আমি_শুধুই_তোমার❤️?,পর্বঃ০৪,৫

0
817

গল্পের নামঃ- #আমি_শুধুই_তোমার❤️?,পর্বঃ০৪,৫
writer:-আইদা ইসলাম কনিকা
পর্বঃ০৪

বিকেলে বৃষ্টি হওয়ার ফলে এখন বেশ ঠান্ডা লাগছে। আর বিকেলের সেই সময়েরটা কথা ভেবে ব্লাসিং করছি,দিনটা সুন্দর করে আমার ডায়রির পাতায় লিখে রাখবো, কিন্তু এটা কেমন হলো শুনেছি ছেলেরা নাকি আগে কিস করে কিন্তু আমি মেয়ে হয়ে, তো কি হইছে মেয়েরা ছেলেদের থেকে কোনো দিক দিয়ে পিছিয়ে নেই, যা করছি ভালো করছি। আমার পাতী হাঁস আমার হুতুম পেঁচা আমারইতো সব একটা কিসই তো করছি এনিয়ে এতো ভাবার দরকার নাই, কিন্তু এখন আমার কালা গরম পানি ইয়ে মানে ব্লাক কফি খেতে ইচ্ছে করছে। তাই ড্রয়িং রুম থেকে দৌড়ে গেলাম কিচেনে, আর বানাতে লাগলাম আমার কফি। আহহ কি যে সুন্দর সুবাস, যাই হোক কফি তো বানালাম সবার জন্য সবাইকে দিয়েও আসলাম, শুধু বাকি আমি আর আমার উনি, মানে আমার নিরামিষ নামক হুতুম পেঁচা টা। যাই হোক লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে রুমে গেলাম দেখি ফোনে কি যেন করছে, আমাকে দেখে ফোনটা রেখে দিয়ে আমার দিকে মনযোগ দিলো ব্যাপারটা আমার ভালোই লাগছে, আমি কফির মগটা তার দিকে এগিয়ে দেই কিন্তু সে বলে

—–আপনি আবার কিছু মিশিয়ে নিয়ে আসছেন? আমি দুইদিকে মাথা নারালাম যার মানে না সে তাও ভ্রু কুচকে লো না না খা হুতুম পেঁচা তোর পেটে সহ্য হবে না এইসব, সকালে তিতা করল্লা খাওয়াইছি বলে এখনও খাওয়াবো। আমি আমার কফির মগে চুমুক দিলাম উনি হুটকরেই আমার মগটা হাতে নিয়ে বলে।

—-আমি এটা খাবো আপনি আমারটা খান। এর মানে আমি ঠিকই বুঝতে পেরেছি বেটা ওফফ সরি হুতুম পেঁচা ভয়ে ছিল যাইহোক খাও, শুনেছি খাওয়াটা খেলে নাকি মহব্বত বাড়ে, দেখি আমাদের ব্যাপারটা কি হয়। আল্লাহ তুমি এই নিরামিষটাকে হেদায়েত দান করো,

(সবাই আমিন বলেন?? নয়তো আল্লাহ ফারিদার দোয়া কেমতে কবুল করব) ইভান কফির মগটা নিয়ে কফি খাচ্ছে আরকে হাত দিয়ে ফেসবুক স্ক্রলিং করছে, মাঝে মাঝে ফারিদাকে দেখছে। ফারিদা এত সময় খুশি ছিল যখন দেখে ইভান ফোন নিয়ে বসে আছে তখনই তার মাথায় আস্ত একটা তাল গাছ ভেঙে পরে। কি খারাপ মনে মনে তারিফ করতে না করতেই সে নিজের রূপ দেখানো শুরু করছে। হারামি বিয়ের পর বউয়ের সাথে ভালো করে কথা পর্যন্ত বলিসনি,এখন এত সুন্দর একটা মূহুর্ত তাও সে ফোন নিয়ে বসে আছে। ধূর, আর বললেও কি হবে এতো নিরামিষ নামক হুতুম পেঁচা, তাই এর মনের মধ্যে ফিলিংস বলতে কিছু নেই। ফাউল একটা, মনেতো চাচ্ছে গ্লাসের কফি তার মাথায় ঢেলে দেই। বেয়াদবের আছারি একটা। ইভান জানতো যে ফারিদা এবার কিছু মিক্সড করেনি কিন্তু সে চাচ্ছিল ফারিদার খাওয়া কফিটা খেতে তাই এতো নাটক আর এখন সে বুঝতে পারছে ফারিদা তার সাথে গল্প করতে চায়, কিন্তু সে নিজে থেকে কিছু বলবে না। ফারিদা কফি শেষ করে বলে
—-আপনার খাওয়া হয়নি? ইভান কফিটা একদম চেটেপুটে শেষ করে তারপর কফির মগটা এগিয়ে দেয় ফারিদার দিকে। ফারিদা বলে

—-গ্লাসটা রাখছেন কেনো? এটাও ব্লান্ড করে দেই খেয়ে ফেলেন। বলেই চলে যায় আর ইভান তো হা হয়ে আছে কি বললো ফারিদা সেটাই বুঝার চেষ্টা করছে। ইভান একা একা বোর ফিল করছে, ফারিদাও সেই কখন গেলো। সে যায় ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে দেখে, অনেক কসমিটিক হয়ার বেন, হিজাব পিন, ৩/৪ ফাউন্ডেশন, কানসিলার,কাজল আরো কতো কি। ইভান একটা ফাউন্ডেশন নিয়ে দেখতে থেকে তখনই ফারিদা রুমে আসে দেখে ইভান কি যেনো করছে তার জানটুস গুলোর সাথে। ফারিদা জলদি গিয়ে ইভানের হাত থেকে সেটা নিয়ে বলে
—–এই আপনি কি করছেন এগুলার সাথে। ইভান বলে

—–ভাবছি দেশে আর কয়দিন পর আটা ময়দার অভাব পরবে। যেই হার আপনারা আটা ময়দা মাখো। ফারিদা ভেংচি কেটে বলে

—–আপনি মেবি নকল করে ডাক্তারি পাশ করছেন। ইভান বলে

—-কেনো, আপনার এমন মনে হওয়ার কারণ? ফারিদা ফাউন্ডেশন টা রাখতে রাখতে বললো

—-যেখানে আপনি মেকাপকে আটা ময়দা বলেন সেখানে তো এটাই প্রমাণ হয় আপনি কিছু পারেন না। বলে ফারিদা দৌড় দেয় ইভান বলে

—-তবে রে। সেও ফারিদাকে ধরার জন্য তার পিছন পিছন দৌড়াতে লাগলো শেষে যখন ফারিদা রুমে দরজা খুলে যায় কিন্তু বাইরে যাবার আগেই ইভান ফারিদাকে ধরে ফেলে আর দরজার সাথে চেপে ধরে। At the moment। ফারিন দরজা খুলে ফেলে সে এসেছিল তাদের খেতে ডাকতে। আর এমনি ফারিদা ঠাস করে ফ্লোরে পড়ে যায় আর ফারিদাকে পরতে দেখে ফারিন সাইড হয়ে যায় আর ফারিদা পরে যায় আর তার উপর ইভান। ফারিদা কোমড়ে হালকা ব্যাথা পায়। ইভান আর ফারিদা মটেও এই পরিস্থিতিতে পরবে ভাবেনি। ফারিন এইদিক ঐদিক তাকিয়ে বলে

—-সরি সরি। আম্মু খেতে ডাকছে। বলেই নিচে নেমে চলে গেলো। ইভান উঠে দাড়ায় আর ফারিদাকেও তোলে। তারপর দুজনই নিচে যায় কিন্তু বিকেলের নাশতা, তারপর কফি খাওয়াতে এখন ফারিদা আর ইভান দুনজনেরই পেট ভরা। তাও কোনো রকম খেয়ে নিলো। আর ফারিন তো মুখ টিপে হেঁসে চলছে। ইভান ফারিনকে উদ্দেশ্য করে বলে

—-কি শালিকা এতো মুচকি মুচকি হাসির কারণ কি? ফারিন দুষ্ট হাসি দিয়ে বলে

—-আরে জিজু, আমি রোজ আর জ্যাকের কথা ভাবছি কি রোমান্টিক জুটি তাই না? ইভান খেতে খেতে বলে

—-টাইটানিক দেখছো? ফারিন হেচকেচিয়ে বলে

—-আরে না, আমি তো আমাদের স্কুলের পাশে কলেজের বড় আপু আর ভাইয়ার কথা বলছি। ফারিন আর কিছু বললো না খাওয়াতে মনযোগ দিলো। ইভান বলে।

—-জ্যাক বেশ তো নামটা।

ফারিদা আর না পেরে হুহু করে হেসে দিল। সবাি খাওয়া বাদ দিয়ে ফারিদার দিকে তাকিয়ে আছে। ফারিন বলে

—আপু তোর কি হয়েছে হাসছিস কেন ভূতটুত ধরছে নাকি তোকে? ইভান বলে

—-হ্যা আমারও তাই মনে হয় কালকে ওয়াশরুম থেকে বের হওয়ার পরও হাসছিল। কি ভয়ংকর হাসি। আল্লাহ। ফারিদা তো অবাক সে কি এমন করলে!! সে রাগী চোখে ইভানের দিকে তাকিয়ে চোখের ইশারায় বলে, একবার ওপরে চলেন তারপর বুঝাচ্ছি মজা। তখন আর ফারিদা কিছু বলে না ইভান কে। খাওয়া শেষে ইভান রুমে প্রবেশ করে ওমনি ফারিদা দরজা বন্ধ করে ইভানের কাঁধে ভাওও বলে ঝাপিয়ে পরে। কিন্তু ইভান কিছু বলে না। তাই সে বলে

—–ভয় পান নাই? ইভান বলে

—-না আমি জানি আমার একটা বাদুর বউ আছে। ফারিদা ইভানকে বলে

—-আমি বাদুর হলে আপনি হুতুম পেঁচা। এখন শাস্তির জন্য তৈরি তো? ইভান মুচকি হাসি দিয়ে বলে

—-কি শাস্তি? ফারিদা কিছু না বলে তার ড্রেসিং টেবিল থেকে চিরুনি, আর বেশ কয়েকটা কিলিপ আর রাবার বেন নিয়ে আসে। তা দেখে ইভান বলে

—/নো। ফারিদা বলে

—-yess। ইভান না বলে কিন্তু ফারিদার জোরা জড়িতে সে আর পারলোনা তার মাথায় উৎপত্তি ঘটে ছোট ছোট তিনটা তাল গাছের তারপর কিছু কচ্ছপের। ফারিদা ইভানের মাথায় তিনটা ঝুটি করে আর কিলিপ লাগিয়ে দেয়। আর বলে

—কত কিউট লাগছে, ওয়েট পিক তুলবো, নড়লে ঠোঁটে লিপস্টিক লাগিয়ে দিব খাবরদার। ইভান নিজের বউকে এই কয়দিনে ভালোই চিনেছে এটা তার জন্য ব্যাপার না। তারপর ফারিদা বেশ কেয়কটা পিক তুলে নিল আর ফেসবুক আপলোড করে দিলো। আর ইভানকে বলে

—–এই যে আপনার ফেসবুক আইডির নাম কি? হুতুম পেঁচা তারপর নিরামিষ সব দিয়ে খুঁজেছি পায় নাই। ইভান বলে

—-আমি হুতুম পেঁচা, নিরামিষ? কালকে রিমোট নেওয়ার সময় কি যেনো বলছিলেন, ও হ্যা আমাকে একটু টাইম দেন আমি এইসবের জন্য প্রস্তুত না। ফারিদা আমতা আমতা করে বলে

—–যাই হোক ঘুমান। বলেই আমি উঠতে যাবো তখনই ইভান আমার হাত ধরে ফেলে…..

চলবে

গল্পের নামঃ- #আমি_শুধুই_তোমার
Writer:-আইদা ইসলাম কনিকা
পর্বঃ০৫

ঘুমান অনেক রাত হয়েছে বলে, আমি যখন উঠতে যাবো। ইভান আমার হাতটা ধরে তার কাছে নিয়ে বসি দেয় আর বলে

—-হুতুম পেঁচারা রাত জাগে আপনি জানো না? আমি হাসি দিয়ে বললাম

—-এর মানে আপনি শিখার করছেন আপনি হুতুম পেঁচা, কি যে শান্তি লাগছে। ফারিদার কথায় ইভান বোকে বনে গেলো, এই মেয়ের সাথে কথায় পাড়া যাবে না বাপু,বড্ড চালাক। ইভান আমাকে উদ্দশ্যা করে বলে

—-তো আপনি কলেজ জয়েন করবেন কবে থেকে। কথাটা শুনার সাথে সাথে আমার মাথায় আস্ত একটা বাস এসে ঠুস করে পরলো। পরলো বললে ভুল হবে আমাকে চাপা দিলো চলিত ভাষায় (বিদ্রঃ ফারিদা সাধু ভাষা কম পরে), এখন সাথ-নিভানা-সাথীয়ার মধ্যে যেই ধূমতানা মিইজিকটা বাজতো আমার মনে হচ্ছে ঠিক আমার সাথে ঠিক তেমনই। আমি বিয়েতে রাজী হলাম কেনো? এই কলেজে কে তো ডির্ভোস দিয়ে দিবো ভাবছিলাম, আর এই উনিতো তার শতীনের কাছে আমাকে দিয়ে আসতে চায়। আমার স্বপ্ন ছিল বিয়ে হচে সংসার করবো ১০/১২ টা বাচ্চা কাচ্চা হবে ওদের মানুষ করবো। কিন্তু এই নিরামিষ নামক হুতুম পেঁচার আমার সুখ দেখে সইলো কই। আমি বললাম

—–জানিনা বলেই রুমের লাইট ওফ করে সোফার দিকে পা বাড়াতেই সে এসে আমেকে বলে।

—–সোফায় শুলে উগান্ডায় পাঠাবো, বিছানায় শুবেন চলেন। আমি তার দিকে সুরু চোখে তাকিয়ে বলি

—-আপনিতো চাইতেন,তো সমস্যা কই? আমি এখানেই শুতে পারবো। সে বলে

—-ওকে পারলে শুয়ে দেখান বলেই, ওয়াশরুমের দিকে গেলো। আর এক মগ পানি নিয়ে হাজির আমি এক দৌড়ে বিছানায় গিয়ে শুয়ে বললাম

—-আমিতো মজা করছিলাম, তুমি আমার কিউট হুতুম পেঁচা, নিরামিষ পাতী হাঁস, আমার তারছিড়া হাসবেন্ড, প্লিজ এই ঠান্ডার সময় আর পনি দিয়ে গোসল করতে আমি চাই না। ইভান ফারিদার কথা শুনে হাসবে না কাঁদবে সে ভেবে পাচ্ছে না, এটা আদর করে ডাকা ছিল নাকি ইডিরেক্টলি অপমান করা। ইভান কিছু না বলে চলে গেলো আর পানিটা রেখে চলে আসে। আবার বৃষ্টি শুরু বাইরে ঝড়,, বতাস বইছে তীব্র গতিতে। বাতাসের কারণে বলকনির দরজাটা খুলে যায় আমি যাই ওটা লাগতে কিন্তু দরজা লাগানোর সময় ভুলবসত আমার হাত কেটে যায়। আমি চোখমুখ খিচে বন্ধ করে

—–আহহহহ্ আম্মু। আমার চিৎকার শুনে দৌড়ে আসে ইভান, আমি তাকিয়ে আছি আমারা কাটা হাতটার দিকে, সে কিছু সময় আমার হাতটার দিকে তাকিয়ে থেকে বললো

—-গাধাঁ নাকি তুমি? দেখ কাজ করতে পারোনা, পারো তো শুধু নাচতে।৷ তার মুখে তুমি ডাকটা আমার ভালোই লাগছে কিন্তু বকাটা আমার পেটে হজম হলোনা। আমরা আবার সব কিছু হজম হয়না। আমি হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বললাম

—-ইচ্ছে করে করিনি, বোকা দিবেন না বলে দিলাম। সে আমার দিকে রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলে

—- চুপ পাজি মেয়ে,ফাস্ট এইড বক্স কোথায়? আমি ভাব নিয়ে বললাম

—-দরকার নেই আমি নিজেই করতে পারবো। বলে যেতে নিলে সে আমাকে অবাক করে দিয়ে কোলে তুলে নিল আর বিছানায় বসিয়ে দিয়ে বলে

—-যেটা Ask করছি সেটা বলো। আমি তাকে বললাম কোথায় তারপর সে সটা নিয়ে এসে আমার কাছে বসলো, তুলোয় সেভলন লাগিয়ে নিয়ে জোরে জোরেই আমার হাতের রক্ত গুলা পরিষ্কার করতে থাকে এর মানে সে বেশ রেগে আছে, তারপর হাতে বেন্ডেজ করে দিয়ে, বক্সটা জায়গা মতো রেখে এসে লাইট ওফ করে শুয়ে পরে। কি রাগরে বাবা, হুতুম পেঁচারা বুঝি রাগও করে? হ্যা আমারটা করে। আজকে জানলাম। যাই হোক দিলাম এক ঘুম। তারপরের দিন সকাল সকাল ওঠে সে কোন রকম খেয়ে আমাকে তাদের বাড়ি পৌঁছে দিয়ে যায়। কি অদ্ভুত তাই না, আমাদের জীবন যেমন আল্লাহর ওপর নির্ভর কিছুটা ডক্টর এর ওপরও যেমন, একটা ভুলের কারণে রুগীর জীবনও যেতে পারে আবার তাদের কারণে অনেক রুগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসে নিজ আপন মানুষদের কাছে। সারাটাদিন কাটলো আমার এটা ঐটা করে। ইরিনে আর অংশের সাথে আমার বেশ ভাব হয়ে গেলো। বাড়ির সবাইতো আমাকে পছন্দ করেই এনেছে। গিয়েছিলাম রান্না ঘরে মা বললো যে বিকেলে কিছু বানাতে আমার রান্না করতে হবে না। ভাবা যায় এগুলা? মানে কেমনে আমিতো ভাবছিলাম আমার শাশুড়ী মা হবেন রিনা খানের মতো, এতো দেখি কত ভালো। আর ইভানের চাচির কথা না বললেই না সেও আমাকে বেশ পছন্দ করেছেন। কিন্তু সারাদিনে আর হুতুম পেঁচার খবর নাই, বললে কি হবে ব্যস্ত মানুষ ডক্টর বলে কথা। ওপর দিকে রাগে ফুলছে ইভান আর ভাবছে

—কি সাংঘাতিক মেয়েরে বাবা বর কে একটু ফোন করে বলবেতো আপনি কিছু খেয়েছেন, না খেলে সময় করে খেয়ে নিয়েন আবার আমাকে বলে আমি নাকি নিরামিষ নামক হুতুম পেঁচা ?বাসায় যাই দেখাবো মজা

বিকেলের দিকে রান্না ঘরে যাই, কি রান্না করব ভাবতে ভাবতে আমার দিন পার ইয়ে মানে বিকেল পার। যাই হোক সব কিছু বাদ দিয়ে পায়েশ বানালাম। ইরিনের কাছ থেকে জেনেছি তার পায়েশ নাকি খুব পছন্দের। তার জন্যই আমার এত কষ্ট এবার তার কাছে ভালোলাগে আমি আমার জীবনকে ধন্য মনে করব। কিন্তু তার আসার এখনও কোনো নাম গন্ধ কিছু নেই।

ছাঁদটা সাজানো হচ্ছে রাতে বারবিকিউ পার্টি হবে। আর সন্ধ্যার দিকে ইভানের খালতো ভাই বোন আর ফুপির ছেলে মেয়ারা এসেছে । সবাই একসাথে বসে গল্প করছি আর সামনেই চিকেন রেডি করছে আম্মু আর কাকিমা। সবার সাথে আমার ভাব হলেও মিরা মানে আমার খালা শাশুড়ী মেয়ে আমাকে তেমন একটা পছন্দ করেনি । গাড়ির আওয়াজে আমি দৌড়ে রেলিঙের কাছে গেলাম দেখি আমার উনি এসেছেন। মানে আমার হুতুম পেঁচা, পাতী হাঁস। আমি আম্মুকে বলে নিচে গেলাম আর দরজটা খুলে দিলাম। সে আমার দিকে তাকিয়ে আমাকে কিছু না বলে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। আমি ভাবছি কি হলো এটা? আমিও তার পিছন পিছন রুমে গেলাম। সে তোয়ালে নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো, এমন করছেন কেন উনি? আমিও কিছু না বলে তার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। সে আসার পর তাকে বলি

—চলেন খাবেন। সে আমরা দিকে তাকিয়ে বলে

—-আমার খবর না রাখলেও তোমার হবে। সারাদিনে একটা ফোন পর্যন্ত করোনি। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি সে আমার তাকানো দেখে বলে

—–কি হয়েছে এভাবে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছো কেন?আমার কি নতুন কান আর চোখ গজিয়েছে নাকি? আমি হাসি দিয়ে বললাম

—-না আপনাকে এভাবেই কিউট লাগে, আর আমার ফোনে তো আপনার নম্বর সেভ করা নাই কিভাবে কল দিব বলেন? ইভান বলে

—-ঠিক আছে ঠিক আছে। বাসার আর সবাই কই? তাদের কাছে চাইলেই পারতে। আমি বললাম

— ছাঁদে বার্বিকিউ পার্টি করবে সবাই চলেন। আপনার আন্টি আর ফুপিও এসেছে।সে বলে সে যাবে না, আর আমাকে ওল্ট বকে দিলো। আমি এবার রেগে যাই আর বলি
—একে তো নিজে লেট করে আসছেন, আবার আমাকেই বকছেন? আর আমার কাছে আপনার নম্বর ছিলা না আর আমি নতুন তাই কারো কাছে চাইতেও পারিনি, আপনি কি করছেন বসে বসে কোন ক্ষতের ধান কাটছেন যত্তসব।

বকে তাকে ফেলেই চলে আসি। কালকে থেকে শুরু করছে এমন করা। ছাঁদ গিয়ে বসে পরলাম, কিন্তু কিছু সময় পর সেও চলে এলো সে আমার পাশে বসতে চাইলেি, মিরা বলে

—-ইভান ভাইয়া তুমি আমার পাশে বস। আমিও কিছু বললাম না দেখি কি করে, বসুক যেখানে ইচ্ছা এই মেয়ের কোলে গিয়ে বসুক যত্তসব। আমি মন খারাপ করে বসে রইলাম, সবাই একসাথে বলে ট্রুথ আর ডেয়ার খেলার কথা, তারপর চমরা সবাই খেলি। আমার পালা যখন আসে আমি বলি আমি ট্রুথ নিব মিরা আমাকে প্রশ্ন করে
—-এই মেয়ে তুমি এই পর্যন্ত কয়টা প্রেম করছো? কথাটা শুনে আমার গা জ্বলে যায়। আমি নিজেকে শান্ত করে উত্তর দেই

—-একটাও না। আর একটা কথা মিরা হয়তো আমি আপনার চেয়ে বয়সে ছোট কিন্তু সম্পর্কে বড় তাই ভাবি ডাকলে খুশি হব। আমার কথায় মিরা বেশ লজ্জা পায় আর সবাই মুখ টিপে হাসছে। সে আমার দিকে তাকিয়ে কানে হাত দিয়ে ইশারায় সরি বলে। বলুক আমার কি আমিতো বেশ রেগে আছি তখনও বকা দিছে আর এখন বসছে এই মিরা প্যারার সাথে। কিছু সময় পরই হুতুম পেঁচার বারি চলে আসলো। সে ডেয়ার পিক করলো, সবাই বললো তাকে গান গাইতে কিন্তু সেও শর্ত দিলো আমাকেও গাইতে হবে তার সাথে। আমি রাজি না হলেও পরে সবার জোরাজুরিতে রাজি হই, অংশ নিচে গিয়ে গিটার নিয়ে আসে আর দিয়ে দেয় ইভানের হাতে। ইভান গিটার নিয়ে গাইতে লাগে

—-লক্ষ্মী সোনা রাগ করে না একটু,হাসো প্লিজ ভাললাগেনা আর হবে না করছি যে প্রমিজ।

ভেংচি দিয়ে ফারিদাও তাল মিলালে

—একটু পরে ভাঙবে প্রমিজ এটাই তোমার স্বভাব তোমার মনে আমার জন্য ভালোবাসার অভাব। ইভান মুচকি হাসি দিয়ে বলে

—সারাটাদিন ছুটাছুটি কার জন্য বলে? তাইতো তোমায় সময় দিতে একটু দেরি হলো? (বাকিটা নিজ দায়িত্বে শুনে নিবেন)

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here