Mr_Devil #Part_43,44

0
1858

#Mr_Devil
#Part_43,44
#Writer_Aruhi_Khan (ছদ্দনাম)
Part_43


দের বছর পর—-★
–––––––––●

আহহা নিশ..!! এমন করে না
মাম্মাম ব্যাথা পাচ্ছে তো
চুল ছাড়ো প্লিজ

মাম্মাম ব্যাথা পেয়েছে,,কথাটা যেন ওর উপর ইফেক্ট করেছে

তাই ও চুল গুলো ছেড়ে দিলো

— এই তো গুড বয়
বলে নিশএর কপালে চুমু খেল

— রশ্নি একটু এদিকটায় আয় তো…
— আসছি!
বলে নিশকে অনুর কোলে দিয়ে রশ্নি শুভর কাছে গেল

— হ্যা শুভ বল!!
— আমাদের এখন বেরোতে হবে তো,,টাইম দেখেছিস, কতো লেইট হয়ে গিয়েছে
— ওহ হ্যা, তুই একটু ওয়েট কর আমি ১৫ মিনিটের মধ্যে রেডি হয়ে আসছি
— ওকে..!!

কিছুক্ষন পর রশ্নি রেডি হয়ে নিলো যাওয়ার জন্য

— রশ্নি শুন…
— নিজেকে স্ট্রং রাখবো, এইতো?
এই নিয়ে প্রায় একশ বারের উপরে বললি কথাটা
আমি স্ট্রংই থাকবো তুই চিন্তা করিস না,,চল এবার!!

শুভ একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো

(ইয়াশ আর রশ্নির বেবি, ইয়াদ্রিশ আহমেদ চৌধুরী নিশান কিন্তু সবাই আদর করে নিশ বলে ডাকে

প্রচুর জেদি মানে আস্ত একটা ঘাড় ত‍্যারা
যা চাই তা যেকন মূল্যেই চাই আর না হলে কান্না করে সব কিছু মাথায় উঠিয়ে নেবে
এক কথায় পুরাই ইয়াশের মতো।

আর হ্যা রশ্নিরা এখন বাংলাদেশে
কয়েকদিন আগে সিঙ্গাপুর থেকে ব্যাক করেছে)

.

এদিকে ইয়াশ এক বছরের মাথায় সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছে

সেও এখন বিশ্বাস করতে শুরু করেছে যে রশ্নি অন্য একটা ছেলের সাথে পালিয়ে গেছে

রশ্নির উপর অভিমান দিন বা দিন মনে ক্রমশ বেড়েই চলেছে

আজ সে সুস্থ হয়েছে প্রায় ছয় মাস
তাই আজ থেকে আবার অফিস জইন করছে

আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কথাগুলো ভাবছিল ইয়াশ
হঠাৎ চোখ দু ফোটা পানি গড়িয়ে পড়ল
ইয়াশ কখনো কাঁদে না খুব স্ট্রং কিন্তু আজ নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলো না

ভেবেই একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিল

তারপর চুলগুলোকে হাত দিয়ে আরেকবার সেট করে বেরিয়ে পড়লো রুম থেকে

ইয়াশ ফোনে কথা বলতে বলতে যাচ্ছিল তখনই পিছন থেকে অনিমা বেগম ইয়াশকে ডেকে উঠেন

— ওকে, আই উইল কল ইউ লেটার

— হ্যা মম বলো,,

অনিমা– বলছিলাম কি…
নেহার সাথে তোমার এঙ্গেইজমেন্টটা যদি সামনে সপ্তাহে হয়ে যেত তাহলে…..

ইয়াশ– মম লাস্ট বারের মতো তোমাকে বলছি,,এসব কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দাও
আমি এখন ওসব নিয়ে মাথা ঘামাতে চাই না

অনিমা– তুমি আর কতদিন এভাবে থাকবে?
ওই মেয়েটা যখন মুভ অন করে ফেলেছে তাহলে তুমি পারছো না কেন

ইয়াশ মুখে বিরক্তির ছাপ ফুটিয়ে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল

.

আজ অফিসে সবাই খুব খুশি
কারন ইয়াশ আবার অফিসে জইন করছে

ইয়াশ যতই রাগি হোক না কেন
তার স্টাফদের যেকোনো বিপদে আপদে এগিয়ে আসত

ইয়াশ অফিসে প্রবেশ করার সাথে সাথে সবাই বুকে দিয়ে ওকে বরণ করে নিলো

ইয়াশ সব ফর্মালিটিস শেষ করে নিজের ক্যাবিনের দিকে পা বাড়ালো
কিন্তু ওর ক্যাবিনের পাশেই রশ্নির ক্যাবিনটাতে ওর চোখ গেল

ইয়াশ সেখানে গিয়ে সবকিছু ছুঁয়ে দেখতে লাগলো

ওই দিনটার কথা মনে পড়ে গেল
রশ্নির চেয়ারে বসে কার্টুন দেখছিল আর ইয়াশ হঠাৎ পিছন থেকে এসে ওকে ধরে ফেলে

আর রশ্নি ওকে অফিস বয় মনে করে থাপ্পড় লাগাতে যায় কিন্তু ইয়াশকে দেখে থেমে যায়
আর তুতলানো শুরু করে

আগের দিনের কথা গুলো মনে পড়তেই ইয়াশের ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠে

কিন্তু পরক্ষনেই বর্তমানের কথা মনে পড়ে যায়

কি অদ্ভুত তাই না
সব জিনিস গুলো আগের মতোই আছে কিন্তু ওই
মানুষটা নেই
ভাবতেই ভিতরটা কেমন হাহাকার দিয়ে উঠে

— স্যার,,,

আরিফের কথায় ইয়াশের ধ্যান ভাঙে
ও তাড়াতাড়ি রশ্নির ক্যাবিন থেকে বেরিয়ে আসে

— হ্যা আরিফ বলো

— স্যার খান ইন্ডাস্ট্রিজের সাথে আমাদের ডিলারশিপটা
মানে যেটা রিজেক্টেড হয়ে গিয়েছিল সেটা আবার হচ্ছে

— এতদিন পর?

— জি স্যার,, ওরা নিজের থেকেই আবার ডিলারশিপের প্রোপোজালটা দিয়েছে আর রাফি স্যার তা সাইন আপও করে দিয়েছেন

— উফ এই রাফিটাও না,,

— আর স্যার,, খান ইন্ডারস্ট্রিজের এম ডি আজ একটা মিটিংএর জন্য আসছে

— আমাকে না জানিয়ে মিটিং কখন ঠিক হলো

— সেটা বড় স্যার ঠিক করেছেন (ইয়াশের বাবা)

— আচ্ছা ঠিক আছে তুমি যাও এখন

— জি,,,

.

ইয়াশ চোখ বন্ধ করে ওর চেয়ারে বসে ছিল
তখনই আরিফ এসে জানায় যে তারা এসে গেছেন

আরিফ গিয়ে তাদের নিয়ে আসেন

আরিফ– স্যার,, উনি হলেন খান ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক
মিস্টার শুভ খান

ইয়াশ গিয়ে ওর সাথে হাত মিলালো

— বসুন

ওরা বিজনেসের ব্যাপারে কথা বলা শুরু করলো
ইয়াশ কিছু ফাইল বের করার জন্য

কর্নারের বুক শেল্ফটার কাছে গেল

তখন দরজায় আরেকটা নক পরে
ইয়াশ ফাইল খোঁজায় ব্যাস্ত ছিল তাই ঐদিকটায় খেয়াল করেনি
ও দরজার দিকে না তাকিয়েই “কাম ইন” বলে দিল

দরজায় নক কারী বেক্তি ভিতরে এসে শুভর পাশে বসলো

(এত সাসপেন্স দিয়া লাভ নাই কজ, আমি জানি আপনারা আগেই বুঝে গেছেন যে এটা রশ্নি?)

— ও কান্না থামিয়েছে?
— হ্যা কলে অনেক বুঝানোর পর

কন্ঠটা খুব চেনা চেনা মনে হলো ইয়াশের
কিন্তু পরক্ষনেই তা “সম্ভব না” বলে নিজের মনকে বুঝিয়ে নিলো

ইয়াশ ফাইলটা নিয়ে শুভর সামনে বসলো

— তো আমি বলছিলা,,,,,

ইয়াশ সামনে থাকা বেক্তিটাকে দেখে আর কিছু বলতে পারল না
সময়টা যেন ওখানেই থেমে গেল
সবকিছু কেমন ঘোলাটে লাগছে
নিজের চোখকে যেন বিশ্বাস করাতে পারছে

শুভ– ওকে পরিচয় করিয়ে দেই
ও হলো খান ইন্ডাস্ট্রিজের এনাদার এম ডি…..
ইয়াশ– রশ্নি এনায়াত খান (স্থির দৃষ্টিতে রশ্নির দিকে তাকিয়ে)
শুভ– আপনি দেখি ওর নাম আগের থেকেই জানেন
আরিফ– আপনাদের কোম্পানির তো অনেক নাম ডাক
তাই হয়তো অপমাদের স্যার আগের থেকেই চিনেন

হঠাৎ শুভর একটা দরকারি কল এসে পড়ে
প্লিজ আপনি কিছু মনে করবেন না আমি আসছি
(ইয়াশকে উদ্দেশ্য করার বলে)

আর রশ্নি এদিকের কাজটা তুমি দেখে নাও

শুভ উঠে চলে গেল

এদিকে ইয়াশ ওভাবেই পলকহীন ভাবে রশ্নির দিকে তাকিয়ে আছে

রশ্নি– তো আমরা,,,,,,

রশ্নি খেয়াল করে দেখে ইয়াশ রশ্নির দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে
তা দেখে ও যেন কিছুটা অবাক হলো
যেন এমনটা হওয়ার ছিল না

— এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?
আপনি কি কিছু বলবেন?

— বাহ! ভালোই তো আছেন বিয়ে শাদি করে মিস সরি সরি মিসেস খান

রশ্নি একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো
— জি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি,

এখন যদি আমার পার্সনাল লাইফের ব্যাপারে আলোচনা শেষে হয়ে থাকে তাহলে কি আমরা বিজনেসের ব্যাপারে কথা বলতে পারি?

ইয়াশ রশ্নির কথা গুলো আর সহ্য করতে পারলো না

ও উঠে গিয়ে দরজাটা ভিতর থেকে লক করে দিলো

— আপনি দরজা লক করলেন কেন!!

ইয়াশ কিছু না বলে এসে রশ্নিকে টেনে নিয়ে গিয়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো

— আহ আমার লাগছে, ছাড়ুন আমাকে

ইয়াশ আরো জোরে চেপে ধরলো

ইয়াশ– লাগছে তাই না? আমারও লেগেছিল,,এর থেকে হাজারগুন,লাখ গুন কোটি গুন বেশি লেগেছিল
তোর তো শরীরে লাগছে কিন্তু আমার এইযে এখানে
(বুকের বাম পাশে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে) এখানে লেগেছিল

যখন শুনেছিলাম তুই অন্য একটা ছেলের সাথে পালিয়ে গিয়েছিল

রশ্নি– এসব কি ফালতু কথা বলছেন,, ছাড়ুন আমাকে

ইয়াশ– ফালতু কথা না?
আসলে আমার জীবনটাই ফালতু, আমার নেওয়া প্রত্যেকটা ডিসিশনই ফালতু

যেদিন আমাকে মারতে চেয়েছিলি
সেদিন জ্ঞান ফেরার পরও রশ্নি রশ্নি করছিলাম
নিজের মার বিরুদ্ধে গিয়েছিলাম শুধু তোর জন্য
নেহা আমাকে প্রুভ পর্যন্ত দেখিয়েছিল যে তুই অন্য একটা ছেলের সাথে পালিয়েছিস
সেটাও আমি মানি নি উল্টো ওকে কথা শুনিয়েছিলাম
তারপর জানিস তোর জন্য আমার জীবনের পুরো একটা বছর নষ্ট করেছিলাম
পাগল হয়ে গিয়েছিলাম

আর আমার এই সব করা কাজই ফালতু ছিল

আর এতদিন তো জাস্ট ডাউট ছিল কিন্তু আজ তোকে শুভর সাথে দেখে
তা পরিষ্কার হয়ে গেল যে তুই আসলেই ওর সাথে পালিয়েছিলি

রশ্নি এসব কিছুই জানতো না
ও ভেবেছিল ইয়াশ ওকে আর ওর বেবিকে মেনে নিবে না
ও ইয়াশকে মারতে চেয়েছিল ভেবে ওকে ঘৃণা করবে তাই ও শুভর সাথে সিঙ্গাপুর চলে যায়
কিন্তু ইয়াশ যে জ্ঞান ফেরার পরও ওর জন্য উম্মাদ ছিল তা ও ভাবতেও পারেনি

ইয়াশ– কেন করলি এমনটা?
এত ভালোবাসার পরও? কেন…!!

ইয়াশ রশ্নিকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল

রশ্নিও সেখান থেকে বেরিয়ে যায়

শুভ রশ্নিকে বাহিরে ওভাবে দেখতে পেয়ে দৌড়ে ওর কাছে যায়

শুভ– কি হয়েছে বোনু
তোর মুখটা এমন লাগছে কেন

রশ্নি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারল না
শুভকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলো

এইটা দূর থেকে ইয়াশ দেখলো

ইয়াশ ওদের দিকেই দৃষ্টি স্থির রেখে ফোনটা বের করে অনিমা বেগমকে কল দিলো

— হ্যালো মম,,

–…………!!

— তুমি এঙ্গেইজমেন্টের ব্যাবস্থা করো
আমি এই ২-১ দিনের মাঝেই এঙ্গেইজমেন্টটা করবো

–…………!!

— কিছু হয় নি,,,তুমি জাস্ট ব্যাবস্থা করো

–…………!!

— হুম ওকে

তারপর ইয়াশ ফোনটা পেকেটে রেখে দিল

— তুমি মুভ অন করতে পারলে আমিও পারবো
মিসেস খান



চলবে,

#Mr_Devil
#Part_44
#Writer_Aruhi_Khan (ছদ্দনাম)



শুভ– চল তাহলে এখন বাসায় যাওয়া যাক
রশ্নি– হুম

ওরা পিছনে ঘুরে দেখলো কিছুটা দূরে ইয়াশ দাঁড়িয়ে আছে

কিন্তু রশ্নি আরো অবাক হলো যখন ওর পিছনে নেহাকেও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো

নেহা হঠাৎ করে এসে ইয়াশকে জড়িয়ে ধরলো
হয়তো রশ্নিকে দেখেই

নেহা– ইশু,,বেবি বলো তো সারপ্রাইজটা কেমন লাগলো?

নেহাকে হঠাৎ আসতে দেখে ইয়াশও চমকে গেল

ইয়াশ– কিসের সারপ্রাইজ? আর তুমিই বা কথাথেকে আসলে?

নেহা– এইযে আমি আসলাম? আচ্ছা ওসব বাদ দাও আজ ভার্সিটি থেকে ফিরছিলাম
আন্টি তখন কল দিয়ে বললো তুমি নাকি এঙ্গেইজমেন্টে রাজি হয়ে গিয়েছ
আর আমাদের এঙ্গেইজমেন্টটা কাল পরশুর মধ্যেই হচ্ছে, আই এম ভেরি হ্যাপি
তাই ডাইরেক্ট এখানেই চলে আসলাম

তারপর নেহা এমন ভাব করে যেনো রশ্নিকে মাত্র দেখলো
— আরেহ তুমি কথাথেকে প্রকট হলে?
উমম বাট সে যাই হোক,,তোমরাও কিন্তু আমাদের এঙ্গেইজমেন্ট সেরিমানিতে আসবে

রশ্নির আর সহ্য হচ্ছে না
মন চাইছে গিয়ে নেহার চুল ছিড়ে দিক

শুভ রশ্নির হাত ধরে ওকে আটকে নিলো

রশ্নি হাত মুঠ করে নিজের রাগটাকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে

নেহা– হানি… তুমি কি ওদের আমাদের এনগেজমেন্টে ইনভাইট করেছ?
ইয়াশও এবার নেহার কোমর পেঁচিয়ে ধরে ওকে নিজের আরেকটু কাছে এনে দার করালো

ইয়াশ– তুমি বলে দিয়েছো তাতেই হবে
নেহা– Aww?

ইয়াশ রশ্নির দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিল
যা রশ্নির গা আরো জ্বালিয়ে দিচ্ছে

রশ্নি অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নিলো

ইয়াশ– আচ্ছা আমার একটু কাজ আছে তাই তোমার সাথে পরে কথা বলছি

বলে ইয়াশ নিজের ক্যাবিনে চলে গেল

নেহা এবার রশ্নির সামনে এসে দাড়ালো

রশ্নি শুভকে ইশারায় কি যেন বললো
তা দেখে শুভ ওদের একা রেখে কোথায় যেন চলে গেল

নেহা– তো এতগুলো দিন পর আবার কি ভেবে?
বাট জানো তো,,তুমি না আমার কাজটা আরো সহজ করে দিলে

ইয়াশের যাও একটু ডাউট ছিল তা এখন তোমাদের দুজনকে একসাথে দেখে ক্লিয়ার হয়ে গেল

রশ্নি চুপচাপ ওর কথা গুলো শুনছে

নেহা– যাক এবার ফাইনালি ইয়াশ আমার হবে
কিন্তু তুমি কি করবে?
সারা জীবন এই মিথ্যে অপবাদটাকে নিয়ে ঘুরবে

নাকি ইয়াশের পায়ের কাছে পরে মাফ চেয়ে নিজের সাফাই গাইবে (বাঁকা হেসে)

রশ্নি কিছু না বলে নেহার সামনে কিছুটা এগিয়ে গেলো তারপর নেহার সামনে পরে থাকা চুল গুলো পিছনে সরিয়ে দিয়ে বললো
— আমার চিন্তা তোমার না করলেও চলবে
তুমি বরং তোমার স্বপ্নের জাল বুনতে থাকো যা কখনোই বাস্তবে পরায়ণ হবে না

— বাহ এত কনফিডেন্স?

নেহার কথার প্রতিত্তরে রশ্নি একটা রহস্যময় হাসি দিল
— বললাম তো, আমার ব্যাপারে না ভাবলেও চলবে
নিজেরটা ঠিক বুঝে নিব

তুমি বরং এখন থেকেই নিজের ব্যাপারে ভাবা শুরু করে দাও

আগের থেকে প্রিপারেশন নিয়ে রাখা ভালো
অবশ্য তা বিফলেই যাবে

তারপর রশ্নি চলে যেতে নেয় কিন্তু কি ভেবে আবার ফিরে এসে নেহার সামনে দাঁড়ায়

এরপর নেহার কানের সামনে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বললো
— একটা কথা জানো তো?
পাশার চাল বদলাতে সময় লাগে না, এক মুহূর্তেই বদলাতে পারে

তারপর সরে এসে একটা বাঁকা হাসি দিয়ে সেখান থেকে চলে আসে

এদিকে নেহা রশ্নির কথায় রাগে কটকমট করছে
কি বুঝতে চায় কি এ মেয়েটা

.

.

●—◆—●রাতে◆—●—◆

রশ্নি নিশকে বুকের উপর নিয়ে রকিং চেয়ারে বসে আছে

কিছুক্ষন পর সেখানে শুভ আসলো

— কিরে এত রাতে ওকে নিয়ে এভাবে বারান্দায় বসে আছিস কেন

রশ্নি– তো কি করবো? এই মশাইএর চোখে একটুও ঘুম নেই
তাই এখানে নিয়ে আসলাম

শুভ– তোর চোখে আছে ঘুম?

শুভর কথার কি জবাব দিবে তা রশ্নির জানা নেই
এত্তগুলা দিনের মধ্যে
একটা দিনও রশ্নি শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি

ইয়াশের বুকে ঘুমানোর অভ্যেস হয়ে গিয়েছে যে

রশ্নি কিছু একটা ভেবে মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলে বললো
— জানিস তো শুভ, একে নিয়ে পড়েছি আরেক বিপদে
সারাটা দিন শুধু জ্বালায়
এবার একে জাস্ট এর বাপের কাছে তুলে দিতে পারলেই বাঁচি

— মানে কি? তুই নিশকে ইয়াশের কাছে দিয়ে দিবি?

রশ্নি– আজব তো কি বলছিস এসব?
বাচ্ছা তার বাবার কাছে থাকবে না তো কি মিউজিয়ামে থাকবে নাকি

শুভ– দেখ তোর এসব ঘুরানো পেচানো কথা আমি কিছুই বুঝতে পারছি না
প্লিজ সব ক্লিয়ারলি বল

শুভর কথায় রশ্নি হেসে দিলো

রশ্নি– তোর মুখে এসব কথা মানায় না

রশ্নি কিছুক্ষন চুপ থেকে আবার বললো

এইই তুই আমার ফেভরেট কাজিন?
তুই না আমাকে আমার থেকেও ভালো চিনিস?
তাহলে এখন কি হলো?

রশ্নি এবার একটু নেকু কণ্ঠে বললো
— শুভ তুই তো তোর বোনকে চিনিস তাই না, ও কেমন?
যেটা নিজের সেটাকে কিভাবে নিজের করে রাখতে হয় তা আমার খুব ভালো করে জানা আছে

এতদিন চুপ করে ছিলাম ইয়াশের জন্য কিন্তু আজ সব ফোনে মুহিতের কাছে সব সত্যিটা জানার পর আবারও ইয়াশের জন্যই,,,,,,

(মুহিতের কাছে রশ্নি
নেহার করা সব কুকর্ম আর মিথ্যা কথা জানতে পেরেছে আরো এই দের বছরে যা যা হয়েছে সব)

শুভ– মানে আবারো আগের সেই সাইকো গিরি

রশ্নি কিছু বললো না জাস্ট বাঁকা হাসলো

শুভ– ওহ নো…….

রশ্নি– বেশি মাথা খাটাস না শুধু দেখতে থাকে আগে আগে কি হয়

বলে নিশকে নিয়ে বেডের দিকে পা বাড়ালো

— এবার তান্ডব হবে (দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে)

শুভও নিজের রুমে চলে গেল

.

.

●—◆—-■—–◆এঙ্গেইজমেন্টের দিন◆—–■—-◆—●

ইয়াশ, নেহা দোনোজনের সামনেই রিং রাখা হয়েছে

কিন্তু ইয়াশ প্রচন্ড ঘামছে, হাত কাঁপছে

অন্য কাউকে তার জীবনের সঙ্গী করতে যাচ্ছে
ভেবেও বুকটা ফেটে আর্তনাদ বেরিয়ে আসছে

অনিমা– কি হলো বাবাই? রিংটা পরিয়ে দাও

ইয়াশ কাপা কাপা হাতে
রিং বক্স থেকে আংটিটা নিলো

এভাবেই একদিন রশ্নিকে আংটি পরিয়ে দিয়েছিল
এমন হাজারটা মুহূর্ত চোখের সামনে আসছে

ইয়াশ যেই না নেহাকে আংটিটা পরিয়ে দিবে তখনই কথাথেকে যেন গানের শব্দ ভেসে আসছে কানে

ক্রমশ শব্দটা বেড়েই চলেছে

সবাই দূর থেকে দেখতে পেলো একটা কালো রঙের গাড়ি আসছে যার উপরি অংশ খোলা

এনগেজমেন্ট সেরইমনিটা একটা বড় খোলা মাঠে হচ্ছে

সিম্পল ভাবে ডেকোরেট করা
দুই দিকে মানুষজন
আর মাঝখানে রেড কার্পেট যা যা সামনের স্টেজের দিকে যাচ্ছে

গাড়ির মধ্যে একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে নাচ্ছে
আর ওর দুইপাশ দিয়ে ব্যান্ড পার্টি ওয়ালারা
গানের তালে বাজনা বাজিয়ে যাচ্ছে

গাড়িটা রেড কার্পেট দিয়ে এসে স্টেজের কিছুটা দূরে এসে দাড়ালো

ইয়াশ সহ সবাই তো পুরাই অবাক
(সাথে আমার রিডার্সরাও)
কারন গাড়িতে থাকা মেয়েটি আর কেউ না স্বয়ং রশ্নি

রশ্নি এবার ইয়াশকে ডেডিকেট করে নাচতে শুরু করলো

.
???

Hoga Handsome Sona Sabse
Mere Dil Ko Gaya Lekar
Meri Neend Churali Usne
Aur Khwaab Gaya Dekar

Hoga Handsome Sona Sabse
Mere Dil Ko Gaya Lekar
Meri Neend Churali Usne
Aur Khwaab Gaya Dekar

Ab Yeh Naina Bole Yaar
Bole Yahi Lagataar
Koi Chahein Kitna Roke
Karoongi Pyaar

Mere Saiyaan Superstar
Mere Saiyaan Superstar
Main Fan Huyi Unki
O Mere Saiyaan Superstar

???

.

অনিমা– হোয়াট দা হেল ইজ গোয়িং অন
কালকে নেহার কাছে শুনেছিলাম এই মেয়েটা নাকি আবার এসেছে এখন তো দেখছি অনুষ্ঠানের মাঝেও চলে এসেছে

রশ্নি এবার গাড়ি থেকে নেমে গেল
আর ওদেরকে গান বন্ধ করতে বললো

ইয়াশ রশ্নিকে দেখে আরো হা হয়ে গেছে

কারন আজ ওকে পুরাই অন্য রকম লাগছে
মেহেদী কালার শাড়ি, চোখে সানগ্লাস,
ঠোঁটে মন মাতানো হাসি যা উচুঁ নিচু দাঁত গুলোর জন্য আরো সুন্দর করে তুলছে
চোখের সেই তীক্ষ্ণতা যা ইয়াশকে গ্রাস করছে
সব মিলিয়ে ইয়াশকে পাগল করার জন্য যথেষ্ট

ইয়াশের ধ্যানে নিজের ডান হাত ঢুকিয়ে রশ্নি বললো
— আরেহ আপনারা সবাই তো বড়ই আজব
বউকে ছাড়াই সেরিমানি শুরু করে দিয়েছেন

আচ্ছা ব্যাপার না দাঁড়ান আমি আসছি
বলেই ফুরুত করে স্টেজে উঠে পড়লো

আর নেহাকে কিছুটা ধাক্কা দেওয়ার মতো করে সরিয়ে ইয়াশের পাশে এসে দাঁড়ায়

এরপর নিজের হাতটা ইয়াশের দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো
— এই নাও জামাই, রিংটা পরিয়ে দাও



চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here