দোটানা,পর্বঃ২,৩

0
1634

#দোটানা,পর্বঃ২,৩
#লেখিকাঃআরেহী_নুর
#পর্বঃ২

(তারপর নিহান আশেপাশের মানুষের কাছ থেকে আরও জানতে পারে,,,,,,উনারা বলেন এটা নিধীদের আসল বাড়ি না,,,,ওদের নাকি নিজস্ব বাড়ি ছিলো কিন্তু কয়েক মাস আগে ওর বাবা মারা যাবার পর নিধী আর ওর মাকে অভাবের তাড়নায় ওই বাড়িটাও বিক্রি করতে হয়,,,,তারপর ওরা এখানে এসে ভাড়া থাকতো,,,, দু মাসের বকেয়া ভাড়া থাকায় বাড়ি মালিক নিধী আর ওর মাকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে,,,,,কথাটা শোনার পর নিহানের মন টা কেমন খচ করে উঠে,,,,ও নিধীর বাবা-মা নিয়ে কতো হাসি তাচ্ছিল্য করেছে,,,,,ওকে কতোটা নিচু করেছে,,,,,তারপর পাগলের মতো খুঁজতে থাকে ওকে,,,,,কিন্তু কোথাও পায় না ওকে,,,,,কতোটা কষ্টে ছিলো নিধী কিন্তুু কখনো কাউকে বুঝতে দিতো না,,,,,সারাদিন একটা সুন্দর হাসি বিরাজ করতো ওর মুখে,,,,অনেকটা দুষ্টু প্রকৃতিরও ছিলো,,,,অনেক সুন্দর করে কথা বলতো,,,,অনেক কথা বলতো,,,,অনেকটা বাচ্চা সুলভও ছিলো,,,,এতোদিন নিধীর সাথে থেকে ও নিধীকে নিয়ে অনেক কিছুই জেনে গিয়েছিলো,,,,কিন্তু নিধী কখনো নিজের কষ্টের কথা ওকে বলে নি,,,,নিহান ওকে অনেক দামী দামী গিফ্ট দিলেও ও কখনো কিছুই নেয় নি ওর কাছ থেকে,,,,আসলে নিহান ওগুলা দিয়ে নিধীর বিশ্বাস অর্জন করতে চাইছিলো,,,,,এতোদিন ওকে দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করছিলো শুধু নিজের জেদ মেটাবে বলে আর এখন ও চলে যাওয়াতে ওর জমে থাকা সব স্মৃতি মনে পরছে নিহানের,,,,তারপর অনেক খুঁজাখুঁজির পরও নিহান নিধীকে পেলো না,,,,, শহরের ভিতরে বাহিরে যেখান যেখানে পেরেছে ওখানে ওখানে খুঁজেছে ওকে কিন্তু পায় নি,,,,,দিন দিন ও নিধীর স্মৃতিতে তলিয়ে যাচ্ছিলো,,,,প্রথম প্রথম ভাবতো হয়তো ও নিধীর সাথে খারাপ করেছে তাই নিজের গিল্ট ফিল থেকে ওকে ভুলতে পারছে না,,,,তাই ওকে ভুলতে নিহান মেয়েদের সাথে আরও বেশি বেশি থাকতে চাইলো কিন্তু যে নিহান সপ্তাহের মোরে একজন নতুন গার্লফ্রেন্ড চেঞ্জ না করে পারে না সে নিহান এখন মেয়েদের ধার কাছ অব্দি যেতে পারছে না,,,,কোনো মেয়ের ধারে যেতে গেলে যেনো নিধীর মুখটা ওর চোখে ভেসে উঠে,,,,,অসম্ভব চেষ্টা করতে থাকে নিহান নিধীকে ভুলার জন্য কিন্তু যতই ওকে ভুলার চেষ্টা করছিলো ততই ওর স্মৃতিতে কাতর হচ্ছিলো,,,,তারপর ও বুঝতে পারলো ও নিধীকে ভালোবেসে ফেলেছে,,,,এখন ওর জীবনের দুটোই লক্ষ্য প্রথম নিধীকে খুঁজে বার করে ওকে নিজের করে নেওয়া আর দ্বিতীয়ত নিজের জীবনে প্রতিষ্টিত হওয়া কারন নিধি ওকে সবসময় নিজের পড়ালেখার প্রতি কর্মের প্রতি একনিষ্ঠ হতে বলতো,,,,নিহান দায়িত্ব নিয়ে অনেক কেয়ারলেস ছিলো,,,,পড়ালেখাও তেমন করতো না,,,,আর নিধী ওকে ভালো পথে আনার চেষ্টা করেছিলো,,,,তাই নিধীর জন্যই ও এই পণ নিলো,,,,,তারপর নিহান পুরো পাল্টে গেলো সবসময় পড়ালেখা নিয়ে ব্যাস্ত থাকতো আর সময় পেলেই নিধীকে খুঁজতো,,,,,এভাবেই কেটে যায় ২ বছর,,,,এই ২ বছর নিধীকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে,,,,, নিহানের দেওয়া কষ্ট নিধী মনে রাখে নি এমনকি নিহানকেও না,,,,কারন এ ২ বছরে নিধীকে কলেজে হওয়া ওর সাথে ওই অপমানগুলোর থেকেও হাজার গুণ বেশি অপমানের সম্মুখীন হতে হয়েছে,,,,একা এক মাকে নিয়ে ওর পথচলা সহজ হয় নি,,,,খেতে হয়েছে অনেক মার অনেক ধোকা,,,,সহ্য করতে হয়েছে ধনী শ্রেণীর অনেক অত্যাচার,,,,সেদিন নিধী মাকে নিয়ে চলে এসেছিলো ঢাকা শহরে,,, অবশ্য এখানে আসার মতো যথেষ্ট টাকাও ছিলো না,,,,অনেক কষ্টে ট্রেনের উপর হয়ে,,,,,অনেক রাস্তা পায়ে হেঁটে,,,,,বাস ভাড়া না থাকায় ড্রাইবারদের গলা ধাক্কানি খেয়ে এখান অব্দি পৌঁছেছে,,,,,এখানে এসে ছোট্ট এক গলির পরিত্যাক্ত এক বাড়িতে ভাড়া পেলো ওরা,,,,নিধী এ দুবছর টিউশন করিয়ে মায়ের ভরণপোষণ আর নিজের পড়ালেখা চালিয়েছে,,,,কারন ইন্টার টা পাশ না করলেও যে একটা ভালো চাকরি পাবে না ও,,,,নিধীর বাবার যে বড় ইচ্ছে ছিলো মেয়েকে ডাক্তার বানাবে কিন্তু গরিবদের এমন সপ্ন যে মানায় না তা নিধী হাড়ে হাড়ে টের পেয়ে গেছিলো,,,,এ পথটা যে ওর সহজ ছিলো না,,,,বাচ্চাসুলভ বোকা নিধী যে এখন আর বাচ্চাসুলভ না হয়ে গেছে এক কঠিন মানবী,,,,কারো উপরই এখন বিশ্বাস করে না,,,,হাসতে তো ভুলেই গেছে এমনকি কাঁদেও না,,,,প্রয়োজন ছাড়া কথা বলে না,,,,সারাদিন ঘোরার খাটনি খাটে কিছু টাকা উপার্জনের জন্য,,,,টিউশনির সাথে যে কাজ পেতো সেই কাজই করতো এমনকি ইট ভাঙার কাজও করেছে নিধী,,,,,কয়েক মাস আগে এইচ এস সি পরিক্ষায় গোল্ডেন A+ পেয়ে পাশ করেছে নিধী কিন্তু এখন অব্ধি ভালো কোনো জব পায় নি,,,,এদিকে ওর মায়ের হার্টে কিছু প্রবলেম দেখা দিয়েছে হার্টের নাকি ওপারেশন লাগবে যাতে অনেক টাকা লাগবে তাই কাজের সন্ধানে দিন রাত এক করছে নিধী,,,,এমন একদিন নিধী জব ইন্টারভিউতে গিয়েছিলো,,,,,তখন ওর মা বাড়ির পাশের দোকান থেকে কিছু আনতে গিয়েছিলেন যেটা মেইন রোডের ওপারে,,,,,দোকান থেকে প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে ওর মা রাস্তা পেরুবে তখনই একটা কারের সাথে ধাক্কা লাগে ওর মায়ের,,,,হাতের জিনিসগুলো ছড়িয়ে পড়ে রাস্তায়,,,,নিধী বাড়ি ফিরে ৩ ঘন্টা পর তারপর আশেপাশের লোকের মুখে মায়ের কথা শুনতে পেয়ে দৌঁড়ে যায় সে হাসপাতালের দিকে,,,,যে গাড়ির সাথে ওর মায়ের ধাক্কা লেগেছিলো তার মালিক নিতান্তই ভালো ছিলেন তিনিই উনাকে এক হাসপাতালে নিয়ে এলেন যার এড্রেস আশেপাশের মানুষগুলো নিধীকে দিলো,,,,নিধীর তখন হাতে ফোনও ছিলো না যে কেউ ওকে ফোন করে কিছু জানাবে,,,,অভাবের তাড়নায় ওই সেকেন্ড হ্যান্ড ফোনটাও যে এখন নেই,,,,,এদিকে সেই ব্যাক্তি আর কেউ নয় বিশিষ্ট শিল্পপতি জনাব আদনান চৌধুরী,,,,, নিধী হাসপাতাল পৌঁছে জানতে পারলো ওর মায়ের হার্টের ওপারেশন হয়ে গেছে এক্সিডেন্টে উনার হার্টের উপর অনেক জোড় পরে গিয়েছিলো তাই ইমিডিয়েট ওপারেশন করতে হয়েছে,,,,উনার হার্ট ভালো হয়েছে,,,,কিন্তু উনার দুটো পায়ই প্যারালাইজড হয়ে গেছে,,,,কথাটা শুনে নিধী ধপ করে বসে পরলো পাশের বেঞ্চে,,,,,ডাক্তার সাহেব পাশ বেয়ে চলে গেলেন,,,,নিধী চুপ করে বসে আছে সেখানে চোখ দিয়ে পানি গড়াচ্ছে না কারন তা গড়াতে গড়াতে সেই কবে শুকিয়ে গেছে,,,,মানুষ অতি শুকে পাথর হয় নিধীই তার প্রকৃত উদাহরণ,,,,, তখনই যেনো ভরসার হাতের ছোঁয়া পেলো নিধী নিজের মাথায়,,,,,মাথা তুলে তাকালে দেখলো আদনান চৌধুরী,,,,, উনিই নিধীর মায়ের অপারেশনের সব টাকা বহন করেছেন এমনকি নিধীর কাছে ক্ষমাও চাইলেন ওর মায়ের এই অবস্থার জন্য,,,,,নিধী উনাকে সাথে সাথে ক্ষমা করে দিলো,,,,আর উনাকে ওখান থেকে চলে যেতে বললো আর বললো ও উনার দেওয়া টাকা সুধে আসলে ফেরত দিয়ে দেবে,,,,, আদনান চৌধুরীর নিধীর এমন কথা অনেক ভালো লাগলো উনি বুঝতে পারলেন গবীর হলেও নিধী অনেক আত্মনির্ভরশীল,,,,,তারপর উনি নিধীকে উনার সাথে উনার বাড়িতে আসতে বললেন ওর মাকে নিয়ে যেখানে উনি ওকে কাজের ব্যবস্থা করে দেবেন কারন উনি নিজের করা ভুলের জন্য নিজেকে ক্ষমা করতে পারছিলেন না,,,,নিধী তা মানতে নারায,,,,,তারপর আদনান সাহেব এক প্রকার কাকুতি মিনতি করেই নিধীকে রাজি করলেন,,,,আসলে আদনান সাহেব অনেক বিত্তশালী হলেও উনার মধ্যে কোনো অহংকার কাজ করে না,,,,সেদিন নিধীকে দেখে কেনো জানি উনার অনেক মায়া হয়,,,,তারপর নিধীও মেনে যায়,,,,কারন হলো ওর মায়ের ওপারেশনে যা টাকা গেছে এতো টাকা ও নিজের গায়ের চামড়া বিক্রি করেও হয়তো পাবে না,,,,তাই ভাবলো উনাদের ওখানে কাজ করেই উনার টাকা শোধ করবে,,,,,তারপর ও ওর মাকে নিয়ে উনার ওখানে যেতে রাজি হলো,,,,আদনান সাহেব ওকে নিজের অফিসে একটি ছোট্ট পদে নিযুক্ত করলেন,,,,তারপর আস্তে আস্তে ও নিজের কাজে দক্ষতা দেখিয়ে আর উনার পি.এ পদে এসেছে,,,,,এমনকি ও উনাদের বাড়িতে কেয়ারটেকারেরও জব করে,,,,এটা নিধীর সিন্ধান্ত,,,,কারন ও কারো উপর বোঝা হয়ে থাকতে চায় না,,,,,নিজের ভরণপোষণ নিজেই করবে,,,,,ও তো উনাদের বাড়িতে থাকার জন্য উনাকে ভাড়াও দেয় উনি না নিতে চাইলেও,,,,এমনকি ওর বাজার খরচ ওর রান্না-বান্নাও আলাদা,,,,,সবকিছুই নিজের ক্ষমতায় করতে শিখে গেছে নিধী,,,,এভাবেই কেটে যায় আরও একটি বছর,,,,,এদিকে আদনান সাহেবের বড় ছেলে নিরব আসছে বিদেশ থেকে পড়ালেখা শেষ করে,,,,,আদনান সাহেব এবার অফিসের ভারটা ওর ঘাড়ে দিয়ে অবসর নিতে চাইছেন,,,,, ওর লেখাপড়া শেষ হয়েছে প্রায় এক বছর আগে,,,,এতেদিন লন্ডনে থেকে ওদের প্রতিষ্ঠানের একটা শাখা দেখাশোনা করছিলো ওখানে এবার দেশে এসে বিজনেস দেখার প্লেন করছে,,,,,আসলে ও নিজের কাজের প্রতি অনেক সিরিয়াস নিরব,,,,, তবে শুধু কাজের ক্ষেত্রেই,,,,,লাগামহীন ঘোড়া নীরব,,,,কারো হাতে আসে না,,,,মেয়েদের হাতের ময়লা মনে করে,,,,,মন ভরে এলে ছু্ঁড়ে ফেলে দেয়,,,,,দেখতে সুদর্শন আর নিজের সাস্থ্য নিয়ে সচেতন তা ওর বডি ফিটন্যাস দেখলেই বুঝা যায়,,,,,মেয়েরা ওর উপর মরতে রাজি,,,,কিন্তু যতটাই সুন্দর ততটাই অহংকারী ও,,,,,সবসময় নিজের সার্থকেই বড় করে দেখে,,,,,রাগ তো ওর নাকের ডগায় থাকে,,,,,আজ নিরব দেশে আসছে তাই বাড়িতে ওর আগমনের ব্যাবস্থা চলছে,,,,,এদিকে নিধী আসছিলো বাজার থেকে মায়ের জন্য কিছু ঔষধ নিয়ে,,,,তখনি হোচট খেয়ে ওর পায়ের জোতা ছিঁড়ে যায়,,,,,ওর কাছে তখন যা টাকা ছিলো তা দিয়ে ওর মায়ের ওষুধ কিনে নিয়েছে এমনকি এখন রিক্সায় যাওয়ার টাকাটাও নেই ওর কাছে,,,,তাই খালি পায়ে রাস্তার পাশ হয়ে হাঁটছে,,,,,হঠাৎই একটা গাড়ি ওর উপর কাঁদা ছুঁড়ে চলে যায়,,,,নিধী সাথে সাথেই চেঁচিয়ে বলে উঠে চোখে দেখতে পান না,,,,,তখন গাড়িতে থাকা ড্রইবারের কথাটা গায়ে না লাগলেও ওতে বসা কারো গায়ে কথাটা খুব লাগলো,,,,,সাথে সাথে গাড়ি আটকানোর ইশারা করলো ব্যাক্তিটা,,,,,নিধী এখনও সেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে কারন এই নিধী যে সেই নিধী নয় এ যে এক নতুন নিধী যে অন্যায় সয় না অন্যায়ের প্রতিবাদ করে,,,,,গাড়ি থেকে নেমে এলো এক সুর্দশন পুরুষ,,,,,যাকে দেখে নিধী হয়তোবা চিনতে পারলো কারন চৌধুরী ম্যানসনে উনার অনেক ছবি দেখেছে ও,,,,,গাড়িটাও চিনতে ভুল হলো না ওর,,,,কারন ওটা চৌধুরী বাড়ির গাড়িগুলোর একটা,,,,মানুষটা কে তা জানতে দেড়ি হলো না নিধীর তবুও ভয় পেলো না ও,,,,ও যে আজ নিজের আত্মসম্মান নিয়ে অনেক সচেতন,,,,তাই নিজের আত্মসম্মানবোধ রক্ষার্থে যেকোনো কারোই সামনাসামনি করতে দ্বিধা করবে না ও,,,,,,,

চলবে,,,,,,,,

#দোটানা
#গল্পকারঃআরোহী_নুর
#পর্বঃ৩

(সেই লোকটি আর কেউ নয় নিরব,,,,নিরব গাড়ি থেকে নেমে নিধীর সামনে আসলো,,,,মুখে অসীম রাগের ছাঁপ স্পষ্ট বুঝতে পারছে নিধী)
নিরবঃএই মেয়ে কি বললে তুমি,,,,,??
নিধীঃআমি আপনাকে কিছু বলি নি কারন গাড়ি আপনি না ড্রাইবার ড্রাইব করছিলেন,,,,তবে আপনি করলে আপনাকে বলতাম,,,,কারন রাস্তায় গাড়ি চালানোর সময় আশেপাশে খেয়াল রাখা উচিত যে কারো কোনো অসুবিধা হচ্ছে কি না,,,,আর তা না করতে পারলে তো অন্ধ হিসেবেই গণ্য করা হবে,,,,,
নিরবঃতুমি জানো তুমি কার সাথে এভাবে কথা বলছো??
নিধীঃআমি ভালো করেই জানি আপনি কে,,,,কিন্তু মাফ করবেন আল্লাহ ছাড়া এই নিধী আর কাউকেই ভয় পায় না,,,,
নিরবঃপায়ে জুতো নেই শরীরে ভালো কাপড় নেই দেখে তো মনে হয় ফকিন্নি আর মুখে বড় বড় কথা(তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে)
নিধীঃআপনাদের মতো ভালো পোষাকের আড়ালে অসভ্য লম্পট ধনী হয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে ফক্কিনি বেশে ভালো মানুষ হয়ে বেঁচে থাকাটাই ব্যাটার অন্তত এটা মনে শান্তি তো থাকবে যে আপনারা ধনীদের মতো শো অফ করছি না যা আছে তা নিয়েই শান্তিতে বেঁচে আছি,,,,,
নিরবঃহাও ডেয়ার ইউ টু টক টু মি লাইক দিস,,,,(নিধীর বাজুতে চেপে ধরে,,,নিধী সাথে সাথে টান দিয়ে নিজের হাত ছাড়ায় নিরবের কাছ থেকে আর ওকে হালকা ধাক্কা দিয়ে নিজের ধার থেকে দূরে সরায়)
নিধীঃসাহস কি করে হলো আমার গায়ে হাত দেওয়ার,,,,আপনারদের মতো বড়লোকের লম্পট ছেলেদের ভালো করেই চিনি আমি মেয়ে দেখলেই গায়ে পড়ার ইচ্ছা জাগে মনে,,,,ওদের উপর জোর চালাতে মন চায়,,,,হয়তোবা মেয়েরা শক্তির দিক থেকে ছেলেদের থেকে দূর্বল হয়ই কিন্তু যদি মেয়েরা নিজের মন শক্ত করে নেয় তবে আপনার মতো দশ টা ছেলেকে একাই উপরে ফেলতে পারবে আর আমিও তাদের একজন,,,,আমিও আজকের কান্ডের জন্য আপনার হাতটা উপরে ফেলতে পারতাম কিন্তু আমি আপনার মতো রাস্তায় অসভ্যতা করতে চাই না,,,,
নিরবঃতোমাকে আমি(এটা বলে নিরব নিধীর দিকে তেড়ে যেতে চাইলে পিছন থেকে ড্রাইবার আটকে নেয় ওকে আর বলে রাস্তায় এসব গোলমাল করা ঠিক হবে না তাই নিরবকে চলে আসতে বলে তারপর নিরব নিধীর দিকে রাগি লুক নিয়ে চলে যায় আর যাবার সময় ওটাও বলে যায় যে নিধী যেনো ওর সামনে আর না পরে নইলে ওকে ছাড়বে না,,,,,নিধীও রাগ ভর্তি চোখে তাকিয়ে থাকে ওর দিকে,,,,কিছুক্ষন পর নিরব বাড়িতে পৌঁছে যায় কারো সাথেই কথা না বলে ঢুকে যায় নিজের রুমে আজ কতো দিন পর বাড়ি ফিরেছে ওর পরিবার ওর রাস্তা চেয়ে বসে ছিলেন অথচ ও এসে কারো সাথে ভালো করে কথা না বলেই রুমে চলে গেলো,,,,ও এমনিতেই কারো পরবা করে না ও নিজেকে নিয়ে ব্যাস্ত থাকে আর আজকে আরও নিধীকে নিয়ে মাথা খারাপ,,,নিধী এই প্রথম মেয়ে যে ওকে পাল্টা জবাব দিয়েছে মাথার উপর দিয়ে যেনো ওর আগুন যাচ্ছে,,,,,নিধীও বাড়িতে ফিরে এলো,,,,নিধী উনাদের ঘরের নিচে দিকের একটা কর্নার রুমে ওর মাকে নিয়ে থাকে,,,,সারাদিন আর নিরব রুম থেকে বেরুলো না,,,,খাবারটাও তার রুমে পৌঁছে দেওয়া হলো নিধী তো তার স্বাভাবিকভাবেই কাজ করলো পরদিন সকালে নিরব আর ওর বাবা টাইমের আগে অফিস চলে গেলেন যেহেতু আদনান সাহেব নিজের সবকিছু নিরবকে আজ বুঝিয়ে দেবেন তাই একটু সকাল চলে গেলেন সবকিছু বুঝাতে অনেক সময় লাগবে তাই,,,, নিরব আজ থেকেই অফিস দেখবে,,,, তারপর সব কাজ বুঝিয়ে আদনান সাহেব নিধীর কথা বললেন ওকে,,,,, কথায় কথায় নিধীর তারিফ করা তো উনি কখনোই বাধ দেন না আজও তাই করলেন,,,,উনি ওকে সবই বললেন নিধী কিভাবে এলো উনাদের ঘরে সবকিছু,,,,উনি সরল মনে নিধীর সাহসিকতা যোগ্যতার তারিফ করলেও নিরব তা নিধীর উপর ওর বাবার দয়া হিসেবেই মান্য করলো কারন ওর মতে গরীবেরা কখনো যোগ্য হতে পারে না,,,,ও এখন আর ওর বাবাকে কিছু বললো না ও আগে দেখতে চেয়েছিলো এই নিধী নামক ব্যক্তিত্বটা আসলে কে যার তারিফ করতে করতে ওর বাবার মুখ কাঁপছে না,,,,তাই ও ওর কেবিনে অপেক্ষা করতে শুরু করলো নিধীর যেহেতু ও ওর পি.এ,,,,শুনেছে সময়ের অনেক পাক্কা,,,,ঠিক সময়ে আসবেই,,,, তারপর নিধী বাড়িতে ওর নির্দিষ্ট কাজ করে চলে গেলো অফিসে,,,,,ও জানে আজ থেকে নিরব ওর বস তারপরও স্বাভাবিকভাবে নক করলো কেবিনের দরজায়,,,,নিরব ওপিঠ হয়ে বসে একটা ফাইল হাতে নিয়ে দেখতে দেখতে বললো কাম ইন,,,,,নিধী ভিতরে ঢুকলে নিরব ওভাবে থাকা অবস্থায় বললো,,,,)
নিরবঃহুম তো মিস নিধী জামান,,,,আপনার অনেক তারিফ শুনেছি বাবার মুখে,,,,, আপনার কথা শুনতে শুনতে তো আমার কানটা গরম হয়ে আছে,,,,আসলে আমার বাবা ওরকমই,,, সরল সোজা,,,,আর গরীব/ফকিরদের বাবা দয়া একটু বেশিই দেখায়,,,,,দেখো না তোমাকে রাস্থা থেকে তুলে এনে কোথায় বসিয়ে দিয়েছে(তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে),,,,আসলে তোমারও কি কপাল মায়ের এক্সিডেন্ট হয় নি বরং কপাল খুলেছে,,,,না সেদিন ইচ্ছে করেই তুমি তোমার মাকে আমার বাবার গাড়ির নিচে ফেলেছিলো যাতে আমার বাবার কাছ থেকে কিছু টাকা হাতাতে পারো,,,,(আবারও তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে)
নিধীঃ(যটপট জবাব দিয়ে)আপনার মতো মানুষদের জন্য টাকা জীবনের থেকেও বড় হতে পারে স্যার কিন্তু তা আমার বা আমার মায়ের কাছে না,,,,আর সেদিন আপনার বাবা আমায় দয়া দেখান নি বরং নিজের ভুলের প্রাশ্চিত্ত করতে চাইছিলেন তাই আমাদের নিজের সাথে করে এনেছিলেন আর আমিও আপনার বাবা কাছ থেকে কোনো দয়া নেই নি আর যে অবস্থানে আমি আছি তা আমি নিজে অর্জন করেছি,,,,,
নিরবঃইউ স্টুপিড গার্ল,,,,,আমার মুখের উপর কথা বলো(নিরব রেগে গিয়ে এসব বলে চেয়ার ঘুরে তাকাতেই দেখে কালকের ওই মেয়েটা যাকে দেখার পরতো নিরবের রাগ চরমে,,,,তারপর দাঁড়িয়ে গিয়ে),,,,এই মেয়ে তুমি এখানে কি করছে,,,,
নিধীঃআমিই নিধী,,,,,কেনো বিশ্বাস হচ্ছে না,,,,, ওহ বিশ্বাস হবে কি করে,,,, আপনার মতে তো আমার মতো গরীবের আপনার মতো বিত্তবান মানুষের অফিসের বাইরেও দাঁড়ানোর অধিকার নেই ,,,,আর আমি তো আপনার পি.এ এর অবস্থান দখল করে নিয়েছি,,,,আমি তো তা ডিজার্ভ করি না তাই না
(নিরব রাগে হাতের পাশে থাকা একটা গ্লাস ছুঁড়ে মারে দেয়ালের দিকে যা দেয়ালে লেগে টুকরো হয়ে ভেঙে একটা টুকরো উড়ে এসে পড়ে নিধীর হাতে সাথে সাথে ওর হাতে সেটা বিধে যায়,,,, নিধী তখন ব্যাথা চিৎকার করে না উঠলেও চোখ বন্ধ করে নিয়েছিলো,,,,)
নিরবঃঠিকই বলেছো তোমার মতো মেয়ে এমন অবস্থান ডিজার্ভ করে না বেড়িয়ে যাও এখান থেকে আর যেনো তোমার ওই মুখ আমি না দেখতে পাই,,,,,
নিধীঃওকে ঠিক তাই হবে আপনার মতো মানুষের আন্ডারে আমিও কাজ করতে চাই না,,,যে মানুষ না মানুষ নামক পশু,,,,,(এটা বলে কেবিনের বাইরে চলে গেলো নিধী,,,,,হাতের গ্লাসটুকরো বের করে হালকা বেন্ডেজ করে রেজিকলেশন লেটার নিয়ে গেলো আদনান সাহেবের কেবিনে যেহেতু আদনান সাহেব এখনও অফিস ছাড়েন নি তাই প্রথমে রেজিকলেশন উনাকে দেখাতে হবে,,,,,তারপর ও আদনান সাহেবের হাতে রেজিকলেশনটা ধরিয়ে দিলো আদনান সাহেব তো এটা দেখার পর নারায,,,, উনি নিধীকে হাতছাড়া করতে চান না কারন নিধী অনেক উপযুক্ত এমপ্লোয়,,,,ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে ও উনাকে অনেক হেল্প করেছে,,,,)
আদনানঃমা হঠাৎ কি হলো তোর এভাবে জব ছাড়ছিস কেনো??
নিধীঃআমি অনেক দুঃখীত বড় সাহেব কিন্তু আমি আপনার ছেলের আন্ডারে কাজ করতে পারবো না আর উনিও আমাকে নিয়ে কাজ করতে চান না,,,,,তাই আমি জব ছাড়ছি,,,,,আমার কাছে সবসময়ই আমার সেল্ফ রেসপেক্ট বড় আর আমি সামান্য একটা চাকরির জন্য তা হারাতে পারবো না,,,,,আমি আপনার অনেক সম্মান করি কারন বিপদে পথ দেখিয়েছিলেন আপনি আমায়,,,আপনার ঋন যে কখনোই শোধ করতে পারবো না কিন্তু মাফ করবেন বড় সাহেব এই চাকরি আর আমার পক্ষে করা সম্ভব নয়,,,,
আদনানঃওহ বুঝেছি তাহলে প্রবলেম নিরবকে নিয়ে,,,,,তুমি এখানে বসো আমি ওকে ডেকে আনছি,,,,(তারপর আদনান সাহেব নিরবকে ডেকে এনে দুজনকেই পাশাপাশি দাঁড় করালেন,,,,,)
আদনানঃদেখো বাবা নিরব আমি কখনোই নিধীর উপর দয়া দেখাই নি,,,,নিধী অনেক যোগ্য,,,,ও ওর যোগ্যতা দিয়েই এখান অব্দি এসেছে,,,,,ওর গত এক বছরের কাজের ধারা আমি তোমায় দেখিয়েছি তাতে তুমি কোনো ভুল বার করতে কি পেরেছে??
নিরবঃডেড একটা রাস্তার মেয়েকে কি অফিস এমপ্লোয় বানানো যায়??এই মেয়েটার তো কথা বলারও ম্যানার নেই,,,,
আদনানঃসেট আপ নিরব(রেগে গিয়ে)তোমাকে যা জিঙ্গেস করছি তা বলো,,,,,তুমি কি ওর কাজে কোনো ভুল পেয়েছো??
নিরবঃনো(গম্ভীর কন্ঠে)
আদনানঃতবে তুমি ওর যোগ্যতায় প্রশ্ন কিভাবে উঠাতে পারো,,,,,ওর ভুল কি শুধুই এটাই যে ও গরীব,,,,শোনো নিরব যোগ্যতা টাকা এনে দেয় না ওটা আল্লাহ প্রদত্ত,,,,যেটা মানুষ শ্রম দিয়ে আদায় করে,,,,আর গরীবেরা তো আর পশু হয় না ওরাও মানুষ শুধু ব্যবধান এটা থাকে যে ওরা অবহেলায় জীবন যাপন করে বড়লোকেরা স্বাচ্ছন্দ্যে,,,,আর ওদের অবহেলা করে বড়লোক শ্রেণীর কিছু নিচু মনের মানুষ,,,, আর আমি জানতাম না যে এমন মানসিকতা আমার নিজের বড় ছেলের হবে যাকে নিয়ে আমি এতো গর্ব করি,,,,,(নিরব কিছু বলছে না শুধু দাঁতে দাঁত চেপে সব হজম করছে,,,,,নিধীর উপর অনেক রাগ হচ্ছে ওর কারন ওর জন্যই আজ নিরবকে ওর বাবার এতো কড়া কড়া কথা শুনতে হচ্ছে যা ও কখনোই শুনে নি),,,,,,নিরব আমি তোমাকে দু-মাস সময় দিলাম এই ফাঁকে তুমি যদি নিধীর কাজে কোনো ভুল দেখিয়ে দিতে পারো তবে আমি নিজেই ওকে কাজ থেকে আর বাড়ি থেকেও তাড়িয়ে দেবো,,,,,
নিরবঃওকে তবে তাই হবে ডেড,,,,আপনি শুধু ওকে বলেন যাওয়ার ব্যবস্থা করে রাখতে কারন নিরব কখনোই কোনো চ্যালেন্জে হারে না,,,,
আদনানঃ(উঠে এসে নিধীর মাথায় হাত বুলিয়ে)তুমি এতোদিন হারো নি কারন এতোদিন তুমি যোগ্য প্রতিদ্বন্ধী পাও নি,,,,,হয়তোবা এবার হারতেই হয়,,,,
নিরবঃতা তো সময়ই বলে দেবে কে হারবে আর কে জিতবে,,,,(নিধীর দিকে ডেবিল লুক নিয়ে,,,,,নিধীও আত্নবিশ্বাসী লুকে তাকালো নিরবের দিকে)
নিরবঃ(তোমাকে যদি তোমার অবস্থান না দেখিয়ে দিয়েছি তবে আমার নামও নিরব চৌধুরী না)
(তারপর সেদিন অফিস শেষে সবাই বাড়ি চলে আসলো,,,,,সেদিন আর নিরব তেমন কিছু করলো না নিধীর সাথে কারন আদনান সাহেব অফিসে ছিলেন সারাদিন কাল থেকে উনি বাড়িতেই থাকবেন আর নিরবও শুরু করবে ওর ডেবিলগিরি,,,,এদিকে বাড়িতে আজও খুশির ঢল নেমেছে এবাড়ির ছোট ছেলে বাড়ি ফিরে আসছে,,,,,এ চট্টগ্রামে নিজের নানুর বাসায় থেকে পড়াশোনা করতো,,,,,আসলে ওকেও নিরবের সাথে বিদেশ পড়াশোনার জন্য পাঠাতে চাইছিলেন আদনান সাহেব কিন্তু ও ছোট থেকেই নানুবাড়ির প্রতি আগ্রহী বেশি ছিলো তাই ওখানে থেকে পড়াশোনা করতে চাইলো তাই ওর মত অনুযায়ী ওকে চট্টগ্রামের সবথেকে নামকরা কলেজে ভর্তি করা হয়েছিলো আর আজ পুরো ৬ বছর পর আসছে ও,,,,এর মধ্যে কয়েকবার বেড়াতে এলেও গত তিন বছরের মধ্যে একবারও আসে নি,,,,উনারাতো ভেবেছিলেন হয়তো মাসটার্সটাও কমপ্লিট করে আসবে কিন্তু ও হঠাৎ করেই এখানে আসার জেদ ধরেছে অনার্সে ফাস্ট ক্লাসে উত্তির্ন হয়েছে ও,,,,,মাসটার্সটা এখানকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে করবে বলছে,,,,,ওর এমন ডিসিশনের কথা কেউই ভালোয় বুঝে উঠতে পারছেন না ও তো ওর নানুবাড়ি ছাড়তেই চায় না তবে হঠাৎ করে এভাবে আসার জেদ ধরেছে,,,,,যাইহোক সবাই ওর আসার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে যেহেতু এতোদিন পর একেবারে আসছে,,,,এছাড়া নিবরেরও একেবারে আসার খুশি এনজয় করা হয় নি,,,,তাই আগামীকাল ওদের আসার খুশিতে বাড়িতে পার্টি হবে আর নিধী গিয়ে ওকে এয়ারপোর্ট থেকে নিয়ে আসবে তা নির্ণয় করলেন আদনান চৌধুরী যেহেতু উনারা ওকে বুঝতে দিতে চাইছেন না যে উনারা ওদের আসার খুশিতে পার্টি রেখেছেন,,,, আসলে ওকে স্যারপ্রাইজ দিবেন সবাই,,,,আদনান সাহেবের কোনো কথাই ফেলে না নিধী,,,,তাই রাজি হয়ে গেলো,,,,যদিও ও জানে ছেলেটা কে কারন চৌধুরী হাউজে ওরও বড়সড় অনেক টাঙানো ছবি দেখেছে ও,,,,ছবিগুলা দেখার পর ঘর টা ছেড়ে চলে যেতে চেয়েছিলো নিধী,,,,কিন্তু ছবিগুলো দেখতে ওর দেড়ি হয়ে গিয়েছিলো,,,,ততক্ষণে খুশি জবটা পেয়ে গিয়েছিলো আর ওর মায়ের চিকিৎসায় অনেক টাকা গিয়েছিলো আদনান সাহেবের যার ভরপাই না করে ও শান্তিতে হয়তো মরতেও পারতো না আর এতো টাকা হয়তো মরার আগেও দিতে পারতো না,,,,কারন ঢাকা শহরে চাকরির কি আকাল তা ও এতোদিনে বুঝে গেছিলো তাছাড়া অন্য কাজওতো পায় না তেমন,,,,ওর মায়ের চিকিৎসায় আরও টাকাও লাগবে তাই সব দিক বিবেচনা করে নিধী আর গেলো না,,,,,আর নিধী তো নিজের যোগ্যতায় এখানে থাকবে তবে কেনো কাউকে ভয় পেয়ে,,,,, বা মুখ লজ্জায় পালাবে তাই আর গেলো না,,,,কালকে আবারও নিধী নিজের হাতে সেই ফেলে আসা অতীত ফিরিয়ে আনতে যাচ্ছে,,,,,কিন্তু এ নিয়ে মনের কোনে কোনো ভয় বা কোনোপ্রকার অনুভুতি নেই ওর,,,, এই ইট পাথরের শহর যে ওর মনটাকেও পাথর করে দিয়েছে,,,,,এদিকে নিহান প্রায় রাতেই ঘুমের মধ্যে চিৎকার করে উঠে নিধী বলে,,,,আসলে ও তখন কল্পনা করে নিধী ওকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে আর ও ওকে আটকাতে পারছে না,,,,,নিহান এই তিন বছর কাটিয়েছে নিধীর স্মৃতিতে,,,,,পুরো ঘর ভরিয়ে নিয়েছে নিধীর ছবি দিয়ে সব যে ওর নিজের হাতে আঁকা,,,,,, যে নিহান কখনো পেন্ট ছুঁয়েও দেখে নি ও আজ নিখুঁতভাবে নিধীর ছবি আঁকতে জানে,,,,মানুষের মনে কতোটা ভালোবাসা থাকলে তা করতে পারে এটা ভাবা দায়,,,,নিধীর ছবি ছাঁড়া যে ও আর কিছুই আঁকতে জানে না,,,,এই তিন বছরে নিধীর ওকে বলে যাওয়া সব কথাই মেনেছে ও,,,,মন দিয়ে পড়ালেখা করেছে সাথে ৫ ওয়াক্ত নামাযও পড়েছে,,,,আল্লাহর যথেষ্ট এবাদত করেছে আর দমে দমে নিধীকে চেয়েছে,,,,নিধীকে খোঁজা আজ অব্ধি শেষ হয়নি ওর,,,,,জানে না কেনো ওর মন বলছে যে ঢাকা গেলে হয়তো ও নিধীকে পাবে তাই এবার বাড়ি ফিরে যাবার কথা ভাবলো,,,,কাল ও বাড়ি ফিরে যাচ্ছে মনের কেনো কেনো যেনো একটা আলাদা শান্তি কাজ করছে তা ও জানে না,,,,,,পরদিন সকালের ফ্লাইটে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা এয়ারপোর্টে পৌঁছালো নিহান,,,,,নিধীও এতক্ষণে সেখানে পৌঁছে গেছে ওকে আনতে,,,,,,,

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here