁটে দেখতেই সবটা বুঝে গেলো। পেইজ থেকে নাম্বারটা নিজের ফোনে তুলে নিলো।

উৎসার দিকে তাকিয়ে কৃতজ্ঞতার সুরে বললো, ধন্যবাদ।

উত্তরে উৎসা মুচকি হাসলো আর শুদ্ধও। তামান্না ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে দু’জনের দিকে। দু’জনের দৃষ্টি কেমন গোলমেলে লাগছে তার কাছে। পরক্ষণেই নিজের ফালতু চিন্তা মনে করে মাথা থেকে ঝেড়ে ফেললো। কারণ দুজনকেই সে ভালো করে চিনে। দু’জনেই নাম্বার ওয়ান নিরামিষ, এই একটা দিকে তাদের অনেক মিল।

শুদ্ধ একটু গলা পরিষ্কার করে বললো, মুগ্ধকে এখন কিছু জানানোর প্রয়োজন নেই। কোনোকিছু চিন্তা না করেই রাওনা হয়ে যাবে। এটা কবে তোলা পিকচার আর এখনো ওরা সাজেকেই আছে নাকি সেখান থেকে মুভ করেছে সব জানতে হবে। আমি সব খবর নেওয়ার ব্যবস্থা করছি, এখনই বাসায় কাউকে কিছু জানানোর প্রয়োজন নেই।

তামান্না আর উৎসা দু’জনেই মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো।

এখন তোমরা ভার্সিটি চলে যাও, আমি দেখছি ব্যাপারটা।

তামান্না হুট করে বললো, ভাইয়া তুমি এতো কৃপণ কেনো ? একটু চা কফিও অফার করলে না।

শুদ্ধ মুচকি হেসে বললো, হসপিটালে খেতে পারবি ? দেখে তো মনে হচ্ছে শ্বাস নিতেই কষ্ট হচ্ছে।

শেষের কথাটা উৎসার দিকে তাকিয়ে বললো শুদ্ধ। উৎসা মাথা নিচু করে ফেললো শুদ্ধর কথা শুনে।

এখন যা, আমি তোদের ট্রিট দিবো রেস্টুরেন্টে।

তামান্না খুশি হয়ে বললো, ওকে।

তামান্না বেড়িয়ে গেলে উৎসা শুদ্ধর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বেড়িয়ে গেলো। বিনিময়ে শুদ্ধ মুচকি হাসলো। ওরা চলে যেতেই শুদ্ধ কাউকে কল করে সবটা বুঝিয়ে বলে আবার রোগী দেখতে লাগলো।

৭.
গোধূলির রাঙা আলোয় সেজেছে চারপাশ। পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখতে মন্দ লাগছে না। তিয়াসা ভেবেছিলো এতদূরে এসে মুগ্ধর স্মৃতি একটু ভুলে থাকতে পারবে। কিন্তু প্রতিটা মুহূর্তে মনে হচ্ছে এখন মুগ্ধ সাথে থাকলে সবটা হয়তো অন্যরকম হতো। এই তো এখন মনে হচ্ছে, এই গোধূলি লগ্নে মুগ্ধর কাঁধে মাথা রেখে সূর্যাস্ত দেখার অনুভূতিটা নিশ্চয়ই জীবনের শ্রেষ্ঠ একটা অনুভূতি হতো। গালে কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে পাশ ফিরে তাকালো তিয়াসা।

তোরা মোলায়েম গলায় বললো, যাকে ছেড়ে থাকতে পারবি না তার থেকে দূরে এলি কেনো ?

তিয়াসা তোরার কাঁধে মাথা রেখে বললো, পৃথিবীর সবচেয়ে তিক্ত অনুভূতি, ভালোবাসার মানুষের অবহেলা। আমি দূরে থাকলে যদি সে ভালো থাকে তাহলে থাকুক না। আমি তাকে দোষী মনে করি না। বিনা অপরাধে এতকিছুর জন্য দায়ী হতে হলে আমিও হয়তো এমনই করতাম। তবে আমি তো তাকে ভালোবাসি তাই সহ্য করতে খুব বেশি কষ্ট হতো।

একটা গান শুনছিস তোরা,
পর মানুষে দুঃখ দিলে….দুঃখ মনে হয় না,
আপন মানুষ কষ্ট দিলে….মেনে নেয়া যায় না,
আপন মানুষ কষ্ট দিলে….মেনে নেয়া যায় না!

সবার একজন মনের মানুষ….প্রাণের মানুষ থাকে,
মন প্রাণ উজাড় করিয়া….ভালবাসে তাকে।

ভালবাসে যে যাহাকে…..কষ্ট যেন দেয় না,
আপন মানুষ কষ্ট দিলে….মেনে নেয়া যায় না,

পাথরের আঘাতে কেহ…..খুশিতে হাসে,
ফুলের আঘাত পেয়ে কেহ….কেঁদে ধুলায় মিশে !

পাথরের আঘাত সয় বুকে….ফুলের আঘাত সয় না;
আপন মানুষ কষ্ট দিলে….মেনে নেয়া যায় না !

ভালবাসলে স্বার্থ ভুলে….ভালবাসিও,
ভাল যারে বাসিয়াছ….ভালবেসেই যাইও

গান টুকু গেয়ে ডুকরে কেঁদে উঠলো তিয়াসা।

কাঁদতে কাঁদতে চিৎকার করে বললো, আমি আপনাকে খুব ভালোবাসি মুগ্ধ, খুব ভালোবাসি। আপনাকে ছেড়ে থাকতে দম বন্ধ হয়ে আসছে আমার। এই বিশুদ্ধ বাতাস আমার কাছে বিষাক্ত মনে হচ্ছে, এক একটা শ্বাস নিতে খুব বেশি কষ্ট হচ্ছে।

তিয়াসার কথাগুলো পাহাড়ে আঘাত করে প্রতিধ্বনিত হতে লাগলো। তোরা তিয়াসাকে বুকে আগলে শান্ত করার চেষ্টা করতে লাগলো। একটু দূরে দাঁড়িয়ে কেউ ক্যামেরা বন্দী করলো তিয়াসার গান আর প্রত্যেকটা কথা। সাইড থেকে করায় চেহারা স্পষ্ট নয়, তবে প্রতিটা শব্দ সুস্পষ্ট।

চলবে,,,,

#গোধূলির_রাঙা_আলোয়
লেখনীতেঃ তাহমিনা তমা
পর্ব-০৭

একটু দূরে দাঁড়িয়ে কেউ ক্যামেরা বন্দী করলো তিয়াসার গান আর প্রত্যেকটা কথা। সাইড থেকে করায় চেহারা স্পষ্ট নয়, তবে প্রতিটা শব্দ সুস্পষ্ট।

আশপাশটা অন্ধকারে ছেয়ে যেতেই তোরা বললো, চল কটেজে ফিরতে হবে। কালকের দিনটাই তো আছি আমরা, তারপর চলে যাবো। এখানে সে তোর মন ভালো হওয়ার বদলে আরো খারাপ হয়ে গেছে দেখছি।

তিয়াসা কিছু বললো না আর, তোরা ভুল কিছু বলেনি। এখানে এসে সত্যি তার মন আরো বিষিয়ে উঠেছে। তিয়াসার স্বপ্ন ছিলো ভালোবাসার মানুষের সাথে সাজেক ভ্রমণ করার। সাজেক সে এসেছে ঠিকই কিন্তু পাশে ভালোবাসার মানুষটা নেই।

তোরা কারো সাথে বেড শেয়ার করতে পছন্দ করে না। তাই দুজনের জন্য আলাদা রুম নেওয়া হয়েছে।

তোরা তিয়াসাকে তার রুমে এগিয়ে দিয়ে বললো, তুই ফ্রেশ হয়ে আয়। আমরা ডিনার করতে যাবো পাশের একটা রেস্টুরেন্টে।

তিয়াসা মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিলে তোরা চলে যায়। তিয়াসা ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে চেঞ্জ করে নেয়। কালো রঙের থ্রিপিস পরে নিলো, ফর্সা গায়ে যেটা বেশ মানিয়েছে। রুমে বসে নিজের ফোনে মুগ্ধর ছবি দেখতে লাগলো। ফোনটা রেখে এলেও মেমোরি কার্ডটা নিয়ে এসেছিলো, যেটাতে মুগ্ধর অসংখ্য ছবি আছে। তবে সবই মুগ্ধর অগোচরে তোলা, কেবল বিয়ের ছবি ছাড়া। তিয়াসার বাড়িতেই মুগ্ধ আর তিয়াসা ঘরোয়া বিয়ে দিয়েছিলেন আনোয়ারা বেগম। ছবিতে বাবা-মাকে দেখে চোখ ভড়ে উঠলো তিয়াসার। বিদায়ের সময় তিয়াসার বাবা বলেছিলেন আজ থেকে এবাড়ির দরজা তোমার জন্য বন্ধ। তারপর আর সে বাড়িতে পা রাখার সাহস হয়নি তার। বাবাকে সে বড্ড ভালোবাসে তাই সে ভুল বুঝায় তিয়াসার মনেও অভিমানের পাহাড় জমে আছে। সেও ঠিক করেছে যাবে না তার বাবার সামনে। তাকে না দেখে যদি বাবা-মা থাকতে পারে তাহলে সেও তাদের না দেখে থাকতে পারবে। রুমের দরজায় নক পড়তেই তিয়াসা ফোন রেখে চোখ মুছে নিলো। উঠে দরজা খুলতেই তোরার হাসিমাখা মুখটা দেখতে পেলো। তিয়াসা ভেবে পায় না এতো কষ্ট বুকে চেপে মেয়েটা কীভাবে হাসিখুশি থাকে সবসময়। তার বুকেও তো কম কষ্ট জমে নেই।

তিয়াসা ভাবনার মাঝেই তোরা বলে উঠলো, তোকে দেখে তো আমার হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেতো এখনই। আরে ইয়ার তোকে একদম পরীর মতো লাগছে।

তিয়াসা জানে তোরা তার মন ভালো করার জন্য কথাটা বলেছে, তাই উত্তরে মুচকি হাসলো তিয়াসা।

তোরা বললো, চল চল এখন গিয়ে আশেপাশে একটু ঘুরাঘুরি করবো, কেনাকাটা করবো, তারপর ডিনার করে ফিরে আসবো। গ্রুপের সবাই এখন নিজে নিজেই ঘুরছে।

তিয়াসা মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালে তোরা তার হাত ধরে সামনে আগাতে লাগলো। বাইরে এসে জমকালো কৃত্রিম আলো চোখে পড়লো। বিভিন্ন জিনিসপত্রের দোকান চারপাশে। একটা বাঁশের টুপির দোকানে গিয়ে একটা টুপি নিয়ে তিয়াসার মাথায় পড়িয়ে দিলো।

সেই লাগছে তো তোকে।

তিয়াসা মলিন হেসে বললো, তুই নে আমার লাগবে না।

বেশি কথা বলিস না দুজনে দুটো নিবো।

তিয়াসার কথায় পাত্তা না দিয়ে দুটো বাঁশের তৈরি টুপি কিনে দু’জন মাথায় পরে নিলো। আরো টুকিটাকি কিছু কিনতে কিনতে অনেক লেট হয়ে গেলো। দুজন গিয়ে ডিনার করে নিলো।

তোরা বললো, এখনই রুমে যাবি ?

তাহলে আর কী করবো ?

তোরা সামনের দিকে দেখিয়ে বললো, চল এইদিকে একটু হাঁটি।

তিয়াসা তাকিয়ে দেখলো ঐদিকটা অন্ধকার আর বেশ নির্জন।

তিয়াসা বললো, নির্জন মনে হচ্ছে। কোনো বিপদ হতে পারে।

তোরা নিজের শার্টের কলার উঁচিয়ে বললো, এই তোরা থাকতে তোর ভয় কিসের ? চল তো, অন্ধকারে চাঁদের আলোয় হাঁটার মজাই আলাদা। যদিও এখন কুয়াশায় ঢেকে গেছে সব তবু ভালো লাগবে হাঁটতে। একটু হাটাহাটি করে রুমে চলে গেলো দু’জনেই।

৮.
কোথায় যাচ্ছি আমরা ?

মুগ্ধর কথা শুনে শুদ্ধ রহস্যময় হাসলো। তা দেখে মুগ্ধ ভ্রু কুঁচকে তাকালো শুদ্ধর দিকে।

হাসছিস কেনো ?

শুদ্ধ মুচকি হেসে বললো, জানিস তো মুগ্ধ ছোটবেলা থেকে আমার অনেক ইচ্ছে ছিলো দু’ভাই একসাথে অনেক ঘুরাঘুরি করবো, একরকম পোশাক পড়বো। এমন অনেক ইচ্ছে ছিলো কিন্তু পূরণ করতে পারিনি কারণ তুই সবসময় আমাকে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করতি। সময়ের সাথে আমাদের মাঝের দুরত্ব কেবল বেড়েছে। আমি চেয়েও দুরত্বটা কমাতে পারিনি কারণ আমি পারতামই না নিজের খোলস থেকে বের হতে।
মুগ্ধ অপরাধবোধ নিয়ে তাকালো শুদ্ধর দিকে৷ সত্যি তাদের মাঝের দুরত্ব সেই তৈরি করেছে। শুদ্ধ যত চাইতো দুরত্ব কমাতে, সে ততই বাড়িয়ে দিতো।

শুদ্ধ মুচকি হেসে বললো, ছোটবেলায় ইচ্ছে পূরণ হয়নি তো কী হয়েছে, এখন করবো। তোর জন্য সারপ্রাইজ আছে আর চিন্তা করিস না কথা যেহেতু দিয়েছি কথা রাখবো ইনশাআল্লাহ।

মুগ্ধ মুচকি হেসে সীটে মাথা এলিয়ে দিলো। মুগ্ধ জানে না সে কোথায় যাচ্ছে আর এই মুহূর্তে জানতে ইচ্ছেও করছে না। রুম বন্দী থেকে থেকে দম বন্ধ হয়ে আসছিলো। মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিয়ে ভালোই লাগছে। শুদ্ধ ড্রাইভ করতে করতে মুগ্ধর দিকে তাকালো। বাইরে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ঘুমিয়ে গেছে। উৎসার কথা ভেবে মুচকি হাসলো শুদ্ধ, আজ মেয়েটার জন্য সব সম্ভব হয়েছে। শুদ্ধর মাথায় হঠাৎ দুষ্টু বুদ্ধি খেলে গেলো। ফোন বের করে তিয়াসার গানের শেষে বলা সেই কথাগুলো ছেড়ে দিলো। তিয়াসার আওয়াজ কানে যেতেই ঘুম ভেঙে গেলো মুগ্ধর। আশেপাশে তাকিয়ে খুঁজতে লাগলো।

শুদ্ধ কিছু না বুঝার ভান করে বললো, কী হয়েছে এমন করছিস কেনো ?

মুগ্ধ অস্থির গলায় বললো, মনে হলো তিয়াসার গলা শুনতে পেলাম।

শুদ্ধ মজা করে বললো, তুই এতো বউ পাগল হবি আমি কোনোদিন ভাবিনি।

মুগ্ধ কটমট করে তাকালো শুদ্ধর দিকে আর তাতে শুদ্ধ আবারও রহস্যময় মুচকি হাসলো।

অনেকটা রাস্তা, তুই ঘুমিয়ে গেলে আমার বোরিং লাগবে। মাঝে মাঝে তুই ড্রাইভ করবি আবার আমি করবো।

কোথায় যাচ্ছি সেটাই তো জানি না, ড্রাইভ করবো কী করে ?

আমি রাস্তা বলে দিবো, নো প্রবেলম।

সারারাত দু’জনে চেঞ্জ করে করে ড্রাইভ করলো আর গল্প করে কাটিয়ে দিলো। দু-ভাইয়ের মাঝে যে এতবছরের দুরত্ব, এক রাতেই অনেকটা কমে গেলো। শুদ্ধ মনে মনে কৃতজ্ঞতা জানালো উৎসাকে। গন্তব্যে পৌঁছল তখন সকাল সাতটা বাজে। শুদ্ধ তাকিয়ে দেখলো মুগ্ধ ঘুমিয়ে আছে, ডেকে তুলল তাকে।

মুগ্ধ চোখ মুখ কুঁচকে আশেপাশে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করলো কোথায় আছে তারা। সেনাবাহিনী রিসোর্ট দেখে মুগ্ধর বুঝতে অসুবিধা হলো না তারা সাজেক এসেছে।

শুদ্ধর দিকে তাকিয়ে বললো, সাজেক ?

শুদ্ধ মুচকি হেসে বললো, হুম। এখন চল ফ্রেশ হয়ে একটু রেস্ট নিবো আর বিকেলে বের হবো ঘুরতে।

মুগ্ধ কিছু না বলে গাড়ি থেকে নেমে পড়লো আর বললো, এভাবে নিয়ে এলি আমি তো কিছুই আনিনি সাথে।

শুদ্ধ গাড়ির ডিকি থেকে মুগ্ধর লাগেজ বের করে দিয়ে বললো, মিশু সব গুছিয়ে দিয়েছে এটাতে। তুই এগুলো নিয়ে ভেতরে যা আমি গাড়ি পার্ক করে আসছি। রিসিপশনে নাম বললেই রুমের চাবি দিয়ে দিবে।

মুগ্ধ লাগেজ নিয়ে ভেতরে চলে গেলে শুদ্ধ গাড়ি পার্ক করে এলো৷ দুজনেই নিজেদের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বের হলো ব্রেকফাস্ট করতে। ব্রেকফাস্ট করে আবার রুমে চলে গেলো। সারাদিন ঘুমিয়ে বিকেলে বের হবে ঘুরতে। সাজেক ঘুরার আসল মজাই হলো বিকেলের পর থেকে আর সকালে।

৯.
তিয়াসা তোরাকে বললো, আজ আমাদের যাওয়া ক্যানসেল হয়ে গেছে।

তিয়াসা অবাক হয়ে বললো, কেনো ?

এখানে আদিবাসীদের কী যেনো একটা উৎসব আছে আজ, সবাই দেখে যাবে ঠিক করেছে। আগামীকাল সকালে ব্রেকফাস্ট করে যাওয়ার জন্য রওনা হবে। এখন চল ব্রেকফাস্ট করতে যাবো। বিকেল থেকেই উৎসব শুরু হবে।

তিয়াসা কিছু বললো না আর। দুজনেই ব্রেকফাস্ট করে নিলো একসাথে। মোট বিশজন এসেছে গ্রুপে। দশজন মেয়ে আর দশজন ছেলে। প্রথম তিনদিন একসাথে ঘুরেছে আর পরের দুদিন আলাদা। এখানকার দর্শনীয় স্থান মোটামুটি সবগুলোই দেখা হয়ে গেছে। আজ শুধু উৎসব দেখবে সকলে আর সাজবেও আদিবাসীদের সাজে।

বিকেলের দিকে ঘুম ভাঙে শুদ্ধর। উঠে ফ্রেশ হয়ে নেয় ওয়াশরুম থেকে। টাওয়েল হাতে মাথা মুছতে মুছতে রুমে এসে ফোন হাতে নিয়ে চোখ কপালে। অনেকবার কল এসেছে মা আর মিশুর নাম্বার থেকে।

শুদ্ধ টাওয়েল বেডে রেখে মায়ের নাম্বারে কল দিলো কিন্তু সেটা রিসিভ হলো না। পরে মিশুর নাম্বারে কল দিলে কয়েকবার রিং হতেই ওপাশ থেকে রিসিভ করলো।

হ্যালো।

গলাটা মিশুর মনে না হওয়ায় শুদ্ধ বললো, উৎসা ?

উৎসা নিচু গলায় বললো, জি আমি। আসলে মিশু একটু ওয়াশরুমে গেছে আর আপনার কল দেখে আমিই রিসিভ করলাম। আন্টি আর মিশু অনেক টেনশনে ছিলো আপনাদের খবর না পাওয়ায়।

শুদ্ধ হুট করে বলে উঠলো, আর তুমি ?

শুদ্ধর কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেলো উৎসা। কথাটা বলে শুদ্ধ নিজেও হতবিহ্বল হয়ে গেলো। এমন একটা কথা হঠাৎ সে কেনো বললো সে নিজেও বুঝতে পারছে না। উৎসা মিস করছিলো শুদ্ধকে কিন্তু সেটা আর মুখে বলা হলো না।

কিছুটা সময় চুপ থেকে বললো, আসলে মুগ্ধ ভাইয়ার ফোন বন্ধ বলছে আর আপনি কল রিসিভ করছিলেন না দেখে সবাই টেনশনে পরে গিয়েছিল।

শুদ্ধ বললো, আসলে এখানে নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। তাই হয়তো মুগ্ধর ফোন বন্ধ বলছে আর আমি সারারাত ড্রাইভ করে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। ব্রেকফাস্ট করে এসে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম কেবল উঠলাম।

উৎসা ছোট করে বললো, ওহ্।

মাকে চিন্তা করতে মানা করে দিও, আমরা ঠিক আছি।

ভাবির সাথে মুগ্ধ ভাইয়ার দেখা হয়েছে ?

হয়নি তবে বিকেলে হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

এরপর কিছুটা সময় দুজনেই চুপ রইলো।

শুদ্ধ হঠাৎ বললো, ধন্যবাদ।

উৎসা বললো, কেনো ?

শুদ্ধ বললো, কিছু কেনোর উত্তর বড্ড কঠিন।

আবার কিছুটা সময় কোনো সাড়াশব্দ হলো না। নিরবতা ভেঙে উৎসা বললো, ঠিক আছে সাবধানে থাকবেন।

শুদ্ধ মুচকি হেসে বললো, হুম আর তুমি আমার মায়ের একটু খেয়াল রেখো।

উৎসা ছোট করে বললো, হুম আল্লাহ হাফেজ।

আল্লাহ হাফেজ।

শুদ্ধ ফোন কেটে স্কিনের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো আর মনে মনে বললো, তোমার জন্য আমি আমার ভাইকে ফিরে পেয়েছি। ভাইকে দেওয়া কথা রাখতে পেরেছি। এতো বছর যে ভাইয়ের সাথে এত দুরত্ব ছিলো সেটা মিটিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছি আমি। হাজারবার তোমাকে ধন্যবাদ দিলেও কম হবে।

এদিকে উৎসা ফোনটা বুকে আঁকড়ে ধরে মুচকি হাসছে আর মিশু ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে উৎসাকে হাসতে দেখে ভ্রু কুঁচকে তাকালো।

হাসছো কেনো আপু ?

উৎসা থতমত খেয়ে বললো, কই নাতো।

মিশু উৎসার হাতে ফোন খেয়াল করে বললো, কেউ ফোন করেছিলো ?

উৎসা শুদ্ধর ফোনের কথা জানালো আর চিন্তা করতে মানা করলো। মিশুকে আনোয়ারা বেগম নিচে ডাকছে সেটা জানিয়ে রুম থেকে চলে গেলো ফোনটা মিশুর হাতে দিয়ে। তবে ঠোঁটের কোণে রয়ে গেলো মুচকি হাসি।

বিকেলে রেডি হয়ে দু’ভাই বের হলো আশপাশটা ঘুরে দেখতে। কেউ কিছু বলছে না শুধু চুপচাপ হাটছে।

হঠাৎ শুদ্ধ বলে উঠলো, তোর জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।

মুগ্ধ প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকালো শুদ্ধর দিকে, কী সারপ্রাইজ ?

শুদ্ধ মুচকি হেসে বললো, সোজা সামনে তাকা।

মুগ্ধ ভ্রু কুঁচকে সামনে তাকিয়ে থমকে গেলো। স্তব্ধ হয়ে কিছুটা সময় সামনে তাকিয়ে থেকে শুদ্ধর দিকে তাকালো।

অবিশ্বাস্য গলায় বললো, তিয়াসা ?

শুদ্ধ মুচকি হেসে কেবল মাথা নাড়লো যার অর্থ হ্যাঁ আর মুখে বললো, আমি আমার কথা রেখেছি।

চলবে,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here